Monday, October 31, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -25


 


আমার মর্মবেদনা অনুভব করে শ্যামলীদি বলল, কোন চিন্তা করিস না, আমি যখন আছি তোর বাবাকে আর পথে পথে ভিক্ষে করতে দেব না। আমার বাসাতে রেখে আমি তাকে সুস্থ করে তুলবো। আমাকে দেখিয়ে দিবি কে তোর বাবা। বিলম্ব না করে শ্যামলীদিকে সাথে নিয়ে হাজির হলাম। বাবা তখন ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে শহরের অভিমুখে।


একজন ধনী পুত্র হয়ে এক মুঠো অন্ন সন্ধানে পথে পথে ভিক্ষে করছে। অদৃষ্টের কি নিষ্ঠুর পরিহাস। তবে কি এ তার কর্মফল ? কেউ উত্তর দেয়নি। বার বার মনকে জিজ্ঞেস করেও কোন উত্তর পাইনি। শুধু দারুণ মর্মবেদনায় আমার অন্তর জ্বলে জ্বলে উঠছিলো। বাণবিদ্ধা হরিণীর মতো আমাকে কাতর করে তুলেছিল। এই স্থানে বাবাকে একটি বারও বাবা বলে ডাকতে পারবো না। মেয়ে বলে পরিচয় দিতে পারবো না। আমার কণ্ঠস্বর তার কানে পৌঁছলে বাবা জানতে পারবেই আমি তার কন্যা রমা।

নোংরা পল্লীতে নোংরা মেয়ে ছাড়া কি ভালো মেয়ে থাকবে? বাবা ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে, শ্যামলীদি বাবার কাছে গিয়ে বলল, আপনি ফিরে যাচ্ছেন বাবা?

কে বাবা বলে ডাকলে মা? তবে কি রমা? না-না এ রমার কণ্ঠস্বর নয়। আর এই নোংরা পাড়ায় রমা আসবে কেন? রমা ভালো চাকরি পেয়েছে। কিন্তু হতভাগী মা আমার কোথায় যে আছে জানি না। তুমি কে?

আমাকে আপনার মেয়ের মতো মনে করবেন। অনেক দিন হলো বাবাকে হারিয়েছি। তারপর ভাবলাম আপনিই আমার বাবা, কারণ আপনাকে দেখতে আমার বাবার মতো। সেই মুখ, চোখ, সেই নাক একই রকম দেখতে যেন। তাই -

তোমার বাবাকে কি হারিয়ে ফেলেছো মা?

হ্যাঁ, বাবা পাগল হয় আমাদের সকলকে ছেড়ে কোথায় যে চলে গেছেন আজও পর্যন্ত খুঁজে পাইনি। আপনার সাথে যখন আমার বাবার অনেকখানি সাদৃশ্য আছে সেজন্য আপনাকেই বাবা বলে মেনে নেব। আপনি কি আমাকে মেয়ে বলে মেনে নিতে পারবেন না।

কিন্তু এই নোংরা পল্লীতে

ভাগ্য এখানে টেনে এনেছে বাবা। আপনি আমার বাসায় চলুন, আপনি ক্লান্ত অবসন্ন, আপনার বিশ্রামের দরকার। সময় হলে আমার দুঃখের কথা শোনাবো। অশুচি, অপবিত্র বলে ঘৃণা করবেন না ।

ও কথা কেন বলছো মা। বাবা কি মেয়েকে কখনো ঘৃণা করতে পারে ? হ্যাঁ, মা আমি তোমার সাথে যাবো। আমার ভীষণ ক্ষিদে পেয়েছে, কিছু খেতে দেবে মা? জানো মা গত দু'দিন থেকে আমি অভুক্ত আছি।

আমার সাথে আসুন সব ব্যবস্থা হবে। বাবার অভুক্ত থাকার কথা শুনে আমি একরকম মুখ চাপা দিয়ে কেঁদে উঠলাম। নিজেকে সান্ত্বনা দেবার ভাষা খুঁজে পেলাম না। আমার কান্না শুনে বাবা বলে উঠলেন, কে কাঁদছে মা?

ও আমারই বোন। বাবা ওকে ভীষণ ভালোবাসতেন। আসুন আমার সাথে, বাড়ীতে গিয়ে পরিচয় হবে। শ্যামলীদি বাবার হাত ধরে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো বাসার দিকে। আমি মুখে কাপড় গুঁজে কাঁদতে কাঁদতে পিছনে চললাম। কি দুর্ভাগ্য আমার। বাবাকে কাছে পেয়েও বাবার নিকট আমার পরিচয় দেবার মতো মুখ নেই। যদি তিনি দৃষ্টিশক্তি না হারাতেন তাহলে আমি কি করতাম? তবে কি বাবাকে উপেক্ষা করে চলে যেতাম? মানসিক যন্ত্রণাকে কোন প্রকারে চাপা দিতে না পেরে ঘরের ভেতরে গিয়ে তক্তাপোষের উপর উপুড় হয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকলাম। শ্যামলীদি আমার পিঠে ঘা মারলো। তবুও আমার মন মানলো না। কাটা ছাগলের মতো ছটপট করতে থাকলাম। শ্যামলীদি দ্বিতীয়বার ধমক দিতে নিজেকে একটু শান্ত করলাম। ধীরে ধীরে দরজার কাছে এগিয়ে এসে এক দৃষ্টে বাবার মুখপানে তাকিয়ে বার বার ঠাকুরদার কথা মনে পড়তে থাকল। কত আদর যত্ন করে বাবাকে মানুষ করেছিলেন। আজ তার এই দুর্দশা। আর মেয়ে বারবণিতা। যে পাপের বোঝা মাথায় বয়ে চলেছি তার ঘৃণ্য ইতিহাস প্রকাশ করে বাবার এই দুর্বলচিত্তে শোকানল প্রজ্বলিত করতে চাই না। হয়তো আমার পরিচয় জানতে পারলে মানসিক স্থৈর্য্য রাখতে পারবেন না ।

শ্যামলীদি খাবারের ব্যবস্থা করল। খাবার মুখে তুলে বললেন, বহুদিন পর আজ মেয়ের ডাক শুনলাম মা। তোমার মতো আমারও একটি মেয়ে ছিল। বড় আদর যত্ন করতো। কিন্তু এই কলকাতাতে চাকুরি করতে এসে আর ফিরে গেলো না। জানো মা, এই মহানগরীর জনস্রোতে কোথায় যে হারিয়ে গেছে জানতে পারিনি। চোখের দৃষ্টিকে হারিয়ে আমি আবার নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছি। এই কলকাতা শহরে ছেলে ও মেয়ে দুজনকে হারিয়ে ফেললাম। আমার নিকট এই কলকাতা মহানগরী এক বিভীষিকা। ওদের চিন্তায় এই আমার অবস্থা। আমার মনে হয় নিশ্চয়ই এ আমার পূর্ব জন্মের পাপ।

শ্যামলীদি বলল, আগে খেয়ে নিন তারপর আপনার কথা শুনবো। বাবা কথা না বলে মুখে খাবার তুললেন। একটু পর হঠাৎ কাশি আরম্ভ হলো। পরপর দুদিন অনাহারে থেকে ওর ভেতরটা শুকিয়ে গেছে। কাশি থামছে না। এক সময় কাশির সাথে এক ঝলক রক্ত বেরুতেই চমকে উঠলাম। তবে কি বাবার টি.বি. হয়েছে।

শ্যামলীদি দৌড়ে এসে বাবাকে ধরলো। চাপ চাপ তাজা রক্ত মুখ দিয়ে অনর্গল বেরুতে লাগলো। শ্যামলীদিকে অতি ধীর কণ্ঠে বললাম, বাবার একি অবস্থা দিদি? আমি যে সহ্য করতে পারছি না।

কোন ভয় নেই, আমি যখন আছি সব ব্যবস্থা হবে। তুই এক কাজ কর, বাবার

দিকে নজর রাখ আমি ডাক্তার ডাকছি। বাবা বললেন, ডাক্তার ডাকতে হবে না মা। আমার টি.বি. হয়েছে। আগে কয়েক বারই মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। আমার মেয়ের অনুসন্ধানে দীর্ঘকাল অনাহারে, অনিদ্রায় যত্রতত্র খুঁজেছি। যার ফলেই আমাকে দুরারোগ্য ব্যাধির কবলে পড়তে হয়েছে। আমার যাবার দিন ঘনিয়ে এসেছে মা।

তুমি অস্থির হয়ো না। এই মানুষটাকে শেষ হতে দাও। আমার বেঁচে থেকে কি

লাভ ?

শ্যামলীদি আমার কাঁধে হাত রেখে জানিয়ে দিলো ঘাবড়াবার কিছু নেই। আমি ডাক্তার নিয়ে আসছি। বিলম্ব না করে শ্যামলীদি দরজার দিকে এগিয়ে যেতেই দুজন পুলিশ ইন্সপেকটর ও চারজন কনস্টেবল এসে শ্যামলীদির পথ অবরোধ করে বললেন, এখানে শ্যামলী চৌধুরী কার নাম?

কি দরকার তার সাথে ?

আমরা জানতে চাইছি, দুজনের মধ্যে কার নাম শ্যামলী চৌধুরী? শ্যামলীদি একটু চিন্তা করে বলল, আমি শ্যামলী চৌধুরী। এবার বলুন কি প্রয়োজন ? আপনাকে গ্রেপ্তার করতে এসেছি।

কারণ?

আপনি খুনী।

খুনি ?

হ্যাঁ। এই চাবুকাটা চিনতে পারছেন? এই চাবুকের বাঁটে আপনার নাম লেখা আছে। তাছাড়া শিবাজী সিং এর একটা লোক ধরা পড়েছে। সে আপনার নাম বলেছে। চলুন বিলম্ব করবেন না।

Post Office Recruitment 2022 || মাধ্যমিক পাশে 25,000 টাকা বেতনে ভারতীয় পোস্ট অফিসে বিপুল পরিমাণে কর্মী নিয়োগ || Post Office Group-D Recruitment 2022


 




মাধ্যমিক পাশ করা থাকলেই সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের ডাকঘরে D Group কর্মী নিয়োগীকরণ হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বৃহত্তম সুখবর। লিখিত পরীক্ষা ব‍্যবস্থা নেই , সরাসরি সাক্ষাৎকারের স্থানে পৌঁছে সাক্ষাৎকার দিয়ে চাক‍রি পেয়ে যাবেন। পশ্চিমবঙ্গবাসী ও মাধ্যমিক পাশ করলেই এখানে চাকরি পেয়ে যাবেন। মহিলা পুরুষ সকলেই আবেদন করতে পারেন। চাকরিতে উৎসাহীদের জন‍্য বিস্তারিত তথ‍্য নিম্নরূপ ---- 


সারা ভারতের যে কোনো প্রান্তের নুন্যতম মাধ্যমিক পাস নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকল বেকার চাকরিপ্রার্থীরা এখানে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নীচে এই নিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হল।
শূন্যপদ গুলির নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স সীমা নীচে আলোচনা করা হল -



Postal Assistant/ Sorting Assistant- 

এই পদে আবেদনের জন্য  স্বীকৃত বোর্ড থেকে নুন্যতম উচ্চমাধ্যমিক পাস করতে হবে। সঙ্গে লাগবে ৬০ দিনের বেসিক কম্পিউটার কোর্সের সার্টিফিকেট। তবে যারা মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক লেভেলে মডার্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশানে নিয়ে লেখাপড়া করেছেন তাদের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের মার্কসীটেই কাজ হবে।  আলাদা কোনো সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন নেই। এই পদে চাকরির জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সক্ষম হতে হবে অর্থাৎ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। এবং সেই সঙ্গে খেলাধুলাতে পারদর্শী হতে হবে। এই পদে ১৮-২৭ বছরের মধ্যে বয়স হতে হবে। তবে SC, ST, OBC এবং PWD শ্রেনীর প্রার্থীরা নিয়মানুযায়ী ৩-১৫ বছর পর্যন্ত বয়সের ছাড় পাবেন। এবং Ex-Serviceman এ রা ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। এখানে বেতন পাবেন প্রতি মাসে ২৫,০০০-৮১,০০০ টাকা।



Postman/Mailguard- 

এই পদে আবেদনের জন্য স্বীকৃত বোর্ড থেকে নুন্যতম উচ্চমাধ্যমিক পাস করতে হবে। সঙ্গে লাগবে ৬০ দিনের বেসিক কম্পিউটার কোর্সের সার্টিফিকেট। তবে যারা মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক লেভেলে মডার্ন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশানে নিয়ে লেখাপড়া করেছেন তাদের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের মার্কসীটেই কাজ হবে। আলাদা কোনো সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন নেই।  এই পদের জন্য আবেদন করার জন্য চাকরিপ্রার্থীকে অবশ্যই শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সক্ষম হতে হবে অর্থাৎ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। এবং সেই সঙ্গে খেলাধুলায় পারদর্শী হতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে অবশ্যই 2/3/4 Wheeler চালাতে জানতে হবে। এবং অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। এই পদে আবেদন করতে হলে বয়স হতে হবে ১৮-২৭ বছর। তবে SC, ST, OBC এবং PWD প্রার্থীরা নিয়মানুযায়ী ৩-১৫ বছর বয়স পর্যন্ত বয়সের ছাড় পাবেন। এবং Ex-Serviceman এ রা ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। এই পদে বেতন দেওয়া হবে ২১,৭০০-৬৯,১০০ টাকা।


Multi Tasking staff- 

এই পদে আবেদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই স্বীকৃত বোর্ড থেকে নুন্যতম মাধ্যমিক পাস করতে হবে। এবং সেই সঙ্গে স্থানীয় ভাষায় অর্থাৎ গুজরাটি ভাষায় পারদর্শী হতে হবে এবং মাধ্যমিক লেভেলে গুজরাটি ভাষা বিষয় হিসেবে থাকতে হবে। এবং খেলাধুলায় পারদর্শী হতে হবে।  এই পদে আবেদন করতে হলে আপনার বয়স ১৮-২৫ বছরের মধ্যে‌ হতে হবে ‌‌। তবে SC, ST, OBC এবং PWD শ্রেনীর প্রার্থীরা নিয়মানুযায়ী ৩-১৫ বছর পর্যন্ত বয়সের ছাড় পাবেন। এবং Ex-Serviceman এ রা ৪৫ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। এই পদে বেতন দেওয়া হবে প্রতি মাসে ১৮০০০-৫৬,৯০০ টাকা।




আবেদন পদ্ধতি:- এই দপ্তরে চাকরির জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এবং এর জন্য যা যা করতে হবে সেগুলি হল-

১) সর্বপ্রথম অফিসিয়াল ওয়েবসাইট dopsportsrecruitment.in এ যেতে হবে।

২) সেখানে গিয়ে Apply now Option এ ক্লিক করে আপনার নিজের যাবতীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন।

৩) রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে আপনাকে একটি User Id ও Password দেওয়া হবে সেটি দিয়ে Login করারর পর একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনের ফর্ম আসবে সেখানে আপনার নিজের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, অভিভাবকের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জেন্ডার, বয়স, ঠিকানা, আধার নম্বর, একটি বৈধ ইমেল আইডি ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখে ফর্ম টিকে ফিলাপ করে ফেলুন।

৪) এরপর আপনার নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের ফটো স্ক্যান করে ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করে দিন এবং সিগনেচারের জায়গায় একটি সিগনেচার স্ক্যান করে আপলোড করে দিন।

৫) সবশেষে আপনার নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে ফর্মের সঙ্গে যুক্ত করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করলেই আপনার অ্যাপ্লিকেশন হয়ে যাবে।


প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:- আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে সেগুলি হল-

১) বয়সের প্রমানপত্র হিসেবে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড।

২) আধার কার্ড।

৩) সমস্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার ডকুমেন্ট।

৪) কম্পিউটার কোর্সের সার্টিফিকেট।

৫) ড্রাইভিং লাইসেন্স।

৬) সমস্ত খেলাধুলা সম্পর্কিত সার্টিফিকেট।

৭) কাস্ট সার্টিফিকেট।


নির্বাচন পদ্ধতি:- আবেদনকারীদের অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট ভিত্তিক একটি মেরিট লিস্ট প্রকাশ করা হবে। এই মেরিট লিস্ট দেখতে  পাবেন অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। এই লিস্টে যাদের নাম থাকবে তাদেরকে ই-মেইল করে বা স্পীড পোস্টের মাধ্যমে ইন্টারভিউ লেটার পাঠিয়ে ইন্টারভিউ ও স্কিল টেস্ট এবং ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশনের জন্য ডাকা হবে। সব শেষে যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের ডেকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট পদে ট্রেনিং করিয়ে ট্রেনিং শেষে সরাসরি চাকরিতে স্থায়ীপদে নিয়োগ করা হবে। 


আবেদন করার গুরুত্বপূর্ণ তারিখ:- গত ২৩/১০/২০২২ তারিখ থেকে আবেদন শুরু এবং এই আবেদন চলবে আগামী ২২/১১/২০২২ তারিখ পর্যন্ত। 

OFFICIAL NOTICE: 

OFFICIAL WEBSTE: 


Friday, October 28, 2022

ইনফোসিস কোম্পানিতে কয়েক হাজার কর্মী নিয়োগ || মাসিক বেতন 24,500 টাকা || Infosys Work From Home Job 2022


 


সমগ্র ভারতের একটি অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি হল ইনফোসিস লিমিটেড (Infosys Limited)। বর্তমান বিজ্ঞপ্তি তে এই কোম্পানিতে প্রচুর সংখ্যক শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে। নিয়োগ এর সব থেকে ভালো খবর হল, এটি বাড়ি থেকেই করা যাবে অর্থাৎ এই কাজটি Work from Home অনুযায়ী করানো হবে। অর্থাৎ যারা বাড়িতে থেকেই কাজ করতে ইচ্ছুক তারা এই কাজটির জন্য আবেদন করতে পারেন। 


সমগ্র ভারত তথা আমাদের রাজ্যের অন্তর্গত সমস্ত জেলা থেকে ছেলে এবং মেয়ে সকল চাকরি প্রার্থীরা আবেদন করার সুযোগ পাবেন। সরাসরি ইনফোসিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।


 এই নিয়োগ সংক্রান্ত বয়সসীমা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বেতন, শূন্যপদ, নিয়োগ পদ্ধতি, আবেদন পদ্ধতি সহ সমস্ত বিস্তারিত তথ্য নীচে আলোচনা করা হল-



নিয়োগের তথ্য (Post Details)


পদের নামঃ ইন্টার্নশিপ (Internship) 


বেতনঃ 24,500 থেকে 34,700 টাকা বেতন দেওয়া হবে। 


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ গ্র্যাজুয়েশন পাশ (Graduation Pass)।



বয়সসীমাঃ সর্বনিম্ন 18 বছর হতে হবে। এছাড়া সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন সংরক্ষিত প্রার্থীরা।


মোট শূন্যপদঃ সর্বমোট 1000 এরও বেশি।



চাকরির ধরনঃ ফুল টাইম পার্মানেন্ট চাকরি 


নিয়োগ পদ্ধতিঃ

সর্বপ্রথম প্রার্থীদের একটি পারসোনাল ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। ইন্টারভিউ উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে এই পদে নিয়োগ করা হবে ‌।




আবেদন পদ্ধতিঃ


ইনফোসিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।


অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রথমে গিয়ে নিজের নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।


তারপর আইভি পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে আবেদন পত্রটি সঠিকভাবে তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।


আবেদন পত্র পূরণ করার সময় প্রয়োজনীয় নথিপত্রগুলো স্ক্যান করে আপলোড করে নিতে হবে।


এরপরে ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।


গুরুত্বপূর্ণ তারিখ (Important Dates) :


নোটিশ প্রকাশ - 15.10.2022

আবেদন শুরু - 15.10.2022

আবেদন শেষ - 18.11.2022 



Official Website -

Click here 🔴



Apply Now -

Click here 🔴



Monday, October 24, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -24


 


আট



 যখন আমরা বাড়ীতে ফিরলাম, অনেক রাত হয়েছে। শ্যামলীদি পোষাক-টোষাক না বদলে বিছানায় লুটিয়ে পড়লো। মনে হয় আজ শান্তিতে ঘুমুবে। প্রায়ই দেখেছি গভীর রাত পর্যন্ত জেগে কি এক চিন্তায় মগ্ন থাকতো। ঘুম তো তার কাছ থেকে এক রকম বিদায়ই নিয়েছিল। গায়ে চাদরটা ঢাকা দিয়ে ওর মুখপানে তাকিয়ে থাকতে চলচ্চিত্রের মতো কয়েকটা দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠলো। কেউ কি জানতো শ্যামলীদি খুনী হবে? কি প্রয়োজন ছিল খুন করার? ইচ্ছে করলে কি সে ক্ষমা করতে পারত না? না। শ্যামলীদি একরোখা মেয়ে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বদলা নিতে পিছুপা হয় না । কখনো বজ্রের মতো কঠিন আবার কখনো কুসুমের মতো কোমল ৷ জানি না, খুন করে সে কতখানি অন্যায় করেছে। তবুও সে খুনী! তাই করজোড়ে ঈশ্বরের কাছে প্ৰাৰ্থনা করলাম, সে খুনী হলেও তার যেন শাস্তি না হয়। সে যেনপুলিশের কাছে ধরা না পড়ে। শ্যামলীদি ছাড়া কোন প্রকারেই এখানে থাকতে পারবো না বাবুগুণ্ডা আর আদরী মাসীর অত্যাচারে আমি অতিষ্ঠ হয়ে উঠব। কিন্তু ঐ শয়তানী আদরী মাসী যদি জানতে পারে শ্যামলীদি খুনী, তাহলে কি হবে তার আগে উভয়ে এই নরককুণ্ড থেকে যেমন করে হোক পালিয়ে যাবো। কেউ আমাদের নাগাল পাবে না। হঠাৎ এক সময় এসব ভাবনার মধ্যেই তন্দ্রালু অবস্থায় শ্যামলীদির পাশে শুয়ে পড়লাম। পরদিন যখন ঘুম ভাঙলো, তখন অনেক বেলা গড়িয়ে গেছে।

নিত্যকার পদ্ধতিতে আমার সখীরা তখন তাদের সংসারের কাজে মন দিয়েছে। কেউ নোংরা জামা-কাপড়ে সাবান দিচ্ছে। আবার কেউ বা উনুনে আঁচ দিচ্ছে। দশটার মধ্যে রান্না-বান্নার কাজ ও আহারাদির পর টানা চার পাঁচ ঘন্টা ঘুম দেবে। কারণ সখীদের নব নব আগন্তুকের জন্য নিশিযাপন করতে হয়। সমস্ত রজনী কেটে যায় প্রেমলীলায়। সকাল পর্যন্ত সেই ঘরে রজনীগন্ধার সৌরভ, আতরের উগ্র গন্ধ ও ফুলের ছিন্ন মালা পড়ে থাকতে দেখা যাবে।

এক সময় দেবীবাবুর গাড়ীর আওয়াজ পেলাম। কোন প্রকারে মুখে জল নিয়ে শ্যামলীদিকে উঠতে বললাম। কারণ সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল। নিদ্রিত শ্যামলীদির চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছল সে যেন চরম প্রশান্তি লাভ করছে, দীর্ঘদিনের ব্যথিত মন যেন তার শান্তি পেয়েছে।

অন্যদিন সকালেই ঘুম থেকে উঠে পড়ে। আজকে কোন তাড়া নেই, আমি শ্যামলীদিকে উঠাবার আগে দেবীবাবু দরজার কাছে হাজির হয়েছেন। শ্যামলীদি আমার ডাক শুনে ঘুমের ঘোরে বলে উঠল, বিরক্ত করিস কেন? শান্তিতে কি ঘুমুতে দিবিনি ?

দেবীবাবুর আগমন বার্তা বললাম, তবুও সে অনড়। দেবীবাবু দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকাতে ভেতরে প্রবেশ করতে বললাম। কোন দ্বিধা না করে ভেতরে প্রবেশ করে একটা কাঠের চৌকির উপর বসলেন। আমি কয়েক মিনিটের মধ্যে সাজগোজ করে শ্যামলীদিকে বলে দেবীর সাথে বেরিয়ে পড়লাম ।

ময়নার কাছ হতে ফিরতে বেশ দেরী হলো। ট্যাক্সির মধ্যে বসে আমার অতীতের ব্যর্থতা ও নৈরাশ্য পীড়িত জীবনের হাহাকার আমাকে উতলা করে তুলল। খুনী শ্যামলীদির কথা, দেবীবাবুর কথা সর্বোপরি ময়নার কথা আমার জীবনের চিন্তাধারাকে এলোমেলো করে দিলো। আর কটা দিনই বা ময়নার কাছে থাকবো। নদীর স্রোতের মত দিন বয়ে যেতে থাকে। আর বেশীদিনের মেয়াদ নেই। কয়েকদিন পরেই দেবীবাবু আমাকে ছুটি দেবেন। ময়নাকে ভুলে যেতে কি পারবো ?

হঠাৎ গলাটা আর্দ্র হয়ে গেলো। মনে হলো ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠি। কিন্তপারিনি। ততক্ষণাৎ কে যেন আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলো আমি একজন বারবণিতা, আমার এতো মায়া কেন? নেহাত তার মেয়েকে বাঁচানোর জন্য দেবীবাবুর মত একজন গণ্য মান্য লোক বারাঙ্গনালয়ে পা ফেলেছে। নচেৎ তার সঙ্গে আমার যোগাযোগই ঘটতো না।

 ট্যাক্সির জানালায় মুখ বাড়াতেই চোখ দিয়ে টপ্ টপ্‌ জল পড়ছিলো। গভীর ভাবে আমি অতীতের চিন্তায় মগ্ন ছিলাম। এমন সময় আচম্বিতে কয়েকটা কথা কানে প্রবেশ করতেই আমার চোখ পড়লো একটা ভিখিরির প্রতি। পরিধানে শতছিন্নবস্ত্র, মুখখানি খোঁচা-খোঁচা দাঁড়িতে পরিপূর্ণ, কংকালসার দেহ, হাড়ের সাথে যেন দেহের চামড়া লেগে আছে। ঘাড়ের গলায় চাপ চাপ ময়লা জমে আছে। চোখ দুটো কোটরাগত। চোখের পাতা দুটো শুধু মিট মিট করছে।

 একটা মেয়ের দিকে হাত বাড়িয়ে বলছে অত্যন্ত ক্ষীণ কণ্ঠে - দুটো পয়সা দাও। অন্ধকে দান করো বাবু, দুদিন পেটে কিছু পড়েনি। ভিখিরির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না, সে আর কেউ নয়, আমার পিতা। বাবা বলে ডাক দেবার আগে মেয়েটা বলে উঠল কড়া মেজাজ নিয়ে, এই নোংরা পাড়ায় কেন আস বল দিকি? এখানে কি পাবে বলতে পারো ?

 আর থাকতে পারলাম না। কণ্ঠ আমার রুদ্ধ হয়ে গেলো। কে যেন প্রবল শক্তি দিয়ে আমার গলাটা চেপে ধরলো। তবুও জোর করে কয়েকটা কথা দেবীবাবুকে বললাম, আপনি বাড়ী যান, আমি এখানে নামবো। দেবীবাবু আমার মানসিক দুর্বলতা বুঝতে পারলেন, কিছু কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বললাম, বিকেলে আসুন আলোচনা করবো।

 দেবীবাবু বাক্যব্যয় না করে ট্যাক্সি নিয়ে প্রস্থান করলেন। আমি ঐ স্থানে না দাঁড়িয়ে মুখে কাপড় গুঁজে শ্যামলীদির কাছে উর্দ্ধশ্বাসে হাজির হয়ে বাবার কথা বললাম। এরপর বল দিদি কি করে বাবাকে আমার পরিচয় দেব? বাবা বলে একটি বার ডাকতে পারলাম না। নোংরা বস্তীতে হাজির হয়েছে বলে বস্তী ত্যাগ করে শহরের দিকে পা বাড়িয়েছে। বাবা যদি জানতে পারে আমি পতিতা বৃত্তি গ্রহণ করেছি, তাহলে বাবা আর বাঁচবে না। তাই আমি বাবা বলে ডাকতে পারিনি। বাবার কাছে আমার এই ঘৃণ্য পরিচয় দিতে পারিনি। মনের দুঃখ চাপা রাখতে না পেরে দেওয়ালে মাথাকে আঘাত করে ক্ষত বিক্ষত করার চেষ্টা করলাম। আমার বাবাকে আমার পরিচয় দিতে না পারায় আমি আমার অদৃষ্টকে ধিক্কার দিলাম।

Sunday, October 23, 2022

ছোট গল্প - রাজার ঠিকানা || লেখক - চৈতালী রায় || Written by Chaitali roy || Short story - Rajar thikhana


 

রাজার ঠিকানা

চৈতালী রায় 




সামনের টেবিলটাতে একগোছা রজনীগন্ধা। সদ্য গাছ থেকে ছিঁড়ে আনা। রজনীগন্ধা আমি ভালোবাসি। ওর গন্ধ আমায় পাগল করে তোলে। হঠাৎ -ই মনে হলো সমস্ত রজনীগন্ধাকে মুঠো মুঠো করে ছড়িয়ে দিই -- ঘরের মেঝেতে, দেওয়ালে, ছাতে - সর্বত্রই। 
সেদিন পড়তে বসেছি - রাজা এলো। একগোছা রজনীগন্ধা নিয়ে। আমি তাকালাম। দেখলাম। ও ভীষণ খেয়ালী। কেমনভাবে যেন তাকালো। আমি জানতাম - ও ভুলে যাবে। ঠিক ভুলে যাবে।অথচ ওগুলো আমাকেই দিতে এসেছে।
কি যেন ভাবছিলাম। পরিস্কার নয়। জটপাকানো। - আমি রাজাকে ভালোবাসতাম। রাজাকে দেখেছিলাম। একদিন নয়। আঙুলে গোনা দিন নয়। অসংখ্য অসংখ্য দিনের অনেক মুহূর্তে। কি বললাম - ভালোবাসতাম ? না - না এখনও বাসি।
রাজা আমাকে ভালোবাসে কিংবা বাসে না। ও আমায় এয়ারপোর্ট নিয়ে যাবে বললো। আমি রাজি হলাম। যেদিন গেলাম - ও কি ভীষণ গম্ভীর থাকলো। একসময় বলে দিলো - আর কখনো আসবে না। আমি নিয়ে যেতে পারবোনা। অহেতুক জার্নিতে কষ্ট হয়। কথাগুলো বলার সময় ওর ঠোঁটদুটো একটুও কাঁপলো না ।
কলেজ থেকে ফেরার সময় রাজাকে দেখলাম। আকাশের দিকে মুখ তুলে কি যেন দেখছে। বললাম - রাজা, ভালো আছো তো ? চমকে উঠলো। মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বললো - আমি রাজা নই। অথচ মনে হলো - এই তো রাজা। ওর চেহারার দিকে একপলক তাকালেই সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যাবে। তবু ভালো করে খুঁটিয়ে দেখলাম - না , এ রাজা নয়।
" সংসার - সীমান্তে " দেখার সময় - আমার পাশে বসে ছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম - রাজা আমার পাশে বসে আছে। ইচ্ছে হলো - ওর হাতদুটো চেপে ধরি। বই শেষ হলে জিঞ্জেস করলাম - রাজা, কেমন দেখলে ? গম্ভীর হয়ে বললো - আমি রাজা নই। বুঝতে পারলাম - আবারও ভুল করলাম।
আমি রাজাকে ভালোবাসি। মন - প্রাণ দিয়ে। মন খারাপ করলে ওর সঙ্গে দেখা করি। কথা বলি। সুস্থ - অসুস্থতার খবর জিঞ্জেস করি। ইচ্ছে হলেই চিঠি লিখি।
রাজা হাঁটে , কথা বলে,খায়, ঘুমোয়, স্নান করে, বই পড়ে, ছবি আঁকে, সিনেমা দেখে ----
রাজা বলেছিল - রাজা বেড়াতে ভালোবাসে । ফুল ভালোবাসে। সিনেমা দেখতে ভালোবাসে। বই পড়তে ভালোবাসে । মনুমেন্টের চূড়ায় দাঁড়িয়ে কলকাতাকে দেখতে ভালোবাসে। গরীব - দুঃখীদের মুঠো মুঠো পয়সা দিতে ভালোবাসে।গান শুনতে ভালোবাসে। শিল্পীদের ভালোবাসে । সাহিত্যিকদের শ্রদ্ধা করে। আরো কতো কি ---

রাস্তার ধার ধরে হাঁটতে হাঁটতে অরার সাথে দেখা হলো। ওকে জিজ্ঞাসা করলাম - রাজাকে দেখেছিস ? বললো - আমি তো তার সাথেই দেখা করতে যাচ্ছি। বললাম - রাজাকে তুই ভালোবাসিস ! ও দ্বিধাহীনভাবে বললো - বাসি বইকি । আমি অবাক হলাম।
দিন সাতেক পরে - রাজাকে দেখলাম ছবি আঁকছে। আপনমনে। ছবির মুখটা ঠিক অরার মতো। জিজ্ঞেস করলাম - অরা এসেছিল ? বললো - অরা বলে কাওকে ও চেনেই না। উদগ্রীব হয়ে বললাম - যার মুখটা তোমার ঐ ছবির মতো। হেসে বললো - ও তো আমার শিল্পী মনের কল্পনা। আমি নিশ্চিন্ত হলাম।
দক্ষিণেশ্বরে বাস থেকে নেমে দেখলাম - স্মৃতি দৌড়চ্ছে। বললাম - অত ব্যস্ত হয়ে কোথায় যাচ্ছিস ? স্মৃতি বললো - রাজার সাথে দেখা করার কথা। ভীত হলাম । জিজ্ঞেস করলাম - তুই রাজাকে ভালোবাসিস ? অনেকদিন থেকে - বলে চলে গেলো ।
বেশ কিছুদিন বাদে রাজার সাথে দক্ষিণেশ্বরে গেলাম। ওর পাশে পাশে হাঁটলাম। কথা বললাম। বাদাম ভাজা খেলাম । গঙ্গার ধারে বসে জলের ঢেউ গুনলাম। নৌকার যাতায়াত দেখলাম। বাচ্চাদের সাঁতার থেকে জল ছিটানো দেখে হাততালি দিলাম। ফেরার সময় বললাম - স্মৃতি এসেছিল ! রাজা বললো - স্মৃতিকে ও কখনো দেখেইনি।
২৯শে মে আমি হাওড়া গেলাম। কলকাতার বাইরে যাবো । কয়েক দিনের জন্য। রাজা এলো - ট্রেনে তুলে দিতে। ট্রেনে উঠে আমার বসার জায়গাটা ঠিক করে দিলো। আমার পাশে বসলো। হাসলো। কথা বললো। ট্রেন ছেড়ে দিতে রাজা নেমে গেলো। আমি হাত নাড়লাম। রাজাও --
ফিরে এসে মিষ্টুর সাথে দেখা হলো। আমি ভয় পেলাম। ও নিজেই এসে বললো - আজ রাজার সাথে দেখা করতে যাবো । সেই যেদিন হাওড়া স্টেশনে গেছিলো - সেদিনই ওর সাথে দেখা হয়েছিল। ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম - তুইও রাজাকে ভালোবাসিস ? ও হেসে ফেললো।
এরপর একদিন রাজাকে দেখলাম - বালি ব্রীজের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। আপনমনে জলের চেহারা দেখছে অথবা গভীরতা মাপছে। ওর কাছে গেলাম। বললাম - মিষ্টুকে সেদিন আসতে বলেছিলে ? রাজা উদাস হয়ে বললো - ও নামের কাওকেই সে কখনো দেখা করতে বলেনি। আমি চুপ করে গেলাম।
সেদিন মধুমিতা বললো - রাজাকে ও চেনে । রাজা ওকে ভালবাসে। ওর নামে ডাকে চিঠি আসবে। আমি কোন উত্তর দিলাম না।
এরকমভাবে আরো কতজন কত কথা বললো। শুনলাম। কোন উত্তর দিলাম না।

একদিন অরাকে জিজ্ঞেস করলাম - রাজার চোখদুটো কেমন বল তো ? ও যা বললো - চমকে উঠলাম।
স্মৃতিকে জিজ্ঞেস করলাম - ওর কথা বলার ভঙ্গিটা তোর মনে আছে ? স্মৃতি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো - একদম স্পষ্ট ভাবে। নির্জনে বসে থেকেও আমি শুনতে পাই।
মধুমিতা বললো - রাজার চুলের গন্ধটা ওর নাকে এখনও লেগে আছে।
এইভাবে একে একে সকলকে জিজ্ঞেস করলাম- রাজার হাত, পা , নোখ, মাথার চুল, হাঁটার কায়দা - সব নিয়ে। সকলেই এক একটি বিষয়ের বর্ণনা দিলো অথবা আমিই শুনলাম।
দেখলাম, সবাই রাজাকে চেনে। ওর হাত চেনে, পা চেনে, কথা বলার ভঙ্গি চেনে , ঠোঁটের কোণে চাপা হাসি চেনে, হাঁটার কায়দা চেনে, চোখ চেনে, নাক চেনে , মাথার চুল চেনে ---
আগে জানতাম, রাজা শুধু আমার পরিচিত। এবার বিরক্ত হলাম। ঠিক করলাম - ওর সাথে আর যোগাযোগ রাখবো না। ওর দেওয়া ফুলগুলো মাটিতে ছিটিয়ে দিলাম। ভাবলাম - ফুলগুলো শুকিয়ে যাবে। রোজ একটু একটু মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলাম। বেশ কতগুলো দিন বাদেও লক্ষ্য করলাম - ফুলগুলো থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে। ঠিক আগের মতই। অর্থাৎ ওর গন্ধটা কিছুতেই হারিয়ে যাচ্ছে না। আবার চঞ্চল বোধ করলাম - ওকে দেখার জন্য।

একদিন অরার সাথে দেখা হলো। বললাম - রাজার ঠিকানা জানিস ? অনেকদিন দেখা হয়নি। একবার দেখা করতাম। অরা হাতের চেটো উল্টে বললো - ভুল হয়ে গেছে। বললাম - তুইও কি ঠিকানা খুঁজছিস ! অরা ব্যাকুল হয়ে বললো - পেলে জানাস। আমিও একবার দেখা করবো।
আবার একদিন শ্যামবাজার ট্রামডিপোর কাছে স্মৃতির সাথে দেখা হলো। ওকে রাজার ঠিকানাটা জিজ্ঞেস করলাম। কিরকম উদভ্রান্তের মতো বলে উঠলো - আমিও তো ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি।
এভাবে একে একে আবার সকলের সাথে দেখা হলো। সবাইকেই রাজার ঠিকানা জিজ্ঞেস করলাম। সকলেই বললো - ওর ঠিকানা নিতে ভুলে গেছে।

আমরা এখন সবাই রাজাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। ওর ঠিকানা খুঁজছি। পা খুঁজছি। চোখ খুঁজছি। মাথার চুল খুঁজছি। নোখ খুঁজছি। আঙুল খুঁজছি। ভ্রূ খুঁজছি। আর মনে মনে ভাবছি - ঠিকানা পেলে সে হবে সম্পূর্ণ আমার।।

Saturday, October 22, 2022

ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনে কয়েক হাজার লোক নিয়োগ || IOCL Recruitment 2022 || IOCL Trade Apprentice Recruitment 2022 || https://www.iocrefrecruit.in/


 


প্রত্যেক দেশবাসী জানেন ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড একটি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পাবলিক সেক্টর। যেটি ভারত সরকারের মিনিস্ট্রি অফ পেট্রোলিয়াম এন্ড ন্যাচারাল গ্যাস দপ্তরের অন্তর্ভুক্ত। প্রায় 56,000 এর বেশি গ্রাহকদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি কোণায় জ্বালানি সরবরাহ করে চলেছে এই কোম্পানি।


সম্প্রতি ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড তরফ থেকে কয়েক হাজার অ্যাপ্রেন্টিস শূন্যপদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। ভারত সরকারের তরফ থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই অ্যাপ্রেন্টিস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং ট্রেনিং চলাকালীন প্রতিটি প্রার্থীকে পর্যাপ্ত অর্থের স্টাইপেন্ড প্রদান করা হবে। ট্রেনিং শেষে পাবেন স্থায়ী চাকরি।


এখানে আবেদন পদ্ধতি, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি, বয়স, বেতন, শূন্যপদ, নিয়োগ পদ্ধতি প্রভৃতি বিস্তারিত ভাবে নীচে আলোচনা করা হলো -



নোটিশ নম্বরঃ HR/RECTT/01/2022(APP)


নোটিশ প্রকাশের তারিখঃ 24.09.2022


আবেদনের মাধ্যমঃ শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে।


নিয়োগের তথ্য (Post Details)

(1) পদের নামঃ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস অ্যাটেন্ডডেন্ট অপারেটর (Attend Operator)


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ফিজিক্স বা ম্যাথমেটিক্স বা কেমিস্ট্রি বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিস্ট্রি বিষয়ে 3 বছরের B.Sc কোর্স পাশ থাকতে হবে।


মোট শূন্যপদঃ 386 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 12 মাস।



(2) পদের নামঃ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস ফিটার (Fritter)


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাধ্যমিক পাশ এবং সংশ্লিষ্ট পদের উপর 2 বছরের ITI কোর্স।


মোট শূন্যপদঃ 161 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 12 মাস।


(3) পদের নামঃ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস বয়েলার (Boiler)


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ফিজিক্স বা ম্যাথমেটিক্স বা কেমিস্ট্রি বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিস্ট্রি বিষয়ে 3 বছরের B.Sc কোর্স পাশ।


মোট শূন্যপদঃ 54 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 24 মাস।


(4) পদের নামঃ টেকনিসিয়ান অ্যাপ্রেন্টিস কেমিক্যাল (Chemical)


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা পেট্রোকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে 3 বছরের ডিপ্লোমা কোর্স পাশ ।


মোট শূন্যপদঃ 331 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 12 মাস।


(5) পদের নামঃ টেকনিসিয়ান অ্যাপ্রেন্টিস মেকানিক্যাল (Mechanical)



শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে 3 বছরের ডিপ্লোমা কোর্স পাশ করে থাকতে হবে।


মোট শূন্যপদঃ 161 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 12 মাস।


(6) পদের নামঃ টেকনিসিয়ান অ্যাপ্রেন্টিস ইলেকট্রিক্যাল (Electrical)


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে 3 বছরের ডিপ্লোমা পাশ।


মোট শূন্যপদঃ 188 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 12 মাস।


(7) পদের নামঃ টেকনিসিয়ান অ্যাপ্রেন্টিস ইন্সট্রুমেন্টেশন (Instrumentation)


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে 3 বছরের ডিপ্লোমা কোর্স পাশ।


মোট শূন্যপদঃ 84 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 12 মাস।


(8) পদের নামঃ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস ডাটা এন্ট্রি অপারেটর (Data Entry Operator)  


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ ।


মোট শূন্যপদঃ 41 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 24 মাস।



(9) পদের নামঃ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস ডাটা একাউন্টেন্ট (Accountant)   


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ B.A/B.Sc/B.Com পাশ।


মোট শূন্যপদঃ 39 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 12 মাস।


(10) পদের নামঃ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস ডাটা এন্ট্রি অপারেটর (Data Entry Operator)  


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।


মোট শূন্যপদঃ 41 টি।


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ 24 মাস।



বয়সসীমাঃ 18 থেকে 24 বছরের মধ্যে হতে হবে। 

সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।



আবেদন পদ্ধতিঃ

শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে।

নীচে দেওয়া অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে থেকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন ।



অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ”What’s New” বাটনে ক্লিক করে ” go to Engagement of Appreciate Under Refineries Division ” এ যেতে হবে।


তারপরে সম্পূর্ণ বিজ্ঞপ্তিটি ভালোভাবে দেখে নিন- তারপর ”Apply Online ” বাটনে ক্লিক করতে হবে।


এরপর সম্পূর্ণ তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে।



গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট-

1)রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

2)বয়সের প্রমাণপত্র।

3)দশম শ্রেণীর মার্কশিট।

4)উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট ও সার্টিফিকেট।

5)ITI সার্টিফিকেট।

6)বাসস্থানে প্রমাণ পত্র।

7)কাস্ট সার্টিফিকেট (যদি থাকে)।



গুরুত্বপূর্ণ তারিখ (Important Dates):-


নোটিশ প্রকাশ - 24.09.2022

আবেদন শুরু - 24.09.2022

আবেদন শেষ - 23.10.2022






 Official Website-

Click here 🔴


Notice Download-

Click here 🔴


Apply Now-

Click here 🔴



Thursday, October 20, 2022

রাজ্যে নতুন আশা কর্মী নিয়োগ || কয়েকশো নতুন আশা কর্মী নিয়োগ || asha karmi recruitment 2022 || www.wbhealth.gov.in


 


##রাজ্যের মহিলাদের জন্য একটা বড় সুখবর। জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় জেলায় আশা কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে প্রায় 13 হাজার, মুখ্যমন্ত্রীর নিজে ঘোষণা করেছেন বর্তমানে দুটি জেলার বিভিন্ন ব্লকে আশা কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে যার বিবরণ নিচে দেয়া হল।





পদের নাম - আশা কর্মী।


শিক্ষাগত যোগ্যতা--- 
মাধ্যমিক পাশ বা মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ বিবাহিতা, বিধবা বা, বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলারা আবেদন করতে পারেন। আবার উচ্চতর যোগ্যতার ব্যক্তিরাও আবেদন করতে পারবেন তবে মাধ্যমিকের প্রাপ্ত নম্বর দেখে বিবেচনা করা হবে।

 



বয়স--- বয়স 30 থেকে 40 বছরের মধ্যে হতে হবে
 সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়ম অনুসারে ছাড় পাবেন। যেমন তফসিল উপজাতিরা 22 থেকে 40 বছরের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন।



শূন্য পদ - কয়েকশো। কোন ব্লকে কতগুলো শূন্য পদ তা পাবেন নীচে দেওয়া সংশ্লিষ্ট জেলার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ। অবশ্যই মনে রাখবেন যিনি মে ব্লকে ফর্ম ফিলাপ করছেন, তাকে সেই এলাকার বাসিন্দা হতে হবে।


আবেদন পদ্ধতি--- শুধু মাত্র অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন পত্র সম্পূর্ণ পূরণ করে নিজ নিজ এলাকার বিডিও অফিসে জমা করবেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি যোগ করে একটি মুখ বন্ধ খামে ভরে তারপর বড় হাতে লিখতে হবে ‘APPLICATION FOR THE POST OF _______’ (কোন পদের জন্য আবেদন করছেন)।



কি কি ডকুমেন্ট লাগবে---

1) শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ পত্র।

2) স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র রেশন কার্ড ভোটার কার্ড।

3) বয়সের প্রমাণপত্র (জন্ম সার্টিফিকেট কিংবা মাধ্যমিকের এডমিট কার্ড)।

4) বিধবাদের ক্ষেত্রে স্বামীর ডেট সার্টিফিকেট।

5) বিবাহিতদের ম্যারেজ সার্টিফিকেট।
6) ডিভোর্স সার্টিফিকেট কাস্ট সার্টিফিকেট।
8) দুটি পাসপোর্ট ছবি।



আবেদনের শেষ তারিখ--- দক্ষিণ দিনাজপুরে 4/11/ 2022 এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা 29/10/2022

নিয়োগের স্থান --

 দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট (সদর) মহকুমা ও গঙ্গারামপুর বিভিন্ন ব্লকের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ।
 দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ ও ক্যানিং-২, মগরাহাট-১, ডায়মন্ডহারবার, বারুইপুর, মথুরাপুর ২ ব্লকের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ।




Official website-


দক্ষিণ দিনাজপুর official website -


দক্ষিণ ২৪ পরগনা official website -


Tuesday, October 18, 2022

মাধ্যমিক পাশে ভারতের রেলে নিয়োগ || মোট শূন্যপদ - 3154 জন || Indian Railways Recruitment 2022



দীর্ঘ বিরতির পর ফের ভারতীয় রেলওয়েতে নিয়োগ হতে চলেছে। ইতিমধ্যে অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় 31,54 জনের এর মত স্থায়ী শূন্যপদ নিয়োগটি হবে। যে সমস্ত প্রার্থীরা সবেমাত্র মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে তাদের কাছে এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ।


ভারতীয় রেলওয়ের অন্তর্গত দক্ষিণ রেল বিভাগের টেকনিক্যাল ডিপার্টমেন্টে অ্যাপ্রেন্টিস হিসেবে নিয়োগ টি করা হবে। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলা থেকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন চাকরি প্রার্থীরা।


 সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। কিভাবে আবেদন করবেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা, মোট শূন্য পদের সংখ্যা কত ইত্যাদির সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে আলোচনা করা হল- 


Southern Railway Act Apprentice Recruitment

Southern Railway Madhyamik Pass Act Apprentice Recruitment



নোটিশ নম্বরঃ SR-HQ0MECH(WS)/868/2022-PB-REC


নোটিশ প্রকাশের তারিখঃ 01.10.2022


আবেদনের মাধ্যমঃ শুধু মাত্র অনলাইন।


নিয়োগের তথ্য (Post Details)

পদের নামঃ অ্যাক্ট অ্যাপ্রেন্টিস (Act Apprentice)


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ আবেদন কারী প্রার্থীকে কমপক্ষে 50 শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাস সহ সংশ্লিষ্ট ITI কোর্স করে থাকতে হবে।


বয়সসীমাঃ 15 বছর থেকে 24 বছর। সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।



মোট শূন্যপদঃ সবমিলিয়ে 3,154 জন


প্রশিক্ষণের সময়সীমাঃ

 নির্দিষ্ট ট্রেড অনুযায়ী প্রার্থীদের 1 থেকে 2 বছর ট্রেনিং দেওয়া হবে।


আবেদন পদ্ধতিঃ

শুধু মাত্র অনলাইন। অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।



সবার প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।


এরপরে নির্দিষ্ট ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে অনলাইনে আবেদনপত্রটি সঠিক ভাবে পূরণ করবেন।



গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট-


১)রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।

২)সেল্ফ এটেসটেড করা মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট।

৩)ITI ট্রেড সার্টিফিকেট।

৪)আবেদনকারী স্বাক্ষর।

৫)কাস্ট সার্টিফিকেট। (যদি থাকে)



গুরুত্বপূর্ণ তারিখ (Important Dates)

নোটিশ প্রকাশ 01.10.2022

আবেদন শুরু 01.10.2022

আবেদন শেষ 31.10.2022 




Official Website-


Click here 🔴



Official notice-


Click here 🔴


Apply Now-

Click here 🔴

Monday, October 17, 2022

রাজ্যে আবার ব্যাঙ্ক অফ বরোদা তে বিপুল পরিমাণে কর্মী নিয়োগ || Bank Of Boroda recruitment 2022 || WB BOB Recruitment 2022


 


দেশে বেকার সমস্যার সমাধান করতে বিভিন্ন সংস্থা কাজের সুযোগ নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন দফতরে বিজ্ঞপ্তি প্রায়ই প্রকাশিত হচ্ছে। এইরকম একটি নতুন সুযোগ নিয়ে এসেছে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা। ব্যাঙ্ক অফ বরোদা এর তরফ থেকে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ আগামী 30 সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত করা হয়েছে।
 শূন্য পদ কত, পদ গুলি কি কি, কোন পদের জন্য কি শিক্ষাগত যোগ্যতার দরকার, বয়সসীমা, আবেদন পদ্ধতি, নিয়োগ পদ্ধতি,  নিয়োগ স্থান, আবেদন করার শেষ সময়, এইসব সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে আলোচনা করা হল।



পদের নাম :- এই নিয়োগে মোট চারটি ভিন্ন ভিন্ন পদ রয়েছে। এই চারটি ভিন্ন পদে শূন্য পদ রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন। পদ গুলি হল :-

1. সিনিয়র রিলেশনশিপ ম্যানেজার

2. ই রিলেশনশিপ ম্যানেজার

3. গ্রুপ সেলশ হেড

4. অপারেশন হেড ওয়েলথ



প্রতিটি পদের বিবরণ-

1. সিনিয়র রিলেশনশিপ ম্যানেজার :-

শিক্ষাগত যোগ্যতা :- আপনাকে অবশ্যই স্নাতক বা গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি থাকতে হবে।


বয়স সীমা :-  24 বছর থেকে 40 বছর এর মধ্যে হতে হবে।

শূন্যপদ :-  মোট 320 টি।



2. ই রিলেশনশিপ ম্যানেজার :-

শিক্ষাগত যোগ্যতা :-  স্নাতক বা গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি।


বয়স সীমা :-  23 বছর থেকে 35 বছর মধ্যে থাকতে হবে।

শূন্য পদ :- মোট 24 টি।


3. গ্রুপ সেলস হেড :-

শিক্ষাগত যোগ্যতা :-  স্নাতক বা গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি থাকতে হবে।


বয়স সীমা :-  31 থেকে 45 বছর এর মধ্যে হতে হবে।


শূন্যপদ :- মোট - ১টি।


4. অপারেশন হেড অয়েলথ:-

শিক্ষাগত যোগ্যতা : -  স্নাতক বা গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি কমপ্লিট থাকতে হবে সাথে এমবিএ ডিগ্রী কমপ্লিট করে থাকতে হবে।


বয়স সীমা :-  35 থেকে 50 বছর এর মধ্যে হতে হবে।


শূন্যপদ :- মোট ১টি।



আবেদন পদ্ধতি:-
শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে যে ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে সেগুলি হল:-

1. সর্বপ্রথম ব্যাঙ্ক অফ বরোদা এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে

2. রেজিস্ট্রেশন করতে হবে

3. সমস্ত নির্ভুল তথ্য দ্বারা ফরমটি পূরণ করতে হবে

4. আপনার একটি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে

5. আপনার স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে

6. ফাইনাল সাবমিট করতে হবে

7. পেমেন্ট করতে হবে

8. তাদের দেওয়া রেফারেন্স নাম্বার টির একটি প্রিন্ট আউট বের করে নিতে হবে



আবেদনের ফী:- জেনারেল দের জন্য ৬০০ টাকা এবং অন্যান্য সংরক্ষিত প্রার্থীদের জন্য ১০০ টাকা।


টাকা প্রদানের মাধ্যম:- অনলাইন


নিয়োগ পদ্ধতি:- লিখিত পরীক্ষা, দলগত আলোচনা, ব্যক্তিগত ইন্টারভিউ।


আবেদন শুরু - 30 সেপ্টেম্বর 2022

আবেদন শেষ -  20 অক্টোবর 2022 




নিয়োগ স্থান :-

 আমাদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতাতে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা এর শাখাগুলিতে।



OFFICIAL NOTICE: 



APPLY NOW: 


Sunday, October 16, 2022

ছোট গল্প - হাঁস নিয়ে হইচই || লেখক - চিরঞ্জিৎ সাহা || Written by Chirenjit Saha || Short story - Hans niye khela



                   হাঁস নিয়ে হইচই

                           চিরঞ্জিৎ সাহা 



সকাল থেকেই কৈলাস জুড়ে আজ মহাকেলেঙ্কারি। স্নান সেরে নিজের বই, খাতা সযত্নে ব্যাগে গুছিয়ে নিয়ে স্কুলে যেতে প্রস্তুত সরস্বতী কিন্তু খোঁজ নেই তার বাহন হাঁসের। একেই আগামীকাল মাঘ-পঞ্চমী তিথিতে মামাবাড়ি যাওয়ার কথা মেয়েটার , স্কুলটা কামাই হবে দু'দিন ; তার ওপর আজও যদি স্কুলে যেতে না পারে , বড় দিদিমণি রাগ করবেন ভীষণ। মেজাজ খারাপ থাকলে গার্জেন কলও করে দিতে পারেন। সবমিলিয়ে মুখেই বীণা বাজিয়ে ভ্যাঁ করে কান্না জুড়ে দিল চিন্তিত সরস্বতী। 





হাঁসের হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ঘন্টাদুয়েক আগে সর্বপ্রথম নজরে আসে মা দুর্গার। তিনি তখন সবে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যাচ্ছিলেন। রোজকার অভ্যেসমতোই একবার উঁকি দেন পাখিদের থাকার ঘরে। সেখানে পেঁচাকে বেঘোরে ঘুমোতে দেখলেও ময়ূর কিংবা হাঁসের দেখা পাননি তিনি। অবশ্য ব্যাপারটিকে তেমন আমলও দেননি। আসলে এ ঘটনা আজ নতুন নয়। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষার তোয়াক্কা না করে ফিগার কনসাস ময়ূর নিয়ম করে রোজ মর্নিং ফ্লাইটে যায় ভোর পাঁচটায়। তারপর কয়েক কিলোমিটার এদিক ওদিক উড়ে ফিরতে ফিরতে বেলা আটটা। হাঁসটাও ময়ূরকে সাথ দেয় মাঝেমধ্যেই ; তবে ভারী ডানা নিয়ে বেচারি উড়তে পারে না বেশিদূর , এক ঘন্টার মধ্যেই ফিরে আসতে বাধ্য হয় মর্নিং ফ্লাইট থেকে। এসব ঊষাকালের ওড়াওড়িতে অবশ্য পেঁচা নেই কোনোকালেই ; সারারাত ধরে গোটা ভূ-কৈলাস চষে বেরিয়ে সে ঘুম থেকে ওঠে বেলা এগারোটায়। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা আজ আটটা ছুঁলেও হাঁসের দেখা নেই। ময়ূরটাও ফেরেনি এখনও। এদিকে সরস্বতীর কান্নার স্বর ডেসিবেল আইন ভাঙার মুখে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মা দুর্গাও বেজায় বিরক্ত। সোজা পাখিদের ঘরে গিয়ে ডানা ধরে টেনে তুললেন পেঁচাকে ---



--- "ওই পেঁচা! ওঠ! ওঠ! গায়ে জল ঢেলে দেব কিন্তু! দিদিমণি স্কুলে যেতে পারছে না, আর উনি নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন। "


--- " কিঃ! কিঃ! কি হয়েছে? " --- দুড়দাড় করে ঘুম থেকে ওঠে পেঁচা। 


--- " কি হয়নি সেটা বল! বেলা বাজে আটটা। হাঁসের দেখা নেই। সরস্বতী স্কুল যাবে কি করে? ময়ূরটারও তো দেখছি আজ ফেরার নাম নেই। "


--- " সে কি! ওরা ফেরেনি এখনও? "


--- " তা কি আমি তোকে মিরাক্কেলের জোকস শোনাচ্ছি? ভোরবেলা ওরা কি তোকে কিছু বলেছিল? ঠিক করে মনে করে বল! "


--- "না কত্তামা! কোনো কথা হয়নি। কাল রাতে তো আমার নামের আগে চন্দ্রবিন্দুই পড়ে যাচ্ছিল। একটা সাপকে ধরতে গিয়ে উড়তে উড়তে ভুল করে সোজা ঢুকে পড়েছিলাম মর্ত্যে। আসলে গাছগাছালির মধ্যে ঠিক খেয়াল করে উঠতে পারিনি কিনা! হঠাৎ দেখি সামনে মর্ত্যের ওই চোরা শিকারিগুলোর জাল। অনেক কষ্টে ডানাটাকে স্টিয়ারিংয়ের মতো মোচড় মেরে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে এসেছি। উফফ! বাপ রে বাপ! "


--- " তার সাথে কথা বলার কি সম্পর্ক রে হতচ্ছাড়া? তোর ভোকাল কর্ড তো এখনও খসে যায়নি , দেখছি। "


--- "ওরে বাবা রে বাবা! তারপর ওদের পাশ কাটিয়ে ইউটার্ন নিয়ে কাঁপতে কাঁপতে কৈলাসে ফিরে সোজা বিছানায়। " 


---" ওরা তখন ঘরে ছিল? "


--- "হ্যাঁ। বিলক্ষণ। ময়ূরটা ভসভসিয়ে নাক ডাকছিল আর হাঁসটা বেজার মুখে পড়েছিল ঘরের এক কোণে। "


--- " হাঁস কাল রাতে ঘুমোয়নি? "


--- " তাই তো ! এটা তো আগে ভেবে দেখিনি। ঘুমকাতুরে হাঁস কাল রাতে জেগে বসেছিল কেন কত্তামা? "







ইতিমধ্যেই উড়তে উড়তে হাজির ময়ূর। তাকে দেখেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন মা দুর্গা --- " হতভাগা! কটা বাজে? ওনার এখন ফেরার সময় হল! কোন রাজকাজে ছিলেন আপনি? "


--- " ফেরার পথে শনিদেবের বাহন শকুনের সাথে হঠাৎ দেখা । একথা সেকথায় দেরি হয়ে গেল । আর আগে ফিরেই বা করবটা কী ? আপনার হিরের টুকরো ছেলে কার্তিক বারোটার আগে কোনদিন ওঠে ঘুম থেকে ? আমার আর কাজ কী সকালে, শুনি ! কাজে ফাঁকি পেলে কৈফিয়ৎ চাইবেন, দেব । তার আগে নয় ! "


নিজের রূপের রংবাহার আর পাখিদের রাজা হওয়ার কারণে ময়ূরের ঠাঁটবাট আসলে একটু বেশিই । ইঁদুর , পেঁচা বা হাঁস দেবদেবীদের ভয়ে তটস্থ থাকলেও ময়ূর চলে তার নবাবি চালে , পক্ষীকুলের রাজা বলে কথা ! দেবী দুর্গাও তাকে ঘাটান না খুব একটা । 


" তোর ঘোরা তুই ঘোর বাবা ! আমি কি বারণ করেছি ? কিন্তু হাঁসটাকে তো আগে আগে পাঠিয়ে দিবি । সরস্বতীর মর্নিং স্কুল । হাঁসটার জন্য আজ স্কুলটা কামাই হয়ে গেল । ওকে তো তোর আটটার মধ্যে পাঠানো উচিত ছিল, নাকি ! " --- বিনয়ী শোনায় দেবী দুর্গার গলা । 


--- " সে কি ! হাঁস ঘরে নেই ? ও তো আজ বেরোয়ইনি আমার সাথে । "


-- " কি বলছিস কি তুই ? ও যায়নি ? " 


--- " না । "


--- " কাল রাতে কি ও তোকে কিছু বলেছিল ? "


--- " না । তবে মন খারাপ করে বসেছিল মাটিতে । আমাকে একবার ডেকেছিল বটে কিন্তু আমি তেমন পাত্তা দিইনি । আসলে ওর ওই এক ডিপ্রেশনের গল্প আমার আর ভালো লাগে না । হাঁসের যুক্তি --- ওর না আছে আমার মতো রূপ , না পারে পেঁচার মতো উড়তে । তাই এই পক্ষীকুলে ও নাকি অপাংক্তেয় । ওর নাকি নিজেকে শেষ করে ফেলা উচিত । ওর জন্যই নাকি এই পক্ষীকুলের শ্রী কমছে । "


--- " ও কবে থেকে এসব বলা শুরু করেছে তোকে ? "


--- " অত মনে নেই মা । তবে বলে তো প্রায়ই । বিশেষ করে যেদিন রাতে নন্দীদা ভিঙ্গিদার ছিলিমে চুপিচুপি টান দিয়ে আসে , সেদিন আরও বেশি বেশি করে বলে আর ফিচফিচ করে কাঁদে । "


--- " কিঃ ! হাঁস তামাক খায় ? " 


--- " ওই মাঝেসাঝে । বাদ দিন । আমাকে ছাড়ুন । আপনাদের ঝামেলা আপনারা বুঝুন । আপনাদের হাঁসকে খুঁজুন আপনারাই । আমি ফেদার শেভ করতে একটু সেলুনে যাব । রাতে শকুনের বাড়ি নেমন্তন্ন আছে । চললাম । "--- দম্ভের সাথে ঝাঁঝিয়ে ময়ূর বেরিয়ে গেল ঘর থেকে । 





ওদিকে সরস্বতীর কান্নার বৈচিত্র্য ও বাহুল্য --- দুই-ই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পেঁয়াজের দামের চেয়েও বেড়ে চলেছে দ্রুতবেগে । উপচে পড়া বাঁধের জলের মতোই অশ্রুধারাও ছিটকে পড়ছে এদিক ওদিক । তারই ফলশ্রুতিতে মর্ত্যে সেদিন প্রবল বৃষ্টি । প্রখ্যাত শিল্পী রমেন পাল নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলের ঠাকুর নিয়ে পড়েছেন মহাফ্যাসাদে । আজ বাদে কাল সরস্বতী পুজো কিন্তু ঠাকুরের কাঁচা রং যেন শুকোতে চাইছে না কিছুতেই । একথা তিনি নিজেও অস্বীকার করতে পারেন না যে প্রতিমা তৈরির কাজে এবার হাত দিয়েছেন খানিক দেরিতে ; কিন্তু বিগত দিনে সাতদিনের মধ্যে দুর্গামূর্তি গড়ার অভিজ্ঞতা তার রয়েছে আর এ তো সামান্য স্কুলের সরস্বতী । বাইরে বৃষ্টির তোড় বেড়ে চললেও ড্রায়ার আর হিটারের নিখুঁত ব্যবহারে রমেনবাবু শুকিয়ে ফেললেন গোটা ঠাকুরের কাঁচা রং কিন্তু শাড়ি পরিয়ে শোলার গয়নায় মাকে সাজাতে গিয়েই মনটা গেল খারাপ হয়ে । মায়ের চোখের কাছের ভেজা ভাবটা কেটেও যেন কাটছে না কিছুতেই । ড্রায়ার , হিটারের পর ব্লটিং --- আস্তিনের সর্বশেষ তাসটি ব্যবহারের পরও রয়েই গেল সেই জলের ছাপ , জায়গাটা যে পুরোপুরি ভেজা --- দূর থেকে দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে স্পষ্ট । বেলা পাঁচটা নাগাদ ঢাক-ঢোলসমেত হিন্দু স্কুলের ছেলেরা নাচতে নাচতে এসে হাজির হল রমেন পালের বাড়িতে । উৎসাহের আতিশয্যে তারা খেয়ালই করল না প্রতিমার চোখের নীচের ভেজা অংশ , আসলে মৃৎশিল্পীর পর্যবেক্ষণে প্রতিমা গঠনের যে ত্রুটি ধরা পড়ে অনায়াসে , সাধারণ মানুষের চোখ তা এড়িয়ে যায় অতি সহজেই । স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে কোনোরকম অতৃপ্তি না দেখে বেশ খুশিই হলেন রমেনবাবু ; যদিও কাল সকালে রোদ উঠলেই এই খুঁতটুকু মুছে যাওয়ার ব্যাপারে একশো শতাংশ আশাবাদী তিনি । 







পাখিদের ঘর থেকে বেরিয়ে মহাদেবের কাছে যাওয়ার পথে চক্ষু চড়কগাছ মা দুর্গার । রান্নাঘরের সামনে চাপ চাপ রক্তের ছাপ ! দেখামাত্রই চন্দ্রযানের বেগে ছুটে প্রেসার কুকারের চেয়েও তারস্বরে গর্জন করে দেবী দুর্গা এসে থামলেন দেবাদিদেব মহাদেবের সামনে --- " ময়ূর , ইঁদুর , পেঁচা --- ওরা তো আর হাঁসকে মারবে না । আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি , এ কাজ সিংহেরই । তাছাড়া মর্ত্যে থাকতে ও তো মাংস খেতে অভ্যস্তই ছিল । নিরীহ হাঁসটাকে একা পেয়ে আর লোভ সামলাতে পারেনি । রান্নাঘরের সামনেই ব্যাটা দিয়েছে হাঁসের ঘাড় মটকে । " সকাল থেকে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নিজের বরের কাছে পেশ করার পর শেষ পাঁচটি লাইন এক নিঃশ্বাসে শেষ করে থামলেন দেবী পার্বতী । পার্বতীর চিৎকারে কেঁপে উঠলেন স্বয়ং দেবাদিদেব , হাতের ছিলিম ছিটকে ভেসে গেল মহাশূন্যে । নন্দী সবেমাত্র স্পেশাল করে সেজে দিয়েছিল তামাকটা ; তামাক হাতছাড়া হওয়ার রাগে মহাদেব ত্রিশূল হাতে এলোপাথাড়িভাবে পেটাতে শুরু করলেন সিংহকে । বেচারা তখন ঘুমিয়েছিল দেবাদিদেবের হাত তিনেক দূরে । কাল রাতে ভালো ঘুম না হওয়ায় সকালের চা টা খেয়ে এসেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে সে। পার্বতীর গর্জনে ঘুম না ভাঙলেও ধড়মড়িয়ে ওঠে সে মহাদেবের মারে --- " কিঃ ! কিঃ ! কি হয়েছে প্রভু ! অমন মারছেন কেন ? "


--- " মারবে না তো কি আদর করবে ? বল, হাঁসকে মারলি কেন ? " -- রক্তচক্ষু নিয়ে প্রবল হুংকার দেবী দুর্গার । 


--- " হাঁস ? কোন হাঁস ? কিসের হাঁস, মা ? কোন হাঁসকে মেরেছি আমি ? হ্যাঁ , মর্ত্যে থাকতে মেরেছি কয়েকটাকে । কিন্তু সে তো প্রায় বছর তিরিশ আগের কথা । স্বর্গে আসার পরীক্ষায় পাশ করার পর থেকে আমি ফুল ভেজ । " 


--- "শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করিস না সিংহ ! সত্যি করে বল , সরস্বতীর হাঁসকে মারলি কেন ? " 


--- " সে কি বলছেন মা ? সরস্বতী দিদির হাঁস বেঁচে নেই ? " --- কেঁদে ফেলে সিংহ । 


--- " স্টপ ! স্টপ ! স্টপ ! এটা যাত্রাপালার মঞ্চ নয় । গুল দিয়ে ভুল ঢাকা যায় না সিংহ । এতে শাস্তি বাড়বে বই কমবে না । " 


--- " বিশ্বাস করুন মা , আমি হাঁসকে মারিনি । হাঁস তো আমার ছোটো ভাইয়ের মতো । কেন মারব আমি হাঁসকে ? "--- কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে গড়াগড়ি দেয় সিংহ । 







ইতিমধ্যেই ভুঁড়ি দোলাতে দোলাতে গণেশ হাজির সেখানে --- " কি হচ্ছে কি মা ? এত চেঁচামেচি কিসের ? বেলা বাজে বারোটা । এখনও সকালের খাবারটা অবধি পেলাম না আর তুমি এখানে দাঁড়িয়ে মাথামোটা সিংহটার সঙ্গে বকে চলেছো ? খালি পেটে কি আর ভালো কাজ হয়, মা ? মহাভারত পার্ট টু-টা সবেমাত্র লিখতে বসেছি । তার মধ্যেই যদি এমন হইচই , অনাহার , চিৎকার চলে; আগের বারের মতো হিট স্টোরি লিখব কি করে আমি ? "


--- " চুপ কর তুই । রান্নাবান্না সব বন্ধ এবার থেকে কৈলাসে । সিংহ সরস্বতীর হাঁসকে খুন করে খেয়ে ফেলেছে । " --- কড়া ধমক পার্বতীর ।


--- " কিঃ ! " -- রীতিমতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে ছোট্ট গণেশ ।


--- " বিশ্বাস করো গণুদাদা , আমি সরোদিদির হাঁসকে মারিনি । দাদা , তুমি তো পড়াশোনা করো ; তুমিই বলো , আমি মারলে তো আমার হাতে গন্ধ থাকত । " --- সিংহের কেশর দোলানো কান্না যেন থামছে না কিছুতেই । 


--- " হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুলে কি আর গন্ধ থাকে বাপু ! "-- সিংহের গালে সজোরে থাপ্পড় পার্বতীর ।


--- " মা , তুমি বুঝলে কি করে যে সিংহ হাঁসকে খেয়ে নিয়েছে ? হাঁস তো কোথাও বেড়াতে গিয়েও থাকতে পারে । "--- শুঁড় দুলিয়ে প্রশ্ন করে গম্ভীর গণেশ । 


--- " হাঁস ওর ভারী ডানা নিয়ে বেশিদূর উড়তে পারে না রে গণু । তাছাড়া এর আগে তো কখনও হয়নি এমন , আর ও তো তেমন বেরোয়ও না । আমি নিজের চোখে রান্নাঘরের সামনে রক্তের ছাপ দেখেছি । পেঁচা , ইঁদুর বা ময়ূর তো আর হাঁসের মাংস খায় না । এ কাজ আসলে সিংহেরই , এ বিষয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশই নেই । "


--- " ওই সস তো আমি সকালে ক্রিম ক্র্যাকার বিস্কুটে মাখাতে গিয়ে ফেলেছি রান্নাঘরের সামনে আর সেটাই পরে পায়ে লেগে মেঝেতে ছড়িয়ে গেছে রক্তের মতো । " --- হো হো করে হেসে ওঠে গণেশ । 






চতুর্দিক চৌচির করা চিৎকার আর হরেনডাস হইচইয়ের চোটে কার্তিক , গণেশ , লক্ষ্মী ---- সবাই বাহন সমেত হাজির হয়েছে মহাদেবের পর্বতের সামনে । সরস্বতীও এসেছে কাঁদতে কাঁদতে । তবে ও এখন বাহনহারা । স্বর্গের সেরা রিপোর্টার নারদও মাইক হাতে উপস্থিত সেখানে ।






হঠাৎ এক প্রবল প্যাঁকপ্যাঁক শব্দে মহাদেবের হেলান দেওয়া পর্বত থেকে দুটো পাথর গেল ছিটকে আর বেরিয়ে এল একজোড়া চ্যাপ্টা ঠোঁট । দেখামাত্রই চোখের জল মোছা থামিয়ে তড়িঘড়ি ঘাড় ধরে হাঁসকে সেখান থেকে টেনে বের করে আনল সিংহ --- " আমি এখানে উনার জন্য এত অপমান সহ্য করছি আর উনি বরফে ঘাপটি মেরে বসে মজা দেখছেন । আজ তোকে আমি মেরেই ফেলব । " --- হাঁসের হার্টবিট তখন সিংহের হাতে । 






--- " ছাড় সিংহ ! ওকে ছাড়! আমি যমরাজকে ডাকছি । ওকে গরম তেলের কড়াইতে ফেলে ভাজা হোক । " --- হাঁসের ঠোঁটে ট্রিমেন্ডাস টোকা দেবী দুর্গার । 


--- " তুই এতদিন ঠিকই বলতি রে… তুই সত্যিই পক্ষীকুলের লজ্জা । "--- বলতে বলতে হাঁসের ডানার কয়েকটা পালক উপড়ে ফেলে ময়ূর । 


--- " অনুমতি দেন তো এটাকে অসুরের ডেরায় পাচার করে দিই । " --- ফিসফিসিয়ে ফোড়ন কাঁটে নারদ । 


--- " আমি কিছু বলতে চাই । "--- ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদতে কাঁদতে নিচুস্বরে বলে হাঁস । 


--- " কি বলবি কি তুই ? " --- ত্রিভুবন কাঁপানো মহাদেবের তান্ডব শুরুর মুখে । 


--- " অপরাধ নেবেন না , কাল রাতে আমি ময়ূরদাকে সবটা খুলে বলতেই গেছিলাম । কিন্তু পাত্তা পাইনি । পরশু ইউটিউবে নারদ নিউজে শুনলাম যে মর্ত্যে নাকি বার্ড ফ্লু চলছে ! হাঁস-মুরগির মড়ক লেগেছে । এবার তাই আমি মাঘ পঞ্চমীতে মর্ত্যে যাব না, ঠিক করেছি । কিন্তু কাল রাতে ময়ূরদা আমার কথা না শুনেই শুয়ে পড়েছিল , শেষমেষ আর কোনো উপায় না পেয়ে মর্ত্যে যাওয়া এড়াতে আজ ভোরে চুপিসারে লুকিয়ে পড়ি বরফের মধ্যে । আরও দু'দিন লুকিয়েই থাকতাম । কিন্তু এই হাঁচিটা এসেই সব গোলমাল করে দিল । "





পিনড্রপ সাইলেন্স ভূ-কৈলাস জুড়ে । 





--- " আমি আমার দোষ মেনে নিচ্ছি । আসলে পক্ষীকুলের রাজা হিসেবে এত অন্যায় দাবিদাওয়ার মুখোমুখি রোজ হতে হয় আমাকে , দু-একটা ন্যায্য আবদারও চোখ এড়িয়ে যায় মাঝেসাঝে । হাঁস মর্ত্য থেকে ভাইরাস নিয়ে ফিরলে কেবল ও নিজেই নয় ; আমি , পেঁচা , শকুন , গরুড় --- দেবলোকের সকল পাখিই প্রাণসংশয়ে পড়ব । সুতরাং, হাঁসের দাবি ন্যায়সংগত । আমাকে ক্ষমা করিস ভাই হাঁস । আমি তোর পাশে আছি । "--- পেখম দুলিয়ে ঘোষণা করে ময়ূর । 


--- " এবার তবে তোর আর মর্ত্যে গিয়ে কাজ নেই সরস্বতী মা । " --- চিন্তান্বিত দেখায় দেবী দুর্গাকে । 


--- " ভুলেও না মা । মর্ত্যে মানুষ এমনিই এখন পড়াশোনাবিমুখ । ওখানকার নেতারা চপ, পকোড়া বেচতে বলছে শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের । বাজার এখন লক্ষ্মী-গণেশের । এর মধ্যে সরস্বতী ডুব দিলে ওর ব্র্যান্ডভ্যালু পড়ে যাবে আরও ; যেমনটা হয়েছে আমার সাথে --- কার্তিকটা হ্যাংলা , একবার আসে মায়ের সাথে আর একবার একলা । যদি সসম্মানে বাঁচতে চাস , ভুলেও মামাবাড়ি যাওয়া মিস করিস না বোন । "--- মাথা নিচু করে বিবৃতি দেয় কার্তিক । 


--- " কিন্তু যাবটা কিসে ?" -- ভ্যাঁ করে কেঁদে ওঠে সরস্বতী । 


--- " আমার ঢেঁকিটা নিয়ে যেতে পারে সরস্বতী । তবে মর্ত্যের বর্ডারেই সরস্বতীকে নামিয়ে দেবে ঢেঁকি । বাকি রাস্তাটুকু ও না হয় হেঁটেই পার হবে । অল্পই তো ! বর্ডারের পরীগুলো খুব বদমাশ । ভিসা-পাসপোর্টের চক্করে একবার ফেললে ছয়-সাত ঘন্টা কাটিয়ে দেয় অনায়াসে । কাল দুপুরে ইন্দ্রের সভায় আবার মহালুডো যজ্ঞ আছে । সরস্বতীকে নামিয়ে দিয়ে এসে ঢেঁকি আমাকে নিয়ে যাবে সেখানে । " --- বীণার তারে হাত বোলাতে বোলাতে প্রস্তাব দেন নারদমুনি । দেবাদিদেব সম্মত হন তাতে । 





মর্ত্যে, 



ঘড়ির কাঁটায় সরস্বতী পুজোর সকাল সাতটা । হিন্দু স্কুলের হেডমাস্টার হরিপদ হুই স্কুলের পুজোর ঘরে ঢুকেই খেয়াল করলেন , সরস্বতীর মূর্তির পাশে হাঁস নেই । ইলেভেন সায়েন্সের সমস্ত ছাত্রকে ডেকে যাচ্ছেতাইভাবে অপমান করলেন তিনি । তার ধারণা ছিল যে , ছেলেরা হাঁস আনতে ভুলে গেছে কুমোরবাড়ি থেকে । কিন্তু প্রতিমা টলিতে তুলতে গিয়ে হাঁস ফেলে দেওয়ার ঘটনা শুনে রাগ গেল চড়ে সপ্তমে । সবার সামনেই দুটো ছেলের গালে বসালেন চূড়ান্ত চড় । বন্ধ করে দিতে চাইলেন পুজো । অবশেষে পুজোর দায়িত্বে থাকা বিনয় বটব্যালের হস্তক্ষেপে শান্ত হন হেডমাস্টার । শেষমেষ পুজো তো বন্ধ হয়ইনি । উপরন্তু উদ্ভূত প্রতিকূল পরিস্থিতি দারুণ বুদ্ধিমত্তায় সামলে নেন বিনয়বাবু । 






হিন্দু স্কুলের পুজোর থিমের গল্প এবার এক দুপুরেই ছড়িয়ে পড়েছে গোটা শহর জুড়ে । সন্ধ্যা হতেই নেমেছে দর্শনার্থীর ঢল । আছেন প্রধানশিক্ষক হরিপদ হুই । ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমসিম অবস্থা বিনয় বটব্যালের নেতৃত্বে ইলেভেনের ছাত্রদের । প্রতিমা দর্শনে এসেছেন মৃৎশিল্পী রমেন পালও । মাফলার জড়িয়ে অধোবদনে লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি । একে সরস্বতীর চোখ ভেজা , তার ওপর হাঁস নেই --- নিজের কোনো দোষ না থাকলেও একটা অজানা অপরাধবোধ ভোগাচ্ছে শিল্পী রমেনবাবুকে । সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে লাইন শেষ করে পুজোর ঘরে ঢুকতেই চক্ষু ছানাবড়া তার । মায়ের মুখের সেই ভেজা ভাবটা তো আর নেই-ই , উপরন্তু ফুটে উঠছে ভুবনমোহিনী এক অদ্ভুত হাসি যা তার তুলিরও অসাধ্য । আসলে হাজার ঝঞ্ঝাট-ঝামেলা পেরিয়ে মামাবাড়িতে আসার পর থেকে সরস্বতী মায়ের মনে আনন্দের যে অমরাবতী বয়ে চলেছে --- তা রমেন পালের পক্ষে অনুমান করা সত্যিই অসম্ভব । 






চমকের শেষ এখানেই নয় । ঘরের একপাশে প্রজেক্টরে চলছে বার্ড-ফ্লুর বিশ্লেষণ । ঘর জোড়া বার্ড-ফ্লুর কাট আউট আর মা সরস্বতীর প্রতিমার পায়ের কাছে লাল কালিতে বড়ো করে লেখা --- " বার্ড ফ্লুর দরুন হিন্দু স্কুলে এসে এবার পৌঁছতে পারেননি দেবী সরস্বতীর বাহন রাজহংস । আমরা তাই একান্ত ক্ষমাপ্রার্থী সকল দর্শনার্থীর কাছে । "