কারণ ব্যক্তিগত - প্রদীপ সেনগুপ্ত || Karon Baktigoto - Pradip Sengupta || ছোট গল্প || Shorts story || Story || Bengali story || Bengali Short story

কারণ ব্যক্তিগত

প্রদীপ সেনগুপ্ত




এষার কদিন ধরেই মনে হচ্ছিল শ্রেয়া বোধহয় ভালো নেই। বেশ কয়েকবার উৎকণ্ঠিত হয়ে জিজ্ঞাসাও করেছে মেয়েকে, কিন্তু শ্রেয়া সরাসরি জানিয়েছে মাকে - উৎকণ্ঠার কিছু নেই।


এষা একদিন দৃঢ় ভাবে প্রশ্ন করল মেয়েকে,

আমার কিন্তু ভয় করছে শ্রেয়া তোকে দেখে, কি হয়েছে বলত?


শ্রেয়া খুব স্বাভাবিক গলায় উত্তর দিল, -

আমি বোধ হয় কনসিভ করেছি মা।

কথাটা এতটাই নির্লিপ্তভাবে শ্রেয়া তার মাকে জানাল যে ব্যাপারটা যেন এমন কিছু অস্বাভাবিক নয়, তবে একটু অসময়ে ঘটে গেছে। এষা কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকল শ্রেয়ার দিকে, কি যেন একটা বলতেও গেল - কিন্তু গলা দিয়ে শুধু একটা ঘড়ঘড় আওয়াজের মত হল।

শ্রেয়া পরিবারে একরকম একাকিনী। বাবা প্রিয়তোষ চিরকালই স্বল্পভাষী, তার উপর, সংসারে এষার নিয়ন্ত্রন বেশী থাকায় ওর দায়িত্বও কমে আসছিল ক্রমে ক্রমে। শ্রেয়ার কাকা মনতোষ বেশ দৃঢ় স্বভাবের মানুষ। সংসারে তার অভিমত বা শাসন যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। এষার মনের মধ্যে তখন ঝড়, ও সিদ্ধান্ত নিল ব্যাপারটা আর গোপন রাখা উচিত নয় - পরিবারের মানসম্মান যেমন জড়িত, তেমন শ্রেয়ারও একটা কিছু করা দরকার।


মনতোষ অফিস থেকে ফিরলে এষা ওর মুখোমুখি হল। মনতোষ বিপত্নীক, বইপত্রই ওর সবসময়ের সঙ্গী। অফিস থেকে ফিরে সন্ধ্যেবেলায় মনতোষ একটা বই মুখে করে ইজিচেয়ারে বসেছিল। এষা ধীর পায়ে ঘরে ঢুকল।

- কিছু বলবে বৌদি? মনতোষ জিজ্ঞাসা করল।

এষার গলার ভিতর একটা মাংসপিণ্ড কয়েকবার ওঠানামা করল। মনতোষ সহজেই বুঝে নিল একটা মারাত্মক কিছু ঘটেছে, কিন্তু সেটা যে শ্রেয়ার এই ব্যাপার সেটা ও স্বপ্নেও ভাবতে পারে নি।


মনতোষ দু' হাত এক করে মাথা নিচু করে বসে থাকল অনেকক্ষণ। এষার মনটাও অনেকটা হালকা হল মনতোষকে সব জানাতে পেরে। 

-- ছি, ছি, আমি ত ভাবতেই পারছি না বৌদি!

-- আমি কি ভাবতে পারছি ঠাকুর পো, কি যে করব।

-- শ্রেয়া কি বলছে? ছেলেটাই বা কে?

-- আমি জিজ্ঞাসা করতে সাহস পাই নি, তুমি একটা কিছু কর।

মনতোষ ঘরের মধ্যে পায়চারি করতে লাগল।

-- দাদা জানে?

-কিছু বলিনি এখনো, ও জেনেই বা করবেটা কি শুনি? যা করার আমাদের দুজনকেই করতে হবে।

এষা রূঢ়ভাবে কথাগুলো উচ্চারণ করল। 


শ্রেয়া ঘরের মধ্যে উপুড় হয়ে শুয়ে ছিল। মনতোষ আর এষা ওর ঘরের মধ্যে ঢুকে দরজাটা ভেজিয়ে দিল।

মনতোষ চাপা গলায় জিজ্ঞাসা করল শ্রেয়াকে,

-- স্কাউন্ডেলটা কে?

নামটা না জানালে কি আমার মুক্তি নেই?


রাত্রিবেলা এষা শেষমেষ প্রিয়তোষকে জানাল কথাটা। প্রিয়তোষ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে জিজ্ঞাসা করল, তা, তোমরা কি করবে ঠিক করেছ?'

এষা অসহায় ভাবে মাথা নাড়ল,

- কিচ্ছু বুঝতে পারছি না কি করব।

প্রিয়তোষ উঠে দাঁড়াল, এষা জিজ্ঞাসা করল,

-- কোথায় যাচ্ছ?

প্রিয়তোষ কোন কথা না বলে শ্রেয়ার ঘরের দিকে চলল।


শ্রেয়া জেগেই ছিল। প্রিয়তোষ দরজায় টোকা মারতেই ও জিজ্ঞাসা করল,

-- কে?

-- আমি, বাবা।

-- এস, দরজা খোলাই আছে।


প্রিয়তোষ শ্রেয়ার পাশে এসে বসল, আলতো ভাবে মাখায় হাত রেখে বলল,

-- এটা কি করলি তুই? আমরা এখন কি করি বলত ? 

শ্রেয়া চুপ করে বসে রইল। প্রিয়তোষ আরো কিছুক্ষণ বসে উঠে দাঁড়াল, শ্রেয়ার মাথায় হাত রেখে বলল,

-- দ্যাখ, মা কি বলে।


শ্রেয়া জানে মা কি বলতে পারে, এবং শ্রেয়ার ধারণাই সত্যি হয়ে ছিল, শ্রেয়াও আপত্তি করে নি অতঃপর। এরপর সংসারে নিজের মানুষ বলতে বাবা ছাড়া আর কেউ রইল না ওর। কাকা ত' ওর মুখ দেখাই বন্ধ করেছে প্রায়। এষাও বাক্যালাপ বন্ধ রেখেছে ওর সাথে। শুধু প্রিয়তোষের সাথেই যা একটু কথাবার্তা।


এক আশ্চর্য সাবলীলতায় শ্রেয়ার দিন চলতে লাগল। এর মধ্যে পড়াশুনোটাও শেষ করেছে শ্রেয়া। তবে আরও কিছু করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সাথে সাথে। প্রিয়তোষ সংসারে তার নিস্পৃহ ভাবটা একই ভাবে বহন করে চলেছে। এষা ইদানীং একটু পাল্টেছে। শ্রেয়ার সাথে কথাবার্তা আগের মতই চলছে,

তবে কোথায় যেন একটু দ্বিধা কাজ করছে। একমাত্র শ্রেয়াই নির্বিকার।


প্রিয়তোষ বাড়ি ফিরতেই শ্রেয়া একরকম বাবার বুকের উপর ঝাঁপিয়ে পরল। প্রিয়তোষ হেসে বলল,

-- কোন ভাল খবর আছে বুঝি?

শ্রেয়া ঘাড় নাড়ল,

-- চাকরী পেয়েছি, কোথায় জানো?

প্রিয়তোষ হেসে বলল,

-- সেটা তুই না বললে কি করে বলি।

-- আর বি আই তে। 

-- বাব্বা, এত দারুণ খবর! মা নিশ্চই খুশি হয়েছে?

-- মা কে এখনো বলিনি। 

-- এটা ঠিক করিস নি। যা, মা কে বলে আয়।


সেদিন রাত্রে অনেকদিন পর শ্রেয়া সবার সাথে এক টেবিলে খেল। যদিও মনতোষ কোন কথা বলে। রাতে প্রিয়তোষ শ্রেয়ার ঘরে এল। শ্রেয়া একটা বই পড়ছিল। বাবাকে এত রাতে দেখে শ্রেয়া বেশ অবাক হল,

- কিছু হয়েছে বাবা?

-- আমি ভাবছিলাম, এবার তোর বিয়েটা দিয়ে দেব।

খুব সহজভাবেই প্রিয়তোষ কথাটা বলল। 

- না বাবা, এখনই না। তুমি কি মনে কর আমি বুড়িয়ে গেছি?

-- ঠিক তা নয় রে মা, আমার শরীর খুব একটা ভালো যাচ্ছে না তাই.....

- কিচ্ছু হবেনা তোমার। মেয়ের রোজগারে একটু আনন্দ করতে ইচ্ছে হয়না? আমার ত' অনেক প্ল্যান.... প্রিয়তোষ বুঝল এই ব্যাপারে এখন যে কোন আলোচনাই অর্থহীন।


শ্রেয়া সেদিন বাড়িতে ঢুকল বেশ হালকা মনে। হাতে কিছু খাবারের প্যাকেট, প্রথম মাইনে পেয়েছে সো আজ। এষাই দরজা খুলে দিয়েছিল। শ্রেয়া খাবারের প্যাকেটটা মায়ের হাতে তুলে দিল। এষা জিজ্ঞাসা করল,

-- কি আছে এতে?

-- চিকেনের কিছু প্রিপারেশন, খেও কিন্তু।


প্রিয়তোষ ঘরেই ছিল। শ্রেয়া সোজা ওর বাবার সামনে এসে দাঁড়াল, একটা খাম বাবার হাতে দিয়ে বলল

-- ধরো, আমার প্রথম আয়।

প্রিয়তোষ খামটা মাথায় ঠেকিয়ে আবার শ্রেয়ার হাতে ফিরিয়ে দিয়ে বলল,

- এটা মা কে দিয়ে আয়।


রাতে খাবার টেবিলে সবাই একসাথে বসল। খেতে খেতে মনতোষ বলল,

-- একটা কথা বলা হয় নি, বিটু আসছে, অবশ্য একদিনের জন্য। কাল সকালে এসে পরশু মর্ণিং ফ্লাইটেই চলে যাবে। মনুদি ফোন করেছিলেন।

মনুদি, অর্থাৎ মণিদীপা মনতোষের বড়শালী। মনতোষের শ্বশুর বাড়ির সাথে এ বাড়ির সম্পর্ক এখনো আগের মতই। বিটু হল মণিদীপার ছেলে। কৃতি ছেলে, চাকরীটাও বেশ ভালোই করে মুম্বাইতে আছে। বছর তিনেক আগে একবার এসেছিল বিটু, চারপাঁচ দিন ছিল বেশ হৈ হৈ করে।


শ্রেয়ার থেকে বয়সে একটু বড় হলেও শ্রেয়া ওর বন্ধুর মত। প্রিয়তোষ শ্রেয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, - তোর ত নতুন চাকরী, না হলে বলতাম একদিন ছুটি নিতে।

মনতোষ মুখ না তুলে বলল,

– বিটু ত আর সারা দিন বাড়ি থাকছেনা, সন্ধ্যের সময়টা যা একটু থাকবে তখন ত সবাই আছি। ওর শুধু শুধু ছুটির নেবার দরকার কি! ঘরের আবহাওয়াটা বেশ সহজ হয়ে আসছে দেখে প্রিয়তোষের ভালো লাগছিল। শ্রেয়া খাওয়া হয়ে গেলে উঠে পড়ল, প্রিয়তোষের দিকে তাকিয়ে বলল,

- আমি উঠছি।

প্রিয়তোষ ঘাড় নেড়ে অনুমতি দিল।


শ্রেয়ার একটু বেলা পর্যন্ত ঘুমানো অভ্যেস, সকালে ঘুমটা যখন পাতলা হয়ে এসেছে তখন কানে এল অনেক জনের কথাবার্তার আওয়াজ, কেউ এসেছে বোধহয়। কেউ মানে নিশ্চয়ই বিটু। শ্রেয়া উঠে পরে দরজা খুলে বাইরে এল, ডাইনিং হলে বিটু চায়ের কাপ নিয়ে বসে সবার সাথে কথা বলছিল- শ্রেয়াকে দেখে চেঁচিয়ে উঠল,

- সব শুনেছি, আজ ফিরে এসে যা খুশি তাই খাব এবং সেটা তোমার খরচায়।

শ্রেয়া হেসে ফেলল, বলল,

- ঠিক আছে, কি কি খাবে একটা লিস্ট করে রেখো, সবাই মিলে খাব।


শ্রেয়া অফিস চলে গেল কিছুক্ষণের মধ্যে। বিটু তখন তৈরী হচ্ছিল বেরোবে বলে। এষা বিটুর দিকে তাকিয়ে বলল,

-- এই বেলাটা কষ্ট করে যা আছে খাও, রাত্রে ত শ্রেয়ার দায়িত্ব।

বিটু হেসে বলল,

- এ ব্যাপারটা আমিই দেখব, এত ভালো একটা খবর অল্পে ও ছাড়া পাবে না কি?


শ্রেয়ার ইচ্ছে ছিল সবাইকে নিয়ে কোন ভালো রেস্টুরেন্টে খাওয়াবার। কিন্তু এষার আপত্তিতে হল না। এষা বলল, 

-- জানিস ত তোর কাকা বা বাবা কেউই বাইরে খাওয়া পছন্দ করে না, আর আমারও ঠিক ধাতে সয় না। বরং খাবারটা কিনে এনেও ত আমরা এখানে বসে খেতে পারি।

শ্রেয়া চুপ করে রইল। বিটু বলল,

-- সেই ভালো, বাড়িতে বেশ হাত পা ছড়িয়ে আরাম করে খাওয়া যাবে।


সন্ধ্যেবেলায় শ্রেয়া বাড়ি ফিরে দেখল বিটু তখনো ফেরেনি। এষাকে ডেকে ও জিজ্ঞাসা করল,

- কি খাবে বল, আজকে তোমার পছন্দ মত খাবার আনব।

এষা অনেকদিন পর শ্রেয়ার কাঁধে হাত রাখল, হেসে বলল,

--আমার আবার পছন্দ অপছন্দ কি, তোর যেটা ভালো মনে হয় তাই আন।

শ্রেয়া বলল,

-- ঠিক আছে, তাই আনব - এটা খাই না, ওটা খাই না বলতে পারবে না কিন্তু। যা আনব লক্ষী মেয়ের মত খেতে হবে।

বিটু অফিস থেকে এসেই চিৎকার করে শ্রেয়াকে ডাকতে লাগল। এষা বলল,

- অফিস থেকে এসেছ, চা জলখাবার খেয়ে নাও। বিটু গম্ভীর মুখে বলল,

- উঁহু, খিদে নষ্ট করতে রাজী নই আমি। এখনি বেরোতে হবে, নো দেরি। শ্রেয়া রেডিই ছিল। বিটুর সামনে এসে বলল,

- তোমার খাবার পালিয়ে যাবে না, একটু ফ্রেশ হয়ে নাও। আমারও একটু চা খেতে ইচ্ছে করছে।


দুজনে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে ঠিক করল পার্কস্ট্রীটেই যাবে। শ্রেয়া আপত্তি করল না। একটু হেঁটে একটা ট্যাক্সিও পেয়ে গেল।

খাবারের অর্ডার দিয়ে ওরা দুটো চেয়ারে মুখোমুখি বসল। খাবার তৈরী হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। বিটু ওদের অফিসের নানা রকম গল্প করছিল। তারপর হঠাৎ খুব নীচু গলায় বলল,

-- আমি একটা যন্ত্রনার মধ্যে আছি শ্রেয়া। একটা অপরাধ বোধ আমাকে গত তিন বছর ধরে তাড়া করে বেড়াচ্ছে, কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছি না।

শ্রেয়ার বুকের মধ্যে একদল অশ্বারোহী দৌড়তে আরম্ভ করেছে। একটা অজ্ঞাত সংশয়ে ওর মুখটা আবৃত হয়ে যাচ্ছিল। বিটু শ্রেয়ার দুটো হাত ধরে বলল,

-- তুমি যতক্ষণ না বলছ যে তুমি ক্ষমা করেছ... 

শ্রেয়া মনের মধ্যে দৃঢ়তা আনল, একটা সহজ আলো সারা মুখে ছড়িয়ে দিয়ে বলল, 

-- কথাটাত' শুনি।

বিটু মাথা নিচু করে অনেক দূর থেকে যেন বলল, 

--সেদিনের ঘটনাটা কেন যে ঘটল.. একটা এত বড় অন্যায়, মানে আমি বলতে চাইছি কেন যে সেদিন নিজেকে একটু ধরে রাখতে পারলাম না তাহলে এত বড় অন্যায়টা হত না, তোমাকে যে আমি নষ্ট করেছি শ্রেয়া সেটা আমি......

শ্রেয়া নিষ্পলক তাকিয়ে রইল বিটুর দিকে, তারপর শান্ত স্বরে বলল,

-- আমি ক্ষমা করলেই হবেত?

-- শুধু একবার বলে দাও, ব্যাপারটা তোমাকে হার্ট করে নি...

শ্রেয়া বিটুর বুকে ওর তর্জনী ছোঁয়াল, বলল,

--আমি কিছু মনে করছি না বিটু, ঠিক আছে?

বিটু হঠাৎ শিশুর মত সহজ হয়ে উঠল, উফ, বুকের থেকে একটা পাথর নেমে গেল।


সেদিন রতে সবাই মিলে অনেক রাত পর্যন্ত হৈ হৈ করে কাটিয়ে দিল। অনেক দিন পর মনতোষ শ্রেয়ার সাথে টুকরো টুকরো কথা বলল। পরদিনই বিটুর যাওয়া। এষা বিটুকে বলল,

-- এবার শুয়ে পর বিটু, কাল আবার সকাল সকাল উঠতে হবে।


বিটুর ফ্লাইট সকাল সাড়ে নটায়, সকাল সাতটার মধ্যেই বিটু তৈরী হয়ে গেল যাবার জন্য। যাবার সময় দেখল শ্রেয়া ওঠে নি। এষা শ্রেয়াকে ডাকতে যাচ্ছিল, প্রিয়তোষ বলল,

-- থাক্ না, ওকে ডাকতে হবে না।

বিটু বলল,

-- বাঙালীর কাঁচা ঘুম ভাঙাতে হবে না, ও ঘুমাক। আবার বোধহয় নেক্সট মান্থেই আবার আসতে হবে, তখন একটু বেশী দিনের জন্য আসব।


শ্রেয়া আটটার মধ্যেই রোজ উঠে পড়ে। কিন্তু মাড়ে আটটাতেও যখন ওর ঘুম ভাঙল না তখন এষার বেশ চিন্তা হল। শ্রেয়ার ঘরের দরজায় আস্তে আস্তে টোকা দিল এষা, কিন্তু কোন সাড়া পেল না। তারপর বেশ জোরে কয়েকবার ধাক্কা দেবার পরেও যখন সাড়া পেল না তখন ওর বুকটা কেঁপে উঠল, কিছু হয়নি ত শ্রেয়ার?


প্রিয়তোষ অফিস যাবার জন্য তৈরী হচ্ছিল। এষা ওর সামনে এসে অসহায়ের মত দাঁড়াল, প্রিয়তোষ জিজ্ঞাসা করল,

-- কি হয়েছে? কিছু বলবে?

-- শ্রেয়া ঘরের দরজা খুলছে না।


প্রিয়তোষ এক দৌড়ে শ্রেয়ার ঘরের সামনে চলে এল। মনতোষও ততক্ষণে চলে এসেছে। এষা নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল ওদের পাশে।


কিছুক্ষণের মধ্যেই সত্যটা প্রকাশ পেল, শ্রেয়া নেই। শ্রেয়ার ঘরের ভেঙে ফেলা দরজা দিয়ে ওর নিথর শরীরটা দেখা যাচ্ছিল খাটের উপর।


ওর এই নির্লিপ্ত পরে থাকাটাও যেন তেমন কোন ঘটনা নয়, ব্যক্তিগত কারণে একটু অসময়ে ঘটে গেছে।



Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024