Posts

দংশন - মাইসার মন্ডল || গল্প || ছোটগল্প || Short story || Bengali Short story

 দংশন                       মাইসার মন্ডল এসএসসি পরীক্ষার্থী সন্তোষ বেশ কয়েকবার উত্তরপত্রে চোখ বোলাল। তারপর অস্ফুটস্বরে বলল , " নি:সন্দেহে ভাল রেজাল্ট হবে। ইন্টারভিউ-এর রেজাল্টটাও এরকম হলেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে যাব। "      ওর এরকম আশা করাটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। কারণ, ও স্কুল- কলেজ- ইউনিভার্সিটির প্রত‍্যেকটি পরীক্ষাতেই বরাবর ভালো রেজাল্ট করেছে। বি.এড ট্রেনিং করেছে।আবার এসএসসি পরীক্ষাতেও প্রায় প্রত‍্যেকটি প্রশ্নেরই সঠিক উত্তর লেখেছে।এইসব কারণে ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পাওয়ার আশা করল।ঠিক সময়ে ইন্টারভিউও দিল।তাতেও ভালো রেজাল্ট‌ হ‌ওয়ার আঁচ‌ পেল।সেজন‍্য আত্মবিশ্বাস নামের অসংখ‍্য সুতো দিয়ে চাকরি পাওয়ার দুর্মর আশার জাল বুনতে বুনতে ওর অনেকদিন কেটে গেল । তবুও ওর অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার আকাশের চাঁদ হয়েই থেকে গেল।      কিন্তু ওর ক্লাসফ্রেন্ড এবং এ-বারের এসএসসি পরীক্ষার্থী , মহেশের হাতে ঠিক সময়েই অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পৌঁছে গেল।ব‍্যাপারটা ঠিক আকাশের চাঁদ মহেশের হাতের মুঠোয় নেমে আসার মতো। খবরটা শুনে সন্তোষ অত‍্যন্ত বিস্মিত হয়ে উঠল।ব‍্যাপারটা ওর খুব‌ই রহস‍্যজনক মনে হল। ও

অজানা মানুষ - প্রতীক মন্ডল || গল্প || ছোটগল্প || Short story || Bengali Short story

          অজানা মানুষ                   প্রতীক মন্ডল আমি ভ্রমর। আমার নামটা খুব চেনা আপনার। রাত হলে আমায় খুঁজে পান নিজের ঘরের আশেপাশে। স্বপন চারিনী, কবিতার ছন্দের মতন। তবে, হ্যাঁ অন্য লোকে চেনে আমায় অন্য নামে। বাজারি মেয়ে বলে কথা। বাজারে নাম চামেলী। রাত হলেই ঘরের দরজা খুলে যায়। সকলে বের হয়ে আসে। কেউ শাড়ি,কেউ ছোট পোশাক, কেউ আবার রাজকীয় লেহেঙ্গা। কিন্তু, পেশাটি ভয়ঙ্কর নিম্ন। টাকা আছে, সম্মান নেই, আছে এক গুচ্ছ যন্ত্রনা। তবে সে আমায় যন্ত্রনা পেতে দেয় নি। পাগলের মতন ভালোবাসতো আমায়। ঠিক যেমন এক প্রেমিক তার প্রেমিকার সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকে, ঠিক তেমনই। সে কোনোদিন দূরে ঠেলে দেয় নি। আমায় মরতে দেয়নি। বারবার বাঁচিয়ে রেখেছে। মনে হয় যেন সে আমার কত কাছের। কিন্তু ওই যে চৌকাঠ পেরোলে তার ঠিকানা জানিনা। আমিও এই চৌকাঠ ছেড়ে বেরোইনি। বাইরের জগৎকে ভয় লাগে। ওদের ভাষায়, ' জিসম কা সওদা ' করতে পারিনা। তাই আমি হয়ত এখনো গনিকার পদমর্যাদা পাই নি। ঘরে কেউ আসে না। মদ গাজা খেয়ে খদ্দের ডাকতে পারিনা। সে দিতো না। সে আমায় আগলে রাখতো। এখনো রাখে। অনেক দূর থেকে রাখে। তবে একবার একটা ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘট

অন্ধজনে দেহো আলো - সংযুক্তা পাল || গল্প || ছোটগল্প || Short story || Bengali Short story

  অন্ধজনে দেহো আলো         সংযুক্তা পাল -‘টিকিট টিকিট। টিকিট’টা দিন দিদি’। কন্ড্যাক্টর হাতটা বাড়িয়ে টাকা চাইল। আদিরার সম্বিত ফিরল কন্ড্যাক্টরের ডাকে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল। বসার সিট পায়নি আজকে। ভাবছিল অন্ধ মানুষটার কথা।কি করে যে প্রতিদিন রাস্তা পার হয়, কার ভরসায় যে বেরোয় কে জানে! ভাবতে ভাবতেই ব্যাগের মধ্যে হাত ঢোকায়।পার্সটা বড় ব্যাগটাতেই রাখে। এদিক ওদিক হাতড়ালো। নাঃ পার্সটা তো হাতে আসছে না। চলন্ত বাসে ঠিকমতো একহাত দিয়ে ব্যাগ ফাঁক করে দেখতেও পাচ্ছে না। বাসটা প্রচুর স্পিডে ছুটছে। দাঁড়িয়ে থাকাই দায়। তাও এভাবেই সে প্রতিদিনের যাত্রায় অভ্যস্ত। পিছন দিকের জেনারেল সিটে বসে থাকা প্রায় তারই বয়সী একটি ছেলে বলে উঠল, ‘আপনার ব্যাগটা কিন্তু বাঁ দিক দিয়ে বেশ কিছুটা কাটা। আপনি দেখতে পাচ্ছেন না কাঁধে রয়েছে বলে। মনে হয় কেও ব্লেড দিয়ে কেটেছে’। আদিরা এবার আৎকে উঠল। সেরেছে। পার্সে তার এটি.এম.কার্ডগুলো,টাকা পয়সা মিলিয়ে চারশো-পাঁচশো টাকা ছিল। কী হবে এখন? কাঁদো-কাঁদো মুখে কন্ডাক্টরের দিকে তাকাল। রোজই যায় এই টাইমের বাসটাতে। কন্ড্যাক্টর তাকে চেনে। হাত নেড়ে আশ্বস্ত করল

তিল - রঞ্জিত মল্লিক || গল্প || ছোটগল্প || Short story || Bengali Short story

  তিল কবিরুল (রঞ্জিত মল্লিক)                আজ সৌনকের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন ! তার অফিস এই প্রথম তাঁর ওপর এক বিরাট বড় কাজের দায়িত্ব দিয়েছে । এতদিন সহকারী হিসেবে প্রতিটা বড় বড় অপারেশন সামলেছে কিন্তু আজ সম্পূর্ণ নেতৃত্ব তাঁর কাঁধে । পারবে কি সৌনক ? মোবাইলে টুং করে শব্দ হয়ে আলোটা জ্বলে উঠতেই কম্পিউটারের মাউস ছেড়ে মোবাইলটা হাতে নিতেই মেসেজটা চোখে ভেসে উঠল । এবার বেরোতেই হবে ! জামাকাপড় পরে তার সবসময়ের সঙ্গীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল সৌনক । যাওয়ার আগে মা কালির ফটোটার সামনে দাঁড়িয়ে মনে মনে বলল            "........আজকের দিনটা আমার পাশে থেকো মা !"             মা কালিকে প্রণাম করেই সৌনক গাড়িতে উঠল। পিছনের সীটে গুটি শুটি মেরে লুকিয়ে পড়ল টম। সৌনকের পাশে থেকে থেকে টম অনেকটাই সৌনকের মতি গতি বুঝে নিয়েছে। আজকের কাজটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। সৌনকের চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে ও বেশ চিন্তিত। পাশের সহকারী দুজনের মুখও বেশ গম্ভীর।              ঝিপ ঝিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির চাদর সরিয়ে গাড়ি এগিয়ে চলল বাইপাসের দিকে। মাঝে মাঝে মোবাইলে ফোন ভ

নিগ্রো কবিতার সংক্ষিপ্ত রূপরেখা - শংকর ব্রহ্ম || প্রবন্ধ || নিবন্ধ || Article Writing

 নিগ্রো কবিতার সংক্ষিপ্ত রূপরেখা শংকর ব্রহ্ম ------------------------------------------------------------------                            নিগ্রো কবিতার ইতিহাস মাত্র চারশো বছরের। প্রথম আমেরিকান নিগ্রো 'লুসি টেরী' প্রথম কবিতা লিখেছিলেন, তিনি ছিলেন একজন মহিলা।  তারপর কবিতা লেখেন ক্রীতদাসী একজন। নাম-জুপিটার হ্যামস। তারপর ফিলিস্ সুইটল। এই ভাবে একে একে অনেকেই কবিতা লিখতে শুরু করেন নিগ্রোদের মধ্যে ধীরে ধীরে।                           নিগ্রো কবিতার ইতিহাস ঘাটতে গেলে, দুটি ধারা স্পষ্ট দেখা যায়। প্রথম ধারা আফ্রিকার বা তৎসংলগ্ন বসবাসকারী নিগ্রোদের লেখা কবিতা। দ্বিতীয় ধারাটি যে সমস্ত নিগ্রোরা আমেরিকায় বাস করে, তাদের লেখা কবিতা।                           দু'টি ধারার কারণ, আফ্রিকায় বসবাস করে যে সব নিগ্রো তাদের ভৌগোলিক, রাজনৈতিক,  সামাজিক পরিবেশ আমেরিকায় বসবাসকারী নিগ্রোদের চেয়ে আলাদা। সেই ঐতিহ্য ভাল হোক মন্দ হোক, কুসংস্কার আচ্ছন্ন হোক, তা তাদের নিজস্ব।                      আর অন্যদিকে আমেরিকায় বসবাসকারী নিগ্রোদের প্রধান সমস্যা ছিল, তাদের শিকড়ের বিচ্ছিন্নতা। ফলে তারা ঐতিহ্যহীন, ইতিহাস বি