ছোট গল্প - ইন্দুবালা হত্যা রহস্য || লেখক - আশিস চক্রবর্তী || Short story - Indubala Rohosyo || Written by Ashis Chakrabarti


 

ইন্দুবালা হত্যা রহস্য

আশিস চক্রবর্তী


আমার নাম হৃষিকেশ রক্ষিত ।আমি একজন রিটায়ার্ড সরকারী গোয়েন্দা। দীর্ঘ তিরিশ বছর লাল বাজার হেড কোয়ার্টারে ক্রাইম ব্রাঞ্চের স্পেশ্যাল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত থাকা কালীন, বিশেষ কিছু মার্ডার কেস এর সমাধান করার পর, ঘটনা গুলি ডাইরী তে লিখে রাখি। আজ যে ঘটনা আপনাদের শোনাতে যাচ্ছি সেটা হলো ইন্দুবালা হত্যা রহস্য। ঘটনাটি ঘটেছিল মৌলালীর বিখ্যাত স্বর্ণ ব্যবসায়ী জয়চাঁদ বড়াল এর বাড়ি। হত্যার খবরটা পাওয়ার পর , আমার সহকারী ইন্সপেক্টর পঞ্চানন সিকদার কে সঙ্গে নিয়ে ঘটনা স্থলে পৌঁছে গিয়ে দেখি বাড়ির পরিবেশ একে বারে থমথমে । বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করতেই প্রথমে যেটা আমার চোখে পড়ল সেটা হল ডাইনিং এর দেয়ালে টাঙানো একটা গোপালের ছবি। বিরাট বাড়ির , তিন তলার ঠাকুর ঘরের সামনে সকলে ভিড় করে দাঁড়িয়ে রয়েছে । ঠাকুর ঘরের ভেতর মুখ থুবড়ে পরে রয়েছে জয়চাঁদ বড়াল এর মা ইন্দুবালা বড়াল। মুখের ভেতর থেকে সাদা ফেনা বেরিয়ে মেঝেতে গড়িয়েছে খানিকটা। দেখলেই বোঝা যায় ইন্দুবালা দেবী কে বিষ দেয়া হয়েছে। ঠাকুর ঘরের পূজার উপকরণ সব ওলট পালট হয়ে আছে। অর্থাৎ মৃত্যুর আগে ইন্দুবালা দেবী ছটপট করেছেন খানিক ক্ষন। ডেডবডি ঠান্ডা। মৃত্যু অনেক আগেই হয়েছে। ঘড়িতে এখন সাড়ে বারোটা । সে হিসেবে মৃত্যুর সময় অনুমান সকাল আটটা থেকে নটার মধ্যে। লাশ এবং সমস্ত ঠাকুর ঘর খুঁটিয়ে দেখার পর আমি পঞ্চানন কে তদন্তের জন্য বিশেষ কিছু নির্দেশ যেমন ফটোগ্রাফার এবং ফ্রিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্টদের আনানোর নির্দেশ দিয়ে নিজের কাজে লেগে পড়লাম। প্রথমেই বাড়ির সকলের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন। তাই উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বললাম , " লাশ প্রথমে কে দেখেছে ? "

একজন মাঝ বয়স্ক মহিলা সামনে এসে জবাব দিল , " আমি সাহেব ! " 

" তোমার নাম কি ? "

" বীনা স্যার ! আমি এ বাড়ির কাজের লোক। "

" ও আচ্ছা ! কত বছর এখানে কাজ করছ ? "

" আজ্ঞে দশ বছর হবে !"

" তোমার কাজের সময় কতক্ষণ ? " 

" আমি সকাল ছটার মধ্যে এ বাড়িতে আসি । তারপর সারাদিন এ বাড়ির কাজ কর্ম করে বিকেলে বাড়ি ফিরে যায়! "

" তোমার বাড়ি কোথায় ? "

" হঠাৎ কলোনী। " 

" কে কে আছে বাড়িতে ! "

" আমার স্বামী আর সাত বছরের একটি মেয়ে !" 

 "স্বামী কি করে ? "

" আজ্ঞে ও কলের মিস্ত্রি !" 

" এবাড়িতে অপরিচিত কাউকে আসতে দেখেছিল এর মধ্যে ? কিংবা বাড়ির আশে পাশে কাউকে ঘোরা ফেরা করতে দেখেছিলে কি ? "

" না সাহেব ! সেরম তো কিছু চোখে পড়েনি ? "

" হুম ! আজকে সকালে ঠাকুর ঘরে এসে তুমি কি দেখেছিলে ? "

" ঘরের কাজ কর্মের সাথে সাথে মাইজীর খেয়াল রাখা ভি আমার কাজ। মাইজী অনেক বেলা হয়ে গেল তবু নীচে নামছে না দেখে আমি ঠাকুর ঘরে দেখতে এসে দেখলাম মাইজী পড়ে আছে। তখন দাদা বাবু কে ডেকে দেখায়। দাদা বাবু মাইজীর গায়ে হাত দিয়ে বললেন পুলিশে খবর দিতে । এ অন্য রকম মনে হচ্ছে ! "

" দাদা বাবু কে ! "

একজন ভদ্র লোক সামনে এগিয়ে এসে বললেন , " আজ্ঞে আমি ! আমি এ বাড়িতে ভাড়া থাকি। আমি একজন ডাক্তার ! দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওঁনাকে বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমি অন্য কেউ লাশের গায়ে হাত দেবার আগে পুলিশে খবর দেয়ার পরামর্শ করি। "

" আপনি কি করে বুঝলেন হত্যা করা হয়েছে ? এটা সুই সাইড কেসও তো হতে পারে ? "

" আমি পেশায় একজন ডাক্তার । ডেড বডি দেখেই আন্দাজ করতে পারি যে হত্যা না সুই সাইড । সুই সাইড করতে নেমে কেউ নিশ্চয় স্নান করে পূজার ঘরে পূজা দিতে বসবে না। আর তাছাড়া ইন্দুবালা দেবী কে আমি কিছুটা চিনি। কাল রাত্রি অব্দি ওঁর সাথে কথা বলেছি । একবারও মনে হয়নি যে ওঁ আত্মহত্যা করতে পারেন। "

" হুম ! আপনার কথা কে সম্মান জানিয়েই বলছি , হয়তো ওঁ কাউকে বুঝতে না দিয়েই আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন । তাই বাড়ির একেবারে নিরিবিলি স্থানে উঠে প্রত্যেক দিনের কাজ কর্ম সেরে ঈশ্বরের কাছে মান অভিমান জানিয়ে বিষ পান করলেন । যাক গে সে সব অনুমানের কথা। ক্রমশ প্রকাশ্যে আসবে এটা খুন না আত্মহত্যা ! এখন বলুন আপনার নাম ? "

" সুমিত ব্যানার্জী ! "

" আসল বাড়ি কোথায় ? "

" মেদিনীপুর ! "

" এখানে কত দিন আছেন ? " 

" বছর খানেক !" 

" আর কে থাকে আপনার সঙ্গে ? "

" কেউ নয় একা ! আমি ব্যাচেলর ! "

" কোথায় প্র্যাকটিস করেন ? "

" মৌলালীর মোড়ে আমার একটা চেম্বার আছে। " 

" ওকে ! ইন্দুবালা দেবী কি কোনো দিন কোনো শারীরিক সমস্যার কথার কথা আপনাকে জানিয়ে ছিলেন ? "

" বড় রকমের কিছু নয়। সাধারণ জ্বর সর্দি কাশি জন্য আমার কাছে আসতেন। " 

" রেগুলার কোনো ওষুধ কি খেতেন ? "

" যতদূর জানি , না ! "

"ওকে ! আপাতত এই টুকুই । প্রয়োজন পড়লে আরো কিছু কথা জানতে পারি !"

" ওকে অফিসার !এবার আমি কি আমার চেম্বারে যেতে পারি ? "

" আসুন ! কিন্তু আমাকে না জানিয়ে শহরের বাইরে নয় !"

" ওকে ! "

ডাক্তার সুমিত ব্যানার্জী চলে গেলেন। 


এরপর "ইন্দুবালা দেবীর অবর্তমানে এখন এ বাড়ির মালিক কে ? " এই প্রশ্নটা সর্ব সম্মুখেই রাখলাম। 

আমার কথা শেষ হতেই একজন মাঝ বয়স্ক লোক যে এতক্ষণ দূরে দাঁড়িয়ে ছিল , ধীর পায়ে এগিয়ে এসে বললেন , " আজ্ঞে আমার নাম জয় চাঁদ বড়াল। আমি ওঁর বড় ছেলে। " 

" হুম ! এবাড়িতে আর কে কে থাকে ? "

" এঁদের পরিচয় তো আপনি পেয়েইছেন । এছাড়া আমার স্ত্রী লীনা। আর আমার পাঁচ বছরের ছেলে রুপু। আমার ছোট ভাই আর্মিতে চাকরি করে ও খুব একটা এখানে আসে না। লাস্ট এসেছে আজ থেকে মাস চারেক আগে। আর আমার এক পিতৃ মাতৃ হীন দুঃসম্পর্কের ভাগ্নে থাকে ।ওর নাম বিমল !"

" সে কোথায় ? "

" ওর তো ওষুধের কোম্পানি তে সেলস এর কাজ করে । তাই ভোর বেলা বেড়োয়। বাড়ি ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যে হয়। " 

" কোন কোম্পানি ? "

" লং লাইফ কোম্পানি !"  

" ওকে ! ও ফিরলে ওর সঙ্গে একবার কথা বলবো ! আপনার বাড়ি থেকে কিছু চুরি গিয়েছে কিনা লক্ষ্য করেছেন ? "

" উঁহু ! সেরম কিছু তো এখনো টের পায়নি। এরম ঘটনা ঘটলে কারো না কারো তো চোখে পড়ত ! "

" আপনার মায়ের মৃত্যুর জন্য কি , কাউকে সন্দেহ হয় ? "

" না স্যার ! সেরম কাউকে তো এখন মনে পড়ছে না !" 

" আপনারা বাদে ইন্দুবালা দেবীর কেউ নিকট আত্মীয় আছে ? "

" না স্যার ! "

" ইন্দুবালা দেবী কি কোনো উইল করেছিলেন ? "

" হ্যাঁ ! মাস খানেক আগে একবার আচমকাই আমাদের বংশের পুরোনো উকিল প্রকাশ চন্দ্র দত্ত কে ডাকিয়ে একটা উইল করেন ।" 

" ও আচ্ছা ! প্রকাশ বাবু কোথায় থাকেন ? "

" ধর্মতলায়!বাস স্ট্যাডের উল্টো দিকের গলিতে ওঁর বাড়ি ! "

" ওকে ! আপনার স্ত্রীর সঙ্গে একবার কথা বলা প্রয়োজন। " 

" ওকে। আমি ডেকে দিচ্ছি। আসলে আমার মায়ের মৃত্যু তে ওই বেশি শক পেয়েছে। কারণ ওর সঙ্গেই মা বেশি কথা বলতো। "

" ওকে ! আমি ওঁকে এমন কথা বলবো না যাতে ওঁ কষ্ট পায়। " 


তারপর খানিক বাদে লীনা দেবী কে সঙ্গে করে উঠে এলেন জয়চাঁদ বড়াল। লীনা দেবী কাপড়ের আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে আমার সামনে এসে দাঁড়ালেন। আমি ওঁকে জিজ্ঞাসা করলাম , " কয়েক দিনের মধ্যে ইন্দুবালা দেবীর আচরনে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করে ছিলেন কি ? যেমন ধরুন খাওয়া দাওয়ায় মন নেই , কোনো দুশ্চিন্তা , অনিদ্রা কিংবা অপরিচিত কারো সঙ্গে দেখা করছেন এই জাতীয় ? "

"না !" খুব অল্প স্বরে জবাব দিলেন লীনা দেবী । 

" আপনি তো ওঁর সব সময়ের সঙ্গী ছিলেন , ওঁর কোনো শত্রু ছিল বলে আপনার মনে হয় ? বা আপনি কাউকে সন্দেহ করেন কি ? "

" ওঁর মতো মানুষের শত্রু থাকবে কি করে ? সকাল সন্ধ্যে ওঁ গোপাল সেবা নিয়েই থাকতেন। বাইরে খুব একটা বেরোতেন না। কারো সঙ্গে আজ অব্দি মুখ তুলে কথাও বলেননি ! ওঁর আবার শত্রু থাকবে কি করে ? আর বাড়ির সকলেই বিশ্বাসী মানুষ । ওঁকে মেরে কারো সুবিধে হবে বলে তো আমার মনে হয় না ! " 

" গত কাল তিনি সারা দিন কি কি করেছেন মনে আছে ? "

" হুম ! তিনি প্রতি দিনের মতো সকাল সকাল স্নান সেরে পুজো দিতে আসেন ঠাকুর ঘরে । তারপর ঘন্টা খানেক পর নীচে নামেন । এরপর সকালের খাবার খান। তারপর আমার সঙ্গে রান্না ঘরে ছিলেন। তারপর দুপুর বেলা পুনরায় গোপাল সেবা দিয়ে দুপুরের খাবার খান। তারপর ঘুমোতে যান। এরপর বিকেল বেলা ছাদে কিছুক্ষন ঘোরা ফেরা করেন। সন্ধ্যে বেলা ফের গোপাল সেবা দিয়ে গীতা পাঠে বসেন। তারপর রাত্রি বেলা খাবার খেয়ে শুতে যান। শুধু কাল বলে না , এই ছিল ওঁর প্রতিদিনের রুটিং। তবে সময় পেলেই গোপালের কাছে যেতেন। গোপাল কে তিনি নিজের সন্তান হিসাবেই মানতেন। " 


" হুম ! এর মানে গোপাল এর পূজার পর তিনি খাদ্য গ্রহণ করতেন। অর্থাৎ আজ সকালে তিনি খাবার খাননি। তাই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দেবার কোনো সম্ভাবনাও নেই। এদিকে পূজা অসমাপ্ত । তাই পূজার প্রসাদ গ্রহণ করেছেন সে কথাও বলা যাচ্ছে না। লাশের গায়ে কোনো আঘাতের বা ধ্বস্তা ধ্বস্তির চিহ্নও নেই যে বলা যাবে কেউ জোড় করে বিষ খাইয়ে দিয়েছে । " 


জয়চাঁদ বড়াল ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করলেন , " তাহলে স্যার আমার মা কে খুন করলো কে ? "

আমি বললাম , " সে প্রশ্ন তো রয়েইছে জয়চাঁদ বাবু তার সঙ্গে আরও একটা প্রশ্ন জুড়ে যাচ্ছে যে খুনটা কিভাবে হলো ? অর্থ্যাৎ বিষটা দেয়া হলো কিভাবে ? "  

জয় চাঁদ বাবুর সঙ্গে কথা বলা শেষ করে আমি পঞ্চানন কে বললাম , " পঞ্চানন ! তুমি লাশ টাকে পোস্ট মোর্টেম এর ব্যবস্থা করে রিপোর্ট নিয়ে আমার সঙ্গে সন্ধ্যে বেলায় দেখা করো । আমি ততক্ষণ বাইরে টা একবার চক্কর দিয়ে আসি। কয়েকটা বিষয় জানা ভীষণ জরুরী হয়ে পড়ছে। "

পঞ্চনন জবাব দিল , " ঠিক আছে স্যার ! আমি আপনার সঙ্গে সন্ধ্যে বেলায় দেখা করছি। " 

এরপর আমি জয়চাঁদ বড়াল কে বললাম , " রাত্রি বেলা সকলকে এই বাড়িতে উপস্থিত থাকতে বলবেন। আমি একবার আসবো। " 


সমস্ত দিন তদন্তের স্বার্থে খোঁজ খবর চালিয়ে বেশ কিছু আশ্চর্য জনক ইনফরমেশন আমার হাতে উঠে এলো। সন্ধ্যে বেলা নিজের রুমে বসে ইন্দুবালা হত্যা রহস্যের সমাধান এর সূত্র সাজাচ্ছি এমন সময় ইন্সপেক্টর পঞ্চানন আমার রুমে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করল। তারপর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট টা আমার হাতে দিয়ে বলল , " বিষক্রিয়ার ফলেই মৃত্যু হয়েছে স্যার। কিন্তু প্রশ্ন এখন বিষটা কে দিল ? "

আমি পঞ্চানন কে বললাম , " আরো একটা প্রশ্ন পঞ্চানন ! বিষটা দিলো কি ভাবে ? কারণ ইন্দুবালা শেষ খাবার খেয়েছে রাত্রে ।আর জলের মাধ্যমে বিষ দেয়া খুব কঠিন কাজ। কারণ ওতে জলের স্বাদ ও গন্ধে পরিবর্তন আসে ! যে কেউ চট করে ধরে ফেলতে পারে ! " 

" হুম স্যার ! বড় জটিল কেস ! এদিকে আপনার কথা মতো গোপালের চরণামৃত পুজোর প্রসাদ সমস্ত কিছু পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে , কোথাও বিষের অস্তিত্ব নেই।গোটা ঘর বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও, এমন কি বাড়ির আশ পাশ টাও খুঁটিয়ে দেখেও বিষের কোনো শিশি বোতল উদ্ধার হয়নি। "

" ওসবে থাকবে না , সে আমি আগেই বুঝেছি ! " 

" তাহলে কেস টা কি স্যার ? " 

" আচ্ছা পঞ্চানন ! তোমার কি মনে হয় ? খুন টা কে করতে পারে ? "

" আমার মনে হচ্ছে ডাক্তার টা স্যার !" 

" কেন ? ইন্দুবালা কে খুন করে ওর কি লাভ ? "

" হয়তো ইন্দুবালা এমন কিছু গোপন ব্যাপার জানতো ডাক্তারের সমন্ধে , যার থেকে বাঁচাতেই ডাক্তার খুন টা করেছে। আর ডাক্তারদের কাছে বিষ দেয়া কোনো ব্যাপার না স্যার ! ওষুধের মাধ্যমে বিষ খাইয়ে দেয়া যেতেই পারে। "  

"তার মানে তুমি বলছো ইন্দুবালা দেবী ডাক্তারকে ব্ল্যাকমেইল করতো ! তোমার কথা অস্বীকার করছি না । তবে ওষুধের কারবার তো জয়চাঁদ বাবুর ভাগনেও করে। এবং সেও খুব সকালে উঠে বাইরে বেরিয়ে যায়। অর্থাৎ সকালেই কাজটা সেরে ও বাইরে চলে যেতে পারে অনায়াসেই । "

" কিন্তু স্যার মোটিভ ? "

" মোটিভ সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা ! খোঁজ খবর নিয়ে জানলাম ইন্দুবালা দেবী উইলে বিমলের জন্য কিছু রেখে যায়নি। আশ্রিত বিমল আশা করে ছিল কিছু পাওয়ার ! কিন্তু সে আশা ভঙ্গ হওয়ায় রাগ জন্মায় । আর তার থেকেই প্রতিশোধ। "

" হতে পারে স্যার ! আর কাজের মেয়ে বীনা ? "

" শোনো পঞ্চানন! একজন গোয়েন্দা হিসেবে আমার সন্দেহটা সবার প্রতিই ঘোরা ফেরা করছে। কারণ আমাদের কাজের সাফল্য নির্ভর করে অপরাধীর কাজ কর্ম ও মানসিক পরিস্থিতি বিচার করে । বিনার প্রতিও সন্দেহ নেই তা বলবো না । আজকে হটাৎ কলোনী গিয়ে যা জানতে পারি তা হলো , ও গরীব , অস্বচ্ছল, বিপদ যুক্ত পরিবারের সদস্যা । সে হিসেবে ওর খুন করার অনেক মোটিভ থাকতে পারে। সব থেকে সহজ যেটা তা হলো মূল্যবান কোনো জিনিস সরিয়ে ফেলা। যেটা হয়তো ইন্দুবালা দেবীর নজরে পড়েছিল। আর তার থেকেই খুন ! "

"কিন্তু স্যার জয়চাঁদ বড়াল তো বলছেন বাড়ি থেকে মূল্যবান কিছু খোয়া যায়নি ! "

" ধরে নিলাম জয়চাঁদ বড়ালের কথা সত্য ! কিন্তু এও তো হতে পারে মূল্য বান বস্তু টা ছিল ইন্দুবালা দেবীরই একার সম্পদ। যার সম্বন্ধে কেউ কিচ্ছু জানে না। আর সেটা টের পেয়ে বীনা হাতিয়েছে । এরম হয় জানতো পঞ্চানন ! বাড়ির বয়স্ক মানুষ জনের কাছে মহা মূল্যবান বস্তু সকলের অজান্তেই থেকে যায়। " 

" তা হয় স্যার ! আমার ঠাকুর দায় আমৃত্য আকড়ে ধরে ছিলেন একটা ব্রিটিশ পিরিয়ডের সোনার কয়েন। মৃত্যুর পর ওঁর বালিশের ভেতর থেকে সেটা উদ্ধার করা হয়। তাহলে বাকি থাকলো স্যার জয়চাঁদ বড়াল আর তার স্ত্রী লীনা দেবী ! "

" হুম ! ইন্দুবালা দেবীর মৃত্যুর জন্য দুঃখ টা ওরা দুজনেই বেশি পেয়েছে ! "

" হুম স্যার। নিজের সন্তান বলে কথা ! " 

" তাহলে এখন চলা যাক বড়াল বাড়ি। বাকি কথা ওখানেই হবে ! " 

" হ্যাঁ স্যার চলুন ! আপনি কি খুনি কে ধরে ফেলেছেন স্যার ? "

" হুম তা পেরেছি ! তবে আরো খানিকটা স্পষ্ট হওয়া দরকার আছে । তুমি ঠাকুর ঘরে তোলা লাশের ছবি গুলো সঙ্গে নিও । আরো একবার জেরা করার সময় ওগুলো দরকার হতে পারে। " 

" ওকে স্যার ! "



জয়চাঁদ বড়ালের বাড়ি পৌঁছে সেখানে দেখলাম ওরা সকলেই আমার অপেক্ষা করে একটা হল ঘরে বসে রয়েছে। প্রথমেই কাজের মেয়ে বীনার সঙ্গে আমার কথোপকথন শুরু করলাম। সারা দিন ঘুরে সংগ্রহ করা তথ্য এবারে আমার অস্ত্র হয়ে উঠল। বীনার আর্থিক অবস্থা ভালো নয় । সম্প্রতি ওর স্বামী রেলের লোহা চুরির দায়ে জেলে ঢুকেছে । অর্থ্যাৎ চুরির অভ্যাস ওর থাকলেও থাকতে পারে। আমার এসমস্ত কথা শোনার পর বীনা হাঁও মাও করে কেঁদে বলল , " আপনার সব কথা ঠিক সাহেব । কিন্তু আমি মাইজী কি খুন করিনি সাহেব। গঙ্গা মাইজীর কসম ! মাইজী আমাকে খুব ভালোবাসতো !" 


পরবর্তী কথা বার্তা শুরু হলো ডাক্তার সুমিত ব্যানার্জীর সঙ্গে । আমার মুখ থেকে , ওঁর চেম্বার যে এখন ঠিক ভাবে চলে না , আর বছর খানেক হলো মফস্বলের সরকারি হাসপাতালের চাকরি খুইয়ে এখানে এসে উঠেছেন, সে সব কথা মেনে নিলেন তিনি। তবে ওঁর সম্পর্কে শেষ তথ্য টা ছিল চমক প্রদ। ইন্দুবালা দেবীর স্বামী অর্থ্যাৎ জয়চাঁদ বড়ালের বাবা ডাক্তার সুমিত ব্যানার্জীর কাছে ভুল চিকিৎসায় মারা যান । এ কারণে ইন্দুবালা দেবীর সঙ্গে ডাক্তার বাবুর সম্পর্ক তেমন ভালো ছিলনা। তিনি বেশ কিছু বার সুমিত বাবুকে এ বাড়ি ছেড়ে উঠে যেতে বলে ছিলেন। কিন্তু সুমিত বাবু তাল বাহানা করে রয়েই গেছেন। এসমস্ত কথা শোনার পর ডক্টর ব্যানার্জী খানিক চোটে গিয়ে বললেন , " ভুল চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন এ কথার কোনোমানেই হয় না অফিসার! এতে আমার পেশা কে অপমান করা হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের পেশাতে রিস্ক নিতেই হয় ! আমি রুগীর অবস্থা অনুযায়ী জরুরী ওষুধ প্রয়োগ করেছিলাম। কিন্তু তাতে তিনি কোনো রেসপন্স করেন নি। আমি সে সময় ওদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি ! কিন্তু ওরা ডিসিশন নিতে দেরি করায় পেশেন্ট হার্ট ফেল করে মারা যায়। আর বাড়িয়ালার সঙ্গে মালিকের মনো মালিন্য থাকতেই পারে । এটা কমন ব্যাপার? এর জন্য কেউ কখনও কাউকে খুন করেছে বলে আপনি শুনেছেন কখনো ? "


" ডক্টর ব্যানার্জী ! খুন জিনিস টা আজকাল বড় সহজ ব্যাপার হয়ে পড়েছে । এর জন্য কোনো বড় মাপের মোটিভ এর প্রয়োজন হয় না ! আমি কিন্তু একবারও বলিনি ইন্দুবালা দেবীকে আপনি খুন করেছেন ! আমি কেবল আপনার বিষয়ে কিছু ইনফরমেশন শেয়ার করলাম। খুন শব্দটির উত্থাপন আপনি নিজেই করেছেন। আপনার প্রতি আমার সন্দেহটা খুব সামান্যই এই কারণে যে আপনি ইন্দুবালা দেবীর মৃতদেহ পরীক্ষা করে পুলিশে খবর দেবার কথা বলেছিলেন। আপনার মনে অন্য কোনো চিন্তা থাকলে আপনি এটাকে ন্যাচেরাল ডেথ হিসেব চালিয়ে দিতে পারতেন। আর তদন্তে এমন কিছু কথা এসে যেতেই পারে যা আপনার অনুকূল নাও হতে পারে। আমি কোনো মতেই আপনার পেশা কে অপমান করতে চাইনি। এবার আসি বিমলের কাছে। বিমল ইন্দুবালা দেবীর উইল এ নিজের অংশীদারীত্ব না থাকায় সামান্য অসন্তুষ্ট হয়েছে তাই তো ? "

বিমল কথাটা শুনে জবাব দিল , " দেখুন গোয়েন্দা বাবু। আপনার কথা সত্য। তবে আমি এও খুব ভালো মতো জানি যে আমার জন্মের পর বাবা মা মারা যাওয়ার কারণে আমাকে কেউ সহ্য করতে পারতো না। এছাড়া আমি এঁদের খুব কাছের কেউ না । ছেলে বেলা থেকে এখানে মানুষ হয়েছি তাই একটা কিছু আশা করেছিলাম । পাই নি। তাতে ঠিক আছে । ইটস ওকে ! " 

" কিন্তু আরো একটা বিষয় তুমি এড়িয়ে গেলে বিমল ! "

" কি বলুন তো ? "

"আমি খোঁজ করে দেখেছি তোমার কাজ টা আর নেই। তোমার ওষুধের কোম্পানি উঠে গেছে মাস দুই হলো। তুমি এখন সকাল থেকে রাত অব্দি কাজের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছো। হুট করে কিছু টাকা হাতে এলে একটা নতুন ব্যবসা ফাঁদতে সুবিধেই হতো কি বলো ? "

বিমল মাথায় হাত দিয়ে কিছু ক্ষণ বসে রইল। তারপর একটা আফসোসের শব্দ ছেড়ে বলল , " তা বলে টাকার লোভে কাউকে খুন করা আমার পেশা বা নেশা কোনো টাই নয় ! আমি মনে করি খুন কে করেছে তা আপনি ভালো মতোই জানেন। তাই আর জল না ঘোলা করে সঠিক জায়গায় এগিয়ে যান ! "

কথা শেষ করে বিমল চেয়ার ছেড়ে উঠে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে রইল। বুঝলাম বিমল বাস্তবতার চাপে কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছে। তাই ওর কথা বলার ভঙ্গিমায় কিছুটা রুক্ষ ভাব। আমি জয়চাঁদ বড়াল কে বললাম , " আপনার বাড়িতে ডাইনিং রুমের দেয়ালে যে গোপালের ছবিটা বাঁধিয়ে টাঙানো রয়েছে , সেটা কি আপনাদের ঠাকুর ঘরের গোপালের ? "

জয়চাঁদ বড়াল জবাব দিলেন , " হ্যাঁ ! মা ই ওটা বাঁধিয়ে রেখে ছিলেন । " 

" এই গোপালের মূর্তিটির বয়েস কত ? " 

" তা কেউ জানে না। বংশ পরম্পরায় আমাদের বাড়িতে আছে। " 

" এটা সোনার তো ? "

" মা তো তাই বলতেন ! "

" ওকে ! পঞ্চানন এবারে তুমি ঠাকুর ঘরে লাশের যে ছবি গুলো তুলিয়ে ছিলে সে গুলো একটু নিয়ে এসো । "

পঞ্চানন ছবি গুলো খামের ভেতর থেকে আমার হাতে দিল। আমি এবারে বীণাকে দিয়ে ডাইনিং রুমের দেয়ালের গোপালের ছবিটা আনিয়ে পাশাপাশি রাখলাম। তারপর জয়চাঁদ বড়াল কে বললাম , " দেখুন তো ! কিছু বুঝতে পারছেন কিনা ? "

জয়চাঁদ বড়াল দুটো ছবিতে চোখ বুলিয়ে বললেন , " ঠিক কি বলতে চাইছেন আপনি বলুন তো ? "

" আমি বলতে চাইছি ইন্দুবালা দেবীকে আপনিই খুন করেছেন ! "

কথাটা শোনা মাত্র লীনা দেবীর মুখ স্তম্ভিত হয়ে গেল। জয়চাঁদ বড়াল লাফিয়ে উঠে বললেন , " হোয়াট ! কি বলছেন কি আপনি ? আমি নিজের মা কে খুন করেছি ?"

" হ্যাঁ করেছেন ! "

" অফিসার আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন ? কি যা তা বলছেন ? আমি আমার নিজের মা কে খুন করতে যাবো কেন ? "

" আমি নই ! পাগল হয়ে গিয়েছিলেন আপনি মিস্টার জয়চাঁদ বড়াল ! ব্যবসায় মন্দা ! চতুর্দিকে ধার ! এতে আপনার মাথা খারাপ। এরই মধ্যে মা ইন্দুবালা দেবীর করা উইল যাতে আপনাদের ঈশ্বরের প্রতি কোনো ভক্তি ভাব না দেখে ইন্দুবালা দেবী নিজের সোনার গোপাল কে তাঁর মৃত্যুর পর দান করে গেছেন গোপীনাথ মন্দিরে। এটাতেই ছিল আপনার আপত্তি। কারণ প্রায় কয়েক কোটি টাকার গোপাল কে আপনি হাত ছাড়া করতে চাননি। এই নিয়ে ইন্দুবালা দেবীর সঙ্গে আপনার বচসাও হয়। এসব খবর জানতে পারি আপনাদের যিনি উইল লিখেছেন তাঁর কাছ থেকে । অর্থাৎ উকিল প্রকাশ বাবুর কাছ থেকে। তাই আপনি নিজেই নির্মাণ করেন একটা একই ছাঁচের গোপাল । যা ছিল সোনার জল করা সামান্য মূল্যের। তারপর সুযোগ খুঁজ ছিলেন সেটাকে কিভাবে বদলানো যায়। কারণ ঠাকুর ঘরে সব সময় থাকেন ইন্দুবালা দেবী ।আর গোপাল পরিবর্তন হলে ইন্দুবালা দেবীর নজরে সেটা পড়বেই। কারণ পূর্ব পুরুষের গোপালের চেহারার সঙ্গে তিনি ভালো ভাবেই পরিচিত।শেষ মেশ ইন্দুবালা দেবী কে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন আপনি। তাই ওঁকে খুন করে গোপাল পরিবর্তন করলেন। কিন্তু তাতেও আপনার মনের শান্তি মিটলো না। কারণ পরীক্ষা করে আপনি জানতে পারেন যে পূর্ব পুরুষের গোপাল টিও সম্পুর্ন সোনার নয় ! সোনার জল করা। তাই মা এর মৃত্যর আফসোস আপনার এবং লীনা দেবীর বেশি। আসলে আপনি কথার মার প্যাঁচ বুঝতে ভুল করেছেন। গোপাল ছিল ইন্দুবালা দেবীর সন্তানের মতো। আর সন্তান কে মা বাবারা সোনা ছেলে বলেই ডাকে। ইন্দুবালা দেবী বলতেন আমার সোনার গোপাল। সে সোনা কোনো ধাতু নয় ! আদরের ডাক ! আপনি একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী হয়েও সোনা চিনতে ভুল করলেন এতে আমার ভীষণ আফসোস হয় ! চক চক করলেই সব সোনা হয়না। তাই ছবির দুই গোপালের চেহারায় বিরাট পার্থক্য রয়েছে । যেটা প্রথম দিন আপনার বাড়িতে ঢুকেই আমার নজরে পড়েছিল ? " 

জয়চাঁদ বড়াল এবারে রক্ত চক্ষু নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন , "আপনার কাছে কি প্রমান যে আমি মা কে বিষ দিয়ে খুন করেছি ? "

আমি হেসে বললাম , " আপনি চালাকি করে ছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেন নি ? কারণ আপনাদের বাড়ির গোপালই আপনাকে ধরিয়ে দিয়েছেন। তাঁর সেবক কে খুন তিনি মেনে নিতে পারেন নি ! খুন করার পদ্ধতিটা আপনার বেশ অদ্ভুত। বিষ কথাটা মনে আসতেই সকলের মাথায় আসবে কোনো খাদ্য দ্রব্যে মিশিয়ে কাউকে খুন করা। যেহেতু ইন্দুবালা দেবী পুজো সেরে খাবার খেতেন । তাই তার আগে ওঁকে কিছুতে বিষ মিশিয়ে খাওয়ানোর কথা ভাবলেই প্রসাদ কিংবা চরণামৃত এর কথা সবার মাথায় আসবে। কিন্তু আপনি তা করেন নি। এদিকে পূজা অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় ইন্দুবালা দেবী মারা গিয়েছেন তাই ওসব খাবারে বিষ মেশানোর প্রসঙ্গ আসে না। "

পঞ্চানন এবারে আমাকে জিজ্ঞাসা করল , " তাহলে বিষ খেলো কিভাবে স্যার ! "

আমি বললাম , " খুব সাধারণ ব্যাপার পঞ্চানন। অনেক সময় খুব সামান্য ব্যাপার আমাদের চোখ কে ধোকা দিয়ে দেয়। পূজার মাঝে মাঝে আমাদের বাড়ির মেয়েরা শঙ্খ বাজান। আর এই সুযোগ টা কাজে লাগিয়ে জয় চাঁদ বড়াল শঙ্খের মুখে বিষ লাগিয়ে রাখেন। আর শঙ্খ বাজানোর কয়েক মিনিট পরেই ইন্দুবালা দেবী মারা যান। তবে এই ব্যাপারে অবশ্যই ধন্যবাদ দেয়া উচিত ডক্টর ব্যানার্জী কে। উনি খুনের ব্যাপারটা আঁচ করে ছিলেন বলেই বুদ্ধি খাটিয়ে পুলিশে খবর দিতে বলেন। কি ডক্টর বাবু তাই তো ? "

ডক্টর ব্যানার্জি বললেন , " বেশ কিছু দিন ধরে ইন্দুবালা দেবীর সঙ্গে জয়চাঁদ বড়ালের তর্ক বিতর্ক চলছিল। রাত বিরেতে আমার কানে এসেছিল ব্যাপারটা। তাই ইন্দুবালা দেবীর আচমকা মৃত্যুতে সন্দেহ টা মনে জাগে।"


আমি বললাম , " ধন্যবাদ ডক্টর ব্যানার্জী ! পঞ্চানন , জয়চাঁদ বড়াল কে থানায় নিয়ে চলো। ইন্দুবালা দেবী হত্যা রহস্য এর ফাইল ক্লোজড। " 







Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024