আস্থা যখন ভাঙে - পার্থ প্রতিম দাস || Aastha jokhon Vange - Partha pratim das || Story || Short Story || Bengali Story || Bengali Short Story || গল্প || ছোট গল্প || অনুগল্প

   আস্থা যখন ভাঙে 
                 পার্থ প্রতিম দাস 


রুক্ষ লাল মাটির দেশ হলো সতেড়গড়। আশেপাশের ছয়টি ছোটো ছোটো গ্রাম নিয়ে এই সতেড়গড় গঠিত। এই সতেড়গড়ের মধ্যে সামন্ত পরিবারের নাম ডাক সবচে বেশী। বীর সামন্তের এখন তাঁর পাঁচ ছেলে আনন্দ, বলরাম, শ্রীদেব, অর্ণব ও ধনঞ্জয় বিয়ে করে আলাদা আলাদা আছে। তবে বীর সামন্তের বৌ অলকাসুন্দরী এখনও বেঁচে আছেন। 
    তাদের পুরাতন ঐতিহ্যের মধ্যে পাথর বাঁধানো ঘাট আর তার পাশের প্রকান্ড বকুল গাছ। বিরাট খামারটা শূন্য পড়ে আছে। বসন্ত পূর্ণিমার দুদিন আগে, ফুটফুটে জোছনা উঠেছে। বলরাম অনেক রাত করে বাড়ি ফিরে দেখে, বকুল গাছ থেকে একটা সাদা জামা পরা লম্বা লোক মাটিতে নেমে ঘাটে পা ধুয়ে আবার গাছে উঠে মিলিয়ে গেল। 
     বলরাম সকালে উঠে ভয়ে ভয়ে অলকাসুন্দরীকে বলল। অলকাসুন্দরী বললেন, "এতো ঘোর অমঙ্গলকর কথা। বাড়িতে অমঙ্গল দেখা দিলে এভাবে মহাপুরুষ বের হয়।"
    তখন সবাই বলল, "তাহলে উপায় কি!!"
অলকাসুন্দরী বললেন, "পুজো করতে হবে ওই বকুল তলায়।"
     কথা শুনে আনন্দ বকুল তলা পাকা দিয়ে বাঁধিয়ে দিল। অর্ণব রেলে চাকরী করে। তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাইরে থাকে। তাকেও ডেকে পাঠালো। 
      বসন্ত পূর্ণিমার দিন সকাল থেকে বিরাট আয়োজন করে পুজো আরম্ভ হয়ে গেল। সমস্ত সতেড়গড়কে খাওয়ানোর ব্যবস্থা হলো। দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে সন্ধ্যা নামতেই তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। 
     মাঝ রাতে ঝড়ের হাওয়া সহ্য করতে না পেরে বকুল গাছ ভেঙে পড়লো। সবাই সকালের অপেক্ষায় আছে। 
     ভোর থেকে শুরু হয়ে গেলো বকুল গাছের ভাগ নিয়ে পাঁচ ভাইর মধ্যে ভীষন ঝগড়া। অলকাসুন্দরী ঘাট থেকে বললেন, "ওরে, তোরা একটু থাম।"
     কথাটা শুনে অর্ণবের স্ত্রী রেগে ছুটে এসে অলকাসুন্দরীকে পাথর বাঁধানো ঘাটে ঠেলে ফেলে দিল।

Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩১ || Sarod sonkha 1431 || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র