Sunday, November 14, 2021

১৬ তম সংখ্যার সম্পাদকীয়

 


                                           অঙ্কন শিল্পী- মৌসুমী চন্দ্র



সম্পাদকীয়:


নদী তো চির গতিশীল, বহমান। কিন্তু জীবনের সুখ-দুঃখ আবহমান ধরে বয়ে আসছে। এই সময়ে সাহিত্য চর্চা করা প্রকৃত মুক্তি লাভের স্বাদ পাওয়া একমাত্র উপায়। এই সাহিত্য চর্চায় পারে ক্ষুধার্ত পেটকে শান্ত রাখতে। মৃত্যুতে অমরত্ব লাভ। তাই ভাবতে থাকুন। লিখতে থাকুন। সৃজনশীল করে তুলুন বিশ্ব সাহিত্য কে। ভালো লাগা কবিতা পাঠ, গল্প পাঠ অনেক দিশা খুঁজে দিতে পারে আপনাদের। আমাদের ওয়েবসাইট ম্যাগাজিন এই World Sahitya Adda পত্রিকাটি সুন্দর সাহিত্য চর্চার এক অসামান্য প্রয়াস। খুঁজে পাবেন সমগ্র বিশ্বকে শুধু একটি লিংক এ হাত দিয়ে। তাই পড়ুন। লিখুন ‌‌। সাথে থাকুন আমাদের পত্রিকার সাথে।




                                          ধন্যবাদান্তে
                                  world sahitya adda পত্রিকা

_________________________________________________


Advertisement (বিজ্ঞাপন):


১)


______________________________________________________________________________________________________


২)




বইটি সরাসরি পেতে-- 6291121319

______________________________________________________________________________________________________




৩)


##উত্তরপাড়া,সিঙ্গুর এবং কোলকাতার বেহালায় এছাড়াও যে কোনো প্রান্ত থেকেই যেকোনো ক্লাসই অনলাইনে করতে পারবেন। 

এছাড়া কেউ যদি সরাসরি অফলাইন এ ভর্তি হতে চান যোগাযোগ করুন এই নাম্বারে-- 9330924937
______________________________________________________________________________________________________

বি. দ্র. -- বিজ্ঞাপন এর সমস্ত দায়িত্ব বিজ্ঞাপন দাতার

Saturday, November 13, 2021

১৬ তম সংখ্যার সূচিপত্র (৪০ জন)

 সম্পূর্ণ সূচিপত্র:






বাংলা কবিতা ও ছড়া---



তৈমুর খান, মহীতোষ গায়েন, আশীষ কুন্ডু, নীতা কবি মুখার্জী, সেখ নজরুল, নবকুমার, আবদুস সালাম, রানা জামান, সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক, কমল মন্ডল, সোনালী মীর, অভিজীৎ ঘোষ, প্রতীক হালদার, সুমিত্রা পাল, হর্ষময় মণ্ডল, মৌসুমী চন্দ্র, সত্যেন্দ্রনাথ পাইন, চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী, ডঃ রমলা মুখার্জী, সৈয়দ শীষমহাম্মদ, অভিজিৎ দত্ত, মিলি দাস, মিঠুন রায়, সুমিত্রা পাল, তহিদুল ইসলাম, গোবিন্দ মোদক, বিধান সাহা, শ্যামল চক্রবর্ত্তী, সৌমেন কর্মকার, জয়িতা চট্টোপাধ্যায়, ঋদেনদিক মিত্রো ।


বাংলা গল্প---

সিদ্ধার্থ সিংহ, অমিত পাল



নিবন্ধ----

সত্যেন্দ্রনাথ পাইন



বাংলা গদ্য তথা রম্য রচনা---

অরবিন্দ সরকার, তীর্থঙ্কর সুমিত।
 


ইংরেজি কবিতা--

Pavel Rahman



Photography---

Moushumi chandra, 
Sohini Shabnam

Monday, November 1, 2021

Photography by Riyanka Roy



 

Photography by Sohini Shabnam



 

Photography by Moushumi chandra


 

লেখক সুজিত চট্টোপাধ্যায় -এর একটি রম্য রচনা

 সাবস্টিটিউট 




সংস্কার সংস্কার। নিয়ম রে বাবা। বিরক্ত হলেও কিচ্ছু করার নেই। চুপচাপ মুখ বুঁজে পালন করো। হন্নে হয়ে খুঁজে বেড়াও। গোবর চাই গোবর। এক দলা টাটকা গোবর। 


অলক্ষ্মী বিদায়ের মোক্ষম উপকরণ। কুলো, কলাপেটো, পিদিম, সিঁদুর সব জোগার কমপ্লিট। একা গোবর বাকি। কোথায় পাবো। দশকর্মা ভান্ডারে চাঁদের মাটিও ইজি এবালেবল, বাট, নো গোবর, আই মিন, কাউ ডাং। 


কালী পুজোর রাতে অলক্ষ্মী বিদায়ের আয়োজন। প্রত্যেক বছরই হয়, মানে হয়ে আসছে। কোন অসুবিধে হয়নি। এবার গোবরে আটকেছে। 

পাচ্ছিনা বললে তো চলবে না চাঁদু , যেখান থেকে পারো জোগাড় করো। এত বছরের নিয়ম , ঝপ করে ঝেড়ে ফেলে দিলেই হলো। মামদোবাজি। পূর্বপুরুষদের কাছে কি জবাব দেবো শুনি। 


খাটাল নেই , গরু নেই ব্যাস। পূর্বপুরুষ যা বোঝবার বুঝুক। 

বাজে কথা বলে লাভ নেই , গরু নেই , তাহলে এতো এতো দুধ কোথা থেকে আসছে শুনি।

আরে ধুৎ,, ওসব প্যাকেটের দুধ। সাদা সাদা গোলা জল। আর্টিফিশিয়াল মিল্ক , নো দুধ। 

আবার বাজে বকে। চা হচ্ছে , পায়েস হচ্ছে , গেলাসে করে ঢকঢক করে খাওয়া হচ্ছে , নো দুধ? 

দুধ হোক না হোক , ওতে গোবর হয়না ব্যাস। 

ভারি মুশকিল, কি কথার ছিড়ি। দুধে গোবর হবে কেন ? 

দুধে গোবর নয়, যে দুধ দ্যায়, সেই গোবর দ্যায়। এই দুধ যে দ্যায়, সে গোবর দ্যায় না। বোঝাতে পারলুম? 

না, বুঝলুম না। বুঝতে চাই না। আমার গোবর চাই। 

হবে না। খাটাল লাও, গরু লাও তারপর গোবর লাও।

ও মা , কি হবে গো,,, হায় কপাল আমার। অলক্ষ্মী বিদায়ের কি হবে গো। এতো দিনের পুজো, একটু গোবরের অভাবে বন্ধ হয়ে যাবে নাকি? ধম্মে সইবে? সবসময় মনের মাঝে খিচখিচ করবে , অলক্ষ্মী অলক্ষ্মী,,,,, ওগো কিছু একটা উপায় করবে তো নাকি,,,,,,,,, 

উপায় আছে,,,, 

আছে ? কি গো? 

অনেক দিন এমন বিনয় মাখা আদুরে অথচ আকুলতা ভরা কন্ঠস্বর শোনা যায়নি। কি ভালো লাগে, কি সুন্দর। আবার নতুন করে প্রেম নিবেদন করতে ইচ্ছে করে। মন বলে , ওগো প্রিয়ে, আরও একবার মধুকন্ঠ ঝরাও। জীবন প্রেমসাগরে ডুব দিক। ওগো নির্জনতা , আবার একবার অন্তত এসো, ভুলিয়ে দাও অতীতের কর্কশ হৃদয়বিদারক জ্বালাময়ী বাণী কে। 


আছে উপায় আছে। 

লংকা আর পাতিলেবু। দরজার মাথায় টাঙিয়ে রাখলে , অলক্ষ্মী ঘরে ঢুকতেই পারবে না, সুতরাং তাড়াবার প্রশ্নই নেই। 

ইয়ার্কি হচ্ছে না ? এসব মজা করার ব্যাপার নয়। সংস্কার, নিয়ম। কোনও বাজে ফালতু কথা শুনতে চাই না। আমার গোবর চাই ব্যাস। 

মাটি দিয়ে কাজ চালাও। 

মাটি? মাটি আর গোবর এক হলো ? 

হ্যাঁ হলো। বিজ্ঞান সম্মত হলো। 

কি করে?? 

শোনো , আগে মাটি , তাতে জন্মালো ঘাস। সেই ঘাস গরু খেলো। ব্যাস হয়ে গেল,,,। 

কি হয়ে গেল ? 

গোবর । ঘাস খেয়ে পটি, গোরুর পটি গোবর। ভেরি সিম্পল। 

যুক্তি আছে বটে। ঠিকই তো। খড়, ঘাস এইসব না খেলে গোবর,,,,,, আর এইসব তো মাটিতেই জন্মায়।ঠিকই আছে। 


এই প্রথম সঠিক যুক্তি দাতার উদার সার্টিফিকেট পাওয়া গেল। এতদিন নির্ঘাত বিশ্বাস ছিল, বিবাহিত পুরুষ মানেই মাথায় কাউডাং। এখন মনে হচ্ছে , দীপালোক সার্থক। মগজে লেড লাইট ঝিলিক মারছে। আহ,,,,, কি আরাম। 


মাটি ? পাওয়া যায় ? সেও তো একই অবস্থা। 

ঠিকই বলেছ। তবুও ওই প্রমোটারদের কৃপায় ওটা এখনো পাওয়া যায়। 

এরমধ্যে প্রমোটার এলো কোথা থেকে , ওরা কি মাটি তৈরি করে ? 

না না,, মাটি কি তৈরি করা যায় নাকি? পুরনো বাড়ি ভাঙছে , নতুন বাড়ি তুলছে। আগে মাটি তোলা পরে বাড়ি তোলা। তারপর টাকা তোলা। টাকা মাটি , মাটি টাকা। বলি, বুঝলে কিছু ? 

বুঝে আর দরকার নেই। মাটি দিয়েই কাজ চালিয়ে নিই কি বলো ? 

অবশ্যই । পূর্বপুরুষদের অত অবুঝ ভেবনা। তারা জানে, যখন যেমন , তখন তেমন । তাদের সময়ে খাটাল ছিল, গরু ছিল, খাঁটি দুধ ছিল, টাটকা গোবর ছিল। এখন সেসব ইতিহাস। এখন দুপেয়ে অঢেল গরু। শুধু শিং বাগিয়ে গুঁতোতে ওস্তাদ।চিড়িয়াখানা তে গরু রাখার চল নেই। ইস্কুলেও এখন আর গরুর রচনা লিখতে শেখায় না। গরু এখন রাজনৈতিক ইস্যু। গণধোলাই। সুতরাং চালাও পানসি। গোবেচারার মতো গোবরের বদলে মাটিই মানিয়ে নেওয়া কিংবা মেনে নেওয়াই ভালো। জয় গোমাতা। 

অগত্যা,,,,,, উপায় তো নেই। সত্যিই তো , যখন যেমন তখন তেমন। মাটিতেই মানিয়ে নেওয়া ভালো। 


 তবে , কোনও গ্যারান্টি নেই জানো। আর কিছু দিন পরে হয়তো এও মিলবে না। সাবস্টিটিউট ভেবে রাখো। সারমেয় ডাং ইজি এবালেবল। হা হা হা হা,,,,, 

ছি ছি ছি ছি,,,,,,,,,

লেখক তীর্থঙ্কর সুমিত -এর একটি রম্য রচনা

 নদী কথায় ভেসে যায়......

      

     (১৫)



আজকে আরো একটা সন্ধ্যা যে সন্ধ্যায় ভালোবাসার পাহাড় জমে প্রতিনিয়ত।আর ভালোলাগার বাহুল্যতায় সৃষ্টি হয় এক একটা দর্পণ।যে দর্পণে মুখ দেখতে দেখতে হারিয়ে যাই কথাদের ভিড়ে।কথার পাহাড় পাশে জমতে জমতে সৃষ্টি হয় ভালোবাসার মুখ।যে মুখে লুকিয়ে থাকে কত সৃষ্টির রসদ।তার একপাশ দিয়ে বয়ে যায় ভালোবাসার নদী।যে নদী সৃষ্টি করে আগামী কে।আর তার দিকে তাকিয়ে থাকি আমরা ...

ভবিষ্যতের কথা বলতে।






নদী কথায় ভেসে যায় .....

             (১৬)



কিছু কথা বেশি না হলেও যেটুকু দরকার ঠিক সেটুকুই অভিযোগ পূর্ন।হয়ত বা কথার পাহাড় থেকে কিছু কথা সাজিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা বসে আছি।একে অপরের দিকে নানা প্রশ্ন -- বিস্তারিত আলোচনা এখানেই সৃষ্টি হয় নদী কথা।আর গল্পের গল্প সাজিয়ে নেয় উপন্যাস।এভাবেই ফিরে আসে কত চাওয়া পাওয়ার অভিমান।এই অভিমান জমতে জমতে শুরু হয় অভিনয়।


সব অভিমান ই একদিন ভেসে যায় নদিকথায়।


লেখক সত্যেন্দ্রনাথ পাইন -এর একটি গদ্য

পরিবেশ বান্ধব বাজি


এই পরিবেশবান্ধব বাজি বলতে কী বোঝায়-- এটাই তো আমার বোধগম্য নয়। কেন কিসের জন্যে এই পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো চলবে!? কী ধরনের কীভাবে পরিবেশবান্ধব বাজি বলে বাজারে স্বীকৃত হবে? যদি কোনও বাজি কারখানার মালিক পরিবেশবান্ধব স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে বাজি বাজারে ছাড়েতাহলেই কি পরিবেশবান্ধব বলে পাশ হয়ে যাবে!? কে প্রমাণ করবে-- পরিবেশবান্ধব বাজি বলতে কী বোঝা যায়! আসলে এর দ্বারা পিছন দরজা দিয়ে অন্য নিষিদ্ধ বাজিকেই অনুপ্রাণিত করা হলো না্ তো! আপনার কী মনে হয়। কেন আতস বাজি পোড়ানো স্বীকৃতি পাবে? কোনো জায়গায় প্রশাসনিক প্রধান কিছু বেশি টাকা নিয়ে ( না না ঘুষ বলবো না;চাঁদা নিয়ে)প্রতিবন্ধকতায় আটকে থাকা বাজিকেই স্বীকৃতি দিতে আদালতের আইনকে টাটা বাই বাই করছে , নাকি বাজি পোড়ানো র ব্যাপারে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে বেশি করে!?!? ভাবতেই অবাক লাগছে। 

   পরিবেশ দূষণ, বায়ুদূষণ করবে সব ধরণের বাজিতেই। সেখানে "পরিবেশবান্ধব" বাজি আবার কী!? মাথায় আসছে না। অতএব মানুষের মনের পরিবর্তন প্রয়োজন। যতক্ষণ না কোনও পরিবারের কেউ এই বাজি থেকে বা বাজির ধোঁয়া থেকে অসুস্থ না হচ্ছে ততক্ষণ বোধহয় সেই পরিবারের কেউই বুঝতে চাইছেন না এর পার্শ্ব বিষক্রিয়া। কেন? 

   মাননীয় হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পেছন দরজা দিয়ে বাজি পোড়ানো স্বীকৃতি পেল না তো! কার কী মনে হয়! কোনো সময় আধঘন্টা বা কখনো দু ঘন্টা সময় নির্ধারণ তো ছুতো মাত্র। না। চলবে না। বাজি বিক্রি নয়, বাজি তৈরির কারখানার হদিস পেলেই তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত কিছু বাজেয়াপ্ত করা হোক। বাজি পোড়ানো সম্পূর্ণ বেআইনি ঘোষিত হোক। আমি পরিবেশবিদ নই। কিন্তু নিজস্ব জ্ঞানের ভান্ডারে যতটুকু সঞ্চিত বিদ্যা আছে তার থেকে বলছি-- পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সকলেই ভাবুন--সকলেই ভাবুন-- আওয়াজ করে আনন্দ না মনের অন্তর্ভুক্ত আনন্দই আসল আনন্দ! বাজি পোড়ানো বা ফাটানো সর্বৈব নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।

লেখক শ্যামল চক্রবর্ত্তী -এর একটি গদ্য

 গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো গল্প হলেও সত্যি 




সুমন ‌: সবুজ , বাবা লোকনাথের মূর্তিটা তোর নিজের হাতে বানানো । বাহঃ বেশ সুন্দর তো ।

সবুজ: হ্যাঁ আমার নিজের হাতে বানানো।

সুমন, এত জাগ্রত ভাবতে পারবি না । তুই রনে বনে জঙ্গলে যেখানে থাকবি , কোন বিপদে পড়লে তুই বাবা লোকনাথ কে ডাকলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে । আমার কথা মিলিয়ে নিবি। এর একটা ইতিহাস আছে বলছি তাহলে শোন--


বনি : ভাই ,অনেক চেষ্টা করে কোথা থেকে তো লোকনাথ বাবা কোন ফটো পাইনি। তুই মাটি দিয়ে একটা লোকনাথ বাবার মূর্তি বানিয়ে দিবি ? আচ্ছা, আমি চেষ্টা করে দেখছি। তখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি সালটা ঠিক মনে নেই ।অনেক ছোট হঠাৎ করে একটা মাটির ঢেলা জোগাড় হয়ে গেল । বাবা লোকনাথের মূর্তিটা অবিকল বানিয়ে এবং সাদা অঙ্গরাজ করে ফেললাম। ওই মাটির মূর্তি টি দিয়ে সেই বছর ( সালটা ঠিক মনে নেই ) ঊনিশশে জ্যৈষ্ঠ লোকনাথ বাবার তিরোধান উদযাপন হয়েছিল। দিদি নিষ্ঠা সহকারে বাবা লোকনাথের পুজো করেছিল। পোলাও, পায়েস, নানারকম ভাজা সঙ্গে থাকে অমৃতি জিলাপি, কাচা বাদাম, আমসত্ত্ব ,সবেদা যা যা ওনার খুব প্রিয় সাধ্যমত উপাচার করা হয়েছিল।


পুজোর পর বাবা লোকনাথের মূর্তিটা ভাসান দেবে বলে, বারান্দার একপাশে রেখে দিয়েছিলাম।


পুজোর দুদিন পর হঠাৎ করে রাত্রিবেলা স্বপ্নে দেখছি, বাবা লোকনাথ কে ভাসান দিতে নিয়ে গিয়েছি এঁড়েদা (আড়িয়াদহ ) ঘাটের গঙ্গার জলে।

হাতে করে যখন গঙ্গার জলে ভাসান দিচ্ছি হাত থেকে তখনো ছাড়িনি, সামান্য ডুবিয়েছি দেখছি। যেতে চাইছে না কাঁদছে , যেন একটি ছোট শিশু।

হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে গেল। গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো।

পরের দিন সকালবেলা মাকে ঘটনাটা বর্ননা করলাম। মা বললো এক্ষুনি মূর্তিটাকে আসনের স্থাপন করতে হবে।

লেখিকা মৌসুমী চন্দ্র -এর একটি গদ্য

 প্রথম খোলা জানালা তোমার ছোঁয়ায়



মনের খোলাজানালা দিয়ে প্রথম হাসতে শেখা, কাতুকুতু বুড়ো, ভয় পেও না এই সব কবিতার হাত ধরে। ছোটবেলায় খুব দুষ্টুমি করলে যখন খুব মার বকা খেতাম, গুমরে কেঁদে, কখনও বার করতাম সন্দেশ,আবোলতাবোল। বিদ্যেবোঝাই বাবুমশাই পড়ে শিখেছিলাম জীবনের হিসাব। কাঁদুনে,ডানপিটে, বুঝিয়ে বলা,আহ্লাদী, সৎপাত্র আমার জীবনে এনেছিল খুশির সমুদ্র। আবোলতাবোলের

কার্টুনচিত্র প্রথম পেনসিল, তুলি ধরতে শিখিয়েছিল।যে কবিতা, গলা দিয়ে ছবি আঁকতে শিখিয়েছিল,সেই বাবুরাম সাপুড়ে। জীবনে প্রথম বইপ্রীতি,অঙ্কনপ্রীতি,কবিতা আবৃত্তির প্রতি ভালোবাসা জন্মানো,লেখালিখি যাঁর হাত ধরে আজ তার জন্মদিন। 


একজন চিত্রশিল্পী, রম্যরচনায় সিদ্ধহস্ত,কলমের খোঁচায় গিজগিজ করা হাসির খোরাক, সেই হাসির যাদুকর, শ্রদ্ধেয় সুকুমার রায়ের আজ জন্মদিন।আমার মনের খোলা জানালায়, আজকের সামাজিক প্টভূমিতে দাঁড়িয়ে, গুরু তোমার সুর শুনতে পাচ্ছি," মশাই এখন কেন কাবু? বাঁচলে শেষে আমার কথা হিসেব কোরো পিছে...."


শ্রদ্ধা জানাই আমার প্রিয় শিল্পীগুরু সুকুমার রায়কে তাঁর জন্মদিনে। আমার মনের জানালাটি যেভাবে খুলে দিয়েছিলে গুরু, প্রার্থনা করি তোমার জন্মদিনে তোমার সৃষ্ট শিল্ল যেন তেমনি করেই সবপ্রজন্মের মানুষের মনের জানালা খুলে দেয়।


লেখিকা রোকেয়া ইসলাম -এর একটি গদ্য

 স্মৃতি বিস্মৃতির জোছনায় 




মায়াবী কোমল স্নিগ্ধ রুপালি আলোতে ভরপুর এক উপগ্রহের নাম চাঁদ। সূর্যের কাছ থেকে চেয়ে চিন্তে আলো নিয়ে যখন তার মোহনীয় রুপ নিয়ে হাজির হয় পৃথিবী গ্রহের মানুষেররা তার রুপে বিমুগ্ধ হয়ে যায়। আরজুও তার ব্যাতিক্রম নয়। আরজুর ভেতর উথলে ওঠে চাঁদের সজীব ভালবাসা। 

মায়ের মৃত্যুর পর চাঁদ ওর কাছে মা , মুক্তিযুদ্ধের সময় একদিন সফল অপরেশন শেষে দল নিয়ে ফিরছিল, ঘাড়ে আরিফের শরীর , পুকুরের পাশে আরিফকে শুইয়ে ক্লান্ত তৃষ্ণার্ত আরজু জলের কাছে যায়। অবরুদ্ধ কান্নাকে বুকের গভীরে চাপা দিয়ে আঁজলা ভরে জল পান করে। 

আরজু বুঝতে পারে আঁজলায় টুপটাপ করে চোখের জল মিশে যাচ্ছে, 

বিপ্লবীর চোখে জল মানায় না, ভেতরে একখন্ড আগুন ঢেউয়ে ভেঙে দুলছে। 

  দৌড়ে আরিফের পাশে এসে বসে, সরাসরি আকাশে চোখ রাখতেই আরিফ বুকের গভীরে কথা বলে ওঠে।

- তোরা হেরে গেলে আমাদের চিহ্নও খুঁজে পাবি না বন্ধু, তোদের জিততেই হবে। 

দেশ স্বাধীন হবার পর আর্মি ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করে রিনাকে। 

ওকে হাসপাতালে রেখে বাড়ি ফিরে বসেছিল নারকেল গাছতলায়, সেদিনও আকাশে ছিল ডগমগে চাঁদ। 

বারবার চোখ আঁটকে যাচ্ছিল চাঁদের কলঙ্কে। 

কি অপরুপা চাঁদ তার কি মোহনীয় আলো! অপূর্ব সৌন্দর্যে মোহিত করছে পৃথিবীবাসীকে!! কেউ তো মাথা ঘামাচ্ছে না তার কলঙ্ক নিয়ে। 

তাহলে রিনা!!  

রিনার চলে যাবারদিনও ছিল এমনি গহন পূর্ণিমা। 

  দীর্ঘকাল শহরে বসবাস করলেও বুকের গভীরে লালন করে ওর এই গ্রামে। ছুটিছুটায় দেশের বাইরে ঘোরার চেয়ে নিরিবিলি কয়েকটাদিন গ্রামে কাটাতেই বেশি পছন্দ ওর। 


এবার দীর্ঘদিন পর এসেছে গ্রামের বাড়িতে, শরীরে নানাধরণের রোগ বাস করছে ওকে অতি আপন ভেবে। 

 গ্রামের বাড়িতে গাছতলায় বাঁধানো বেঞ্চে একা একা বসে আছে 

হেমন্তের মিহি শীতল বাতাস ওকে আরাম দিচ্ছে, আর কতদিন আসতে পারবে মায়ের মত গ্রামটিতে, বাবার এই পবিত্র বাড়িতে, জানে না আরজু।

 শুধু এটুকু জানে এখানে এলে ওর অতীত ওকে কাছে নেয় ভালবেসে, স্নেহে। 

ওর স্কুল, খেলার মাঠ, নদী, বৃক্ষ, সব ওর চেনা আত্মার স্বজন। 

অথচ জীবন যৌবনের হিরন্ময় সময়টুকু নিঃশেষ করলো শহরে। শহর ওকে কি দিলো? আর ওর কাছ থেকে শহর কতটা নিংড়ে নিলো, মনের ব্ল্যাকবোর্ডে অংকের হিসাবে জ্যামেতিক নকশায় আঁকছে।

 আহা জীবন কত দ্রুত ফুরিয়ে যায়! 

কয়েক বছর আগে এলেও দেখা হতো শৈশব সাথীদের সাথে, তাদের কেউ চলে গেল, কেউ রোগের সাথে মিতালি, করে মৃত্যুর সাথে কানামাছি খেলছে । 

আরজুও তো দাঁড়িয়ে আছে তেমনি কানামাছির খেলার দলে।  

আজ ওর মনটা ফুরফুরে। 

আকাশে ডগমগে হেমন্তী পূর্ণিমার অনন্য আলোময় চাঁদ। 

ওর কাছে এসে মা আদুরে ভঙ্গিতে বসে, বাতাসে বাতাসে হাত বুলিয়ে দেয় ওর সমস্ত মুখে, ফিরে তাকাতেই আরিফ এসে দাঁড়ায় হাতে স্টেনগান। আরিফ আর আরজুর মাঝখানে রিনা দাঁড়িয়ে থাকে ঠিক যেমন কলেজের বারান্দায় দাঁড়াতো। 

আরজু উঠে দাঁড়াতেই তিনজন হাত ধরে হাঁটতে থাকে ধান ক্ষেতের আইল ধরে। 

নারকেল গাছতলায় এসে গাছটা আঁকড়ে ধরে আরজু, চিৎকার করে ডাকতে থাকে, কেউ পিছু ফেরে না। 

শুধু বাতাসে নারকেল পাতার সরসর শব্দ হয়। আকাশে চোখ রাখে। পরিপূর্ণ চাঁদটা নারকেল গাছের উপরে উঠে গেছে। চাঁদটার চারপাশ জুড়ে জলধণূ । 

দোতলায় শোবার ঘরে দক্ষিণের জানালা খুলে দিতেই , হুড়মুড়িয়ে জোছনা বিছানায় লুটিয়ে পড়ে মেঝেতে ছড়িয়ে পড়ে। 

আরজু জানালায় দাঁড়ায়। 

সামনের সোনালী ক্ষেত থেকে পাকা ধানের মৃদু সঙ্গীত বাতাস মুঠো ভর্তি করে তুলে আনছে চঞ্চল কিশোরীর হাতে। 

আরজুর জীবনে আর কি কেউ এসেছিল, যে জোছনা ভালবাসতো, কে সে কে? 

আজকাল বিস্মৃতিও ওকে আপন করে নিয়েছে। 

নিকট অতীত ভুলে গেছে, দূর অতীত মনে পড়ে। 

সে কি ওর নিকট অতীত? কে কে! ? 

এমনি পূর্ণিমায় সে উতলা হয়ে পড়তো অপরুপা জোছনা অবগাহনে। 

আরজুর মাথার ভেতর সুক্ষ্ম যন্ত্রণা হয় , কিছুতেই মনে করতে পারে না কে ছিল এতোকাল ওর পাশে? সে কোথায় চলে গেল কেন চলে গেল?

বুকের ভেতরটা নদীর চরের মত ফাঁকা লাগছে, 

অনেকদূরে একটা ছায়া নড়ে ওঠে। কে ও। 

চিনতে পারছে না কেন ওকে?  

রুপালি চরে বালির মত চিকচিক করছে তার বসন। ওর বসন অতো শুভ্র কেন?  

ওকি কখনো শুভ্র রঙ পছন্দ করতো। 

চাঁদটা আঁটকে আছে তালগাছের মাথায়, ছড়িয়ে পড়েছে অকাতর জোছনা। 

আরজু মনের ভেতর ক্রমাগত আতিপাতি করে খুঁজছে কেউ ছিল এতোকাল ওর কাছে খুব কাছে। সেই কে? কোথায় গেল? কে সে? 

দূরের ছায়াটা কার?? 

চাঁদটা তালগাছের উপরে উঠে গেছে। আরজু আবার তাকায় চাঁদের দিকে, প্রার্থনার ভঙ্গিতে বসে পড়ে, 

 স্নিগ্ধ আলোর চাঁদ একটু ইশারা দাও কে ছিল ওর কাছে? দূরে ও কে? 

তাকে চেনাটা খুব প্রয়োজন এখন ওর। 

কিন্তু কিছুতেই মনে পড়ছে না তাকে!  

দুহাত দিয়ে নিজের মাথার চুল টানতে থাকে। নাহ! কিছুতেই মনে পড়ছে না কিছুতেই না!! 

চাঁদকে ঢেকে দিয়েছে পলকা মেঘ,

  মেঘও আস্তে আস্তে সরে আসছে চাঁদের কাছ থেকে। 

দ্যূতিময় হাসিতে মেঘমুক্ত চাঁদ নীল আকাশে ভাসতে থাকে,  

আরজু তাকিয়ে থাকে নিবিড় জোছনায় স্মৃতি বিস্মৃতির জাগরণে....

প্রাবন্ধিক ভানু শঙ্কর -এর একটি প্রবন্ধ

 বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেঁড়ো 





একটা ভুলকে ঢাকা দিতে গিয়ে আবার একটা মহাভুলের পাহাড়! এ যেন সূর্যের কাছে পৌঁছতে না পেরে হ্যারিকেন- আলোর সন্ধান করা। বা মানব বন্ধন বাজির অনুমতি দেবার মতোই ঘটনা।যদিও আমার নামের আগে পরে কোনো সেলিব্রেটি তকমা নেই একজন অতি সাধারণ জীবিত নাগরিক মাত্র আমি। তাই -- কী বলছি খুলেই বলি -- জাতির মেরুদন্ড হচ্ছে শিক্ষা। সেই শিক্ষাটাকে জলাঞ্জলি দিতেই কি কোনও বিশ্ব নিয়ামক এই বিধান দিচ্ছে! মনে হয়। ইতিপূর্বে যাঁরা মারা গেছেন তাঁরা নাকি করোনায় ভুগে আক্রান্ত ছিলেন। ভুল। ভুল। ভুল। তাঁরা হয়তো অন্য কোনো রোগে মারা গেছেন। শুধু নামকরণে কী আসে যায়! গোলাপকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন সে তো সুগন্ধ দেয় সুগন্ধই দেবে। এই করোনা নামকরণটাও হয়তো চিন আবিষ্কার করেছে- হতে পারে। যেমন ঝড়ের আজকাল নতুন নতুন নামকরণ হচ্ছে। যে দেশ নাকরণ করলো ( আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে)ঝড়ের তীব্রতা তাতে কম না বেশি সেটা কি ঐ নামকরণের মধ্যে নিহিত থাকে ? সেই দেশটাই কি ঝড়ের উৎপত্তি স্থল! না। সেই রকম একটা নতুন রোগের নামকরণ করে কোনও বিশ্ব নিয়ামক সংস্থা শিক্ষাটাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে তৎপর। না হলে বার, রেষ্টুরেন্ট , বাস, ট্রেন, বাজার খোলা আর শিশুরা স্কুলে গেলেই করোনা আতঙ্ক!

   আসলে, কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী মানুষ নিজেদের কতৃত্ব কায়েম রাখতেই বোধহয় শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর এমন আঘাত করে তাকে শেষ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। কারণ তাদের মস্তিষ্কের মধ্যে জেগেছে শিক্ষিত হলে যে বিচার বিশ্লেষণ এসে আঘাত করবে মনের দরজায়। তখন মানুষ ঠিক না ভুল বুঝতে পারবে। তাই শিশুদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার কূট চক্রান্ত করে অশিক্ষিত রাখার প্রয়াস বলেই মনে হয় আমার। তাই স্কুল বন্ধ।

কেন এখনও স্কুলের দরজায় তালা!? করোনা বাড়ছে এই অজুহাত দিয়ে-- -- আবার বন্ধ বা লকডাউনের প্রস্তুতি নয়তো!? নাহলে নবম দশম শ্রেণী থেকে স্কুল খুলবে আর একদম শিশু মন আঙুল চুষবে? কে এমন বুদ্ধি যোগাচ্ছে!

   ওগো মনোবিজ্ঞানীগণ ! দয়া করে ভেবে দেখুন কী মারাত্মক ক্ষতি আমাদের আমরা করছি!? স্কুল খুলুক। ক্লাস চালু হোক--। একদম স্বাভাবিক হোক সবকিছু। সরকার ভাবছে হয়তোবা আমার কত ক্ষমতা! আমার নির্দেশ ছাড়া স্কুল কলেজ বন্ধ। হ্যাঁ এতে সরকারের তৃপ্তি উৎপাদন হচ্ছে হয়তো। কিন্তু সব যে শেষের পথে! খুলে দিন স্কুল। শিশুদের বাবা মা রা আনন্দে গা না ভাসিয়ে শিক্ষা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হবার সুযোগ পাক।

    যদি সত্যিই করোনা বলে কোনও রোগ থেকেও থাকে তাকে নির্মূল করতে স্কুলের দরজা বন্ধই কি যথেষ্ট মনে হয়! কী ভাবছেন নেতা নেত্রী সহ সমস্ত সরকার বাহাদুর?!

    আমার মতো বেশ কিছু মানুষ জানেন-- করোনাটা কোনও রোগই নয়। এটা শুরু থেকেই ভাঁওতা। যে ডাক্তার বাবু অল্প ভিজিট নিয়ে ডাক্তারি করতেন তিনিও ঐ করোনা রোগের ভয় দেখিয়ে ভিজিট বাড়াতে পেরেছেন। হাতুড়ে ডাক্তার মাত্র ত্রিশ টাকার ভিজিট নিতেন এখন সেটা সত্তর টাকা; ভাবা যায়! কেননা করোনা আতঙ্ক! হঠাৎ কী এটা হয়!? এই রোগের নামকরণটাও হয়তো চিনই করেছে-- তাই হয়ত ভাবছি-- রোগটা চিন থেকে এসেছে। এটা সর্বৈব ভুল। ঝড়ের নামকরণ যে দেশই করুক না কেন ঝড়ের দায় কি তার!? না। সেটা যেমন সত্যি। এটাও তাই।

   অতএব কাউকে বিদ্রুপ বা কারোর বিরুদ্ধে বিষোদগার না করেই বলছি-- "শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড"ভেবে শিক্ষা চালু করা হোক-- এখনই এই মুহূর্তে।

   নইলে ঐ বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেঁড়ো হয়ে সবই মিথ্যে হয়ে যাবে!

        নবম শ্রেণী থেকে নয় সব স্কুল শ্রেণীর দরজা খুলে দেয়া হোক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখনই। এছাড়াও প্রাইমারি স্কুল শিক্ষকরা বসে বসে মাইনে গুনছে আর ছেলেদের মাথা খাচ্ছে কারণ --সুধা বিলিয়ে অন্তত যারা সমাজের ক্ষতি না করেও ভালো ছিল তাদেরকে বিলাসবহুল মদ বা কারণ সুধা খাইয়ে সমাজকে দূষিত করছে। । সেটাও বন্ধ হবে তাহলে। সবকা বিকাশ সবকা সাথ।বন্দে মাতরম। জয় হিন্দ। জয় বাংলা।

লেখিকা মায়া বিদ -এর একটি নাটক

জীবিকার সন্ধানে



(দুটি চরিত্র - মদনা ও কাঙালী)


           


মদনা - ওরে কাঙালী, আর আপতাফ কইরে আমাদের দুর্গিকে মারিস ল্যাই ।


কাঙালী - মারবো ন্যাতো তুলে রাকবো। ছামোতেই দুর্গিপূজ্যা, কিছু ট্যাহা ধারকর্জ কইরে সিনদুর, আলতা বিকাতে তো পারো - - -


মদনা - কি কুথা কইলা গো, ইটাতো ভাইব্যা দেখি ল্যাই।


কাঙালী - সগল সুমায় লেশায় বুদ থাকলে - - - - - - 

আমার হোঙাছে যত জানের পিরশানি।


ম:--, যা ক্যানে মিত্তিরিদের কাছটাতে, হাতে - পা য়ে পড়ে ব্যাগাত্তা করে কিছু ট্যাহা লিয়ে আয়।


কা: - ট্যাহা এনে দিই আর কি। ট্যাহা এনে দিলেক তুমি আবার মদ খাবেক। উটি হবেক ল্যাই দুর্গির ব্যাপ ।ইবারে আমি আলতা , সিনদুর লিয়ে গিরামে গিরামে যাবোক ।


ম: - - এ্যা বাবা - তু যে মিঁয়া মানহুষ। লুকে কি বুলবেক বুল?


কা: - - - যা বুলবে বুলবে। এখুন সগ মিঁয়ারা বাবোস্যা করেক ।আমিও করবোক। প্যাটটোতে ভাত ল্যাই আবার বুরহো বুরহো কুথা।


ম: —— আমি ও যাবোক ফেরি করতে। তু পুব গিরামে গেলে আমি পছি গিরামে যাবোক।


কা: —-— তুমার মুরোদ আমার জানা আছেক। মুরগীর দৌড় মোল্লাপাড়া ইস্তক। সুরীখানা লজরে আইলেই হলোক, ঝুপ কইরে ঢুইকে গলা ভিজাবা।


ম: —— লারে, আমাদের দুর্গি খুব কাঁদতেছিল ফুঁফাইয়ে ফুঁফাইয়ে ।আর বলছিলক মা দুর্গি এমোন ব্যাপ-মায় দিলিক একডা লতুন পিরান চোখি দেখতি পায় না, হাতে ল্যাড়া তো দূরের কুথা। কুথাটা শুনা ইস্তক কানেতে বাঁজতেছেরে।


কা: -—— সগই সমঝাছো যখুন, তখুন চলো বেড়াঙ পড়ি।

সিনদুর লিবেক গো সিনদুর,

আলতা লিবেক গো আলতা ।

ছিমতী আলতা, সিনদুর - খুকুমণি আলতা সিনদুর ।

টকটকানি অঙ, জিলিস দ্যাইখ্যা দাম দিবেক গো মা জননীরা।

। 

ম: —— ভুরি সিনদুর আছেক ভুরি সিনদুর।

থান সিনদুর আছেক, থান সিনদুর ।

পূজ্যার আলতা - সিনদুর আছেক গো ।


কি:—— বুরহো গুরিব আছিক ।ঘরেতে মিঁয়াটা আছাড়ি-পিছাড়ি কাঁদতেছে।গিন্নিমারা মুখ ফিরাঙ চলে যাইয়ো না।

সিনদুর - আলতা ফিরাতে ল্যাই মা, সোয়ামীর অকল্যাণ হবেক গো।আমরা এক চিলতে সিনদুরের মর্ম বুঝি মা। জনম জনম এয়োস্ত্রী থাকবা মা।

সিনদুর ল্যাউ গো সিনদুর ।

ভ্যালা ভ্যালা সিনদুর - আলতা আছেক গো।


ম: —— সারাডা দিন টোটো কইরে ঘুইরা কয়ডা ট্যাহা হলোক রে কাঙালী? 


কা: —-— তুমার ক'ট্যাহা হলোক? আমার গুটা পঁছাস ট্যাহা মতোক ।


ম: —– আমার কাছে কেহুতো কিনতে আসতেছে ল্যাই। গুটা বিশ মতোক হঙাছে।


কা: —— কয়ডা দিন যাবোক ইধার - উধার

।তুমি কি যাবেক?


ম: —— হ যাবোক, আরো বিকাতে পারলে পদে খুকিডার একডা জামা-প্যানটুল কিনহে দিবোক ।


কা: —— মা দুর্গি মুখ তুলে চেয়াছেক গো। মা তুমি আছোক গুরিবের সাথে। ভ্যালায় বেচা-কেনা হলোক ।ইবার পূজ্যাতে আমাদের দুর্গি আর কাঁদবেক ল্যাই


ম: - —- ঠিকয় বুলাছিস।আমরা বাবোস্যা করবোক। মা দুর্গির দিখানো পথেই চলবোক বুঝলি।

কা: ——. আমরা মিঁয়াটাকে মানহুষ করবোক ।গতহর খাটাঙ যে খাবোক। আলতা - সিনদুরের মান সব্বাই দিবেক।

চলো ফেরি করি —––

আলতা সিনদুর লিবেক গো ——

ছিমতী সিনদুর - আলতা, খুকুমণি সিনদুর - আলতা আছেক ।লিবেক গো পূজ্যার ডালায় দিতে সিনদুর - আলতা।