খুঁতখুঁতে গিন্নি - প্রদীপ কুমার দে || khut khute ginni - Pradip Kumar de || রম্যরচনা || Rammyarochona
খুঁতখুঁতে গিন্নি
প্রদীপ কুমার দে
ব্যাগটা সবে নামিয়েছি, গিন্নি দৌড়ে এল, সুদুর রান্নাঘর থেকে নাইলনের মোটা বাজারের ব্যাগ দেখেই উনি বুঝে গেছেন যতসব রদ্দিমাল,মানে সবজি আমি মহামুল্যে কিনে এনেছি।
ও রেগে লাল, মাথার চুল এলোমেলো করে চিৎকার -- এসব কি এনেছো যাচ্ছেতাই?
সবে বাজার থেকে এলাম, করোনার আবহে মুখের মাস্কটাও পর্যন্ত খুলতে পারিনি, হাত পা ধোওয়া দুরে থাক, কিছু না দেখেই মাথা আমার খারাপ করে দেওয়ার পালা। আর আমি সত্যিই বোকা প্রায়শই মুখ খুলে ফেলি আর সেই একই উৎপত্তি শুরু হয়ে যায়, কচ্ছপের গল্পের মতোই। তাই বলেই ফেললাম --
-- আরে চেঁচামেচি করছো কেন? আগেতো থলি থেকে সব বার করে দেখো। সমস্ত মাল বেছে বেছে এনেছি।
-- দেখো মাথা গরম করো না আমার, বুঝলে? আমি একবার দেখলেই বুঝতে পারি। আর সব বেশি বেশি দাম দিয়ে এনেছো এই সব ফেলে দেওয়া সব্জিগুলো?
-- আরে না না, সব দামী এবং টাটকা!
-- ঠিক আছে। ঠিক আছে! যা সব এনেছো - ওগুলো দিয়ে তুমিই রান্না করবে, আমি ছুঁয়েও দেখবো না, এই বলে দিলাম। যত্তোসব!
আমি তাড়াতাড়ি ব্যাগ উল্টে দিলাম। আনাজ গুলো গড়াগড়ি খেয়ে দিক-বেদিক বেমালুম হয়ে গেল। দু একটা হাতে তুলে বৌয়ের উদ্দেশ্যে নাড়ালাম -- দেখো ! বললাম না ? কত টাটাকা দেখ!
গিন্নি ওসবের ধার দিয়েও গেল না। পালং শাকের আঁটিটা হাতে তুলে নিয়ে কি চেঁচানি -- ছ্যা! ছ্যা এটা কি? এটা ফেলে দিলে গরুতেও তো খাবে না!
আমি বেগতিক দেখে কেটে পড়লাম। একেবারে সোজা ছাদে গিয়ে ঠাঁই নিলাম। কিনা কান খাঁড়া করে শুনতে লাগলাম গিন্নির চিল্লানি -- কোনো কাজটা যদি পারে। সব কিছুতেই বড় বড় ভাষণ!
কাজের বেলায় অকর্মার ঢেঁকি !
লজ্জায় কান লাল হয়ে গেল। কর্মজীবনে যে আমি কিনা ম্যানেজার হয়ে সকলকে ধমকেছি সেই আমিই এখন বউয়ের হাতে জব্দ হয়ে ল্যাজ গুটিয়ে নিজেকে লুকাচ্ছি! ছিঃ ছিঃ! ভগবানের এ কেমন বিচার? না ভগবান- ফগমান কিছু নেই!
আশেপাশের বাড়ির প্রতিবেশী বৌদিরা সব শুনছে আর কি ভাবছে কে জানে? ছিঃ ছিঃ!
Comments