Monday, November 22, 2021

কবি কমল মন্ডল -এর একটি কবিতা

 চেনা গন্ধ 

                   


সুন্দরতাকে উপেক্ষা করে তুমি চলে গেছো সাফল্যে

আমি জানি, তুমি চলে যাবে স্নান ঘরে 

শরীর ভিজিয়ে ভাববে নাতো আমায়

স্বপ্ন খুঁজে পাওয়া যায় সকল মধু 

আমি ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ি নরম শাড়িতে।

চুড়ির চেনা শব্দ কানে বাজে আমার 

কেউ কোথাও নেই 

কে ওখানে দাঁড়িয়ে। কেউ কোথাও নেই 

একটা খুব চেনা গন্ধ ঘরময় ছড়িয়ে 

আমাকে জড়িয়ে ধরলো, গলা শুকিয়ে গেছে 

কাঠগলায় বললাম কে ওখানে দাঁড়িয়ে 

কোনো আওয়াজ নেই!

মেয়ের কান্নায় ঘুম ভেঙে যায়। 

কবি আবদুস সালাম -এর একটি কবিতা

 অবিশ্বাস মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে



অবিশ্বাসের ছাতা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি

ধর্ম প্রচারের দ্বায়ীত্বে আছেন ধর্ষক বাবা

অসহায় রাস্তায় পাহারা দিচ্ছে পঙ্গু পুলিশ

ধর্ম প্রাণ মানুষ পুলিশের হাতে গুঁজে দিচ্ছে বরাদ্দ মাসোহারা

এটাই নাকি অলিখিত সংবিধান


ইহকাল নিয়ে বিজ্ঞাপনের পাতা ভরাট হয়

সংকেত পাঠাচ্ছে পরকাল

দীর্ঘরাত অসহায় বারান্দায় ঘুমায়

বয়ঃসন্ধির বিজ্ঞাপন ঝুলছে ধর্মবেদীর দূয়ারে


সকাল সন্ধ্যা পূজা করি যৌন মানবের

অসহায় ঝরে পড়ছে বিবেকের বারান্দায়

Sunday, November 21, 2021

কবি সুব্রত মিত্র -এর একটি কবিতা

 রোষের মুখে কালক্রম



উদঘট পাথরে জীবনের নাম লেখা

জীবন দরিয়ায় মায়া-মমতার ছবি আঁকা;

কল্পনার বিষ পাথরে তামাশারা গল্প লেখে

পরিণতির পরিহাস সদাহাস্য বারো মাস--

বাস্তবের কালিমা আছে গায়ে মেখে।


সৃষ্টির লীলাভূমি তুমি মোর প্রিয়তম

শত দুর্গতি এসে যায় কপালে তবু --- ---

তবু যেন হও তুমি স্বর্গ সম,

এখনো তো ঝড় হয়; ভাঙে ঘরবাড়ি;

আমি অদ্ভুদ স্রোতের মাঝে অলিখিত প্রতিরোধ

এক অদৃশ্য শক্তির সহযোগে রুখে দাঁড়াই আড়াআড়ি।


সরল আর সহজের হাটে সাধনারা ফিকে হয়

দূর্মূল্যের বাহারি রংমশাল আজকাল বড় সম্মান পায়,

অবচেতনার সিঁড়ি বেয়ে প্রজন্ম ক্রমশ ঝরে পড়ে সময়ের পায়ে

কর্মেরা আগাছার দিকে তাকায়;

বিচ্ছিন্ন গতিপথে মানুষেরা সংঘবদ্ধতা হারায়,

ব্যবধান লেখা থাকে মানুষের চেতনায়

ব্যবধান লেখা থাকে মানুষের ভাবনায়,

তৎক্ষণাৎ উর্বর গতি রেখার দিকে সকলে ধেয়ে যায়

ক্রমান্বয়ে দূরদর্শিতার অভাব দেখা যায় এই সময়।


এই সকল ভাবনার ঊর্ধ্বে উঠে---------

কালের জয়ের কথা রেখে গেলে কালজয়ী হওয়া যায়

সমকালে কোনদিন যদিও জীবন হয় অমলিন

নাভিশ্বাস আর দীর্ঘশ্বাস আসবে না কোনদিন;

তবু তারা কেহ কেহ ছুটে যায় প্রান্তকে ভেদ করে

মর্মবাণীর 'পরে মর্মেরা শুয়ে পড়ে,

আমি জীর্ণ চেতনায় শীর্ণ হয়ে জেগে থাকি ঘুমোঘরে।

একবার দেখে যাও,শুধু একবার পৃথিবী যাও তুমি দেখে

এই ভগ্ন হৃদয়ের শক্ত দেওয়াল হতে--------

ক্রন্দন ভেসে আসে রাতে দিনে দুপুরে।


পৃথিবীরা সুখে থাকে; লড়াই করে বাস্তব,

মূর্খেরা করে বড়াই তবুও থামেনা সে লড়াই

বেহিসেবী খাতা কলম দিয়ে যায় মুখরোচক মলম

নিঃস্ব হয়ে পড়ে থাকে ন্যায্য চেতনার সামাজিক অনুভব।

কবি জয়িতা চট্টোপাধ্যায় -এর একটি কবিতা

 আমার অসুখে



আমার অসুখ বেড়ে ওঠে যেমন বেড়ে ওঠে লতা

পরম গুহায় নামে তুমি নামের বৃষ্টি

দুচুমুক স্নান করে আমার কবিতা

তোমার কাছে রেখে যাই দংশনের দায়

দুঃখ ভিজে যায় পুরনো পাতার মতো

আয়ুর মতো জেগে থাকে ঘুম ঠায়

তুমি এসে চলে যাও নিজের আড়ালে

স্রোত থেকে স্রোতে প্রেম কাঁদে

প্ররোচনা দেয় অসুখ শরীর

সামনে এসে দাঁড়ালে মিশে যাও তুমি

আর তোমার পাঞ্জাবি আকাশের নীলে

বৃষ্টির মুদ্রিত রূপ আমার কবিতায়

আমায় অসুখ নিয়ে তুমি জড়িয়েছিলে

সমস্ত মৃত্যু আজ লেগে থাকে শ্রাবণের গায়ে

আমার অসুখে পৃথিবী আজ নিজেকে লুকায়।

কবি সুমিত্রা পাল -এর একটি কবিতা

 কি চায় জনগণ




ওগো নেতানেত্রীগণ,

শোনো দিয়া মন,

আমরা চাইনা ভিক্ষার দান,

সে দানে বাঁচেনা প্রাণ!

আমরা চাই উন্নয়ন ,

আমরা সাধারন জনগন।


ওগো নেতানেত্রীগণ,

শোনো দিয়া মন,

চাকরির আশায় খইছে জুতো,

আমরা চাই নাই এই বেকারত্ব।

আমরা চাইনা অবিচার !

চাই আমাদের ন্যায্য অধিকার।


ওগো নেতানেত্রীগণ ,

দাঁড়িয়ে যাও কিছুক্ষণ!

কি চাই দেশের জনগণ?

বাবা-মা-ভাই-বোন ,

বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজন ,

শোনো দিয়া মন।


ওগো নেতানেত্রীগণ,

একটু বোঝো কি চায় জনগণ!

আমরা চাই না ঐ সিংহাসন!

শুধু চাই, বেঁচে থাকার মতো উপার্জন।

চাই কর্মব্যস্ত জীবন,

চাই সুস্থ শরীর, সুস্থ মন।


ওগো নেতানেত্রীগণ ,

আমরা চাই নিরাপদ জীবন।

আমাদেরও আছে আত্মসম্মান,

চায়না চলে যাক তাজা প্রাণ ।

চাই মানুষ হওয়ার দীক্ষা,

পেতে চাই সঠিক শিক্ষা।

এটুকু তো চাওয়া,

তাও হয় না পাওয়া!


ওগো নেতানেত্রীগণ,

করো একটি পণ, 

পেয়ে বিজয় সিংহাসন ভুলবেনা ধর্ম ,

ভুলবেনা নিজের কর্ম ।

মনে রেখো, সকল মানুষজন, 

সবাই তোমার আপন জন।

কবি অভিজীৎ ঘোষ -এর একটি কবিতা

 চাওয়া-পাওয়া




চাইলি কেন হাসনুহানা,ভাবছি

 তোকে গোলাপ দেবো;

বাইক চড়ার সখ ছিল তোর, 

পক্ষীরাজে সঙ্গে নেবো। 

খেয়াল বশে বায়না সেদিন,প্যারিস 

নাহয় ফ্রান্সে যাবি;

নিয়ে গেলুম নরওয়ে, বললি 

সেথায় ফুচকা খাবি। 

আবার প্রাণে শখ ছিল তোর

নাইতে যাবি নায়াগ্রাতে, 

স্নানের শেষে মিশর যাবি

প্রখর রোদে চুল শুকাতে। 

যেতেই হলো আফ্রিকাতে

তোরই অভিমানের বশে, 

ফিরতে হলো অস্ট্রেলিয়ায়

প্রেম-পিরিতির দারুণ জোশে। 

আমার শুধু চাওয়ার ছিল

তোর সঙ্গ দু-দশ জনম;

হৃদয় ভরা সেই ক্ষতটা, ঢাকতে

যে তুই লেপলি মলম।

কবি সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক -এর একটি কবিতা

 দিশান্তর



জহান্নমের তখতে বেশ বেশ আছি বসে।

ফুরফুরে ফুলেল আমেজ মগজের কোষ-কোষান্তরে

যেন হাসাহাসির ফুলঝুরি।

এরপর আধবোজা চোখে ঢুলঢুলু বিক্রম ত্রাস

ছড়ায় নাভিশ্বাসে।

চকিতচপলা মুহূর্তের ঘরে অতিঘন অকাতরে

বাজে দুন্দভি, হঠাৎ ওড়ে রাতজাগা ত্রস্ত পাখী,

বিষ-বিষয়ে নারাজ আকুলতা

তথাপি খোঁজে একখণ্ড বাতিল অনাবাদী জমি-

সেখানেই আবার আবার বসত-নির্মাণ,

নির্মিত ইমারতে একমুঠি বাচাল অকাল আকাশকুসুমে

ভর্তি হাওয়ায় শুধুই কালাতিপাত,

ধোঁয়াশায় এখনো অন্তরাল স্পষ্ট স্পষ্টতর

যেদিকে প্রত্যাশায় জন্নত-সরণী।

কবি রানা জামান -এর একটি কবিতা

 ময়ূর

    


পালক খসিয়ে চলে যায় ময়ূর সুদূরে

মুঠো ফসকে; চড়ুই সামান্য দানাপানি

খেয়ে খড়ের বাসায় থাকে ঘুমিয়ে; পেছনে

ফাইভস্টার হোটেলের খাদ্যের সুবাসে

জিভ থেকে লালাটা ঝরায় না টোকাই

প্রাকৃতিক নিয়মে ঘাসের ডগায় শিশির

বসে পাওনাটুকু বুঝে নেয়

সূর্যালোক থেকে; কৃষকের উদাসিনতার

সুযোগে কিটানু হুল বসায় কোলের

ফসলে; গ্রহণ লাগে ভরা পূর্ণিমায়

দিন যায় রাত আসে; এর চক্রে

প্রতিনিয়ত কতক তারা খসে; কিছু অনাঘ্রাতা

গাড়িতে আগুন লাগিয়ে ধরায় সিগারেট।

কবি নীতা কবি মুখার্জী -এর একটি কবিতা

 শিশু-মঙ্গল




শিশু দিবসের মহান লগ্নে শিশুদের ভালোবেসে

স্নেহ চুম্বন দিয়ে যান যেন দেবতা মাটিতে এসে।


মাতৃহারা, অনাথ শিশু সহায় সম্বলহীন

একটু সহায় হবে কি তোমরা?শোধ হবে মনুয‍্যত্বের ঋণ?


হোটেলে , বাজারে ,রেস্তোরাঁতে যত শিশু মজদূর

ছিঁড়ে ফেলে দাও শৃঙ্খল তার, অবহেলা করো দূর।


শিশুরা হাসবে, খেলবে, গাইবে, আনন্দে মতোয়ারা

সেই সুযোগেই শিখে নেবে তারা জীবনবোধের ধারা।


ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হোক বা না হোক মানুষ তো হোক আগে

বিবেক- বুদ্ধি, পরোপকার আর মনুষ্যত্ব যেন জাগে।


বিদেশে গিয়ে টাকা রোজগারের যন্ত্র যেন না হয়

আর্ত-দুখীর পাশে থেকে যেন সমাজের ভার বয়।


এই সমাজের পিতা মাতা আর অভিভাবকের দল 

চাপিয়ে দিচ্ছে প্রত‍্যাশার বোঝা,শিশুরা যে টলমল।


সুন্দর আর নিষ্পাপ শিশুকে ঠিক মতো দাও বাড়তে

অতিরিক্ত আকাঙ্খার বোঝা চাপিও না তাকে মারতে।


ছোট্ট কুঁড়িরা হতাশায় ভোগে প্রতিযোগিতার ভিড়ে

মৃত্যুর কোলে সঁপে দেয় তাদের, অসহায় নিজ নীড়ে।


একটি ফুলকে যত্ন করে পালন করো গো মা

বিদ্যাসাগর, নেতাজীর মতো করে তোলো উপমা।


আমার দেশের, আমার মাটির ছোট্ট কুঁড়িশিশু যত

ফুটে ওঠে যেন কোমল কুসুম, শতদল শত শত।


স্বার্থপর এই দুনিয়াটাতে পথশিশু আজ বড়ো বিপন্ন

ঘরে ভাত নাই ! কে তুলে দেবে তাদের মুখে দুমুঠো অন্ন?


সারাদিন ধরে কাগজ কুড়ায় ছেলেটা পাড়ায় পাড়ায়

কখনো আমরা চোর বলে তাকে পুলিশ ডেকে ধরাই!


শোনো রে মানুষ ভাই,

 পৃথিবীতে এসে ভালো কিছু করো যাতে ওরা বেঁচে যায়।

কবি আশীষ কুন্ডু -এর একটি কবিতা

 আলোর পথে 



আলোর সিঁড়ি বেয়ে চুপ সময়

ওঠা নামা প্রহর গোনে মনোময়

সুখ আকাশ এক ঝাঁক পায়রার 

সফেদ মেঘের ভেলায় ফেরার

টুকরোয় নামে আলোর বাসর

হাটের সীমানায় নাবাল প্রান্তর

তোমায় লিখবো ভেবে সাদাপাতা

এক ঝাঁক শব্দের খাঁচায় খাতা

মন কি বলে সবটাই হয় না শব্দে

আরও কিছু ঝকমারি শব্দজব্দে।

কবি মহীতোষ গায়েন -এর একটি কবিতা

 সানাই



রাত খুন হয়ে যাচ্ছে আর

গাছের তলায় বসে সানাই

বাজাচ্ছে মাতাল প্রেমিক,

প্রেমিকা বাসবদত্তার বাসর

পুড়ছে লোভের আগুনে...       

কবি তৈমুর খান-এর একটি কবিতা

 সংশয়ের সিলেবাস 



নিজেকে গড়ানোর প্রক্রিয়া কী

সমাজের কীভাবে উন্নতি হবে

কল্যাণ কল্যাণ বলে যাকে ডাকি

সে কি প্রকৃত কল্যাণ?

এসবই সংশয়ের সিলেবাস

রোজ সূচিপত্র দেখে দেখে

ধ্বংসাবশেষ হাতড়াই

সময়ের মরালাশ বজ্রের আলোয় চকচকে

বিভূতি উড়িয়ে দেখি শুধু হাড়

বেঁচে থাকা যদি নদীর মতো হয়

বিশ্বাস যদি পাহাড়ের মতো

তাহলে ধ্বংসাবশেষই সংশয়

আলো জ্বেলে কিছুই দেখা যায় না

অথচ অন্ধকারে স্পষ্ট হয় কল্যাণের মুখ।

১৭ তম সংখ্যার সম্পাদকীয়


 

                                       অঙ্কন শিল্পী- মৌসুমী চন্দ্র


___________________________________________________


সম্পাদকীয়



নদীর মত বয়ে যাওয়া ভাষাশৈলী কে বুঝতে হলে প্রয়োজন সমুদ্র সুলভ মন। কারণ একটাই নদীর শেষ ঠিকানা সমুদ্র। আজ এগারোতম সংখ্যা প্রকাশিত হল। এতদিন লিখছেন, পড়ছেন আমাদের ব্লগ ম্যাগাজিন। পাশে আছি আমরা পরস্পরের কাছে। ভালোবেসে পড়ুন পত্রিকা। লেখা গুলি হৃদয়ে অন্তর্নিহিত করে তাৎপর্য বুঝতে শিখুন। জানান প্রতিটি লেখার মন্তব্য। তাই আমাদের ওয়েবসাইট ম্যাগাজিনে লেখা পাঠান, অন্যের লেখাকে গুরুত্ব দিয়ে পড়ুন। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। পড়তে থাকুন আমাদের পত্রিকা।

 

 

                                      ধন্যবাদান্তে

                     World sahitya adda সম্পাদকীয়


___________________________________________________

**Advertisement  (বিজ্ঞাপন):



১)


___________________________________________________

২)


বইটি সরাসরি পেতে-- 6291121319
___________________________________________________


৩)


##উত্তরপাড়া,সিঙ্গুর এবং কোলকাতার বেহালায় এছাড়াও যে কোনো প্রান্ত থেকেই যেকোনো ক্লাসই অনলাইনে করতে পারবেন। 

এছাড়া কেউ যদি সরাসরি অফলাইন এ ভর্তি হতে চান যোগাযোগ করুন এই নাম্বারে-- 9330924937
______________________________________________________________________________________________________


বি. দ্র. -- বিজ্ঞাপন এর সমস্ত দায়িত্ব বিজ্ঞাপন দাতার