Posts

আবদুস সালামের দুটি কবিতা

  চাঁদ সওদাগর এবং লোনা সময়, তরী ডুবে যাচ্ছে সমুদ্রে সীমাহীন ঔধত্য টালমাটাল অসমর্থিত অস্তিত্ব ভেঙে পড়ছে ক্রমশঃ অস্তিত্বের স্বরলিপি কেড়ে নিচ্ছে মনসা প্রেমের প্রশ্রয় পেতে প্রযুক্তিগত প্রকৌশল প্রস্তুত বাতাসে মিশে যায় লবনাক্ত নিঃশ্বাস একটু একটু করে লুন্ঠিত হচ্ছে বিনিদ্র অস্তিত্ব অস্তিত্বের লড়াই চলছে বিনম্র রজনী তে সন্তান সন্ততি আজ জটিল আবর্তে মূহ্যমান দৃঢ়চেতা চাঁদ সওদাগরের আকাশে নেমে আসছে অমাবস্যা জটিল অস্তিত্বের সংবেদনশীল ঘুমের নাম সাদা মেঘ অনবদ্য আক্রোশে ঢেলে দেয় সংবেদনশীল বিষ একমুঠো পূজা পেতে অসম লড়াইয়ের মাঠে বুনে দিলাম আক্রোশ ________________________________ দৃশ্য পট শূন্যতার ধূসর পথ দীর্ঘ সময় যাপনে পূর্বপুরুষেরা কাব্যিক হয় আরব্য রজনীর নাবিকেরা বাজায় বিচ্ছেদের সুর করোনার ঢেউয়ে ভাসছে মূল্যবোধ সংঘাত মেনে হাত ধুয়ে নিয়ে সমুদ্রের ঘাটে অসহায় মা বাবা আজ প্রবন্ধ যাপনে বাধ্য স্মৃতির প্রত্নপ্রান্তরে লিখে রাখি ধ্রুপদের স্বরলিপি ভালোবাসার বাগানে শোভা পায় কুয়াশার ফুল পলিথিনের বিছানায় শুয়ে আছে ছাদহীন শহর রাত ঘুমিয়ে পড়ে শূন্যতার বালিশে   শূন্যতা ডুগডুগি বাজায় সার্কাসের জোক

মীনা সাহার দুটি কবিতা

  রাত্রির সংলাপ ঘরে ফেরার বিপন্নতা  বুকের ভিতর হু হু করে ওঠে... এক যুদ্ধকালীন রাত্রির ভিতর --  বিষণ্ন রাত্রির ভাষা ...       পৃথিবীর নক্ষত্র শহরগুলো কেমন বিষণ্ন দৃষ্টিতে ছেয়ে দিনেই নেমেছে রাতের আঁধার... সন্ত্রস্ত বুকে কেবলই গভীর আর্তনাদ -- ওই বুঝি এলো সে... তরাসে বুকের ভিতর দপ করে ওঠে -- প্ৰজ্জ্বলিত দ্বীপের নীচে এক কৃষগহ্বর... যে বন্ধু চলে গেল এই মাত্র... জাম-জরুলের ঘ্রাণ নেবে না সে আর  প্রিয় আমলকি গাছটির নীচে দাঁড়িয়ে নদীর চলমান কথা ... বৃষ্টির শব্দ শোনার বাসনায় যাঁর -- বৃষ্টিতে ভ্রুক্ষেপ নেই আর  কবিতার শরীর জুড়ে -- শুধু রয়ে যাবে খড়ির দাগ ... আর্দ্র হল দু চোখের পাতা-- যে বন্ধু চলে গেল এইমাত্র  কেবলই বিষণ্ন রাত্রির শোক .... ______________________________________   ক্রন্দসী   রেখাচিত্রের অবয়বে এঁকে রাখা জন্মান্তর .... থমকে যাওয়া আত্মার অ্যানাটমি ঘেটে ঘেটে -- এক অলৌকিক দরজায় নতুন অক্ষর সাজাই রাত্রিগত কিছু শোক ... কিছু ব্যাথা ... ঘুন পোকা বিষয়ক হিমস্নান সেরে  এক জাগ্রত নদীকথার মত জ্যোৎস্না প্রেম ... মুহূর্তের শূণ্যতায় ... বিষন্ন আঁধার মাখা সান্ধ্য শিবিরের -- এক জীবন থেকে অন্য জীবনে ... থ

স্বপ্না বনিকের একটি কবিতা

  শেষ দিনের প্রতীক্ষায় মনের গভীরে যে শুয়ে আছে    তাকে জাগানোর স্পর্ধা নেই আছে শুধু স্মরণ-মনন  ঘুমন্ত চেতনায় অকাল জাগরণ বছর গড়ায়, পাক ধরে চুলে      টুকরো কথার মিষ্টতা ছেলেবেলার দুষ্টুমির স্নিগ্ধতা   কখন হারায় বয়সের কোলে।  এখন শুধুই দিন যাপন,    শৈশবের প্রলাপের মতো,  বল্গাহীন হরিণের ক্ষিপ্র পায়ে   শুধুই ছোটাছুটি অশ্রুমোচন।  তবুও মনে অপার শান্তি  বাঁধভাঙা প্রাচীর প্লাবন প্রতীক্ষা শুধু শেষের দিনের    স্থির-নির্বাক দেহের ভ্রান্তি। 

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়ের দুটি কবিতা

  ঠোঁটে জিহ্বাতে তোমার নাম আমার ঘামের ছন্দ পড়েছে তোমার ভাসা পৃথিবীর বুকে ধুলো আর দূষণ থেকে মুক্ত করি নিজেকে শরীর নিয়ে তোমার সামনে দাঁড়াবো বলে তোমায় স্নান দিই ভরা রোদ্দুরে তৃতীয় বিশ্বের সমস্ত যানজট পেরিয়ে তোমার কাছে ধরা দিই শিশুর মতন ঠোঁটে জিহ্বাতে তোমার নাম শ্বাসনালী, গলায় মুচড়ে ওঠে মরুভূমি শরীরে ভেজা ঘাম।।  ____________________________ তোমার আমার প্রথম সকাল এই হতচ্ছাড়া ঘরে লন্ডভন্ড তুমির সাথে আমার এক সংসার,  জানলার, টেবিল, বইয়ের তাকে তুমি নামের ধুলো উদাসী মনে খিদের অনুভূতি নেই সকাল থেকে প্রচন্ড রোদ বোতাম ছেঁড়া জামার ফাঁকে  উঁকি দিয়ে যাচ্ছো তুমি তোমার আমার প্রথম সকাল মুখ লুকোচ্ছে হারানো দিনে বর্ষা ছাড়া ডাকবো কাকে আমার ফুটো টিনে।। 

সুস্মেলী দত্তের দুটি কবিতা

  বসন্ত চকিতে মন ছোটে কী হবে এতো কাজ ব্যস্ত নিশিভোর দাপুটে মন্তাজ জীবনে ধক ধক সহ্য সন্তাপে যে আছ বিনিময়ে আ মরি কার পাপে দে খুলে হিল্লোল ব্যাপক বালি চোরা ভাঙছে অর্গল অযুত আনকোরা যাকিছু শেষ শুরু আজ তা তার্কিক স্বপ্নে বেনোজলে হিসেবি সার্বিক। _____________________________ যাপন তত্ত্ব মুখ মরেছে সুখ বেঁচেছে পাথরসোনা বাটি ঈশ্বরী কে দু'ঠোঁট জড়ো আদুরী শীতপাটি আরাম ছুঁয়ে ঝগড়া করে সাতশালিখি ঝাঁক সর্ষেদানা মটর ছোলা ঘৃণ্য ঝোড়ো কাক রাজার বাড়ি প্রজার বাড়ি হতোস্মি হা দেশ আয়রে ভোলা চড়চাপাটি সুদূরে জম্পেশ রূপকথারা রইল বসে সূয্যি নামা পাটে চাতকবারি পানসুপারি তেষ্টা বুকে ফাটে শব্দহারা গোত্রহারা সে কোন বাড়ি ঘর ঘাসবিছুটি বরাত পেল দুষ্টু বাজিগর।

গোবিন্দ মোদকের দুটি কবিতা

  দুলেপাড়ার দুগ্গারা (১) জলভরা মেঘ বিদায় নিতেই  শরতের জানান দিয়ে নদীর ধারে                      ইতি-উতি উঁকি দেয় কাশফুল। শিউলির কাণ্ড-শাখা-প্রশাখা জুড়ে তখন                      তুমুল ব্যস্ততা।  ফুল ফোটাতে হবে যে ! ওদের ব্যস্ততাকে সম্মান জানিয়ে দুয়ারে এসে দাঁড়ায় শরৎ-বেলা। রোদ্দুরে লাগে সোনারঙের ছোঁয়া। চোখের আরাম আনে আশমানি আকাশ।  পরিযায়ী মেঘের দল ভেলা চড়ে আকাশ ভ্রমণে।  মা-দুগ্গা আসছেন যে ! ঘরে ঘরে মা-জননীদের তাই কতো প্রস্তুতি !  কিন্তু দুলেপাড়ার দুগ্গাদের জীবনে                        কোনও শরৎ থাকতে নেই। ওদের দু'বেলা বাবুর-বাড়ির কাজ থাকে।  লাঞ্ছনা থাকে। অপবাদ থাকে।  লোভী কামার্ত চোখের কুৎসিত ইঙ্গিত থাকে।  ওদের জীর্ণ পোশাকের ধারে-কাছেও  শরৎ আসতে পারে না।  তবুও ওদের কানে আসে ঢাকের আওয়াজ,  পুজোর মন্ত্রোচ্চারণ।  কিন্তু বাসন-মাজার শব্দের আড়ালে  ঢাকা পড়ে যায় আবাহনের বাজনা। ___________________________________ দুলেপাড়ার দুগ্গারা (২) দুলেপাড়ার দুগ্গাটা নাকি মরেছে ! গলার দড়িটা বা ওর পরনের আধময়লা শাড়িটা  মৃত্যুর কারণ জানাতে পারে না। তাই বাবুদের বাড়ি গতর খাটানো মেয়েটার 

তাপস কুমার বরের একটি কবিতা

বনলতা সেন মোরে করেছো বিরহী বনলতা শ্যাম বাঁশিতে। যমুনা তীরে দেখেছি শুধু তারে প্রেম নয়নে। কোথায় গেলে পাবো রূপসী তোরে পরীর খোঁজে। কৃষ্ণের সখা অভিসারে সেজেই আজও দূরে। কখনো তারে দেখেছো কি নয়নে তোমার স্বপ্নে। বাঁশির কন্ঠ  বোবা হয়ে পড়েছে রাধিকা স্বপ্নে। মোরে করেছো বিরহী পাগলিনী রূপ সাম্রাজ্যে।