গল্প || দীপ নিভে যায় || আশীষ কুন্ডু

 দীপ নিভে যায় 




অনেক দিন পর একা ট্রেনে চেপে বসেছে দীপ। 

অসুস্থতার পর এই প্রথম। ছাড়তে চাইছিলো না দীপকে একা একা, মিত্রা,অত্যন্ত চাপে থাকা অর্ধাঙ্গিনী। 

ট্রেন চলছে, হাওড়ামুখী। পৃথিবী দৃশ্যতঃ ছুটন্ত। সব পিছিয়ে যাচ্ছে যেন অতীতের পথে। গোলমাল একটা দরজার মুখে খড়গপুর পেরিয়ে ।একটা লোক বিনা রিজার্ভেশনে উঠেছে, টিটি ধমকাচ্ছে তাকে।লোকটা চেনা মনে হচ্ছিল। মনে পড়ছে না, খুব চেনা, খুব কাছের মানুষ মনে হচ্ছে। 

দীপ টিটিকে বললো, " ছেড়ে দিন না ওকে, গরীব মানুষ মনে হচ্ছে। " টিটি রেগে গিয়ে বললো, "নিজের চরকায় তেল দিন।"

মাথা গরম হয়ে গেল দীপের, "এরকম ভাবে

কথা বলছেন কেন? "

--" এই যে মশায়, সরকারী কাজে হস্তক্ষেপের ফল জানেন। " টিটিকে উদ্ধত মনে হয় দীপের। 

মাথা ঝিম ঝিম করছে দীপের। তবু একটা শেষ চেষ্টা হিসাবে দীপ বলে, "আপনি-- একটা

গরীব মানুষকে , --একটু ছেড়ে দিতে পারছেন

না,! "

এবার টিটি কার্যতঃ দীপকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে

দেয়। দীপ চোখে অন্ধকার দেখে। জিভ শুকনো লাগে। লোকটা সামনে। ভীষণ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে দীপের।অসাড় হয়ে আসছে অস্তিত্ব। লোকটা হাত বাড়িয়ে ধরে, --বলে,-- "আমার হাত ধরো কোনো কষ্ট থাকবে না !"

হাত বাড়িয়ে দেয় দীপ। ------

দীপের পার্থিব শরীরটা শোয়ানো বাড়ির উঠোনে। দুটো জ্যোতি বলয় অলক্ষে শূন্যে মিলায়। 



Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩১ || Sarod sonkha 1431 || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র