Sunday, January 30, 2022

নিবন্ধ || ভারতে ডিজিটাল শিক্ষা || শিবাশিস মুখোপাধ্যায়

  ভারতে ডিজিটাল শিক্ষা


এই ডিজিটাল যুগে, অনেক শিক্ষার্থী ধীরে ধীরে প্রকৌশলের পাশাপাশি প্রোগ্রামিং ভাষা এবং প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম সহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে অনলাইন ডিজিটাল কোর্সের দিকে ঝুঁকছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, সারা বিশ্বে ডিজিটালভাবে অসংখ্য কোর্স উপলব্ধ রয়েছে। ডিজিটাল লার্নিং হল একটি উন্নত প্রযুক্তিগত মাধ্যম যা শিক্ষার্থীদের প্রচুর নমনীয়তা প্রদান করে, যা তাদের সময়সূচী এবং সময়সূচী নিয়ে চিন্তা না করে যেকোন সময় তাদের নিজস্ব সুবিধাজনক গতিতে যেকোনো স্থান থেকে অধ্যয়ন করতে দেয়। এটি শিক্ষার্থীদের তারা কী শিখতে চায় এবং কী না তা অনুসরণ করতে দেয়। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সম্প্রসারণ শিক্ষা প্রদান ও উপলব্ধি পদ্ধতিতে নতুন পরিবর্তন আনছে। শিক্ষার ডিজিটালাইজেশনের সাথে সাথে শিক্ষা কার্যক্রমের আউটরিচ দিন দিন আরও উন্নত হচ্ছে। ডিজিটাল শিক্ষা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়কেই শেখানোর, শেখার এবং বেড়ে উঠার নতুন সুযোগ প্রদান করছে যার ফলে সামগ্রিক শিক্ষার প্রক্রিয়ার উন্নতি হচ্ছে।

নতুন প্রযুক্তি-সহায়তা শিক্ষার সরঞ্জামগুলি গ্রহণের ফলে স্কুল এবং কলেজগুলিতে শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ইন্টারনেট অব থিংস তরুণদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটি সাশ্রয়ী উপায়ে পরিণত হচ্ছে এবং প্রত্যেকের জন্য অভিজ্ঞতামূলক শিক্ষাকে একীভূত করার একটি শক্তিশালী উপায়। ডিজিটাল লার্নিং কোম্পানিগুলি ক্রমাগত উন্নত সমাধানগুলিতে আপগ্রেড করছে এমন লোকেদের জন্য শিক্ষার অ্যাক্সেস বাড়ানোর জন্য যারা বর্তমানে সঠিক শিক্ষা সুবিধা পেতে সংগ্রাম করছে। শিক্ষকদের ভূমিকা বদলে যাচ্ছে। তারা এখন ডিজিটাল স্ক্রিনের মাধ্যমে পুরো শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করতে পারবে। শিক্ষার্থীদের নাগাল এবং ব্যস্ততা বেশি কারণ এটি বিভিন্ন নির্দেশমূলক শৈলীকে একত্রিত করে। নিজের ঘরে আরামে বসে পড়াশোনা করার জন্য এটি একটি খুব নমনীয় উপায়। শিক্ষার্থীরা এখন অধ্যয়ন, অভিজ্ঞতা, স্ব-মূল্যায়নের মাধ্যমে তাদের শেখার পরীক্ষা করতে পারে এবং এমনকি তাদের অগ্রগতি রাখতে পারে। ডিজিটাল মাধ্যমটি কর্পোরেট প্রশিক্ষণের জন্যও আদর্শ, কারণ এই অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্মগুলি দক্ষ, নমনীয় এবং শক্তিশালী প্রক্রিয়া। অনেক কোম্পানি এখন তাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে, তাদের দক্ষতা আপগ্রেড করতে এবং জ্ঞান স্থানান্তরের জন্য নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাবর্ষ প্রদান করতে ব্যাপকভাবে ডিজিটাল শেখার সরঞ্জাম ব্যবহার করা শুরু করেছে। বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল শিক্ষার জন্য বেছে নেওয়া তরুণদের সংখ্যা বাড়ছে। ডিজিটাল শিক্ষার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল যে একবার তৈরি করা সম্পদ আগামী প্রজন্মের জন্য একাধিকবার ব্যবহার করা যেতে পারে।  

অনলাইন কোর্স একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে স্ব-শিক্ষাকে শক্তিশালী করছে। ভারতে অনলাইন প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনলাইন কোর্সের জনপ্রিয়তা একটি ক্রমবর্ধমান আন্দোলন। তারা দেশের তরুণ মনকে তাদের যোগ্যতা এবং দক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করছে এবং লক্ষ লক্ষ ভারতীয়দের দক্ষতা-ভিত্তিক কোর্সের একটি পরিসরে অ্যাক্সেস অর্জনের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থানের উন্নতি করতে সাশ্রয়ী মূল্যের শিক্ষায় অ্যাক্সেসের অনুমতি দিচ্ছে।

এটি ছাত্র এবং কর্মরত পেশাদারদের যেকোন জায়গা থেকে এবং যে কোন সময় তাদের নিজস্ব সুবিধায় অধ্যয়ন করতে সহায়তা করে। অধিকন্তু, এই প্ল্যাটফর্মের অধীনে অফার করা বেশ কয়েকটি কোর্স একটি বৈধ শংসাপত্র প্রদান করে যা প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাগুলি দ্বারা যথাযথভাবে স্বীকৃত। স্মার্ট এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তি দেশের সামগ্রিক শিক্ষা কাঠামো পরিবর্তন করছে। গ্রামীণ ভারতে ডিজিটাল শিক্ষার অনুপ্রবেশ দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহারকারীর ডেটা থাকে, যা তাদেরকে মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমগুলি ব্যবহার করে মানুষের শেখার ধরণগুলিকে উন্নত করতে সক্ষম করে । 

গ্রামীণ সেক্টর পুরানো পাঠদান পদ্ধতি, শিক্ষকের অভাব, অপর্যাপ্ত ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত এবং অপর্যাপ্ত পাঠদান সংস্থানগুলির মতো সমস্যাগুলি রয়েছে। শিক্ষার ডিজিটাইজেশনের সাথে সাথে, পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের, প্রধানত গ্রামীণ এলাকায়, শিক্ষাদানের সরঞ্জাম এবং পদ্ধতির সাহায্যে শেখানো হচ্ছে। এই প্রযুক্তি শিক্ষকদের সাহায্য করছে এক সময়ে ছড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের সাথে দূরবর্তীভাবে সংযোগ স্থাপন করতে। এটি অবশ্যই অদূর ভবিষ্যতে ছাত্র শিক্ষক অনুপাতের ব্যবধান পূরণে সহায়তা করবে। ভারতের জনসংখ্যার অধিকাংশই ইংরেজি পড়তে বা লিখতে অক্ষম, কিন্তু প্রযুক্তির সাহায্যে শেখার উপাদান ডিজিটালভাবে আঞ্চলিক ভাষায়ও উপলব্ধ করা যেতে পারে। 

ইন্টারনেট অনেক বেশি সাশ্রয়ী এবং অ্যাক্সেসযোগ্য হওয়ার সাথে সাথে, ডিজিটাল শিক্ষা অদূর ভবিষ্যতে শেখার নতুন উপায় হবে। দেশে ডিজিটাল শিক্ষার বাজার বাড়াতে সহায়তা করবে এমন নীতি নিয়ে আসার মাধ্যমে সরকারও এটিকে সমর্থন করছে। 

অ্যাডভান্স লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস (এলএমএস) এর সঠিক জ্ঞান ব্যবস্থাপনার সরঞ্জামগুলি ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলির দ্বারা অফার করা শিক্ষাগত কোর্সগুলির নকশা এবং বিতরণের উন্নতিতে সাহায্য করবে৷ ডিজিটাল প্রযুক্তিও ভাষার সব বাধা অতিক্রম করতে সাহায্য করছে। 

তদুপরি, বিশ্বব্যাপী মহামারী, COVID-19, বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে এবং শিক্ষাকে বোঝার উপায় পরিবর্তন করেছে। ভার্চুয়াল টিউটরিং, ভিডিও কনফারেন্সিং টুল বা অনলাইন লার্নিং সফটওয়্যার যাই হোক না কেন, COVID-19 এর পর থেকে এই টুলগুলির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি একটি পরিকল্পিত পদ্ধতিতে যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয়, তবে এটি খুব ভালভাবে এই বিশ্বব্যাপীর উপহার হয়ে উঠতে পারে ।

এই মহামারীর মাধ্যমে যা স্পষ্ট করা হয়েছে তা হল সীমানা, কোম্পানি এবং সমাজের সমস্ত অংশ জুড়ে জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার গুরুত্ব। যদি অনলাইন শেখার প্রযুক্তি এখানে একটি ভূমিকা পালন করতে পারে, তবে এটির সম্পূর্ণ সম্ভাবনা অন্বেষণ করা আমাদের সকলের জন্য কর্তব্য। অনলাইন লার্নিং ভবিষ্যত এবং নিঃসন্দেহে ঐতিহ্যগত শিক্ষা প্রতিস্থাপন করবে। মোবাইল প্ল্যাটফর্মগুলি আরও বেশি লোককে অনলাইন শেখার অ্যাক্সেস দিয়েছে। আগামী বছরগুলিতে, অনলাইন শেখার কাঠামোতে আরও উপাদান থাকবে যেমন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) শেখা।

প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে, আমাদের অবশ্যই আমূল পরিবর্তন করতে হবে, আমরা কীভাবে শিখি এবং কী শিখি। ডিজিটাল শিক্ষা আজকের যুবসমাজকে তাদের কাছে উপলব্ধ জ্ঞানের সমুদ্রে নিজেকে নিযুক্ত করতে উৎসাহিত করতে পারে। যদিও ডিজিটাল শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, ডিজিটাল লার্নিং হল শিক্ষা প্রদানের নতুন উপায় এবং এটি ক্রমবর্ধমান এবং একটি দৃষ্টান্ত পরিবর্তন ঘটাবে। অদূর ভবিষ্যতে, এটা বলা যেতে পারে যে ডিজিটাল শিক্ষা বিশ্বের ভবিষ্যৎ।

গল্প || খেয়া || রঞ্জিত মল্লিক

 খেয়া




             আজ থেকে বছর দশেক আগে, ঠিক এইখানেই, আবৃত্তি, হাসনুহানার গাছটা পুঁতেছিল। তখন আবৃত্তি ষোড়শী, এখন...! থাক সে কথা।


            খুব ছোটবেলা থেকেই সুন্দর আবৃত্তি ক'রতো ব'লে, স্কুলে গ্রামে ওই নামেই পরিচিতা ছিল। শুভঙ্কর তখন খেয়ার মাঝি। স্কুলে পড়াশোনা না করলেও কথায় কথায় কেমন মনহারানো গান বাঁধত', ভাটিয়ালী.....। আবৃত্তি তখন চতুর্দশীর ভরা নদী। শুভঙ্করের ঘাটেই থিতু হ'তে চেয়েছিল!

কিন্ত কীভাবে যেন সব এলোমেলো হয়ে গেল! আজ আবৃত্তি বড় একা। স্মৃতির টানেই ফিরে এসেছে দেখার আশায়... 


         "আরে... হাসনুহানার নিচে কুঁড়েঘরটা তো ওখানে ছিল না বা থাকার কথা নয়!" নিজের মনেই কথাগুলো বলে উঠল।


             কুঁড়েঘরটা ওখানে দেখে আবৃত্তি একটু অবাকই হল। একপা দুপা করে গাছটার কাছে এসে কুঁড়েঘরটা ভাল করে দেখল। পরম মমতায় আদরের হাসনুহানা গাছটা যেন ওকে কাছে ডেকে জড়িয়ে ধরে কিছু বলছে। আর কথাগুলো যেন কুঁড়েঘরের দরজা, দেওয়াল ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করছে।


            আবৃত্তির চোখের কোণ বেয়ে নামছে ভরা কোটাল। কোটালের তীব্র স্রোত ওকে নিয়ে চলেছে দূর অতীতে।


                      


         "তুমি এত সুন্দর গান বাঁধতে পার, শুনলে মন পাগল হয়ে যায়।"

       "তুমিও তো ভাল আবৃত্তি কর। কি অপূর্ব গলা তোমার! সত্যিই হিংসে করার মতন।"

     "অ্যাই শোনো, মেলা ফ্যাচ ফ্যাচ কোরোনা। গতকাল একটা গান গাইছিলে, গানের শব্দগুলো বেশ চেনা চেনা....।"

"ঠিক ধরেছ, তোমার কবিতার কিছু শব্দ, লাইন যোগ করে গান বেঁধেছি।"

"বাহ! শুনে মনে ভরে গেল। এবার আমাকে তোমার নৌকায় চড়িয়ে ঘোরাও...."


          সেই শেষ নৌকায় চড়া। তারপর আর শুভঙ্করের দেখা পায়নি। ও যে কোথায় হারিয়ে গেল কেউ বলতে পারেনা। আইলার সেই অভিশপ্ত দিনটা এখনও আবৃত্তি ভুলতে পারেনা। 


                 



         ভাবতে ভাবতে কোথায় তলিয়ে গিয়েছিল। এক পথ চলতি মানুষের ডাকেই সম্বিৎ ফিরল উনিই সব ব্যাখ্যা করলেন। 


          এই কুঁড়েঘরটা শুভঙ্করেরই বানানো। একজনকে ভালবেসে স্বপ্ন দেখেছিল দুজনে একসাথে ঘর বাঁধবে। তারপর তার হঠাৎ বিয়ে হওয়াতে সব ছেদ পড়ল।


         আইলার ঝড়ে নৌকা উল্টে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল। বহু বছর পরে এক মাঝি ওকে দেখে চিনতে পারে। 


                    



           শুভঙ্করের স্মৃতি গেছে। নৌকা আর চালায় না। তবে গানটা ভালই গায় আগের মতন। এখন বিভিন্ন মেলাতে পুজো পার্বণে গান গেয়ে ভিক্ষা করে বেড়ায়। যে যা দেয় তাতেই কোন রকমে একটা পেট চলে যায়। সবাই ভাবে ও একটা বদ্ধ পাগল।


       শুনে আবৃত্তির শুভঙ্করের একটা গান মনে পড়ছে....


            "এই খেয়া বইবি..........

              ........... কত আর....."


           আবৃত্তির চোখের নোনা জোয়ারে যেন ঐ "খেয়া" ভাসতে ভাসতে অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে।

অনুগল্প || নাম শুনেছ || সিদ্ধার্থ সিংহ

  নাম শুনেছ




বউ চা দিতে আসতেই স্বামী বলল, সোনা, তুমি রাজা দশরথের নাম শুনেছ?

বউ বলল, হ্যাঁ, শুনব না কেন?

স্বামী বলল, ওনার তো তিনটে বউ ছিল। তা হলে আমি আরও দুটো বিয়ে করতে পারি?

সঙ্গে সঙ্গে বউ বলল, তুমি দ্রৌপদীর নাম শুনেছ?

Poem || STILL LOVES YOU || Kunal Roy

  STILL LOVES YOU




Once in a wet evening,

They met,

Stifled smile,

Soft vision,

Wove a dream,

Of-

Staying together!!


The autumn set in,

The Goddess arrived,

Delight spread across the sky and breeze,

And "You"-

Faraway,

Or in someone's arm,

Or on the divine zone!


He put up in the top floor,

Window opened,

Held a mug of brewing coffee,

Hedonism spread outside,

Solitude in the inner realm,

Love lives in trust,

Emotion lives in breath,

He and his beloved stay,

Faraway,

Where the earth and sky meet,

Still -

Love is immortal there!

কবিতা || আকাশ || নবকুমার

আকাশ 



খাদানের ভেতরে আকাশ নেই

আকাশের জন্য ব্যাকুল হই -

হয়তো নীলাকাশে ফুটেছে খই

কিংবা মেঘে মেঘে

বৃষ্টি জল

জানি না কিছুই -

শুধুই অতল--অতল--।


যেমন বুঝতে পারি না তোমার আকাশ

কখন রৌদ্র কখন মেঘ

কখন হাওয়া আনে মনের আবেগ

বুঝতে পারিনা বলেই

কবিতাগুলি কব্ তে

হয়ে যায়--


সাধারণ মানুষ ,বলি সোজাসুজি--

দিনমান আকাশ

না দেখলেও

খাদানে নিমীল আকাশ খুঁজি -।


কবিতা || আধুনিক যুগ || অভিজিৎ দত্ত

 আধুনিক যুগ 



আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে

রাজপুত্র সিদ্ধার্থ, রাজকীয় সুখ ছেড়ে

পথে বেরিয়েছিলেন কীসের জন্যে?


নানক, চৈতন্য, কবীর, মীরাবাঈ 

ঈশ্বরের নামগান প্রচার করেছিলেন 

কীসের জন্যে?


বিংশ শতাব্দীতে বিপ্লবী অরবিন্দ 

কারাবাসের পর পরিণত হয়েছিলেন 

যোগীতে, কীসের জন্যে?


বিবেকানন্দ অনেক কষ্ট সহ্য করে

আমেরিকায় গিয়েছিলেন ধর্মপ্রচারে

কীসের জন্যে?


সূর্য সেন, ক্ষুদিরাম, ভগৎসিং সহ

অসংখ্য বিপ্লবী প্রাণ দিয়েছিলেন 

দেশের জন্য, কীসের জন্যে?


অথচ স্বাধীনত্তোর পরবর্তী ভারতে

বর্তমান সময়ে,কী দেখছি সমাজে?

চুরি,দূর্নীতি,ধাপ্পা, ফাঁকিতে সব লিপ্ত 

ভোগবাদ,অপসংস্কৃতিতে মত্ত

দেশপ্রেম গেছে ঘুচে 

স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মন থেকে

ফেলেছে মুছে।

এ কোন ভারতবর্ষ?


আজকের আধুনিক ভারতের প্রজন্ম 

কখনও কী ভেবেছো

অগ্রজদের আত্মত্যাগের কথা?

পড়েছো বা জেনেছো ভারতের 

বিপ্লবীদের ও মহাপুরুষদের কথা?

আজকে কেন দেশে এত হানাহানি

ধর্ম নিয়ে লড়াই, হিংসা ও রাহাযানি?


আসলে আধুনিক যুগে উন্নতি 

হয়েছে উপরে,উপরে,হয়নি ভেতরে

অথচ ভেতরের উন্নতিটাই তো আসল 

যেটার ছিল খুব দরকার 

যার অভাবে দেশ অন্ধকার। 


সমাজ গঠনের মূল কাজটাই 

আজ হচ্ছে অবহেলিত 

শিক্ষারূপ জ্যোর্তিময় সত্তা 

আজ অন্ধকারে পরাভূত। 

তাই উন্নত সমাজ গঠনের আশা

আজ দিবাস্বপ্নের মত।

কবিতা || কালো পুরুষের স্তনে মাংসাশী সংখ্যা ঝুলে আছে || নিমাই জানা

 কালো পুরুষের স্তনে মাংসাশী সংখ্যা ঝুলে আছে




পাগলা গারদ এর ভেতরে থাকা উলম্ব মানুষগুলোর ভেতরে জেগে থাকা স্বাভাবিক সংখ্যার কোনও দেশ থাকে না

কৃমি কীটেরা ইলেকট্রন আর হাওয়ার ভাত পোড়া খেতে খেতে হারিয়ে যাবে প্রাচীন দাহক্ষেত্রের কাছে

আজ জমাট শীতকালে দীর্ঘ রাতের প্রয়োজন বৃহত্তম সংখ্যার মতো, এসো হে মহেশ্বর তরল পানীয় নিয়ে একটি সরাইখানার নীল আলোতে নিচু হয়ে কুড়িয়েনি তরল কিছু কাঁচের টুকরো আর চানা মশলার ভিস্কোসিটি ভ্যাজাইন

আমি একাই তিনজনের পাঞ্জাবি পরে আছি ,

তিনজন আর কেউ নয় আমি, ব্রহ্মা আর আমার বাবার বাবা

আমাদের তিনজনের জিওল ঠোঁট আছে সুনীতির মতো

সব আবৃত ভগ্নাংশ গুলোই ঠিক বারোটার পর জেগে ওঠে সূক্ষ্মকোণী থাকা গোলাপের পাপড়ির দেহে ,

পচন সংক্রান্তঃ সাপ থেকে বের করি জরায়ুজ এসপেরা ফার্ণ আর স্তনবৃন্তের কৃষ্ণাঙ্গ , 

গভীর ক্ষেত্রফলগুলো বিটুমিনাস রঙের গলায় তুলসী কাঠের মালা নিয়ে দাঁড়িয়েছে আম গাছের তলায়

এখানে সকল ব্রাহ্মণের মতো রাত্রিকেই পুজো করে উবু হয়ে বসে আমি ফার্নের তলপেট ভালোবাসি জিঘাংসা তরোয়ালে

ইবন বতুতা কতবার সিরোসিস অফ লিভার ভুগেছে অথচ কোনদিন মদ্যপ কামিনী ফুল আমাকে চাঁপাতলায় নিয়ে যায়নি ব্রাহ্মণ বেশে আমি শুধু কৃষ্ণকায় দেহে যুধিষ্ঠির হয়ে গেছি কালপুরুষের বাম স্তন নিয়ে

কবিতা || এই মানুষ সেই মানুষ || মহীতোষ গায়েন

  এই মানুষ সেই মানুষ



সেই মানুষ এই মানুষ মৃত্যু হলেই শেষ...

সেই মানুষ এই মানুষে তবু হিংসা বিদ্বেষ,

এই মানুষ সেই মানুষ আগে ছিল ভালো

সেই মানুষ এই মানুষ বিনা স্বার্থে কালো।


সেই মানুষ পাল্টে গিয়ে এই মানুষ হয়...

এই মানুষের হিংসা ঈর্ষা চিতাতে অক্ষয়,

তবুও মানুষ শান্তি পায় ঝগড়া বিবাদে...

ভালোবাসা খুন হয় অহংকারে জেদে।


তবুও মানুষ প্রেমে পড়ে আশা নিয়েই বাঁচে

ছাপোষাদের স্বপ্ন পোড়ে বিত্তশালীর আঁচে,

এই মানুষ সেই মানুষ লোভ লালসায় মরে

মহামানব পূজিত হন সারা বিশ্ব ঘরে ঘরে।

কবিতা || বীরশ্বর বিবেকানন্দ || মঞ্জুলা বর

 বীরশ্বর বিবেকানন্দ




হে বীর মহান যোগী আজও সবাই স্মরণ করে 

সদাই মোরা তোমার বাণী রাখি হৃদয় ঘরে,

গর্জে ওঠে সকল যুবক তোমার বাণী শুনে

আসবে কবে মানব চেতন সবাই প্রহর গুনে।


ভারতবর্ষে সকল গ্লানি দূর করিতে গেলে

দেশে দেশে ভাষণ দিলে জ্ঞানের আলো জ্বেলে,

সবার মনে বিবেক জাগাও হাজার কষ্ট সয়ে

ভালোবাসা অর্ঘ্য পেলে সবার পাশে রয়ে।


জ্ঞানের দিশা শুধু ঢেলে বিশ্ব মানব হলে

 ধরাধামে সবাই আজও তোমার কথা বলে,

স্বার্থত‍্যাগী মহান যোগী বিশ্বমানবই তুমি 

তোমার জন‍্য ধন‍্য হলো আমার ভারত ভূমি।


সবার তরে জ্বেলেছিলেন হাজার জ্ঞানের আলো  

মুগ্ধ চিত্তে চেয়ে ছিলেন সদাই সবার ভালো,

 কঠোর শ্রমে মানব সেবা সদাই করেছিলেন 

 যুবক দলের মনের ঘরে সাহস ভরে দিলেন।


তোমার বাণী সদাই শুনে সকল মানব জাগে

অমর হয়ে সদা রবে হৃদে দোলা লাগে ,  

সকল যুবা জাগলে পরে আসবে শান্তি ফিরে

হাসি ফুটবে মধুর ভবে সবুজ আঁচল ঘিরে।

কবিতা || আলাদা পৃথিবী || দিলীপ কুমার মধু

 আলাদা পৃথিবী



পৃথিবীর সব লোক যখন

এক হয়ে ক্যারাম খেলে--

আমি তখন ফ্যান চালিয়ে

লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুমোই ।


দেশের লোক যখন বাঁধ ভেঙে

জলের তলে বসে স্বপ্ন দেখতে চায়

আমি তখন গোটা একটা বই লিখে

রাতারাতি সাহিত্যিক হয়ে যাই ।


ঘরের লোক যখন ভালোবাসার বন্ধনে

আগলে রাখে আমাকে

আমি তখন শুকতারা টির দিকে তাকিয়ে

সস্তা দামের একটা টর্চ কিনি ।

কবিতা || নারী ও রজঃস্বলা || চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী

 নারী ও রজঃস্বলা




প্রিয়জনের হাতে প্রহৃত স্নেহা

ক্ষতদাগকে জেনেছে নিয়তির বিধান

বলে,নিয়ম ভাঙতে পারেনি আধুনিকা।


যে হাত জ্বালায় উনোন শাকে দেয় রসুন ফোড়ন

অশোউচ হলে পায় না ছুঁতে ঈশ্বরের বেদীমূল।


আমি মেলাতে অঙ্ক ভাঙতে বিস্ময় ঘোর

গিন্নিকে বলি,এঁকে দাও একে দাও আলপনা,

দেখি,তেমনি রয়েছে সতেজ সবুজ তুলসী পাতা।


আসলে,গুটির ভেতর পিউপার দশা

সেতো রঙিন প্রজাপতির পূর্বাভাস,

নারী রজঃস্বলা না হলে

হ্যাঁ,পিতৃত্ব কোন আশায় বাঁধতে ঘর?

প্রিয় যাপন সুতোয়।

কবিতা || মহৎ || পাভেল রহমান

 মহৎ



খ্যাতির জন্যে সবাই যেখানে কুপথে করিল গমন

সেখানে তুমি হে মহৎ, সুপথ করিলে চয়ন।

মহৎ, তুমি সর্বক্ষণ

হয়ত শুধুই পাচ্ছ কাঁদন

তবু যেই- ই নেয় তোমার শরণ

সেইই পায় শম, ইহা কি কম!ইহাই তোমার পুরস্কার!

ধরা হতে নভে তবে তবে তবে তোমারই জয়- জয়কার!

কবিতা || অশরীরি প্রেম || নমিতা বসু

 অশরীরি প্রেম 




ঝোড়ো হাওয়া 

হয়তো বিকেল,

কি এসে যায় 

রাস্তা আছেই ।


ঝাপটা বৃষ্টি 

গুমোট ভীষণ ,

থমকে শব্দ,

আলো তো কাছেই ।


পাতারা উড়ছে 

ধুলোর ঘুরছে ,

গাছ কি পড়বে?

মজাটা জমবে ।


একটা তো রাত 

বারোটা ঘন্টা,

নিশ্চিহ্ন শকুন 

ভাবি সূর্য টা ।