অলকানন্দার একদিন - গায়ত্রী ভট্টাচার্য্য || oloknondar ekdin - Gayatri Bhattacharya || Short Story || ছোট গল্প

  অলকানন্দার একদিন 

           গায়ত্রী ভট্টাচার্য্য 


অলকানন্দা পাশ ফিরতে গিয়ে চাদরটা টেনে নিল। শীত শীত করছিল,চাদরখানা গায়ে দিয়ে আরাম পেল।অগ্রহায়ণ মাসের শেষ,একটু একটু করে শীত জাঁকিয়ে বসছে।ভোরের দিকে ঘুম এনজয় করার মতো,শীতকালে তা আরও উপভোগ্য।


জানালার কাঁচ দিয়ে মিঠে রোদের ছোঁয়ায় অলকানন্দার ঘুম ভাঙ্গলো।

কিছুক্ষণ পর বাগানে এল অলকানন্দা,তার প্রিয় সাদা কাশ্মীরী কাজ করা শালটা গায়ে চাপিয়ে।এই শালটা তার সহকর্মীদের দেওয়া রিটায়ারমেন্টের উপহার,দেখতে ভীষণ সুন্দর। 

বাগানের একটা কোনে এসে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো, যেখানে সেই গোলাপ গাছটা,যেটা তার একমাত্র মেয়ে জাহ্নবী লাগিয়েছিল,অলকানন্দার কোনো এক জন্মদিনে।গাছটা আদরে যত্নে খুব তাড়াতাড়িই বেড়ে উঠেছিল,কিন্তু এতদিনে একটাও ফুল ফোটেনি!অলকানন্দার বাগানের মালী কেবলই বলে,

“—মা ঠাকরুণ,এই গোলাপ গাছটায় কোনোদিন ফুল ফুটবে না,এ অন্য ধরণের গাছ,দিদিমনি যে কি গাছ বসিয়েছিল!এই গাছ আমি কেটে দিতে পারি, আপনি যদি অনুমতি করেন।”

অলকানন্দা বারণ করে।জাহ্নবী বহুদিন হলো দেশ ছাড়া,ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকে,মাঝে দু বার এসেছিল।

ঘুম থেকে উঠে রোজ একবার গোলাপ গাছটাকে স্পর্শ করে আত্মজাকে অনুভব করে, এই তার বহু বছরের অভ্যাস।

আজ ভীষনই আশ্চর্য হয়ে গেল, যখন দেখলো গাছটাতে একটা ফুল ফুটেছে!ফুল ফুটেছে,কি সুন্দর মেরুন লাল রঙের।কখন কুঁড়ি এসেছিল!সে খেয়াল করেনি তো!!গাছটার ভেতরের দিকে ফুলটা ফুটেছে,তাই কুঁড়ি আসাটা নজরে পড়েনি।কতদিন যে এমন একটি লাল গোলাপ ফোটার আশায় ছিল।আজকের এই বিশেষ দিনে অলকানন্দার মনটা খুশীতে ভরপুর হয়ে গেল।


প্রেসারটা বোধহয় গোলমাল করছে অলকানন্দার।প্রাতরাশ সেরে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিল,ফেরার পথে ডাক্তারের কাছে যাবে।

ডাক্তারবাবু চেক আপ করে অলকানন্দাকে বললেন, 

“—ম্যাডাম,বয়স বাড়ছে, একা থাকেন, একটু সাবধানে থাকুন।“

অলকানন্দার বয়স এখন তেষট্টি,শিক্ষকতার জীবন থেকে অবসর নিয়েছে প্রায় তিন বছর হলো। একাই থাকতে হয় তাকে।

ডাক্তারবাবুর চেম্বার থেকে বেরোতে যাবে,একজন বৃদ্ধা অলকানন্দার চেয়ে বয়সে বোধহয় অনেকটাই বড়,শীতে জবুথবু হয়ে বসে আছেন,গায়ে না আছে কোনো চাদর অথবা সোয়েটার!কম্পাউন্ডার বাবুকে বললেন,

“—কি করি বাবা,ছেলেমেয়েরা এই বুড়ো মাকে দেখে না।“ 

অলকানন্দার চোখ অশ্রসিক্ত হয়ে গেল,একটা ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার গায়ের কাশ্মীরী শালখানা বৃদ্ধার গায়ে চাপিয়ে দিল। বৃদ্ধার চোখেমুখে খুশী উপচে পড়লো,অলকানন্দার দিকে হাত তুলে বললেন, 

“—ভালো থেকো মা,ঈশ্বর তোমার সব কষ্ট দূর করুন।“ 

চেম্বারের বাইরে দাঁড়িয়ে রাস্তার বিপরীত দিকে চোখ পড়ে গেল তার,... আরে সৈকত না! সৈকত এখানে! দূর সে কেন হবে !! অলকানন্দার মনের ভুল।কোনোভাবেই সৈকতের এখানে থাকার কথা নয়!


 রান্নাটা জমিয়ে করল অলকানন্দা, যে পদগুলো তার পছন্দের,মিহি চালের ভাত,বেগুন ভর্তা,পুনকো শাক পোস্ত,ইলিশ ভাপা,ধোঁকার ডালনা। আজকের দিনটা তার পছন্দের রান্না দিয়ে সাজিয়ে সেলিব্রেট করতে ইচ্ছে করলো।মাঝে মাঝে নিজের ইচ্ছেগুলোকে দাম দিতে হয়,নিজেকে ভালোবাসতে হয়।

 খাওয়া দাওয়ার পর আবার বাগানে এলো অলকানন্দা।অগোচরে ফুটে ওঠা লাল গোলাপের আকর্ষণ তার মনকে উথালপাথাল করে দিচ্ছে, গোলাপটার দিকে তাকিয়ে বললো, 

“—কি দুষ্টু এতদিন পর আমার কাছে আসার সময় হলো!”

তার কথার জবাব দিল গোলাপটা,হাওয়ায় নিজেকে দুলিয়ে যেন অলকানন্দার সুরে সুর মেলালো।

ডাইনিং রুম থেকে তার স্মার্ট ফোনের রিং বেজে উঠলো। লাঞ্চের পর ফোনটা ডাইনিং টেবিলেই রেখে এসেছিল।এই পড়ন্ত দুপুরে কে আবার ফোন করলো! ভাবতে ভাবতে ডাইনিং হলে এসে মুঠোফোনটা হাতে নিল অলকানন্দা। 

জাহ্নবীর ফোন!সচরাচর সে ফোন করে না,মাঝে সাঝে মেসেজ পাঠিয়ে মায়ের খবর নেয়,ব্যাস দায়িত্ব শেষ।  

…..জাহ্নবী .... অনেক কষ্টে তাকে বড়ো করে তুলেছে অলকানন্দা। সে যখন মাত্র আট বছরের তখন তার বাবা সন্দীপন ছেড়ে চলে যায়। অলকানন্দা একাই মা এবং বাবার দায়িত্ব পালন করেছে।পড়াশোনায় জাহ্নবীর অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ছিল,ছোট্ট থেকেই, সেদিক থেকে তার বাবার ধাত পেয়েছিল।সেই জাহ্নবী বড়ো হয়ে পি.এইচ. ডি. করতে গেল সুদূর বিদেশে, ক্যালিফোর্নিয়ায়।গবেষণা শেষ করে দেশে ফিরে অধ্যাপনা করবে এই ছিল জাহ্নবীর লক্ষ্য।কিন্তু সে দেশে আর ফিরে এলো না। তার গাইড স্যারকে ভালোবেসে বিয়ে করে ফেললো। স্যারের আন্ডারে গবেষণা করতে গিয়ে অনুভব করলো সে নাকি তার মধ্যবয়সী স্যারকে ছাড়া বাঁচতে পারবে না। সেই মার্কিন অধ্যাপক মার্কোস নাকি জাহ্নবীকে ভালোবাসার অর্থ বুঝিয়েছে,তার আগে জাহ্নবী ভালোবাসার প্রকৃত মানে বুঝতোই না!ফলস্বরূপ জাহ্নবীর চেয়ে বছর কুড়ি বড়ো মার্কোস আর প্রায় জাহ্নবীর বয়সী দুই সন্তান নিয়ে এখন ভরপুর সংসারী।পুরো ব্যাপারটাই অলকানন্দার অজানা ছিল,বিয়ের পর জানিয়েছিল জাহ্নবী।দেশে ফিরে আসা অথবা মায়ের কাছে থাকা তার কাছে অবান্তর।

ফোনটা ধরে হ্যালো বলতেই ওপার থেকে জাহ্নবী বললো, 

“—হ্যাপি অ্যানিভার্সারি মা ।“ 


 হ্যাপি !! যে মানুষ,জাহ্নবীর বাবা প্রায় তিরিশ বছর আগে অলকানন্দাকে ধোঁকা দিয়ে তারই এক কলিগকে নিয়ে সুখের ঘর বেঁধেছিল। অলকানন্দার সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীনই ডাক্তার সন্দীপন চ্যাটার্জি অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিল,অলকানন্দা ঘুণাক্ষরেও টের পায় নি। 

সেদিনটা ছিল তাদের দশ বছরের বিবাহবার্ষিকী,সন্দীপন ঘুম থেকে উঠে একটা প্লাটিনামে হীরে বসানো আংটি গিফ্ট করেছিল অলকানন্দাকে।বলেছিল তার চেম্বার থেকে ফিরতে দেরী হবে,অলকানন্দা যেন তার জন্য ওয়েট না করে। একটু বেশী রাত হয়ে যাওয়ায়,উৎকন্ঠায় অলকানন্দা ছুটে গিয়েছিল সন্দীপনের চেম্বারে।গিয়ে যা দেখে তাতে সে স্তব্ধ হয়ে যায়। চেম্বারের ঠিক পাশের ঘরে সন্দীপন তার সঙ্গীনীর সঙ্গে ….।”

গোটা শরীর ঘৃণায় রি রি করে ওঠে। তার ভালোবাসার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা!পরে পরেই ডিভোর্স দিয়ে দেয় অলকানন্দা।সে এই কারণে সন্দীপনকে ঘৃণা করেনি যে,তাকে ছেড়ে অন্য নারীর প্রতি আসক্ত ছিল, এই কারণে যে তার বিশ্বাস ও ভালোবাসার সঙ্গে প্রতারণা করেছিল।জীবনে এক নারীকে নিয়েই যে সন্তুষ্ট থাকতে হবে এমন কোনো মানে নেই। কিন্তু অলকানন্দার অগোচরে বেড়ে ওঠা সন্দীপনের এই অবৈধ সম্পর্ক মন থেকে মেনে নেওয়া তার পক্ষে বেদনাদায়ক ছিল।

“—কেমন আছো সোনা?“ দীর্ঘক্ষণ নীরব থেকে অলকানন্দা বললো।

“—ভালো আছি মা,তোমাকে ফোন করে উঠতে পারি না,জানোই তো খুব ব্যস্ত থাকি,তাছাড়া আমার যখন সময় হয়,তোমাদের তখন মাঝ রাত। আজ তোমার আর বাপির অ্যানিভার্সারি তাই …।”

“—হ্যাঁ ঠিক বলেছো,তোমার আমার টাইম ম্যাচ করে না,আজ আমার কাছে বিশেষ দিন,আমাদের বিয়েটা আজকের দিনেই হয়েছিল কিনা,যদিও আজকের দিনেই চরম আঘাতটাও পেয়েছিলাম।যাকগে তোমরা কেমন আছো?”

“—ভীষণ ভালো,মার্কোস আমাকে চোখে হারায়, এখন দুজনে মিলেই গবেষণার কাজ করছি। আর বাচ্চারা আমার বন্ধু।”

“—তুমি ভালো আছো,এর চেয়ে আমার আর কি চাওয়ার থাকতে পারে।“

ফোন রেখে দিয়ে অলকানন্দা খুশী মনে স্বগতোক্তি করলো, 

“—নাই বা আসতে পারলো আমার কাছে,জাহ্নবী তার মনের মানুষের কাছে সুখে আছে, আনন্দে আছে এই ঢের। অলকানন্দা এর চেয়ে বেশি কিছু চায় না, তবে তাদের সম্পর্কের বিষয় অলকানন্দার কাছে গোপন রেখেছিল কেন আজও তার কাছে বোধগম্য নয়।


কলিং বেলটা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমটা ভেঙে গেল অলকানন্দার,কখন বসে বসেই সোফায় তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল বুঝতে পারে নি।ধড়মড়িয়ে উঠে সদর দরজা খুলে দেখলো এক ক্যুরিয়ার বয়! 


পার্সেলটা খুলতেই ভারী অবাক হয়ে গেল, সন্দীপন পাঠিয়েছে….!আর ভেতরে একটা চিরকুট, তাতে লেখা …”নন্দা ক্ষমা কোরো, আমার পাঠানো উপহার গ্রহণ কোরো,প্লিজ প্লিজ।”

বসার ঘরে এসে আবার সোফায় বসলো অলকানন্দা, ঘুমটা সবে ধরেছিল,ভেঙে যাওয়ার কারণে আলসেমি ভাবটা ছিল।আনমনে প্যাকেটটা নাড়াচাড়া করছিল, কি আছে এখানে!এতোদিন পর কেনই বা সন্দীপন কিছু পাঠালো! এই কথা ভাবতে ভাবতে সৈকতের মুখটা ভেসে উঠলো অলকানন্দার। আজ সকাল থেকেই তার কথাটা কেবলই মনে চলে আসছে, …..সৈকত, একটা উথালপাথাল করা নাম অলকানন্দার জীবনে, তার কথা মনে এলে এক অনির্বচনীয় আনন্দে হৃদয় পূর্ণ হয়ে যায়, এই বয়সেও শরীরে শিহরণ জাগে।

খুব মনে পড়ছে,অলকানন্দা তখন পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই , তাদের প্রতিষ্ঠানে জয়েন করেছিল বছর পঁয়ত্রিশের সৈকত। উদ্যমী টগবগে যুবক, সারাক্ষণই নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। সেই সুবাদে অলকানন্দার সঙ্গে প্রচুর মিল।

একদিন লক্ষ্য করলো সৈকত অপলক দৃষ্টিতে অলকানন্দার দিকে চেয়ে রয়েছে! বারবার ঐ একই বিষয় তার নজরে পড়ছিল! অলকানন্দাও সৈকতের দৃষ্টিকে বোঝবার চেষ্টা করতে থাকলো,তারপর কখন যে অগোচরে সৈকতের মুগ্ধ দুই চোখের দৃষ্টিতে নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলেছিল টেরই পায়নি ।


কিন্তু অলকানন্দার মনে হতো ,এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। তবুও হয়ে যায়,মনের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। সৈকতের উপস্থিতি অলকানন্দার মনকে আনন্দ সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে যেতো।তার নিস্তরঙ্গ জীবনে সৈকত যেন পালতোলা নৌকা,সেই পাল তোলা নৌকায় করে মন ভেসে যেতে চায় দূরে,বহুদূরে।

“--আচ্ছা সৈকতেরও কি ঐরকম কিছু উপলব্ধি হয়!” নিজেকেই প্রশ্নগুলো করে।

 একদিন বর্ষার সন্ধ্যায় কাঁপিয়ে জ্বর এলো অলকানন্দার,বাড়ী ফেরার পথে বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল সেইজন্য বোধহয়।পরিণাম ক দিন তাকে প্রতিষ্ঠানে ছুটি নিতে হলো।দু দিন হয়ে গেলে সৈকত তাকে ফোন করে বলেছিল,

“—ম্যাডাম,আসছেন না কেন!”


আরেকবার এক অনভিপ্রেত কারণে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিল অলকানন্দা,তার মনে হয়েছিল তার পাশে কেউ নেই। সেই সময় সৈকত সবার অলক্ষ্যে অলকানন্দার হাতে হাত রেখে বলেছিল,

“—আমি আছি তো।”

  বেশ কয়েক বছর পর সৈকত অনেক দূরে একটি শহরে চলে যায়,আস্তে আস্তে কালের নিয়মে উভয়ের মধ্যে যোগাযোগ থাকে না।


সন্ধ্যা বেলায় চা নিয়ে বসতেই আবার কলিং বেল বেজে উঠল।এই সময় কে এল!অলকানন্দা দরজা খুলতেই বিস্মিত হয়ে গেল,সৈকত! 

“—আপনি!”

“—কেন আসতে নেই ম্যাডাম!!”

“—তা কেন, আসুন আসুন।”

কিছুক্ষণ পর দুজনের চা খাওয়া শেষ হলে সৈকত তার হাতের প্যাকেটটা খুলে একটা কাশ্মীরী শাল আস্তে আস্তে অলকানন্দার গায়ে জড়িয়ে দিল,শালটা দেখতে অনেকটা আগেরটার মতো!তাহলে অলকানন্দা সকালে ঠিকই দেখেছিল! 

কি জানি কি মনে হতে,অলকানন্দা তার দু হাত দিয়ে সৈকতের দুই গাল স্পর্শ করে বললো, 

“—কি দুষ্টু,এতদিন পর আমার কথা মনে পড়লো!”

মৃদু হেসে সৈকত বললো, 

“— আপনার কাছে অনেকবার আসতে চেষ্টা করেছি কিন্তু বাধ্যবাধকতার কারণে আসতে পারি নি, আজ সকালে আপনাকে দেখলাম,আপনি আগের মতোই আছেন,সেরকমই অপরূপা,যাঁর দুই চোখের অতলান্ত গভীরতা আমার হৃদয়কে উথালপাথাল করে দেয়। অগোচরে গড়ে ওঠা সম্পর্কের টানে এতদিন পর হলেও আমি এসেছি আপনার সঙ্গে দেখা করতে। এটাই হয়তো আমার আসার উপযুক্ত সময়।”

এক অপার প্রাপ্তিতে অলকানন্দার সারা হৃদয় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠলো।


কত বছর পর এত সুখী হলো অলকানন্দা! আর কোনো দুঃখ নেই, নেই কোনোও ক্ষোভ।যদিও অনেক আগে থেকেই এই ক্ষতগুলোকে মন থেকে মুছে দিয়েছিল।তবুও আজ যেন ঈশ্বর দরাজ হস্তে অলকানন্দাকে খুশী দান করেছেন।সন্দীপনের পাঠানো পার্সেলে যে উপহার গুলি ছিল,তা ফেরত দিতে চাইলেও পারবে না।ছিল স্কুলের রি-ইউনিয়নে ব্যাচের বন্ধুদের সঙ্গে তোলা তাদের দুজনের একটি ছবি এবং অলকানন্দাকে লেখা সন্দীপনের প্রথম চিঠি।


অনেক ডাকাডাকি, অনেক চেষ্টার পর দরজা ভেঙ্গে অলকানন্দার প্রতিবেশীরা এবং কাজের মেয়ে দেখলো অলকানন্দা তার বিছানায় কাশ্মীরী শাল ঢাকা নিয়ে পরম শান্তিতে ঘুমিয়ে রয়েছে,বুকের কাছে দুই হাত দিয়ে ধরে রয়েছে একটি বাঁধানো ফোটোগ্রাফ আর একটি পুরানো চিঠি।

                    

                     -

Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024