Posts

কবি ঋদেনদিক মিত্রো -এর একটি কবিতা

  শরৎ    বর্ষা গেছে থেমে,      শরৎ এলো নেমে,      হালকা শীতের হাওয়া এসে        শারদীয়ার সুখটা দিলো এনে!  কাশফুলতে ছেয়েছে মাঠ,       শুকনো হচ্ছে সব পথ ঘাট,        চলতে গিয়ে জলা কাদায়         আর যাবে না থেমে,   ঘাসের ওপর পড়ছে শিশির,       ফুলে, ফলে ভেজা,   রাত্রিকালে কুয়াশাতে          চলবে পথে কে বা?   ভোর হচ্ছে চুপিচুপি ---    রাত্রি কাটে, জেগে উঠি,        খানিক পরে কুয়াশাময়         রোদ আসলো ঘরে,   এমন দেখার কত কী সুখ,        শরৎকালে      রোদ আসলে পরে! 

কবি জয়তী দেওঘরিয়া -এর একটি কবিতা

  হতাশার মেঘ আরও একটু প্রস্তুতি ভাল থাকার। চাপা থাকা দুঃখেরে এবার  দিতে হবে ছাই চাপা।   সেই মত গুছিয়ে নেওয়ার  চলছিল পালা। সেই কবে থেকে পথ হাঁটা, এবার বুঝি নামবে শ্রান্তি! অনেকটা পথ হয়েছি অতিক্রান্ত  এবার কয়েক দণ্ডের বিশ্রাম।  কিন্তু না! অকস্মাৎ এক কালবৈশাখীর বেগ এক লহমায় করল সব চুরমার।  তীরে এসেও ভিড়লো না তরী, একবুক হাহাকার  গ্রাস করলো চারিদিক।  হতাশার মেঘ নিয়ে আবারও শুরু হোল যাপনের দিনগোনা।

কবি মৌসুমী চন্দ্র -এর একটি কবিতা

  প্রণাম মাগো মা গো ঘরে ঘরে আলপনা দেয় কত না ঘরের মা বোন। ফুল ও মালায় চন্দন ধূপে কি অপরূপ আজ প্রাঙ্গন। প্রার্থনা করি সব বিষাদ,কালো যেন দূরে দূরে যায় সরে। এস মা লক্ষ্মী বোস ঘরে আমাদের ঘরে থাক আলো করে।

কবি রানা জামান -এর একটি কবিতা

  অশ্রুর নিস্ফল প্রতিবাদ শরীর নেতিয়ে গেলো কী কারণে চোখে আবছা পর্দা পড়ে যাচ্ছে যেনো শুয়ে আছি হাসপাতালে কী কারণে কবে এসেছি এখানে বোধে নেই উঠতে ব্যর্থ হয়ে এখন উঠার চেষ্টা পরিত্যাক্ত ডাক্তার জবাব দিয়েছেন কবে ভুলে গেছি ভুলে গেছি আমি কে আমার পরিচয় কতক মানুষ কেনো কাঁদে বুঝি না! শুধু দেহ জুড়ে ব্যথাটা পারিনা ভুলতে কিছুতেই চোখ বুজে থাকে নাকি খোলা সমান ফিলিং কিম্ভূত আকৃতি নাচে অবিরাম নাচে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বোধ না থাকায় তাড়াতে চাই ইশারায় নড়ে না কিছুই! একদম না তেতোর মতোই সয়ে যাচ্ছি নাচের ভাঙ্গা রেকর্ড অন্ধকার গাঢ় হয়ে আসছে পল হতে পলে পৃথিবীর এতো আলো শেষ পুরো আমার বেলায় কান্নার ঘনত্ব বাড়ছে বুঝতে পারছি নিঃশ্বাসে কে যেনো দড়ি বেঁধে টানছে ক্রমান্বয়ে শরীরের কোনো অংশে প্রতিবাদ নেই কোনো চক্ষুকোণ বেয়ে চলছে অশ্রুর নিস্ফল প্রতিবাদ।

কবি বিধান সাহা -এর একটি কবিতা

  সার্থকতা   কিছুটা লাভের আশায় জিনিস পত্র নিয়ে সামান্য ফেরি করা অনন্ত ঐশ্বর্য নয় কোনও আশ্চর্য আলাদিনের প্রদীপ ধরাও নয় সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের শেষে কিছুটা রসদ সন্তানের মুখে তুলে দেবার মত সামান্য আয়োজন তাদের হাসি মুখের উজ্জ্বলতা শত পরিশ্রমেও সার্থক বলে মনে হয়.....

কবি উদয়ন চক্রবর্তী -এর একটি কবিতা

  জেব্রা লাইন ধরে হেঁটে যায়  অখণ্ড নীরবতা খন্ডিত নীরবতার ভ্রুনের হাত ধরে বারবার সামনে এসে দাঁড়ায় হাইফেনের মতো,নিশ্চুপ বধির ল্যাম্পপোষ্টের স্থবিরতা নিঃশব্দে রাস্তা খোঁজে-- ওদিকে দিন-দিনান্ত শেষে কিছু আকুতি অতীত শারদীয়ার একাকিত্ব বুকে হলুদ রঙ মেখে সিঁড়ির কোনায় এক বুক কথকতা নিয়ে শীত ঘুমে থাকে অবহেলায়, তারপর আর কী প্রাত্যহিক রোজনামচায় জেব্রা লাইন ধরে হেঁটে চলে জীবন ব্যথাহত যারা একটু থেমে যায় ওদিকে দৌড়ে পাড় হয় আর কেউ অদৃশ্য প্ররোচনায় কানাগলি থেকে চৌরাস্তা সে জানে না জানতেই পারে না অলক্ষ্যে কেউ খড়ির গন্ডি এঁকে রেখেছে জেব্রা লাইনের মতো।

কবি রোকেয়া ইসলাম -এর একটি কবিতা

  অনন্ত ঘুম     ভাদ্রের উতপ্ত দিনটাকেই বেছে নিলাম দীর্ঘ শীতল ঘুমের জন্য  সূর্যের আলো যতই প্রগাঢ় হোক আজ আমি ঘুমুতে চাই  টেবিলে প্রাতঃরাশে আড়ি চেনা প্লেট গ্লাস যতই ডাকুক  তবুওউঠব না আজ এলার্মে ধুলো জেগে ওঠার স্পর্শ ছুটিতে দুচোখের পাতায় অনেক ভার-বাড়াবাড়ি হুইসেল বেজে যায় নীল অনল কেতলিতে আটপৌরে জল  থরে থরে সাজানো কাপ পিরিচ অদম্য নিবির ঘুমে বিভোর সুগন্ধি সাথে নিয়ে গোলাপ ফুটুক কি ঝরে পরুক  তাতে কি আসে যায় প্রস্ফুটিত মর্নিং গ্লোরী রোদের তাপে গুটিয়ে নিক লাবণ্য সূধা বড্ড ঘুম পায় জল জোছনায় এক ঘর যাপন ষড়ঋতু খতিয়ান কে যেন একজন ডেকেছিল দূরে সবুজের আহবানে  সব রইলো পেছনে পড়ে আজ আমি ঘুমাবো ঘুমাবো শুধুই ঘুমাব অপার শান্তিতে মাটির বিছানা নিশ্চুপ  মনে রাখার তাগিদ নিয়ে  নিপাট ঘর দোর লেখার কাগজ কলম আর ফুলেল ছাদ বাগান বাজুক সেলফোন কলিং বেল বা হাত ফসকে ভাঙা কাঁচের গ্লাস ঘুমের কোন বিঘ্ন হবে না তাতে এমন নিচ্চিত ঘুম বহুদিন আসেনি  দুচোখের পাতা জুড়ে  রোদ মেঘ ফুল পাখিদের গল্প মায়াময় বুক থেকে বেরিয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস নিরব নিশ্বাস।