Monday, May 30, 2022

টাটা কোম্পানিতে নিয়োগ হবে 1 লক্ষ পদে || Tata consultancy Recruitment 2022 || TCS Recruitment 2022

 





আবার নতুন কর্মী নিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। টানা দু'বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য অনেক কোম্পানি বা সংস্থা থেকে কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। এবার নতুন সুযোগ এসেছে টাটা কোম্পানির হাত ধরে। সমগ্র দেশে এই সংস্থার নিয়োগে সুযোগ রয়েছে। নিয়োগ টি হবে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (TCS) এর কর্মী হিসেবে। আমাদের রাজ্যের পুরুষ ও মহিলা সকলেই এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। সব থেকে বড় সুযোগ এখানে কাজ করতে হতে কোনো রকম কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতার দরকার নেই। বেতন পাবেন অনেক। নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-


বিশ্বের একটি বৃহৎ সংস্থা হল টাটা। আমারা জানি ভারতেও এর থেকে বড় সংস্থা তেমন নেই। এই টাটা কোম্পানির একটি বৃহত্তম সংস্থা TCS অর্থাৎ কনসালটেন্সি সার্ভিস। এই সংস্থায় প্রায় অনেক সময় ধরে কর্মী নিয়োগ হয়। অধিকাংশ চাকরি অফিসিয়াল।   
সম্পূর্ণ ফ্রেশাররা আবেদন করতে পারবেন।

বয়স:  18 থেকে 45 বছরের মধ্যে আপনার বয়স হলেই আপনি এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

আমাদের দেশে তথা আমাদের রাজ্যে এই সংস্থার অনেক কার্যালয় রয়েছে বিভিন্ন শহরে। এইসব সংস্থাগুলো পরিচালনা করার জন্য প্রচুর পরিমাণে কর্মী নিয়োগ করা হয় ভারতের প্রতিটি রাজ্য থেকে।

গত বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা জেনেছি এই সংস্থায় 40000 নতুন কর্মী নিয়োগ হয়েছে ।  আবার নতুন এক লক্ষ কর্মী নিয়োগ করা হবে, যা সংস্থার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারি। সব থেকে বড় ব্যাপার তারা এখানে চাকরি করার সুযোগ পাবেন তাদের লাইফ পুরো সরকারি চাকুরিজীবী দের মত হবে।এখানে সমস্ত ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা খাওয়া ও অন্যান্য ভাতা পাবেন‌



মোট শূন্যপদ: এই বছর এক লাখ কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে।

প্রথমার্ধে ৪৩০০০ ফ্রেশার নিয়োগ।

তারপর অক্টোবর-ডিসেম্বরের প্রান্তিকে ৩৪০০০ ফ্রেশার নিয়োগ।

তৃতীয় প্রান্তিকে ২০০০০ অ্যাপয়েন্টমেন্ট।

চতুর্থ প্রান্তিকে ৩০০০০ নিয়োগ।

এই ভাবে সব মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষের বেশি কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে। 


যোগ্যতা:- 
 সমস্ত চাকরি প্রার্থীকে অবশ্যই উচ্চমাধ্যমিক অথবা স্নাতক পাস করে থাকতে হবে। তবে এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।



আপনি যদি আরও বিস্তারিত জানতে চান এবং এখানে আবেদন করতে চান তাহলে নীচে দেওয়া TCS এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে  ভিসিট করুন। 

Official website:-


Sunday, May 29, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -4


 


সুরজিৎ বাবু অতি আনন্দিত হলেন। সুমন্ত গ্রামের গৌরব। সে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফার্স্ট ডিভিসনে পাস করেছে। প্রতিটি সাবজেক্টে ৯৩ পারসেন্ট নাম্বার আছে। তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন সমুন্তকে যাতে ডাক্তারী পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন।


  তিনি বললেন, সুমন্তর কাছে মত নিতে। কারণ সংসার যদি বিচ্ছিন্ন না হতো তাহলে গলা হাঁকিয়ে বলতে পারতেন। বাবা, সুরজিৎ বাবুকে বলেছিলেন, সুমন্তকে ডাক্তারী পড়াতে হলে যদি পথে বসতে হয় তাতেও তিনি রাজী আছেন। স্বপ্ন পূরণ করা তার কর্তব্য। তাই অসহনীয় নির্যাতন সহ্য করেও পিছু হটবেন না। সুমন্তকে ডাক্তারী পড়াবেন এ তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।


 দাদাকে ডাকা হলো, দাদা বলতে সুমন্তদা একাই। দ্বিতীয় কোন ভাই ও বোন ছিল না আমার। দুই ভাই বোনকে জন্ম দিয়ে মা পৃথিবী হতে চিরবিদায় গ্রহণ করছিলেন অনেক আগে। মা বিদায় নিয়ে ভালই করেছিলেন। নতুবা পরিনতি ভয়াবহ হতো তা অজানা নয়। এখন ও পরের কথা। 


সুমন্তদা বাবার কাছে হাজির হতে বাবা খোলাখুলি আলোচনা করলেন। সে সময় সুরজিৎ বাবু উপস্থিত ছিলেন। দাদা কোন মতেই রাজী হতে চাইলেন না। বারবার এক কথা ও স্বপ্ন দেখে কি লাভ। একান্নবর্তী পরিবারে থাকলে তার বাবার ইচ্ছা পূরণ করা যেত। এখন তাদের ছন্নছাড়া জীবন। অভাব অনটন ও দারিদ্রই তাদের জীবনের নিত্য সহচর। ডাক্তারী পড়তে হলে কত টাকা যে খরচ হবে তার হিসেব নেই। শেষ কালে কি পথে বসবে তারা?  


সুরজিৎ বাবু বুঝিয়ে বললেন। যদি বা বাবার কথা কাটতে পারতো বিশেষ করে সুরজিৎ বাবুর কথা কাটতে পারলেন না। তিনি বললেন, শুধু তোমার বাবার স্বপ্ন নয় সুমন্ত, প্রতিটি গ্রামবাসীর ইচ্ছা তুমি ডাক্তারী পাস করে গ্রামবাসীদের মৃত্যুর কবল হতে রক্ষে করবে। জানতো, কোন ডাক্তার এই পল্লী অঞ্চলে আসতে চায় না। কারণ ডাক্তারী পাশ করার সময় শহরের সাথে বন্ধুত্ব পাতিয়ে পল্লী অঞ্চলে চেম্বার করতে তাদের অত্যন্ত অনীহা থাকে। আমরা তোমাকে কোলে - পিঠে মানুষ করেছি। যদি শহর হতে আসতে ইচ্ছে না করে জোরপূর্ব্বক গ্রামে আনার ক্ষমতা আমাদের আছে। তবে গ্রামে যদি আশানুরূপ রোজগার না হয় তাহলে শহরে সপ্তাহে চারদিন থাকলে, গ্রামে হয়তো তিন দিন এসে চেম্বারে বসলে গ্রামের অনেক উপকার হবে। 


তারপর কি জানো তোমার ঠাকুরদা স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রেমাংশুকে ডাক্তার করে গ্রামের অভাব পূরণ করবেন। কিন্তু ভাগ্যচক্রে এ রকম যে বিপর্যয় হবে কেও কি কোনদিন কল্পনা করেছিলো? 


সুমন্ত মাষ্টার মশায়ের সব কথা শুনে বললো, তা না হয় হলো, কিন্তু বাবার যে সম্পত্তি আছে ওতে শেষ পর্যন্ত পেরে উঠতে পারবেন কি?


সুরজিৎ বাবু বললেন, কোন ভয় নেই তোমার। তোমার বাবা যদি শেষ পর্যন্ত পেরে উঠতে না পারেন, আমি তোমাকে সাহায্য করব। সেজন্য তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো।  


সুমন্তদা আরো কিছু বলার জন্য সচেষ্ট হতে থাকে। কিন্তু বিরুদ্ধ অন্তরের কথাকে কোন প্রকারে বাঙ্ময় করতে পরলো না। এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। 


  সুরজিৎ বাবু বললেন পুনরায়, সুমন্ত, তুমি আর বিলম্ব করো না। আগামীকাল আমার কাছে যাবে, নীহার বাবুর সাথে আলোচনা করে ওর সাথে কলকাতা পাঠিয়ে দেব।


 সেদিন আর আলোচনা না করে সুরজিৎ বাবু আপনি বাড়ি পানে পা বাড়ালেন। দাদার ডাক্তারী পড়ার সব রকম আয়োজন হলো। বাবা গ্রামীণ মানুষ, দিনক্ষণকে ভীষণ মানেন। তাই পাড়ারই একজন এ্যাস্ট্রোলজারকে দিয়ে ভালো দিন দেখিয়ে পাড়ারই বিশিষ্ট ব্যক্তি নীহার বাবুর সাথে কলকাতা পাঠিয়ে দিলেন। ভর্তি হতে কোন বাধা হলো না।


 তিনি বলেছিলেন, সমুন্তর ভাগ্য অত্যন্ত সুপ্রসন্ন। ডাক্তারী পাশ করার জন্য কোন বাধা বিঘ্ন নেই। সে সুন্দরভাবে ডাক্তারী পাশ করে গ্রামে ফিরে আসবে। সেই এ্যাস্ট্রোলজারের কথা মনে ছিলো বলে বার বার তার চরণে প্রণাম জানিয়ে ইচ্ছে করছিল। এ জন্য যে, দাদা সুস্থ সকল শরীরে ডাক্তারী পাশ করে বাড়ীতে এসেছিলো বলে। একটু ধৈর্য্য ধরুন পরের পর সবই জানতে পারবেন। কারণ আমি মনযোগে লিখে চলেছি। ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছি পরের পর ঘটনাকে কেন্দ্র করে।


 দাদা শুভ দিনে কলকাতায় ভর্তি হলো। বাবা ও সুরজিৎ বাবু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। কারণ দাদার মোটেই ইচ্ছে ছিলো না ডাক্তারী পড়বার। তাকে জোর পূর্ব্বক ইচ্ছার বিরুদ্ধে ডাক্তারী পেশায় যেন নামানো হলো। এ কথা শুনে মেজকাকা জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু কেন যে আমাদের প্রতি এতো হিংসে হয়েছিলো তা বুঝতে পারিনি। বাবা জমিদার পরিবারের আভিজাত্যকে পরিত্যাগ করে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে কায়িক পরিশ্রমের পথ বেছে নিলেন।

 

সেই সময় ভাবতে বড় আশ্চর্য লাগছিলো, যে মানুষটা চব্বিশ ঘন্টা জঙ্গলে পড়ে থাকতেন, বন্য জন্তুর পিছনে সর্বদাই ছোটাছুটি করতেন। সে মানুষটা যে এরূপ পাল্টে যাবে কোন দিন ভাবতে পারিনি। 


আমাকে পড়াশুনা ছাড়তে হলো। স্কুল ফাইনাল পরীক্ষার পর এগোতে পারলাম না। বাবার পরিশ্রমের পয়সাতে সুন্দরভাবে সংসার চালাতে চেষ্টা করলাম। একদিন কোথা হতে ছোট কাকা উদয় হলেন; প্রথমে তাকে চিনতে পারিনি। শরীর একেবারে ভেঙ্গে গেছে। তিনি যে এতো রোগা হয়ে যাবেন কল্পনা করিনি। কাকা ছিলেন সুপুরুষ, তেজদীপ্ত চেহারা ও দেহে আভিজাত্যের ছাপ। গ্রামের অধিকাংশ লোকই ছোট কাকার চেহারা নিয়ে প্রশংসা করতেন। কিন্তু ছোটকাকার ঐ রূপ রোগা শরীর দেখে চোখ দুটো যেন গাম আঠা দিয়ে চিটিয়ে রেখেছিলেন। 


ছোটকাকা এসেই বললেন, কিরে রমা আমায় চিনতে পারছিস না? কি করে পারবি বল, আমি যে তোদের বংশের নাগাল হতে অনেক দূরে সরে গেছি। দুর্ভাবনায়, দারিদ্রতায় নিজেকে তিলে তিলে দগ্দ করছি। ভগবান যে আমাকে এতো কঠোর নির্যাতন দেবেন তা কোন দিনই মনে আনিনি। সবই ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস ছাড়া কিছু নয়রে। 


ছোট কাকা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পুনরায় বললেন, জানি না জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করে কি পাপ করেছি। সেই পাপের যন্ত্রণা প্রতিটি শিরা , উপশিরায় প্রবেশ করে আমাকে মৃত্যুমুখী করে তুলেছে।


 আমি ছোট কাকার কথাগুলো শুনে শোকাহত যে হলাম না তা নয়। আমাকে মনমরা হতে দেখে তার দুঃখের কাহিনীকে অন্তরালে চাপা দিয়ে বললেন , তা হ্যাঁরে তোর বাবা কোথায়?


বললাম, বাবা উপার্জনে গেছেন। 


কি বলছিস তুই ? তবে কি মেজদা, বড়দাকেও ফাঁকি দিয়েছেন? 


আমি নীরব ছিলাম। মেজকাকাকে নিয়ে নানা কটু কথা বললেন তাঁর নিষ্ঠুরতার জন্য। যদি কোন দিন সবল হতে পারেন তাহলে একদিন বদলা নেবেন। এখন ছোট কাকা ভাগ্যের বিপর্যয়ে পর্যুদস্ত পরে যেদিন ঈশ্বর ওর মুখপানে তাকাবেন সেদিন, এদিন তার থাকবে না। বাবা একটু পর বাড়িতে এলেন। কাকার দূরাবস্থার কথা শুনে প্রচুর দুঃখ পেলেন। কাকার আগমন বার্তা শুনলেন। বাবা যদি কিছু আর্থিক দিক দিয়ে সাহায্য না করেন তাহলে কাকা অসহায়ভাবে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবেন।


 কাকার দুঃখে বাবা কাতর হয়ে পড়লেও সাহায্যের উদার হস্ত প্রসারিত করলেন। যেটুকু দিয়ে সাহায্য করলেন তা বহু কষ্টের উপার্জিত অর্থ। দাদার ডাক্তারী পড়ার ব্যবস্থা না করে বাবা আরো আর্থিক সাহায্য দিয়ে প্রকৃত ভ্রাতৃ প্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারতেন।


 দাদার ডাক্তারী পড়া কথা শুনে ছোট কাকা অত্যন্ত আনন্দিত হলেন। বিশেষ করে আনন্দিত হয়েছিলেন এ কারণে, ঠাকুর্দার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে বলে তিনি আর অপেক্ষা না করে বেরিয়ে পড়তেই বললাম, ছোট কাকা একটু দাঁড়াও আমি আসছি। 


দ্রুত বেগে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে বাক্স হতে এক জোড়া কানের দুল বের করে তার হাতে দিলাম। ছোট কাকার চোখ দুটো বাষ্পাকূল হলে আমাকে শান্ত স্বরে

বললেন, আমার অবস্থা এখন চরম সীমানায় উপস্থিত হয়েছে। তবুও তোর কানের দুল দুটো নেবার কোন স্পৃহা আমার নেই। তুই রেখে দে রমা, একদিন দারুন কাজে লাগবে। আমি জানি এই দুটো নিলে আমার অভাব মিটবে না। কিন্তু তোরা যে শপথ নিয়ে যে পথের যাত্রী হয়েছিস আমারও কর্তব্য ছিলো তোদেরকে সাহায্য করা। দুল দুটো রেখে দে মা।


 আমি বললাম, আমরা ঠিকই এগিয়ে যাবো ছোট কাকা তোমাদের আশীর্বাদে এ দুটো নাও, এ সময় টাকার প্রয়োজন তোমার। খোকনকে বাঁচাতেই হবে । সেও তো আমার ভাই। তোমাকে নিতেই হবে এ দুল দুটো।


 বার বার অনুরোধে আমার কথা কাটতে পারলেন না। শুধু ঠোঁটে হাত দিয়ে আমাকে বললেন, তুই আমার মায়ের কাজ করলি রমা। তবে এই চন্দ্র সূর্য্যকে সাক্ষী রেখে শপথ করে বলছি, ঈশ্বর যদি কোন দিন আমার প্রতি সদয় হয়ে থাকেন, তাহলে আমার মায়ের ঋণ শোধ করবই। এই ঔ


 ছোট কাকা আর দাঁড়াননি ওখানে। ছল ছল চোখে স্থান ত্যাগ করলেন। তিনি স্থান ত্যাগ করতে আমারও চোখ দুটো ছল ছল করে উঠলো ও বার বার তার মলিন মুখখানি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। ওকে অনুসরণ করে দাদুর স্মৃতি মনে উদিত হয়ে আমাকে ভীষণ ব্যাকুল করে তুললো। কি ছিলো আমাদের অবস্থা আর কি হয়েছে। এখন কোন অপরিচিত লোকদের যদি বলে থাকি, আমি জমিদারের নাতনী, কেউ বিশ্বাস করবে না! সকলে হেসে উড়িয়ে দেবেন। সেদিন কি আর ফিরে আসবে । জানি না এরপর ঈশ্বর আর কোন ভাগ্যবিপর্যয়ের জাল ফেলবেন। অতীত মনে পড়লে কিছুক্ষণ মনকে উতলা করে একটু পরে দীর্ঘশ্বাস ফেলে শান্তির আস্বাদ মিটিয়ে থাকি। ধীরে ধীরে আমাদের অভাবের সংসার এগিয়ে চললো।



                                                ক্রমশ...


তৃতীয় পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

Click here 🔴



পঞ্চম পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন--

Click here 🔴

Friday, May 27, 2022

দুয়ারে সরকার প্রকল্পে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কাজে নতুন কর্মী নিয়োগ || Data Entry oparator Recruitment 2022 || WB government jobs news


 



পশ্চিমবঙ্গে চাকরি প্রার্থীদের জন্য নতুন সুখবর। প্রতিটি বেকার চাকরি প্রার্থীদের জন্য নতুন আশা দেখাচ্ছে দুয়ারে সরকার। রাজ্যে চালু হওয়া দুয়ারে সরকার প্রকল্পে কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্লকে ব্লকে প্রচুর ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে। চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-




পদের নাম - ডেটা এন্ট্রি অপারেটর।


কি কি কাজ করতে হবে-


রাজ্যে চলছে 'দুয়ারে সরকার' প্রকল্প। তাই ব্লকে ব্লকে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প বসছে। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে স্বাস্থ্য সাথী, লক্ষী ভান্ডার ও আরও বহু প্রকল্পের ফর্ম গুলি রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে। সেখানে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর এর কাজের জন্য লোক নেওয়া হচ্ছে।



বেতন-

এখানে মোটা টাকার দৈনিক মজুরি দেওয়া হবে। দৈনিক 500 টাকা দেওয়া হবে। 



কি কি যোগ্যতা লাগবে-

তেমন কোনো উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন নেই। শুধু ডেটা এন্ট্রি জ্ঞান, সামান্য ইন্টারনেট সম্পর্কে জ্ঞান এবং স্বচ্ছ বানান লেখার ক্ষমতা থাকলেই হবে। এই কাজের আপনার অবশ্যই laptop থাকতে হবে।



 আবেদন পদ্ধতি---

এখানে অফলাইন ও অনলাইন কোনো রকম আবেদন পত্র জমা করতে হবে না। সরাসরি নিজের নিজের ব্লক অফিসে গিয়ে ডাটা এন্ট্রির কাজের আধিকারিকে এর সাথে যোগাযোগ করুন।  যদি বর্তমানে আপনার এলাকায় ডেটা এন্ট্রি লোক লাগে এবং আপনি যদি এই কাজের উপযুক্ত হোন তাহলে আপনাকে কাজ দেওয়া হবে এবং সম্পূর্ণ কাজের তথ্য আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।


বি.দ্র- এই নিয়োগ টি কোনো সরকারি নোটিশ এ বের হয় না। নিয়মিত খোঁজ রাখুন আপনার ব্লকে। যদি লোক প্রয়োজন হয় তাহলে আপনার সুযোগ আসতে চলেছে।

জয় হিন্দ। জয় ভারত।🙏🙏🙏



 

Thursday, May 26, 2022

উপন্যাস - লাস্যময়ীর ছোবল || সিদ্ধার্থ সিংহ || Lashamayir Chobol by Sidhartha Singha || Fiction - Lashamayir Chobol part -3


 

তিন


কয়েক সপ্তাহ আগে বিধান দত্তের সঙ্গে সুন্দরবন গিয়েছিল ঋজু। বিধানদা কবিতা লেখেন। গল্প লেখেন। ফিচার লেখেন। বিখ্যাত লেখকের উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে দেখানোর জন্য অনেকে যেমন এক-দেড়শো বছর আগেকার কোনও বিখ্যাত লেখকের মেয়ের দিকের অমুক ঘরের তমুক হিসেবে নিজের মিথ্যে মিথ্যে পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেন, কেউ কেউ আবার আরও এক ধাপ এগিয়ে, নমস্য কোনও লেখকের চোদ্দোতম বা ষোড়শতম বংশধর হিসেবে নিজেকে দেখিয়ে একটা ভুয়ো বংশ তালিকা তৈরি করে ফেলেন। ঠিক তেমনি, উনি কোন ঘরানার লেখক, তা বোঝানোর জন্য, দু’-চার পুরুষ আগের তেমন কোনও বিখ্যাত কবি বা লেখক না পেয়ে, শুধুমাত্র পদবির মিল দেখেই উনি আকড়ে ধরেছেন স্বয়ং মাইকেল মধুসূদন দত্তকে। তাঁর নামে একটা আকাদেমিও ফেঁদে বসেছেন। সেই আকাদেমি থেকে প্রতি বছর এক ঝাঁক কবি-লেখক-সাংবাদিককে পুরস্কার দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে তেমন লোককেই বাছা হয়, যার যোগাযোগ খুব ভাল। তার যোগাযোগের সূত্র ধরেই যাতে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ওই অনুষ্ঠানের খবর ফলাও করে ছাপা হয়। ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ারা আসে। 
গত বছর যখন এই অনুষ্ঠান হয়, তার কিছু দিন আগে বিধানদা ঋজুকে বলেছিলেন, কয়েকটা পার্টি জোগাড় করে দাও না।
ঋজু অবাক। — পার্টি মানে?
উনি বলেছিলেন, তোমার তো বহু লোকের সঙ্গে জানাশোনা আছে। একটু বলেকয়ে দেখো না, কেউ যদি রাজি হয়।
তখনই ঋজু জেনেছিল, মাইকেল মধুসূদন আকাদেমি থেকে প্রতি বছর মহাধুমধাম করে কখনও গ্রেট ইস্টার্নে, কখনও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ শতবাষির্কী ভবনে, আবার কখনও টাউন হলে যে অনুষ্ঠান হয়, সেখানে প্রচুর টাকা খরচ হয়। বিদেশ থেকে যাঁরা আসেন, তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। কাউকে কাউকে তো যাতায়াতের বিমান ভাড়াও দিতে হয়। তার উপর আছে হল ভাড়া। অনুষ্ঠানের দিন অত লোকের জন্য খাবারের প্যাকেট। আমন্ত্রিতদের জন্য স্পেশ্যাল প্যাকেট। কিন্তু আকাদেমির তো অত টাকা নেই। তাই, উনি যাঁদের পুরস্কার দেবেন বলে ভাবেন, তাঁদের সঙ্গে আরও কিছু লোককে উনি পুরস্কার দেন। অবশ্যই একেবারে এলেবেলে লোককে নয়, যাঁর কিছু অবদান আছে, এবং আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট স্বচ্ছল, তেমন লোককে। তাঁদের সঙ্গে আগেই উনি কথা বলে নেন, আপনাকে আমরা পুরস্কার দিচ্ছি, কিন্তু এই অনুষ্ঠানের যে বিপুল খরচ, তার অন্তত কিছুটা আপনাকে ডোনেট করতে হবে। এই শর্তে নাকি বহু লোকই রাজি হয়ে যায়।
দু’-এক দিন পর পরই বিধানদা ফোন করেন, কাউকে পেলে? ঋজুর ভাল লাগে না। ভাবে, কাকে বলব! কী ভাবে বলব! এমন সময় মনে পড়ে গেল গৌর মিত্রের কথা।
ঋজু এক দিন কথায় কথায় ওর অফিসের দেবদূতদাকে বলেছিল, ওর বউয়ের অর্থপেডিক সমস্যার কথা। সেই কবে, বিয়েরও আগে, বড় নালা টপকাতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিল সে। গোড়ালি থেকে সরে গিয়েছিল হাড়। তিন-চার বার প্লাস্টার করা হয়েছে। বহু ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। এখনও রাতের দিকে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। পেন কিলার খেয়ে দিন কাটায়।
দেবদূত কোনও কথা বলেননি। খসখস করে দু’লাইন চিঠি লিখে দিয়েছিলেন এনআরএসের সুপারিনটেন্ডকে। বলেছিলেন, কালই চলে যাস। ও সব ব্যবস্থা করে দেবে।
বউকে নিয়ে পর দিনই ও গিয়েছিল হাসপাতালে। সুপারিনটেন্ড তখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিঙে ব্যস্ত। কখন ফাঁকা হবে কেউ বলতে পারছে না। ঋজু তাই বেয়ারাকে দিয়ে দেবদূতের লেখা চিঠিটা সুপারিনটেন্ডের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে ভিতরে ডেকে নিয়েছিলেন তিনি। ওখানকারই একজনকে সঙ্গে দিয়ে বলেছিলেন, আমি এখন একটু ঝামেলার মধ্যে আছি। কিছু মনে করবেন না। ইনি হচ্ছেন গৌরবাবু। আপনাকে নিয়ে যাচ্ছেন। উনিই সব ব্যবস্থা করে দেবেন। দেবদূতবাবু ভাল আছেন তো?
করিডর দিয়ে যেতে যেতে গৌরবাবু নানান প্রশ্ন করছিলেন। কী নাম? কোথায় থাকেন? সুপারকে চিনলেন কী করে? কী করেন?
যে-ই শুনলেন, ঋজু আনন্দবাজারের লোক, অমনি তাঁর চেহারা পাল্টে গেল। কাঁচুমাচু হয়ে বলতে লাগলেন, আচ্ছা, আপনাদের রবিবারের পাতায় গল্প দিতে গেলে কী করতে হয়?
তার পর থেকে আর সঙ্গ ছাড়েননি উনি। ডাক্তার দেখানোর পর নিজের ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন ওদের। চা খাইয়েছিলেন। উনি নাকি বহু দিন ধরে গল্প লিখছেন। উপন্যাসও লিখেছেন। দশ-বারো বছর আগে তাঁর একটা বই বেরিয়েছিল। এ বছর বইমেলাতেও একটা বই বেরিয়েছে। লাস্ট বইটার একটা কপিও তিনি সে দিন ওদের উপহার দিয়েছিলেন। বইটার মলাটে লেখকের নাম দেখেই ঋজু জেনেছিল, লোকটার পদবি মিত্র। গৌর মিত্র। বাসে ফেরার সময় উল্টেপাল্টে দেখেওছিল বইটা। না। আহামরি নয়। তবে খুব একটা খারাপও নয়।
এ দিকে বিধানদা বারবার তাকে তাগাদা দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানের দিন এগিয়ে এসেছে। হাতে আর সময় নেই। যে যা দেয়, দেখো না... ঋজু বুঝতে পারছে, যতক্ষণ না ও কাউকে জোগাড় করে দিচ্ছে, এই লোকটা ততক্ষণ ওকে জ্বালাবে। অথচ তাঁকে কিছু বলতেও পারছে না ও। তাই একদিন গৌরবাবুকে ফোন করে ওই বইটার ভূয়সী প্রশংসা করল সে—  খুব ভাল বই। এই বইটার একটা পুরস্কার পাওয়া উচিত।
গৌরবাবু তো খুশিতে ডগমগ। তিনি বলতে লাগলেন, আমি ভাই নিজেকে একদম নিংড়ে দিয়েছি। আমার লেখায় কোনও ফাঁকি পাবেন না। কিন্তু জানেনই তো, পুরস্কার-টুরস্কার সব লবির ব্যাপার। ও সব আমি করতেও পারি না। যোগাযোগও নেই। চাইও না।
কিন্তু ঋজু যে-ই মধুসূদন আকাদেমির কথা বলল এবং পুরস্কার পাওয়ার শর্তের কিছুটা আভাস দিল, গৌরবাবু যেন হাতে স্বর্গ পেলেন। নিজে থেকেই বললেন, দেখুন না যদি হয়, যা লাগে দেব। জীবনে তো কিছুই পাইনি। শেষ বয়সে যদি কিছু পাই।
ও বিধানদার সঙ্গে গৌরবাবুর আলাপ করিয়ে দিল। অনেক দর কষাকষির পর দু’হাজার টাকায় রফা হয়ে গেল মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কারের।
না। আর কোনও পার্টি জোগাড় করে দিতে পারেনি ও। তবে তার পর থেকেই, বয়সের বিস্তর ফারাক থাকলেও বিধানদার সঙ্গে ওর বেশ সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। সেই সখ্যতার সূত্র ধরেই ঋজুকে সুন্দরবন যাওয়ার কথা বলেছিলেন বিধানদা। যদিও এর আগে ঋজু এক বার সুন্দরবন গিয়েছিল। ওর বন্ধু হাননান আহসান একটা মেডিকেল টিম নিয়ে এক বার কুমিরমারি যাচ্ছিল। সুন্দরবনের নাম শুনেই আগ্রহ দেখিয়েছিল ঋজু। হাননান বলেছিল, তা হলে চলুন না আমাদের সঙ্গে।
সে বার সুন্দরবনে গিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কিছুই দেখা হয়নি তার। ট্রেনে করে ক্যানিং। তার পর মাতলা নদী পেরিয়ে ডকঘাট। সেখান থেকে ট্রেকারে করে সোনাখালি। সোনাখালি থেকে ভটভটি চেপে সোজা কুমিরমারি। খুব ভোরে রওনা হয়েও পৌঁছতে পৌঁছতে বেলা গড়িয়ে গিয়েছিল ওদের। রোগী দেখতে দেখতে রাত। রাতটা কোনও রকমে কাটিয়ে পর দিন ভোর বেলাতেই কলকাতার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েছিল ওরা। তাই বিধানদা যখন বললেন, উদ্যোক্তারা সুন্দরবনটা ঘুরিয়ে দেখাবে বলেছে, তখন এক কথায় রাজি হয়ে গেল ও।
শ্যামবাজারের মেট্রো স্টেশনের কাছে অপেক্ষা করছিল উদ্যোক্তাদের পাঠানো সাদা আম্বাসাডর। ঋজু গিয়ে দেখে, শুধু বিধানদাই নয়, বিধানদার সঙ্গে তাঁর মেয়েও আচ্ছে। বছর তেইশ-চব্বিশ বয়স। গোলগাল চেহারা। ফর্সা। গড়পরতা বাঙালি মেয়েদের মতোই হাইট। ও যেতেই গাড়ি ছেড়ে দিল।
চুটিয়ে ঘুরেছিল ওরা। বিধানদা ওর দাদার মতো। তাই তাঁর মেয়ে শ্বেতাকে ও আর আপনি-আজ্ঞে করেনি। আলাপের সঙ্গে সঙ্গেই একেবারে তুমি দিয়েই শুরু করেছিল কথাবার্তা। তখনও বাসন্তীর ওই ব্রিজটা হয়নি। গাড়ি নিয়ে ও পারে যাওয়া যেত না। তাই নৌকো করে ও পারে গিয়েই সারা দিনের জন্য ওরা একটা ভ্যানরিকশা ভাড়া করে নিয়েছিল। যিনি ওদের ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলেন, তিনি আর বিধানদা বসেছিলেন সামনে। ঋজু আর শ্বেতা বসেছিল রিকশার পেছনে পা ঝুলিয়ে, পাশাপাশি। উল্টো দিকে মুখ করে।
সন্ধ্যা নামছিল। ফুরফুর করে হাওয়া দিচ্ছিল। ঋজু হঠাত্‌ শ্বেতাকে বলল, এখন যদি আচমকা একটা বাঘ সামনে এসে পড়ে, কী করবে?
একটু ঘাবড়ে গিয়ে সে বলল, এই, সন্ধেবেলায় একদম এই সব কথা বলবেন না।
— কেন?
— এটা সুন্দরবন না! জানেন না, এখানে ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমির।
— জানি। সেই জন্যই তো বললাম।
ওরা যখন কথা বলছে, ও দিকে বিধানদা আর ওই সঙ্গী ভদ্রলোক একনাগাড়ে কী সব বকর বকর করে যাচ্ছেন। কিছু একটা আলোচনা করছেন ঠিকই, কিন্তু কী যে আলোচনা করছেন, কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। দমকা বাতাস হঠাৎ হঠাৎই কানের কাছে ফরফর করে কানের লতি শীতল করে দিয়ে যাচ্ছে।
সুনসান সরু রাস্তা। বেশ অন্ধকার-অন্ধকার হয়ে এসেছে চারপাশ। কোথাও কিছু নেই, হঠাৎ বাঘের গর্জন। ঋজুর পাশে বসেছিল শ্বেতা। সে ওকে জাপটে ধরল। ঋজু বলল, ভয় পেয়ে গেলে?
— সত্যি, আপনি না, উফ্, এই ভাবে কেউ ভয় দেখায়?
— আবার দেখাব?
— কেন?
— তা হলে আবার এই ভাবে আমাকে...
— ধ্যাত্‌, আপনি না...
বিধানদা আর ওই লোকটা তখন হো হো করে হাসছেন। কেন হাসছেন, ওরা বুঝতে পারল না। এর মধ্যেই এত ঘুরঘুট্টি অন্ধকার নেমে এসেছে যে, নিজেদের হাত পা-ই দেখা যাচ্ছে না। সেখানে উল্টো দিকে মুখ করে বসা, বিধানদারা নিশ্চয়ই এক মুহূর্ত আগে ঘটে যাওয়া ওদের এই ব্যাপারটা দেখতে পাননি। কী ঘটেছে বুঝতেও পারেননি। নাক দিয়ে তার বাঘের গর্জন করাটা হয়তো শুনলেও, শুনে থাকতে পারেন!
অন্ধকারের মধ্যে চালক হয়তো খেয়াল করেনি। যেতে যেতে ভ্যানরিকশার চাকাটা হঠাৎ গর্তে পড়ে গেল। ভ্যানরিকশাটা ঝাঁকুনি দিয়ে লাফিয়ে উঠল। অতশত না ভেবে ঝপ করে পেছন থেকে শ্বেতার কাঁধটা চেপে ধরল ঋজু। যাতে পড়ে না যায়।
— এই ছাড়ুন। পিছনে বাবা আছে। খুব চাপা গলায় বলল শ্বেতা। ঋজু বলল, উনি এখন গল্পে মশগুল। আমরা যে এখানে আছি, উনি হয়তো ভুলেই গেছেন।
— যদি পেছনে তাকায়?
— তা হলেও দেখতে পাবে না। এত অন্ধকার...
— আপনি না...
— হ্যাঁ আমি। বলে, ওকে আরও কাছে টেনে নিল ঋজু।

যখন হোগল নদী পার হবার জন্য ভ্যানরিকশা থেকে নেমে ওরা খেয়াঘাটের দিকে যাচ্ছে, ও দিক থেকে একটা লোক ঋজুর সামনে এসে দাঁড়াল, আপনি এখানে?
— ও পারে, ওই কুলতলিতে, নারায়ণতলা রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরের একটা অনুষ্ঠানে এসেছিলাম। তা, এই দ্বীপটাও একটু ঘুরে গেলাম।
— আমাকে চিনতে পেরেছেন?
— না, ঠিক, আসলে...
— আমি প্রভুদান হালদার। ব-দ্বীপ বার্তায় লিখি। বাংলা আকাদেমিতে আপনার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল...
— ও, আচ্ছা আচ্ছা। তাই বুঝি? আলাপ করিয়ে দিই, ইনি হচ্ছেন বিধান দত্ত...
— আপনি বিধান দত্ত? আরিব্বাশ। আপনি তো বিখ্যাত মানুষ। লাফিয়ে উঠল সে। মুখের মধ্যে ঝলমল করে উঠল এক ঝলক আলো। বিধানদার হাত দুটো ধরে সে বলতে লাগল, আমি ভাবতেই পারছি না, আপনার মতো একজন লোকের সঙ্গে এখানে এই ভাবে দেখা হয়ে যাবে। আমি আপনার সম্পর্কে অনেক কিছু জানি। আপনার নাম তো গত বছর নোবেল প্রাইজে উঠেছিল, তাই না?
বিধানদা কী বলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। এক বার ঋজুর দিকে তাকাচ্ছেন আর এক বার লোকটার দিকে। তার পরেই লোকটাকে বললেন, আপনার সঙ্গে আলাপ হয়ে খুব ভাল লাগল। একটু কথা বলতে পারলে আরও ভাল লাগত। কিন্তু আমাদের আবার তাড়া আছে। অনেকটা যেতে হবে তো... ও পারে গাড়ি নিয়ে ড্রাইভার অপেক্ষা করছে। আপনার সঙ্গে পরে আবার কথা হবে, কেমন?
লোকটার চোখমুখ পাল্টে গেছে। আনন্দে আপ্লুত। যে-কোনও দিন নোবেল পুরস্কার পেয়ে যেতে পারেন, এমন একটা লোকের সঙ্গে যে এই জায়গায়, এই ভাবে তার দেখা হবে যাবে, তা বুঝি সে কল্পনাও করতে পারেনি। তাই, যাবার জন্য বিধানদা উসখুশ করলেও লোকটা কিছুতেই তাঁকে ছাড়তে চাইছিল না। ঠিকানা নিল। ফোন নম্বর নিল। তার পর কোনও রকমে রেহাই দিল।

পর দিন কলকাতায় ফেরার সময় গাড়িতে আসতে আসতে ঋজুকে বিধানদা বললেন, কলকাতায় গিয়ে কিন্তু কালকের রাতের ব্যাপারটা আবার কাউকে বলে দিও না। যা সব লোকজন। এই নিয়ে আবার হাসাহাসি করবে। ও, ভাল কথা। সামনেই তো আমাদের অনুষ্ঠান। হাতে আর সময় নেই। ম্যামেনটো-ফ্যামেনটো সব হয়ে গেছে। না হলে কবিতার জন্য এ বারই তোমাকে একটা পুরস্কার দিয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু কী করব! তুমি বরং একটা কাজ করো, অনুষ্ঠানের দিন পুরস্কার পর্ব মিটে যাওয়ার পরে তুমি তোমার পছন্দের লোকজন নিয়ে একটা কবিতা পাঠের আসর করে দাও। কী, কেমন হবে?

বিধানদা বলে দিয়েছেন। আর কোনও চিন্তা নেই। ঋজু উঠে পড়ে লেগেছে। একে ফোন করছে। তাকে ফোন করছে। কে কোন পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত, কার সঙ্গে কার গাঁটছড়া, কাকে নিলে আখেরে তার লাভ, এই সব সাত-পাঁচ ভেবে, হিসেব-নিকেশ করে সে তালিকা তৈরি করছে। কাকে নেওয়া যায়! কাকে নেওয়া যায়! কাকে নেওয়া যায়!
তালিকা তৈরি। কিন্তু আজ সকালে কণিকার অমন একটা ফোন পাওয়ার পর তাকে না রাখলে হয়! তাই, সেই তালিকার প্রথমেই লেখা হয়ে গেল কণিকার নাম। পরমার্থকে এক বার দেখিয়েও নিল সে, কোনও অসুবিধে নেই তো? এক ঘণ্টার ওপর সময়। সাতাশ জন কবি। তিন মিনিট করে এক-একজন পড়লেও, সবাই তো আর ঘড়ি দেখে পুরো তিন মিনিট করে পড়বে না। কেউ কেউ ছোট কবিতাও পড়বে। আবার দু’-একজন নাও আসতে পারে। হয়ে যাবে না?

ফোন করে কবিদের তালিকাটা শুনিয়েও দিল বিধানদাকে। তিনি কোনও উচ্চবাচ্চ্য করলেন না। শুধু বললেন, এত জন! অত সময় হবে! সবাইকে একদম ছোট্ট ছোট্ট কবিতা পড়তে বলবে, কেমন? না হলে কিন্তু সময়ে কুলোবে না। সাড়ে ন’টার মধ্যে হল ছেড়ে দিতে হবে। না হলে কিন্তু কশন মানি থেকে ওরা পাঁচশো টাকা কেটে নেবে।
ঋজু বলল, আপনি চিন্তা করবেন না। সব হয়ে যাবে। বলেই, ফোন করল কণিকাকে। একটা বাচ্চা মেয়ের গলা, মা এখনও আসেননি।
— এখনও আসেননি! দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকাল ঋজু। আটটা বেজে গেছে। ঠিক আছে, পরে করব, বলেই, তালিকায় নাম লেখা কবিদের একটার পর একটা ফোন করতে লাগল সে। আর কথা হওয়ামাত্রই সেই নামের পাশে বসিয়ে দিতে লাগল একটা করে টিক চিহ্ন।
পরে, মেলাতে গিয়ে দেখে সবাইকেই ফোন করা হয়েছে। শুধু কণিকাকে ছাড়া। রাত তখন এগারোটা বেজে গেছে। ও মনে মনে ভাবল, এত রাতে ফোন করাটা কি ঠিক হবে! তার পরেই মনে পড়ল, ও তো বলেছিল, যখন খুশি ফোন করতে পারেন। একটা, দুটো, তিনটে। সেই তুলনায় তো এখন সবে সন্ধে।
ও ফোন করল। দেখল, এনগেজড। খানিকক্ষণ পর আবার করল। তখনও তাই। তার আধ ঘণ্টা পরেও, ওই একই। শুধু এনগেজড আর এনগেজড। আর একটা নম্বর ছিল। মোবাইলের। সেখানেও করল। ও প্রান্ত থেকে ভেসে এল রেকর্ডেট গলা, আপনি যে নম্বরে ফোন করেছেন, সেটি এখন পরিষেবা সীমার বাইরে।
দু’মিনিট পর আবার করল। এ বার ভেসে এল— এই নম্বরের কোনও অস্তিত্ব নেই। ঋজু অবাক। একটু আগেই বলল, পরিষেবা সীমার বাইরে, এখন আবার বলছে এই ফোনের কোনও অস্তিত্ব নেই! এই নম্বরটা তো ও-ই দিয়েছিল। তা হলে কি ও ভুল নম্বর দিল! কিন্তু খামোকা ভুল নম্বর দিতে যাবে কেন! তা হলে কি আমিই টুকতে ভুল করেছিলাম! আর এক বার দেখি তো, ফের ফোন করল ও। শুনতে পেল সেই একই কথা। তার পরেও বেশ কয়েক বার ল্যান্ড লাইনে ফোন করেছে ও। এমনকী, অফিস থেকে যখন বেরোয়, সেই রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ, তখনও তার ফোন ব্যস্ত।



                                   ক্রমশ...





দ্বিতীয় পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন- 



চতুর্থ পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

Wednesday, May 25, 2022

রাজ্যে নতুন আশা কর্মী নিয়োগ || কয়েক হাজার নতুন আশা কর্মী নিয়োগ || asha karmi recruitment 2022


 


##রাজ্যের মহিলাদের জন্য একটা বড় সুখবর। জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় জেলায় আশা কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে প্রায় 13 হাজার, মুখ্যমন্ত্রীর নিজে ঘোষণা করেছেন বর্তমানে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন ব্লকে আশা কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে যার বিবরণ নিচে দেয়া হল।




পদের নাম - আশা কর্মী।

শিক্ষাগত যোগ্যতা--- 
মাধ্যমিক ও সমতুল্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণব্যক্তি আবেদন করতে পারেন। আবার উচ্চতর যোগ্যতার ব্যক্তিরাও আবেদন করতে পারবেন তবে মাধ্যমিকের প্রাপ্ত নম্বর দেখে বিবেচনা করা হবে।  



বয়স--- বয়স 30 থেকে 40 বছরের মধ্যে হতে হবে
 সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়ম অনুসারে ছাড় পাবেন।





আবেদন পদ্ধতি--- শুধু মাত্র  অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন পত্র সম্পূর্ণ পূরণ করে নিজ নিজ এলাকার বিডিও অফিসে জমা করবেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি যোগ করে একটি মুখ বন্ধ খামে ভরে তারপর বড় হাতে লিখতে হবে ‘APPLICATION FOR THE POST OF _______’ (কোন পদের জন্য আবেদন করছেন)।



কি কি ডকুমেন্ট লাগবে---

1) শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ পত্র।

2) স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র রেশন কার্ড ভোটার কার্ড।

3) বয়সের প্রমাণপত্র (জন্ম সার্টিফিকেট কিংবা মাধ্যমিকের এডমিট কার্ড)।

4) বিধবাদের ক্ষেত্রে স্বামীর ডেট সার্টিফিকেট।

5) বিবাহিতদের ম্যারেজ সার্টিফিকেট।
6) ডিভোর্স সার্টিফিকেট কাস্ট সার্টিফিকেট।
8) দুটি পাসপোর্ট ছবি।



আবেদনের শেষ তারিখ--- ২৭/০৫/২০২২, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।


নিয়োগের স্থান --
আলিপুরদুয়ার জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন ব্লকের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে নিয়োগ হবে। যেমন- ১)আলিপুরদুয়ার, ২)ফালাকাটা, ৩)মাদারিহাট, ৪)কুমারগ্রাম ও কালাচিনি।


Official notice-

Official website-





Sunday, May 22, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -3


 


প্রেমাংশু ধীরে ধীরে কাছে এসে দাদুর বক্তব্য জানলেন! ঠাকুর্দার ইচ্ছে, ভুলবশতঃ হোক আর অন্য কোন কারনেই হোক বাগদীর মেয়ের যখন সর্বনাশ করেছে তার প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে। তবে শুধু আমার স্বার্থের জন্য নয় বাবা গ্রামবাসীদের কথা চিন্তা করে আমার অনুরোধ তোমাকে রাখতে হবে বাবা। 


প্রেমাংশু বললেন, বলুন আপনার কি অনুরোধ রাখতে হবে। 

পুষ্পকে কোন নার্সিংহোমে ভর্তি করে তার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করলে কোন ক্ষতি হবে না। তারপর পুষ্পর বিয়ের ব্যাপারে যত টাকা খরচ হবে আমি যতীনকে দেব।


 প্রেমাংশু বলল, ছিঃ বাবা, নব আগত একজন অতিথিকে কোন মতে বিনাশ করতে পারব না। এজন্য যদি আমাকে গৃহত্যাগ করতে হয় আমি রাজী।


 ঠাকুর্দা প্রেমাংশুকে দ্বিতীয়বার বুঝিয়ে বলার জন্য মুখ ফাঁক করতেই মেজকাকা কর্কশ কণ্ঠে বলে উঠলেন, প্রেমাংশু তুমি একজন সদ্বংশের সন্তান হয়ে শেষ পর্যন্ত একটা বাগদীর মেয়েকে উৎকৃষ্ট বলে মনে করলে? তোমার লজ্জা নেই বলে এখানে বাবার সামনে দাঁড়িয়ে আছো। এই মুহুর্তে বাবার কাছ হতে দূরে সরে যাও। মনে রাখবে চিরদিনের জন্য তোমার এই দরজা বন্ধ। কোনদিন এখানে পা দেবে না। 


মেজকাকার রাগন্বিত ভাব দেখে শান্তস্বরে বলেছিলেন ঠাকুর্দা, প্রেমাংশু তোমার ছোট ভাই , হয়তো কোন রূপ ভুল করেছে, ঠাকুর্দার কথা লুফে নিয়ে আরো ক্রুদ্ধ স্বরে বললেন মেজকাকা , ওকে ক্ষমা করতে বলছেন এইতো? না বাবা না, এ ক্ষমার অযোগ্য। আমাদের বংশের মান - মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে হলে ওকে গৃহত্যাগ করতেই হবে। এ আমার শেষ কথা। 


ঠাকুর্দার কথা শুনলেন না মেজকাকা । অবশ্য ষড়যন্ত্র করে তাড়ানোর চেষ্টা যখন করেছেন, তখন কি সহজে রাজী হবেন ? ছোটকাকা আর দাঁড়াননি সেখানে। দ্রুতগতিতে বেরিয়ে কোথায় যে গিয়েছিলেন বুঝতে পারিনি বা জানতে পারিনি। পুষ্পকে নিয়ে কোন গ্রামে বা শহরে বাসা বেঁধেছিলেন। দাদুর অনুনয় উপেক্ষিত হওয়ায় অন্তরে অনুশোচনার তীব্র দহন জ্বালা ঠাকুরদাকে শয্যাশায়ী করে তুলেছিল।


 সেই সময় বাবা আরন্যক জীবনকে শিকারীর প্রধান অবলম্বন মনে করে বেশ কয়েক দিন ধরে ছুটেছেন শিকারের পিছনে। বাড়ীতে এসে ঠাকুরদাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দেখে উদিদ্ধ হলেন। বাবার ইচ্ছা ছিল মেজকাকার নিকট হতে ঠাকুরদার স্বাস্থ্য 



সম্পর্কে পরামর্শ নেওয়া। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতি শুনে বাবাকে আরো চিন্তাকূল করে তুলেছিল। স্বার্থপর মেজকাকা ঠাকুরদার অসুস্থতা উপেক্ষা করে সবান্ধব দীঘা ভ্রমণে গিয়েছিলেন। পুত্রের উপযুক্ত কাজই করেছেন। 


নিরুপায় হয়ে বাবা গ্রামবাসীদের সাহায্য নিয়ে শহরের অভিমুখে যাত্রা করলেন রুগ্ন পিতাকে নিয়ে। ছোটকাকাকে খোঁজ করার জন্য লোক পাঠালেন। গ্রাম হতে শহর অনেক দূর। জমিদার ব্রজকিশোর সিংহকে সুস্থ করার জন্য যে শহরে পাড়ি দিতে হবে, বাবা কোন দিন ভাবতে পারেননি । তবু তাঁকে বাঁচাতে পারলেন না। মৃত্যু যখন কোন মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকে, তখন মৃত্যুর হাতছানিকে কোন পরাক্রমশালী ব্যক্তিও এড়িয়ে যেতে পারে না।  


 পথিমধ্যে চন্ডীপুরের ধনবান প্রভাবশালী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ততক্ষণাৎ সারা চন্ডীপুরে শোকের ছায়া নেমে এল। কেউ কি কল্পনা করেছিলেন ঠাকুরদা এভাবে মারা যাবেন ? বয়স যে হয়নি তা নয়, তবুও মানুষটাকে দেখলে মনে মনে অঙ্ক কষতো কতই বা বয়স হবে। হয়তো সত্তরের কাছাকাছি হবে। ঐ বয়স হলেও তখনও ইস্পাতের মত শক্ত ছিলেন।


 গ্রামবাসীদের কর্ণে মৃত্যু সংবাদ পৌঁছতেই দলবদ্ধ হয়ে জমিদারের প্রাসাদে ছুটে এলেন। সকলেই পরস্পরের মুখপানে তাকিয়ে আলোচনা করতে থাকলেন।


 মৃত্যু নিয়ে নানা লোকের মুখে নানা কথা। কেউ কেউ যাত্রা দলের পাট আওড়ানোর মতো বলতে শুরু করল , প্রেমাংশুর কলঙ্কিত জীবনের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ছেলেটা যে শিক্ষিত হয়ে রাজপরিবারের আভিজাত্যকে এইরূপ হীনভাবে ধুলায় লুণ্ঠিত করে দেবে তা কেউ বুঝতে পারেনি।


 পুষ্পের সঙ্গে ছোট কাকার গৃহত্যাগের সংবাদ এই অঞ্চলের জনগণের নিকট অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ঠাকুরদার শবদেহ শ্মশানে নিয়ে আসা হল গ্রামবাসীদের সহযোগীতায়। দাহনের কাজ শেষ হলে পর বাবা বাড়ীতে এসে দেখলেন কাকা ছোট ছেলের মতো মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছেন। মেজকাকার শোকাতুর ভাব দেখে প্রতিটি মানুষের ধারণা হয়েছিল তাঁর পিতৃভক্তি প্রগাঢ় ছিল। 


ঠাকুরদার মৃত্যুর পর বেশ সুখ - দুঃখের মধ্য দিয়ে মাসখানেক কেটে যাবার পর আমাদের সংসারে অন্ধকার নেমে এলো। নেমে এলো অভাব অনটনের দুঃখ জ্বালা। ছোট কাকা ও বাবার প্রতি মেজকাকার বিশ্বাসঘাতকতা বাবা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেন নি। বাবা ও মেজকাকা দুই বৎসরের ছোট। সেই জন্য বাবার ধারণা ছিল মেজকাকা তার সঙ্গে আগের মতো রহস্যলাপ করছে। কিন্তু যখন সমস্ত সম্পত্তির একটি উইল বাবার হাতে দিলেন, তখন তিনি বজ্রাহত হলেন। মনে করেছিলেন, মাটি যেন তার পায়ের কাছ হতে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। তবু দুই হাতে উইলকে চেপে ধরে

নির্দ্বিধায় বলেছিলেন মেজকাকাকে, ঠাকুরদা যখন নিজ হস্তে এই উইল করে গেছেন, মেনে নেবেন। কিন্তু ছোট ভাইকে তিনি কি দিয়েছেন? 


মেজকাকা সানন্দে জানালেন, সে আমাদের বংশের অমর্যাদা করেছে বলে তাকে তাজ্যপুত্র করেছেন। তিনি আমার উপর বিশ্বাস রাখতেন বলে বাকী সম্পত্তি আমার নামে লিখে গেছেন। বাবার বিশ্বাস ছিল আমি সমস্ত সম্পত্তি আগলে রাখতে পারব। তিনি তোমাকেও বিশ্বাস করতেন না। হয়তো তোমার নৈতিক অধঃপতনের কথা স্মরণ করে এই রকম অংশ দিয়ে গেছেন। এই বলে তিনি গম্ভীর মুখে চলে গেলেন।


 ওকথা শুনে বাবা বিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলেন। মাথার কোষে কোষে চিন্তা এসে উপস্থিত হল। সেই সময় বাবার স্মরণে এলো ভারতের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি । যা আজও পর্যন্ত ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষণে লেখা আছে। ভাই হয়ে ভাই এর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা। পুত্র হয়ে পিতার আসনে বসার জন্য পিতাকে খুন করা। সবই তো সম্পত্তির জনাই। মেজকাকাকে এত দিনে চিনতে পারলেন ও বুঝতে পারলেন তার নিষ্ঠুরতাকে।  


 গ্রামের লোকেদের ধারণা ছিল, প্রেমাংশুর নির্বাসনের পশ্চাতে একমাত্র কারণ ছিল মেজকাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ - এর জঘন্য ষড়যন্ত্র। কিন্তু সবচেয়ে বড় আশ্চর্য হচ্ছেন মেজকাকা কি করে ভিলেন হলেন। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে তিনি আনমনা হয়ে গিয়েছিলেন। এই পৃথিবীতে এমন কতকগুলো মানুষ আছে, যারা আপন স্বার্থ চরিতার্থ করা সবচেয়ে বড় মনে করে। নিজেকে বড় করার জন্য মানবিকতাকে, পৌরষত্বকে নৃশংসভাবে হত্যা করে নিঃসংকোচে আত্মসুখ অনুভব করে। প্রয়োজনবোধে আপনজনকে বঞ্চিত করতে দ্বিধাবোধ করে না। 


  এই উইলের পরেও বাবা শত দুঃখের মাঝে স্থির করেছিলেন তিনি ঘরবাড়ী পর্যন্ত ভাগ নেবেন না। কারণ মেজাকার শতা ও বিশ্বাসঘাতকতা একদিন জমিদার পরিবারের উপর একটি নিষ্ঠুর অভিশাপ রূপে নেমে আসবে। তাই মেজকাকার কাছ হতে বাবা সরে পড়লেন। গ্রামের শেষে কুঁড়ে ঘরে বসবাস করতে আরম্ভ করলেন।


  মেজকাকা কোন রূপ বাধা দিলেন না। বরং অতিশয় আনন্দিত হয়েছিলেন। সবচেয়ে বড় আশ্চর্য গ্রামবাসীদের এবং এমনকি বাবারও যে, একজন জমিদারের বড় পুত্র সাধারণ মানুষের মত কুঁড়ে ঘরে বাস করতেন। বিশেষ করে গ্রামের লোকেরা যখন বাবার কানে তুলে ছিলেন ঠাকুরদার প্রচন্ড ইচ্ছে ছিল ছোটকাকাকে ডাক্তারী পড়িয়ে গ্রামবাসীদের আশা - আকাঙ্খাকে সার্থক করে তুলবেন।


  বাবা গ্রামবাসীদের হতাশা অনুভব করে কথা দিলেন যে গ্রামবাসীদের এই আশা আকাঙ্খা তার ছেলে সুমন্তকে দিয় পূরণ করবেন। পরদিনই ডাকা হল গ্রামের স্কুলের হেডমাস্টার মশাই সুরজিত বাবুকে। তার কাছে পরামর্শ নিলেন ডাক্তারী পড়াতে হলে কত টাকা খরচ হবে। কুড়ি একর জমি বিক্রি করলে পর ডাক্তারী পড়ানো যাবে কি না।



                                                          ক্রমশ...


দ্বিতীয় পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

Click here 🔴



চতুর্থ পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

Click here 🔴

রাজ্যে জমি রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মী নিয়োগ || WB Govt Job Reqruitment || Land Register office recruitment 2022

 





পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের জন্য নতুন সুখবর। বিভিন্ন জেলার  জমি রেজিস্ট্রি অফিসে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে। নিয়োগ হবে চুক্তি ভিত্তিক।  পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-




পদের নাম -  সফটওয়্যার সাপোর্ট পারসোনাল ।

শিক্ষাগত যোগ্যতা - PGDCA/ B.Sc (Computer Science)/ BCA/ DOEACC ‘A’ level course 3 বছরের অথবা তার সমতুল্য যোগ্যতা থাকতে হবে।


আবেদন পদ্ধতি -

অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। নীচে দেওয়া অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নোটিশ টি ডাউনলোড করে নেবেন। সেখানে ফর্ম পাবেন। সেই ফর্মটি পূরণ করুন তারপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জুড়ে দিন, সবশেষে একটি খামে ভরে নীচে দেওয়া ঠিকানায় পাঠাবেন না 


প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট-

1.বয়সের প্রমাণ (মাধ্যমিক অ্যাডমিট)

2. শিক্ষাগত যোগ্যতা ( পদ অনুযায়ী যা জরুরি) 


3. পরিচয় পত্র বা আইডি কার্ড 

4. পাসপোর্ট সাইজের ছবি 

5. কাস্ট সার্টিফিকেট( যদি থাকে)

 উল্লেখিত ডকুমেন্টের জেরক্স কপি পূর্ণ করা ফর্মের সাথে জুড়ে দেবেন।


আবেদন জমা করার ঠিকানা -
The Additional District Magistrate & District Land & Land Reforms Officer, Alipurduar and Chairman, District Selection Committee, Dooars Kanya, 4th Floor, Room No.411, P.O. Alipurduar Court, District Alipurduar, Pin-736122.


আবেদনের শেষ তারিখ -

 ইতিমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।  আবেদন প্রক্রিয়া চলবে 08/06/2022 তারিখ পর্যন্ত।
আপনাকে এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। 



নিয়োগ প্রক্রিয়া -  
প্রথমে হবে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন, তারপর হবে কম্পিউটার টেস্ট। সবশেষে ইন্টারভিউ।





অফিসিয়াল নোটিশ -


অফিসিয়াল ওয়েবসাইট -


Thursday, May 19, 2022

গ্রামীণ ডাক সেবক (GDS) নিয়োগ 2022 || WB GDS recruitment 2022 || Post office peon recruitment 2022 || https://indiapostgdsonline.in/







পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের জন্য নতুন সুখবর আছে। আবার নিয়োগ হতে চলেছে গ্রামীণ ডাক সেবক তথা GDS পদে। বিজ্ঞপ্তি টি Indian post এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
সমগ্র দেশ জুড়ে এই নিয়োগ চলবে। এর মধ্যে আপনাকে পশ্চিমবঙ্গের সার্কেল সিলেক্ট করতে হবে।
চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-




মোট শূন্যপদ - 38,926 টি
 
 
কোন কোন পদে নিয়োগ করা হবে - 

(1) ব্র্যাঞ্চ পোষ্ট মাস্টার (BPM)

(2) অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্র্যাঞ্চ পোষ্ট মাস্টার/ ডাক সেবক (ABPM) 


বেতন- 
(1) BPM -  12,000 টাকা/মাস

(2) ABPM - 10,000 টাকা/মাস


বয়সসীমা- ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হবে। সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।


শিক্ষাগত যোগ্যতা - 

শুধু মাত্র মাধ্যমিক পাশ করে থাকলেই আপনি এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
 


বিশেষ যোগ্যতা -
আবেদনকারীকে অবশ্যই সাইকেল চালাতে জানতে হবে। এর সাথে চাকরিপ্রার্থীদের  স্থানীয় ভাষায় কথা বলতে, বুঝতে এবং লিখতে জানতে হবে।



নিয়োগ প্রক্রিয়া-

শুধু মাত্র মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেরিট লিস্ট তৈরি হবে। কোনোরকম লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ দিতে হবে না।


আবেদন প্রক্রিয়া -
 অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ গিয়ে অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। 


আবেদন ফি -

সাধারণ প্রার্থীদের জন্য 100 টাকা। সংরক্ষিত প্রার্থী এবং মহিলাদের কোনো আবেদন ফি লাগবে না।



গুরুত্বপূর্ণ তারিখ-

আবেদন শুরু - 02.05.2022
আবেদন শেষ- 05.06.2022



Official Website-



Notice Download-



 Apply Now-



উপন্যাস - লাস্যময়ীর ছোবল || সিদ্ধার্থ সিংহ || Lashamayir Chobol by Sidhartha Singha || Fiction - Lashamayir Chobol part -2


 


দুই


ফোন বাজলেই সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে রিসিভার তোলে ঋজু। ওর ছেলে বাবি ক্লাস ফোরে পড়ে। ক’দিন হল ছেলেকে নিয়ে ও আর স্কুলে যাচ্ছে না। বউকে পাঠাচ্ছে।
সপ্তাহখানেকও হয়নি ওর অফিসে একটা ফোন এসেছিল। ও-ই ধরেছিল। ফোনটা একটি মেয়ের। সে লেখালিখি করতে চায়। তাদের কাগজে লেখা দিতে হলে কী ভাবে পাঠাতে হবে, কাকে পাঠাতে হবে, মনোনীত হল কি না, ক’দিনের মধ্যে জানা যাবে, এই সব টুকিটাকি কথা সে জানতে চাইছিল। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর ঋজুই দিচ্ছিল। হঠাৎ মেয়েটি ওর ফোন নম্বর চায়। ও বলে, এই নম্বরেই করবেন। সন্ধের দিকে করলে আমাকে পেয়ে যাবেন। কিন্তু মেয়েটি নাছোড়বান্দা। সে ওর অফিসের নয়, বাড়ির নম্বর চায়। ঋজু দেখেছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কিংবা দূরে ও যখন কোথাও যায়, কবি নয়, খবরের কাগজে কাজ করে শোনার পরেই অনেকে ওর কাছ থেকে টেলিফোন নম্বর নেয়। কিন্তু কস্মিনকালেও কেউ ফোন করে না। এই মেয়েটিও সে রকমই একজন ভেবে, ও ওর বাড়ির টেলিফোন নম্বরটা দিয়ে দিয়েছিল। আর তখনই ও জেনেছিল, মেয়েটির নাম শালিনী। তার পর থেকে দু’-একদিন ছাড়া ছাড়াই মেয়েটা ফোন করে।
গলার স্বর খুব নরম। বাচ্চা বাচ্চা। মনে হয় ইলেভেন-টুয়েলভে পড়ে। গত পরশু যখন ফোন করেছিল, ঋজু ঘুমোচ্ছিল। ধড়মড় করে উঠে ফোন ধরতেই ও প্রান্ত থেকে শালিনী বলেছিল, কী মশাই ঘুমোচ্ছেন নাকি?
— এই উঠলাম। হ্যাঁ, বলো। এত সকালে?
— না, এমনিই করলাম। কোনও দরকার নেই। আসলে ভাইয়ের সঙ্গে দুধ আনতে বেরিয়েছি তো, দুধের ডিপোর পাশে নতুন একটা এসটিডি বুথ হয়েছে। দেখেই মনে হল আপনাকে একটা ফোন করি। তাই করলাম। কিছু মনে করলেন না তো?
কেউ যে তাকে এমনি এমনি ফোন করতে পারে, এই ফোনটা না এলে সে জানতেই পারত না। মুখে কিছু না বললেও মনে মনে খুব খুশি হয়েছিল সে। আর সেই খুশিতেই সারাটা দিন তার খুব ভাল কেটেছিল।
লোকে বলে, কারও কারও মুখ দেখলে নাকি দিন খারাপ যায়। আবার কারও কারও মুখ দেখলে দিন ভাল যায়। কারও মুখ নয়, তার দিন ভাল করে দিয়েছিল শালিনীর ফোন। তাই তার পর দিন, মানে গত কাল একটু সকাল সকাল উঠে সে তার ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিল। যদি আজও করে! কিন্তু না। সাড়ে সাতটা-আটটা-সাড়ে আটটা বেজে গেল। সে ফোন করল না। এমনকী সারা দিনে অফিসেও একটা না। রাতে শোবার সময় ভেবেছিল, কাল সকালে নিশ্চয়ই ও ফোন করবে। তাই সকাল থেকে যত বার ফোন বেজে উঠেছে, ও প্রায় লাফিয়ে গিয়ে ফোন ধরেছে। এবং দেখেছে, সবই এর ওর তার ফোন। কিন্তু যার ফোনের জন্য ও অপেক্ষা করে আছে, তার কোনও পাত্তা নেই। ঘড়িতে তখন ন’টা বেজে গেছে। নাঃ, ও আজ আর ফোন করবে না! ঋজু স্নানে ঢুকে পড়ল।
বেরিয়ে শোনে, একটা ফোন এসেছিল।
— কার?
ওর মা বললেন, রিনা গিরি বলে একটা মেয়ে ফোন করেছিল।
— ও, রিনা গিরি! মানে আশিসের বউ। কী বলল?
— কিছু বলেনি। শুধু বলল, কখন পাওয়া যাবে? তা আমি বললাম, আধ ঘণ্টা পরে করুন। ও স্নানে গেছে।
ঋজু একটু বেলা করেই ব্রেক ফাস্ট করে। দুধ-মুড়ি খেতে খেতে ও শুনল, ফোন বাজছে। ফোনের কাছে মা। তাই ও আর উঠল না। এটা নিশ্চয়ই শালিনীর ফোন না!
ফোন ধরেই মা বললেন, ঋজু, তোর ফোন।
— আমার! এত দেরিতে ফোন করল! পড়ি কি মড়ি করে ছুটে গেল ও— হ্যাঁ, ঋজু বলছি।
ও প্রান্ত থেকে একটা কোকিল কণ্ঠি ভেসে এল— আমি কণিকা রায় বলছি। চিনতে পারছেন? কাল আমরা একসঙ্গে দাঁতনে গিয়েছিলাম...
— আরে, হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন। কাল ফিরতে কোনও অসুবিধে হয়নি তো? কেমন আছেন? এখন কোথায়?
— আমি তো অফিসে।
— এত সকালে?
— সকাল কোথায়? পৌনে দশটা বাজতে চলল...
— আপনাদের ক’টা থেকে?
— আমাদের তো সাড়ে ন’টার মধ্যে ঢুকে পড়তে হয়। আমরা ডাইরেক্ট সিজিএমের সঙ্গে কাজ করি তো...
— তাই নাকি?
— আমরা তো আর আপনাদের মতো সাংবাদিক নই যে, বিকেল বেলায় অফিস।
— বিকেলে শুরু হয় ঠিকই, কিন্তু থাকতে হয় ক’টা পর্যন্ত, সেটা দেখুন। আপনারা তখন ঘুমোন।
— অনেকে হয়তো ঘুমোয়, কিন্তু সবাই ঘুমোয় না। খুব ধীরে ধীরে কেটে কেটে কথা ক’টা বলল কণিকা।
— কেন? আপনি কি জেগে থাকেন?
— একদিন বেশি রাতে ফোন করে দেখবেন।
— হ্যাঁ, আপনাকে বেশি রাতে ফোন করি, আর আপনার কর্তা সন্দেহ করা শুরু করুক, এত রাতে আমার বউকে ফোন করছে কে!
— সন্দেহ করবে না।
— কনফার্ম?
— জানলে তো করবে।
— মানে?
— উনি অন্য ঘরে শোন।
— ও। বলেই, একটু থেমে, অন্য প্রসঙ্গে যাবার জন্যই ঋজু বলল, একটু আগেই রিনা ফোন করেছিল।
— কখন?
— এই তো, মিনিট দশ-বারো আগে।
— রিনা নয়, আমিই করেছিলাম।
— আপনি? মা যে বললেন, রিনা গিরি...
— হ্যাঁ, আমি রিনার নামই বলেছিলাম। আসলে আপনার বাড়ির কে কী রকম, আমি জানি না তো। কে আবার কী ভাববে, তাই রিনার নাম বলেছিলাম। এক দিন চলে আসুন না আমাদের বাড়িতে।
— ওরেব্বাবা, আপনাদের বাড়ি তো সেই তেপান্তরের মাঠে। যেতে আসতেই সারা দিন লেগে যাবে।
— মোটেও তা নয়।
— আমি তো দু’-এক বার এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে গেছি, জানি।
— লাস্ট কবে এসেছেন?
— বছর পনেরো আগে।
— প... নে... রো...  ব... ছ... র... আগে! এখন এক বার এসে দেখুন...
— আসলে সল্টলেক শুনলেই না গায়ে জ্বর আসে। লোকে যে কী ভাবে ওখান থেকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করে, কে জানে!
— ঠিক আছে, আপনাকে আমাদের বাড়িতে আসতে হবে না। আপনি একদিন আপনার সময় সুযোগ মতো আমাদের অফিসে আসুন।
— আপনার অফিসে যাবার জন্য আমার কোনও সময় সুযোগ লাগবে না। রোজই যেতে পারি। আমাদের অফিস থেকে টেলিফোন ভবন তো একটুখানি।
— তা হলে আজকেই চলে আসুন।
— আজকে!
— হ্যাঁ, আজকে।
— ঠিক আছে, দেখছি।
— দেখছি না। চলে আসুন। নীচে এসে আমাকে একটা ফোন করে নেবেন।
— আপনার নম্বরটা যেন কত?
কণিকা শুধু অফিসের নম্বরই নয়, তার মোবাইল নম্বর, এমনকী বাড়ির ফোন নম্বরটাও দিয়ে দিল। ঝটঝট করে লিখে নিতে নিতে ঋজু বলল, বাড়ির নম্বরটা পেয়ে ভালই হল। রাতের দিকে অনেক সময় কাজের চাপ কম থাকে। তখন কথা বলা যাবে। আপনি ক’টা অবধি জেগে থাকেন?
— করুন না। যখন খুশি করতে পারেন।
— রাত বারোটায়?
— বারোটা কেন? একটা, দুটো, তিনটে... যখন খুশি।
— ফোন ধরবেন তো?
— করেই দেখুন না...
সে দিন সকালে শালিনী ফোন করার পর সারাটা দিন অদ্ভুত এক আনন্দে সারা শরীর যেমন চনমন করে উঠেছিল, আজও তেমনই এক আনন্দে ঋজুর মনপ্রাণ খুশিতে ভরে উঠল।


              
                                         ক্রমশ...



প্রথম পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করুন--



তৃতীয় পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

বিভিন্ন মতবাদ ও তার বিজ্ঞানীর নাম || General science for all Competitive exams || General science for Rrb group d || G.S


 

মতবাদ.              বিজ্ঞানীর নাম       সাল


•পরিস্রাবণ মতবাদ --- সিলুডউইগ --- ১৮৪৪

•জার্মপ্লাজম -- ভাইসম্যান -- ১৮৮৩

•ভাইটালিস্টিক মতবাদ --- জে.সি.বোস --- ১৯২৩

•মিউটেশন তত্ত্ব -- দ্য ভ্রিস -- ১৯০১


•সিস্ট্রোন মতবাদ -- বেঞ্জার -- ১৯৫৭


•মানব সু-প্রজনন -- ডালটন -- ১৮৬৭
বিদ্যার জনক


•প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদ -- ডারউইন -- ১৮৫৯

• মূলজ চাপ -- স্টিফেন হেলস -- ১৭২৭


● বায়বীয় চাপ -- বো এম -- ১৮০৯


•প্রস্বেদন টান ও জলের
 সমসংযোগ মতবাদ ---- ডিক্সন ও জলি --- ১৮৯৪


•বংশগতির সূত্র -- মেন্ডেল -- ১৮৬৫

•কোশবাদ বা কোশতত্ত্ব --- স্লেইডেন ও সোয়ান -- ১৮৩৯

•জার্মথিওরি ---- ব্রেডলি ---- ১৭২০



•অর্জিত গুণের
উত্তরাধিকার তত্ত্ব --- জ্যঁ ল্যামার্ক --- ১৮০৫

•জিন ভারসাম্য মতবাদ --- ব্রিজেস --- ১৯১৭

•বিবর্তনের প্রাকৃতিক
বিপর্যয়বাদ ---- কুভিয়ার ---- ১৭৬৯



Tuesday, May 17, 2022

ডেটা এন্ট্রি অপারেটর এর কর্মী নিয়োগ, বেতন -২১,১৮৪ প্রতি মাসে || Data Entry oparator Recruitment 2022 || Becil Recruitment 2022 || Government Jobs News


 


   
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতীয় ছাত্রদের কাছে নতুন চাকরির সুখবর আছে। আবার নতুন নিয়োগ হবে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদে। প্রতিটি চাকরি প্রার্থীর ইচ্ছা একটি সম্মানজনক চাকরি করার। তাদের আর অপেক্ষা করতে হবে না। চলে এলো নতুন চাকরির সুযোগ। এই চাকরির সুযোগ নিয়ে এল ব্রডকাস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কনসাল্টট্যান্ট ইন্ডিয়া লিমিটেড। এখানে ডেটা এন্ট্রি পদে আপনাকে নিয়োগ করা হবে। চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-
 এই ২১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। মোট ৮৬ টি পদে নিয়োগ করা হবে। ৬ মে থেকে ২২ মে অবধি এই পদে আবেদন করা যাবে। কী ভাবে এই পদে আবেদন করবেন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক…


পদের নাম - ডেটা এন্ট্রি অপারেটর।

মোট শুন্যপদ- ৮৬ টি

শিক্ষাগত যোগ্যতা-
যদি আপনি এখানে আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই স্বীকৃত ইউনিভার্সিটি থেকে যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে টাইপিং এ দক্ষতা। ইংরেজি তে টাইপ করে মিনিট এ  ৩৫ টি শব্দ এবং হিন্দিতে ৩০ টি শব্দ টাইপ করার দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়া MS-Office এ কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।


বেতন-

আপনাকে প্রতিমাসে ২১,১৮৪/- টাকা করে বেতন দেওয়া হবে।


আবেদন ফি

সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ৭৫০ টাকা এবং সংরক্ষিত প্রার্থীদের জন্য ৪৫০ টাকা আবেদন ফি  জমা দিতে হবে।

আবেদন পদ্ধতি

অনলাইন এ আবেদনের সুযোগ পাবেন। প্রথমেই BECIL অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ গিয়ে যাবতীয় তথ্য পূরণ নথি আপলোড করতে হবে। সব শেষে ফি জমা করতে হবে।  


Official notice-


Official Website-

 



Sunday, May 15, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -2


 

পর্ব -২


অগ্রহায়ণের প্রথম ভাগ। সূর্যের রক্রিম আলো তখন মলিন হতে চলেছে। মেঘের এক কোণে থালার মত লাল টুকটুকে সূর্যটা প্রায় অর্ধেকের উপর অদৃশ্য হয়েছে। শীতের ভাব কম নয়। তবুও ঠাকুরদা পায়ে হেঁটে প্রতিদিন ঐ সময়ে মাঠে বেড়াতে যেতেন। মাঠের মধ্যে সোনালী রং এর ধান গাছ। গাছগুলো মাঠের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। চাষীরা মাঠ হতে বাড়ী ফিরছে। ঠাকুরদা আপন মনেই ধীরে ধীরে হেঁটে চলেছেন।  

   হঠাৎ কাদের কণ্ঠস্বরে দাঁড়িয়ে পড়লেন, মেঠো রাস্তার উপর। কারা যেন আলোচনা করছে ধনী ব্যক্তির ছেলে সে, জানিস তো মেয়ের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে এঁটো পাতার মত ফেলে দেবে। ছোট জাত আমরা, প্রতিবাদ করতে যাবি কেউ তোকে সহযোগিতা করতে যাবে না। তোর মেয়ে যে কান্ড করেছে কারো কাছে মুখ দেখাতে পারবি? পারবি না, মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যেতে হবে যতীন। এ আশা করিসনে জমিদার ব্রজকিশোর সিংহের ছোট ছেলে প্রেমাংশু ছোট জাত যতীন বাগদীর মেয়ের জামাই হবে।

      ওকথা ঠাকুরদার কর্ণে প্রবেশ করতেই তাঁর মাথায় যেন বাজ পড়ল। মনে হয় ঠাকুরদাকে উদ্দেশ্য করেই ঐ কথাগুলো আলোচনা করছিল। তিনি ওখানে আর অপেক্ষা করেন নি। অন্দর মহলে প্রবেশ করে বুকে হাত দিয়ে বসে পড়েছিলেন। ঘন ঘন নিঃশ্বাসে মনে হয় ভারাক্রান্ত মনকে হালকা করার চেষ্টা করছিলেন।

    কিছুক্ষণ পর ছোট কাকার ডাক পড়লো। ছোটকাকা বাড়ীতে ছিল না। বাগদি পাড়ার মজলিসে লিপ্ত ছিল। সেই সুযোগে মেজকাকা মুচকি হেসে বলেছিলেন, তিনি বারংবার বলে ছিলেন প্রেমাংশুর প্রতি নজর দিতে, নইলে একদিন আমাদের মান সম্মান, আভিজাত্য ধুলাতে লুণ্ঠিত হবে। 

       ওকথা শোনার পর ঠাকুরদা মেজকাকার মুখ পানে শুধু তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু মেজকাকা কোন দিন একথা বলেন নি, নতুবা তিনি যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বণ করতেন। এখন কথা হচ্ছে ঠাকুরদাকে বিচার করতে হবে। ন্যায়, আভিজাত্যের গৌরব নিয়ে তিনি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। তা সহজে নত হবেন না। 


     তিনি নিশ্চয়ই এই ঘটনা যাচাই করে দেখবেন। ছোটকাকা ঠাকুরদাকে জানিয়ে ছিলেন তাঁর শোনা কথায় যথেষ্ট সত্যতা আছে। ওকথা শোনার পর ঠাকুরদা প্রেমাংশু বলে চিৎকার করে উঠে ছিলেন। সেই সময় মনে হয়েছিল তাঁর মাথায় কেউ যেন কঠিন ধাতু দিয়ে আঘাত করেছিলেন। তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে ছোটকাকা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। 

   শুধু ছোটকাকা কেন, যে কোন মানুষ ঠাকুরদার গুরু গম্ভীর আওয়াজ শুনে এস্ত হয়ে যেতেন। এমনকি তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেছিলেন, তার জানা উচিত ছিল কার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। ছোট কাকা বজ্রাহতের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকলেন। এই অপরাধের বিনিময়ে ছোটকাকার যে কি শাস্তি, সেকথা স্মরণ করিয়েছিলেন। 

    ছোটকাকা নিঃস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি ঠাকুর্দার নির্মম কঠোর বিচারের কথা জানতেন। সুতরাং তাঁর অন্যায় অবিচারের কথা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে প্রয়াসী হত না। ঠাকুর্দার বিচারকে ছোটকাকা মেনে নিতে পারেনি বলে তিনি তখন হতে গ্রাম হতে নির্বাসিত হলেন। কি অন্যায় তিনি করেছেন তা ভালভাবেই অভিজ্ঞ। তবুও মনে মনে ভাবতে থাকেন তিনি যেন নিষ্কলুস। হয়ত একজন খ্যাতনামা আভিজাত্য পরায়ণ ধনবান প্রভাবশালীর পুত্র এক ছোটজাতের মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছেন। ছোট কাকা ন্যায় নিষ্টাবান পুরুষ। তিনিই ছোট জাতদের অন্ধকারে জ্যোতির্ময়ী শিখা দেখিয়েছেন। ওদের জ্ঞান দিয়েছেন, তাহলে তার অন্যায়টা কোথায়? 

    তিনি জানতেন তাকে নির্বাসিত হতে হবে। এই নির্বাসন স্বেচ্ছায় গ্রহণ করবেন। বিলম্ব না করে বাড়ীর চৌকাঠ পার হতে গিয়ে পুনরায় দাদুর কথায় তাকে দাঁড়াতে হল। ছোট পুত্রের মায়া ত্যাগ করতে পারছেন না। তিনি প্রাণের চেয়ে ভালবাসেন তাঁকে। আট বছরের মা মরা ছেলেকে কোলে পিঠে মানুষ করেছিলেন। ওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। 

প্রেমাংশুকে দিয়ে চন্ডীপুরে এক নতুন আলোর সঞ্চার করবেন। যে আলোর অভাবে অন্ধকারে ডুবে আছেন গ্রামবাসীরা একতাবদ্ধ হয়ে ঠাকুরদার কাছে আবদার করে বলেছিলেন, গ্রামে যদি একজন ডাক্তারকে বসানো হতো তাহলে চন্ডীপুর গ্রামবাসীদের চিকিৎসার জন্য পাঁচ মাইল পথ হেঁটে দূর গ্রামে যেতে হত না ও উপরন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা প্রতীক্ষা করতে হত না।  

   শহরও অনুকে দূর। তাই ঠাকুর্দার কাছে সকলের অনুরোধ এই গ্রামে কোন ডাক্তারকে আশ্রয় দিতে পারলে গ্রামবাসীর অনেক উপকার হবে। 

  ঠাকুরদা কথা দিয়েছিলেন নিশ্চয় গ্রামে কোন ডাক্তারকে নিয়ে আসবেন। তাঁর কুঠীর মধ্যে তাকে ডিসপেনসারি করে দেবেন। হাজার চেষ্টা করা সত্ত্বেও কোন প্রকারে ডাক্তারকে আনতে পারেন নি। এই প্রেত পুরীতে কোন ডাক্তার বাস করতে পারবেন না।

      ঠাকুর্দা এ অপমান সহ্য করতে পারেনি। গ্রামের পাশে চারিদিকে জঙ্গল ও পোড়ো বাড়ী আছে বলে চন্ডীপুর প্রেত পুরী। গ্রামবাসীদের কথা দিয়েছিলেন আরো কয়েক বছর ধৈর্য ধরতে। কোন ডাক্তারকে তোষামোদ করবেন না। নিজ পুত্র প্রেমাংশুকে ডাক্তারী পাশ করিয়ে গ্রামবাসীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে বলবেন। কিন্তু সব আশা - আকাঙ্খার, স্বপ্ন ধুলিসাৎ হতে চলেছে  ও কথা গুলো মনে পড়তেই প্রেমাংশুকে দাঁড়াতে বললেন। 


                                                   ক্রমশ...


প্রথম পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন--



তৃতীয় পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন--