Wednesday, May 25, 2022

রাজ্যে নতুন আশা কর্মী নিয়োগ || কয়েক হাজার নতুন আশা কর্মী নিয়োগ || asha karmi recruitment 2022


 


##রাজ্যের মহিলাদের জন্য একটা বড় সুখবর। জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় জেলায় আশা কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে প্রায় 13 হাজার, মুখ্যমন্ত্রীর নিজে ঘোষণা করেছেন বর্তমানে আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন ব্লকে আশা কর্মী নিয়োগ হতে চলেছে যার বিবরণ নিচে দেয়া হল।




পদের নাম - আশা কর্মী।

শিক্ষাগত যোগ্যতা--- 
মাধ্যমিক ও সমতুল্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণব্যক্তি আবেদন করতে পারেন। আবার উচ্চতর যোগ্যতার ব্যক্তিরাও আবেদন করতে পারবেন তবে মাধ্যমিকের প্রাপ্ত নম্বর দেখে বিবেচনা করা হবে।  



বয়স--- বয়স 30 থেকে 40 বছরের মধ্যে হতে হবে
 সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়ম অনুসারে ছাড় পাবেন।





আবেদন পদ্ধতি--- শুধু মাত্র  অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন পত্র সম্পূর্ণ পূরণ করে নিজ নিজ এলাকার বিডিও অফিসে জমা করবেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি যোগ করে একটি মুখ বন্ধ খামে ভরে তারপর বড় হাতে লিখতে হবে ‘APPLICATION FOR THE POST OF _______’ (কোন পদের জন্য আবেদন করছেন)।



কি কি ডকুমেন্ট লাগবে---

1) শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ পত্র।

2) স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র রেশন কার্ড ভোটার কার্ড।

3) বয়সের প্রমাণপত্র (জন্ম সার্টিফিকেট কিংবা মাধ্যমিকের এডমিট কার্ড)।

4) বিধবাদের ক্ষেত্রে স্বামীর ডেট সার্টিফিকেট।

5) বিবাহিতদের ম্যারেজ সার্টিফিকেট।
6) ডিভোর্স সার্টিফিকেট কাস্ট সার্টিফিকেট।
8) দুটি পাসপোর্ট ছবি।



আবেদনের শেষ তারিখ--- ২৭/০৫/২০২২, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।


নিয়োগের স্থান --
আলিপুরদুয়ার জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন ব্লকের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে নিয়োগ হবে। যেমন- ১)আলিপুরদুয়ার, ২)ফালাকাটা, ৩)মাদারিহাট, ৪)কুমারগ্রাম ও কালাচিনি।


Official notice-

Official website-





Sunday, May 22, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -3


 


প্রেমাংশু ধীরে ধীরে কাছে এসে দাদুর বক্তব্য জানলেন! ঠাকুর্দার ইচ্ছে, ভুলবশতঃ হোক আর অন্য কোন কারনেই হোক বাগদীর মেয়ের যখন সর্বনাশ করেছে তার প্রায়শ্চিত্ত করতেই হবে। তবে শুধু আমার স্বার্থের জন্য নয় বাবা গ্রামবাসীদের কথা চিন্তা করে আমার অনুরোধ তোমাকে রাখতে হবে বাবা। 


প্রেমাংশু বললেন, বলুন আপনার কি অনুরোধ রাখতে হবে। 

পুষ্পকে কোন নার্সিংহোমে ভর্তি করে তার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করলে কোন ক্ষতি হবে না। তারপর পুষ্পর বিয়ের ব্যাপারে যত টাকা খরচ হবে আমি যতীনকে দেব।


 প্রেমাংশু বলল, ছিঃ বাবা, নব আগত একজন অতিথিকে কোন মতে বিনাশ করতে পারব না। এজন্য যদি আমাকে গৃহত্যাগ করতে হয় আমি রাজী।


 ঠাকুর্দা প্রেমাংশুকে দ্বিতীয়বার বুঝিয়ে বলার জন্য মুখ ফাঁক করতেই মেজকাকা কর্কশ কণ্ঠে বলে উঠলেন, প্রেমাংশু তুমি একজন সদ্বংশের সন্তান হয়ে শেষ পর্যন্ত একটা বাগদীর মেয়েকে উৎকৃষ্ট বলে মনে করলে? তোমার লজ্জা নেই বলে এখানে বাবার সামনে দাঁড়িয়ে আছো। এই মুহুর্তে বাবার কাছ হতে দূরে সরে যাও। মনে রাখবে চিরদিনের জন্য তোমার এই দরজা বন্ধ। কোনদিন এখানে পা দেবে না। 


মেজকাকার রাগন্বিত ভাব দেখে শান্তস্বরে বলেছিলেন ঠাকুর্দা, প্রেমাংশু তোমার ছোট ভাই , হয়তো কোন রূপ ভুল করেছে, ঠাকুর্দার কথা লুফে নিয়ে আরো ক্রুদ্ধ স্বরে বললেন মেজকাকা , ওকে ক্ষমা করতে বলছেন এইতো? না বাবা না, এ ক্ষমার অযোগ্য। আমাদের বংশের মান - মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে হলে ওকে গৃহত্যাগ করতেই হবে। এ আমার শেষ কথা। 


ঠাকুর্দার কথা শুনলেন না মেজকাকা । অবশ্য ষড়যন্ত্র করে তাড়ানোর চেষ্টা যখন করেছেন, তখন কি সহজে রাজী হবেন ? ছোটকাকা আর দাঁড়াননি সেখানে। দ্রুতগতিতে বেরিয়ে কোথায় যে গিয়েছিলেন বুঝতে পারিনি বা জানতে পারিনি। পুষ্পকে নিয়ে কোন গ্রামে বা শহরে বাসা বেঁধেছিলেন। দাদুর অনুনয় উপেক্ষিত হওয়ায় অন্তরে অনুশোচনার তীব্র দহন জ্বালা ঠাকুরদাকে শয্যাশায়ী করে তুলেছিল।


 সেই সময় বাবা আরন্যক জীবনকে শিকারীর প্রধান অবলম্বন মনে করে বেশ কয়েক দিন ধরে ছুটেছেন শিকারের পিছনে। বাড়ীতে এসে ঠাকুরদাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দেখে উদিদ্ধ হলেন। বাবার ইচ্ছা ছিল মেজকাকার নিকট হতে ঠাকুরদার স্বাস্থ্য 



সম্পর্কে পরামর্শ নেওয়া। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতি শুনে বাবাকে আরো চিন্তাকূল করে তুলেছিল। স্বার্থপর মেজকাকা ঠাকুরদার অসুস্থতা উপেক্ষা করে সবান্ধব দীঘা ভ্রমণে গিয়েছিলেন। পুত্রের উপযুক্ত কাজই করেছেন। 


নিরুপায় হয়ে বাবা গ্রামবাসীদের সাহায্য নিয়ে শহরের অভিমুখে যাত্রা করলেন রুগ্ন পিতাকে নিয়ে। ছোটকাকাকে খোঁজ করার জন্য লোক পাঠালেন। গ্রাম হতে শহর অনেক দূর। জমিদার ব্রজকিশোর সিংহকে সুস্থ করার জন্য যে শহরে পাড়ি দিতে হবে, বাবা কোন দিন ভাবতে পারেননি । তবু তাঁকে বাঁচাতে পারলেন না। মৃত্যু যখন কোন মানুষকে হাতছানি দিয়ে ডাকে, তখন মৃত্যুর হাতছানিকে কোন পরাক্রমশালী ব্যক্তিও এড়িয়ে যেতে পারে না।  


 পথিমধ্যে চন্ডীপুরের ধনবান প্রভাবশালী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ততক্ষণাৎ সারা চন্ডীপুরে শোকের ছায়া নেমে এল। কেউ কি কল্পনা করেছিলেন ঠাকুরদা এভাবে মারা যাবেন ? বয়স যে হয়নি তা নয়, তবুও মানুষটাকে দেখলে মনে মনে অঙ্ক কষতো কতই বা বয়স হবে। হয়তো সত্তরের কাছাকাছি হবে। ঐ বয়স হলেও তখনও ইস্পাতের মত শক্ত ছিলেন।


 গ্রামবাসীদের কর্ণে মৃত্যু সংবাদ পৌঁছতেই দলবদ্ধ হয়ে জমিদারের প্রাসাদে ছুটে এলেন। সকলেই পরস্পরের মুখপানে তাকিয়ে আলোচনা করতে থাকলেন।


 মৃত্যু নিয়ে নানা লোকের মুখে নানা কথা। কেউ কেউ যাত্রা দলের পাট আওড়ানোর মতো বলতে শুরু করল , প্রেমাংশুর কলঙ্কিত জীবনের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ছেলেটা যে শিক্ষিত হয়ে রাজপরিবারের আভিজাত্যকে এইরূপ হীনভাবে ধুলায় লুণ্ঠিত করে দেবে তা কেউ বুঝতে পারেনি।


 পুষ্পের সঙ্গে ছোট কাকার গৃহত্যাগের সংবাদ এই অঞ্চলের জনগণের নিকট অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ঠাকুরদার শবদেহ শ্মশানে নিয়ে আসা হল গ্রামবাসীদের সহযোগীতায়। দাহনের কাজ শেষ হলে পর বাবা বাড়ীতে এসে দেখলেন কাকা ছোট ছেলের মতো মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছেন। মেজকাকার শোকাতুর ভাব দেখে প্রতিটি মানুষের ধারণা হয়েছিল তাঁর পিতৃভক্তি প্রগাঢ় ছিল। 


ঠাকুরদার মৃত্যুর পর বেশ সুখ - দুঃখের মধ্য দিয়ে মাসখানেক কেটে যাবার পর আমাদের সংসারে অন্ধকার নেমে এলো। নেমে এলো অভাব অনটনের দুঃখ জ্বালা। ছোট কাকা ও বাবার প্রতি মেজকাকার বিশ্বাসঘাতকতা বাবা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেন নি। বাবা ও মেজকাকা দুই বৎসরের ছোট। সেই জন্য বাবার ধারণা ছিল মেজকাকা তার সঙ্গে আগের মতো রহস্যলাপ করছে। কিন্তু যখন সমস্ত সম্পত্তির একটি উইল বাবার হাতে দিলেন, তখন তিনি বজ্রাহত হলেন। মনে করেছিলেন, মাটি যেন তার পায়ের কাছ হতে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। তবু দুই হাতে উইলকে চেপে ধরে

নির্দ্বিধায় বলেছিলেন মেজকাকাকে, ঠাকুরদা যখন নিজ হস্তে এই উইল করে গেছেন, মেনে নেবেন। কিন্তু ছোট ভাইকে তিনি কি দিয়েছেন? 


মেজকাকা সানন্দে জানালেন, সে আমাদের বংশের অমর্যাদা করেছে বলে তাকে তাজ্যপুত্র করেছেন। তিনি আমার উপর বিশ্বাস রাখতেন বলে বাকী সম্পত্তি আমার নামে লিখে গেছেন। বাবার বিশ্বাস ছিল আমি সমস্ত সম্পত্তি আগলে রাখতে পারব। তিনি তোমাকেও বিশ্বাস করতেন না। হয়তো তোমার নৈতিক অধঃপতনের কথা স্মরণ করে এই রকম অংশ দিয়ে গেছেন। এই বলে তিনি গম্ভীর মুখে চলে গেলেন।


 ওকথা শুনে বাবা বিমূঢ় হয়ে গিয়েছিলেন। মাথার কোষে কোষে চিন্তা এসে উপস্থিত হল। সেই সময় বাবার স্মরণে এলো ভারতের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি । যা আজও পর্যন্ত ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষণে লেখা আছে। ভাই হয়ে ভাই এর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা। পুত্র হয়ে পিতার আসনে বসার জন্য পিতাকে খুন করা। সবই তো সম্পত্তির জনাই। মেজকাকাকে এত দিনে চিনতে পারলেন ও বুঝতে পারলেন তার নিষ্ঠুরতাকে।  


 গ্রামের লোকেদের ধারণা ছিল, প্রেমাংশুর নির্বাসনের পশ্চাতে একমাত্র কারণ ছিল মেজকাকার সম্পত্তি আত্মসাৎ - এর জঘন্য ষড়যন্ত্র। কিন্তু সবচেয়ে বড় আশ্চর্য হচ্ছেন মেজকাকা কি করে ভিলেন হলেন। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে তিনি আনমনা হয়ে গিয়েছিলেন। এই পৃথিবীতে এমন কতকগুলো মানুষ আছে, যারা আপন স্বার্থ চরিতার্থ করা সবচেয়ে বড় মনে করে। নিজেকে বড় করার জন্য মানবিকতাকে, পৌরষত্বকে নৃশংসভাবে হত্যা করে নিঃসংকোচে আত্মসুখ অনুভব করে। প্রয়োজনবোধে আপনজনকে বঞ্চিত করতে দ্বিধাবোধ করে না। 


  এই উইলের পরেও বাবা শত দুঃখের মাঝে স্থির করেছিলেন তিনি ঘরবাড়ী পর্যন্ত ভাগ নেবেন না। কারণ মেজাকার শতা ও বিশ্বাসঘাতকতা একদিন জমিদার পরিবারের উপর একটি নিষ্ঠুর অভিশাপ রূপে নেমে আসবে। তাই মেজকাকার কাছ হতে বাবা সরে পড়লেন। গ্রামের শেষে কুঁড়ে ঘরে বসবাস করতে আরম্ভ করলেন।


  মেজকাকা কোন রূপ বাধা দিলেন না। বরং অতিশয় আনন্দিত হয়েছিলেন। সবচেয়ে বড় আশ্চর্য গ্রামবাসীদের এবং এমনকি বাবারও যে, একজন জমিদারের বড় পুত্র সাধারণ মানুষের মত কুঁড়ে ঘরে বাস করতেন। বিশেষ করে গ্রামের লোকেরা যখন বাবার কানে তুলে ছিলেন ঠাকুরদার প্রচন্ড ইচ্ছে ছিল ছোটকাকাকে ডাক্তারী পড়িয়ে গ্রামবাসীদের আশা - আকাঙ্খাকে সার্থক করে তুলবেন।


  বাবা গ্রামবাসীদের হতাশা অনুভব করে কথা দিলেন যে গ্রামবাসীদের এই আশা আকাঙ্খা তার ছেলে সুমন্তকে দিয় পূরণ করবেন। পরদিনই ডাকা হল গ্রামের স্কুলের হেডমাস্টার মশাই সুরজিত বাবুকে। তার কাছে পরামর্শ নিলেন ডাক্তারী পড়াতে হলে কত টাকা খরচ হবে। কুড়ি একর জমি বিক্রি করলে পর ডাক্তারী পড়ানো যাবে কি না।



                                                          ক্রমশ...


দ্বিতীয় পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

Click here 🔴



চতুর্থ পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

Click here 🔴

রাজ্যে জমি রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মী নিয়োগ || WB Govt Job Reqruitment || Land Register office recruitment 2022

 





পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের জন্য নতুন সুখবর। বিভিন্ন জেলার  জমি রেজিস্ট্রি অফিসে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে। নিয়োগ হবে চুক্তি ভিত্তিক।  পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-




পদের নাম -  সফটওয়্যার সাপোর্ট পারসোনাল ।

শিক্ষাগত যোগ্যতা - PGDCA/ B.Sc (Computer Science)/ BCA/ DOEACC ‘A’ level course 3 বছরের অথবা তার সমতুল্য যোগ্যতা থাকতে হবে।


আবেদন পদ্ধতি -

অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। নীচে দেওয়া অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নোটিশ টি ডাউনলোড করে নেবেন। সেখানে ফর্ম পাবেন। সেই ফর্মটি পূরণ করুন তারপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জুড়ে দিন, সবশেষে একটি খামে ভরে নীচে দেওয়া ঠিকানায় পাঠাবেন না 


প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট-

1.বয়সের প্রমাণ (মাধ্যমিক অ্যাডমিট)

2. শিক্ষাগত যোগ্যতা ( পদ অনুযায়ী যা জরুরি) 


3. পরিচয় পত্র বা আইডি কার্ড 

4. পাসপোর্ট সাইজের ছবি 

5. কাস্ট সার্টিফিকেট( যদি থাকে)

 উল্লেখিত ডকুমেন্টের জেরক্স কপি পূর্ণ করা ফর্মের সাথে জুড়ে দেবেন।


আবেদন জমা করার ঠিকানা -
The Additional District Magistrate & District Land & Land Reforms Officer, Alipurduar and Chairman, District Selection Committee, Dooars Kanya, 4th Floor, Room No.411, P.O. Alipurduar Court, District Alipurduar, Pin-736122.


আবেদনের শেষ তারিখ -

 ইতিমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।  আবেদন প্রক্রিয়া চলবে 08/06/2022 তারিখ পর্যন্ত।
আপনাকে এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। 



নিয়োগ প্রক্রিয়া -  
প্রথমে হবে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন, তারপর হবে কম্পিউটার টেস্ট। সবশেষে ইন্টারভিউ।





অফিসিয়াল নোটিশ -


অফিসিয়াল ওয়েবসাইট -


Thursday, May 19, 2022

গ্রামীণ ডাক সেবক (GDS) নিয়োগ 2022 || WB GDS recruitment 2022 || Post office peon recruitment 2022 || https://indiapostgdsonline.in/







পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের জন্য নতুন সুখবর আছে। আবার নিয়োগ হতে চলেছে গ্রামীণ ডাক সেবক তথা GDS পদে। বিজ্ঞপ্তি টি Indian post এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
সমগ্র দেশ জুড়ে এই নিয়োগ চলবে। এর মধ্যে আপনাকে পশ্চিমবঙ্গের সার্কেল সিলেক্ট করতে হবে।
চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-




মোট শূন্যপদ - 38,926 টি
 
 
কোন কোন পদে নিয়োগ করা হবে - 

(1) ব্র্যাঞ্চ পোষ্ট মাস্টার (BPM)

(2) অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্র্যাঞ্চ পোষ্ট মাস্টার/ ডাক সেবক (ABPM) 


বেতন- 
(1) BPM -  12,000 টাকা/মাস

(2) ABPM - 10,000 টাকা/মাস


বয়সসীমা- ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হবে। সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।


শিক্ষাগত যোগ্যতা - 

শুধু মাত্র মাধ্যমিক পাশ করে থাকলেই আপনি এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
 


বিশেষ যোগ্যতা -
আবেদনকারীকে অবশ্যই সাইকেল চালাতে জানতে হবে। এর সাথে চাকরিপ্রার্থীদের  স্থানীয় ভাষায় কথা বলতে, বুঝতে এবং লিখতে জানতে হবে।



নিয়োগ প্রক্রিয়া-

শুধু মাত্র মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেরিট লিস্ট তৈরি হবে। কোনোরকম লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ দিতে হবে না।


আবেদন প্রক্রিয়া -
 অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ গিয়ে অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। 


আবেদন ফি -

সাধারণ প্রার্থীদের জন্য 100 টাকা। সংরক্ষিত প্রার্থী এবং মহিলাদের কোনো আবেদন ফি লাগবে না।



গুরুত্বপূর্ণ তারিখ-

আবেদন শুরু - 02.05.2022
আবেদন শেষ- 05.06.2022



Official Website-



Notice Download-



 Apply Now-



উপন্যাস - লাস্যময়ীর ছোবল || সিদ্ধার্থ সিংহ || Lashamayir Chobol by Sidhartha Singha || Fiction - Lashamayir Chobol part -2


 


দুই


ফোন বাজলেই সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে রিসিভার তোলে ঋজু। ওর ছেলে বাবি ক্লাস ফোরে পড়ে। ক’দিন হল ছেলেকে নিয়ে ও আর স্কুলে যাচ্ছে না। বউকে পাঠাচ্ছে।
সপ্তাহখানেকও হয়নি ওর অফিসে একটা ফোন এসেছিল। ও-ই ধরেছিল। ফোনটা একটি মেয়ের। সে লেখালিখি করতে চায়। তাদের কাগজে লেখা দিতে হলে কী ভাবে পাঠাতে হবে, কাকে পাঠাতে হবে, মনোনীত হল কি না, ক’দিনের মধ্যে জানা যাবে, এই সব টুকিটাকি কথা সে জানতে চাইছিল। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর ঋজুই দিচ্ছিল। হঠাৎ মেয়েটি ওর ফোন নম্বর চায়। ও বলে, এই নম্বরেই করবেন। সন্ধের দিকে করলে আমাকে পেয়ে যাবেন। কিন্তু মেয়েটি নাছোড়বান্দা। সে ওর অফিসের নয়, বাড়ির নম্বর চায়। ঋজু দেখেছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কিংবা দূরে ও যখন কোথাও যায়, কবি নয়, খবরের কাগজে কাজ করে শোনার পরেই অনেকে ওর কাছ থেকে টেলিফোন নম্বর নেয়। কিন্তু কস্মিনকালেও কেউ ফোন করে না। এই মেয়েটিও সে রকমই একজন ভেবে, ও ওর বাড়ির টেলিফোন নম্বরটা দিয়ে দিয়েছিল। আর তখনই ও জেনেছিল, মেয়েটির নাম শালিনী। তার পর থেকে দু’-একদিন ছাড়া ছাড়াই মেয়েটা ফোন করে।
গলার স্বর খুব নরম। বাচ্চা বাচ্চা। মনে হয় ইলেভেন-টুয়েলভে পড়ে। গত পরশু যখন ফোন করেছিল, ঋজু ঘুমোচ্ছিল। ধড়মড় করে উঠে ফোন ধরতেই ও প্রান্ত থেকে শালিনী বলেছিল, কী মশাই ঘুমোচ্ছেন নাকি?
— এই উঠলাম। হ্যাঁ, বলো। এত সকালে?
— না, এমনিই করলাম। কোনও দরকার নেই। আসলে ভাইয়ের সঙ্গে দুধ আনতে বেরিয়েছি তো, দুধের ডিপোর পাশে নতুন একটা এসটিডি বুথ হয়েছে। দেখেই মনে হল আপনাকে একটা ফোন করি। তাই করলাম। কিছু মনে করলেন না তো?
কেউ যে তাকে এমনি এমনি ফোন করতে পারে, এই ফোনটা না এলে সে জানতেই পারত না। মুখে কিছু না বললেও মনে মনে খুব খুশি হয়েছিল সে। আর সেই খুশিতেই সারাটা দিন তার খুব ভাল কেটেছিল।
লোকে বলে, কারও কারও মুখ দেখলে নাকি দিন খারাপ যায়। আবার কারও কারও মুখ দেখলে দিন ভাল যায়। কারও মুখ নয়, তার দিন ভাল করে দিয়েছিল শালিনীর ফোন। তাই তার পর দিন, মানে গত কাল একটু সকাল সকাল উঠে সে তার ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিল। যদি আজও করে! কিন্তু না। সাড়ে সাতটা-আটটা-সাড়ে আটটা বেজে গেল। সে ফোন করল না। এমনকী সারা দিনে অফিসেও একটা না। রাতে শোবার সময় ভেবেছিল, কাল সকালে নিশ্চয়ই ও ফোন করবে। তাই সকাল থেকে যত বার ফোন বেজে উঠেছে, ও প্রায় লাফিয়ে গিয়ে ফোন ধরেছে। এবং দেখেছে, সবই এর ওর তার ফোন। কিন্তু যার ফোনের জন্য ও অপেক্ষা করে আছে, তার কোনও পাত্তা নেই। ঘড়িতে তখন ন’টা বেজে গেছে। নাঃ, ও আজ আর ফোন করবে না! ঋজু স্নানে ঢুকে পড়ল।
বেরিয়ে শোনে, একটা ফোন এসেছিল।
— কার?
ওর মা বললেন, রিনা গিরি বলে একটা মেয়ে ফোন করেছিল।
— ও, রিনা গিরি! মানে আশিসের বউ। কী বলল?
— কিছু বলেনি। শুধু বলল, কখন পাওয়া যাবে? তা আমি বললাম, আধ ঘণ্টা পরে করুন। ও স্নানে গেছে।
ঋজু একটু বেলা করেই ব্রেক ফাস্ট করে। দুধ-মুড়ি খেতে খেতে ও শুনল, ফোন বাজছে। ফোনের কাছে মা। তাই ও আর উঠল না। এটা নিশ্চয়ই শালিনীর ফোন না!
ফোন ধরেই মা বললেন, ঋজু, তোর ফোন।
— আমার! এত দেরিতে ফোন করল! পড়ি কি মড়ি করে ছুটে গেল ও— হ্যাঁ, ঋজু বলছি।
ও প্রান্ত থেকে একটা কোকিল কণ্ঠি ভেসে এল— আমি কণিকা রায় বলছি। চিনতে পারছেন? কাল আমরা একসঙ্গে দাঁতনে গিয়েছিলাম...
— আরে, হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন। কাল ফিরতে কোনও অসুবিধে হয়নি তো? কেমন আছেন? এখন কোথায়?
— আমি তো অফিসে।
— এত সকালে?
— সকাল কোথায়? পৌনে দশটা বাজতে চলল...
— আপনাদের ক’টা থেকে?
— আমাদের তো সাড়ে ন’টার মধ্যে ঢুকে পড়তে হয়। আমরা ডাইরেক্ট সিজিএমের সঙ্গে কাজ করি তো...
— তাই নাকি?
— আমরা তো আর আপনাদের মতো সাংবাদিক নই যে, বিকেল বেলায় অফিস।
— বিকেলে শুরু হয় ঠিকই, কিন্তু থাকতে হয় ক’টা পর্যন্ত, সেটা দেখুন। আপনারা তখন ঘুমোন।
— অনেকে হয়তো ঘুমোয়, কিন্তু সবাই ঘুমোয় না। খুব ধীরে ধীরে কেটে কেটে কথা ক’টা বলল কণিকা।
— কেন? আপনি কি জেগে থাকেন?
— একদিন বেশি রাতে ফোন করে দেখবেন।
— হ্যাঁ, আপনাকে বেশি রাতে ফোন করি, আর আপনার কর্তা সন্দেহ করা শুরু করুক, এত রাতে আমার বউকে ফোন করছে কে!
— সন্দেহ করবে না।
— কনফার্ম?
— জানলে তো করবে।
— মানে?
— উনি অন্য ঘরে শোন।
— ও। বলেই, একটু থেমে, অন্য প্রসঙ্গে যাবার জন্যই ঋজু বলল, একটু আগেই রিনা ফোন করেছিল।
— কখন?
— এই তো, মিনিট দশ-বারো আগে।
— রিনা নয়, আমিই করেছিলাম।
— আপনি? মা যে বললেন, রিনা গিরি...
— হ্যাঁ, আমি রিনার নামই বলেছিলাম। আসলে আপনার বাড়ির কে কী রকম, আমি জানি না তো। কে আবার কী ভাববে, তাই রিনার নাম বলেছিলাম। এক দিন চলে আসুন না আমাদের বাড়িতে।
— ওরেব্বাবা, আপনাদের বাড়ি তো সেই তেপান্তরের মাঠে। যেতে আসতেই সারা দিন লেগে যাবে।
— মোটেও তা নয়।
— আমি তো দু’-এক বার এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে গেছি, জানি।
— লাস্ট কবে এসেছেন?
— বছর পনেরো আগে।
— প... নে... রো...  ব... ছ... র... আগে! এখন এক বার এসে দেখুন...
— আসলে সল্টলেক শুনলেই না গায়ে জ্বর আসে। লোকে যে কী ভাবে ওখান থেকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করে, কে জানে!
— ঠিক আছে, আপনাকে আমাদের বাড়িতে আসতে হবে না। আপনি একদিন আপনার সময় সুযোগ মতো আমাদের অফিসে আসুন।
— আপনার অফিসে যাবার জন্য আমার কোনও সময় সুযোগ লাগবে না। রোজই যেতে পারি। আমাদের অফিস থেকে টেলিফোন ভবন তো একটুখানি।
— তা হলে আজকেই চলে আসুন।
— আজকে!
— হ্যাঁ, আজকে।
— ঠিক আছে, দেখছি।
— দেখছি না। চলে আসুন। নীচে এসে আমাকে একটা ফোন করে নেবেন।
— আপনার নম্বরটা যেন কত?
কণিকা শুধু অফিসের নম্বরই নয়, তার মোবাইল নম্বর, এমনকী বাড়ির ফোন নম্বরটাও দিয়ে দিল। ঝটঝট করে লিখে নিতে নিতে ঋজু বলল, বাড়ির নম্বরটা পেয়ে ভালই হল। রাতের দিকে অনেক সময় কাজের চাপ কম থাকে। তখন কথা বলা যাবে। আপনি ক’টা অবধি জেগে থাকেন?
— করুন না। যখন খুশি করতে পারেন।
— রাত বারোটায়?
— বারোটা কেন? একটা, দুটো, তিনটে... যখন খুশি।
— ফোন ধরবেন তো?
— করেই দেখুন না...
সে দিন সকালে শালিনী ফোন করার পর সারাটা দিন অদ্ভুত এক আনন্দে সারা শরীর যেমন চনমন করে উঠেছিল, আজও তেমনই এক আনন্দে ঋজুর মনপ্রাণ খুশিতে ভরে উঠল।


              
                                         ক্রমশ...



প্রথম পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করুন--



তৃতীয় পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন-

বিভিন্ন মতবাদ ও তার বিজ্ঞানীর নাম || General science for all Competitive exams || General science for Rrb group d || G.S


 

মতবাদ.              বিজ্ঞানীর নাম       সাল


•পরিস্রাবণ মতবাদ --- সিলুডউইগ --- ১৮৪৪

•জার্মপ্লাজম -- ভাইসম্যান -- ১৮৮৩

•ভাইটালিস্টিক মতবাদ --- জে.সি.বোস --- ১৯২৩

•মিউটেশন তত্ত্ব -- দ্য ভ্রিস -- ১৯০১


•সিস্ট্রোন মতবাদ -- বেঞ্জার -- ১৯৫৭


•মানব সু-প্রজনন -- ডালটন -- ১৮৬৭
বিদ্যার জনক


•প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদ -- ডারউইন -- ১৮৫৯

• মূলজ চাপ -- স্টিফেন হেলস -- ১৭২৭


● বায়বীয় চাপ -- বো এম -- ১৮০৯


•প্রস্বেদন টান ও জলের
 সমসংযোগ মতবাদ ---- ডিক্সন ও জলি --- ১৮৯৪


•বংশগতির সূত্র -- মেন্ডেল -- ১৮৬৫

•কোশবাদ বা কোশতত্ত্ব --- স্লেইডেন ও সোয়ান -- ১৮৩৯

•জার্মথিওরি ---- ব্রেডলি ---- ১৭২০



•অর্জিত গুণের
উত্তরাধিকার তত্ত্ব --- জ্যঁ ল্যামার্ক --- ১৮০৫

•জিন ভারসাম্য মতবাদ --- ব্রিজেস --- ১৯১৭

•বিবর্তনের প্রাকৃতিক
বিপর্যয়বাদ ---- কুভিয়ার ---- ১৭৬৯



Tuesday, May 17, 2022

ডেটা এন্ট্রি অপারেটর এর কর্মী নিয়োগ, বেতন -২১,১৮৪ প্রতি মাসে || Data Entry oparator Recruitment 2022 || Becil Recruitment 2022 || Government Jobs News


 


   
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতীয় ছাত্রদের কাছে নতুন চাকরির সুখবর আছে। আবার নতুন নিয়োগ হবে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদে। প্রতিটি চাকরি প্রার্থীর ইচ্ছা একটি সম্মানজনক চাকরি করার। তাদের আর অপেক্ষা করতে হবে না। চলে এলো নতুন চাকরির সুযোগ। এই চাকরির সুযোগ নিয়ে এল ব্রডকাস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কনসাল্টট্যান্ট ইন্ডিয়া লিমিটেড। এখানে ডেটা এন্ট্রি পদে আপনাকে নিয়োগ করা হবে। চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-
 এই ২১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। মোট ৮৬ টি পদে নিয়োগ করা হবে। ৬ মে থেকে ২২ মে অবধি এই পদে আবেদন করা যাবে। কী ভাবে এই পদে আবেদন করবেন, এক নজরে দেখে নেওয়া যাক…


পদের নাম - ডেটা এন্ট্রি অপারেটর।

মোট শুন্যপদ- ৮৬ টি

শিক্ষাগত যোগ্যতা-
যদি আপনি এখানে আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই স্বীকৃত ইউনিভার্সিটি থেকে যেকোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে টাইপিং এ দক্ষতা। ইংরেজি তে টাইপ করে মিনিট এ  ৩৫ টি শব্দ এবং হিন্দিতে ৩০ টি শব্দ টাইপ করার দক্ষতা থাকতে হবে। এছাড়া MS-Office এ কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।


বেতন-

আপনাকে প্রতিমাসে ২১,১৮৪/- টাকা করে বেতন দেওয়া হবে।


আবেদন ফি

সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ৭৫০ টাকা এবং সংরক্ষিত প্রার্থীদের জন্য ৪৫০ টাকা আবেদন ফি  জমা দিতে হবে।

আবেদন পদ্ধতি

অনলাইন এ আবেদনের সুযোগ পাবেন। প্রথমেই BECIL অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ গিয়ে যাবতীয় তথ্য পূরণ নথি আপলোড করতে হবে। সব শেষে ফি জমা করতে হবে।  


Official notice-


Official Website-

 



Sunday, May 15, 2022

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -2


 

পর্ব -২


অগ্রহায়ণের প্রথম ভাগ। সূর্যের রক্রিম আলো তখন মলিন হতে চলেছে। মেঘের এক কোণে থালার মত লাল টুকটুকে সূর্যটা প্রায় অর্ধেকের উপর অদৃশ্য হয়েছে। শীতের ভাব কম নয়। তবুও ঠাকুরদা পায়ে হেঁটে প্রতিদিন ঐ সময়ে মাঠে বেড়াতে যেতেন। মাঠের মধ্যে সোনালী রং এর ধান গাছ। গাছগুলো মাঠের মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। চাষীরা মাঠ হতে বাড়ী ফিরছে। ঠাকুরদা আপন মনেই ধীরে ধীরে হেঁটে চলেছেন।  

   হঠাৎ কাদের কণ্ঠস্বরে দাঁড়িয়ে পড়লেন, মেঠো রাস্তার উপর। কারা যেন আলোচনা করছে ধনী ব্যক্তির ছেলে সে, জানিস তো মেয়ের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে এঁটো পাতার মত ফেলে দেবে। ছোট জাত আমরা, প্রতিবাদ করতে যাবি কেউ তোকে সহযোগিতা করতে যাবে না। তোর মেয়ে যে কান্ড করেছে কারো কাছে মুখ দেখাতে পারবি? পারবি না, মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যেতে হবে যতীন। এ আশা করিসনে জমিদার ব্রজকিশোর সিংহের ছোট ছেলে প্রেমাংশু ছোট জাত যতীন বাগদীর মেয়ের জামাই হবে।

      ওকথা ঠাকুরদার কর্ণে প্রবেশ করতেই তাঁর মাথায় যেন বাজ পড়ল। মনে হয় ঠাকুরদাকে উদ্দেশ্য করেই ঐ কথাগুলো আলোচনা করছিল। তিনি ওখানে আর অপেক্ষা করেন নি। অন্দর মহলে প্রবেশ করে বুকে হাত দিয়ে বসে পড়েছিলেন। ঘন ঘন নিঃশ্বাসে মনে হয় ভারাক্রান্ত মনকে হালকা করার চেষ্টা করছিলেন।

    কিছুক্ষণ পর ছোট কাকার ডাক পড়লো। ছোটকাকা বাড়ীতে ছিল না। বাগদি পাড়ার মজলিসে লিপ্ত ছিল। সেই সুযোগে মেজকাকা মুচকি হেসে বলেছিলেন, তিনি বারংবার বলে ছিলেন প্রেমাংশুর প্রতি নজর দিতে, নইলে একদিন আমাদের মান সম্মান, আভিজাত্য ধুলাতে লুণ্ঠিত হবে। 

       ওকথা শোনার পর ঠাকুরদা মেজকাকার মুখ পানে শুধু তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু মেজকাকা কোন দিন একথা বলেন নি, নতুবা তিনি যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বণ করতেন। এখন কথা হচ্ছে ঠাকুরদাকে বিচার করতে হবে। ন্যায়, আভিজাত্যের গৌরব নিয়ে তিনি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। তা সহজে নত হবেন না। 


     তিনি নিশ্চয়ই এই ঘটনা যাচাই করে দেখবেন। ছোটকাকা ঠাকুরদাকে জানিয়ে ছিলেন তাঁর শোনা কথায় যথেষ্ট সত্যতা আছে। ওকথা শোনার পর ঠাকুরদা প্রেমাংশু বলে চিৎকার করে উঠে ছিলেন। সেই সময় মনে হয়েছিল তাঁর মাথায় কেউ যেন কঠিন ধাতু দিয়ে আঘাত করেছিলেন। তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে ছোটকাকা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। 

   শুধু ছোটকাকা কেন, যে কোন মানুষ ঠাকুরদার গুরু গম্ভীর আওয়াজ শুনে এস্ত হয়ে যেতেন। এমনকি তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেছিলেন, তার জানা উচিত ছিল কার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। ছোট কাকা বজ্রাহতের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকলেন। এই অপরাধের বিনিময়ে ছোটকাকার যে কি শাস্তি, সেকথা স্মরণ করিয়েছিলেন। 

    ছোটকাকা নিঃস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি ঠাকুর্দার নির্মম কঠোর বিচারের কথা জানতেন। সুতরাং তাঁর অন্যায় অবিচারের কথা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে প্রয়াসী হত না। ঠাকুর্দার বিচারকে ছোটকাকা মেনে নিতে পারেনি বলে তিনি তখন হতে গ্রাম হতে নির্বাসিত হলেন। কি অন্যায় তিনি করেছেন তা ভালভাবেই অভিজ্ঞ। তবুও মনে মনে ভাবতে থাকেন তিনি যেন নিষ্কলুস। হয়ত একজন খ্যাতনামা আভিজাত্য পরায়ণ ধনবান প্রভাবশালীর পুত্র এক ছোটজাতের মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছেন। ছোট কাকা ন্যায় নিষ্টাবান পুরুষ। তিনিই ছোট জাতদের অন্ধকারে জ্যোতির্ময়ী শিখা দেখিয়েছেন। ওদের জ্ঞান দিয়েছেন, তাহলে তার অন্যায়টা কোথায়? 

    তিনি জানতেন তাকে নির্বাসিত হতে হবে। এই নির্বাসন স্বেচ্ছায় গ্রহণ করবেন। বিলম্ব না করে বাড়ীর চৌকাঠ পার হতে গিয়ে পুনরায় দাদুর কথায় তাকে দাঁড়াতে হল। ছোট পুত্রের মায়া ত্যাগ করতে পারছেন না। তিনি প্রাণের চেয়ে ভালবাসেন তাঁকে। আট বছরের মা মরা ছেলেকে কোলে পিঠে মানুষ করেছিলেন। ওকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। 

প্রেমাংশুকে দিয়ে চন্ডীপুরে এক নতুন আলোর সঞ্চার করবেন। যে আলোর অভাবে অন্ধকারে ডুবে আছেন গ্রামবাসীরা একতাবদ্ধ হয়ে ঠাকুরদার কাছে আবদার করে বলেছিলেন, গ্রামে যদি একজন ডাক্তারকে বসানো হতো তাহলে চন্ডীপুর গ্রামবাসীদের চিকিৎসার জন্য পাঁচ মাইল পথ হেঁটে দূর গ্রামে যেতে হত না ও উপরন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা প্রতীক্ষা করতে হত না।  

   শহরও অনুকে দূর। তাই ঠাকুর্দার কাছে সকলের অনুরোধ এই গ্রামে কোন ডাক্তারকে আশ্রয় দিতে পারলে গ্রামবাসীর অনেক উপকার হবে। 

  ঠাকুরদা কথা দিয়েছিলেন নিশ্চয় গ্রামে কোন ডাক্তারকে নিয়ে আসবেন। তাঁর কুঠীর মধ্যে তাকে ডিসপেনসারি করে দেবেন। হাজার চেষ্টা করা সত্ত্বেও কোন প্রকারে ডাক্তারকে আনতে পারেন নি। এই প্রেত পুরীতে কোন ডাক্তার বাস করতে পারবেন না।

      ঠাকুর্দা এ অপমান সহ্য করতে পারেনি। গ্রামের পাশে চারিদিকে জঙ্গল ও পোড়ো বাড়ী আছে বলে চন্ডীপুর প্রেত পুরী। গ্রামবাসীদের কথা দিয়েছিলেন আরো কয়েক বছর ধৈর্য ধরতে। কোন ডাক্তারকে তোষামোদ করবেন না। নিজ পুত্র প্রেমাংশুকে ডাক্তারী পাশ করিয়ে গ্রামবাসীদের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে বলবেন। কিন্তু সব আশা - আকাঙ্খার, স্বপ্ন ধুলিসাৎ হতে চলেছে  ও কথা গুলো মনে পড়তেই প্রেমাংশুকে দাঁড়াতে বললেন। 


                                                   ক্রমশ...


প্রথম পর্ব টি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন--



তৃতীয় পর্বটি পড়তে নীচে দেওয়া লিংক টি ক্লিক করুন--


Thursday, May 12, 2022

কৃষি দপ্তরে গ্রূপ-সি কর্মী নিয়োগ || Recruitment of Group-C staff in the Department of Agriculture


 


ভারত তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের জন্য নতুন সুখবর। কৃষি দপ্তরে গ্রূপ-সি কর্মী নিয়োগ করা হবে। এটি ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান সংস্থার বিভিন্ন পোস্ট। সমস্ত ভারতীয় এখানে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। চাকরি সংক্রান্ত সম্পূর্ণ বিবরণ নীচে দেওয়া হল-





পদের নাম- অ্যাসিস্ট্যান্ট (ICAR Head quarter)[কৃষি অনুসন্ধান বিভাগ]


মোট শূন্যপদ- ৭১ টি। 



শিক্ষকতা যোগ্যতা- যে কোনো স্বীকৃত ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন পাশ করে থাকতে হবে তবেই আবেদন করার সুযোগ পাবেন।


বয়স- আবেদনকারী প্রতিটি প্রার্থীর বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হওয়া আবশ্যক। তবে সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।


বেতন- ৪৪,৯০০ টাকা প্রতি মাসে।




পদের নাম- অ্যাসিস্ট্যান্ট (ICAR Institutes)


মোট শূন্যপদ- ৩৯১ টি।


শিক্ষকতা যোগ্যতা- যে কোনো স্বীকৃত ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন পাশ করে থাকতে হবে তবেই আবেদন করার সুযোগ পাবেন।


বয়স- আবেদনকারী প্রতিটি প্রার্থীর বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হওয়া আবশ্যক। তবে সংরক্ষিত প্রার্থীরা সরকারি নিয়মে ছাড় পাবেন।


বেতন- ৩৫,৪০০ টাকা প্রতি মাসে।





আবেদন পদ্ধতি- আপনাকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। 



তারিখ- আবেদন করার সুযোগ পাবেন ১ লা জুন, ২০২২ পর্যন্ত।



Official Website- 

Click here


apply Now-

Click here





উপন্যাস - লাস্যময়ীর ছোবল || সিদ্ধার্থ সিংহ || Lashamayir Chobol by Sidhartha Singha || Fiction - Lashamayir Chobol part -1


 

      লাস্যময়ীর ছোবল

                --সিদ্ধার্থ সিংহ


                         এক


হাওড়া স্টেশনের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের সামনে ঋজু আর পরমার্থ অপেক্ষা করছিল। ওরা একটু আগেই এসেছে। গত কাল রাত সাড়ে বারোটায় অফিস থেকে বেরিয়ে নীচে যখন ড্রপ কারের জন্য অপেক্ষা করছে ঋজু, তখন হঠাত্‌ই পরমার্থ ওর কাছে এসে বলল, এই রে, আশিস তোমাকে বলতে বলেছিল। একদম ভুলে গেছি। কাল দাঁতনে একটা উত্‌সব আছে। সেখানে কবিতা পাঠেরও ব্যবস্থা আছে। ও তোমাকে বারবার করে যেতে বলেছে। তুমি যাবে?
ঋজু কী ভাবছিল। ও কিছু বলছে না দেখে পরমার্থ ফের বলল, কাল তো তোমার অফ ডে। চলো না।
— কখন?
— কাল সকালে। সাতটার সময়। হাওড়া থেকে।

হাওড়া থেকে ঋজুর বাড়ি খুব একটা দূরে নয়, চেতলায়। ওখান থেকে একটাই বাস। সতেরো নম্বর। কখন আসে কোনও ঠিক নেই। তাই হাতে একটু সময় নিয়েই ও বেরিয়েছিল। কিন্তু রাস্তা পার হওয়ার আগেই দেখে বাস আসছে। ফলে সাতটা নয়, তার অনেক আগেই ও চলে এসেছে। এসে দেখে, অফিস থেকে অত রাতে বাড়ি গিয়েও এই সাতসকালেই সেই বিরাটি থেকে পরমার্থও এসে হাজির। ঘড়িতে তখনও সাতটা বাজতে মিনিট দশেক বাকি।
ও সামনে আসতেই পরমার্থ বলল, চা খাবে?
— ওরা আসুক না। একসঙ্গে খাব। ট্রেন ক’টায়?
— তা তো জানি না। আশিস তো বলল, সাতটার সময় এখানে দাঁড়াতে।
— এখানেই বলেছে তো?
— হ্যাঁ রে বাবা...
— সাতটা তো প্রায় বাজে।
— এখনও বাজেনি। আসবে তো সেই সল্টলেক থেকে। সবার বাড়ি তো আর তোমার মতো হাওড়া স্টেশনের পাশে নয়, যে বাসে উঠলাম আর হাওড়ায় পৌঁছে গেলাম। চা খাবে? ওই তো আশিস...
ঋজু দেখল, শুধু আশিস নয়, ট্যাক্সি থেকে একে একে নামছে আরও তিন জন। তার মধ্যে দু’জন মহিলা।
আশিস কাজ করে আকাশবাণীতে। পরের সপ্তাহে রেডিওতে কী কী অনুষ্ঠান হবে, সেই অনুষ্ঠান-সূচি আনতে প্রত্যেক সপ্তাহে পরমার্থকে যেতে হয় ওর কাছে। আনন্দবাজারের যে দফতরে ও কাজ করে, সেখানে প্রুফ দেখা ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে ওই অনুষ্ঠান-সূচি এনে কম্পোজ করে দেওয়া ওর কাজ।
এই কাজ করতে করতেই আশিসের সঙ্গে ওর বেশ বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। সেই সূত্রেই পরমার্থ যেমন জেনেছে, ও লোকসঙ্গীত গায়। কবিতা লেখে। দুটো কবিতার বইও বেরিয়েছে। শুধু ও একাই নয়, ওর বউ রিনাও কবিতা লেখে। তেমনি আশিসও জেনেছে, পরমার্থও ইদানিং কবিতা লিখতে শুরু করেছে। অনেক কবির সঙ্গেই ওর আলাপ আছে। ওর মুখেই ঋজুর নাম শুনে আশিস বলেছিল, উনি কি আপনাদের অফিসে কাজ করেন নাকি?
— কেন, আপনি চেনেন?
আশিস বলেছিল, না, আলাপ নেই। তবে ওর অনেক কবিতা পড়েছি। উনি তো প্রচুর লেখেন। এত লেখেন কী করে? আপনার সঙ্গে ওনার কী রকম সম্পর্ক?
পরমার্থ বলেছিল, ভালই। ও তো আমাদের ডিপার্টমেন্টেই আছে।
— তাই নাকি? পারলে এক দিন নিয়ে আসুন না, জমিয়ে আড্ডা মারা যাবে।

ঋজুকে সে কথা বলতেই ঋজু বলেছিল, ঠিক আছে এক দিন যাবখ’ন। কিন্তু আজ নয়, কাল নয়, করে আর যাওয়া হচ্ছিল না। তাই পরমার্থ এক দিন ওকে বলল, আরে বাবা চলো না, গেলে তোমার লাভই হবে। ও এখন অভিজ্ঞানটা দেখে। কবিতা পড়ার জন্য ওর পেছনে কত লোক ঘুরঘুর করে, জানো? আর ও নিজে থেকে তোমাকে ডাকছে, তুমি যাবে না? ওখানে কবিতা পড়লে পাঁচশো টাকা দেয়।
তাতেও খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছিল না দেখে ঋজুকে প্রায় জোর করেই ও একদিন নিয়ে গিয়েছিল আকাশবাণীতে। সেই আলাপ। তার পর এই।
ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে কাঁধের ব্যাগটা সামলাতে সামলাতে লম্বা লম্বা পা ফেলে ওদের সামনে দিয়ে যেতে যেতেই আশিস বলল, চলে আসুন, চলে আসুন। দেরি হয়ে গেছে।
ও আগে আগে। পেছনে ঋজুরা। তারও পেছনে ট্যাক্সি থেকে নামা বাকি তিন জন।
কাউন্টারে তেমন ভিড় ছিল না। টিকিট-ফিকিট কেটে ওরা ট্রেনে উঠে পড়ল। না। ট্রেনেও খুব একটা ভিড় নেই। ছুটির দিন। তাই ফাঁকা ফাঁকা। একটা খোপেই ওরা সবাই বসার জায়গা পেয়ে গেল। এ দিকের সিটে ঋজু, পরমার্থ আর ট্যাক্সি থেকে নামা কোর্ট-প্যান্ট পরা ওই ভদ্রলোক। বাকিরা উল্টো দিকের সিটে। ট্রেন ছাড়ার আগেই আশিস সবার সঙ্গে সবার আলাপ করিয়ে দিল। কোর্ট-প্যান্ট পরা ভদ্রলোকটাকে দেখিয়ে বলল, ইনি মহাদেব মোশেল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন। বিবাহের ইতিহাস নিয়ে গবেষণামূলক একটা বই লিখেছেন। এ ছাড়া ছড়া-টাড়াও লেখেন। আর ইনি হচ্ছেন কণিকা রায়। কলকাতা টেলিফোন্‌সে কাজ করেন। এখন টেলিফোন ভবনে, না? কণিকার দিকে তাকিয়ে নিজেই যেন তার কাছে জানতে চাইল। তার পরে বলল, ক’দিন আগে ওর একটা সুন্দর কবিতার বই বেরিয়েছে। আর এর পরিচয় কী দেব, ইনি আমার গিন্নি, রিনা গিরি।
ঋজু মহাদেববাবুর দিকে তাকাল। মহাদেববাবু আর কণিকার কথাবার্তা দেখে হঠাৎ কেন জানি ঋজুর মনে হল, ওদের মধ্যে কোনও একটা সম্পর্ক আছে।
বেশ কিছু দিন আগে স্কটিশ চার্চ কলেজের সামনে জটলা দেখে ও দাঁড়িয়ে পড়েছিল। জটলার মধ্যমণি মধ্যবয়স্ক এক ভদ্রমহিলা। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্বামী এই কলেজে পড়ান। তাঁরই এক ছাত্রীর সঙ্গে তিনি প্রেম করেন। তাঁকে বহু বোঝানো হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। তাঁর বড় বড় ছেলেমেয়ে আছে। তারা স্কুলে পড়ে। স্কুলের মাইনে পর্যন্ত উনি দিচ্ছেন না। সংসার খরচা তো নয়ই। সব ওই মেয়েটার পেছনে ঢালছেন। তাই শেষ পর্যন্ত উনি নাকি থানায় গিয়েছিলেন। থানা থেকেও ভদ্রলোককে ডেকে বলে দিয়েছে, যাতে তিনি ঠিকঠাক মতো সংসার করেন। বউয়ের গায়ে যেন হাত না তোলেন। অথচ তার পর থেকেই তিনি আর বাড়ি ফিরছেন না। তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য উনি কলেজে এসেছিলেন। কিন্তু টিচার্স রুমের সামনে যেতেই উনি তাঁকে দেখতে পেয়ে যান। অমনি ঘর থেকে বেরিয়ে তাঁকে ধাক্কা মেরে এক দৌড়। ভদ্রমহিলা এখন বলছেন, উনি এ দিকেই এসেছেন, আপনারা কেউ কি দেখেছেন? ঘিয়ে রঙের জামা পরা। কালো প্যান্ট। চোখে চশমা। মাথায় পাতলা-পাতলা চুল...
ওই দৃশ্যটা মনে পড়ে গেল ঋজুর। মহাদেববাবু আবার সে রকম নন তো! ঘরে বউ-ছেলেমেয়ে সব আছে। আর বাইরে এর সঙ্গে... এরা নিশ্চয়ই স্বামী স্ত্রী নন। ওঁর পদবি তো রায়। আর এঁর মোশেল।
টুকটাক কথা হচ্ছিল। ঋজু কথায় কথায় মহাদেববাবুকে জিজ্ঞেস করল, আপনি কোথায় থাকেন?
উনি বললেন, সল্টলেকে।
— সল্টলেকে কোথায়?
— তেরো নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে।
— আর আপনি? কণিকার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল ঋজু।
— আমিও সল্টলেকে।
— সল্টলেকে কোথায়?
— তেরো নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে।
— ও। দু’জনেই কাছাকাছি থাকেন?
হঠাত্‌ মহাদেববাবু বলে উঠলেন, কাছাকাছি নয়, খুব কাছাকাছি। একই বাড়িতে। একই ঘরে। আসলে আমি ওর বাড়িতে থাকি।
কথাটা শুনে একটু থতমত খেল ঋজু। এত দিন ও শুনেছে, ছেলেরা মেয়েদের রক্ষিতা রাখে। এ তো উল্টো কেস। মেয়েটা এঁকে রেখেছে! নাকি মেয়েটা তাঁর বাড়িতে পেয়িং গেস্ট চালায়! ঋজু ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না ব্যাপারটা কী? ও তখন মনে মনে ওর মতো করে দুই আর দুইয়ে চার করার চেষ্টা করছে।
তখন আশিসই বলল, এখনও বুঝতে পারলেন না, ওরা কর্তা-গিন্নি। ওদের আনতে গিয়েই তো এত দেরি হয়ে গেল।
কণিকা বলল, আমার কোনও দোষ নেই। আমি তো আসব না বলেই দিয়েছিলাম। কিন্তু রিনা গত কাল রাতে এত বার করে বলল যে, না এসে থাকতে পারলাম না। আর তা ছাড়া ছুটির দিনে এত তাড়াতাড়ি ওঠার অভ্যাস নেই তো...
ওকে মাঝপথে থামিয়ে মহাদেববাবু বললেন, আমি কিন্তু তোমাকে সাড়ে পাঁচটায় ডেকে দিয়েছিলাম।

ট্রেন চলছিল। কথা হচ্ছিল। জানালা দিয়ে হুহু করে হাওয়া আসছে। কণিকার কপালের দু’দিক দিয়ে নামানো দুটো লকস বারবার ওর চোখের উপরে এসে পড়ছে। হঠাৎ মহাদেববাবু তাঁর কোর্টের ভিতর পকেট থেকে একটা ছোট্ট পকেট-বুক বার করে ঋজুর দিকে এগিয়ে দিলেন— এটা বহু দিন আগে বেরিয়েছিল। তখন ছড়াই লিখতাম। এখন আর সময় পাই না।
ঋজু উল্টেপাল্টে দেখছে। একটা পড়তে গিয়েই হুচোট খেল। প্রচ্ছদ দেখে মনে হয়েছিল ছোটদের বই। কিন্তু এ কী! বইটা বন্ধ করে আশিসের দিকে এগিয়ে দিল। আশিস বলল, এটা আমি আগেই দেখেছি।
শব্দ ক’টার মধ্যে বইটা হাতে নেবার সামান্যতম সম্ভাবনা না দেখে রিনার দিকে বাড়িয়ে দিল ঋজু। বইটা হাতে নিয়ে রিনা বলল, এটা আমার পড়া। যখন বেরিয়েছিল, তখনই উনি দিয়েছিলেন। এখনও বোধহয় বাড়িতে আছে।
পরমার্থ বলল, ঋজুর কিন্তু অনেকগুলো বই আছে। তার পর ঋজুর দিকে তাকিয়ে বলল, সঙ্গে আছে নাকি?
— হ্যাঁ, আছে বোধহয়। বলেই, কাঁধের ব্যাগ থেকে দুটো বই বার করল ঋজু। একটা গল্পের আর একটা কবিতার।
পরমার্থ গল্পের বইটা নিয়ে আশিসের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, জানো তো, এই গল্পটা যখন সানন্দায় বেরোয়, তখন বিশাল হইচই হয়েছিল। ওর বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার মামলা হয়েছিল।
ঋজু একটু লজ্জার ভান করে বলল, না না। আমার একার নামে নয়। আমাদের পাঁচ জনের নামে পাঁচ কোটি। আমার নামে শুধু এক কোটি।
— তাই নাকি? কী হয়েছিল? মহাদেববাবু জানার জন্য উত্‌সুক হয়ে উঠলেন।
পরমার্থ বলল, সে সময় তো সমস্ত খবরের কাগজের প্রথম পাতায় এটা বেরিয়েছিল...
— তাই নাকি? ঋজুর দিকে তাকিয়ে মহাদেববাবু বললেন, কী হয়েছিল?
ঋজু বলল, আসলে আমি তখন সানন্দায় ফ্রিল্যান্স করি। মানে, লেখা ছাপা হলে টাকা পাই। না হলে, নয়। তো, সানন্দায় যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে সিদ্ধার্থ সরকার আর অনিরুদ্ধ ধর ছিলেন আমার খুব কাছের মানুষ। তা, ওঁরা ঠিক করলেন, উত্তমকুমারকে নিয়ে একটা টিভি সিরিয়াল বানাবেন। তো, আমিও ভিড়ে গেলাম ওঁদের সঙ্গে। লেখালিখি তখন মাথায় উঠেছে। কিন্তু না লিখলে আমার চলবে কী করে? অনিরুদ্ধদাকে সে কথা বলতেই উনি বললেন, গল্প লিখতে পারবি? আমি তখন কবিতা ছড়া লিখি। তবু বললাম, পারব। উনি বললেন, তা হলে আজকে রাতের মধ্যেই একটা গল্প লিখে ফেল। কাল বারোটা-সাড়ে বারোটার মধ্যে পিটিএসে ধরিয়ে দিস। পিটিএস মানে, যেখানে কম্পোজ হয়। আমি বললাম, তুমি দেখবে না? উনি বললেন, তোর লেখা আবার দেখার কী আছে? ঠিক আছে, প্রুফে দেখে নেব। তার পর যখন লেখাটা ছেপে বেরোল, স্টলে খোঁজ করতে গিয়ে দেখি, আশপাশের কোনও স্টলে সানন্দা নেই। সে দিনই বেলার দিকে লোকাল কাউন্সিলারের সঙ্গে আমার বাড়িতে এসে হাজির সৌগত রায়।
— কোন সৌগত রায়? আমাদের সৌগত রায়? অধ্যাপক?
পরমার্থ বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ, কংগ্রেসের এমএলএ।
— তার পর? বলেই, সামনের দিকে আর একটু ঝুঁকে এলেন মহাদেববাবু।
— তার পর আর কী? আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে রাস্তায় নিয়ে গিয়ে চড়চাপড়, ঘুষি।
— সোজা কথায় বলো না, উত্তম মধ্যম। পরমার্থ ফোড়ং কাটল।
— হ্যাঁ, তার পর? নড়েচড়ে বসলেন তিনি।
— আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল লোকাল কাউন্সিলারের ডেরায়।
— কোন কাউন্সিলার?
— আমাদের ওখানকার।
— কী নাম?
— দেবু ঘোষ।
— ও। তার পর?
— আবার চড়চাপড়। সিগারেটের ছ্যাঁকাট্যাকা। তার পর হ্যাঁচড়াতে হ্যাঁচড়াতে আমাকে ওরা নিয়ে গেল তিন তলায়। চিলেকোঠার ঘরে আমাকে ঠেলে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে ছিটকিনি তুলে দিল।
— তার পর?
দম নিয়ে ঋজু বলল, আমার বাড়িতে তখন রাজু ছিল। রাজুকে মনে আছে? সুদীপার সঙ্গে যার বিয়ে হয়েছিল। সেই সুদীপা পাল, যে মা-বাবা-ঠাকুমাকে কালোজামের সঙ্গে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছিল। পরে রাজসাক্ষী হয়ে রেহাই পায়। যার জন্য ওর মাস্টার মশাইয়ের যাবজ্জীবন জেল হয়েছিল। মনে আছে?
— আপনি ওকে চিনলেন কী করে? উল্টো দিকের সিটে বসে প্রশ্ন ছুড়ে দিল আশিস।
— আসলে বারুইপুরে আমাদের একটা বাগানবাড়ি আছে। তার পাশেই থাকত রাজু। ছেলেটা এমনি কাজটাজ কিছু করত না। মাঝেমধ্যে ডাকাতি-টাকাতি করত। ধরাও পড়ত। ও তখন জেলে। সুদীপাও জেলে। একই দিনে ওদের ডেট পড়ত। জেল থেকে একই ভ্যানে করে কোর্টে নিয়ে যাওয়া হত ওদের। ওই যাতায়াতের পথেই ওদের আলাপ। তা থেকে প্রেম। এবং বিয়ে। বিয়ে করে থাকবে কোথায়? রাজুর মা অমন একটা খুনি মেয়েকে কিছুতেই বউ হিসেবে মেনে নেবে না। ওরা তখন আমার মাকে এসে ধরল। আমাদের ওই বাড়িতে অনেকগুলো ঘর তালা বন্ধ হয়ে পড়ে ছিল। মা ওদের থাকার জন্য একটা ঘর খুলে দিল। এমনিতে আমরা ওখানে খুব একটা যেতে-টেতে পারি না। ফাঁকা ঘর পড়ে থাকলে কে কখন কোথা থেকে দখল করে নেবে, তার কোনও ঠিক আছে? তাই কয়েকটা ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। রাজুকে বলা হল, বাড়ি ভাড়ার টাকা কেউ দিলে, তুই তোর কাছে রেখে দিবি। যখন সময় পাবি, ওই বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসবি।
যে দিন এই ঘটনা ঘটে, তার আগের দিনই বাড়ি ভাড়ার টাকা দেওয়ার জন্য ও আর ওর বউ আমাদের আলিপুরের বাড়িতে এসেছিল। গল্পে গল্পে রাত হয়ে গিয়েছিল। তাই মা ওদের বলেছিল থেকে যেতে।
তা, ওই লোকগুলো আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে দেখে রাজু নাকি পেছন পেছন এসেছিল। আমাকে যে ওই বাড়িতে জোর করে ঢুকিয়েছে, সেটা ও দেখেছিল। কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরেও আমি বেরোচ্ছি না দেখে ওর কেমন সন্দেহ হয়। হাঁটতে হাঁটতে ও সেই বাড়িটার পেছন দিকে চলে যায়। ওকে কেউ চেনে না। ফলে কেউ কোনও সন্দেহও করেনি। ওই বাড়িটার পেছনেই ছিল একটা পরিত্যাক্ত পুরনো ভাঙাচোরা বাড়ি। গাছগাছালিতে ভর্তি। কেমন যেন জঙ্গল জঙ্গল। কোনও লোকজন নেই। ওখানে সাপখোপ থাকতে পারে জেনেও ও কিন্তু এতটুকু ভয় পায়নি। আমাকে যে বাড়িতে ঢুকিয়েছিল, সেই বাড়ির জলের পাইপ বেয়ে তরতর করে ও ছাদে উঠে গিয়েছিল। সেখানেও নাকি কেউ ছিল না। চিলেকোঠার ঘরে তখন আমি একা। দুমদাম করে দরজা ধাক্কাচ্ছি। সেই আওয়াজ শুনেই ও ছিটকিনি খুলে দেয়। আমি বেরিয়ে এসে ওর সঙ্গেই পাইপ বেয়ে নীচে নেমে আসি। প্রথমেই ফোন করি সুদেষ্ণাদিকে। সুদেষ্ণাদি তখন সানন্দায় কাজ করেন। উনি বললেন, লোকাল থানায় একটা ডায়রি করে এখানে চলে আয়। কিন্তু লোকাল থানা আমার ডায়রি নিলে তো। অগত্যা সুদেষ্ণাদির কথা মতো সানন্দার অফিসে চলে যাই। আমাদের মতোই ওখানে লেখালিখি করত, আমাদেরই বন্ধু গৌতম চক্রবর্তী। ও তখন ওখানে ছিল। সুদেষ্ণাদি ওকে নিয়ে ফের থানায় যেতে বলল।
আমরা গেলাম। এবং অবাক কাণ্ড, ও.সির ঘরে ঢোকার পরে আমার নাম শুনেই ও.সি বললেন, আপনি তো আমাকে নিয়েও লিখেছেন। আমি তো অবাক। কিছুতেই মনে করতে পারছি না, ওঁকে নিয়ে আমি আবার কী লিখলাম! তখন উনি তাঁর টেবিল থেকে কালো ফোনটা সরিয়ে বললেন, দেখুন, ফোনের নীচে লোকনাথ বাবার ছবি। মনে পড়ে গেল, গল্পের এক জায়গায় ছিল, লোকাল থানার ওসি লোকনাথ বাবার খুব ভক্ত। কিন্তু সেটা যাতে কেউ বুঝতে না পারে, সে জন্য উনি টেবিলের কাচের তলায় লোকনাথ বাবার ছবি রেখে ফোন দিয়ে ঢেকে রাখেন। বুঝতে পারলাম, আমার অবস্থা শোচনীয়। যতই বানিয়ে বানিয়ে লিখে থাকি না কেন, সব কিছুই কেমন যেন কাকতালীয় ভাবে মিলে যাচ্ছে।
— তার পর কী হল? আশিসের পাশে বসে ছিল রিনা। সে উদগ্রীব হয়ে উঠল।
— তখন লালবাজারের ডিসিডিডি ওয়ান ছিলেন গৌতমমোহন চক্রবর্তী। তাঁর সঙ্গে দীপান্বিতাদির খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। দীপান্বিতাদি কাজ করতেন সানন্দায়। ফাটাফাটি দেখতে ছিলেন। যেমনি লম্বা, তেমনি ফর্সা। টানা-টানা নাক-চোখ। যে কোনও পুরুষকে ঘায়েল করার পক্ষে যথেষ্ট। তখন সানন্দার সম্পাদক ছিলেন অপর্ণা সেন। প্রথম প্রথম তো অপর্ণা সেনের সঙ্গে আমি ওনাকে গুলিয়ে ফেলতাম। উনি আগে ছিলেন ভট্টাচার্য। পরে আনন্দবাজারের ফোটোগ্রাফার অশোক মজুমদারকে বিয়ে করে হন মজুমদার। সেই বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। পরে আরও অনেকের সঙ্গেই ওঁর ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল। শোনা যায়, সমরেশ বসুর সঙ্গেও নাকি ওঁর একটা সম্পর্ক ছিল। সেটা এত দূর গড়িয়েছিল যে, বিয়ে হয়-হয় আর কী। তখন তো মোবাইল ছিল না। চিঠি আর হাত-চিঠিই ছিল সম্বল। কত চিঠি যে সমরেশবাবু ওঁকে লিখেছিলেন! অনিরুদ্ধদার সঙ্গেও ওঁর যথেষ্ট মাখামাখি ছিল। ওঁদের প্রেম যখন তুঙ্গে, তখন নাকি দীপান্বিতাদি একদিন সোজা গিয়ে হাজির হয়েছিলেন অনিরুদ্ধদার বাড়িতে। অনিরুদ্ধদার বউ মিতা বউদিতে বলেছিলেন, তুমি ওকে ছেড়ে দাও। আমরা বিয়ে করব।
না। সে কথা শুনে মিতা বউদি এতটুকুও বিস্মিত হননি। বরং খুব ঠান্ডা মাথায় ওঁর কানের দুলটা দেখিয়ে বলেছিলেন, কোথা থেকে কিনেছ গো? দারুণ তো ডিজাইনটা...
তো, অনিরুদ্ধদার সঙ্গে ওঁর যেমন প্রেম ছিল, তেমনি ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে ঝগড়াও হত খুব। এক বার সমরেশ বসুকে নিয়ে ওঁদের মধ্যে খুব ঝামেলা হয়। দীপান্বিতাদি এত রেগে যান যে, তক্ষুনি বাড়ি গিয়ে আলমারির গোপন দেরাজ থেকে তাঁকে লেখা সমরেশবাবুর সব চিঠি বার করে এনে, সোজা হাওড়া ব্রিজের ওপর থেকে গঙ্গায় ফেলে দেন। ওগুলো থাকলে তরুণ গবেষকেরা নিশ্চয়ই সমরেশ বসুর পত্রসাহিত্যের উপরে ডক্টরেট করতে পারতেন! অনিরুদ্ধদার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরে উনি ফের আর একজনকে বিয়ে করেন। তখন হন নায়ার।
— তার পর কী হল? মহাদেববাবু প্রশ্ন করতেই ঋজু বুঝতে পারল, কথা বলতে বলতে ওর যেটা হয়, সেটাই হয়েছে। মূল বিষয় থেকে সরে গেছে ও। তাই তড়িঘড়ি নিজেকে শুধরে নিয়ে বলল, হ্যাঁ, কী যেন বলছিলাম, ও হ্যাঁ, মনে পড়েছে, তো, সেই দীপান্বিতা ফোন করে দিলেন গৌতমবাবুকে। সঙ্গে সঙ্গে উনি স্টেপ নিলেন। পর দিন খুব ভোরে, পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আমাদের বাড়িতে এসে হাজির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে আমাদের এলাকার আর এক কংগ্রেস নেতা বাবলা আইচ। তখনও তৃণমূল হয়নি। উনি বললেন, তুমি আমার ভাইয়ের মতো। একদম ভয় পাবে না। আমি যা বলার দেবুদাকে বলে দিয়েছি। উনি আর তোমাকে ডিসটার্ব করবে না। তোমার যদি কোনও দরকার হয়, আমাকে বলবে। যদি চাও, আমার ছেলেরা তোমার বাড়ি গার্ড দেবে।
কিন্তু তার আর দরকার হয়নি। সে দিনই আনন্দবাজার আর টেলিগ্রাফের প্রথম পাতায় বড় বড় করে ছাপা হয় সেই খবর। তার পর থেকে লোকাল কাউন্সিলার, তাঁর চেলাচামুণ্ডা, এমনকী সেই এম এল একেও আমাদের বাড়ির ত্রিসীমানার মধ্যে আর কখনও দেখা যায়নি।
ঋজু থামতেই পরমার্থ বলল, ওই গল্পের জন্যই তো ওর চাকরি হল।
কণিকা এতক্ষণ গোগ্রাসে ওর কথা শুনছিল। হঠাৎ বলল, তাই নাকি?
পরমার্থ ফের বলল, তার পর কত কাণ্ড, তার দিন কতক পরেই ছিল ফাইফোঁটা। আমি নিজে দেখেছি, অফিসে এসে মমতা ওকে রাখী পরিয়ে গেছে। শুধু ওকে নয়, ওর আশপাশে যারা ছিল, তাদেরও।
কণিকা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিল। শুধু বিড়বিড় করে বলল, তাই?
কথা বলতে বলতে কখন ট্রেন ঢুকে পড়েছে খড়্গপুরে, ওরা বুঝতে পারেনি। সেখানে অপেক্ষা করছিল উৎসব কমিটির দুটি গাড়ি। তাতে উঠে ওরা রওনা হয়ে গেল দাঁতনের দিকে।


                                               ক্রমশ...


দ্বিতীয় পর্ব টি পড়তে ক্লিক করুন নীচে দেওয়া লিংক টি---

Wednesday, May 11, 2022

বিভিন্ন ব্যাক্তির আসল নাম ও পরিচিত উপনাম || General knowledge for all Competitive exams || part-2

 


অন্য নামে বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিতি



পরিচিত নাম                      উপনাম 



•এশিয়ার মুক্তি সূর্য ----    ইন্দিরা গান্ধি

 ● মাস্টারদা ----    সূর্য সেন

● মহীশূরের বাঘ ---- টিপু সুলতান

 ● শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব ----   গদাধর চট্টোপাধ্যায়

 • ভারতের তোতাপাখি ----     আমির খসরু

 • চৈতন্য ---- বিশ্বম্ভর মিশ্র

 •ভারত পথিক ----         রাজা রামমোহন রায়

 •ভারতের পক্ষীমানব ---- সেলিম আলি

 • মহারাষ্ট্রের সক্রেটিস ----      এম.জি.রানাডে

 ● দেশপ্রাণ ----            বীরেন্দ্রনাথ শাসমল

• সারেন্ডার নট / রাষ্ট্রগুরু ----      সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী

 • কালী মির্জা ----         কালীদাস চট্টোপাধ্যায়

 • বাবাসাহেব ----        ভীমরাও আম্বেদকর

  • কাকাবাবু ----        মুজফ্ফর আহমেদ

 • এশিয়ার আলো ----        গৌতম বুদ্ধ

• স্বর কোকিলা ---- লতা মঙ্গেশকর

• ফুটবলের আইনস্টাইন ----     ডেভিড বেকহ্যাম

• ভারতের নাইটিঙ্গেল ----     সরোজিনী নাইডু 

 ● লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প ----     ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল

 • তানসেন ----     রামতনু মিশ্র 

 • ভারতের শেক্সপিয়র ----      মহাকবি কালিদাস

 •ভারতের নেপোলিয়ান ----    সমুদ্রগুপ্ত

• ভারতের ম্যাকিয়াভেলি ----    চাণক্য

 • কাশ্মীরের আকবর ----      জয়নাল আবেদিন

● মহামতী ---- গোপালকৃষ্ণ গোখলে

 •আন্না        ----        সি এন আন্নাদুরাই

 •উড়ান পরি/সোনার মেয়ে ----    পি টি ঊষা

 •উইজার্ড,হকির জাদুকর ----    ধ্যানচাঁদ

 • হরিয়ানা হ্যারিকেন ----      কপিলদেব নিখাঞ্জ

 • ভারতীয় জাতীয়তাবাদের দাদিমা ----    অ্যানি বেসান্ত

 •ভারতীয় জাতীয়তাবাদের জননী ----    মাদাম কামা

• ভারত ছাড়ো  ----                অরুণা আসফ আলি
  আন্দোলনের নায়িকা              


•ভিশি      ----               গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ

 • চিকা   ----             কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত

 • টারবুনেটর, ভাজ্জি ----      হরভজন সিং

 • স্মোকিং জো ----             ভিভ রিচার্ডস

• রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস ----     শোয়েব আখতার

 • ইম্মি লায়ন অব্ লাহোর ----      ইমরান খান

● স্মাইলিং অ্যাসাসিন ----           মূরলিথরন

•পান্টার, চায়নাম্যান ----           রিকি পন্টিং

•ফুটবল সম্রাট, ও রেই ----     পেলে

 • ইউরোপের পেলে, কালো চিতা ----         ইউসেবিও

• কাইজার   ----          ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার

• গ্যালোপিং মেজর, গোলমেশিন ----      পুসকাস

• দাদা, মহারাজ ---- সৌরভ গাঙ্গুলি 

● চাইনিজ ওয়াল/চিনের প্রাচীর ----     গোষ্ঠ পাল