লেখক তুলসী দাস বিদ -এর একটি গল্প
গোধুলী
মাটির পথ ধরে গরু গুলো পায়ে পায়ে ধুলো উড়িয়ে বাড়ি ফিরছে। পশ্চিমদিকে আবির ছড়ালো রঙের ছটা, আকাশকে সুন্দর করে কনে সাজানোর মতো সাজিয়ে তুলেছে। দিগন্তে বলাকার ঝাঁক যেন সোনার হারের মতো উড়ে চলেছে। গালগল্প সেরে নদীর ঘাটের কাজ ফেলে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছে আটপৌরে গায়ের বধূরা। মাঝিরা নৌকাটা পাড়ের খুঁটিতে বেঁধে বাঁশের মাচায় বসে মজলিশে ব্যস্ত হয়ে পরেছে। পানকৌড়ি চখাচখি কাঁদাখোঁচারা সময় বুঝতে পেরেছে। জোনাকিদের আনাগোনা বাড়লেও সাঁঝের প্রদীপ জ্বালেনি। দূরের গাছ গাছালি ঘেরা গ্রাম ঝাপসা দেখাচ্ছে। ষাট ঊর্ধ্ব রমাকান্ত বৈকালিক ভ্রমণে আসার ব্যতিক্রম হয়নি। এই সুন্দর মধুর ক্ষণকে জীবনের সাথে মিলিয়ে নেন প্রতিদিন। অভ্যাসগত ভাবে নদীর পাড়ে সবুজ দুর্বা ঘাসের গালিচায় শরীরকে এলিয়ে দিয়ে অতীতকে রোমন্থন করতে করতে অজান্তে চোখ বন্ধ হয়ে গেছে। এটাও বাস্তব সত্য নদীর পাড়ের নাতিশীতোষ্ণ ফুরফুরে হালকা বাতাস যেন মায়ের মতো স্নেহের হাত বুলিয়ে আদর করে। আচমকা কান্নার শব্দে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব কেটে গেলো। অদূরে শ্মশানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠলো। শ্মশান সঙ্গীরা বল হরি হরিবোল বলে থেমে গেলেন।
Comments