Posts

দিনে দুপুরে - কাজল মন্ডল || Dine dupure - Kajal mondal || গল্প || ছোট গল্প || Story || Short Story || Prose || বড় গল্প

  দিনে দুপুরে       কাজল মন্ডল রবিবারের বিকাল।আমরা পাড়ার ছেলে ছোকরা-রা মিলে সব আড্ডা মারছি।রাঙাদাদুর বাড়ীর বৈঠকখানায়।প্রতি রবিবার সাধারণতঃ যেমনটি আড্ডা টাড্ডা মারি আর কী।এই খোশ মেজাজে গল্প গুজব করছি।ক্যারাম খেলছি।আর সকলে মনে মনে অপেক্ষা করছি,রাঙাদাদু এই ঘরে কখন আসেন।কখন আসেন।রাঙাদাদু যে প্রতি রবিবার রবিবার আমাদের একটি করে গল্প বলেন।যে গল্প কোনো বইতে কখনো পাওয়া যাবে না।যে গল্প কখনো কোনো সিনেমার পর্দায় দেখা যাবে না। যে গল্প দাদুর একদম নিজের মুখে মুখে রচনা।যাকে বলে মৌলিক গল্প।আর সাথে সাথে অপ্রকাশিতও। বাইরে ঝম্ ঝম্ করে বৃষ্টি শুরু হলো।আজ সকাল বেলা থেকেই টিপ্ টিপ্ বৃষ্টি হচ্ছিল। মাঝে মাঝে একটু থামছে।আবার আসছে। বৃষ্টির শব্দে সামনের খোলা জানালাটা দিয়ে বাইরের রাস্তায় চোখ গেল।রাস্তায় একটা হাল্কা জলের স্রোত বয়ে যেতে শুরু করেছে।তাতে ভেসে যাচ্ছে কয়েকটা ঝরা পাতা।কা-কা- ডাক শুনে পাশের করবী গাছটার দিকে চোখ গেল।একটা কাক করবীর ডালে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজছে।হঠাৎ হুস করে উড়ে গেল কাকটা।ওর উড়ে যাওয়া দেখতে গিয়ে আকাশের দিকে চোখ গেল।আকাশ ঘন কালো।দেখতে দেখতে ঝুপ্ করে সন্ধ্যা নেমে এলো চারপাশে।আর তখনই ঘরের গ্রান্ড

বিদায় বেলায় - কাশফিয়া নাহিয়ান || Biday belai - Kasfiya nahiyan - Biday belay || গল্প || ছোট গল্প || Story || Short Story || Prose || বড় গল্প

  বিদায় বেলায়               কাশফিয়া নাহিয়ান আসুন আসুন...ঘরে আসুন।ঘরে এসে আমাকে উদ্ধার করুন। এভাবে কেন বলছেন... তো আর কিভাবে বলবো?গ্রামের বাড়ি গেলাম বাবা মা কে দেখতে...আর তারা কিনা জোর করে আমার বিয়ে দিয়ে দিলো। আমি আদিল মাহমুদ। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করি।আর তাকে কিনা বিয়ে করতে হলো আপনার মত গেঁয়ো ভূতকে...আনবিলিভেবল.. দেখুন... আমি মোটেও গেঁয়ো ভূত নই।গ্রামে থাকি ঠিকই কিনতু আমি পড়াশোনা জানা মেয়ে... কলেজ পর্যন্ত পড়েছি... অনেক দূর পর্যন্ত পড়ার ইচ্ছা ছিল। আমার বাবা মাও তো আমাকে জোর করে... ব্যস ব্যস!ফাহিমা আমি আর আপনার কোনো কথা শুনতে চাই না...ওই যে ওইদিকের রুমটা আপনার...আর এই দিকেরটা আমার। ভুলেও আমার রুমে আসবেন না।আমাকে একদম বিরক্ত করবেন না... অবাক হয়ে রুমে ঢুকলো ফাহিমা।সে জানে না আদিল তার সাথে এমন ব্যবহার কেন করছে...তার কি দোষ? এই নিন আপনার চা... আমি কি আপনাকে চা আনতে বলেছি... এরকম গায়ে পড়া অভ্যাস আমার মোটেও পছন্দ না... আমি তো শুধু... মুখে মুখে তর্ক করবেন না... ফাহিমা আমার কোনো কাজ আপনি করবেন না।এই বাড়ি থেকে বের হবেন না... আপনার যা প্রয়োজন সব পেয়ে যাবেন.. কিন্তু বা

গোপন কান্না - দেবদাস কুণ্ডু || Gopan Kanna - Devdas Kundu || গল্প || ছোট গল্প || Story || Short Story || Prose || বড় গল্প

  গোপন কান্না         দেবদাস কুণ্ডু --একটা কথা বলবো লতিকা। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ছিল লতিকা। দরজার আংটা ধরে। টান দিলে খুলে যাবে দরজা। দু পা হেঁটে উল্টো দিকের ফ্ল্যাটে ঢুকে যাবে লতিকা। কিন্তু তা হলো না। সৌম্য বসাকের কথায় ঘুরে দাঁড়াল লতিকা।      লতিকার গায়ের রং কালো। কিন্তু মুখে ঝকঝকে লাবন্য। বুক দুটি বেশ উঁচু আর ভরাট। উচ্চতা সাধারণ মেয়েদের তুলনায় একটু বেশি। স্বাস্থ্যের বাঁধন বেশ টানটান। পিঠ জুড়ে একরাশ কালো চুল। দু চারটে চুল লেপটে আছে কপালে। সব মিলিয়ে মোহনীয় এক নারী। --কি হলো? কি দেখছেন? আমার কিন্তু কাজ আছে।       সৌম্য একটু নড়ে চড়ে বসল – বলবো কিনা ভাবছি। --তাহলে আপনি ভাবুন। আমি চলি। দরজা একটু ফাঁক করল লতিকা। --আসলে কি---সৌম্যকে থামিয়ে দিয়ে লতিকা বলল—যে কথা বলতে সংকোচ হয় সে কথা না বলা ভালো। আমি আসছি। এবার দরজা অনেকটা খুলে ফেলেছে লতিকা। --যাবে না। কথাটা শোনা দরকার আছে তোমার। দরজাটা বন্ধ করো। --করলাম দরজা বন্ধ। এবার বলুন কী বলবেন? লতিকা ঘুরে দাঁড়ায়ে কথাটা বলল।     লতিকার বয়স কতো হবে। পঁয়তিরিশ ছতিরিশ। পরনে নীল শাড়ি। কালো শরীরে নীল শাড়ি? অবশ্য দেখতে খারাপ লাগছে না। --কথাটা তুমি

বোড়়কি - সিদ্ধার্থ সিংহ || Borki - Sidhartha Singha || গল্প || ছোট গল্প || Story || Short Story || Prose || বড় গল্প

  বোড়়কি সিদ্ধার্থ সিংহ না। বোড়কিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। ছলছল চোখে শিবকুমার এ কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল তার বউ। আর তার কান্না শুনে বইপত্র ফেলে পাশের ঘর থেকে ছুটে এসে মায়ের কাছ ঘেঁষে দাঁড়াল তাদের বাকি দুই ছেলেমেয়ে— মেজকি আর ছোটকা।  কান্না জড়ানো গলাতেই শিবকুমারের বউ বলল, তা হলে ও বোধহয় আবার পালিয়েছে। যাও, থানায় যাও। একবার গিয়ে বলো... এর আগেও চার-চার বার ও পালিয়েছে। প্রথম বার যখন ওকে খুঁজে পাওয়া গেল না, তখন গ্রাম থেকে অনেক দূরে, কালিন্দী থানায় মিসিং ডায়েরি করার সময় পুলিশ অফিসারটি বলেছিল, তেরো বছর বয়সেই পালিয়েছে! কার সঙ্গে? শিবকুমার হাঁ করে তাকিয়ে ছিল। সেটা দেখে ওই পুলিশটি অফিসারটি বলেছিল, ও তো আর দুধের বাচ্চা নয় যে, কোনও তান্ত্রিক তুলে নিয়ে গিয়ে আর সব বাচ্চাদের মতো ওকেও মায়ের সামনে বলি চড়িয়ে দিয়েছে... হ্যাঁ, এখানে মাঝে মাঝেই বাচ্চা খোয়া যায়। এবং খুঁজে পাওয়া না গেলে লোকেরা ধরেই নেয়, তাকে কেউ তুলে নিয়ে গিয়ে বলি দিয়ে দিয়েছে। শোনা যায়, বহু বছর আগে ইংরেজ আমলে ছোট, মেজ, বড়, আরও বড় কর্তাকে বারবার অনুরোধ-উপরোধ করা সত্ত্বেও যখন হল না, তখন আশপাশের গ্রামের লোকেরা সবাই এককাট্টা হয়ে বড়

বৈশালী পাড়ার প্রতিমারা - শাশ্বত বোস || Baishali parar protimara - Saswata Bose || গল্প || ছোট গল্প || Story || Short Story || Prose || বড় গল্প

  বৈশালী পাড়ার প্রতিমারা       শাশ্বত বোস মফস্বলের ঝিম ধরা বিকেলের চলন্তিকা রোদ, প্রিজম তর্জনীর বর্ণালী ছাড়িয়ে, রাহুরেখা বেয়ে তির্যক ভাবে আলো আঁধারির মায়াজাল বুনেছে পাড়াটায়| আদুর গায়ের ছায়া শরীর আর গলনাঙ্কে ফুটতে চাওয়া তেঁতুল বিচির আঠার রং, যেন কুলহারী বেদব্যাসের স্বমেহ পিন্ডদানের আবহে, খড় –মাটি-রোদ-বৃষ্টির গল্প বলে চলেছে নিরন্তর| গলিটার গা বেয়ে তখন উদলা কাঠামো, নিটোল স্তন আর উর্বীমুখি নিতম্বের সারি| এটা স্থানীয় “কুমোরপাড়া”| আশেপাশের প্রায় তিন চারটে ছোটোখাটো শহরের মাঝে, প্রান্তিক, ক্লেদাক্ত, কস্তুরীয়, ম্রিয়মান প্লবতার নামাবলী গায়ে জড়িয়ে, রক্তাভ ঈশানে, এখানে এক শ্রেণীর মনুষ্যসম জীব, খড়কুটো দিয়ে কাঠামো বাঁধে, সেই বৈরী নগ্নতার গায়ে মাটি চাপায়, বানায় “প্রতিমা”| শাড়ি-গহনা-ডাকের সাজের আড়ালে, নিজের শিল্পসত্তার ফ্যালাসিকে কবর দিয়ে, মূর্তি বিক্রির মৈত্রী চুক্তিতে সায় দিয়ে, দূরে দাঁড়িয়ে যন্ত্রনার সুরহারীর ছেঁড়া তারে, আগমনীর সুর তোলে, আর অনাড়ম্বর সম্যক দৃষ্টির স্থিতিস্থাপকতায় অনুভব করে, সেই প্রতিমার পৃথু দেহজুড়ে লেপন হতে চলেছে, নির্জিত প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনশ্বর অসিয়তনামা| আমাদের গল্পটা শুরু হয় এই পা