Posts

Showing posts from July, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -13

Image
  পাঁচ  পরদিন রৌদ্রোজ্জ্বল প্রভাত। আমার চোখের জল তখনও শুকায়নি । সারা রাত কেঁদে কেঁদে মুখাবয়ব বিকৃত করে তুলেছিলাম । শুষ্ক পুষ্পের ন্যায় মুখের রূপলাবণ্য নষ্ট হয়ে গেছিলো । মনে মনে বিদ্রোহী হলাম , কোন মতেই আমি দেহপসারিনী হয়ে সমস্ত নারী সত্ত্বাকে বিসর্জন দিতে পারব না।  পুরুষের অত্যাচার কোন মতেই সহ্য করতে পারবো না । সেই সময় আমি আত্মহননের কথা চিন্তা করছিলাম । জানবো কলকাতায় চাকরী করতে এসে ট্রেন অ্যাকসিডেন্টে মারা গেছি । বাবার জন্য মনটা আরো কেঁদে উঠল ! তবুও আমি মরবো।  ক্ষণিকের জন্য সব কিছু মায়া ত্যাগ করে লুকিয়ে গলায় ফাঁসি দিতে উদ্যত হলাম । কিন্তু আমার শুভাকাঙ্খীনী শ্যামলীদি আমাকে মৃত্যু হতে বাঁচালেন । নইলে বেশ সুযোগই পেয়েছিলাম আত্মহত্যা করার । যেই ঝুলে পড়ার চেষ্টা করেছি , কোথা হতে যে তিনি ছুটে এলেন জানতে পারিনি । ভেতরে প্রবেশ করে আমাকে ও অবস্থায় দেখে রাগে অভিমানে দারুন জোরে বাম গালে একটা চড় মেরে বললেন , মরতে চাইছিস না ? গত রাত্রে কি বললাম ? আমাদের শেষ পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তাই দেখতে হবে।  আমি মুখ চাপা দিয়ে কাঁদতে থাকি । কিছুক্ষণ পর সস্নেহে আমাকে বললেন , জানিস ? ইচ্ছে করলে

ছোট গল্প - অবশেষ সূর্যোদয় || লেখক - রানা জামান || Short story - Obosese Suryaudai || Written by Rana Zaman

Image
  অবশেষ সূর্যোদয় রানা জামান অপেক্ষার উত্তাপে আমন্ত্রিত অতিথিদের মেজাজ এখনো তপ্ত হয়নি তেমন। দুপুর দুটো বাজলেও বরপক্ষ এখনো আসেনি। পুরুষদের ক্ষিধেয় পেট চো চো করলেও উচ্ছল মেয়েদের দেখে তেমন মনে হচ্ছে না। ওরা কণেকে ঘিরে ঠাট্টা-তামাশায় মজে আছে। হাসি তামাশায় ক্ষুধা এড়ানো গেলেও তৃষ্ণা এড়ানো যায় না; বরঞ্চ গলা শুকিয়ে যায়। দু'জন তরুণী নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বলতে পানি আনতে যাচ্ছে খাবারের কোণায়।  কণেপক্ষের আমন্ত্রিত অতিথিদের কতক খাবার টেবিলে বসে গল্প করছে, কতক এদিকওদিক ঘুরাঘুরি করছে, কেউবা দূরে গিয়ে ধূমপান করছে। তাঁবুর বাহির থেকে দুজন যুবক ওদের পথরোধ করে দাঁড়ালো।  এক যুবক জিজ্ঞেস করলো, বাহ! খুব সুন্দর তো! খিদা লাগছে? একটা মেয়ে জবাব দিলো, পানি আনতে যাচ্ছি।  অপর যুবক বললো, তোমরা কষ্ট করে এদিকে আসলা কেনো! আমদের বললেই পানি আইনা দিতাম! অপর তরুণী বললো, আপনাদের চিনি না, জানি না! আপনাদের পানি আনতে বলবো কেনো?  তরুণী দু'জন যুবকদ্বয়কে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। যুবক দুটো উড়ো চুমু ছুড়ে দিলো ওদের দিকে। তরুণী দু'জন দুই বোতল পানি সংগ্রহ করে অন্যদিক দিকে চলে গেলো কণের কাছে। মিনিট দশেক পরে আরো দুই তরুণী ঐপথে প

উপন্যাস - তান্ত্রিক পিসেমশাই ও আমরা দুজন || সুদীপ ঘোষাল || Tantrik Pisemosay oo Amra by Sudip Ghoshal || Fiction - Tantrik Pisemosay oo Amra Dujon Part -1

Image
  তান্ত্রিক পিসেমশাই ও আমরা দুজন  সুদীপ ঘোষাল   ১ রতনেদের পাড়ার তান্ত্রিক পিসেমশায়কে দেখলে আমাদের খুব ভয় লাগে। সবসময় লাল চোখ, বাঁজখাই গলা আর কন্ঠস্বরের তীব্রতায় বুক ধরফর করে। সহজে কেউ তান্ত্রিককে ঘাঁটাতে চায় না। তবু রতন সাহস করে বলে, পিসেমশাই ভূত,পিশাচ এসব কি? পিসেমশায় ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দীতে মজা করে কথা বলেন। তিনি বললেন, ক্যা হুয়া, তোমার এসব দরকার কিউ পরতা,হ্যায়?  তুমি বাচ্চালোগকা মাফিক থাক।রতন বলে, বলুন না। শুনতে ভালোলাগে। পিসেমশায় এবার সিরিয়াস হয়ে বলেন,  শরীর মন্ত্র দ্বারা সুরক্ষিত করে তান্ত্রিকরা অপরের উপকার করতে যান।  ক্ষমতালাভের জন্য তন্ত্রে শবসাধন, পাদুকাসাধন, কর্ণপিশাচী সাধন, মধুমতী সাধন ইত্যাদি অনেক সাধনের কথা আছে। তাছাড়াও আছে ভূতপ্রেত পিশাচসাধনও।রতন বলে,পিশাচদেরও ভাগ আছে।পিসেমশায় বলেন, চোখপিশাচী, নাকপিশাচী, কর্ণপিশাচী সাধনাটা হল ভূত, প্রেত, পিশাচের উপদেবতা। এদের শক্তি বিপুল। কার মনের কি ধান্দা, এদের কৃপায় সহজেই বলে দেওয়া যায়। কানে শুনে প্রশ্নের উত্তর দেবে নির্ভুল।আমি বললাম, নাকপিশাচী কেমন?  পিসেমশায় বলেন, ওরা গন্ধশুঁকে বলে দেবে তোমার পকেটে কি আছে বা আশেপাশে আঁশটে গন্ধ পেলে ওরা

ছোট গল্প - পুনর্জন্ম || লেখক - অরুণিমা দাস || Short story - Punorjonmo || Written by Arunima Das

Image
  পুনর্জন্ম     অরুণিমা দাস  সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর পাশ ফিরতেই হাতের যন্ত্রণায় কঁকিয়ে ওঠে জিনিয়া। ভয় চোখে বিছানার একপাশে শুয়ে থাকা আয়ুশের দিকে তাকায়। অঘোরে ঘুমোচ্ছে আয়ুশ। কে বলবে গত রাতে এই আয়ুশই তাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেছে আর মারধোর করেছে। জিনিয়া কিছুতেই বুঝতে পারে না তার সাজগোজে স্বামীর কেনো এত অনীহা। বিয়ের পর দুমাস হয়ে গেলো একদিনের জন্যও আয়ুশ তাকে সাজগোজের কোনো জিনিস কিনে দেয়নি,উপরন্তু বলেছে ন্যাচারাল থাকো, এটাই আমার পছন্দ। ওই রুশ পাউডার গালে লাগিয়ে আর ঠোঁট লিপস্টিকে লাল করে আমার সামনে কোনোদিন আসবে না,আমি এগুলো মেনে নিতে পারবোনা কিছুতেই। এসব ভাবতে ভাবতে জিনিয়া উঠে গিয়ে আয়নার সামনে নিজেকে দেখতে লাগলো,পিঠ ঘোরাতেই আয়নায় দেখলো সুস্পষ্ট কালসিটে। ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো জিনত। আয়ুশের ঘুম ভেঙে গেলো কান্নার শব্দে, উঠে এসে জড়িয়ে ধরলো জিনিয়া কে। বললো কি হয়েছে কাঁদছো কেনো। জিনিয়া অবাক হয়ে তাকালো স্বামীর দিকে। কি অদ্ভুত তো, কাল রাতে যে মানুষটা এত হিংস্র হয়ে উঠেছিল সে আজ সকালে এরকম ভালোমানুষ! কি করে সম্ভব হয় এটা। আয়ুশকে বললো রাতের কিছু কথা মনে নেই তোমার। আয়ুশ বললো ক

ছোট গল্প - রাজু কাকা || লেখক - সান্ত্বনা ব্যানার্জী || Short story - Raju Kaka || Written by Swantana Banerjee

Image
রাজু কাকা         সান্ত্বনা  ব্যানার্জী              "অ্যাই ! অ্যাই!সর, সর।উর ডাবায় মুক দিচিস কেনে?তুর নিজের যাব খা কেনে!মুই কি  কারো মুকের গেরাস কেরি খাই? তু কেনে খেছিস?"....রাজু কাকা এই রকম করেই অনর্গল কথা বলে গরু গুলোর সঙ্গে।রাজু কাকা আসার পর থেকে সেজো কাকুর কাজ একটু কমে গেছে আর মেজাজটা ও ভালো হয়েছে।এখন প্রায়ই  বাঁশি বাজায় সন্ধের পর।তখন ইংরেজী টা কাকুর কাছে নিয়ে গেলে পরিয়ে দেয়।এখন অঙ্ক কষতে কষতে জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখে এক মনে গোয়াল পরিষ্কার করছে রাজু কাকা।                    প্রায় ছয় মাস হয়ে গেলো রত্নাদের বাড়িতে এসেছে রাজু কাকা।বীরভূমের কোন এক গ্রামে বাড়ী।স্টেশনে বসেছিল আর একে তাকে কাজের জন্য অনুরোধ করছিলো।সেজো কাকুর সঙ্গে সেখানেই দেখা,আর বাড়িতে নিয়ে  আসা।সেই থেকেই বাড়ীর বাঁধা মুনিষ রাজু কাকা। বেঁটে খাটো কালো , কিন্তু ভারি সতেজ । সব সময় যেন তেল মেখে আছে। তেমনি যত্ন করে গোয়ালের গরু মোষ গুলোকে।ওর নিজের মতো ই চকচকে করে ফেলেছে গরু মোষ গুলোকে।              বাড়িতেও যেন এক শান্তির হাওয়া। সবচেয়ে খুশি হয় রত্না ওর মায়ের জন্য।মায়ের কাজ অনেক টাই কমে গেছে।সকাল

ছোট গল্প - মুক্তি || লেখক - অলভ্য ঘোষ || Short story - Mukti || Written by Allavya Ghosh

Image
  মুক্তি অলভ্য ঘোষ আমার লিঙ্গের ডগাটা দেখে পাকিস্তানি সৈন্য পোদে লাথি মেরে ছেড়ে দিয়েছিল ।ওটা ইনফেকশনে অমন হয়ে গেছে ছোটবেলায় ; তাই রক্ষে । আমার বোন হিন্দু না মুসলমান এ বিচারে ধরা পড়েনি মেয়ে হবার খেসারত দিয়েছে ট্রেন থামানো একদল মুসল….. না ; রেপিস্টদের হাতে ।অঙ্গে আলতা সিঁদুর কিছুই ছিল না বোরখা ঢাকা তবুও ।সবকিছু হরিয়েও বাংলা দেশের মুক্তির লড়াই লড়েছি আমি বন্দুক হাতে নিয়ে।শান্তি কমিটির ইমান সাহেব ঘোষণা করলো ইন্ডিয়ার দালাল । ভিটে মাটির যারা সওদা করলো ; তারা রয়ে গেল আমি রাতের অন্ধকারে পালিয়ে এলাম ভারতে।নোংরা নালা । কলকাতার সেই গু মুত ভেসে যাওয়া নালার পাশের বসতিতে আমরা রিফিউজি নেড়িকুত্তার দল ; পিঠে তখনো লেগে রয়েছে কাঁটা তারের ঘা । বাসা নেই, চাকরি নেই, আত্মীয় বলতে শ্যামবাজারের দূর সম্পর্কের ফরিদপুরের মামা । এক বিজয়া দশমীর রাতে মনে হয়েছিল প্রতিশোধ নিই । কার ওপর জানতাম না । এখনো জানিনা । সোনাগাছির মেয়েদের লাইনে গিয়ে নাম জানতে চেয়েছি ।শ্যামলী, কাজরী, বৈশাখী । সাবিনা, রোজিনা, ফতে-মা কেউ নেই ? এখানে তো সবারি নাম বদল হয় । অনেকটা আমার মতো গান্ডুদের দেশ বদলের মতো । এক দালাল ঠিক চটকরে বুঝেছিল, আমি বাঙ্গ

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -12

Image
  আমি বাবার কাছে ফিরে যাবো। এই নরক যন্ত্রণার হাত হতে আমাকে মুক্ত হতে৷ ঐ লম্পটের পৈশাচিক লালসা আমাকে তিলে তিলে দগ্ধ করছে, আর এক মুহুর্তও এখানে থাকবো না। কিন্তু গৃহ হতে বেরুবার পথ না পেয়ে দমাদম ধাক্কা মারতে শুরু করলাম। কোন ফল হলো না।  মনে হয় আমার শব্দ শুনে সেই বর্ষীয়সী গৌরবর্ণা মহিলা চোখ রগড়াতে রগড়াতে আমার কাছে এসে রুদ্র মূর্ত্তি ধারণ করে দারুন বকাবকি শুরু করলো, কি ভেবেছিস ছুঁড়ি? কপাটে ধাক্কা মারছিস কেন? ভাবছিস বেরিয়ে চলে যাবি? খবরদার এ বাড়ীর এক পা যদি বাইরে রেখেছিস তাহলে পিঠে চাবুকের দাগ বসে যাবে। ও কথা শুনে ভয়ে শিউরে উঠলাম। আমি কি ওর বাঁদী যে ওর কথাতে উঠতে বসতে হবে?  তাই গলা হাঁকিয়ে বলার চেষ্টা করলাম, আমি কি আপনার ক্রীতদাসী যে আপনার কথা শুনতে হবে?  হ্যাঁলো ছুঁড়ি শুনতে হবে। তোর মুখ দেখতে রোন্টার কাছে ৮০ হাজার টাকায় কিনিনি। কি বললেন রন্টুদা আমাকে বিক্রি করেছেন?  ভালোই তো করেছে, বাড়ীতে না খেতে পেয়ে মরতে চলেছিলি। এখানে খাবি দাবি স্ফূর্তি করবি। শোন্ আর জ্বালাস না বাপু। আজকের মতো ঐ বেঞ্চিটাতে শুয়ে পড়, কাল থেকে সব ববস্থা হবে।  সে চলে গেলো। ওর কাছে ও কথা শুনে রন্টুদার প্রতি ঘৃণ

ছোট গল্প - মর্যাদাহানি || লেখক - অমিত কুমার জানা || Short story - Marjadahani || Written by Amit kumar jana

Image
  মর্যাদাহানি অমিত কুমার জানা  সোমবার। প্রতিদিনের মতো আজও সৌভিক পৌনে দশটায় মেদিনীপুর স্টেশনে পুরুলিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেসে উঠে পড়লো। তিনি পাঁশকুড়ার একটা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক।বিশেষ করে সোমবার অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশি ভিড় থাকে। সেপ্টেম্বর মাস,নদীকূল কাশ ফুলে ভরে উঠেছে। সৌভিক ছোট থেকেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পূজারী। সে পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করে জানালা দিয়ে নদীকূলের অপার সৌন্দর্য ক্যামেরা বন্দী করছিলেন। এতেও তাঁর মন ভরলো না। তিনি কাশফুলের সৌন্দর্যের ভিডিও রেকর্ডিং করতে লাগলেন। তিনি মোবাইলটা বুকপকেটে রেখে ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করে কিছুটা জলপান করলেন। ততক্ষণে ট্রেন খড়্গপুর ছাড়িয়ে বালিচকগামী হয়ে গেছে।  ঠিক এই সময় এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো। টয়লেটের দিক থেকে বোরখা পরিহিতা এক মহিলা একজনকে চড় মারতে মারতে বলছেন, " মদ খেয়ে ট্রেনে চড়া অপরাধ আপনি জানেন না? এটা মাতলামি করার জায়গা?" সৌভিক ভালো করে তাকিয়ে দেখলো ইনি তো রসুলপুরের একটা ব্যাঙ্কের কর্মী। রসুলপুর বালিচক এবং পাঁশকুড়ার মধ্যবর্তী স্টেশন। সৌভিকদের সাথে একই কম্পার্টমেন্টে মাঝে মধ্যেই উনার দেখা হয়। সৌভিক উনাকে 'স্যার' বলে

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -11

Image
  হোটেল থেকে বেরিয়ে ট্যাক্সি করে একটা মোড়ে এসে নামলাম। মোড়ের চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম। স্থানে স্থানে লোক জামায়েত রয়েছে। কতকগুলো মেয়ে পুরুষদের সাথে নানা ঢঙে কথা বলছে। হঠাৎ কানে একটা অশালীন কথা ভেসে এলো। কে যেন বলে উঠলো, কি লো রজনী বেশ তো সেজেগোছে রাতের নাগরদের জন্য দাঁড়িয়ে। আছিস, বলি নাগরকে কাছে পেয়েছিলি?  আবার কে যেন বলে উঠলো, মাইরি বলছি, তোমাকে ছাড়া একদিনও থাকতে পারি না। কি যাদু জানো বলতো প্রিয়া?  এরা যেন নারীকে বিলাসের উপকরণ ও ভোগ্য পণ্য রূপে ব্যবহার করেই কৃতার্থ। রন্টুদাকে জিজ্ঞাসা করবার আগে রন্টুদা বলে উঠলো, এ জায়গাটা ভালো নয়। কেদারদার বাড়ীর প্রবেশ পথ বড়ো নোংরা পরিবেশ। তাড়াতাড়ি পা ফেলে এগিয়ে চলো। রন্টুদা একটা গলির মধ্যে নিয়ে এলেন। কোন আলোর ব্যবস্থা নেই বলে একটা টর্চ বের করে এগিয়ে চললেন। আমি অনুসরণ করে চলেছি ওর পিছনে। ঐ অন্ধকারে মিনিট পাঁচের মধ্যে একটা বাড়ীতে প্রবেশ করলাম। বেশ বড় বাড়ীখানা।  রন্টুদা বললেন, এটা টাইপ মাস্টার মশায়ের বাড়ী। আর স্কুল হচ্ছে অন্য জায়গায়। আমার বাড়ী হতে বিশেষ দূর হবে না। তুমি এখানে একটু বোস, আমি ভেতরে গিয়ে খবর নিয়ে আসছি মাষ্টার মশাই

উপন্যাস - লাস্যময়ীর ছোবল || সিদ্ধার্থ সিংহ || Lashamayir Chobol by Sidhartha Singha || Fiction - Lashamayir Chobol part -10 ||অন্তিম পর্ব

Image
  দশ ঋজু বাড়ি ঢুকে দেখে বারান্দার গ্রিল ধরে ভারতী দাঁড়িয়ে আছে। এত বছর বিয়ে হয়েছে তার, ওকে কোনও দিন এই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেনি সে। তার খাবার, টেবিলে ঢাকা দেওয়া থাকে। অফিস থেকে ফিরে ও কাউকে ডাকাডাকি করে না। হাত-মুখ ধুয়ে, চুপচাপ খেয়ে নেয়। এঠোঁ বাসন রান্নাঘরের সিঙ্কে রেখে দেয়। কিন্তু আজ হঠাৎ এমন কী হল যে, রাত পৌনে একটার সময় তার বউ এই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। জুতো খুলতে খুলতে প্রশ্ন করল ঋজু, কী হল? শোওনি? — না। — কেন? — শুলে যদি ঘুমিয়ে পড়ি! তোমাকে বলার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। — কী? — ও ফোন করেছিল। — কে? — কণিকা। — কণিকা! আকাশ থেকে পড়ল ঋজু। বইমেলার ইউ বি আই অডিটোরিয়ামে যে দিন দীপ প্রকাশনের অতগুলি বই আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত হল, তার দু’দিন আগেই, কী কী বই বেরোচ্ছে, তার তালিকায় চোখ বোলাতে গিয়েই একটা নামে চোখ আটকে গিয়েছিল ঋজুর। এটা কী হল! ওর বইও বেরোচ্ছে নাকি! ঠিক তখনই মনে পড়ে গেল, তার দু’রবিবার আগেই সুবোধ সরকার ওর কাছে কণিকার ফোন নম্বর চেয়েছিলেন। ও ভেবেছিল, অন্যান্য বারের মতো এ বারও বুঝি হয় ল্যান্ড ফোন, নয়তো বি এস এন এলের ব্রড ব্যান্ড নিয়ে ওঁদের কোনও সমস্যা হয়েছে, তাই ওর নম্বর চাইছে। ও দিয়েছিল। সে দিনই সু