কবি বন‍্যা গুপ্ত -এর একটি কবিতা

 দেহদান প্রাপ্তির আর এক নাম

 



রাতের তারারা আজ পরীদের

সাথে আলাপচারিতায় ব‍্যস্ত।

মায়াবী পূর্নিমা চকোরির হাতছানি

কস্তুরির ঘ্রাণে দিক্ -শূণ‍্য মৃগ

ছুটে যায় দিগন্তের পথে।


বৈচিত্র্যময় জীবনের

কত কাহিনীর চিত্রনাট্য 

পথের খাঁজে খাঁজে..

নীরবতার আচ্ছাদনে পড়ে

থাকে একান্তে..

প্রত্নতাত্ত্বিকের খননে

তার ভাষা উদ্ধার হয় না।


শৈশবের রঙিন প্রজাপতির দিন ;

কৈশোরে চাঁদের রাজ‍্যে ঘোড়সওয়ার ;

যৌবনে প্রেমের আলোয় ঘরকন‍্যা।

বাস্তব! কংক্রিটের মত নিরস...সম্পর্কের

প্রতি গ্রন্থিতে স্বার্থপরতার ধোঁয়া।


তবু, মায়াময় পৃথিবীর প্রতি 

তৃণ আমাকে দু হাত দিয়ে

জড়িয়ে ধরে.. প্রতিটি মহীরূহ

শিকড় বিছায়ে আকঁড়ে আছে

 স্মৃতির শিকল, ভালোবাসার 

স্নেহের বন্ধন অবিচ্ছেদ‍্য।


অনেক পাওয়ার মাঝে,কোথায়

যেন না পাওয়ার হিসাবের খাতাটা

খালি প'রে থাকল দীর্ঘশ্বাসের ঘরে।

 কর্তব্যের লম্বা মাইলস্টোন পেরিয়ে

 অবশেষে...

জীবনে শেষযাত্রার লগ্ন এলো।

.

মুক্তি ! খোলা আকাশে

বন্ধন ছিঁড়ে এগিয়ে চলা।

কান্নাভেজা পথ পেরিয়ে ...দূরে দূরান্তে

রেখে গেলাম কিছু আত্মীয়তার

সেতু....স্মৃতির কিছু ঝিলিক

কালের নিয়মে মুছে যাবে একদিন।


চোখ দুটৌ রেখে গেলাম 

চোখ দুটো আজও নূতনকে দেখে

তৃপ্ত হয়....কত স্বপ্ন চোখের মধ‍্যে

সাঁতার দেয় নোনা জলে।

নতুন মানুষের দৃষ্টিতে চোখ

আবার স্বপ্ন খুঁজবে অহরহ।


হৃদয়টা রেখে গেলাম..

ব‍্যথায় অভিমানে ভারাক্লান্ত ছিল।

কারোর হৃদয়ে প্রতিস্হাপিত হয়ে

সুখের সাগরে ভেসে মোহনায়

মিলিত হবে খুশির স্রোতে।


 প্রতিটি অঙ্গে আমার স্বপ্ন

বহু মানুষের মাঝে রয়ে গেলাম।

জন্মান্তর বিধাতার লিখন নয়

আমার দানের স্বেচ্ছাপত্র!

 নতুন জীবনের অনুপ্রবেশ।



নতুন প্রভাতের প্রভাতফেরির 

কুচকাওয়াজ বিউগলের ধ্বনি

আবার সেই পাখির কলকাকলি...

কে বলে গো সেই প্রভাতে নেই আমি?"

Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩১ || Sarod sonkha 1431 || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র