স্থিতধী - শ্রীঅচিন্ত্য সেনগুপ্ত || কবিতা || Poetry
স্থিতধী
শ্রীঅচিন্ত্য সেনগুপ্ত
কদাচিৎ মাটিতে বসে আপন ধীশক্তিকে
আলিঙ্গন করতে ইচ্ছা করি৷
বাঁচার শৈলী তো সমুদ্র শিখিয়ে দেয়৷
দিগন্ত প্রসারিত বক্ষ উন্মুক্ত করে,
সারা পৃথিবীকে আপন করে নিয়ে,
আপনার মাঝে আপনাতে মত্ত থাকা৷
উচ্চাশা ও চাহিদার পরস্পর মিতালী
আমায় শান্ত থাকতে আদেশ করে৷
আমার জীবন অবিধায় অনেকে ঈর্ষান্বিত,কারণ
আমি জীবনে না প্রেম বদলেছি না বন্ধু,তবুও
রয়েছি ক্লেশহীন৷
হয়তো স্থিতধী'তে আশক্তিই আমায়
এইরূপ আচরণে বাধ্য করে৷
সময়কে ধরার আশায়
একটা ঘড়ি কিনে পরতেই,সময় যেন আমার পিছনে পড়ে যায়৷
ভেবেছিলাম একটা ছোট্ট ঘর বানিয়ে,
সংসার পেতে বসবো৷কিন্তু
গার্হস্থে'র গুরুভার আমায় ভবঘুরে বানিয়ে দেয়৷
শৈশবের স্বপ্নীল রবিবার,বিন্দুতে সিন্ধু দেখার
নেত্রনজর আর ফিরে আসবে না৷
সখ পূরণ তো শৈশবের সরলতার মাঝেই জোটে৷
আপন রোজগারে শুধু প্রয়োজনই মেটে৷
একটা সময় ছিল যখন ভোরের ভানুর কান্তিময়
হাসিতেই ঘুম ভাঙ্গতো৷
এখন দিন পেরিয়ে সন্ধ্যে হয়ে যায়,
তবু আকচার হাসির সুযোগ আসে না৷
আপনজনের সম্পর্কের ঋণ পূরণ করতে করতে
অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি,তবু
নিজেকে হারিয়েও আপনজন খুঁজে পাইনি৷
লোকে বলে আমার দিন পেরিয়ে যায় হাসতে হাসতে৷
আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ি দুঃখের পসরা ঢাকতে ঢাকতে৷
সারা সমাজটাকে বদলে দেবার ইচ্ছা হয় ; কিন্তু
দু-বেলার অন্ন সংস্থানের ফাঁদেই দিন আটকে থাকে৷
চিত্ত'কে শুদ্ধ রাখতে গিয়ে বুঝেছি,
মূল্য তো চেহারার হয়৷কিন্তু
মনিবন্ধে দামী ঘড়ি শোভা পেলেও
সময় আপন গতিতেই বয় ৷৷
Comments