Posts

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -16

Image
  ছয় মনের দুঃখকে লাঘব করার জন্য গঙ্গার ধারে এসে হাজির হলাম । গঙ্গার ধারে বসে আমার জীবনের অতীত ও ভবিষ্যতের দিনগুলোর কথা চিন্তা করছি , তখন পশ্চিম আকাশের আবির ছড়িয়ে গঙ্গা বক্ষে সূর্যাস্ত হল । আমি তখন চিন্তার রাজ্যে হারিয়ে গেছি । চারদিকে গাঢ় অন্ধকার ছেয়ে এলো , দূরে দূরে গাছে গাছে জোনাকির আলো এবং শিল্প নগরীর উজ্জ্বল বৈদ্যুতিক আলোগুলি আমাকে এক মায়াময় জগতের দিকে নিয়ে চলল। হঠাৎ গঙ্গার বক্ষ হতে একফালি চাঁদ ভেসে উঠল , আমি আর বিলম্ব না করে । আমার পরিত্যক্ত কুঞ্জের দিকে এগিয়ে চললাম । এসেই শ্যামলীদির বাসাতে গিয়ে । শ্যামলীদিকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকলাম শ্যামলীদি কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করায় , আমি কোন রকমে মুখ তুলে বাবার প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে পারলাম না , কারণ ঐ সময় শ্যামলীদির এক প্রণয়ী শ্যামলীদিকে কক্ষান্তরে নিয়ে গেলেন ।  লালসার বহ্নি — দ্যুতি তখন সেই অপরিচিত পুরুষের চোখে মুখে দেখতে পেলাম । শ্যামলীদির নিকট আমার মনের কথা খুলে বলতে না পারায় আমি এক অব্যক্ত যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়লাম । শ্যামলীদি অধিক রাত্রে এই নবাগত ভদ্রলোককে যৌবন রসে আপ্যায়িত করে ফিরে এলেন ।  শ্যামলীদি বাবার দুরাবস্থার কথা শু

ছোট গল্প - এখনও সময় আছে || লেখক - সুমিত রায় || Short story - Ekhono Somoy Ache || Written by Sumit Roy

Image
  এখনও সময় আছে সুমিত   রায়          কয়েকদিন ধরেই বিক্রম ক্লাসে উপস্থিত নেই।  অমিতাভ স্যারের নজরে এসেছে এটা।পড়াশোনায় ভালো যারা, তাদের উপর তিনি যেমন নজর রাখেন, তেমনি নজর রাখেন অন্যান্য ছেলেমেয়েদের উপরও। ক্লাসে অন্যান্য ছেলেদের দ্বারা বিক্রমের না আসার কারণ জানার চেষ্টা করেও, কোনো সদুত্তর পাননি-অমিতাভ স্যার।        ছাত্রদের দ্বারা অনেক জমাটবাঁধা ইচ্ছা পূরণ করার কথা ভাবতে ভাবতে অমিতাভ স্যার বাড়ি ফিরছেন মাটির কাঁচা রাস্তা দিয়ে। এই রাস্তা ব্যবহার করলে অনেকটাই তাড়াতাড়ি বাড়ি পৌঁছান অমিতাভ স্যার। মাটির রাস্তা বলে,সেই রাস্তা অনেকেই এড়িয়ে চলেন। লোকের চলাচল খুব একটা হয়না দেখে, রাস্তার ধারেই আড্ডা বসে এলাকার  নেশাগ্রস্ত ছেলেদের। অমিতাভ স্যারের সাইকেল কাদায় আটকে যায়। তিনি নেমে পড়েন। পাশে তাকাতেই, নজরে পড়ে কতগুলো ছেলের সাথে বিক্রম বসে আছে, খারাপ আড্ডায়। তিনি বিক্রমকে ডাকলেন। স্যারকে দেখে সে ভয়ে তটস্থ। অমিতাভ স্যার ছাত্রদের যেমন ভালবাসেন, তেমনি শাসনও করেন। এই কারণেই ভয়ে জড়োসড়ো বিক্রম স্যারের ডাকে কাছে আসতে চাইছে না। স্যারের  বারবার ডাকার ফলে একসময়  স্যারের সামনে এলো- বিক্রম। কাছ

উপন্যাস - তান্ত্রিক পিসেমশাই ও আমরা দুজন || সুদীপ ঘোষাল || Tantrik Pisemosay oo Amra by Sudip Ghoshal || Fiction - Tantrik Pisemosay oo Amra Dujon Part -4

Image
  ৭ পিসেমশাই  বলছেন, নাতি বয়স বাড়লেই পাবে তিনপুরুষের পরশ...।তারপরেই হয়ত মনোজের মত হবে তার অবস্থা।মনোজ ভাবে, তখন আমার আস্তানা নদীর ধারের বাংলোয়। ঘোর অমাবস্যার অন্ধকারে বসেছিলাম বারান্দা। সব কিছুর  মাঝেই ঋতুজুড়ে আনন্দের পসরা সাজাতে ভোলে না প্রকৃতি।  সংসারের মাঝেও সাধু লোকের অভাব নেই।  তারা মানুষকে ভালোবাসেন বলেই জগৎ সুন্দর  আকাশ মোহময়ী, বলেন আমার মা। সব কিছুর মাঝেও সকলের আনন্দে সকলের মন মেতে ওঠে।  সকলকে নিয়ে একসাথে জীবন কাটানোর মহান আদর্শে আমার দেশই আদর্শ।সত্য শিব সুন্দরের আলো আমার দেশ থেকেই সমগ্র পৃথিবীকে আলোকিত করুক। এইসব চিন্তা করছি এমন সময়ে  হঠাৎ আমার কানের পাশ ঘেঁষে বেরিয়ে গেল সশব্দে এক গুলি। আমি অবাক। জঙ্গলের ভিতর আমার বাংলোর হদিশ কেউ জানে না নিজের লোক ছাড়া। তাহলে আমাকে গুলি করে মেরে ফেলার লোক কে?  পেশায় আমি গোয়েন্দা। শত্রুর অভাব নেই। কিন্তু আমার এই গোপন বাংলোর খবর পাঁচজন জানে। তারা সকলেই আমার নিকট আত্মীয়। আমার বৌ, ছেলে, রমেন, পিয়ু আর শ্যামল। বৌ, ছেলেকে সন্দেহ তালিকায় রাখি কি করে?  তবু...আর রমেন, পিয়ু আর শ্যামল তিনজনই আমার খুব ভাল বন্ধু। তাহলে কে?  কে? কে? এই রহস্যে মোড়া ব্যক্তি।তা

ছোট গল্প - সম্পর্ক || লেখক - অরুণোদয় ভট্টাচার্য || Short story - Somporko || Written by Arunodoy Bhattacharya

Image
  সম্পর্ক                       অরুণোদয় ভট্টাচার্য সুরঞ্জনের অতটা বিহ্বল হবার কথা নয় ।হোতও না যদি খানিকটা কাকতালীয় বা ইংরিজিতে যাকে স্ট্রেঞ্জ কোয়েনসিডেন্স বলে, সেরকম একটা না ঘটত ।নিজের ছাত্রজীবনে কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ চৌকস যুবকদের সারিতেই সে ছিল ।মাঝে মাঝে নাটক আবৃত্তিতে অংশ নিয়ে প্রশংসা পেয়েছে ।অধ্যাপক-জীবনে নবীনবরণ ও শিক্ষক বিশেষের বিদায় সম্বর্ধনা সভায় অনেক বক্তৃতা দিয়েছে ।সহকর্মী ও কর্মিনীরা তাকে যথেষ্ট স্মার্টই ভাবে ।এমন কি ইতিহাসের কাকলী দত্ত একদিন বলেছিল, প্রফেসর মুখার্জী, আপনি কিন্তু ভারি ঠোঁঠকাটা । আসল ব্যাপারটা হল, প্রচুর উপন্যাস ও প্রেমের কবিতা পড়লেও মেয়ে-ঘটিত দুর্বলতা সুরঞ্জন কখনো অনুভব করে নি ।অনেক অল্প বয়সেই মেয়েদের কলেজে অধ্যাপকের চাকরি পেয়েছে ।প্রথম প্রথম অনেক মেয়েই ওকে যাচাই করতে চেয়েছে ক্লাসে ও ক্লাসের বাইরে ।চিঠি দিয়ে, মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে, এমন কি ‘স্যার, আই লাভ ইউ!’ বলে ।কিন্তু সুরঞ্জন মোটামুটি নির্বিকার ভাব বজায় রাখতে পেরেছে ।অথচ আজ, পনের বছর অধ্যাপনার পর, ঘরে বৌ ও তার বন্ধুনিদের দল এবং কলেজে সহকর্মিনী ও অজস্র ছাত্র্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করার পরও, সে কিনা হঠাৎ একট

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -15

Image
  ব্যাস আর যায় কোথা , আমার মুখ দিয়ে বাবা উচ্চারণ হতেই মনটাকে আর স্থির রাখতে পারলাম না । বাবার স্মৃতি আমাকে উতলা করে তুলল । এতদিন ভুলেছিলাম । বাবাকে , ভুলেছিলাম অতীতকে । কোন দিন আমর মনকে জিজ্ঞাসা করিনি , আমার অসহায় , দৈন্য পীড়িত বাবা কেমন আছেন । আমি বড় স্বার্থপর হয়ে গেছি । এ পথের যাত্রী হয়ে বাবার কথা প্রায় ভুলতে চলেছিলাম । আজ বাবার কথা মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসতেই মনটা বড় কেঁদে উঠল ।  তাই আদরী মাসীকে তাচ্ছিল্য করে শ্যামলীদি আমার মুখপানে তাকিয়ে বলল , আয় বোস এই কাজটা শেষ করে তোর সাথে কথা বলছি ।  দেখলাম শ্যামলীদি ওর ডায়েরীতে লিখছে , অদ্যাবধি দুটো বছর কেটে গেলো , তবুও আমার হিতৈষী বন্ধুকে পেলাম না । তবে তুমি ভেবো না বন্ধু , যেখানে যেভাবে নিজেকে আত্মগোপন করে থাক না কেন , একদিন তোমার দেখা পাবই । তোমার অন্বেষণে সর্বদাই সজাগ আছি । তোমার প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত আমার তৃষ্ণা কোনদিনই মিটবে না । আমার ক্লেদাক্ত জীবনে আমি শান্তি পাবো না ।  লেখা শেষ হতেই বলল , এই ডায়েরী লেখা দ্যাখ , আমার জীবনের জ্যোতির্ময় দেবতার অদৃশ্য সংকেত দেখতে পাবি । যার সঙ্গে আমার জীবন ছিলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত । যাকে নিয়

ছোট গল্প - সুজাতা ম্যাম || লেখক - আভা সরকার মন্ডল || Short story - Sujata mam || Written by Ava sarkar mandal

Image
  সুজাতা ম্যাম      আভা   সরকার  মন্ডল                     আমেরিকা থেকে পাঁচ বছর  পর দেশে ফিরল তিতলি। এয়ারপোর্টে পা রেখেই বুক ভরে শ্বাস নিয়ে আপন মনে বলল ---- আহ্ শান্তি ! নিলয় হাসছে--  ----শান্তির হাওয়া বেশি করে খাও ।দু 'সপ্তাহ মাত্র ।এবার গেলে পাঁচ বছরের আগে আর আসা হবে না । --- তিতলির মুখ কালো হয়ে যায়।ভালো লাগে না তার আমেরিকা। নেহায়েত নিলয় তার প্রেমে হাবুডুবু আর সেও ভালবাসে নিলয় কে তাই ....          গাড়ি থেকে বড় রাস্তায় নেমে সরু গলির ভেতর তাদের বাড়ি ।গাড়ি ভেতরে ঢুকবে না। বড়ো বড়ো দুটো ট্রলি ব্যাগ এবং হাতেও ছোটো বড়ো চারখানা ব্যাগ সহ গাড়ি থেকে নামল তারা।সবার জন্য টুকিটাকি জিনিসপত্র কিনতে কিনতে বোঝাটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। তবু তিতলির মন ভরেনি । প্লেনে উঠতে দেবে না বলে,নিলয় ভয় না দেখালে সে আরও একটু কেনাকাটা করত! বাবা আর ভাই গলির মুখে দাঁড়িয়ে আছে। বাবা একহাতে নিলয় অন্য হাতে তিতলিকে জড়িয়ে নিলেন। ... রাস্তায় কষ্ট হয়নি তো মা তোদের? ----একদমই না তিতলি বলল। ... এমা! দিদি,তুই কত রোগা হয়ে গেছিস ।ভিডিও কলে তো এতটা রোগা মনে হয় না। ..... আর তুইও তো ফুটবল হয়ে গেছিস ।