কবিতা || ফুল ছিলো না, ছিলো না কবিতাও || ওমর খালেদ রুমি

 ফুল ছিলো না, ছিলো না কবিতাও



দু’জনে অনেক হাঁটলাম

এই প্রোগ্রামটা ইঠাৎই হলো


সবটুকু তোমার দয়া

কখনও ভাবিনি এভাবে সকাল সকাল ডেকে নেবে

এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি


অতোটা প্রেমিক আমি 

যতোটা সড়কের লোকজন ভাবে


মূলত মানুষ যতোটা না সুখ


তার চেয়ে বরং অন্যরা একটু বেশীই ভাবে

কল্পনায় সুখ অনেক




কিন্তু আজ ব্যাপারটা অন্যরকমই হল


তুমি ডেকে নিলে তাই

আশা ছিলো একদিন আমিই তোমায় ডাকবো


আমার হাতে থাকবে কবিতার বই


তোমার খোপায় গোঁজা গোলাপ


তারপর নিরবচ্ছিন্ন হেঁটে চল


এ নগর দেখবে একবিংশ শতাব্দীর শেষ প্রেমিককে


অবলীলায় হেঁটে যেতে


এতো কথা বলার কি দরকার?


দরকার একটু আছে বটে


প্রত্যহ সকাল হয় প্রত্যহ বিকাল




প্রতিটি রাতে যদিও পূর্ণ জ্যোৎস্না হয় না




তবু আজকাল বুকের ভেতর জ্যোৎস্নার বড় আকাল




তোমার সুগন্ধি মাখানো চুলের ঘণ অরণ্যে




যে বাতাস খেলা করে ফেরে




তারপর যখন তারা মাতাল হয়




একশো একটা প্রেমিক ছুটে আসে




পৃথিবীর প্রথম প্রেম

কানায় কানায় ভরে দেয় তার পেয়ালা


আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখ

অন্ধ কবি হোমার বীরদের গাঁথা গাইতে গাইতে

এইমাত্র বাংলা একাডেমীর চত্বর অতিক্রম করল


আর আমরা তখন ও


টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পায়ের কাছটাতে বসে

একদল পিঁপড়াকে মিছিল সহকারে যেতে দেখছি


নুন আর লবণ একই বস্তু কিনা

আজকাল এসব নিয়ে বড়ই তর্ক হচ্ছে


একজন দারুণ জ্ঞানী এইমাত্র ছিড়ে ফেললো

একজন বয়স্ক লোকের কোট


সেই কোটের বোতামগুলো সোনার ছিলো

মার্কস এঙ্গেলস লেনিন হাহাকার করে উঠল


সাম্যবাদের তবে এই চেহারা

কোথাও পতন নেই


তবু ভাঙ্গনের শব্দ শুনি কান পাতলেই

যারা ওপারে গেলো তারা বাঙ্গাল হলো বটে


বিহারীরা তো তবে একটা কিছু না হয়েই রয়ে গেল

পরাজয় আর দুর্ভাগ্য কখন যে কাকে তাড়া করে


সে কথার কিছুই আগাম বলা যায় না


আমি সহস্র পাতার একটি কবিতা লিখতে চেয়েছিলাম


এখন দেখছি সহস্র লাইন জোগাড় করাই কঠিন

মাটির টুকরোগুলোকে যারা অমৃতে ভরা বিস্কুট ভেবে খায়


তাদের ক্ষুধার চেয়ে নির্বুদ্ধিতাকেই বড় করে দেখা হয়


সবাই হাততালি দিলো


কারণ এইমাত্র একজন নেতা


একটি ছোট্ট বক্তৃতা শেষ করলো ... ঠিক তার পরই অন্তর্হিত হলো


একটি বুলেট তাকে শহীদের মর্যাদা এনে দিলো


আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখলাম


তোমার খোপায় গোলাপ নেই


আমার হাতে নেই কবিতার বই


সাপ আর বিচ্ছুদের রাজত্বে


একটি মৃত হরিণের শরীর


ঠিক ততক্ষণই পড়ে থাকে


যতক্ষন সময় লাগে ব্যাক্টেরিয়ার তাকে পঁচাতে

এ লাশ জানি কেউ নেবে না

না এ মাটি


না এ জল


সাহসী যারা তারা চলে গেছে সেই কবে


আমি শুধু তাদের গোঙানিটাই শুনেছিলাম


যারা অসহায় যারা মলিন যারাবিবর্ণ


খুশী হওয়ার মতো কোন উপলক্ষ্য তাদের জীবনে আসেনি


আজকাল জিডিপি নিয়ে খুব কথা বলা হয়


ভাবনা চলছে মাথা পিছু আয় নিয়েও


এসব যে শুধু সংখ্যা তা কে কাকে বোঝাবে


আমাদের যেতে হবে বহুদূর


অনেকগুলো সুন্দর সকাল


অনেকগুলো আনন্দঘণ বিকেল


এক সুঁতোয় বাঁধতে পারলে তবেই না স্বাধীনতা

আমাদের কাঙ্খিত সকালগুলো এখনও আসেনি


আমাদের সোনালি বিকেলগুলো এখনও অধরা


তোমার বাহুর বন্ধনে বাঁধা পড়ার প্রত্যাশী

অজ যুবককে  আমি দেখলাম চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে


তোমার আগুনে পোড়ার জন্যে প্রস্তুত


অনেকগুলো পতঙ্গকে আমি দেখলাম এক জায়গায় জড়ো হয়েছে


আহা! কতোই না ভালো হতো


যদি আমিও তাদের একজন হতাম


তাহলে হয়তো এরকম একটা আস্ত নগরী


আমার হাঁটতে হতো না তোমাকে পাশাপাশি নিয়ে

প্রেমিক না হওয়ার শর্তেই তো


তুমি আমায় বিশ্বাস করেছিলে


তারপর কতো দুর্ভোগ পোহাতে হল


আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপে


আমরা এক একজন তীব্র দার্শনিককে


পেছনে ফেলে সামনে আগালাম


খসরুর কবিতা, গালিবের শের


হাফিজের গান আর খৈয়ামের রুবাই


আহা কতো মধুর ছিলো তানসেনের সু

পৃথিবীর প্রথম পাথর যেদিন

মাটি ফুঁড়ে বাইরে বেরিয়ে এলো


সেটাই ছিলো তার প্রথম চোখ


সেই চোখে সে যা কিছু দেখেছে


একে একে সব হয়েছে পাথর


আমাদের ভরসাগুলো ক্লান্তিতে



Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024