কথাসাহিত্যিক সুদীপ ঘোষাল -এর উপন্যাস (পঞ্চম পর্ব)

   ইউরেকা ইউরেনাস




বারান্দায় তিনি ছিলেন। তখন তোতন বলল, ঠিক আছে আসুন ভদ্রলোককে তোতন বললেন, কী অসুবিধা?তোতন ভদ্রলোককে অনেক্ষণ আটকে রেখে তার গ্রাম এবং পরিবেশ সম্পর্কে জেনে নিল। ভদ্রলোক বললেন, আমার নাম নাটুবাবু। এই নামেই সকলে চেনে। 


 লোকগুলো আমাদের ওখানে একটা ভূতের উপদ্রবের গুজবে ভয় পাচ্ছে। লোকজন খুব ভয় পাচ্ছে। এটা তো আমি মানি না,কোনও মতেই। তাই আপনার সাহায্য নিতে চাই সুমন্ত বাবু আর আপনি গেলে এই রহস্যের সমাধান নিশ্চয়ই হবে তোতনন খুব উৎসাহিত হয়ে সুমন্তবাবুকে বললেন এবং ডাকলেন। তিনি এলেন। তিনি আরো বললেন ঠিক আছে আমরা যাব আগামীকাল। সন্ধ্যার মধ্যেই আমরা আপনার বাড়ি পৌঁছে যাব। আপনি ঠিকানা আর এখানে সবকিছু আপনার পরিচিতি দিয়ে যান। সুমন্তবাবু ও তোতন পরের বিকেলে ট্রেনে চাপলেন। কলকাতা থেক দূরে এক অজ পাড়াগাঁয়ে তাদের যেতে হবে। তোতন বলছে সুমন্তবাবুকে আমি গ্রামের ছেলে। ট্রেনে যেতাম স্কুলে। তারপর পায়ে হাঁটা।তোতন বলে চলেছে তার কথা, ট্রেনে যাওয়া আসা করার সময় কিছু লোক দেখতাম ট্রেনের মেঝেতে বসে থাকতেন স্বছন্দে।তাদের মত আমারও সিটে না বসে মেঝেতে বসার ইচ্ছে হতো।কিন্তু পারতাম না লোকলজ্জার ভয়ে।কি সুন্দর ওরা মেঝেতে পা ছড়িয়ে বসে ঘুগনি খায়।ট্রেনে হরেক রকম খাবার বিক্রি হয়।ওরা দেখতাম টুকটাক মুখ চালিয়ে যেতো।আমি জিভে জল নিয়ে বসে থাকতাম ভদ্র বাবুদের সিটে।তারা হাসতেন না।অপ্রয়োজনে কিছু খেতেন না বা কোনো কথা বলতেন না। ওদের মাঝে গোমড়া মুখে বসে মুখে দুর্গন্ধ হতো।তারপর গানের এৃক বিকেলে আমি বেপরোয়া হয়ে ট্রেনের মেঝেতে ওদের মাঝে বসলাম। লুঙ্গি পরা লোকটা গায়ে মাটির গন্ধ।বেশ হাল্কা হয়ে গেলো মনটা। লোকটা বললো,ভালো করে বসেন। কত আন্তরিক তার ব্যবহার।তারপর ট্রেনের খাবার খেতে শুরু করলাম।প্রথমেই ঝালমুড়ি।পাশের লোকটাও ঝালমুড়ি কিনলেন।খেতে লাগলাম মজা করে। তারপর এলো ঘুগনি,পেয়ারা,গজা,পাঁপড়,লজেন্স ও আরও কত কি। মনে হলো এ যেন কোনো ভোজবাড়ি।খাওয়ার শেষ নাই।যত পারো খাও। মেঝেতে বসার অনেক সুবিধা আছে।আমাদের দেশে গরীবের সংখ্যা বেশি।তাই গরীব লোকের বন্ধুও হয় অনেক।পথেঘাটে ওরা পরস্পরকে চিনে নেয় চোখের পানে চেয়ে।তাই ওদের মাঝে গরীবের দলে নাম লিখিয়ে আমি ভালো থাকি,জ্যোৎস্নায় ভিজি...


সুমন্তবাবু বললেন, তোর এই গুণের জন্যই তোকে ভালবাসি। তোতন বলল,হাওড়া থেকে কাটোয়া। তারপর শিবলুন স্টেশন থেকে টৌটো তে আধঘণ্টা যেতে হবে। কিংবা বড় বাস স্টপেজে নেমে ঢালাই রাস্তা ধরে নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিস পেরিয়ে, সর্দার পাড়া পেরিয়ে চলে এলাম ভট্টাচার্য পাড়ায়।পুরোনো মন্দির আর মসজিদ,গির্জা আমার মন টানে। কালের প্রবাহে সেগুলো অক্ষত না থাকলেও পুরোনো শ্যাওলা ধরা কোনো নির্মাণ দেখলেই আমি তার প্রেমে পড়ে যাই।অমরবাবু ছিলেন ষষ্টি তলায়। তিনি মা মঙ্গল চন্ডীর মন্দিরে নিয়ে গেলেন আমাকে।নবগ্রাম অজয় নদীর ধারে অবস্থিত। সবুজে ঘেরা এই গ্রাম।  


সুমন্তবাবু জানেন তোতন যার কাছে নিয়ে যায় তার সব খবর জেনে নেয়। তার যোগ্য সহায়ক। নাটুবাবু সময়মত টোটো নিয়ে এসে ওদের গ্রামে নিয়ে এলেন। পরেরদিন সকালে ভ্রমণবিলাসি সুমন্তবাবু বললেন, আপনার এলাকায় আজ শুধু ঘুরব। চলুন আপনি আমাদের সব চিনিয়ে দেবেন পায়ে হেঁটে। নাটুবাবু বলতে শুরু করলেন কবি এবং গাইডের মত গ্রামের পরিচয়। ইনি ভট্টাচার্য পাড়ার রঘুনাথ ব্যানার্জী। তিনি বললেন,মা মঙ্গল চন্ডীর মন্দির অতি প্রাচীন।মায়ের পুজোর পালা পাড়ার সকলের একমাস করে পড়ে।মা দুর্গার পুজোর পালা তিন বছর পর এক একটি পরিবারের দায়ীত্বে আসে।সকলে মিলে পাড়ার পুজো চালায় বছরের পর বছর।হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম বাজারে পাড়ায়।এখানে,ঘোষ,পাল,মুখার্জী পরিবারের বাস। মুখার্জী পাড়ার ধ্রুবনারায়ণ বললেন,আগে মুখুজ্জে পুকুরের পাড়ে শিবপুজো হতো।মন্দির প্রায় দুশো বছরেরে পুরোনো হওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছিলো।কৃষিকাজের সময় জল না হলে আমাদের বাবা, কাকারা শিবলিঙ্গ বাঁধ দিয়ে জলে ডুবিয়ে দিতেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মেঘ হতো ও বৃষ্টি হতো।মানুষের বিশ্বাসে সবকিছু।



নাটুবাবু বললেন, তারপর গোস্বামী পাড়ায় এলাম। সেখানে বদরী নারায়ণ গোস্বামীর সঙ্গে দেখা করি চলুন।


বদরীবাবু বললেন,আমরা নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর বংশধর। মেয়ের বংশধর,দৌহিত্র বুঝলেন।আমার কাছে বংশলতিকা আছে। আমি বললাম,বলুন, আমি শুনি।তিনি শুরু করলেন,গঙ্গামাতা, তার স্বামী ছিলেন মাধব চট্টোপাধ্যায়, তার ভিটে এটা।তারপর প্রেমানন্দ,অনন্তহরি,পীতাম্বর,গৌরচন্দ্র,লালমোহন,শ্যামসুন্দর,নিকুঞ্জবিহারী,রামরঞ্জন, বংশগোপাল, বদরীনারায়ণ,বিনোদগোপাল।তারপর তিনি মন্দিরের গাত্রে লেখা বংশলতিকা দেখালেন।আমি ছবি তুলে নিলাম।পড়া যাবে নিশ্চয়।

রাধা মাধবের মন্দিরে বারোমাস কানাই, বলাই থাকেন।অগ্রহায়ণ মাসে এই মন্দিরে রাধামাধব আসেন।তখন সারা গ্রামের লোক প্রসাদ পান।



তোতন বলছেন, আমার মনে হচ্ছে এ যেন আমার জন্মস্থান। আমার গ্রাম। স্বপ্নের সুন্দর গ্রামের রাস্তা বাস থেকে নেমেই লাল মোড়াম দিয়ে শুরু ।দুদিকে বড় বড় ইউক্যালিপ্টাস রাস্তায় পরম আদরে ছায়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে । কত রকমের পাখি স্বাগত জানাচ্ছে পথিককে । রাস্তা পারাপারে ব্যস্ত বেজি , শেয়াল আরও অনেক রকমের জীবজন্তু।.চেনা আত্মীয় র মতো অতিথির কাছাকাছি তাদের আনাগোনা । হাঁটতে হাঁটতে এসে যাবে কদতলার মাঠ। তারপর গোকুল পুকুরের জমি, চাঁপপুকুর, সর্দার পাড়া,বেনেপুকুর । ক্রমশ চলে আসবে নতুন পুকুর, ডেঙাপাড়া ,পুজোবাড়ি, দরজা ঘাট, কালী তলা । এখানেই আমার চোদ্দপুরুষের ভিটে । তারপর ষষ্টিতলা ,মঙ্গল চন্ডীর উঠোন , দুর্গা তলার নাটমন্দির । এদিকে গোপালের মন্দির, মহেন্দ্র বিদ্যাপীঠ, তামালের দোকান, সুব্রতর দোকান পেরিয়ে ষষ্ঠী গোরে, রাধা মাধবতলা । গোস্বামী বাড়ি পেরিয়ে মন্ডপতলা । এই মন্ডপতলায় ছোটোবেলায় গাজনের সময় রাক্ষস দেখে ভয় পেয়েছিলাম । সেইসব হারিয়ে যাওয়া রাক্ষস আর ফিরে আসবে না ।কেঁয়াপুকুর,কেষ্টপুকুরের পাড় । তারপর বাজারে পাড়া ,শিব তলা,পেরিয়ে নাপিত পাড়া । এখন নাপিত পাড়াগুলো সেলুনে চলে গেছে । সাতন জেঠু দুপায়ের ফাঁকে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরতেন মাথা ,তারপর চুল বাটি ছাঁটে ফাঁকা । কত আদর আর আব্দারে ভরা থাকতো চুল কাটার বেলা ।এখন সব কিছুই যান্ত্রিক । মাঝে মাঝে কিছু কমবয়সী ছেলেমেয়েকে রোবোট মনে হয় । মুখে হাসি নেই । বেশ জেঠু জেঠু ভাব ।সর্বশেষে বড়পুকুর পেরিয়ে পাকা রাস্তা ধরে ভুলকুড়ি । আর মন্ডপতলার পর রাস্তা চলে গেছে খাঁ পাড়া , কাঁদরের ধার ধরে রায়পাড়া । সেখানেও আছে চন্ডীমন্ডপতলা , কলা বা গান, দুর্গা তলার নাটমন্দির সব কিছুই । পুজোবাড়িতে গোলা পায়রা দেখতে গেলে হাততালি দিই ।শয়ে শয়ে দেশি পায়রার দল উড়ে এসে উৎসব লাগিয়ে দেয়। পুরোনো দিনের বাড়িগুলি এই গ্রামের প্রাণ 


   


সুমন্তবাবু বললেন, বাংলার সব গ্রামের রূপ এক। আমরা একতার সূত্রে বাঁধা। 


নাটুবাবু বললেন, তারপর চলে এলাম গ্রামের মন্ডপতলায়। এই গ্রামে আমার জন্ম। লেখিকা সুজাতা ব্যানার্জী এই গ্রামের কন্যা।তার দাদু ছিলেন ডাঃ বিজয় বাবু।এখনও এই বাড়িগুলো গ্রামের সম্পদ।ডানদিকের রাস্তা ধরে হাঁটলেই খাঁ পাড়া। গ্রামের মাঝে গোপাল ঠাকুরের মন্দির,কৃষ্ঞ মন্দির। তারপরেই রক্ষাকালীতলা। কত ধর্মপ্রাণ মানুষের বাস এই গ্রামে। গোপাল মন্দিরের পুজো হয় বাড়ুজ্জে পাড়ায়।গ্রামের গাছ, পাথর,আমার গান আমার প্রাণ।


            এবার নাটুবাবু টোটো ডাকলেন। সেখান থেকে অম্বলগ্রাম পাশে রেখে দু কিলোমিটার টোটো রিক্সায় এই গ্রাম। একদম অজ পাড়াগাঁ। মাটির রাস্তা ধরে বাবলার বন পেরিয়ে স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করতে হবে।তন্ময়বাবু গবেষক।এন জি ও সসংস্থার প্রধান কারিগর বনের সবকিছু ঘুরিয়ে দেখালেন। তার জগৎ।পশু,প্রাণীদের উন্মুক্ত অঞ্চল।বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে, সেখানে।মা কালীর মূর্তি আছে। কাঁচের ঘরে ইকো সিষ্টেমের জগৎ।কেউটে সাপ, ব্যাঙ থেকে শুরু করে নানারকমের পতঙ্গ যা একটা গ্রামের জমিতে থাকে। বিরাট এক ক্যামেরায় ছবি তুলছেন তন্ময় হয়ে।আমি ঘুরে দেখলাম প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে বানানো রিসর্ট।ওপেন টয়লেট কাম বাথরুম।পাশেই ঈশানী নদী।এই নদীপথে একান্ন সতীপীঠের অন্যতম সতীপীঠ অট্টহাসে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে চায় এন জি ও, নৌকায়। তন্ময়বাবু হাতে সাপ ধরে দেখালেন। শিয়াল,বেজি,সাপ,ভ্যাম আছে। তাছাড়া পাখির প্রজাতি শ খানেক।একটা পুকুর আছে। তার তলায় তৈরি হচ্ছে গ্রন্হাগার।শীতকালে বহু বিদেশী পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। তন্ময়বাবু বললেন,স্নেক বাইটের কথা ভেবে সমস্ত ব্যবস্থা এখানে করা আছে। ঔষধপত্র সবসময় মজুত থাকে।বর্ষাকালে ঈশানী নদী কিশোরী হয়ে উঠেছে।এই নদীকে মাঝখানে রেখে বেলুনের চাষিরা চাষ করছেন আনন্দে।এখানকার চাষিরা জৈব সার ব্যবহার করেন। কোনো রাসায়নিক সার প্রয়োগ করেন না। এক চাষি বললেন,আমরা সকলে একত্রে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জৈব সার প্রয়োগ করেই আমরা চাষ করবো।তাতে বন্ধু পোকারা মরবে না। ফলনও হয় বেশি। এক এন জি ও সংস্থার পরামর্শে তাদের এই সঠিক সিদ্ধান্ত অন্য চাষিদের অনুকরণযোগ্য।এই এন জি ও সংস্থার যুবকরা গ্রামের ভিতর কুকুরদের নির্বিজকরণ কাজে লেগেছে।একটা লম্বা লাঠির ডগায় সূচ বেঁধে তাতে ওষুধভরে চলছে কাজ।কোনো প্রাণী আহত হলে তার সেবাশুশ্রূষা করেন যুবকবৃন্দ।সাপ ধরতে জানেন এই যুবকবৃন্দ।কোনো গ্রামে কোনো সাপ দেখা গেলে এই যুবকেরা সেটি ধরে নিয়ে এসে তাদের সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেন।এখনও এই যুবকবৃন্দ কাজ করে চলেছেন মানুষ ও প্রাণীজগতকে ভালোবেসে।বর্ষাকালে প্রচুর বিষধর সাপের আনাগোনা এই অঞ্চলে।এখানে পা দিলেই সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন এখানকার কর্মিবৃন্দ।ঘুরে দেখার জন্য গামবুট দেওয়া হয় পর্যটকদের। প্রচুর দেশি বিদেশি গাছ গাছালিতে ভরা এই প্রাঙ্গন। একটি কৃত্রিম জলাধার আছে।তার নিচে লাইব্রেরী রুম তৈরির কাজ চলছে।ওপরে জল নিচে ঘর। কিছুটা তৈরি হয়েছে। শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি এসে হাজির হয়। সেই পাখিদের নিয়েও চলে গবেষণা। তাদের জন্য সব রকমের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা হয়।আর একটি জলাধারে বিভিন্ন ধরণের মাছ রাখা হয়। পা ডুবিয়ে জলে দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের চামড়ার মৃত কোষ খায় এইসব বিদেশি মাছেরা। ওপেন বাথরুমে ঈশানীর জল উপলব্ধ।এই রিসর্টগুলিতে সর্বসুখের ব্যবস্থা আছে।শীতকালে অনেক বিদেশি পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। রাতে থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থাও খুব সুন্দর।বেলুন গ্রামে ঢুকতে গেলে বাবলার বন পেরিয়ে মাটির আদরে হেঁটে যেতে হবে। এখন অবশ্য শিবলুন হল্ট থেকে নেমে বেলুন যাওয়ার পাকা রাস্তা হয়েছে।টোটো,মোটর ভ্যান চলে এই রাস্তা ধরে।চারিদিকে সবুজ ধানক্ষেতে হারিয়ে যায় মন এক অদ্ভূত অনাবিল আনন্দে।বেলুন ইকো ভিলেজ কাটোয়া মহুকুমার গর্ব।



আবার ফিরে এলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার অন্তর্গত কাটোয়া মহুৃুকুমার পুরুলিয়া গ্রামে অবস্থিত মহেন্দ্র বিদ্যাপীঠ স্কুলে প্রায় চার শতাধিক ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করে। এই স্কুল গৃহটির পূর্ব মালিক ছিলেন মহেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পুত্র শ্রী অতুলবাবু এই গৃহটি পিতার নামে দান করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে।তারপর শুরু হয় কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী নিয়ে পড়াশোনা। আজ সেই বিদ্যালয় পঞ্চাশ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে।এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক বিপুল পাল। সে পেয়েছে মোট ৬৪৬নম্বর।বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে পুরস্কৃত করেছে স্বাধীনতা দিবসের দিনে। এক অখ্যাত গ্রামে এই বিদ্যালয় অবস্থিত হলেও এখানে পঠন পাঠন হয় খুব সুন্দরভাবে। প্রত্যেক শিক্ষক ও শিক্ষিকা মহাশয়ের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় প্রত্যেকবার মাধ্যমিকে ভালো ফল হয়। স্কুল বিল্ডিং অনেক পুরোনো। নবসাজে সজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন আছে।কন্যাশ্রী ক্লাব,কম্পিউটার রুম, মেয়েদের ক্যারাটে প্রশিক্ষণ,পিরামিড গঠন প্রভৃতি অনেক কিছুই পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে শেখানো হয়। নানারকম অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা প্রভাত ফেরি করে।নাচগান, কবিতা আবৃত্তি ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করে তারা। কন্যাশ্রী ক্লাব মেম্বারের মেয়েরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাল্য বিবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। মেয়েদের কোনো শারীরীক সমস্যা হলে বাড়িতে সাইকেলে চাপিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসে।এখন এই বিদ্যালয়ে নিয়মিত মিড ডে মিল খাওয়ানো হয় ঠিফিনে।আয়রন ট্যাবলেট ও স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করা হয় নিয়মিত। প্রধান শিক্ষক মহাশয় শ্রী ভক্তি ভূষণ পাল। কম্পিউটার শিক্ষক শ্রী মেঘনাদ সাঁই মহাশয় ছাত্র ছাত্রীদের অতি যত্ন সহকারে পঞ্চম শ্রেণী থেকে কম্পিউটারে দক্ষ করে তোলেন। এই গ্রামে এ এক অতি পাওয়া বরের মত। যে বরে, ছাত্র ছাত্রীরা আধুনিকতার আলোয় আলোময় হয়ে ওঠে।খেলার দিদিমণি মৌ মজুমদার মহাশয়া ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে হিউম্যান পিরামিড,ক্লাপিং ডান্স,হিল পিরামিড প্রভৃতি অভ্যাস করান। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এগুলির প্রদর্শন করানো হয়। সকল শিক্ষক,শিক্ষিকা মহাশয়ের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে স্কুলের সুন্দর পরিবেশ।শ্রী রাজীব নন্দী মহাশয় ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসব পালন করলেন মহা সমারোহে।এছাড়া শ্রী বিশ্বরঞ্জন রানো,সুবীর কুমার ঘোষ,শারদশ্রী মন্ডল,সুবীর ঘোষ,শমীক ব্রষ্মচারী,মৌসুমী বিশ্বাস,মৌমিতা বৈরাগ্য, দেবযানী বিশ্বাস,সুদীপ ঘোষাল নীরবে নিভৃতে কাজ করে চলেছেন স্কুলের স্বার্থে।অনিমা পাল,সম্পদ ভাই,নন্দিতাদি নন টিচিং স্টাফের মধ্যে আছেন। বিভাসদা ও আছেন। তারা সকলেই স্কুলের স্বার্থে কাজ করেন।স্বাধীনতা দিবসে ছাত্র ছাত্রীরা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন পিরামিড প্রদর্শন করলো।তাদের পিরামিড খুব সুন্দর দর্শনীয় এক ব্যালান্সের খেলা।স্কুল প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যারা জড়িয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে অগ্রগ ঁহেমন্ত ঘোষাল,ঁশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,অলোকময় বন্দ্যোপাধ্যায়,শ্রী বিজয় চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তখন প্রধান শিক্ষক ছিলেন ঁধ্রুবনারায়ণ চট্ট্যোপাধ্যায়।অন্যান্য শিক্ষক মহাশয়রা ছিলেন কাশীনাথ ঘোষ,পন্ডিত মহাশয়,হরেরামবাবু,সত্যনারায়ণববু,নারায়ণবাবু,অধীরবাবু

,চন্ডীবাবু দীপকবাবু,সুকুমারবাবু,মৌসুমী ভট্টাচার্য্য মহাশয়া,কাকলি ম্যাডাম প্রমুখ।সিদ্ধেশ্বরবাবু, গীতা থান্দার,বৃন্দাবনবাবু ছিলেন অশিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ।স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির আজীবন সদস্য হলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শ্রী প্রকাশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়।ঠিক সাড়ে দশটায় স্কুলের প্রার্থনা সভা শুরু হয়। ছাত্রছাত্রীরা এই সভায় নিয়মিত পিটির মাধ্যমে একটু শরীরচর্চা করে। তারপর, জনগণ মন অধিনয়ক,এই জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। তারপর যথারীতী ক্লাস শুরু হয়। ক্লাস প্রত্যেকদিন একদম শুরু থেকে শেষ অবধি হয়। সুবীর ঘোষ মহাশয়ের নিজস্ব উদ্যোগে স্কুলের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে।শ্রী বিশ্বরঞ্জন রানো মহাশয়ের অবদান অপরিসীম। এক কথায় তা প্রকাশ করা অসম্ভব।পুরুলিয়া গ্রামের আমাদের এই স্কুলটি গৌরবের শ্রেষ্ঠ চূড়ায় পৌঁছবে এই আশা রাখেন অভিভাবকবৃন্দ।


সুমন্তবাবু নাটুবাবুকে অনেক ধন্যবাদ জানালেন। তারপর রাতের খাবার খেয়ে শোওয়ার ঘরে গেলেন। 

এবার তোতন বললেন, আপনার সমস্যার কথা বলুন।


নাটুবাবু বলতে শুরু করলেন, পাড়ার এক ছেলে, নাম তার মদন।মদনের মাথা ঠিক ছিল না সে পাগল ছিল কিন্তু বাড়িতেই থাকতো তাকে পাগলা গারদে যায়নি তার মা আর ছেলে থাকে আর কেউ নেই যার সংসার একদিন কি হলো ওই পাগল ছেলে একটা লাঠি নিয়ে মায়ের মাথায় মেরে দিল একবার জোরে ঘা। তখন রাত্রিবেলা কেউ কোথাও নেই আর মা তখন নিজেই পড়ে ছটফট করছে মাকে নিয়ে আমরা চারজন গেলাম হাসপাতালে সেখানে ভর্তি থাকলে দুদিন তারপরে মারা গেল। মারা যাওয়ার পর যেহেতু মার্ডার কেস এজন্য পোস্টমর্টেম হল। পোস্টমর্টেম হওয়ার পর থেকে লাশ বের করার কেউ নেই সবাই চলে গেছে যে যার নিজের জায়গায় আমি আর আমার পিসির ছেলে ছিলাম দুজনে বের করলাম বের করে কোন রকমে ভ্যানে চাপিয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হল। শ্মশানে গিয়ে একটা পুরোহিত ডেকে তার পিন্ডি দান করে একদম করতে নিতে দুটো বেজে গেল।রাত দুটো তাওবা অমাবস্যার রাত্রি এবার ফিরতে হবে একটা ছোট নদী পার দিয়ে ছোট নদী গুলোকে আমরা গ্রামে বলি কদর এই কাদোরে পারে বোন আছে বনে থাকে সাপ বেজি শেয়াল এইসব ছোট ছোট প্রাণী তার পাশ দিয়ে আমাদের লন্ঠন নিয়ে যেতে হবে । পিসির বাড়ি আগে তাই পিসির ছেলে চলে গেল বাড়ি আমাকে একটা লন্ঠন ধরিয়ে দিল বললো তুমি চলে যাও এখানে সাবধানে যাবে আর পারলে আমাদের বাড়িতে থাকতে পারো কিন্তু আমি থাকতে পারলাম না কারণ বাড়িতে বলে আসা হয়নি মা হতে চিন্তা করবে তার লন্ঠন হাতে নিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলাম। কান ধরে ধরে যেতে যেতে গা ছমছম করছে ভয় ভয় লাগছে কিন্তু কিছু করার নেই যেতেই হবে রাত আড়াইটা হয়ে গেল এখনও পারে কেউ নেই হঠাৎ দেখা গেল দূরে সাদা ঘুম থেকে একজন দাঁড়িয়ে আছে এবং আমাকে ডাকছে।কোন আওয়াজ নাই শুধু ইশারায় হাত দেখিয়ে ডাকছে আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম এই রাত্রিবেলা এখানে সাদা কাপড় পড়ে মেয়েদের সাজেকে দাঁড়িয়ে আছে নিশ্চয়ই ভয় দেখাবে উদ্দেশ্যে।কিন্তু যখন কাছে গেলাম তখন দেখলাম না এটা ভয় দেখানো নয় সে হঠাত উঠে গেল একটা গাছের উপরে গাছের উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি সে হি হি করে হাসছে আবার লাভ মেরে জলে পড়লে বলল ঝাপাং করে। ঝপাং করে জলে পড়ে হাতে একটা সাদা মাছ নিয়ে উঠে পড়ল গাছে যে কর্ম করে কাঁচা মাছ দিয়ে খেতে লাগলো আমার খুব ভয় পেয়ে গেলাম আমি আমি সঙ্গে সঙ্গে লন্ঠন নিয়ে আস্তে আস্তে এগোতে লাগলাম যখন লাগলাম তখন সেই সাদা কাপড় ওয়ালা বলল কিনে খুব ভয় পেয়েছিস মনে হচ্ছে বাড়ি যেতে পারবি তো।


আমিওখুব ভয় পেয়ে গেলাম ঠকঠক করে কাঁপছি তখন পাঠাও মাটিতে থাকছে না কোন রকমে টেনে চলতে চলতে অনেক দূর আসার পর হঠাৎ একজন বলল কি গো কোথায় যাচ্ছ ।


মানুষের গলার আওয়াজ পেয়ে আমার একটু সাহস হলো আমি বললাম তুমি কে বলছো আমি ভোলা আমাকে চিনতে পারছ না অন্ধকারে আমি তোমার মুখ দেখতে পাইনি জানো এই বটগাছে কাদের ধরে একটা বুড়ি মাছ খেতে লাগল কাকা বলল ওই গাছের পেত্নী থাকে তুমি খুব জোর বেঁচে গিয়েছে ওই গাছের তলা দিয়ে রাত্রিবেলায় টানে বাঁচেনা চলো তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি।


আমি বললাম এত রাতে তুমি কাঁদোর ধরে কি করছিলে ভোলা বলল আমরা তো গরিব মানুষ বাড়িতে পায়খানা বাথরুম কিছু নাই এই তাই মানে কাঁদর ধারে বসে কম্ম সারি। তাই রাত দুপুরে উঠে এখানে এসেছি বট গাছের কাছে ভুলেও যাই। না আমরা।


ভোলা বলল তা তোমার এত রাত হল কেন আমি তখন সবিস্তারে আমার ঘটনা বললাম যে শ্মশান থেকে ফিরছিল।

 শ্মশান থেকে ফিরছ তাহলে এখনো গঙ্গা চান করো নাই।

  আমি বললাম না গঙ্গা চান করা হয়নি বাড়িতে গিয়ে স্নান করে পরিষ্কার হয়ে গেছে তারপর ঢুকবো। 


 আমি ভাবলাম মানুষের বিশ্বাস মানুষের কাছেই থাক হয়তো তাই মানুষের বিশ্বাসে আঘাত দেওয়া যায় না। কিন্তু আমি ওসব বিশ্বাস করিনা আজকে অন্তত বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু নিজের চোখে দেখার পর আর আমার কিছু বলার থাকল না। সেই মেছো বাড়ি এসেও জ্বালাচ্ছে।

তোতন বললেন, আমরা আজই রাতে ধরব ব্যাটাকে।


নাটুবাবু বললেন ভয়ে ভয়ে আছি খুব।

সুমন্তবাবু বললেন, যখন ভয়ের অনুভূতি প্রথম টের পাচ্ছেন, মনে হচ্ছে বুক ধড়ফড় বেড়ে গেছে, অস্থির লাগছে, বমি বমি ভাব হচ্ছে, মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে, দেরি না করে দ্রুত ব্রিদিং রিলাক্সেশন করুন। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন, বুকের ভেতর সমস্ত খালি জায়গা বাতাসে ভরে ফেলুন, দমটা অল্পক্ষণ আটকে রাখুন, তারপর মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। এভাবে পর পর তিনবার করুন।ভূতের ভয় থেকে বেড়িয়ে আসতে ভূত এবং ভয় নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন, সত্যি ভূত বলে কিছু রয়েছে কি না? 


তোতন বললেন, না কি আপনি অজানা কোনো কারণে ভয় পাচ্ছেন? আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ কখনো ভূত দেখেছে কি না? ক্ষতি হলে তার কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে? উত্তরগুলো খুঁজে নিয়ে ভাবুন আদৌ ভয় পাওয়ার কোনো কারণ রয়েছে কি না।সিনেমায় ভূত, আত্মা এই বিষয়গুলোকে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করা হয়। ভয়ের সিনেমা, নাটক আমাদের মধ্যে ভূত ও আত্মা সম্পর্কে ভয় তৈরির সাহায্য করে। তাই যদি এ ধরনের সিনেমা, নাটক দেখে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন তবে এই ধরনের নাটক, সিনেমা, গল্পের বই এড়িয়ে চলুনভয়কে জয় করতে ভয়ের বিষয়টি সরাসরি মোকাবিলা করতে হয়। আপনি হয়তো ভূতের ভয়ে রাতে একা থাকতে ভয় পান, ঘরে আলো জ্বালিয়ে রাখেন- এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে রাতে একা থাকা শুরু করুন। ভাবুন, পৃথিবীতে কত মানুষ একা থাকে। ভূত তাদের আক্রমণ না করলে আপনাকে করবে কেন? আপনার সঙ্গে তো ভূতের বিশেষ কোনো শত্রুতা নেই। প্রথমে আলো জ্বালিয়ে একা ঘরে থাকার অভ্যাস করুন। প্রথমে কষ্ট হবে তারপরও চেষ্টা করুন। প্রথমদিন পারলে নিজেকে নিজে ধন্যবাদ দিন, ছোট পুরস্কার দিন। এভাবে একা থাকায় অভ্যস্ত হলে একা ঘরে আলো নিভিয়ে থাকার পদক্ষেপ নিন। এভাবে ধীরে ধীরে ভয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন।ভয় থেকে মনটাকে অন্য দিকে সরিয়ে দিতে গান শোনা, টিভি দেখা, গল্পের বই পড়ার মতো নিজের ভালোলাগার কাজগুলো করুন। জানালার দিকে তাকালে ভয় হলে জানালা খুলে রাখুন। জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে বাইরে দেখুন। জানালার দিকে চোখ পড়লে চোখ বন্ধ না করে তাকান। কিন্তু বার বার তাকিয়ে কিছু রয়েছে কি না সেটি চেক করা থেকে বিরত থাকুন।নিজেকে বলুন যতবার শব্দ শুনে বা আওয়াজে ভয় পেয়েছি, বা বাইরে যা দেখেছি তাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছি।ভূত নিয়ে নানা আশঙ্কার কথা মনে হলে ভাবুন যা ভাবছেন তা যদি সত্যি হয় তবে কি হবে? সবচেয়ে খারাপ কী হতে পারে? এমন হবার আশঙ্কা কতটুকু?যখন ভয় পাচ্ছেন তখন যা ভেবে ভয় পাচ্ছেন তা কাগজে লিখে ফেলুন, লেখা শেষে কাগজ কুটিকুটি করে ছিঁড়ে ফেলুন বা পুড়িয়ে ফেলুন।ভাবুন ভূত বা আত্মা আপনার মতোই। তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোনো প্রমাণ নেই যে ভূত কারো কখনো ক্ষতি করেছে।অনেক সময় ছোটবেলা থেকে ভূত সম্পর্কে শোনা গল্প আমাদের মনে ভূত সম্পর্কে একটি ভয়ঙ্কর ছবি তৈরি করে। এতে আমাদের মাঝে ভয় তৈরি হয়। অনেক সময় বড় হওয়ার পরও তা থেকে যায়। তাই বাচ্চাদের সঙ্গে এ ধরনের গল্প না করার চেষ্টা করুন।ভয় থেকে বেড়িয়ে আসার জন্য নিজেকে যথেষ্ট সময় দিন।নিজের আগের সফলতার কথা চিন্তা করুন। মনে করুন আগে কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার পর কী কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, কীভাবে বের হয়ে এসেছিলেন। এটা আপনার মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে।নিজেকে বলুন, ‘ভয়ের কাছে পরাজিত হবো না। ভয় আসতেই পারে। এটা স্বাভাবিক। আমি জানি ভয়টা অমূলক। তাই ভয় পাবার কিছু নেই। বরং ভয় দূর করতে যা যা করা দরকার করব।’ভূত নিয়ে যেসব কমেডি সিনেমা রয়েছে সেগুলো দেখুন। ভয়ের সময় মনে করার চেষ্টা করুন ভয়ের সিনেমাগুলোতে ভূত কী কী করার চেষ্টা করে এবং প্রাণ খুলে হাসুন।কোনো বিষয় নিয়ে মজা করলে সে বিষয়ে ভয় দূর করা সম্ভব। ভূত বিষয়ে অন্যের সঙ্গে বেশি বেশি গল্প বলুন, মজা করুন।অনেক সময় ভূতের ভয়ের সঙ্গে মানসিক অসুস্থতাও যুক্ত থাকতে পারে। সেখানে ছোটখাট পরামর্শ মেনে চললেই তা দূর করা সম্ভব হবে না। তাই নিজে নিজে ভূতের ভয় দূর করতে না পারলে মনো-চিকিৎসক, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য নিন।ভূতের ভয়টা যেহেতু রাতেই হয়, তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে শিথিল থাকতে পারেন এমন কিছু করুন। ঘুমের সময় অল্প আলো জ্বালিয়ে ঘুমান।সিলিং বা জানালায় ঝুলন্ত কিছু থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন, যাতে রাতের বেলা এগুলো থেকে ভয় না তৈরি হয়‘ভূত আসলে কী হবে?’- এ ধরনের ভাবনা ব্যক্তির মধ্যে মানসিক অস্থিরতা তৈরি করে। তাই ভবিষ্যতে যা ঘটার আশঙ্কা সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত নন তা ভাবা থেকে বিরত থাকুন।

ভূতের ভয়কে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের মধ্যেই লুকায়িত রয়েছে। তাই ভূতের ভয়কে জয় করুন।




ক্রমশ...


Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024