Saturday, January 28, 2023

শিকড়ের মায়াটান - তুষার ভট্টাচাৰ্য || কবিতা || Poetry

 শিকড়ের মায়াটান 

          তুষার ভট্টাচাৰ্য 



শ্রাবণের বিষণ্ণ মেঘ আহত পাখির মতন দু'চোখে অশ্রু মেখে রাত্তির জানালায় উড়ে এলে,

 নদীর পাড় থেকে ঝরা বটের পাতায় লেগে থাকা হিম শীতল মৃত্যুর বাতাস ঘুমের শিয়রে উঠে এসে আমাকে জাগিয়ে তোলে ;

তবে কী আমি নাকে মৃত্যুর পোড়া গন্ধ নিয়ে ডিঙি নৌকোয় চেপে ভেসে যাবো গাঙ্গুরের জলে শীতের অন্ধকারে ?

কেন যে চারপাশে এই বিষণ্ণ আলো আর অন্ধকার অসফল ব্যর্থ আমাকে নীরবে 

জীবনের বেঁচে থাকার গল্প বলে না আর ;

তাই সমস্ত সম্পর্কের নাগপাশ বন্ধন ছিন্ন করে

এই রৌরব পৃথিবীর শিকড়ের মায়াটান ভুলে   

একা একা চলে যেতে চাই 

 ওই দিকশূন্যপুরে নিরুদ্দেশে ;

 তখন বিপন্ন অপমানিত আমাকে আর খুঁজে পাবেনা কেউ

ভোর শিশিরের জলেধুয়ে যাওয়া আলপথে, মাটি তৃণঘাসে মৃত জোনাকির পাশে।




পিন্ডলোক - শুভদীপ দত্ত প্রামানিক || কবিতা || Poetry

 পিন্ডলোক

 শুভদীপ দত্ত প্রামানিক 


আবার আমিই হু হু গর্ভপুরুষ

তিন 'প' দোষ 

মুনির মজ্জায় ওঁ পূরক , ক্লীঁং কুম্ভক...দীক্ষা

আমি অজা-কাম । 


দোষ আছে 

বুদ্ধের ছবিতে প্রদীপের আলোর বাসভূমি 

বুঝেও দূরে 

            মালিক হাসেন পিন্ডলোকে । 


গর্ভপুরুষ


অনেক আড়ালে গুটিয়ে নেয় মৃত্যু সুতো ! 

এক নিরীশ্বর পৃথিবী - অঞ্জন বল || কবিতা || Poetry

 এক নিরীশ্বর পৃথিবী                

        অঞ্জন বল                                     


বিমূর্ত ভাবনার আকাশে ফুটে উঠে

এক নিরীশ্বর পৃথিবী ---- জল স্থল নক্ষত্র ,

শৈশব জনপদ আর অলক্ষে ঈশ্বর কণা ,

যৌতুকে পাওয়া কিছু প্রাচীন আসবাব 

তোরঙ্গে লেপ কাঁথার সাজানো সংসার ,

চাঁদ তারা মাটি নদী পড়ন্ত বিকেল 

হিরণ্য রোদ্দুর আর নিকোনো উঠান ,

যা কিছু জীবভর সভ্যতার পরিত্যক্ত রেচন 

-- দাসত্ব রেখে যায় স্বাদে গন্ধে নির্যাসে ।


মনুষ্য নিধি বাঁধা পরে থাকে নদীর কাছে 

নিম্ন মোহনার দিকে বহে যায় কুলু কুলু 

অবিরাম স্রোতে ,

অন্তিম লগ্নে কি আছে জানেনা কেউ 

বন্ধকি নৌকা ভেসে চলে ভাটিয়ালি পালে ।

অসময়ে প্রেমিকা হারায় - মামুন খাঁন || কবিতা || Poetry

 অসময়ে প্রেমিকা হারায়

         মামুন খাঁন


কাল যাকে ভাবছিলাম,আজ তাকে আর মনে পড়ে না

তবে, খুব নিঃসঙ্গ থাকলে মনে পড়ে।

অযথা তাকে কষ্ট দিয়ে থাকলে মনে পড়ে

ফেসবুকে সাদা কালো ছবি দেখলে মনে পড়ে।


কেরোসিন আলু পিয়াজ ওষুধ পানির দাম বাড়লো

শরৎ হেমন্ত বসন্ত উধাও হলো।

মেকআপ বক্স, বডি লোশন, গোলাপের দাম বাড়লো

তোমার সাথে দেখা হলো, হতবাক চোখ দেখে মাথায় সিঁদুর!


ঝড়ে কত গাছ পড়লো, মানুষ মরলো

গাছের পরিবর্তে মানুষ জন্মালো।

চাকরি নেই, যুবকরা সব রাস্তায় নামলো

তাই দেখে, প্রেমিকার বিয়ে সুখ শান্তির সংসার হলো।

বৈচিত্র্যহীন নৈঃশব্দ্যে ডুবে যায় একমুখী জীবন - আবদুস সালাম || কবিতা || Poetry

 বৈচিত্র্যহীন নৈঃশব্দ্যে ডুবে যায় একমুখী জীবন

আবদুস সালাম 


বৈচিত্র্যহীন নৈঃশব্দ্যে ডুবে যায় একমুখী জীবন

সামনে ধূসর পথ

প্রার্থনার হাত অবশ হয়ে আসছে ক্রমশঃ

এক পশলা বৃষ্টির আশায় নতজানু হই মিনতির কাছে


একা একা খুঁজি অজ্ঞাতবাসের ঘরবাড়ি

শয়তানেরা হিহি করে দাঁত খিঁচোয়

শুনসান অজ্ঞাতবাস---

থেকে থেকে বেজে ওঠে বিরহের নান্দনিক হারমোনিয়াম


প্রেমের অব্যর্থ টংকার অচরিতার্থ রূপ পায়


অনুভূতির নৌকা পাল তোলে

ঈশ্বরের ভাষা শোনে বেহদ্দ সময়

বিপন্ন জলে স্নান করে মরা রহস্য

অদ্ভুত আকাশে তবু চাঁদ ওঠে


অভিনব মিথ্যাচারী মানুষ এঁকে দিচ্ছে সমুদ্রের যাদুচিহ্ন

বৈচিত্র্যহীন দুপুর

তাঁর খুঁটির মাথায় কাকেরা দোতারা বাজায়

অবস্থান - বিকাশ মন্ডল || কবিতা || Poetry

 অবস্থান 

        বিকাশ মন্ডল


এই অবস্থান, আমি জানি, অসুবিধাজনক

শিশুরা তবুও সেভাবেই বসে পড়ে, লেখে।

মাত্র কয়েক মুহূর্ত, চকিতে পাল্টায় ; সেকারণে 

চঞ্চল নামে তাকে ডাকি। অবস্থান পাল্টানো  

এখন ভীষন জরুরী।নিদেন পড়ার ঘর একটা 

একটি চেয়ার, একটা টেবিল আর সুধীরতা চাই 

কেন ভালোবাসি? - রেজাউল করিম রোমেল || কবিতা || Poetry

 কেন ভালোবাসি?

            রেজাউল করিম রোমেল



কেন ভালোবাসি?

যে ভালোবাসা রক্তাক্ত করে দেয়

সমস্ত শরীর, হৃদস্পন্দন।

ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠে প্রাণ,

মন, আত্মা, সবকিছু ।

চোখের জলে জন্ম নেয়

নদী, সাগর, মহাসাগর ।

হৃদয় হয়ে যায় মহাশ্মশান।

তারপর-ও কেন ভালোবাসি?

হতাশার অব্যক্ত চিৎকারে

মহাপ্রলয় নেমে আসে।

তবু কেন ভালোবাসি? কেন... ?

Friday, January 27, 2023

রাজ্যে রেশন দোকানে কর্মী নিয়োগ, অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করুন || Ration Shop Karmi Recruitment 2023 || https://food.wb.gov.in/food/


     
পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে নতুন নিয়োগ হতে চলেছে। ফুড এন্ড সাপ্লাই ডিপারমেন্টের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রেশন ডিলার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। চাকরি প্রার্থীদের জন্য এটি একটি সুখবর। 
তাই বর্তমানে যেসমস্ত চাকরি প্রার্থী সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন তাদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। কোন কোন পদে নিয়োগ করা হবে, মাসিক বেতন কত দেওয়া হবে, বয়সসীমা কত থাকতে হবে, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি লাগবে এবং কিভাবে আবেদন করতে হবে তা নিচে থেকে পরপর জেনে নেব।


Employment No- Nil

পদের নাম- Fair Price Shop Dealer

মোট শূন্যপদ- ১২ টি।

যোগ্যতা- আবেদনকারীকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

বয়স- নির্দিষ্ট কিছু নেই।

শূন্যপদের বিন্যাস- Kolkata South-4, Barrackpore- 6, Asansol-1, Hooghly-1


 


আবেদন পদ্ধতি- ইচ্ছুক প্রার্থীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। www.food.wb.gov.in গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার সময় প্রার্থীর বৈধ ইমেইল আইডি, মোবাইল নাম্বার, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।

আবেদন ফি- ১০০০/- টাকা।


আবেদনের শেষ তারিখ- বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২১ দিনের মধ্যে।




Official Notification: 

Apply Now: 


Sunday, January 22, 2023

বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে নতুন কর্মী নিয়োগ 2023 || BSK RECRUITMENT 2023 || Bangla Sahayata Kendra - Data Entry Operator Recruitment 2023


 

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সরকারি চাকরি প্রার্থীদের জন্য আবার একটি নতুন সুখবর | আবার নিয়োগ হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে। রাজ্যে নতুন করে মোট ১৪৬১টি নতুন বাংলা সহায়তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে | সেখানে নিয়োগ হবে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি বেকার ছেলে ও মেয়েদের জন্য বিরাট খুশির খবর | সমস্ত জেলার চাকরিপ্রার্থী এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। 


তাই বর্তমানে যেসমস্ত চাকরি প্রার্থী সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন তাদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। কোন কোন পদে নিয়োগ করা হবে, মাসিক বেতন কত দেওয়া হবে, বয়সসীমা কত থাকতে হবে, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি লাগবে এবং কিভাবে আবেদন করতে হবে তা নিচে থেকে পরপর জেনে নেব। 



নোটিশ নাম্বার :- 130-PAR(BSK)/BSK-57/2022(PT-II)




পদের নাম :- 


ডাটা এন্ট্রি অপারেটর (DEO)




নিয়োগকারী সংস্থা :- 


বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (BSK)




শিক্ষাগত যোগ্যতা :- 


 উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ এবং সাথে কম্পিউটার কোর্স সার্টিফিকেট থাকলে আবেদন করার সুযোগ পাবেন|




শূন্যপদ :- 


মোট ১৪৬১ টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ২৯২২ টি শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করানো হবে |








বয়সসীমা :- 

 বয়স হতে হবে ১৮ বছর থেকে ৪০ বছরের মধ্যে । সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।



বেতন :- 

 প্রতি মাসে ১০,০০০/- টাকা থেকে ১৫,০০০/- টাকা।




নিয়োগ পদ্ধতি :- 

প্রথমে হবে ইন্টারভিউ তারপর কম্পিউটার টেস্টের মাধ্যমে নিয়োগ করানো হবে |



আবেদন পদ্ধতি :- 

শুধু মাত্র অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। 



নিয়োগ স্থান :- 

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন নতুন বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে নিয়োগ করানো হবে | রাজ্যে বেশির ভাগ পঞ্চায়েত দপ্তরে নতুন বাংলা সহায়তা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে, তাই বেশির ভাগ শূন্যপদ থাকবে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত অফিসের অধীনে |




Important Links:- 


Official Notice :- 

Click here 🔴


BSK List :-

Click here 🔴


Website Link :- 

Click here 🔴


______________________________________


চাকরি সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন





Telegram group-

Click here 🔴






Whatsapp group-

Click here 🔴



Friday, January 20, 2023

মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে কর্মী নিয়োগ || Mission Nirmal Bangla Recruitment 2023 || WB job News 2023 || Mission Nirmal Bangla Prakalpa Birbhum Recruitment


 

পশ্চিমবঙ্গের চাকরি প্রার্থীদের জন্য সুখবর। এবার নতুন নিয়োগ হতে চলেছে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে। যার বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। প্রথমেই জানিয়ে দিই, নিয়োগটি বীরভূম জেলার জেলা পরিষদে করা হচ্ছে।  


তবে আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হন, তবে আপনি যে কোনো জেলার হননি কেন আপনি আবেদন করার সুযোগ পাবেন। তাই বর্তমানে যেসমস্ত চাকরি প্রার্থী সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন তাদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। কোন কোন পদে নিয়োগ করা হবে, মাসিক বেতন কত দেওয়া হবে, বয়সসীমা কত থাকতে হবে, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি লাগবে এবং কিভাবে আবেদন করতে হবে তা নিচে থেকে পরপর জেনে নেব। 




নোটিশ নম্বরঃ 08(28)/VI/SBM(G)BZP


নোটিশ প্রকাশের তারিখঃ 09.01.2022


আবেদনের মাধ্যমঃ অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।


মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে নিয়োগের বিস্তারিত তথ্য (Recruitment Details) 



(1) পদের নামঃ ডিস্ট্রিক্ট কোঅর্ডিনেটর (District Coordinator)     


বেতনঃ প্রতিমাসে 27,000 টাকা বেতন পাবেন।


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ সোশ্যাল ওয়ার্ক বা পাবলিক হেলথ বা রুরাল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন বা ডিপ্লোমা পাশ করে থাকতে হবে এবং 3 বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। 



বয়সসীমাঃ 30 থেকে 40 বছরের মধ্যে হতে হবে। সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।



(2) পদের নামঃ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর (Assistant District Coordinator)



বেতনঃ প্রতিমাসে 24,000 টাকা বেতন পাবেন।


শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে ডিপ্লোমা পাশ করে থাকতে হবে এবং যথেষ্ট কম্পিউটার এর নলেজ অর্থাৎ জ্ঞান থাকতে হবে।


বয়সসীমাঃ 25 থেকে 35 বছরের মধ্যে হতে হবে। সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।



নিয়োগ পদ্ধতিঃ

এখানে প্রথমে হবে লিখিত পরীক্ষা, তারপর ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে।


লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে 90 নম্বর। 

ইন্টারভিউ নেওয়া হবে 10 নম্বর।



আবেদন পদ্ধতিঃ

শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। নীচে দেওয়া অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে।


প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করতে হবে।

এরপরে আবেদনকারীকে নিজের নাম ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে।

রেজিস্ট্রেশন করার পর লগইন করলে আবেদনপত্রটির সামনে উপস্থিত হবে।

এরপরে আবেদন পত্রে নির্দিষ্ট পদ অনুযায়ী সমস্ত তথ্য দিয়ে আবেদন পত্রটি ভালোভাবে পূরণ করতে হবে।

আবেদনপত্র পূরণ করার পরে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্রগুলি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।




গুরুত্বপূর্ণ তারিখ-


নোটিশ প্রকাশ - 09.01.2023

আবেদন শুরু - 09.01.2023

আবেদন শেষ - 27.01.2023




গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্কগুলি (Important Links) 👇👇 


Official Website-

Click here 🔴


Official notice-

Click here 🔴


Apply Now-

Click here 🔴



______________________________________


চাকরি সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন





Telegram group-

Click here 🔴






Whatsapp group-

Click here 🔴


Wednesday, January 18, 2023

রাজ্যে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে কর্মী নিয়োগ - বেতন প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা || Data Entry Operator Recruitment 2023 || WB Job Recruitment 2023


 



পশ্চিমবঙ্গে চাকরি প্রার্থীদের জন্য আবার নতুন সুখবর। রাজ্যে কলকাতা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের তরফে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদে কর্মী নিয়োগ করা হবে। সরাসরি ইন্টারভিউ দিয়ে এখানে চাকরি করার সুযোগ পাবেন। তাই বর্তমানে যেসমস্ত চাকরি প্রার্থী সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন তাদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। কোন কোন পদে নিয়োগ করা হবে, মাসিক বেতন কত দেওয়া হবে, বয়সসীমা কত থাকতে হবে, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি লাগবে এবং কিভাবে আবেদন করতে হবে তা নিচে থেকে পরপর জেনে নেব। 


Employment No- STM/DT/01/011/2023

পদের নাম- Data Entry Operator

মোট শূন্যপদ- ১ টি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা- নির্দিষ্ট বিষয়ে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।


বেতন- প্রতিমাসে বেতন ১০,০০০/- টাকা।


আবেদন পদ্ধতি- ইচ্ছুক প্রার্থীদের আলাদা করে আবেদন করতে হবে না। সরাসরি ইন্টারভিউয়ের দিন বায়োডাটা, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে ইন্টারভিউ স্থানে উপস্থিত হতে হবে।


ইন্টারভিউয়ের ঠিকানা– Calcutta School of Tropical Medicine, 108 Chittaranjan Avenue, Kolkata – 700073


ইন্টারভিউ তারিখ– ২০ জানুয়ারি, ২০২৩



প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস-
১) সমস্ত শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট।

২) বয়সের প্রমাণপত্র।

৩) অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট।

৪) আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড।

৫) কাস্ট সার্টিফিকেট।

৬) ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।



Official Notification: 

Official Website: 

______________________________________

চাকরি সংক্রান্ত আপডেট পেতে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন




Telegram group-





Whatsapp group-


Sunday, January 15, 2023

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -34


 


                            দশ

কিছুক্ষণ পর দেবীদাস ট্যাক্সি বের করল। আমি ট্যাক্সির মধ্যে ওর পাশে বসে বাবার চিন্তায় মগ্ন রইলাম। শেষ পর্যন্ত বাবার দেখা পাবো তো! জানি না কত কাল তাকে অনাহারে অনিদ্রায় কাটাতে হয়েছে। যে মানুষ দিনের পর দিন কাধে বন্দুক নিয়ে শিকার করেছেন, সে জমিদার। ধনী পুত্র দুঃখ যে কি বস্তু জানতেন না। দারিদ্র কোন দিন তাকে স্পর্শ করতে পারতো না, তিনি এক মুঠো অন্নের খোঁজে পথে পথে ঘুরে বেড়চ্ছেন। হায়রে বিধাতা কি নির্মম বিচার। শত কষ্ট, যন্ত্রণা, নির্যাতনের মধ্যে আমার মুখে হাসি ফোটানো ইঙ্গিত ছিল দেবীর

কাছে স্থান পাবো বলে কিন্তু বাবার অবস্থা উপলব্ধি করে দুঃখের বোঝা বেড়ে গেলো।

অব্যক্ত বেদনা যে কতখানি আমার অন্তঃস্থল হতে গোঙাতে থাকল, সে সময় এই

বেদনা আমার অন্তস্থলকে ক্ষতবিক্ষত করেছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো কোন

শক্তিই ছিল না। হয়তো সে সময় কারো কাছে যদি একথা প্রকাশ করতাম তাহলে

নিশ্চয় সান্ত্বনার তীর হৃদয়ে প্রবেশ করিয়ে উদ্ভ্রান্ত চিত্তকে শান্ত করতাম। কিন্তু সে

সময় কোন প্রাণী আমার কাছে ছিল না। শুধু দেবী ছাড়া।

মুখে কাপড় চাপা দিয়ে ডুকরে ডুকরে কেঁদে চলেছি, মনে হয় আমার বাবা আর ইহ জগতে নেই। কে যেন কানের কাছে এসে বলে গেলো, ওরে হতভাগী মেয়ে, বাবাকে লাথি মেরে সরিয়ে দিয়ে আজ আবার কি লালসায় তাকে ফিরিয়ে আনতে চলেছিস? ভয় নেই, তোর বাবা তোকে বিরক্ত করতে আসবে না। ফুটপাতে লোকের লাথি, গুঁতো পেয়ে জীবন তার অনেক আগে বেরিয়ে গেছে। সে শান্তি পেয়েছে। তার শরীরে এখন শান্তির বাতাস বইছে। উচ্চ স্বরে কেঁদে উঠতেই দেবী গাড়ীটা ব্রেক করল ও তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো - পদ্মা এ ভাবে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না। নীচে নেমে এসো, এখানে গাড়ী দাঁড় করিয়ে ঐ ধর্মশালায় খোঁজ নিয়ে আসি। ওখানে অনেক দুঃস্থ পরিবারের লোকবাস করে।

কোন প্রকারে গাড়ী হতে নেমে হাঁটতে শুরু করলাম। বেশী দূর যেতে হলো না, থমকে দাঁড়িয়ে পড়লাম। একটু দূরে মিউনিসিপ্যালিটির একটা গাড়ী দাঁড়িয়ে আছে। দুটো লোক ট্রেচার করে একজন মৃত ভিখারীকে ফুটপাত হতে তুলে এনে ঐ গাড়ীতে চড়াচ্ছে। ভিখারীর মুখটা দেখেই আমার সমস্ত দেহ শিউরে উঠল। তিনি আমার বাবা ছাড়া কেউ নন। আর ধৈর্য্য ধরতে না পেরে দৌড়ে গিয়ে বাবার দেহের উপর ঝাঁপয়ে পড়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম। আমায় ক্ষমা করো বাবা। অনেক আশা নিয়ে তোমাকে খোঁজ করতে বেরিয়ে ছিলাম। কিন্তু ভাবিনি আজই তোমার অন্তিম যাত্রা দেখতে পাবো। জীবনে অনেক দুঃখ, কষ্ট সহ্য করেছো। বিশ্বাস করো আমি তোমাকে হারাতে চাইনি বাবা। নিরুপায় হয়ে তোমার হাত ধরে তোমাকে পথ ধরিয়েছিলাম আমি বিশ্বম করতে পারছি না বাবা, এইভাবে তুমি চিরশান্তির রাজ্যে চলে যাবে। উচ্চস্বরে কাদতে থাকলাম।

উঃ ভগবান এই করুন মর্মান্তিক দৃশ্য দেখবার জন্যই কি প্রস্তুত ছিলাম? বাবা তুমি সারা জীবন দুঃখের সাথে সংগ্রাম করেছো। কিন্তু সংগ্রামে জয়ী হতে পারলে না। তুমি তোমার সমস্ত মায়া মমতা ত্যাগ করে পরলোকে চলেছো।

বাবার বুকে আছড়ে পড়ে কেঁদে চলেছি। দেবীদাস এক সময় জোর পূর্ব্বক ট্যাক্সির ভেতরে বসিয়ে দিলো। তখনও আমি উদগ্রীব হয়ে সীটের উপর উপুড় হয়ে কাঁদতে থাকলাম। কখন যে বাবার মৃত দেহকে ট্রেচার করে নামিয়ে ট্যাক্সির মধ্যে চড়ালো বুঝতে পারিনি। এক সময় দেবীদাস আমাকে জানালো আমরা শ্মশানে এসে উপস্থিত হয়েছি।

বাবার শেষ কৃত্য সমাপন করে বাড়ীতে এলাম, অনেক বেলা বয়ে গেছে। আহারে মন বসলো না। দেবীদাসের শত অনুরোধ উপেক্ষা করে আমি যখন অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করছিলাম, সেই সময় আমার গণ্ড দেশে অশ্রুবন্যা বইতে লাগলো। পর পর তিন দিন ঐভাবে কাটিয়ে ছিলাম। তারপর ধীরে ধীরে অতীতের অনেক স্মৃতি আমার জীবনে ম্লান হয়ে এলো।

এই তো সংসারের নিয়ম। শোক দুঃখ চিরস্থায়ী নয়। তা যদি চিরস্থায়ী হতো। তাহলে এ জগতে মানুষের মনে এতো দ্রুত পরিবর্তন আসতো না। অবশ্য ভুল যে আমি কতখানি করেছি তা প্রকাশ করা যায় না। শত দুঃখ যন্ত্রণাকে চাপা দিয়ে দেবীর সংসারে প্রবেশ করে আনন্দের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিলাম সত্য, কিন্তু এত সহজে পতিতার ঘৃণ্য ও পাপ পঙ্কিল জীবনের আবর্ত হতে সমস্ত কলঙ্ক কালিমা মুছে ফেলে একটা অভিজাত পরিবারে আদরিনী বধূ হয়ে উঠবো সে কথা স্বপ্নেও ভাবিনি।

কেন, পতিতার দোষ কোথায়? পতিতানারী কি নতুন জীবন শুরু করতে, নতুন আশা আকাঙ্খায় ঘর বাঁধতে, বিগত দিনের ঘৃণ্য জীবন হতে নূতন জীবনের সূর্য উঠার স্বপ্ন দেখতে পারে না? জীবনের পথ চলতে অনেকেরই পদস্খলন হয়, কিন্তু সেই স্থলনই কি তার জীবনের পরিপূর্ণতা আনয়নের পথকে মসিলিপ্ত করে দেবে, কখনো না। নারী জীবনের সুপ্ত কামনা বাসনার বীজগুলি অনুকূল পরিবেশের রৌদ্র, জল ও বাতাসে নব জীবনের অঙ্কুরোদগম হয় না?

দেবীদাসের ঘনিষ্ট সান্নিধ্যে এসে আমার তমসাচ্ছন্ন জীবন রৌদ্র করোজ্বল এবং ভাস্কর হয়ে উঠলো। দেবীদাসের দ্যুতিহীন কুঞ্জটি দুটি বিহগের কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠলো। আমি না ওর কত আপন গৃহিনী।
অবশ্য আমি যে তার নিজের গৃহিনী নই তা অকপটে স্বীকার করবো। দেবী আমাকে আদরী মাসীর কবল হতে মুক্ত করেছে। এমনকি তার ছন্নছাড়া জীবনের জীবন সাথীরূপে নির্বাচিত করার অভিলাষ প্রকাশ করেছে। অবশ্য প্রথম দর্শনেই দেবীদাসকে আমি ভালোবেসে ফেলেছিলাম ও যেদিন ময়নার অসুখ সারাবার জন্য ময়নার কাছে প্রথম মা ডাক শুনেছিলাম সেদিন হৃদয়ের মধ্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিলো।

মা হারা ময়নার মুখ হতে সেদিন “মা” ডাক শুনে আমার অন্তরের বদ্ধ দরজায় মাতৃত্বের আবেদন জোর করে আঘাত দিয়েছিলো সেদিনই আমি আমার অজ্ঞাতসারে ময়নার মাতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিলাম।

ও সব চিন্তায় যখন মগ্ন ছিলাম ময়নার ডাকে নিজেকে ফিরে পেলাম। মা আমায় হরলিক্স দেবে না?

ময়নাকে বুকে জড়িয়ে কয়েকবার চুমু খেয়ে বললাম, তোমার হরলিক্স খাবার সময় হয়েছে তা আমার মনেই ছিল না। চল তোমাকে হরলিক্স করে দিই।

ময়নাকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই দেবীদাসের গাড়ীর শব্দ পেলাম। ময়নাকে কোলে নিয়ে দেবীদাসের আগমনের প্রতীক্ষায় থাকলাম।

দেবীদাস কাছে এসে ময়নার চিবুক ধরে বলল, আমার কোলে এসো মামনি।

সর্বদা কি মায়ের কোলে চড়ে থাকতে হয় ?

দেবীর কোলে ময়নাকে চড়িয়ে দুই গ্লাস হরলিক্স তৈরী করে ওদের দিলাম। ময়না হরলিক্স শেষ করে বাপির কোল থেকে নেমে এসে পুনরায় খেলাতে মন দিলো। ময়নার দৃষ্টির বাইরে চলে গেলে পর দেবী আমাকে কাছে টানলো।

আমি বাধা দিয়ে বললাম, করো কি, এই প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে কি প্রণয়িনীর নিকট প্রেম নিবেদন করে ?

কি বললে তুমি আমার প্রণয়িনী

তা নয়তো কি?

বুঝতে পেরেছি তোমার অভিমান কি। সত্যি আমার ভীষণ ভূল হয়েছে। তা ছাড়া কাজের চাপে একেবারে সময় করতে পারছি না। আমাকে এক মাস সময় দাও, সুশীলবাবু এলেই নির্বিঘ্নে রেজিষ্টারী করে শুভকার্য সমাধা করবো। আমার ভালবাসা কোনদিনই তাচ্ছিল্য ভেবো না। দেবী আর অমানুষ নয় পদ্মা।

না? নামে আর ডেকো না। পদ্মা আর বেঁচে নেই। পদ্ম হয়ে তোমার জীবন সরোবরে বিকশিত হয়ে থাকতে চাই না। পদ্মের পাপড়ি এখন শুকিয়ে গেছে। ঝরে পড়ে গেছে সে। ও নামে আর ডেকো না। আমি তোমার প্রিয়তমা রমা।

তোমাকে এবার রমা বলে ডাকবো। আর কখনো 'ঝরা পদ্ম পাপড়িকে কুড়িয়ে এনে মালা গেঁথে রাখবো না। তোমাকে রমা রুপেই আমার হৃদয় রাজ্যে অভিষিক্ত করবো।

চলো অনেক বেলা হয়ে গেছে, তোমার স্নানের ব্যবস্থা করি। স্নান ঘরে প্রবেশ করলাম। আমি এ বাড়ীতে আসার পর তার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমাকে যোগাড় দিতে হয়। বাড়ীর চাকর / চাকরাণী সব ব্যাপারে মাথা ঘামায় না। যতদিন দেবীর কাছে থাকবে। দেবতার মতো দেবীকে পূজা করবো। কারণ, তাকে জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে মনে করেছি। তবে জানি না করে আমার সীমান্তে সিঁন্দুর দেবে।

নানা ছলা, কলা, হাসি ঠাট্টার মধ্যে দেবীর স্নান শেষ হলো। অতি যত্ন সহকারে ভোজনের পরিচর্যা করলাম প্রতিদিনের ন্যায়। তারপর বিশ্রামের ব্যবস্থা। রাত্রেও তার যাতে কোনরূপ কোন দিক দিয়ে অসুবিধা না হয় সে দিকেও সজাগ থাকি সর্ব৷৷ এইভাবে দিন অতিবাহিত হতে থাকে।

Thursday, January 5, 2023

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -33


 

ঐ ঘরের মধ্যে দিয়ে ল্যাবরেটার রুমের রাস্তা। সদর দরজায় না গিয়ে চৌবের নির্দেশ মতো অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে জানালার কাচ ফাটিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল। ভেতরে আলো জ্বলছে তবে জোরালো নয় অবশ্য ঐ আলোতে কাজ করতে কোনরূপ বাধা আসবে না। কলেজের নাড়ীনক্ষত্র দেবীর নখদর্পণে। সুতরাং E.C.G. মেসিন কোথায় কি অবস্থায় থাকে সব তার জানার মধ্যে।


ধীরে ধীরে মেসিনটার দিকে এগিয়ে চলল। হাতে উদ্যত রিভলবার। কোন জন প্রাণী নেই বলে মনে হলো, তাছাড়া এ সময়ে কারো থাকার কথা নয়। মেসিনটার কাছে পৌঁছে হাত দুটো প্রসারিত করেও মেসিনটা স্পর্শ করতে পারল না। কত বড় অন্যায় করতে চলেছে সে। একটা প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে হাজার হাজার ছাত্রদের অসুবিধার কারণ সৃষ্টি করছে। কিন্তু একটু পরেই বাধা বিঘ্নকে অতিক্রম করে তার কার্য সাধনে উদ্যত হলো।

হঠাৎ কে যেন তাকে বলে উঠল, নিজেকে বাঁচাবার চেষ্টা কর বৎস। অকালে মরবার চেষ্টা করো না। দেশের কত মানুষ কত অন্যায় করছে, তুমিই বা করবে না। কেন ?

পারল না ধৈর্য্য ধরতে, দুই হাত প্রসারিত করে E.C.G. মেসিনকে নিয়ে অতি সতর্কে বাইরে বেরুতে গিয়ে উপস্থিত হলো সুমন্তর সামনে। মনে হয় পাশের রুমে কোন কাজে ব্যস্ত ছিলো। পরে কাজ শেষ করে কোন দরকারে ল্যাবরেটরি রুমে আসছিলো। সে কখনো কল্পনা করেনি সেই মুহুর্তে সুমন্ত তার সম্মুখে হাজির হবে। তাকে দেখে হকচকিয়ে গিয়ে বলল সুমন্ত। দেবীদাস তুমি! একি E.C.G. মেসিনটা কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?

কোন কথা বলার অভিপ্রায় তার নেই। উদ্যত পিস্তল তখন সক্রিয় হতে চলেছে। বিশেষ করে তার হিংস্রতা আরোও বেড়ে গেলো তার সঙ্গে পুরাতন শত্রুতার কথাগুলো মনে উদয় হতে। কারণ তার প্রিয়তমা মুকুলকে তার কাছ হতে ছিনিয়ে নিয়েছে। এই সুযোগে ওকে দুনিয়া হতে বিদায় দেওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। আর একদিকে পথের কাঁটাকে সরিয়ে দেওয়া উচিৎ নতুবা মূর্খের কাজ হবে। উদ্যত পিস্তল ততক্ষণাৎ গর্জে উঠল। সুমন্ত মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। ততক্ষণাৎ ওখান হতে কেটে পড়ল দেবীদাস। তারপর- তারপর এক গরীবের সন্তান পৃথিবী হতে চির বিদায় গ্রহণ করল।

তখন একটিবার ভাবিনি পদ্মা, আমি কত বড় সর্বনাশ করেছিলাম। আমার অপরাধের মার্জনা হয় না। পদ্মা, আমি তোমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছি, তোমাদের যা সর্বনাশ করেছি, মর্মে মর্মে তা অনুভব করছি, সেইজন্য আমি তোমাদের কাছে শাস্তি চাইছি, আমাকে শাস্তি দাও পদ্মা, আমাকে শাস্তি দাও! দেবীদাস ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকল

থাকতে পারলাম না ওর কথা শুনে। ডুকরে ডুকরে আমিও কাঁদতে থাকলাম। দেবীদাস বেশ কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর পুনরায় বলতে শুরু করল। কিন্তু ঐ মহানুভব বন্ধুটি পুলিশের কাছে প্রকাশ করেনি আমি তাকে খুন করেছি। বরং সে পুলিশের কাছে প্রকাশ করেছিল ওর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় ।

সুমন্ত আমাকে ক্ষমা করলেও ভগবান কিন্তু শাস্তি দিতে ছাড়লেন না। আমার স্ত্রী আমাকে সন্দেহ করেছিল আমি খুনী। কারণ E.C.G. মেসিন নিয়ে সেদিন কোন প্রকারে আড্ডাতে পৌঁছুতে পারিনি। বাড়ীতে উঠতে গিয়ে চন্দ্রার কাছে ধরা পড়েছিলাম। তারপর পেপারে পরদিন সকালে বড় হরফে লেখা, “মেডিকেল কলেজের E.C.G. মেসিন যে ব্যক্তি অপহরণ করেছে, যদি কেউ তার সন্ধান দিয়ে থাকেন, তাহলে তাকে পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। এর সঙ্গে আরো ঘোষণা ছিল, মেডিকেল ছাত্র সুমন্তর হত্যাকারীকে যে ব্যক্তি ধরিয়ে দিতে পারবে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।”

পুলিশ সন্দেহবশতঃ - গ্রেফতার করে আমাকে মৃত্যুপথযাত্রী সুমন্তর নিকট হাসপাতালে হাজির করল। কিন্তু সুমন্ত আমাকে দেখে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি করল সে তার হত্যাকারীকে চেনে না। পুলিশ কাল বিলম্ব না করে আমাকে বেকসুর মুক্তি দিল। সুমন্তর মহানুভবতায় আমি সে যাত্রা রক্ষা পেলাম সত্য, কিন্তু বাড়ীতে এসে যে দৃশ্য দেখলাম তাতে মনে হলো সুমন্ত রেহাই দিলেও ভগবান আমাকে সহজে রেহাই দেবে না।

বাড়ীতে স্ত্রীর আত্মহত্যা দেখে আমি গভীরভাবে বিচলিত হয়ে পড়লাম। তার আত্মহত্যার একমাত্র কারণ, আমার স্ত্রী ধারণা করে নিয়েছিল সুমন্তর হত্যাকারী আমি। সেইজন্য আমার ভবিষ্যৎ শাস্তি ও অপমানের দূর্বিসহ বেদনা সহ্য করতে পারবে না বলেই আত্মহত্যা ছাড়া তার গত্যন্তর ছিল না।

দেবী কয়েক সেকেন্ড নীরব থাকার পর বলল, আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল। বিশষ করে মুকুলের কথায় আরো অতীষ্ট হয়ে উঠলাম। সুমন্ত তাকে সংক্ষেপে বলে গেছে মৃত্যুর পূর্বে দেবী যেন এবার প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। সে জন্য ওকে ক্ষমা করে চললাম।

মুকুল দাঁত চেপে বলেছিল, সুমন্তদার হত্যাকারী তার পরিচিত। ইচ্ছে করলে সে যে কোন সময় আসামীকে যোগ্য শাস্তি দেবার মত ক্ষমতা রাখতো। তবে সুমন্তর কথামত সে কাজ করে চলেছে। দেবীদাসের সন্দেহ থাকলেও মুকুল ও সুমন্তের মধ্যে ভাই বোনের স্নেহ মধুর সম্পর্ক ছিল।

ও কথা শুনে আমি নিজেকে আরো জর্জরিত করেছিলাম। আমি অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতরা ছিলাম পদ্মা। তুমি ই পাপিষ্ঠ, অপরাধী মানুষটাকে ক্ষমা না করে এই শয়তান। দেবীদাসকে খুন করে তোমার দাদার মৃত্যুর প্রতিশোধ নাও। দেবীদাস দেওয়ালে ঠেস দিয়ে বালকের মতো কাঁদতে থাকল। এরপর...

 এরপর নিজেকে সংযত করতে না পেরে বহুকষ্টে চোখের জল মুছে, ব্যথিত বুকে কিছু বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু তার আগে এই কথা বারংবার মনের দুয়ারে আঘাত করল, অতীতকে ভুলবার চেষ্টা করছিস পদ্মা? দাদার মৃত্যুর প্রতিশোধ কি নিবি না? না? অনিবচনিয় মানসিক যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠলাম। নিষ্পাপ ময়নার মুখখানি স্মরণ করে আমার প্রতিহিংসার আগুন নিভে গেল।

 সংযমের বল্লাকে দৃঢ় মুষ্টিতে চেপে ধরে দেবীদাসের দৃষ্টির বাইরে চলে আসতেই বাবার কথা আমার মনকে তীব্র ভাবে নাড়া দিল। বাবাকে শহরময় খোঁজ করে বের করতে হবে। বাবাকে বাঁচাতেই হবে। এই অভিশপ্ত শহরে আর থাকব না। বাবার সাথে গ্রামেই ফির যাবো। অপেক্ষা না করে অনেকদূর এগিয়ে এসেছি, এমন সময় দেবীদাসের। ডাকে কোন সাড়া না দিয়ে এগিয়ে চলেছি, দেবীদাস দৌড়ে এসে আমার পথ আগলে বলল, তুমি যেও না পদ্মা, আমাকে শাস্তি না দিয়ে তুমি যেতে পারো না। আমি অনেক অপরাধের অপরাধী। আমাকে কি নতুন করে বিশ্বাস করতে অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুর হাত হতে রক্ষে করে অপার মাতৃ স্নেহ দিয়ে মা হারার বেদনাকে মন থেকে মুছে দিয়েছো, তখন এই সময় ময়নাকে ছেড়ে যেও না। উভয়ের প্রচেষ্টায় বাবাকে এই মহানগরীর ভিড়ের মধ্য হতেও যেকোন উপায়ে খোঁজ করে বের করবই।

 তার মুখ দিয়ে একথা শুনে তার মলিন মুখ পানে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। দ্রুত পায়ে এগিয়ে দেবীদাসের বুকে আছড়ে পড়লাম। দাদার হত্যাকারী জেনেও ওর বুকে মুখ রেখে ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকলাম। দেবীদাসের চোখ ফেটে জল বেরুতে থাকল।

 কান্না ভেজা গলায় বলল, আমি তোমাকে ভালোবাসি পদ্মা। এ ভালোবাসা ক্ষণভঙ্গ র নয় মনে রাখবে। এই ভালোবাসা চিরন্তন ও শাশ্বত। তুমি আবার অন্ধকার জীবনকে এবার আলো দেখাবে। জীবনের সংকট ও দুর্যোগ মুহুর্তে তুমি দান করবে আমার মনে শক্তিশালী প্রেম। ধীরে ধীরে ওর বুক হতে মাথা তুলে ওকে প্রণাম করলাম। এরপর দেবীদাস ও আমি বাবার খোঁজে বেরিয়ে পড়লাম।