Posts

Showing posts from August, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -17

Image
  শ্যামলীদির মুখপানে তাকাতে তাকাতে এক সময় ওর দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্যাক্সিতে গিয়ে বসলাম। মনে তবুও ভয়, জানিনা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমায়। শ্যামলীদিকে বার বার জিজ্ঞেস করেও কোন উত্তর পাইনি শুধু ওর মুখ দিয়ে একথা শুনতে পেয়েছিলাম ওখানে গিয়ে দেখতে পাবো ।  দেবীবাবু নিজে ড্রাইভ করছেন । সোঁ সোঁ শব্দে পাশের বড় বড় মাথা উঁচু করে প্রতিযোগিতায় সামিল হওয়া বাড়ীগুলো পেরিয়ে যাচ্ছে । হাজার হাজার মানুষের মিছিলকে দুফাক করে তীরের মতো চলে যাচ্ছে গাড়ীখানা । বড্ড পাকা হাত দেবীবাবুর । ভয় যে পাচ্ছিলাম না তা নয় । ধীরে ড্রাইভ করতে বললাম । হয়তো আমার কথা তিনি শুনতে পেলেন না ।  দেখতে দেখতে একসময়ে একটা প্রকাণ্ড বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল গাড়ীখানা । দেবীবাবু আমাকে নেমে আসতে বললেন । আমি গাড়ী হতে মাটিতে নেমে প্রকাণ্ড বাড়ীটার পানে তাকিয়ে ভাবতে থাকি এখানে কিসের জন্য এলাম । ওর কথায় ভাবনাকে দূরে সরিয়ে ওকে অনুসরণ করতে করতে হাজির হলাম ঐ প্রকাণ্ড বাড়ীটার তিন তলার উপরে । আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে , কি কারণে , তা জানার জন্য মনে কোন স্পৃহা জাগেনি । ওকে অত্যন্ত অন্তরঙ্গ মনে করে ওকে অনুসরণ করে যাচ্ছি ।  দেখ

ছোট গল্প - উপলব্ধি || লেখক - সিঞ্চিতা বসু || Short story - Upolobdhi || Written by Sinjita basu

Image
  উপলব্ধি সিঞ্চিতা বসু   রান্নাবান্না শেষ করে বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই দৃশ্যটা চোখে পড়লো l দুর্গন্ধটা সকাল থেকেই নাকে লেগে আছে,কিন্তু এখন চোখে দেখে গা গুলিয়ে উঠলো পরমারl সমীর কর্মচারীদের তোয়াক্কা না করেই কাজে হাত,লাগিয়েছে l সামনে স্তূপীকৃত শুকনো গোবর,পাতা পচানো সার,ডিমের খোসা l দুজন লেবার ডিমের খোসাগুলোকে গুঁড়ো করছে l এছাড়া একটা বড়ো ড্রামে জমা আছে ফল সব্জির খোসা,মাছের আঁশ ইত্যাদি রান্নাঘরের ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে তৈরি কম্পোস্ট l ড্রামটা ঢেলে ফেলা হয়েছে উঠোনের মাঝখানে l বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকে গেল পরমার- এতো বার বলা সত্ত্বেও সমীর গ্লাভস পড়েনি l দুহাতে গোবর মাখা,গামছা পরা সমীরকে দেখে কেউ বিশ্বাস করবে না যে এই লোকটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা l পাঁশকুড়া তে তাদের এই ফুল ফলের নার্সারী জন্ম সমীরের দাদুর হাতে l দুই পুরুষ ধরে তিল তিল করে বেড়ে ওঠা  'মহামায়া নার্সারি'র খ্যাতি অনেকখানি বৃদ্ধি পেয়েছে সমীরের হাত ধরে l শ্বশুর মশাই অবশ্য এটাই চেয়েছিলেন, আর সেজন্যই বিজ্ঞানসম্মতভাবে শিখে আসার জন্য ছেলেকে প্রায় জোর করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন পড়াশোনার জন্য l নার্সারি

ছোট গল্প - রূপনারায়ণের ঘাট || লেখক - দর্পণা গঙ্গোপাধ্যায় || Short story - Rupnarayaner Ghat || Written by Dorpona Gongopadhay

Image
  রূপনারায়ণের ঘাট     দর্পণা গঙ্গোপাধ্যায় নবগ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বাড়ি শুভদীপের পুরনো আমলের সাবেকি বাড়ি। রাম বিলাস বাবু শুভদীপের বাবা ।একদিক সারিয়ে দোতলার চারটি ঘরে বসবাস করেন।  শুভদীপ তার একমাত্র পুত্র । বাড়ির পশ্চিমে পুকুর ,পূর্বে বড় উঠোন ,দক্ষিণে ক্ষেত, উত্তর দিকে রাস্তা ,-রাস্তার ওপারে আবার ক্ষেত সবুজে সবুজ। রাম বিলাস বাবুর দাদুর আমল থেকেই বাড়ি প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। তাই দেশভাগের পর নিচের ঘর গুলো বাংলাদেশ থেকে আসা পরিবারগুলোকে ভাড়া দিয়ে দেন।  শুভদীপ দের নিচের ঘরেও বিগত পাঁচ বছর আগেও চারটি ঘরে চারটি ভাড়াটে ছিল। অনেক কষ্ট করে উহাদের তুলে নিচের ঘর চারটে  সারানো হয়েছিল। প্রতিটি ঘরের কোলে বড় দালান যে যার ঘরের দালানে তারা রান্না করত, বাইরে পুকুর উঠোনে কুয়ো,এই ছিল জলের ব্যবস্থা। আজ থেকে 35 বছর আগে বাঁশ বাগানেই অপকর্ম চলত। দিন বদলালো সবাই বাথরুমের অভাব অনুভব করতে লাগলো। বিশেষ করে শহুরে নতুন বউ শুভদীপের  মায়ের, তাই ওপরের একটি ঘরে আলাদা করে প্যান বসিয়ে পাইপ নামে নিচে পাৎকো সিস্টেম করে পায়খানা ও জল জমার জন্য একটা গর্ত খুঁড়ে ড্রেনিং সিস্টেম এবং কূয়ো থেকে ছাদের উপরে

উপন্যাস - তান্ত্রিক পিসেমশাই ও আমরা দুজন || সুদীপ ঘোষাল || Tantrik Pisemosay oo Amra by Sudip Ghoshal || Fiction - Tantrik Pisemosay oo Amra Dujon Part -5

Image
  ৯ দাদু বললে, কি করে মাঠে এত জল  এল  আজ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি। শরীরটা ছিল।সে সম্ভোগে ব্যস্ত।দেহের অণু পরমাণু  অংশ ভিজে।কিন্তু মন যে শুষ্ক।মনের শূণ্য অংশও অধিকারে নেই তার।সে ছুটেছে পদ্মবনে। সেখানে তার রূপ দর্শনে মোহিত তার মন। এদিকে শরীরলোভি সে খবর রাখে না। ভিজে ভিজে ভালোলাগা শেষে বিরক্তির বিশ্রাম।আর মনলোভি নাগর দখল করে নেয় প্রিয়ার মন। শরীরে তার আসক্তি নেই।ক্ষণিকের আনন্দ নয়, অসীম আনন্দের অনুসন্ধানী তার মন।  মনোজকে চিনু একটা রাজার গল্প বলেছিল। চিনু বলেছিলো, এক ছিলো রাজা।সে প্রজাদের রক্ত খেতো।তাদের পরিশ্রমের ফসলের সবটুকু হরণ করে নিত।প্রজারা বেঁচে থাকার জন্য পালিয়ে যেতে  শুরু করলো।শয়তান, রাজাকে অন্ধকার জগতে নিয়ে যেত।সে ঝগড়া কলহ নিয়েই ভালো থাকত।প্রজারা তার অন্ধকারের দাসত্ব স্বীকার না করলেই তাকে সুস্থভাবে বাঁচতে দিত না।আলোর পরশ সহ্য করার ক্ষমতা রাজার ছিলো না।অত্যাচারী,ভন্ড ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে উঠলো। একদিন প্রজাদের প্রার্থনায়  এলো আলোর ফেরিওয়ালা।তার আলোতে আলোকিত প্রজারা তার কাছে ভালো পরামর্শ পেতো।মানুষকে শান্তিতে বাঁচার স্বপ্ন দেখাতো সে।  একদিন আলোর ফেরিওয়ালাও বন্দি হলো রাজার কারাগারে,নিষ্ঠুর অন্ধ

ছোট গল্প - লক ডাউন || লেখক - অমিতাভ ভট্টাচার্য্য || Short story - Lockdown || Written by Amitabh Bhattacharya

Image
  লক ডাউন অমিতাভ ভট্টাচার্য্য সকালবেলা চা খেতে খেতে প্রণবেশ ওর ফোনে পর পর দু’টো মিস কল দেখতে পেল। দেবাশিষ ফোন করেছিল ভোর পাঁচটার সময়। এতো সকালে ফোন করল কেন? কোন খারাপ খবর নয়তো? প্রণবেশ বরাবরই ভীতু স্বভাবের। খুব ঘাবড়ে গেল। কী করবে ভেবে পাচ্ছেনা। মৈণাক আর বিদীপ্তা এই সময় ঘুম থেকে ওঠেনা। অনেক রাত পর্য্যন্ত জেগে ওরা কাজ করে। আজকাল বাড়িতে বসে কাজ করার একটা সুন্দর নাম হয়েছে; ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। ওরা দুজনেই আইটি সেক্টরে কাজ করে। বিশ্ব জুড়ে অতিমারির প্রকোপে অফিসগুলো সব বন্ধ রয়েছে। আইটি সেক্টরে কাজ করে বলে ওদের দুজনের চাকরিটা এখনও টিঁকে আছে। দেবাশিষের একমাত্র মেয়ে সুদেষ্ণার চাকরিটা আর নেই। ও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে এইচ আর ম্যানেজারের পোষ্টে চাকরি করত। লক ডাউনের জন্য বেশ কিছুদিন অফিস বন্ধ ছিল। তারপর কোম্পানি কর্মী ছাঁটাই শুরু করে। যাদের ছাঁটাই করল, তাদের যে ক’মাস বসিয়ে রেখেছিল সেই মাসগুলোর মাইনেও দিলো না। দেবাশিষের মেয়ে সুদেষ্ণা ছিল ঐ ছাঁটাইয়ের দলে। একমাত্র দেবাশিষের পেনশন এখন ওদের ভরসা। ওর কি টাকার দরকার পড়ল?  প্রণবেশের সাথে দেবাশিষের পরিচয় হয় মর্নিং ওয়াক করার সময়। প্রণবেশ ছোটবেলা থেকে যথেষ্ট স্

ছোট গল্প - তৃতীয় কৌরব || লেখক - দীপক কুমার মাইতি || Short story - Tritiyo Kourav || Written by Dipak Kumar Mayti

Image
    তৃতীয় কৌরব দীপক কুমার মাইতি    সভাকক্ষ তখনও তাচ্ছিল্যের হাসি লেগে রয়েছে কর্ণ ,দুর্যোধন প্রভৃতির মুখে। একটু আগে দুঃশাসন রজস্বলা, একটি মাত্র বস্ত্র পরিহিতা দ্রৌপদীর কৃষ্ণকুঞ্চিত কেশ মুঠিতে ধরে টানতে টানতে ‘এই দাসী, দাসী’ বলতে বলতে সভায় নিয়ে এসেছে। দ্রৌপদী চিৎকার করে তাঁকে হেনস্থার বিচার চাইছিলেন। তখন দুর্যোধন অট্টহাসি হাসছেন – তোমার স্বামী তোমাকে পাশায় পণ রেখে হেরে গিয়েছেন। এখন আমি তোমার প্রভু। সভাসদের কী বলবেন?       দ্রৌপদী পুনরায় বলেন – সভায় উপস্থিত কুরুরাজ মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র, পিতামহ ভীষ্ম, মহামন্ত্রী বিদুর, মহাগুরু দ্রোণ, পুজ্যপাদ কৃপাচার্য প্রভৃতির কাছে প্রশ্ন, এই কপটচারী,ধূর্ত-পাপাত্মারা ভাবে ছলে-কৌশলে ধর্মরাজকে পাশা খেলতে রাজি করিয়েছে। কপটভাবে তাঁর সর্বস্ব জিতে নিয়েছে। তিনি প্রথমে ভাইদের, পরে নিজেকে বাজি রেখে হেরে গিয়েছেন। তারপর আমাকে বাজি রেখে হেরেছেন। আমি জানতে চাই, নিজে হেরে যাওয়ার পর মহারাজ যুধিষ্ঠিরের আমাকে পণ রাখার অধিকার কী তাঁর ছিল? এই পণ রাখা ধর্মানুসারে কী অনুমোদিত?       সবাই চিন্তিত। মহামতী ভীষ্ম বললেন – ধর্মের গতি অতি দুর্বোধ্য। তাই এই প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই