কবি মহীতোষ গায়েন -এর দুটি কবিতা
হৃদয়-বাসর
আমার বাসর আমার একমুঠো আকাশ,
এ আকাশ আমার আশাপূরণের ঘর;
আমার অবকাশের বাৎসল্যহীন
আড়ম্বরহীন বাসর।
একান্তে,নির্জনতায়,নিভৃতে,নিরাপদ
নিরালাতে কবিতা লেখার ছাপোষা বাসর:
খোলা জানালা দিয়ে নারকেল,
সুপারি,আর কাঠাঁলের ছায়া
ঘন হয়ে পড়ে বিছানায়,
যখন পূব আকাশে সূর্য হাসে ।
এরাই আমার ভালোবাসা,
এরাই আমার একান্ত প্রেম...
যেখানে কান্না ভেজা চোখে মেশে
জানালা দিয়ে আসা বৃষ্টি ফোঁটা।
এ-আমার ভূবনডাঙ্গার মাঠ...
রাজনীতিহীন কেয়া পাতার
নৌকাগুলো হৃদমাঝারে ভাসে;
আমার বাংলা আমার বাংলা মায়ের কোল।
_________________________________________
মেঘবালিকা ও পাহাড়ের গল্প
মেঘবালিকা সমুদ্রের টানে ঘর ছেড়েছিল
এই তার প্রথম,এই তার শেষ,এই তার শুরু;
সমুদ্র তার অর্পণ ফিরিয়ে দিয়েছিল,চোখের
জল সমুদ্রে মিশলেও সমুদ্রের হৃদয়ে মেশে নি ।
মেঘবালিকা আর ঘরে ফেরে নি,ঘুরতে ঘুরতে
নির্জন,নিরিবিলি প্রকৃতিকে সমর্পণ করতে যায়
তার নির্মল নিষ্পাপ দেহ,আচমকাই পাহাড় এসে
বাধসাদে,পাহাড়ে ভর করে আবর্তিত হয় জীবন।
মেঘবালিকা পাহাড়ের কাছ থেকে শেখে জীবনের
মানে,আনন্দ আর বেঁচে থাকার রহস্য;ফিরে পাওয়া
জীবনের বন্ধনে আবদ্ধ হয়,পাহাড়ের শিরায় শিরায়
ফুল ফোটে,পাহাড়ের ফুলে হারিয়ে যায় মেঘবালিকা।
সমুদ্রের অপ্রাকৃত প্রণয় পিপাসা,তর্জন,গর্জন
হৃদয় থেকে উৎপাটিত করে সে,স্থিতধী হয় মন,
তার ঘরে ফেরার গান রচে পাহাড়,বহুদিন পরে
আবার নাড়ির সম্পর্কের বন্ধনে সঁপে দেয় সে।
মিলনোচ্ছ্বাসের লগ্ন আসে,এবার ঘরে ফেরার পালা,
মেঘবালিকা সব জানতে পারে,পাহাড় প্রত্যাখ্যান করে
তাকে ফেরানোর পুরস্কার,ঈশারা হৃদয় আবদ্ধ করে;
মেঘবালিকার তনুমনপ্রাণ চির সমর্পিত হয় পাহাড়ে।
Comments