Wednesday, March 30, 2022
100 দিনে কাজে (MGNREGS) পশ্চিমবঙ্গে গ্রুপ সি তথা গ্রাম রোজগার সহায়ক (GRS) পদে প্রচুর নিয়োগ || WB GRS Recruitment 2022
Friday, March 25, 2022
রাজ্যে পোস্ট অফিসে সরাসরি নতুন নিয়োগ || WB Postal Reqruitment 2022 || Indian postal recruitment || Postal agent recruitment
Sunday, March 20, 2022
রাজ্যে বনদপ্তরে কর্মী নিয়োগ || Forest department recruitment 2022 || বনদপ্তরে নতুন নিয়োগ || বেতন- ২২ হাজার ৪০০ টাকা
Tuesday, March 15, 2022
পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে স্থায়ী পদে গ্রুপ-ডি পিয়ন নিয়োগ || punjab national bank recruitment 2022 || মাসিক বেতন 14,500 টাকা
Sunday, March 13, 2022
পশ্চিমবঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পাশে 16000 শূন্যপদে Axis Bank কর্মী নিয়োগ || WB Axis Bank Recruitment 2022 || Axis Bank recruitment 2022
Wednesday, March 9, 2022
পশ্চিমবঙ্গে বন্ধন ব্যাংকে প্রচুর কর্মী নিয়োগ || WB Bandhan Bank Recruitment 2022 @bandhanbank.com
Monday, March 7, 2022
Composition || A FEW TRUTHS! || Kunal Roy
A FEW TRUTHS!
As I was preparing to leave the college after a hectic day's schedule, I was faced by the dark, black clouds that really looked sullen and it was thought for a while that they would melt into rains, bringing a sense of relief not only to Georgians but to the rest of the city dwellers. But the mere wish was not translated into reality. However, there was a strong, cold wind to serve as a consolation! Truly at times, what we think or nurture, mostly latent desire at the corner of our heart , is either partially fulfilled or not at all and therefore leaving us at the lurch! However, the most tormenting moment crops us when we really fall prey to the web of a horrendous make - believe world! No matter how much we have got or achieved, a single pit fall seems to tear apart this soul. We shed tears. We scream, hurt ourselves or at the most blame others blatantly without any reason as such. What an unscrupulous act indeed! Little we do realise the root cause of such a kind of mental disruption. It is nothing but the hope which was once a blessing turns into a curse of restlessness. Hope gives rise to positivity but hoping against hope fetches trauma if not a disaster! Let us restrain ourselves from any dicey situation. There may be clouds spreading across the sky but the rain gods don't promise to drench us to our feet. People may give you words but it is not necessary they are to be kept. In fact if we bank on His choice, the best gift is assured. A truth I realized as I read the poem 'Weaver' in the wee hours of the morning!!
রম্যরচনা || অন্ধকারের উৎস হতে || সামসুজ জামান
অন্ধকারের উৎস হতে
“ অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো...” এই আলোর গুরুত্ব আমাদের জীবনের জন্য নেহাত কিছু কম নয়। বরং বলা ভালো সময়ে সময়ে সেই আলো স্বর্গীয় দীপ্তিতে আমাদের জীবন যৌবনের প্রতিটা প্রতিটা মুহূর্ত কে আরো অনেক বেশি উদ্ভাসিত করে দেয়।
আমার আন্দামানের শিক্ষকতা জীবনের সামান্য একটা ঘটনা। এমনিতে সম্পূর্ণ শিক্ষকতা জীবনে হাতেগোনা দু-একদিন মারধর করেছি। কিন্তু সেদিন দয়াল নামের অত্যন্ত দুরন্ত একটি ছাত্রকে মারার ফল খুব বিপদজনক হবে সেই চ্যালেঞ্জের মুখে এক সহকর্মী খানিকটা বাজেভাবে আমায় ঠেলে দিয়েছিল। ক্লাসে পড়াচ্ছিলাম জীবনানন্দের কবিতা। ঠিক সেসময় খুব ঔদ্ধ্যত্যের সঙ্গে ক্লাসের বাইরে থেকে দুলালের আগমন। দুম করে বিঘ্ন ঘটানোয় অসহ্য হয়ে বেধড়ক মার দিয়েছিলাম দয়ালকে। দুলাল নাকি খুব বাজে ছেলে? কিন্তু মাথা নত করে আমার মার আশ্চর্যভাবে নীরবে সহ্য ক’রে আমার মনের অন্ধকারে দুলাল আলো উৎসারিত করেছিল সেদিন। কোন ঔদ্ধত্যের প্রকাশ' নয় বিনয়ের সঙ্গে দুলাল মাথানত করে বলেছিল "স্যার, আর কোনদিন এরকম ভুল করবোনা স্যার!"
সঙ্গে সঙ্গে আমার উপলব্ধিতে নিজেকে ঠিক সেই মুহূর্তে একটা পশুর মত মনে হয়েছিল। ছি: ছি: ছি:! লজ্জায় কেঁদে ফেলেছিলাম আর ভেবেছিলাম এত বড় ভুল করলাম ছেলেটাকে ওভাব মেরে? কত কিছু শিখতে আমাদের বাকি আছে এখনো আমাদের। মন থেকে কেউ যেন দেখিয়ে দিয়েছিল 'অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো' সত্যিই কখন কিভাবে যে আমাদের মনে সাড়া জাগায় তা অকল্পনীয়।
জীবনে উপলব্ধি করেছি আসলে খুঁজে নিতে জানলে তবেই কালো মায়ের পায়ের তলায় আলোর নাচন দেখা যায়। মন বিক্ষিপ্ত থাকলে শান্ত সংযত না হলে সেই আলো দেখা যায় না, দেখা যায় শুধু অন্ধকার। সেইজন্যেই কবি বলেছেন "কেউ নয়ন মুদে দেখে আলো, কেউ দেখে আঁধার"। আসলে অন্ধকারের উৎসেই লুকিয়ে থাকে বিদ্যুতের ঝলক। কালো অন্ধকারময় রূপের আড়াল থেকে ভুবনমোহিনী হাসি নিয়ে আলোয় আলোকিত হয়ে আবির্ভূত হন ভালবাসাময় পরম সিদ্ধপুরুষ শ্রীকৃষ্ণ। তাই সন্তান বিয়োগব্যথার পাথার বুকে করেও নজরুল চাঁদের আলোয় ভেসে যাওয়া পৃথিবীর রূপে নিজেকে হারিয়ে ফেলে সেই মুহূর্তে পৃথিবীর রূপ সুধা আকন্ঠ পান করতে পারেন। অগনিত স্বজনবিয়োগ অগ্রাহ্য করেও কবিগুরু তাই অন্ধকার নয়, আলোর হাতছানি উপলব্ধি করেন। আর শান্ত মনে পবিত্র মন্ত্রোচ্চারণ করেন– "আনন্দধারা বহিছে ভুবনে....।”
রম্যরচনা || গল্প লিখতে হবে || সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
গল্প লিখতে হবে
নাটক, গল্প আমার দ্বারা সম্ভব নয় জেনেই কি এই আব্দার! যেমন শিশু জেনে বা না জেনেই বোধহয় তার বুড়ো দাদুর কাছে আব্দার করে ঘাড়ে ক'রে বেড়াতে নিয়ে যাবার। বায়না ধরে। দাদু তখন নিজের শরীরের বিভিন্ন ধরনের অসুখে জেরবার! তাতে কী! শিশুর আব্দারের মূল্য কি নেই! তবু দাদু ছুটি পায় না। আমারও বোধহয় সেই অবস্থা। কিন্তু অগত্যা--
কলম ধরেছি।হয়তো কিছু একটা দাঁড়াবে শেষমেশ। সেটা গল্প কিনা বলতে পারবো না। প্রত্যাশা বেশি হলে সেখানে ত্রুটি থাকবেই। সেই ত্রুটিমুক্ত কিছু লেখা বাংলা সাহিত্যের পক্ষে বর্তমানে প্রচুর গল্পকারের কাছে নিন্দনীয় হতে পারে।কিংবা মঙ্গল বা অমঙ্গলও হতে পারে। যদিও সেটার বিচার করার ভার অবশ্যই আপনার।
একদিন এক অল্পবয়সী ছেলে বাবার কথায় সাড়া দিয়ে সব ফেলে নামলো জীবন নদীর তীরে নৌকো না পেয়ে। লাভ হয়েছে।
অনেকেই পেরিয়ে গেছে কিন্তু সে পেরোতে পারেনি।
পৃথিবীর মাঝে সে একা বিবর্ণপ্রায় দিন কাটায় আজও। তার কথা ভুলেও কেউ মনে রাখে না আর। তার নাম কী দেব বলোতো! সেতু নাকি তক্তা হীন কাঠের পোল।! বিধাতা পুরুষ নাকি নারী সে দ্বিধা দ্বন্দ্ব যেমন থাকবে বা আছেও। তবুও আমি যে কথা চলে আসছে বহু বছর ধরে সেটাই লিখছি-- "বিধাতা পুরুষ"!
হ্যাঁ বিধাতা পুরুষ আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে সেতুর মতো শুইয়ে সকলের পারাপারের ব্যবস্থা করেছে। আমি কিন্তু সেই আগের মতোই রয়ে গেছি আজও এখনও। ওপারে যাবার উপযুক্ত হতে পারিনি।
সেতুর ওপর দিয়ে যারা পেরিয়ে ওপারে গেল তারা আর খোঁজ রাখেনি আমার। আমি তাহলে সেতু নাকি অন্য কিছু!? এ ক্ষুদ্র পৃথিবীর অতি পুরোনো এক মাধ্যম যেমন!
বাঁশঝাড়ে যেমন অনেকরকম শব্দই হয় একটুখানি হাওয়া দিলেই। সেতুও পুরোনো বলেই হয়তো নানান উদভৎ শব্দ করে।। কখনো চিৎকার করে আবার মড়মড় শব্দে ভেঙে যাচ্ছি বলতে চেয়ে সাবধান করে সকলকে। যাই হোক্ যারা পারাপারের যাত্রী তারা কিন্তু কেউ কি খেয়াল করে এটা!
বোধহয় না।
এই গল্প তো একটা শিশুও লিখিতে পারে। তাই না! । আর আমি কি আর নতুন লিখলাম! বিড়ম্বনা লাঞ্ছনা বিদ্রুপ নাজেহাল ক'রে কয়েকটা বানী উচ্চারণ করেছি মাত্র। আমি তো এখন পড়ে আছি সেই আগে যেমন ছিলাম এখনও সেই পারাপারের মাধ্যম সেতুর মতোই। আমার ব্যথা আমার পাপ ঐ বাল্মীকি বা দস্যু রত্নাকর এর মতোই। কেউই কষ্টের ভাগ নিতে চায় না।
নদী বড় বা ছোট যাই হোক সেতুর কাজ রোদ্দুর দেখিয়ে বা পেয়ে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। পথ দেখিয়ে দেয়া। আমি সেই কাজটা হয়তো ভালোই করেছি মনে হয়।
তোমরা ও শেষে শিশুর মতোই শুনে বলবে হয়তো ধুর এটা কী গল্প হলো! যত্ত সব আবোল তাবোল! তবুও এই গল্প টার মধ্যে সহজ সরল কিছু বক্রোক্তি আছে। নেই উপাদান। তাই এটা গল্প নয়। এটা শেষের শুরু বলা যেতে পারে। মাথা মুন্ডু কিচ্ছু নেই। সূখ দুঃখ হাসি কান্নার লেশমাত্র নেই। অতএব আমি ডাহা ফেল।
তার চেয়ে যাই দেখি ওদিকে রোদ্দুর উঠেছে কিনা।
বর্ষা শেষ। বসন্ত ধীরে ধীরে প্রবেশ করতে চাইছে, কিন্তু কেউ যেন বাধা দিচ্ছে নিম্নচাপের ভঙ্গিতে।
হয়তোবা পুষ্টি উপাদানের সাথে ভেজাল নেই এতে-- তাই এটা গল্প হয়নি। হয়েছে কিছু অনাবশ্যক কঠিন বাক্য বিন্যাস মাত্র।
এটা না পড়াই বোধহয় ভালো।।
আমি এখন একটু নিস্তার চাইছি। আবার পরে বলবো যদি কিছু পারি।।
গল্প|| অবিকল || আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস
অবিকল
আমার এক বন্ধুর নাম মজিবুর। একটা সেকেন্ডারি স্কুলে সে শিক্ষকতা করে। বিরাট এক বড়লোকের মেয়ের সাথে তার বিয়ে হচ্ছে। অনেক টাকা পয়সা এবং সোনা দানা তাকে উপহার দিচ্ছে। বিয়েতে সে আমাকে বরযাত্রী বলেছে। আমি তার বিয়ের বরযাত্রী এসেছি। বউ দেখতে খুব সুন্দরী। নাম নার্গিস। খেতে খুব ভালো দিয়েছে। খাওয়াদাওয়া সেরে সবাই একটু ঘুরতে বেরিয়েছে। কিন্তু আমি না বেরিয়ে একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। আমার সাথে কেউ নেই। আমি আর আমি ছাড়া। দাঁড়িয়ে আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে টানছি। সিগারেট, বিড়িতে যদিও আমার সেরকম কোন নেশা নেই। তবু বন্ধু দিয়েছে বলে।
আর এইসময় হঠাৎই একটা টোকা পড়ে আমার পিঠে---আমি ওদিকে খুঁজে খুঁজে হয়রান হচ্ছি, আর তুমি এখানে---
কণ্ঠটা একটা নারীর। ফলে আমি চমকে উঠে তাড়াতাড়ি তার সোজা হয়ে দাঁড়ালাম।
নারীটির ঠোঁট লাল আর পরনে লাল শাড়ি। যাকে বলে ঝলমলে পোশাকে সে সুসজ্জিতা।
অমনি সে ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেল---সরি! আপনাকে দূর থেকে আমার স্বামী ভেবেছিলাম। আপনি অবিকল আমার স্বামীর মতো দেখতে।
---তাই?
---হ্যাঁ।
নারীটি এরপর চলে গেলে আমি মুগ্ধ হয়ে তার চলে যাওয়াটা তাকিয়ে দেখলাম।
অনুগল্প || সম্ভব না || সিদ্ধার্থ সিংহ
সম্ভব না
কবিতা || দূষণ || অভিজিৎ দত্ত
দূষণ
ঘরে,বাইরে দূষণ আজ
ছড়িয়েছে সর্বত্র
দূষণের প্রভাবে মানুষ আজ জেরবার
বেঁচে থাকাটাই অনেকের কাছেই
মুশকিল হয়ে পড়েছে আজ।
দূষণকে যদি নিয়ন্ত্রণ
করতে না পারো
সভ্যতার সেরা জীব মানুষ
নিজেদের নিয়ে তোমরা
গর্ব করতে কী পারো?
মনের দূষণ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর
একে আগে করতে হবে পরিষ্কার
মহাপুরুষদের জীবনি এক্ষেত্রে
সাহায্য করতে পারে অনেকখানি
মনকে যদি আলোকিত করতে পারো
দূষণ পরাজিত হবে এবারও ।
কবিতা || আজ ফাগুনে || বদ্রীনাথ পাল
আজ ফাগুনে
আজ ফাগুনের রঙ্ লেগেছে পলাশ বনে বনে-
মলয় বাতাস দোল দিয়েছে সবুজ সবুজ মনে।
আয় ওরে আয় , আয় রে সবাই আজকে নতুন প্রাতে-
রঙে রঙিন করবো ভুবন হাত মিলিয়ে হাতে।
রঙ লেগেছে কৃষ্ণচূড়ায়, রঙ শিমুলের ডালে,
ডাকছে কোকিল মধুর সুরে ঘোর লাগা সকালে।
মৌমাছিরা গুনগুনিয়ে বলছে রসাল-কানে,
"বিশ্ব ভুবন মাতিয়ে দেবো উতল প্রাণের গানে"।
শিরিষ নাচে নূপুর পায়ে ঝুমুর ঝুমুর সুরে-
মঞ্জরীদের কাছে ভ্রমর বেড়ায় উড়ে উড়ে !
এলো ফাগুন রঙ্ ছড়িয়ে বসন্ত হিল্লোলে-
নতুন পাতায়, নতুন সাজে, নতুন প্রাণের দোলে।
কবিতা || তবে একটা কথা || নবকুমার
তবে একটা কথা
আমি তোমাকে এক তাল মাটি দিচ্ছি
তুমি তা দিয়ে যা খুশি বানাতে পারো ।
তবে, একটা কথা -
ভুলেও যেন মানুষ বানিও না -।
একটু বড় হলে সে ফন্দি খুঁজবে
তোমাকে বের করার
হয়তো হত্যাও করতে পারে
বেশির ভাগ মানুষই বেইমান
ইতিহাস তার প্রমাণ ।
তার চেয়ে একটা কুকুর গড়ো-
কুকুররা বড় বিশ্বাসী
শেষ জীবন পর্যন্ত তোমাকে ছেড়ে যাবে না
তোমাকে ভালোবাসবে -।
মানুষেরা ভালোবাসা জানে না
মুখে শুধু বুলি আওড়ে যায়
একেকটি কৃতঘ্ন ।
কবিতা || তমসার পারে জ্যোতির্ময় || চাঁদ রায়
তমসার পারে জ্যোতির্ময়
আলোয় কালোয় মেশানো পথের
অনেক টা আজ পেরিয়ে এসে
পেলাম তোমার আশিস্ প্রভু
পথ হারানোর পথের শেষে।
আমার মধ্যে ছিলাম আমি
ভাঙালে ঘুম তুমিই এসে
জেগেই হলাম তোমার আমি
তোমাকেই আজ ভালোবেসে।
আলোর পথে দৃষ্টি আমার
যেখানেই আজ যাচ্ছে মিশে
সেই সীমানার পারেও তুমি
আমার 'আমি' তোমার পাশে।
যে গানে আজ যে সুর শুনি
মিলছে তোমার সুরে এসে
সব সুরই যে বাঁধা দেখি
সেই সুরের আদি মধ্য শেষে।
মন্দ ভালো আঁধার আলোর
পেরিয়ে সবের প্রান্তে এসে
তুমিই দেখি আমার জ্যোতি
তমসার পারে আলোর দেশে।
কবিতা || নিভন্ত প্রতিবাদী || রাজীব দত্ত
নিভন্ত প্রতিবাদী
আমারও কিছু চাওয়ার আছে,
আমি হতে চাই অন্ধ,
আমি হতে চাই বোবা,
আমি হতে চাই কালা,
এই ছলনাময় সমাজের,
আমিও একটা জড় পদার্থ।
শিরদাঁড়া গুলো কবে যে ভেঙ্গে গেছে
কবে যে হারিয়ে গেছে মনুষত্ব।
চারিদিকে শুধু মিথ্যে আর বঞ্চনা
চারিদিকে শুধু অসহায়ের কান্না।
প্রতিটা রাতে প্রতারিত হয়,
মানুষ নামক জন্তুর বিবেক আর চেতনা।
হ্যাঁ আমি চাই বোবা কালা অন্ধ হতে,
যাতে শুনতে না পাই সব অন্যায়,
যাতে শুনতে পাই খুনখারাপি আর ধর্ষণ,
সবকিছুতেই অর্থের প্রলোভন।
প্রতিবাদীরাও মরে যায়,
অর্থের ক্ষমতায়।
আমি তো কেবল চুনোপুটি
হারিয়েছি শিরদাঁড়া আর দাঁত কপাটি।
তাই আমি আবারও চাই,
বোবা কালা আর অন্ধ হতে,
যাতে আবার না সামিল হই ঐ রক্তমাখা প্রতিবাদে।
কবিতা || দরজা বন্ধ || আশীষ কুন্ডু
দরজা বন্ধ
আজ শুধু ভাবনারা ভালবেসে বলে-
দেখো চেয়ে-
দরজাটা বন্ধ, ওপারে ভিড়
কথার, শব্দের প্রজাপতির
ব্যঞ্জনাময় ,এ বেপথু মনের
আলো ফাঁক চুঁয়ে আবেগের !
দরজা বন্ধ, এপারে অভ্যাস
সময় থমকে , মনের দাস
তমসায় হয়ে গেছি নিমগ্ন
বাদী করাঘাতে,মনটা বিপন্ন !
ওপারে অনড় অতীত পড়ে
বন্ধ মন রেখে বিকল করে
শব্দের খাঁচায়, নেই জানলা
বিবর্ণ চিঠি রয়েছে খোলা!
এখন পৃথিবী হয়নি শীতল
গভীরতা অসীম,মনের তল
ভেঙ্গে যাক এই মনদুয়ার,
জীবন, যৌবন সব অসার।
কবিতা || ছলছল অমর পাথর || সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক
ছলছল অমর পাথর
আততায়ী চাঁদ বিছানার ওপর লুটোপুটি খায়
অসংযমী ভদ্রতায়
অসুখের ছায়া আরো গভীর,গভীরতর
বিরল প্রতারকের এমন
অপার মধুর হাসির বন্যায়।
সুন্দর প্রাকৃতিক দান তাই বিবর্ণ,
মৃত্যুখাদে জীবন্ত প্রতিছব্বি প্রতিদিন
ঘোলাটে হৃদয়ের অস্পষ্ট কর্নিয়ায়।
ছলছল ভাষা অবিরাম কথায় কথায়
বিষন্ন পামরের ভূমিকায়।
কবিতা || নাগপাশ ফেলে || বলাই দাস
নাগপাশ ফেলে
বাঁকাচোরা পথ জোয়ারের ঢেউয়ে নিঃস্ব হলেও স্বাগত
তুমিতো একাই মাতিয়ে রাখো ধরিত্রীর হৃদয়, আবার কাঁদাতেও---
প্রেমের মাঝে লুটোপুটি-- তখন খিল্ খিল্ হেসে ওঠে বাতাস কৃষ্ণচূড়ায়।
চৈত্রের পোড়ামাঠ, মরুস্থলি, থরেরও থাকে একটা সৌন্দর্য-- মাধুর্য---
এতকিছুর পরেও হৃদয়তো পেতে চায় একটি প্রস্ফুটিত গোলাপ
প্রিয় ভালোবাসার কাছে সবকিছুই হারমানে বসন্তের ছোঁয়ায়।
ওই সরমিন্দা চাঁদও মেঘের কোলে ডুবতে ডুবতে বেঁচে ওঠে
সত্য--সুন্দরকে ভালোবেসে--
যে দিয়েছে হাজার আঘাত তবুও তার জন্য প্রার্থনা, বৃষ্টির একফোঁটা স্বচ্ছ ফটিকজল, অথবা সঙ্গতিপূর্ণ বাষ্পীভূত শিশির পড়ুক ঝরে...
কবিতা || মুখ বদলায় না || উদয়ন চক্রবর্তী
মুখ বদলায় না
মিথ্যে কথার ফুলঝুড়ি
আর প্রতিশ্রুতির সুনামিতে
ভেসে যাচ্ছে ইতিহাস -
মৃত্যু সেতো একটা ভাগশেষ
মেমরিতে সংখ্যা হয়ে শুয়ে থাকে
সেখানে খুঁজে দেখা সত্যটা ধূসর
ক্ষমতার জীবাষ্মের বালুচরে
বর্তমান সমুদ্রের আস্ফালন বারংবার
বলে চলে অতীত চিত্রনাট্য রামধনু এঁকে আকাশ রূপ বদলায় বারবার
রাজা বদলায়-মুখ বদলায়
রাজনীতি তার মুখ বদলায় না
রাজার পোষা সরীসৃপ শ্বাপদেরা
পাল্টে নেয় শিবিরের ছাউনি।
কবিতা || ফুল ছিলো না, ছিলো না কবিতাও || ওমর খালেদ রুমি
ফুল ছিলো না, ছিলো না কবিতাও
দু’জনে অনেক হাঁটলাম
এই প্রোগ্রামটা ইঠাৎই হলো
সবটুকু তোমার দয়া
কখনও ভাবিনি এভাবে সকাল সকাল ডেকে নেবে
এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি
অতোটা প্রেমিক আমি
যতোটা সড়কের লোকজন ভাবে
মূলত মানুষ যতোটা না সুখ ী
তার চেয়ে বরং অন্যরা একটু বেশীই ভাবে
কল্পনায় সুখ অনেক
কিন্তু আজ ব্যাপারটা অন্যরকমই হল
তুমি ডেকে নিলে তাই
আশা ছিলো একদিন আমিই তোমায় ডাকবো
আমার হাতে থাকবে কবিতার বই
তোমার খোপায় গোঁজা গোলাপ
তারপর নিরবচ্ছিন্ন হেঁটে চল
এ নগর দেখবে একবিংশ শতাব্দীর শেষ প্রেমিককে
অবলীলায় হেঁটে যেতে
এতো কথা বলার কি দরকার?
দরকার একটু আছে বটে
প্রত্যহ সকাল হয় প্রত্যহ বিকাল
প্রতিটি রাতে যদিও পূর্ণ জ্যোৎস্না হয় না
তবু আজকাল বুকের ভেতর জ্যোৎস্নার বড় আকাল
তোমার সুগন্ধি মাখানো চুলের ঘণ অরণ্যে
যে বাতাস খেলা করে ফেরে
তারপর যখন তারা মাতাল হয়
একশো একটা প্রেমিক ছুটে আসে
পৃথিবীর প্রথম প্রেম
কানায় কানায় ভরে দেয় তার পেয়ালা
আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখ
অন্ধ কবি হোমার বীরদের গাঁথা গাইতে গাইতে
এইমাত্র বাংলা একাডেমীর চত্বর অতিক্রম করল
আর আমরা তখন ও
টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পায়ের কাছটাতে বসে
একদল পিঁপড়াকে মিছিল সহকারে যেতে দেখছি
নুন আর লবণ একই বস্তু কিনা
আজকাল এসব নিয়ে বড়ই তর্ক হচ্ছে
একজন দারুণ জ্ঞানী এইমাত্র ছিড়ে ফেললো
একজন বয়স্ক লোকের কোট
সেই কোটের বোতামগুলো সোনার ছিলো
মার্কস এঙ্গেলস লেনিন হাহাকার করে উঠল
সাম্যবাদের তবে এই চেহারা
কোথাও পতন নেই
তবু ভাঙ্গনের শব্দ শুনি কান পাতলেই
যারা ওপারে গেলো তারা বাঙ্গাল হলো বটে
বিহারীরা তো তবে একটা কিছু না হয়েই রয়ে গেল
পরাজয় আর দুর্ভাগ্য কখন যে কাকে তাড়া করে
সে কথার কিছুই আগাম বলা যায় না
আমি সহস্র পাতার একটি কবিতা লিখতে চেয়েছিলাম
এখন দেখছি সহস্র লাইন জোগাড় করাই কঠিন
মাটির টুকরোগুলোকে যারা অমৃতে ভরা বিস্কুট ভেবে খায়
তাদের ক্ষুধার চেয়ে নির্বুদ্ধিতাকেই বড় করে দেখা হয়
সবাই হাততালি দিলো
কারণ এইমাত্র একজন নেতা
একটি ছোট্ট বক্তৃতা শেষ করলো ... ঠিক তার পরই অন্তর্হিত হলো
একটি বুলেট তাকে শহীদের মর্যাদা এনে দিলো
আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখলাম
তোমার খোপায় গোলাপ নেই
আমার হাতে নেই কবিতার বই
সাপ আর বিচ্ছুদের রাজত্বে
একটি মৃত হরিণের শরীর
ঠিক ততক্ষণই পড়ে থাকে
যতক্ষন সময় লাগে ব্যাক্টেরিয়ার তাকে পঁচাতে
এ লাশ জানি কেউ নেবে না
না এ মাটি
না এ জল
সাহসী যারা তারা চলে গেছে সেই কবে
আমি শুধু তাদের গোঙানিটাই শুনেছিলাম
যারা অসহায় যারা মলিন যারাবিবর্ণ
খুশী হওয়ার মতো কোন উপলক্ষ্য তাদের জীবনে আসেনি
আজকাল জিডিপি নিয়ে খুব কথা বলা হয়
ভাবনা চলছে মাথা পিছু আয় নিয়েও
এসব যে শুধু সংখ্যা তা কে কাকে বোঝাবে
আমাদের যেতে হবে বহুদূর
অনেকগুলো সুন্দর সকাল
অনেকগুলো আনন্দঘণ বিকেল
এক সুঁতোয় বাঁধতে পারলে তবেই না স্বাধীনতা
আমাদের কাঙ্খিত সকালগুলো এখনও আসেনি
আমাদের সোনালি বিকেলগুলো এখনও অধরা
তোমার বাহুর বন্ধনে বাঁধা পড়ার প্রত্যাশী
অজ যুবককে আমি দেখলাম চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে
তোমার আগুনে পোড়ার জন্যে প্রস্তুত
অনেকগুলো পতঙ্গকে আমি দেখলাম এক জায়গায় জড়ো হয়েছে
আহা! কতোই না ভালো হতো
যদি আমিও তাদের একজন হতাম
তাহলে হয়তো এরকম একটা আস্ত নগরী
আমার হাঁটতে হতো না তোমাকে পাশাপাশি নিয়ে
প্রেমিক না হওয়ার শর্তেই তো
তুমি আমায় বিশ্বাস করেছিলে
তারপর কতো দুর্ভোগ পোহাতে হল
আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে
আমরা এক একজন তীব্র দার্শনিককে
পেছনে ফেলে সামনে আগালাম
খসরুর কবিতা, গালিবের শের
হাফিজের গান আর খৈয়ামের রুবাই
আহা কতো মধুর ছিলো তানসেনের সু
পৃথিবীর প্রথম পাথর যেদিন
মাটি ফুঁড়ে বাইরে বেরিয়ে এলো
সেটাই ছিলো তার প্রথম চোখ
সেই চোখে সে যা কিছু দেখেছে
একে একে সব হয়েছে পাথর
আমাদের ভরসাগুলো ক্লান্তিতে