Thursday, October 13, 2022

ছোট গল্প - তেপান্তরের মাঠ || লেখক - ঈশিতা বিশ্বাস চৌধুরী || Short story - Tepantorere math || Written by Isita biswas Chowdhury



 তেপান্তরের মাঠ

          ঈশিতা বিশ্বাস চৌধুরী 




প্যানডেমিকের জন্যে অনেকদিন কোথাও যাওয়া হয়না তিতিরের। কি যে এক রোগ এলো অফিস কাছারি, স্কুল, কলেজ, মার্কেট এমনকি পার্কটাও বন্ধ। বাড়ি থেকে না বেরোতে পেরে খুব মন খারাপ ক্লাস সিক্সের তিতিরের। মা, বাবা দুজনেরই ওয়ার্ক ফর্ম হোম চলছে। কতদিন কোথাও না গিয়ে বাড়িতেই বন্দি জীবন কাটছে তাদের। সেই একঘেয়ে অনলাইন ক্লাস আর টিভিতে কার্টুন। কতদিন তার প্রিয় বন্ধুদের সাথে দেখা হয়না ।

আজ দুপুরে ফোনে গেম খেলার জন্য মার কাছে বকা খেয়ে মন খারাপ করে বসে আছে সে। তাদের ঊনত্রিশ তলার ফ্ল্যাটের সতেরো নাম্বার ফ্লোরের ব্যালকনিতে বসে এসব ভাবছিল সে। চোখের থেকে জল টপটপ করে গড়িয়ে পড়ছে। 


মায়ের মন দূর থেকে সবই লক্ষ করে। মেয়ের দুঃখের কারণ রুমা ভালোই বোঝে। তিতিরকে সুন্দর একটি ভ্যাকেশন উপহার দেবার জন্যে প্ল্যান করতে থাকে সে। তাই লকডাউনের শিথিলতা দেখা দিলেই একদিন ভোরে সবাই মিলে তারা বেরিয়ে পড়ে যে দিকে দুচোখ যায়। তিতির জানতে চায় "বাবা আমরা কোথায় যাচ্ছি?"

 বাবা বললেন, "এই কৃত্তিম শহর থেকে অনেক দূরে যেখানে শান্তি বিরাজ করে।"


তিতির তো এতদিন পরে বেরিয়ে ভীষণ আনন্দ পায় ।

বেশ কিছুটা আসার পর তারা একটা ছোট্ট ধাবায় এসে দাঁড়ালো ব্রেকফাস্ট করবার জন্য। খড়ের চাল এবং বাঁশ দিয়ে বানানো ছোট্ট দোকান। লালমাটি এবং রাস্তার দু'পাশে শাল সেগুনের বিশাল জঙ্গল । মা তাকে জিজ্ঞেস করল ,"কি খাবে তিতির ? দুধ কর্নফ্লেক্স পাওয়া যাবেনা, ব্রেড অমলেট খাবে কি? " ডিম খেতে সে ভালোবাসে তাই আপত্তি করল না। দোকানের আঙ্কেলটা কি সুন্দর গরম গরম ব্রেড-অমলেট বানিয়ে দিল তাদের। মা-বাবা সঙ্গে মাটির ভাঁড়ে চা খেলো।মাঝে মাঝে স্নিগ্ধ বাতাসে দু'ধারের জঙ্গল দুলে উঠছে। এক অদ্ভুত মর্মর ধ্বনি চারিপাশে। তিতির মুগ্ধ হয়ে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে খাবার খেতে থাকে। ব্রেকফাস্ট শেষ করে তারা গাড়িতে উঠে বসলো। এই রাস্তায় গাড়ি সেরকম চলে না মাঝে মাঝে দু একটা গাড়ি হুস করে বেরিয়ে যাচ্ছে তাদের পাশ দিয়ে। 

বেশ কিছুটা চলে আসার পর সে বললো,"আর কতক্ষন বাবা?" 

"এই তো এসে গেছি।" মা বলল ,"সামনেই লাভপুর বলে একটা জায়গা আছে সেখানে এক জঙ্গলের মধ্যে একটি রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। যদিও সেটি সম্পর্কে খুব একটা তথ্য ইন্টারনেটে নেই তবে রিভিউ আছে খুব ভালো। তাই আমরা এখানে আসব স্থির করি। আশা করি তোমার ভালো লাগবে। তুমি তো আগে কোনদিন জঙ্গলে আসোনি তাই তোমাকে নিয়ে এলাম। এখানে জঙ্গলে হাতি, চিতাবাঘ নানারকম বন্যপ্রাণী, হরিণ বিভিন্ন রকম পাখি দেখতে পাবে । আমরা কাল একটা জিপ ভাড়া করে জঙ্গলটা ঘুরে দেখব । কি এখন খুশি তো ?"

তিতিরের আর অপেক্ষা সহ্য হয়না! কতক্ষণে গিয়ে রিসোর্টে পৌঁছাবে সেই কথা ভাবতে ভাবতে চঞ্চল হয়ে পড়ে সে। খানিকটা যাবার পর হাইওয়ে ছেড়ে একটি মেঠো রাস্তায় ঢুকে পরে তারা। তিতিরের বাবা সুবীর, জিপিএস অন করে রেখেছে । লালমাটির রাস্তা ধরে গাড়িটি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এগোতে থাকে। গাড়ি এসে দাঁড়ায় রিসোর্টের লোহার গেটের সামনে । দারোয়ান গেট খুলে দিলে তাদের গাড়ি এসে সোজা দাঁড়ায় একটি ঘাসের লনে। 

জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত রিসর্টটি অতীব সুন্দর। নাম 'প্রান্তিক রিসর্ট' । চারিদিকে বিভিন্ন নাম না জানা পাখিদের কলতান শোনা যাচ্ছে। সেরকম সূর্যালোক প্রবেশ করে না এখানে ।

 এখন দুপুরে বড় বড় গাছের ছায়া পড়ে অপূর্ব সুন্দর লাগছে চারপাশের পরিবেশ। পুরো অঞ্চল ঘিরে ছোট ছোট কটেজ বানানো। চারিদিকে কাঁটাতার দিয়ে ফেন্সিং করা। তাদের জন্য কটেজ আগে থেকে বুকড ছিল। সব ফর্মালিটি শেষ হলে, একটি ছেলে এগিয়ে এসে বলল ,

"স্যার আমার নাম নবীন, দিন আপনাদের জিনিসপত্র রেখে আসি।" গাড়ি থেকে জিনিসপত্র নিয়ে 

কটেজটি একদম জঙ্গলের প্রান্তে। কটেজের ঠিক পেছনে বিশাল জঙ্গল শুরু হয়ে গেছে। সুবীর জিজ্ঞেস করল, "রিসোর্ট কি ফাঁকা নাকি ভাই সেরকম কাউকে চোখে পড়ছে না?" "

"আমাদের কটেজটা কিছুদিন হল তৈরি হয়েছে, এখনও সেরকম কেউ এর সন্ধান জানেনা। তবে উইকেন্ডে ভালোই ভিড় হয়। আপনারা তো উইক ডেজে এসেছেন তাই একটু ফাঁকা ফাঁকা আর কি। তবে এই পরিবেশে খুব ভিড় হলে কি আপনাদের ভালো লাগতে স্যার?"

রুমা বলল, "হ্যাঁ সেটা অবশ্য ঠিক। আমরা শহর থেকে এত দূরে নিরিবিলিতে সময় কাটাবো বলে এসেছি, তবে আমরা ভালো সময় থেকে এসেছি বলতে হবে।"




তিতির এমন পরিবেশ দেখে আনন্দে আত্মহারা। সারা রিসোর্ট জুড়ে ছুটোছুটি করে বেড়াচ্ছে । কিন্তু এখন লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে আর অতটা জার্নি করে এসে সবাই খুব ক্লান্ত। তারা খাবার অর্ডার করে দিলো। গরম গরম মাংসের ঝোল ভাত,আর স্যালাড। লাঞ্চ শেষ করে সুবীর, রুমা এবং তিতিরও শুয়ে পড়ল। রুমা এবং সুবীর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হলেও তার চোখে ঘুম আসছেনা। বড় কাঁচের জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে সে দেখল, ঘন জঙ্গলের মধ্যে পাখিরা ইতিউতি ওড়াউড়ি করছে। অনেক দূরে গাছের ঝোপের মধ্যে কি একটা সরে গেল। তিতিরের এখন মোটেই ঘুমোতে ইচ্ছা করছে না। মনে হচ্ছে এক্ষুনি বেরিয়ে জঙ্গলের মধ্যে ঘুরে আসে। কিন্তু মা বাবাকে ছাড়া একা একা যেতেও তার ভয় লাগে। তাই দরজা খুলে সে বারান্দায় এসে বসলো।তারপর সে চারপাশের সবুজের সমারোহ উপভোগ করতে লাগল। শহর থেকে বহুদূরে সবুজের এই জঙ্গলে চোখে যেন ধাঁধা লেগে যায় তার। হঠাৎ কার কণ্ঠস্বরে শুনে চমকে উঠে তিতির। সামনে নবীন নামে সেই ছেলেটি দাঁড়িয়ে সে বলল, "একি মামনি এখানে কি করছ? তোমার মা-বাবা কই? তুমি একা একা বারান্দায় বসে আছ?"



তিতির বলল, "আঙ্কেল আমার ঘুম আসছে না, মা-বাবা তো ক্লান্ত ঘুমিয়ে পড়েছে। তাই আমি এখানে বসে আছি। আচ্ছা ওই জঙ্গলের ভিতরে কি আছে? আমরা দেখতে যেতে পারবো?" 

নবীন চমকে উঠে বলল, "একা একা কোথাও যেওনা। আর এই জঙ্গলটা সেরকম নিরাপদ নয়। দেখছনা ফেন্সিং করা আছে? বন্যপ্রাণীরা ভিতর চলে আসতে পারে তাই জন্যে। সামনেই প্রতাপপুর অভায়ারণ্য, সেখানে জিপে করে তোমার মা বাবা তোমায় জঙ্গল থেকে ঘুরিয়ে আনবে 

পরে। এখনতো সাফারি বন্ধ হয়ে গেছে কাল সকালে যেও।"

"আমি এখন যেতে পারি না?"

"না না এখন যেও না। বরং রুমের ভেতরে গিয়ে বসো। মা বাবা জানলে চিন্তা করবে।"

সে বলল "আমি কোথাও যাবো না একটু এখানে বসে ভেতরে চলে যাব।" 

নবীন একটু ভেবে বললো বলল ,"তবে বস। কিন্তু তুমি জঙ্গলের মধ্যে যাবে না ,জঙ্গলে কিন্তু অনেক রকম বিপদ আছে।"

বলে নবীন নিজের কাজে চলে যায়। বিকেল বেলা ঘুম থেকে উঠে মা-বাবা গাড়ি নিয়ে বের হল।পাশেই একটা পুরনো জাগ্রত দেবীর মন্দির আছে সেটা দেখে এবং ফটোগ্রাফি করে সন্ধ্যেবেলায় বাড়ি ফিরল সকলে। কাল সকালে তারা জঙ্গল সাফারি করতে যাবে। 

রাত্রে শুয়ে শুয়ে এসব ভাবছে তিতির। হঠাৎ জঙ্গলের ভেতর থেকে অদ্ভুত এক শব্দ তার কানে এল। কোন বন্যপ্রানীর গর্জন ও মেঘের ডাকার শব্দ মিশে একটা অপার্থিব শব্দ তার কানে এলো। তিতির ভাবলো হয়তো কোন প্রাণী হবে তাই জন্য তো পুরো রিসোর্টটির ফেন্সিং করা আছে। কাল সকালে তাড়াতাড়ি গেলে কত বন্যপ্রাণীর দর্শন পাবে। এত কাছ থেকে জীবজন্তু দেখতে পাবে ভেবে, উত্তেজনায় তার রাত্রে ভালো করে ঘুমই হলো না। 

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সবাই মিলে রেডি হয়ে বেরিয়ে গেল জঙ্গল সাফারি উদ্দেশ্যে । হুডখোলা জিপে চড়ে তারা জঙ্গলের একটা বিশাল অংশ ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগল। নানান রকম প্রাণীর আনাগোনা সেখানে। কোথায় হরিন ছুটে বেড়াচ্ছে, কোথাও শূকর, বন্য মহিষ, গাছে হনুমানের দল এছাড়া অসংখ্য পাখপাখালি তো আছেই। আর জঙ্গলের ভেতরে একটি বিশাল ঝিল এবং সেখানে নানা পরিযায়ী পাখির সমাবেশ। দুচোখ ভোরে দেখতে লাগল এবং মা-বাবাকে নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে লাগলো তিতির। এই জঙ্গলে চিতাবাঘও বাস করে কিন্তু সেগুলি থাকে কোর এরিয়াতে । তারা জনসমক্ষে সহজে আসেনা। সাফারির পর তারা রিসোর্টে ফিরে এলো। খেয়ে

সবাই দুপুরে বিশ্রাম নিচ্ছে ,তিতির মায়ের ফোন নিয়ে একটি কার্টুন সিরিজ দেখতে ব্যস্ত । বিকেলের সোনালী রোদ গাছগাছালির ফাঁক থেকে উঁকি মারছে। অদ্ভুত এক মন্মুগধকর পরিবেশ।। কাল রাতের সেই অদ্ভুত শব্দের কথা মনে পড়ল তার । ছোট্ট তিতিরের মনে হল আর এই জঙ্গলের মধ্যে নিশ্চয় অদ্ভুত কোনো প্রাণী আছে সেটাকে দেখতে হবে। সন্তর্পনে রুমের বাইরে আসে সে। সূর্যের সোনালী আভায় সারা আকাশ জুড়ে নানা
রঙের খেলা চলছে। লন ধরে হেটে যেতে যেতে কিচেনের সামনে এসে দাঁড়ালো সে। নবীন বিকেলের স্ন্যাকসের  আয়োজন করছে। তিতিরের সাথে দেখা হল, সে বলল "আঙ্কেল কাল রাতে জঙ্গলের ভেতর থেকে একটা অদ্ভুত শব্দ পেয়েছিলাম, সেটা কিসের বলতে পারো?" নবীনের হাসিমুখে একটু চিন্তার উদ্রেক হল, সে বলল ,"তোমায় তো বলেছি জঙ্গলের ভেতর অনেক বিপদ আছে, বন্যপ্রাণী আছে তাদের শব্দ হতে পারে।"

"আমি জঙ্গলের ভেতরে যেতে চাই। আমরা তো সাফারিতে জিপ থেকে নামতেই পারলাম না, একটু ঘুরে জঙ্গলটা দেখে চলে আসব। আর বাবা বলেছে চিতাবাঘ, হিংস্র বন্যপ্রাণী জঙ্গলের  'কোর' এরিয়াতে থাকে। নবীন একটু বিরক্ত হয়ে বলল ,"তোমায় বলেছি না জঙ্গলের ভেতরে যাবে না। তারপর ফিসফিস করে বলল ,"জঙ্গলের ভিতরে এক বিশাল তেপান্তর মাঠ আছে। একবার সেখানে গেলে কেউ আর ফিরে আসে না। বুঝলে? অনেক বাচ্চারা সেখান থেকে হারিয়ে গেছে। তুমি ভুলেও সেখানে যাবার চেষ্টা করবে না। এক্ষুনি রুমে যাও, মা-বাবার সাথে থাকবে সবসময়।"

বলে নিজের কাজে মন দেয়  নবীন। বেড়াতে এসে কারো কাছে বকা খেতে হবে এ কথা স্বপ্নেও ভাবেনি সে। খুব অভিমান হলো নবীনের ওপর। ওদিকে মা-বাবা এখনো ওঠেনি। কিন্তু তিতিরের নিজের কৌতুহল নিরসন করতে ও নিজেকে সাহসী প্রমান করার উদ্দেশ্যে একবার জঙ্গলের ভেতরে যাওয়ার খুব ইচ্ছা তার। 

3


তিতির সব কিছু কে এক্সপ্লোর করতে ভালোবাসে। এই বয়স টাই এমন। তাই মনের ইচ্ছে দমন করতে না পেরে  সবার অলক্ষ্যে ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা রিসোর্টের ঘেরাটোপ পেরিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে একাই হাঁটতে শুরু করে সে । মুক্তির স্বাদই আলাদা। আবছা সোনালী রঙে রাঙা বিকেলের আকাশ। জঙ্গলের মধ্যে কত নাম না জানা জংলি ফুলের সুবাস। গাছে গাছে পাখিরা বাসায় ফিরছে। আচমকা অদূরে কাল রাতের সেই কান ফাটানো আওয়াজটা শুনতে পায় তিতির।  সূর্য অনেক্ষন দিগন্তের অন্তরালে চলে গেছে। হালকা এক  লালিমা আকাশে বর্তমান। চারিদিক সুনসান। নির্জন জঙ্গলে সেই চিৎকার কি অদ্ভুতই না শোনালো।  তিতির ভয়ে ভয়ে এগিয়ে দেখল সামনে একটি  দিগন্ত বিস্তৃত খোলা মাঠ। সবুজ ঘাসে ঢাকা। মাঠটি কোথায় শুরু বা শেষ কিছুই বোঝা যাচ্ছেনা। এটাই কি তবে তেপান্তরের মাঠ? চমকে ওঠে সে। হঠাৎ তার মনে হল দূরে কে যেন তাকে ডাকছে , "এদিকে এসো! আমরা তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম কবে থেকে! এসো এসো।" 

সম্মোহিতের মত এগিয়ে যায় ছোট্ট তিতির। আধো অন্ধকারের মধ্যে ধীরে ধীরে মিশে যায় সে।


ওদিকে  রুমা ও সুবীর উঠে বসে দেখে তিতির ঘরে কোথায় নেই। সমগ্র রিসোর্ট তন্নতন্ন করে খুঁজেও তিতিরকে কোথাও পাওয়া যায়না। রুমা  কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে। সুবীর এবং রিসোর্টের বাকি লোকেরা হতবাক। পুলিশ এসে ছবি সহ বাকি সব তথ্য নিয়ে গেছে। তাকে খুঁজে বের করার জন্য তল্লাশি চলছে। তবে আসে পাশের সব জায়গায় খোঁজা হলেও তার চিহ্ন মাত্র পাওয়া যায়নি। পুলিশ রিসোর্টের লোক নিয়ে জঙ্গলের আসে পাশে খোঁজ চালাতে গিয়েছে অনেকক্ষণ। তিতিরের কোন খোঁজ নেই। 

রাত্রি নটা বাজে। রুমা ও সুবীর ঘরে চুপ করে বসে আছে। এরকম আনন্দ করতে এসে যেরকম চরম বিপদের সম্মুখীন হবে তা তারা স্বপ্নেও ভাবেনি। আচমকা হন্তদন্ত হয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে নবীন। বলে ,"স্যার আমি জানি দিদিমণি কোথায় আছে। আমি খুঁজতে সেখানে গিয়েছিলাম কিন্তু আর তাকে বোধ হয় আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।" সুবীর চেঁচিয়ে উঠলো,"কী বলছো কী নবীন?  ও কোথায় আছে? আমাদের এই মুহূর্তে জানাও। নাহলে আমি তোমাকে পুলিশে দেব। নির্ভীক কণ্ঠে নবীন বলল "পুলিশ কিছু করতে পারবে না স্যার, আমি আপনাদের আগেই বারণ করেছিলাম ওই জঙ্গলের মধ্যে কাউকে না যেতে। আমাদের এই অঞ্চলে এই জঙ্গল পেরিয়ে এক বিশাল মাঠ আছে যাকে আমরা বলি তেপান্তরের মাঠ। সেখানে কেউ গেলে আর কোনদিন ফিরে আসে না। রুমা রেগে বলল "তুমি আমাদের সাথে পুলিশের কাছে  চলো! কোথায় সেই মাঠ দেখাও আমরা খুঁজ বের করব।"

নবীন কাঁদো কাঁদো স্বরে বলল,"ম্যাডাম বোঝার চেষ্টা করুন! আমি এবং পুলিশের টিম মিলে  সমস্ত জঙ্গল খুঁজেছি। চারপাশে খুঁজে দেখা হয়েছে কিন্তু দিদিমণিকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি। কারণ তিনি এখন ভিনগ্রহীদের দেশে। এভাবেই আমি আমার ছোটভাই কেও হারিয়েছি। তাইতো আমি অনেকবার বারণ করলাম দিদিমণিকে ওদিকে যেতে, কিন্তু আমার কোন কথাই শুনলো না সে।"

রুমা একটু নরম হয়ে বলল ,"নবীন আমাদের একমাত্র মেয়ে কোথায় হারিয়ে গেছে।  আমাদেরকে নিয়ে চলো। ওকে খুঁজে না পেলে আমাদের আর বেঁচে থাকার কোন মানে হয় না।আমিও জঙ্গলে চলে যাব।"

"ঠিক আছে চলুন। তবে আমি আপনাদের মেয়েকে আমি কিভাবে ফিরিয়ে দেবো জানিনা। সম্ভব হলে আমার ভাইকেও ফিরিয়ে আনতাম। পারিনি। আপনারা চলুন বুঝতে পারবেন।"

একটা টর্চ সঙ্গে নিয়ে তিনজনে মিলে গভীর জঙ্গল পেরিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে এগিয়ে চলল। চারপাশে বন্যপ্রাণী এবং রাত পাখিদের ওড়াউড়ির শব্দ। তারাও যেন জঙ্গলের মধ্যে মানুষের এই অনধিকার প্রবেশে ভীষণভাবে বিরক্ত। অনেকটা পথ পেরিয়ে তারা এসে পৌছালো একটি খোলা মাঠের ভেতর। আজ পূর্ণিমা, তাই চারিদিক আলোয় ধুয়ে যাচ্ছে। সেই আলোয় বোঝা গেল মাঠের মাঝখানে একটি গোল বৃত্ত সৃষ্টি হয়েছে। কোন  প্রকান্ড এবং ভারী ধাতব জিনিস যেন সেখানে নেমে ছিল। তাতেই ওরকম একটি অদ্ভুত আকার সৃষ্টি হয়েছে।  

নবীন অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে বলল,"দেখছেন ম্যাডাম ঘাসের মধ্যে যে গোলাকার বৃত্তের মত চিহ্নটি দেখা যাচ্ছে ভালো করে লক্ষ্য করুন, আপনারা হয়তো বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু এই অঞ্চলে ভিনগ্রহীদের আনাগোনা বহু বছর ধরে চলে আসছে। জানিনা কেন তারা আমাদের এই জঙ্গল অধ্যুষিত প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে বেছে নিয়েছে। হয়তো নিজেদের লুকিয়ে রাখার সুবিধার্থে। 

অনেক ছোটবেলায় আমার ভাই ঠিক এই অঞ্চল থেকে এক পূর্ণিমার রাত্রিতে হারিয়ে যায়। তাকে আর কোনদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রত্যেকদিন রাত্রে আমি এই জঙ্গলে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম যে ভাই ফিরে আসে কিনা। একদিন পূর্ণিমার সন্ধ্যেবেলায় আকাশের চাঁদ ওঠার পর দেখি এক অদ্ভুত শব্দ করে একটি বৃত্তাকার যন্ত্রের মতো বিশাল আকাশযান নেমে আসছে আমাদের এই মাঠের মধ্যে। আমি দূরে লুকিয়ে ছিলাম বলে তারা আমার উপস্থিতি টের পায়নি। তারপর থেকে প্রত্যেক পূর্ণিমায় এবং যখন আকাশে চাঁদ থাকে তখন ওরা এই প্রান্তরে পদার্পন করে সবার অলক্ষ্যে ।

 আমি এখানে  মাঝে মাঝে আসি ভাইয়ের খোঁজে,  কিন্তু তাকে কোনদিনই আর দেখতে পাইনি। সে বহুকাল আগের কথা, জানিনা সে বেঁচে আছে কিনা। সেই জন্যই আমার এই  রিসোর্ট কাজ নেওয়া। এখান থেকে আমি সহজেই  ভিনগ্রহের প্রাণীদের গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করতে পারি।একবার পূর্ণিমার চাঁদের আলোতে আমি তাদের দেখেছিলাম। বিশালাকায় দেহ, অত্যন্ত লম্বা। দুটি কালো বড়ো চোখ এবং কৃশকায় দেহ। আমি বিশেষ পড়াশোনা জানিনা কিন্তু তারা যে এই গ্রহের বাসিন্দা নয় এটুকু বুঝতে আমার এক মুহূর্ত দেরি হয়নি। তারা অন্য ভাষায় কথা বলে, আমাদের দেশের ভাষা তারা বোঝে না। তবে তারা আমাদের ভাষা নকল করতে পারে। আমার ধারণা আজকে সন্ধ্যেবেলায় দিদিমণি হাঁটতে হাঁটতে মাঠে এসে পড়ে এবং কোনভাবে সেই ভিনগ্রহীদের চোখে পড়ে যায তার পর  থেকেই সে নিরুদ্দেশ।"


রুমা চিৎকার করে কেঁদে ওঠে, "এটা হতে পারে না এ যে অসম্ভব!  তুমি কি বলছ? তোমার মাথা ঠিক আছে নবীন? না মজা করছো আমাদের সাথে?" নবীন আবার বলল, "গ্রামের অনেক মানুষ এই অঞ্চল থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় তাদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। সত্যি কথা বলতে বিশেষ কেউ এ ব্যাপারে জানেও না। তারা একে তেপান্তরের মাঠ বলে আখ্যা দিয়েছে।

কিন্তু আসল সত্যিটা সকলেরই অজানা। তাই তারা এই জনহীন প্রান্তরে বিশেষ আসেনা। যারা হারিয়ে গেছে তাদের কেউই আর ফিরে আসেনি। এই অলৌকিক ঘটনা আমিও কাউকে বলিনি কাউকে  বললে বিশ্বাসও করবে না। পুলিশ প্রশাসনও তো নয়ই ।


সুবীর এতক্ষণ ধরে সমস্ত কথা শুনছিল, সে নবীনের হাত ধরে টেনে বললো, "চলো তুমি, ও যতসব বাজে কথা বলছে, ওই কোথাও লুকিয়ে রেখেছে তিতিরকে, এখন এসব বলে আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এক্ষুনি পুলিশের কাছে নিয়ে গেলে এমন মার মারবে, সব কথা বেরিয়ে যাবে।" রুমা বলল,"হ্যাঁ তাই চলো, একটা কথাও বিশ্বাসযোগ্য নয় ওর। আমাদের অসহায়তার সময় মজা করতে লজ্জা করছেনা তোমার?"

নবীন মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইল। সে বলল,"আমি জানতাম আপনারা এটাই বলবেন।"


হঠাৎ এক অপার্থিব শব্দ সবার কানে এলো। মাঠের মধ্যে বৃত্তাকার নীল আলো চোখে পড়ল সবার। আকাশের দিকে তাকাতেই তারা দেখল একটি গোলাকার বিশাল ধাতব বস্তু চক্রাকারে নেমে আসছে এবং তার থেকে এক অদ্ভুত নীলচে আলোক রশ্মি নির্গত হচ্ছে। সাথে সাথেই বইতে শুরু করে প্রবল হাওয়া। সুবীর এবং রুমা স্থানুর মতো দূরে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে দেখল। নিজের চোখকে যেন তারা বিশ্বাস করতে পারছিলোনা। মাটিতে আস্তে আস্তে নেমে আসার পর  সেই ধাতব আকাশযানের একটি অংশ শাটার এর মতন সরে গেল। সেখান থেকে অদ্ভুত দর্শন ভিনগ্রহীরা নেমে এসে আকাশের চাঁদের দিকে হাত বাড়িয়ে তাকিয়ে কিছু বলতে লাগলো। সুবীর এবং রুমা দেখে কি করবে স্থির করতে পারল না। হতভম্ভ রুমা ছুটে গেল সেই ভিনগ্রহীদের যানের দিকে। পেছন পেছন সুবীরও ছুটল। এতক্ষণ যে কথা তারা বিশ্বাস করছিল না মুহূর্তেই সেই চিন্তা ভুলে নিজের একমাত্র মেয়ের সন্ধানে দুজনে  ছুটে গেল সেদিকে। দুজনেই কিছু না ভেবে উঠে পড়ল সেই স্পেসশিপে। ভিনগ্রহীরা সেই দৃশ্য দেখে দ্রুত  উঠে স্পেসশিপটির দরজা বন্ধ করে দিল। মুহুর্তের মধ্যে বিকট আওয়াজ করে সেই আকাশ যান উড়ে গেল দূর কোন অজানা গ্রহের উদ্দেশ্যে। একটু পরে সেই নীল আলো আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেল মহাশূন্যের অন্তরালে।   তেপান্তরের মাঠে অশ্রুসজল চোখে নির্বাক দর্শকের মত দাঁড়িয়ে রইল নবীন ।

পশ্চিমবঙ্গে বন্ধন ব্যাংকে প্রচুর কর্মী নিয়োগ || WB Bandhan Bank Recruitment 2022 || Bandhan Bank Job Vacancy 2022


 



##রাজ্য জুড়ে বন্ধন ব্যাংকে প্রচুর কর্মী নিয়োগের হবে। বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। বেকার যুবক যুবতীদের জন্য এটা একটা বড় সুযোগ। তাছাড়া এখানে চাকরি পাওয়া সোজা। শুধু বায়োডাটা ও ডকুমেন্ট জমা মাধ্যমেই আপনার চাকরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। লিখিত পরীক্ষা দিতে হয় না এখানে। সরাসরি নিয়োগ হয়। বর্তমানে বন্ধন ব্যাংকে কর্মীর প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে। তাই নিয়োগ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেই এই ব্যাংকে চাকরির জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা, আবেদন পদ্ধতি বিস্তারিত তথ্য নীচে দেওয়া হল--




মোট শূন্য পদ - ৩০টি



কোন কোন পদে নিয়োগ হবে:


বিভিন্ন যোগ্যতায় বিভিন্ন পদ রয়েছে। পদ গুলি হল-

Operation And Office Staff.




শিক্ষাগত যোগ্যতা: অবশ্যই উচ্চমাধ্যমিক পাস বা গ্রাজুয়েশন পাস হতে হবে।


বয়স- বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।


বেতন - মাসিক ১৪,৫০০ থেকে ২১,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়া হবে।


কাজের ধরন: এটা একটি পার্মানেন্ট চাকরি। 




আবেদন পদ্ধতি: অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।


 

 

কীভাবে আবেদন করবেন :

Online- আপনি নিজেই মোবাইল এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আপনি কেবলমাত্র ফোন করেও আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি ইমেলের মাধ্যমেও আবেদন করতে পারবেন। ইমেইল এ আপনার বায়োডাটা পাঠিয়েও আবেদন করতে পারবেন।


যে নম্বরে আপনি যোগাযোগ করবেন তা হলো-


৯৮৩১৪২০৮৭৫


এছাড়া যে ইমেল আইডিতে আপনি বায়োডাটা পাঠাবেন তা হলো-



bandhanbankdepatment@gmail.com




গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট-


এই চাকরিতে আবেদনের জন্য যে নথিপত্রগুলির প্রয়োজন সেগুলি হলো-


১) শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র

২)বয়সের প্রমাণপত্র 

৩)নিজের সাক্ষর

৪)বাসস্থানের প্রমাণপত্র

৫)পরিচয়পত্র (আঁধার কার্ড, ভোটার কার্ড)

৬) কাস্ট সার্টিফিকেট (যদি থাকে)

৭) পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র (যদি থাকে)


এছাড়া যদি আরও কিছু জানতে চান আপনাকে অফিসিয়াল নোটিশটি ডাউনলোড (Download) করতে হবে। অফিসিয়াল নোটিশ ডাউনলোডের লিঙ্ক নিম্নে সবার শেষে দেওয়া আছে।




নিয়োগ পদ্ধতি: নিয়োগ করা হবে বায়োটাডেটার উপর ভিত্তি করে । কোনরকমের লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই কেবলমাত্র ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে। আপনি যদি ইন্টারভিউয়ে সিলেক্ট হন তাহলে আপনাকে সরাসরি ট্রেনিংয়ের জন্য ডাকা হবে। 

 ট্রেনিংয়ের চান্স পাওয়া মানে কনফার্ম চাকরি পাওয়া। ট্রেনিং শেষে আপনাকে সরাসরি জয়েনিং করানো হবে। 





আবেদন মূল্য: সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আবেদন করুন



OFFICIALWEBSITE: 

Click here 🔴



________________________________________


চাকরি সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন




Telegram group-


https://t.me/Jobnewsgovtandpraivate




Whatsapp group-



https://chat.whatsapp.com/FOyQc45Ny1A7acqIc9mKdl

Tuesday, October 11, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -22


 

এবার ভয় আর নেই। সাহস নিয়ে কথা বলতে শিখেছি। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মতো ক্ষমতা অর্জন করেছি। ভয় আর কাউকেই করি না, করবো না। প্রয়োজন হলে ওর হাতেই মরবো তবু অন্যায়কে আর প্রশ্রয় দেবো না। শ্যামলীদির কাছে গিয়ে দেবীবাবুর কথা বললাম। তার আসার সময় হয়ে গেছে। যদি আমরা উভয়েই যেতাম তাহলে ভালো হতো না কি? কারণ যদি বাবুগুন্ডা মাথানাড়া দিয়ে উঠে ও শ্যামলীদিকে একা পেয়ে কিছু করে বসে।


 শ্যামলীদি আমার কথা কেড়ে নিয়ে বলল, কোন ভয় নেই পদ্মা, আমি মরিয়া হয়ে গেছি। কিছু ঘটবার পূর্বে কোন কান্ড না করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ব না। তুই তৈরী হয়ে নে, দেবীবাবু হয়তো এসে পড়ল। সত্যিই দেবীবাবুর ট্যাক্সির আওয়াজ পেলাম।

 ট্যাক্সি হতে নেমে ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে কাছে দাঁড়ালো। মুখখানি দেখে তাকে চিন্তাকূল মনে হল। আমি বসার জায়গায় গিয়ে নম্র কণ্ঠে বললাম, আপনাকে ভীষণ চিন্তিত মনে হচ্ছে ?

 দেবীবাবু ধীর কণ্ঠে বললেন, ভাবছি আপনাদের কথা। গত রাত্রের ঘটনা শুনলাম। 
দেবীবাবুর কথা শুনে হাসিমুখে বললাম, ও এই কথা? তাছাড়া আমাদের নিয়ে চিন্তা করেই বা কি করবেন? মনকে ভারাক্রান্ত করা ছাড়া করার কিছু নেই। আমার ডিউটি ফুরিয়ে গেলে আমাকে তো বিদায় নিতে হবে। আমাদের কি মনে রাখবেন?

দেবীবাবু নীরব থাকলেন। জানি না তিনি আমাদের দুঃখে কতখানি কাতর হয়েছেন। বিলম্ব না করে তার সাথে নার্সিংহোমে উপস্থিত হলাম।

ময়না আমাকে দেখে কেঁদে উঠল। বলল, মা তুমি এতো দেরী করলে কেন? তোমার জন্য মন আমার একেবারে ভালো লাগে না। ওকে বুকে চেপে বললাম, আমার উপর রাগ করিস না মা। বাড়ীর কাজ সারতে অনেক দেরী হয়ে গেল।

ময়না আবদারের গলায় বলল, তোমার সাথে আমি বাড়ি যাবো মামনি। অবোধ শিশুকে কি বলে যে প্রবোধ দেবো তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তবুও বেদনা ভরাক্রান্ত হৃদয়ে চোখের জলকে কোন রকমে আটক করে বললাম, এখানে আর আর রাখবো না মা। দিন কয়েক পরেই তোকে বাড়ীতে নিয়ে যাবো।

কোলে নিয়ে তাকে আদর করছি, এমন সময় ডাঃ দাস এসে বললেন, মিসেস রায় আপনার মেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ। আশা করছি দিন কয়েক পরে ছুটি দিতে পারবো।

বুকটা আমার কেঁপে উঠল ডাক্তারবাবুর ডাক শুনে। তবে কি দেবীবাবু - না, না এ হতে পারে না, এ কোনদিনই সম্ভব নয়। ময়নার সাথে শুধু অভিনয় করছি, ছলনা। করছি। কেন আমি ময়নার মা হতে যাবো? বামন হয়ে চাঁদে হাত! তবুও বুকটা কেমন যেন টনটন করে উঠল। বুকের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে এক জায়গায় চুপ করে বসে থাকলাম। আপনা আপনি চোখ দুটো জলে ভরে গেলো।

কোন প্রকারে সামলে নিয়ে ময়নার কণ্ঠস্বরে, মা তুমি কাঁদছো ? তৎক্ষণাৎ চোখের জল মুছে বললাম, নারে কাঁদবো কেন? আরো গভীর আবেগে তাকে জড়িয়ে ধরলাম। একটু পরে দেবীবাবু এসে হাজির হলেন।

ময়নার ঠোটে ঠোট লাগিয়ে চুমু খেলাম। দেবীবাবু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললেন, এবার ওকে কোল হতে নামিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিন, হয়তো ডাক্তারবাবু এসে পড়বেন। যাও মামণি, তোমার বিছানায় শুয়ে পড়গে। মায়ের কোলে আর কতক্ষণ থাকবে?

দেবীবাবুর গম্ভীর মুখ দেখে আমর কেমন যেন সন্দেহ হল। হয়তো ময়নার চুমু খাওয়া পছন্দ করেননি। তবে কি দেবীবাবু আমাকে ঘৃণার চক্ষে দেখেন? আমাকে কি অবজ্ঞা করেন? তৎক্ষণাৎ মনের মধ্যে নিজের সত্ত্বাকে খুঁজে বের করবার চেষ্টা করলাম।

ময়নাকে চুমু খাওয়া আমার উচিত হয়নি। সে অধিকার আমার নেই। ওটা অনধিকার হস্তক্ষেপ। দেবীবাবু কেন মেনে নেবেন সেটা? তার কাছে আমি তার মানসিক রোগগ্রস্থ মেয়ের রোগ উপশমের জন্য মায়ের অভিনয় করার জন্য এসেছি। তিনি যা বলবেন সে মত করতে হবে। ময়নার সাথে তার মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করায় চুক্তিবদ্ধ আমি। তাহলে কেন ওর প্রতি আমার মায়ার টান! ময়নার যে মা নই, তা ভালোভাবেই জানি। দেবীবা একজন সম্ভ্রান্ত বংশের ব্যাক্তি, তার আভিজাত্যপূর্ণ জীবনের সঙ্গে আমারপতিতাবৃত্তির জীবনের কোন সাদৃশ্য নেই। অন্তরের সুপ্ত কামনা বাসনাকে প্রকাশ না করে ময়নাকে বিছানায় শুইয়ে বাইরে এলাম। ময়নার ছল ছল চোখ আমার অন্তরের মাতৃত্বকে এক মুহুর্তের জন্য জাগিয়ে দিল।

 নিরালায় এসে চোখের জলে ভাসতে থাকলাম। বার বার অতীতের স্মৃতিচারণ করতে লাগলাম। কখন যে দেবীবাবু আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন আমার খেয়াল ছিল না। তিনি আমার পিঠে হাত রেখে বললেন, ময়নার কাছ হতে যে চলে এলেন?

 দেবীবাবু কোনদিন আমার দেহ স্পর্শ করেননি। কেন তিনি আমার পিঠে হাত রাখলেন! তবে কি আমার উষর মরুময় রুক্ষ জীবনে শ্যামল মরূদ্যান হয়ে দেবীবাবু আমার জীবনকে শ্যাম-সমারোহে ভরিয়ে তুলবেন? এ কি আমার স্বপ্ন! এ কি আমর অলীক কল্পনা! কখনও কি আমার এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপায়িত হবে না। মরা গাঙে জোয়ারের প্লাবন কি আসবে না। শীতের ঝরাপাতা গুলোর স্থানে আমার মনতরু কি বাসন্তী পরিবেশে সুশোভিত হবে না। না-না, এ আমার ভুল ধারণা। কেন যে আমার মনে এরকম এলোমেলো কথা আসে বুঝি না।

 কোন প্রকারে চোখের জল মুছে বললাম – আমাকে বাড়ীতে পৌঁছে দেবেন? দেবীবাবু ব্যথিত স্বরে বললেন, আমার উপর রাগ করলেন বুঝি? ম্লান হেসে বললাম, রাগ করব কেন? তাছাড়া অভিমান করে কি লাভ ? আমি বক্তী যাবো।

 নিশ্চয় যাবেন। আপনাকে কোনদিনই তো জোর করে আটকে রাখিনি। আপনার সাথে আমার যেরূপ কথা, আপনি সেইরূপ কাজ করবেন। তবে আমার অনুরোধ, বিকেলে আসতে ভুলবেন না। কারণ আনতে যাবার সময় হবে না, বিশেষ কাজে বাইরে যাবো।

 দেবীবাবুকে কথা দিয়ে ওর সাথেই বস্তীতে উপস্থিত হয় শ্যামলীদির মুখের দিকে তাকিয়ে একটুখানি যে অবাক হলাম না তা নয়। সে তার চোখ দুটোকে জবাফুলের মতো লাল টকটকে করেছে। মনে হলো কারো সঙ্গে যেন ঝগড়া করেছে।

 ধীরে ধীরে কাছে এসে জিজ্ঞেস করলাম, আজ আবার কার সাথে ঝগড়া করলে দিদি ?

 আমার আদরি মাসীর সাথে। তাছাড়া আর কার সাথে ঝগড়া করবো? এখানে আমার শাশুড়ীও নেই, ননদও নেই, সতীনও নেই যে ওদের সাথে ঝগড়া করবো। আদরী মাসী আমাকে জ্ঞান দিতে এসেছিলো। তা থাক, হ্যাঁরে পদ্মা, বাঁ চোখটা নাচছে কেন বল তো? শুনেছি, বাঁ চোখ নাচলে কিছু পাবার আশা থাকে।

 আমাদের পাওনা তো পেয়ে গেছি শ্যামলীদি, নতুন করে আবার কি পাবো ? সহসা বিদ্যুৎ বেগে একটা দশ বারো বছরের ছেলে আমাদের কাছে এসে দাঁড়ালো।

ওর হাতে একটা কাগজের টুকরো। শ্যামলীদির দিকে বাড়িয়ে দিতে শ্যামলীদি হোঁ মেরে কাগজটা হাতে নিয়ে দেখলো ওটা পত্র। শিবাজীদা পত্রটা লিখেছে হিন্দীতে লেখা। পত্রের সারাংশ হলো আজ সকালে আমাদের হিতৈষী বন্ধুকে পূর্ব নির্দিষ্ট ঠিকানায় আটক রেখেছে। আমরা আজ সন্ধ্যায় অর্থাৎ সাড়ে সাতটার মধ্যে যেন হাজির হয়ে যাই।

 সেই ঠিকানায় যাবার নক্সা করে দিয়েছে। শ্যামলীদির মুখটা ক্রমশঃ খুশীতে ভরে উঠল। এক সময় আমাকে জাপটে ধরে বলল, এবার আমার আশা পূর্ণ হবে পদ্মা। আজকে আমার আসল রূপ দেখবি। দীর্ঘদিন প্রতীক্ষার পর আমার দীর্ঘদিনের পাথরচাপা বেদনাকে হৃদয় থেকে মুক্তি দিতে পারব।

 সে ভেতরে প্রবেশ করে তার লুকিয়ে রাখা বেতের চাবুকটা বের করে তৈল নিষিক্ত করে আমাকে বলল-আজ রাতে একে ব্যবহার করতে হবে, অনেকদিন পর একে কাজে লাগাবো। বুঝতে পারলাম ওটা কার পিঠে বসবে। মনটা একটু আনন্দে দুলে উঠল, একারণে অনেক দিন পর আমার উপকারী বন্ধু রন্টুদাকে দেখবো বলে। সে কি উপকারই না করেছে আমার!

 অতীতের স্মৃতির পাতা যখন উল্টে চলেছি, তখনই আদরি মাসীর কণ্ঠস্বরে কল্পনার রাজ্য থেকে রূঢ় বাস্তবে ফিরে এলাম। আবার এসেছে বুড়ি! লজ্জাও নেই তার!

 শ্যামলীদিকে বলল, আজকের মতো কথা রাখিস মা। ভম্বলবাবু আমার পুরানো মক্কেল, তোকে ভীষণ পছন্দ করে। আমাকে বার বার বলে গেছে যদি তোকে না পেয়ে থাকে তাহলে আমার অনেক ক্ষতি হবে। তোর হাতে ধরে বলছি আমার মুখ রাখিস মা।

 শ্যামলীদি মুখ গম্ভীর করে বলল, আজ আর কারো বাপের হিম্মৎ নেই যে আমার পথে কাঁটা ফেলবে। আর কেউ যদি সে চেষ্টা করে, তাহলে সে যোগ্য জবাব পাবে। সন্ধ্যায় আমাকে বেরুতেই হবে। তাই সাত ঘন্টা আগে বলে রাখছি, যদি কেউ কোন রকম প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে তাহলে তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবো। আদরী মাসী ভয়ে পিছিয়ে গেলো।

Monday, October 10, 2022

রাজ্য সরকারের হাউস ফাদার এবং হাউস কিপার পদে নিয়োগ, প্রতিটি জেলা থেকেই আবেদন করতে পারবেন || bankura.gov.in || WB govt House father and House keeper post Recruitment 2022 || House Father and Housekeeper Recruitment in Bankura


 



রাজ্য সরকারের নতুন নিয়োগ। সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলার ডিস্ট্রিক্ট চাইল্ড প্রটেকশন ইউনিটের তরফ থেকে হাউস ফাদার এবং হাউস কিপার পদে কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে।
বাঁকুড়া জেলাতে নিয়োগটি হলেও এই চাকরির জন্য পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলার চাকরি প্রার্থীরাই আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
প্রথমেই বলে রাখি এটা শুধু মাত্র পুরুষরাই আবেদন করার সুযোগ পাবেন। এটা একটি চুক্তি ভিত্তিক পোস্ট। আবেদন করার সুযোগ পাবেন শুধু মাত্র অনলাইন এ।
কিভাবে আবেদন করতে পারবেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা আপনার কি লাগবে, আপনার বয়স সীমা কত লাগবে, আপনি বেতন কত পাবেন, মোট শূন্য পদ কতগুলো, নিয়োগ পদ্ধতি টি কি কিভাবে হবে ইত্যাদি সমস্ত কিছুর আলোচনা নীচে করা হল।




নোটিশ নম্বরঃ 537/DCPS/BNK

নোটিশ প্রকাশের তারিখঃ 20.09.2022


আবেদনের মাধ্যমঃ শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।


নিয়োগের তথ্য (Post Details)-
(1) পদের নামঃ হাউস ফাদার (House Father) 

বেতনঃ  প্রতিমাসে 12,100 টাকা।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ  উচ্চ মাধ্যমিক বা তার সমতুল্য কোন পরীক্ষা পাশ করতে হবে। এছাড়াও কমপক্ষে 3 বছরের জন্য এই কাজের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক।


বয়সসীমাঃ বয়স 21 থেকে 40 বছরের মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয়।   SC/ST/OBC প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন। 

মোট শূন্যপদঃ 1 টি।


(2) পদের নামঃ হাউস কিপার (Housekeeper) 

বেতনঃ  প্রতিমাসে 12,000 টাকা ।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ  মাধ্যমিক বা তার সমতুল্য কোন পরীক্ষা পাশ করতে হবে।

বয়সসীমাঃ  বয়স 18 থেকে 40 বছরের হওয়া বাঞ্ছনীয়। SC/ST/OBC প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন। 

মোট শূন্যপদঃ 1 টি।


নিয়োগ পদ্ধতিঃ
প্রার্থীদের নিম্নলিখিত পর্যায়ে নিয়োগ করা হবে।

লিখিত পরীক্ষা– 80 Marks
ইন্টারভিউ– 20 Marks

লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসঃ
English – 20 Marks
GK & Current Affairs – 30 Marks 
Math & Reasoning – 30 Marks

আবেদন পদ্ধতিঃ
সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। নিচে দেওয়া অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (bankura.gov.in) থেকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

#সর্ব প্রথমে নিজের নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে সঠিক ভাবে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।

রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হলে আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে।

লগইন হয়ে যাওয়ার পর সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সঠিক ভাবে আবেদন পত্রটিকে পূরণ করতে হবে।

আবেদনপত্র পূরণ করা হয়ে গেলে সমস্ত দরকারি নথিপত্রগুলি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।

আবেদন করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপলোড করা ফটো JPEG ফরম্যাটে  হবে এবং এর সাইজ 30 Kb মধ্য হতে হবে। সিগনেচারের সাইজ 10 Kb মধ্যে হতে হবে।


যে সমস্ত দরকারি ডকুমেন্ট স্ক্যান করতে হবেঃ
১)দুই কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
২)বয়সের প্রমাণপত্র।
৩)শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।
৪)সিগনেচার।
৫)কাস্ট সার্টিফিকেট (যদি থাকে)

গুরুত্বপূর্ণ তারিখ (Important Dates)-
নোটিশ প্রকাশ - 20.09.2022
আবেদন শুরু  - 28.09.2022
আবেদন শেষ - 21.10.2022




Important Links:  👇👇

Official Website-

Official notice-

Apply Now-



_________________________________________________

চাকরি সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন



Telegram group-






Whatsapp group-



Sunday, October 9, 2022

ছোট গল্প - সময় || লেখক - তপন তরফদার || Short story - Somoy || Written by Topan Torafdar

 




  সময়

                তপন তরফদার 

 


                 এক এক সময়ে মনে হয় এই দমবন্ধ সময়ের শেষ হবে না। আসলে মনের উপর এতো চাপ পরে সময়ের হিসাব রাখতে পারেনা। একজন পোয়াতি তার সন্তানকে পৃথিবীতে আনার সময় তাকে কষ্ট সহ্য করতে হবে জেনেও ভাবি মায়ের মনে হয় সময় শেষ হচ্ছে না। বাড়ির সবাই উদ্বিগ্ন। ভাবী পিতার মুখ পলে পলে শুকাতে থাকে। যেন চুরির দায়ে ধরা পড়েছে। পরিস্থিতি কয়েক মুহূর্তে বদল হয়ে বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দে ভেসে যায় বসন্ত যখন বাড়িতে নতুন অতিথি আসার আওয়াজ আঁতুরঘর থেকে ভেসে আসে। গোয়ালঘর থেকে বসন্ত লাফিয়ে কাদাখোঁচা উঠানে নেমে আঁতুরঘরের বন্ধ দরজার দিকে মুখ করে দাইমা ক্ষণদার উদ্দেশ্যে বলে কী হয়েছে? ক্ষণদা এক সোহাগ মেশানো রসালো গলায় বলে - রসগোল্লা আনা, আমার জন্য গরদের শাড়ি নিয়ে আয় - তোর ছেলে হয়েছে।

                বসন্ত , যে বেশ কিছু সময় ধরে চোরের মতো গুটিসুটি মেরে বসে ছিল। খবর শোনার মুহূর্তেই বসন্তর বুকের ছাতি দীর্ঘ হয়ে যায়। মুখে লটারি পাওয়ার হাসি। ছেলে হয়েছে। সাত রাজার ধন এক মানিক।

                বলরামপুরের পঞ্চায়েত অফিস, সরযু বালা বিদ্যালয়ে যাওয়ার তেমাথা রাস্তার প্রথম বাড়িটা বসন্তদের। বসন্তদের ভিটে দুটো রাস্তা পেয়েছে। বসন্তর পিছনে হেমন্তর ভিটে। দূর সম্পর্কের আত্মীয়তার সূত্র ধরে এই দুই তেলি পরিবার এক হয়েই থাকে। কয়েক বছর আগে বসন্তর ও হেমন্তের বাবা এক সময়ে একই সঙ্গে গঙ্গাসাগরে নৌকা ডুবিতে মারা গেছে। বসন্ত, হেমন্তর বিয়ে প্রায় একই সময় হলেও হেমন্তের দুই ছেলে এক মেয়ে হয়ে গেছে। এতটা সময় পেরিয়ে গেলেও বসন্তর কোনো ছেলেপিলে হয়নি। গ্রামে রটেগেছে বসন্তের বউ উষা বাঁজা। উষার সময় কাটেনা। সবসময় বিমর্ষ হয়ে থাকে। হেমন্তর বউ সন্ধ্যা মনে মনে খুব খুশি ছিল - ওদের কোন বাচ্চাকাচ্চা না হলে - ওই ভিটেটার স্বত্ব হেমন্তর ছেলেরাই ভোগ করবে।

        বড় রাস্তার ধারে স্কুলে, পঞ্চায়েত অফিসে ঢোকার রাস্তা। রাস্তা ঢালাই হয়ে গেলেই লোক চলাচল বেড়ে যাবে। শোনা যাচ্ছে কিছু দিনের মধ্যেই সরযু বালা স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক হয়ে যাবে। পঞ্চায়েত অফিসের পাশে ব্যাঙ্ক খোলা হবে। ওই তেমাথায় জমিতে যদি ‘মনিহারি স্টোর্স’ খোলা যায়, ভালই জমে যাবে। এ টু জেড সব পাওয়া যাবে। সব আশায় ছাই ফেলে দিল নবজাতক। সন্ধ্যা, হেমন্তকে বলে – চিন্তা করোনা। কাক-পক্ষীয়ও টের পাবে না-ঠিক সময়ে আমি সব ঠিক করে দেবো।

                    বসন্ত ছেলের নাম রাখলো অনন্ত। অন্ন প্রাশনের দিন সন্ধ্যা কোমর বেঁধে রান্না করে দিল। অনন্তর মুখে ঠুসে দিল পঞ্চব্যাঞ্জন। অন্ন প্রাশনেই প্রথম অন্ন পেটে যায়। সারা জীবন যেন অন্ন পায়। বাচ্চাকে পেট পুরে খাওয়াতে হয়। অনন্ত বিকালেই কেমন নেতিয়ে পড়ল। ওরা গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার যামিনীর কাছে নিয়ে যায়। যামিনী ডাক্তার মনে করে সমস্ত রোগের উৎস পেট। পেট যদি পরিস্কার থাকে - বিশেষ করে বাচ্চাদের স্ফূর্তি ভালই থাকবে। যামিনী ডাক্তার অনন্তর পেট-সাফার ওষুধ দিয়ে দেয়। বেশ কয়েকবার বাহ্ন্যি করার পর শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ল অনন্ত। ঘুম থেকে উঠে বাচ্চা হাসিখুশি, হাত-পা ছুঁড়তে লাগলো। হাসি শুনতে পেয় হেমন্ত সন্ধ্যাকে বলল - কি গো, সবতো ঠিকই আছে। সন্ধ্যা বলে – মনে হয় ধুতরোটা কম পরেছিল।

               অনন্ত ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল। স্কুলের পিওন নিশীথের বউ, মেয়ে প্রভাতী সময় পেলেই অনন্তর সাথে গল্প করতে আসে। প্রভাতী-অনন্ত খেলনাপাতি খেলে। অনন্ত হয় বর, প্রভাতী হয় বউ। প্রভাতী পাকা গিন্নির মতো বলে - তুমি চান করে এসো, আমার ভাত রান্না হয়ে গেছে – তোমাকে খেতে দেবো।

              অনন্তের দশ বছরের জন্মদিন খুব ঘটা করে পালন না করলেও কাছের কয়েক জনকে নেমন্তন্ন করা হয়েছে। সন্ধ্যা পায়েস এনেছে অনন্তর জন্য। এখন অনন্তকে হাতে করে খাওয়াতে হয়না। লাউ-চিংড়ি খেয়ে উঃ আঃ করছে অনন্ত।উষা মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলে - লঙ্কা খেয়ে ফেলেছিস, পায়েস মুখে দে। ঝাল কমে যাবে। অনন্ত সন্ধ্যার আনা পায়েস মুখে দেয়। জিভে কেমন যেন ঠেকে। কিছু বলে না - হয়ত ঝালের জন্য পায়েসটার স্বাদ এমন তিতকুটে লাগছে।

                     বিকাল থেকেই পেটে অসহ্য যন্ত্রণা - বমি করতে যায় অথচ বমি হয় না। যন্ত্রণায় কাটা ছাগলের মতো ছটফট করতে থাকে অনন্ত। যামিনী ডাক্তার এবারও পেট পরিষ্কারের ওষুধই দিল - কিন্তু কোন কাজ হল না। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলার মতো নিল রঙের থুথু বেরাতে থাকে। ডাক্তার বমির ধরন দেখেই বলে এখুনি একে বড় হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। আমি ভাল বুঝছি না। বেশ কিছু সময় ধরে যমে মানুষে টানাটানি। মানুষ জিতে গেল। বেঁচে গেল অনন্ত কিন্তু বাঁদিকের হাত পা কেমন বেঁকে গেছে। বাঁদিকের ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে লালা পরে। কথা বলতে গেলে চোখে মুখে অসহ্য যন্ত্রণার ছবি ফুটে ওঠে। সন্ধ্যা আপশোষ করে বলে - কলকের বিষ মেরে ফেলতে পারল না। বসন্ত একেবারে ভেঙে পড়ল। ভেবে কুল কিনারা পায়না বসন্ত – সুস্থ ছেলেটার এ কি হল? তাপ দেওয়া তাসার মত গুমগুম করে বেজে যায় মন। বেশ কিছু বছর পরেও বসন্ত মনে করে নিশ্চয় কোন পাপ করেছিল - তাই এই সাজা। সব কিছু ভুলে থাকার জন্য আদিবাসী পাড়ায় যাতায়াত শুরু করল। এখন আদিবাসীদের ডেরায় হাঁড়িয়ার সঙ্গে চোলাই ও চালু হয়ে গেছে। হেমন্তও লুকিয়ে লুকিয়ে ধেনোমদের বোতল কে এনে দেয়। সজনে ফুলের এক বিশেষ গন্ধ থাকে, যারা জানে তাদের নাকে ধাক্কা মারে। এই ধেনোর এক বিশেষ মহিমা আছে যা ছড়িয়ে পরে দাবানলের মতো - সবাই জেনে যায় বসন্ত “নেশা করে”। হেমন্তর এনে দেওয়া ধেনো খেয়ে বসন্তর বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়। ওরও মুখ দিয়ে ফেনা বেরোতে থাকে। বুক চেপে শুয়ে পড়তেই উষা তালপাতার হাতপাখা দিয়ে হাওয়া করতে থাকে। এই সময়ে এই হাওয়া কোন কাজে লাগেনা। অকালেই উবে যায়। ওদিকে পিওন নিশীথ মারা গেল। যামিনী ডাক্তার রোগটা যে ‘ডেঙ্গু’, ধরতেই পারেনি। প্রভাতীর মা রাত্রি, স্কুল সীমানায় এক প্রান্তে নির্জন ডোবার ধারে বাঁশ বাগানের পাশে টিনের চালার মাটির ঘরে যেখানে থাকে, সেখানে রাতের অন্ধকারে দরজায় টোকা পড়তে লাগল। রাত হলেই মা-মেয়ে দুজনেই সিঁটিয়ে থাকে, বুঝতে পারে ওরা গ্রামেরই পঞ্চায়েতের লোক।

               ওদিকে হেমন্ত - উষা নিজেদের আকাঙ্খা পূরণ করতে কোন সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না। উষাকে পাখি পড়ানোর মতো সব সময় বলতে তাকে ছেলের চিকিৎসার জন্য, তোমাদের সংসার চালানোর জন্য ভিটেটা বিক্রি করে দিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাও। মামার বাড়িতে ন্যালাখ্যাপা ছেলে অনেক সাহায্য পাবে।

 

            উষা নিজের শ্বশুর বাড়ির ভিটে ছেড়ে যেতে রাজি নয়। হেমন্তরা বুঝতে পারে, চালটা ঠিক ধোপে টিকল না। হাল ছাড়ার পাত্র নয় হেমন্তরা। কিছুদিন বাদে বলে - বউদি তোমরা তো মাত্র দুজন, এতবড় জায়গা নিয়ে কি করবে। তোমার ছেলেকে দিয়ে তো কিছু হবেনা। আমি তোমাকে ভিটের এক দিকে ঘর করে দেবো। জমির জন্য টাকাও দেব। উষা বুঝতে পারে বাঘের থাবার সামনে পড়েছে। দুর্বলের সাহায্যের জন্য এই সময়ে কেউ এগিয়ে আসেনা। এখন রাজনীতির ঝান্ডা না ধরলে বাঁচা যাবে না। হেমন্ত পঞ্চায়েতের দলের লোক হয়ে গেছে। উষা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। সে অসহায়, ফুলের মতো ফুটে আছে। সবাই তাকে দখল করতে তৎপর। মুখ নীচু করে বলে - ঠাকুরপো তুমি যা ভাল বোঝো করো।

 

        নিশীথ নিজে ভাল লেখাপড়া করার সুযোগ পায়নি। মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চেয়েছিল। মেয়েরা নতুন কিছু সাহসী কাজ, প্রতিভার জোরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার খবর মেয়েকে দিত। উৎসাহ দিয়ে বলতো - জানিসতো মা, এক মেয়ে এভারেস্ট জয় করেছে। প্রভাতী বলে, জানি অনেক মেয়েই পাহাড়ে উঠেছে। নিশীথ বলে, ওর নাম অরুণিমা সিনহা এক পায়ে ভর করে উঠেছে।মনে রাখিস প্রভাতী মনের জোরই আসল জোর।

 

          ছিপছিপে শ্যামাঙ্গী প্রতিমার মতো মুখ ও চুল প্রভাতীর তার শরীরে ক্লান্তি নেই, চনমনে চিতল হরিণী। গাঁইয়া মুখ হলেও মুখে বালি সরানো ফলগু নদীর মতো লাবণ্য। বুদ্ধিতে খনার থেকে কিছু কম নয়। প্রভাতী চায় প্রথমেই স্কুলের জায়গাটা ছাড়তে। ঝুপসি গাব, মহানীম গাছের মাঝে ফাঁকা জমিতে রাতের অন্ধকারে ভুতের নাচের আসর বসে - ওরাই রাত্রে দরজায় আওয়াজ তোলে। রুখে দাঁড়ালে বাঁশ ঝাড়ের ভিতরে পালায়। এইভাবে আর কতদিন। যদি ওরা রাতে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে পরে। মাথা ঘুরতে থাকে বিষয়টি মনে আসলেই।

                অনন্তর বাড়িতে যায় প্রভাতী ওদের খোঁজখবর নিতে। সুখ-দুঃখের গল্প করতে। উষাকে আশ্বাস দেয় - চিন্তা করবেন না মাসিমা, ভাল হয়ে যাবে। উষার মুখে শুকনো হাসি। সে দিনের সূর্য অনন্তদের বট গাছের পাতায় শেষ আলোর চুম্বন দিয়ে বিদায় নিচ্ছে। এই সময়েই হেমন্ত এসে বলে - বৌদি তোমাদের দলিলটা দাও। কালই রেজিষ্ট্রি করব, তোমাকে নিয়ে যাব - ওখানেই সব টাকা দিয়ে দেবো। বলে ওঠে - না “মা” – আপনি দলিল দেবেন না। আমার শ্বশুর বাড়ির ভিটে আমরাই রক্ষা করব।

           হেমন্ত রেগে গিয়ে বলে - সেদিনের ছুঁড়ি, আমার সাথে রসিকতা হচ্ছে। প্রভাতীর পাথরে খোদাই করা চোখ মুখ আরো দৃঢ় করে বলে - আমরা সবাই এক হয়েই সবাইকে বাঁচতে সাহস জোগাবো। আমার বাবা মারা গেছে – ওই শকুনরা আমাদের ছিঁড়ে খাবে। অসহায় বিধবার ভিটে হায়নারা খাবে, তা হবেনা।আমি অনন্তকে বিয়ে করে সব সামলে নেব। অনন্তকে নিয়ে সিধে প্রভাতী কালীতলায় চলে আসে। পূজারীর কাছ থেকে সিঁদুর চেয়ে নিয়ে অনন্তকে বলে পড়িয়ে দিতে। অনন্তর চোখে মুখে যুদ্ধ জয়ের ছবি। একটুও হাত কাঁপে না। বুদ্ধপূর্ণিমার আলো, সমগ্র জগতকে মোহময়ী করে তুলেছে। প্রভাতী অনন্তকে নিয়ে ঘরে ঢুকে খিল তুলে দিয়ে গাইতে থাকে - ও রজনীগন্ধা তোমার ..........। বেচারা, সন্ধ্যারা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। দুই বিধবা পরস্পরের হাত ধরে শরীরের ইশারায়

বুঝিয়ে দেয় প্রভাতী তাদের জীবনে নতুন প্রভাতের আলর দিশা দেখাবে।

ছোট গল্প - অশিক্ষক || লেখক - সন্দীপ কুমার পণ্ডা || Short story - Osikhokh || Written by Sandip Kumar panda


 


অশিক্ষক

  সন্দীপ কুমার পণ্ডা



          আজ সরস্বতী পূজা তাই রোহনের মন আবেগে, আনন্দে,উৎসাহে  সজনে ফুলের মতো দোলা খাচ্ছে , সকাল - সকাল  উঠে মুখে ব্রাস নিয়ে বাথরুমে চলে গেল সেখানে থেকে বেরিয়ে এসে মোবাইল খুলে দেখতে পেল হোয়াটসঅ্যাপে স্কুলের বন্ধুরা মেসেজ করেছে স্কুল যাবার জন্য সে রিনার বাদে সবার রিপ্লাই দিল ।রিনার রিপ্লাই না দিবার কারণ রিনাকে রাগিয়ে দেওয়া,তাকে রাগিয়ে দিলে অসম্ভব সুন্দর লাগে তার চেয়েও সুন্দর লাগে তার অভিমানের সুরে কথা গুলো।মনের মধ্যে মিটি মিটি হেসে ভাবল একবার কল করবে কিন্তু পরমুহুর্তেই মনে হল আর একটু রাগানো ভালো।তারপর ভাবতে লাগলো গতবছর এই দিনেই রিনাকে প্রথম দেখে রোহন আর প্রথম বার দেখেই চোখ সরাতে পারেনি রিনার সুন্দর  চোখের  চাহুনি ও হাসি দেখে মনে হয়েছিল স্বর্গ থেকে কোনো অপ্সরী নীচে নেমে এসেছে রিনারও একই অবস্থা দুজন দুজনকে দেখে স্থানু হয়ে গেয়েছিল। অল্প সময় পর রিনা লজ্জায় চোখ নামায় সেই থেকে ধীরে ধীরে আলাপ ও আলাপ থেকে বন্ধুত্ব সেই বন্ধুত্ব এক বৃষ্টির দিনে প্রেমে পরিণত হয়।তারপর অনেক দিন কেটে গেছে দুজনে দুজনকে চোখে চোখ রেখে ।পরস্পর পরস্পরকে হাতের ছোঁয়ায় রমাঞ্চ হত। এমনি করে বছরটা কেটে গেল। হঠাৎ মায়ের ডাকে তার সঙ্গা ফিরল-রোহন স্কুলে যাবি না আজ যে সরস্বতী পূজা। সঙ্গে সঙ্গে রোহন স্নানের জন্য বাথরুমে চলে গেল কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে নতুন পাঞ্জাবি সুগন্ধি সেন্ট,দামি হাতঘড়ি পরে বাবা বাইক নিয়ে স্কুলের দিকে বেরিয়ে পড়ল। সরস্বতী পূজা দিন বলে অনেক বলে - কয়ে বাবার কাছে বাইক নিয়ে যাবার অনুমতি পেয়েছে।এরপর সে সোজা স্কুলে বাইক রেখে হল ঘরে গিয়ে পুস্পাঅঞ্জলী দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যেন‌ রোহনের চোখ কাওকে খুঁজছিল হঠাৎ সে রিনাকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখতে পেল গতবছরের মতো এবারেও তাকে দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে হলুদ রঙের শাড়ি লাল ব্লাউজ চোখের কাজল সেইসঙ্গে ঠোঁটের  রক্তিম আভা‌ চারিদিকে ছড়িয়ে অপরূপ লাগছিল রিনাকে। এগিয়ে এসে অভিযোগ সহিত বলতে লাগল'এত দেরি হল আসতে?আমার মেজেসের রিপ্লাইও দাও নি কেন? মিটিমিটি হাসতে হাসতে শুনছিল রোহন।তারপর কয়েক ঘণ্টা বেশ হাসিখুশি ভাবেই পেরিয়ে গেল। হঠাৎ সবার ডাক পড়ল খাবার প্যান্ডেলে যাবার রোহন ও রিনা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল ওরা একসাথেই খাবে ।সবাই কুপন‌দেখিয়ে প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে লাগলো। রাজকীয় খাবারের আয়োজন তাই কুপনের ব্যবস্থা যাতে বহিরাগত কোনো ব্যাক্তি খাবারের স্বাদ অনুভব করতে না পারে।রোহন মনে মনে হাসল এমনিতেই  প্রচুর পরিমাণে খাবার বাড়তি পড়ে থাকে যেগুলো পরে কোথাও ফেলে দেওয়া হয় আর রাস্তার কুকুরগুলো খায় ওই সব খাবার দুই জন বা দশ জন খেলে কী যে মহাভারত অসুদ্ধ হয় তা রোহন বুঝতে পারেনা। হঠাৎ একটা গোলমাল শোনা গেল একজন লোক যার কুপন নেই সে প্রবেশ করতে যাচ্ছে কিন্ত একজন শিক্ষক তাকে বাধা দিয়েছেন। সেদিকে রোহনও গেল দেখতে পেল দাড়ি গোঁফে ভর্তি মুখ,পরনে একটা নোংরা ও ধুলোমাখা ধুঁতি একজন ৫৫-৬০বছর বয়স্ক লোক কাতরে বলে চলেছে'সার অনেক বেলা কুচু মুলে দি লাই।গরীব লোক আমি বাবু'আর কেঁদে চলেছে।ওদিকে ইংরেজি শিক্ষক ও অহংকারী মনের মানুষ তরুণ বাবু বলে উঠলেন খাবারের এমনি তেই সট্ তার উপর এক বেগার এসে উঠেছে।'দু -এক জন স্যারের বিরোধীতা করলেও কেও কিছু বলতে পারল না।আবার শিক্ষক মহাশয় বলতে লাগলেন 'এই চেহারার কোনো মানুষ বসলে ছেলেরা খেতে অরুচি বোধ করবে। ' এইসময় রোহন বলে উঠল 'স্যার একটা মাত্র লোক খেলে খাবারের অভাব হবে না তাছাড়া  উনি খেলে আমাদের কোনো অরুচি হবে না।' রোহনের কথার উত্তরে স্যার বললে 'একজনকে দিলে হাজার জন খাবার চাইবে আর খাবার সস্তা নাকি?'
____'এখন তো একজনই তো আছে তাছাড়া খাবার গুলো তো ড্রেনে ফেলে দেওয়া হয় আর রাস্তার কুকুরগুলো খায়।'
_____'তোমার যদি এতই দরদ তা তুমি তোমার কুপনটি দিয়ে দাও।একটি কুপন একটি মানুষ।বিনা কুপনে কেও খাবার পাবে না।'
_____'স্যার এম .এর .এ সাহেবের তো কোনো কুপন নেই তাহলে তিনি এসেছেন কেন?'
রিনাও যেন বলতে চায় এই সব ফালতু লোক নিয়ে মাথাব্যথা কীসের ? তারা পাশাপাশি বসে খাবার খাবে একটা উটকো লোককে নিয়ে স্যার দের সাথে ঝগড়া না করতে।
______'এম. এর. এ স্যারের সঙ্গে তুমি এই ইডিয়েট ,বেগার,নিগার  লোকটার কমপেয়ার (তুলনা)করছ। উনি একজন অতিথি।'
_______'না স্যার আমি আমি কুপনের কথা বলছি।'
______' তোমার কুপন যদি দিতে চাও তাহলে ও খাবার পাবে তাছাড়া নয় এটাই আমার ফাইনাল ডিসিসন।'
সঙ্গে সঙ্গে রোপনের নিজ কুপন ওই লোকটির হাতে দিতে গেল।'
কিন্তু লোকটি বলল 'ছোট বাবু তুমি কেন্ তোমার কুপন দিচ্চ আমি বুড়া মানুষ আর তুমি ছেলে ছোকরা এটাই তো তোমাদের সময়।'
 রিনাও চাইছিল না রহোন কুপনটা দিয়ে দিক কিন্তু রোহন বলে উঠল'আমি প্রতিদিন এই রকম খাবার খায় কিন্তু তুমি অনেকদিন না খেয়ে থাকো আমার একদিন এরকম খাবার না খেলেও চলবে। আর এই খাবার আমার মুখে উঠবে না যে খাবার রাস্তার কুকুর দিকে দেওয়া চলে এমএলএ, মন্ত্রী ,মিনিস্টার দেওয়া চলে শুধুমাত্র গরিব মানুষদের দেওয়া চলে না ।'
এই বলে রোহন বেরিয়ে এলো। তার চোখ জুড়ে এক প্রতিবাদের মেঘ।

Saturday, October 8, 2022

অষ্টম শ্রেনি পাশে ভারতের ডাক বিভাগে চাকরি || বেতন 19 হাজার 900 টাকা প্রতি মাসে || Indian Post Eight Pass Job 2022 || https://www.indiapost.gov.in/


 


ভারত সরকারের অন্তর্গত ডাক বিভাগ (Indian Post Department) এ আবার নতুন নিয়োগ। এখানে শুধু মাত্র অষ্টম শ্রেনি পাশ করলেই আবেদন করার সুযোগ পাবেন। ‌ভারতের সমস্ত নাগরিক অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের 

সমস্ত প্রার্থীই এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন না।

চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিষয়টি নীচে আলোচনা করা হল-



নোটিশ নম্বরঃ MSE/B-4/XI/2022



নোটিশ প্রকাশের তারিখঃ 19.09.2022


আবেদনের মাধ্যমঃ শুধু মাত্র অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।



নিয়োগ তথ্য -


কোন কোন পদে নিয়োগ?

#স্কিল্ড আর্টিসান্স (Skilled Artisans)



বেতন -

 প্রতিমাসে 19,900 থেকে 63,200 টাকা।


শিক্ষাগত যোগ্যতা -


অষ্টম শ্রেণী পাশ করতে হবে এবং আপনাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ট্রেডে এক বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকতে হবে। 



#এছাড়া যে প্রার্থী MV মেকানিক পদে আবেদন করতে চাইছেন তাদের অবশ্যই বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। 



বয়সসীমা-

 প্রার্থীর বয়স 18 থেকে 30 বছরের মধ্যে হতে হবে। এছাড়া SC, ST প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।



ট্রেড অনুযায়ী মোট শূন্যপদ-

M.V Mechanic – 2

M.V Electrician – 1

Painter – 1

Tyreman – 1




নিয়োগ পদ্ধতি - 

এখানে আপনাকে কম্পিটিটিভ ট্রেড টেস্ট দিতে হবে। তার প্রার্থী নির্বাচিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট ট্রেড অনুযায়ী এই টেস্ট টি নেওয়া হবে।




আবেদন পদ্ধতি -


(1) এখানে আপনাকে অফলাইন এ আবেদন করতে হবে।


(2) অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হলে প্রথমে অফিসিয়াল নোটিশ টি ডাউনলোড করতে হবে। সেখানে আবেদনের ফর্মটি পাবেন। সেটি প্রিন্ট করতে হবে। 


(3) এরপরে প্রিন্ট আউট করা ফর্মটি সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে এবং তার সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সেল্ফ অ্যাটেস্টেড করে যুক্ত করতে হবে।


(4) সবশেষে আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র গুলি একটি মুখবন্ধ খামে ভরে নিচের উল্লেখিত ঠিকানায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্পিড পোষ্ট অথবা রেজিস্টার্ড পোষ্টের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে হবে।



গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট-


1)রঙিন পাসপোর্ট সাইট ছবি।

2)বয়সের প্রমাণপত্র।

3)শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।

4)টেকনিক্যাল সার্টিফিকেট।

5)ড্রাইভিং লাইসেন্স।

6)ট্রেড এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট।

7)কাস্ট সার্টিফিকেট (যদি থাকে)



আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ঠিকানা-


The Senior Manager (JAG), Mail Motor Service, No. 37, Greams Road, Chennai – 600006




গুরুত্বপূর্ণ তারিখ -

নোটিশ প্রকাশ -19.09.2022

আবেদন শুরু - 19.09.2022

আবেদন শেষ - 19.10.2022 




Important Links: 👇👇


Official website link -

Click here 🔴



Official notice Download link -

Click here 🔴


________________________________________

চাকরি সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন


Telegram group-


https://t.me/Jobnewsgovtandpraivate


Whatsapp group-


https://chat.whatsapp.com/FOyQc45Ny1A7acqIc9mKdl

Monday, October 3, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -21


 

ঠিক আছে , এ্যায়সা হোগা । হামার আড্ডামে আনবো না । দো রোজ বাদমে এ পত্তামে হাজির হবি । চলা যা বহিন , চিন্তা মত কর । 


শ্যামলীদি অত্যন্ত আনন্দিত হল ওর কথা শুনে । আমরা নিরাপদে যেন আমাদের কুঞ্জে পৌঁছতে পারি তার ব্যবস্থা করতে বললাম শিবাজীদাকে , কারণ অনেক রাত হয়ে গেছে । তিনি একজন তাঁর সাকরেদকে আমাদের সাথে দিলেন । আমরা যাতে সসম্মানে পৌঁছতে পারি তার সমস্ত রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা করলেন । 

আমরা বিলম্ব না করে সাকরেদ রহিম মোল্লার সাথে বস্তীতে গিয়ে হাজির হলাম । ট্যাক্সি করে । শ্যামলীদি রহিম মোল্লাকে কিছু জলযোগ না করিয়ে যেতে দিলো না । সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাদের সাথে উপস্থিত হলো আমাদের বাসার আঙিনায় । শ্যামলীদি বাসাতে প্রবেশ করতে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল । আমি ওকে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখে একরকম দৌড়ে গিয়ে হাজির হলাম ।

 দেখলাম বস্তির অধিপতি বাবুগুণ্ডা দেওয়ালের আড়ালে হতে শংকর মাছের চাবুক নাড়তে নাড়তে শ্যামলীদির কাছে এগিয়ে এসে বলল , বহুত আস্পর্স্কা দেখেছি তোর ! মনে হচ্ছে পিঠের দগদগে ঘা খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে গেছে ! আমি জানতে চাইছি কার অনুমতিতে বাইরে গিয়েছিলি ? 

শ্যামলীদি কোন উত্তর দিলো না । শুধু মুখখানা ক্রোধে রক্ত রাঙ্গা হয়ে উঠল । আমি শ্যামলীদির হয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিলাম শ্যামলীদি আমাকে বাধা দিল ।

 রহিম মোল্লা একটু দূরে নবাবী কায়দায় দাঁড়িয়ে ধূমপান করছে । শ্যামলীদির মুখ দিয়ে কোন উত্তর বেরুচ্ছে না দেখে বাবু গুন্ডা হুংকার দিয়ে চাবুকের ঘা মারল । 

যেই আরেকটা চাবুক মারতে যাবে ঠিক সে সময় রহিম মোল্লা ক্যাঙ্গারুর মতো লাফ দিয়ে চাবুকটা ধরে বাবুগুন্ডার তলপেটে এমন জোরে লাথি মারল যে মাটির উপর ছিটকে পড়ল বাবুগুন্ডা ।

 শ্যামলীদি রহিম মোল্লার কাছ হতে চাবুকটা ছিনিয়ে নিয়ে বাবুগুন্ডার কাছে ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো । শ্যামলীদির চোখ দিয়ে যেন আগুনের ফুলকী বেরুচ্ছে । আজকে শ্যামলীদির বদলা নেবার দিন এসেছে । এই সুযোগ নেবার জন্য অধীর আগ্রহে দিন গুনছিল । 

গম্ভীর গলায় বলল শ্যামলীদি , উঠ বাবুগুন্ডা , আজ প্রতিশোধ নেবার দিন এসেছে ।

এবার তোর শরীরকে আলগা করে দিই । অতীতের পঞ্চাশ ঘা , আর আজকার এক , অর্থাৎ একান্ন ঘা তোকে আজ ফিরিয়ে নিতে হবে ।

 বাবুগুন্ডা উঠবার চেষ্টা করতেই মুখে একটা চাবুকের ঘা মারল । সে তীব্র চিৎকারে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল । শ্যামলীদি ছাড়বার পাত্রী নয় ।

 কি রে খুব লাগল বুঝি ? না - না , আমার মনে হচ্ছে তেমন লাগেনি । তাহলে আরেকটা দিই কেমন ? বৃষ্টিধারার মতো সমস্ত শরীরে চাবুকের আঘাত পড়ল । সেই অবস্থায় কাটা ছাগলের মতো ছটপট করতে থাকল বাবুগুন্ডা । আদরী মাসী আটকাতে এসে কয়েক ঘা চাবুক তার গায়ে এসে পড়ল , সেই আঘাতে সেও মাটিতে কাতরাতে থাকল । 

শ্যামলীদি চাবুক থামিয়ে অবসন্ন হয়ে রহিম মোল্লার কাছে এসে হাঁফ ছেড়ে বলল , আমাকে সেদিন ঐ জানোয়ারটা রেহাই দেয়নি দাদা । পিঠের ঘা এখনো শুকায়নি । আমার অপরাধ একটা মেয়েকে এই নোংরা পথ হতে বাঁচাতে গিয়েছিলাম তাই ।

 শ্যামলীদিকে সান্ত্বনা দিয়ে রহিম মোল্লা বলল , হামার সব মালুম হুয়া বহিন । হমারা বস হামকো বতায়া । ডর মত কর । বাবুগুন্ডা বিষ মাখানো দৃষ্টি নিয়ে কাত হয়ে পড়ে আছে স্যাঁত স্যাঁত মাটিতে । রহিম মোল্লা ধীরে ধীরে ওর কাছে এসে কলার ধরে বলল , উঠিয়ে ভাইসব , বহুত পরেশান হুয়া । শোন্ কই জানানাকে জবরদস্ত এ লাইনমে লে আয়েগা তো তুমকো টুকরো বানাকর গঙ্গামে ফেক দেঙ্গে । হামকো পহচানতে হো ? শিবাজী সিংকা আদমী হ্যায় । 

বাবুগুন্ডার মুখ দিয়ে কোন বাক্য বের হয় না । কেউ যেন ওর বাকশক্তি রোধ করে । দিয়েছে । রহিম মোল্লা শ্যামলীদির কাছে এসে চিন্তা করতে নিষেধ করল । যদি কোন বিপদের ঝুঁকি আসে বিনা দ্বিধায় ওদের আড্ডায় গিয়ে খবর দিলে উপযুক্ত বিচার এসে করবে । বিলম্ব না করে সে সেখান হতে অদৃশ্য হল । 

হঠাৎ যে এরকম কান্ড ঘটে যাবে কখনো ভাবতে পারিনি । কারণটা হয়েছিল পর পর দুদিন কোন নিশিবন্ধু শ্যামলীদির খোঁজে এসেছিল । ওকে ঠিক সময়ে পায়নি বলে আদরী মাসীর লোকসান হওয়াতে সে বাবুগুন্ডাকে বলেছিল শায়েস্তা করতে । সেদিন রাতটা থমথমে ভাবে কেটে গেলো । শত চিন্তা বুকে নিয়ে শ্যামলীদি সারারাত্রি চোখের জলে ভেসেছিলো । এই সৌন্দর্যময় জীবনে যে এইরূপ অশান্তির ঝড় বইবে তা কি জানতাম ? 

কোন প্রকারে শ্যামলীদির অব্যক্ত যন্ত্রণাকে চাপা দিয়ে ওর কোমল হৃদয়কে শান্ত করেছিলাম । এছাড়া কিইবা করার আছে আমাদের ? এই অশান্ত পরিবেশের মধ্যে দিনের পর দিন অতিবাহিত করতে হবে । 

হায়রে বিধাতা কেন এই নির্যাতন সহ্য করার আগে আমাদের মৃত্যু দিলে না । পরদিন সকালে ঘুম হতে উঠতে একটু ইচ্ছে করেই দেরী করলাম । শ্যামলীদি ঘুম হতে উঠে বাইরে বেরুতে আমাদের সখীরা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল । একজন কাছে । এসে শ্যামলীদিকে সাবাস দিলো । কোন অন্যায় করেনি শ্যামলীদি । এবার বাবুগুণ্ডা । বুঝুক চাবুকের ঘা কতখানি শরীরকে আরাম দিয়ে থাকে । 

সেদিন বিনাদোষে শ্যামলীদিকে চাবুক মেরেছিল , কারণ ওর ইচ্ছা মতো কাজ করতে হবে । প্রয়োজন হলে তার সখিরা শ্যামলীদিকে সাহায্য করবে । আর অত্যাচার সহ্য করবে না তারা । ওদের কথা শুনে আমর মনে হল এখান থেকে এবার আন্দোলনের সৃষ্টি হবে । অফিস , কারখানায় যখন অন্যায় এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের সৃষ্টি হয়ে থাকে , এখানে কেন হবে না । এখানের লড়াই হবে শান্তিতে বাঁচার অধিকারের জন্য । 

হঠাৎ নজরে পড়ল , আদরী মাসী কোমর বেঁকিয়ে লটপট করতে করতে আমাদের মজলিসে এসে উপস্থিত হলো । বলল , কাজটা ভালো হলো না পদ্মা । 

আমি শ্যামলীদির মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম , প্রয়োজন হলে তোমার আদরের দুলাল আদালত করতে পারে , আমি সাক্ষী দেব । কিরে লতিকা , সাক্ষী দিবিতো তার হয়ে ? 

আদরি মাসীর ঠোঁট কাঁপতে থাকল । কিছু বলতে গিয়েও পারল না । মুখটা গম্ভীর করে ধীরে ধীরে কেটে পড়ল ।

Saturday, October 1, 2022

রাজ্যে গ্রুপ-D এবং ক্লার্ক পদে কর্মী নিয়োগ || WB group D and Group C Recruitment 2022 || Bench Clerk, Lower Division Clerk and Group D Recruitment 2022


 


রাজ্যের প্রতিটি বেকার যুবক - যুবতীদের নতুন চাকরির সুযোগ এসেছে। আবারও আমাদের রাজ্যে নিয়োগ হতে চলেছে বেঞ্চ ক্লার্ক, লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক এবং গ্রুপ-ডি (Group-D)  পদে। সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এই নিয়োগটি পশ্চিমবঙ্গের শিশু সুরক্ষা ইউনিট (Child Protection Unit)– এ করা হবে। অষ্টম শ্রেনি, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাশ করলে এখানে আপনি বিভিন্ন পদে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। কোন কোন পদে, কোথায় কোথায় নিয়োগ টি হবে এবং কোন পদে কি কি যোগ্যতা দরকার, বয়সসীমা, মোট শূন্যপদ, আবেদন পদ্ধতি সমস্ত নীচে আলোচনা করা হল।




নোটিশ নম্বরঃ 722/DCPU/DARJ/2022

নোটিশ তারিখঃ 19 সেপ্টেম্বর 2022




আবেদনের মাধ্যমঃ অফলাইনের মাধ্যমে আপনাকে আবেদন করতে হবে।



নিয়োগের তথ্য -

(1) পদের নামঃ বেঞ্চ ক্লার্ক (Bench Clerk)

বেতনঃ প্রতিমাসে 13,500 টাকা ।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ  উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করতে হবে 

মোট শূন্যপদঃ 01


(2) পদের নামঃ লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক (Lower Division Clerk)

বেতনঃ  প্রতিমাসে 13,500 টাকা।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ মাধ্যমিক পাশ করতে হবে।

মোট শূন্যপদঃ 02

(3) পদের নামঃ অর্ডারলি (Orderly)

বেতনঃ প্রতিমাসে 12,500 টাকা।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণী পাশ। এক্ষেত্রে প্রার্থী কে অবূ বাংলা কিংবা নেপালি এবং হিন্দি ভাষায় কথা বলতে, লিখতে ও পড়তে জানতে হবে। 

মোট শূন্যপদঃ 07




বয়সসীমা: প্রতিটি চাকরি প্রার্থীর বয়স 21 থেকে 40 বছরের মধ্যে হতে হবে।  তপশিলি জাতি (SC) এবং তপশিলি উপজাতি (ST)  সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ছাড় পাবেন।




নিয়োগ পদ্ধতিঃ
(1) বেঞ্চ ক্লার্ক এবং লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক পদের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা হবে। এরপর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নেওয়া হবে কম্পিউটার টেস্ট। সবশেষে নিয়োগ করা হবে।




আবেদন পদ্ধতিঃ
(1) সম্পূর্ণ অফলাইন এর মাধ্যমে আপনাকে আবেদন করতে হবে। 

(2) প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ফর্মটি ডাউনলোড করে নিতে হবে।

(3) ফর্মটি  A4 সাইজের পেপারে প্রিন্ট আউট করতে হবে।

(4) ফর্মটি পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সেঁটে দিতে হবে। প্রতিটি নথিতে অবশ্যই সেল্ফ অ্যাটেস্টেড করতে হবে।

(5) সবশেষে আবেদন পত্র ফর্মে দেওয়া নির্দিষ্ট ঠিকানায় নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে স্পিড পোষ্ট অথবা রেজিস্টার্ড পোষ্টের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। 




প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট -
সম্পূর্ণ ডিটেলস নোটিশে পেয়ে যাবেন। নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করলেই সমস্ত তথ্য পাবেন। এই নোটিশ থেকেই ফর্মটি ডাউনলোড করতে পারবেন।



প্রয়োজনীয় তারিখ-

আবেদন শুরু - 21.09.2022
আবেদন শেষ - 21.10.2022 


Official website -


Official notice -



_______________________________________________

চাকরি সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

Telegram group-


Whatsapp group-