সুরের জলসা ঘর
সকাল থেকেই অবসাদ মন
সুরের আকাশে ইন্দ্র পতন
লতা থেকে সন্ধ্যা
সুরের জগত বন্ধা।
সুরের জগতের যাদুকর
নিজেই তিনি রত্ন আকর
অমৃত ধামে বসেছে আসর
ত্রয়ী দের নিয়ে জলসা ঘর।
সুরের জলসা ঘর
সকাল থেকেই অবসাদ মন
সুরের আকাশে ইন্দ্র পতন
লতা থেকে সন্ধ্যা
সুরের জগত বন্ধা।
সুরের জগতের যাদুকর
নিজেই তিনি রত্ন আকর
অমৃত ধামে বসেছে আসর
ত্রয়ী দের নিয়ে জলসা ঘর।
ঝড়ের কাছে রেখেছিলাম হৃদয়টারে
ঝড়ের কাছে রেখেছিলাম হৃদয়টারে!
কি পাপ করেছি মোরে।
বেগবতী বাতাস তারে,
দিল চুরমার করে।
রঞ্জিনী হলাম কোথায়,
বাজে কানে কিঙ্কিণী শব্দ যে।
রেখেছিলাম পিঞ্জরে,
তার হৃদয় টারে।
হয়তো পারিনি সুরভী দিতে ,
উপনীত হতে ।
এখনও রাতের আকাশ ভাবে ,
কখন ভোর হবে।
তবু তো স্বপ্ন দেখে,
এখনো বারে বারে।
ঊষার পাখি ডেকে বলে যাবে।
নিঝুম রাতের গভীর তন্দ্রা।
কেন স্বপ্ন ও ভাঙবে এবার।
বৃদ্ধ ইজিচেয়ার
দেওয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ছে
সেখানে আঁকা হচ্ছে টিকটিকির রমনের
ছায়া চিত্র এক বাধ্য ধারাবাহিকতায়
আমার চিলে কোঠা থেকে উড়ে যাচ্ছে পথহারা চিলের কান্না ধূসর রঙ মেখে
আমি কী খুঁজছি না জেনেই ছিপ ফেলছি
বারবার যদি ধরা দেয় সুখ
বৃদ্ধ ইজিচেয়ার বসে আছে শূন্যতায় চোখ রেখে নতুন কেউ এহে বসার অপেক্ষায় দহন মেনে নিয়ে
পরস্পর
দূরের মানুষটার কোনও সুখবর পাই নি বহুকাল হল
খবর নিয়ে আসেনি ডাক পিওন,
শুকনো মুখে টেবিল ঘিরে বসে আছে ঘরের মানুষ
দূরের মানুষটা হয়তো হাঘরের মতন রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, একটা চিঠি পাওয়ার আশায়
বহুকাল আমার উঠোনের বকুলের ডালে রোমাঞ্চ নেই, অনেক দিন দাওয়াত শুয়ে থাকা বেড়াল ঘর ছাড়া, কেটে যাচ্ছে দিনের পর দিন বছরের পর বছর
কেটে যাচ্ছে বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে
তেতে উঠেছে গরমে শরীর, আবার কুঁকড়ে যাচ্ছে ঠান্ডায়, এই ভাবে বদলে যাচ্ছে সময়
হয়তো ভালো আছে দূরের মানুষ
যেমন এখানে ভালো আছি আমি
ভালো আছে আমার ঘরের মানুষ।
ভালোবাসার একটি গোলাপ
তোমার আমার ভালোবাসার একটি গোলাপ
দাম যদিও হোক না মাত্র কুড়ি।
ক্ষতি নেই আমার তাতে।
তোমার আমার ভালোবাসার একটি গোলাপ
কুড়ি লক্ষ লাল গোলাপের থেকেও হয়
যেন চিররঙীন চির উজ্জল।
গোলাপের একটি পাপড়ি হয় যেন আমাদের
এই ভালোবাসার চিরসঙ্গী।
গোলাপের এক - একটি পাতাতে লেখা থাকুক
তোমার আমার ভালোবাসার সূত্রগুলি।
ভালোবাসার ওই সূত্রতে থাকবে না কোন বিয়োগ
থাকবে না কোন ভাগ।
থাকবে শুধু ভালোবাসার নিবিড় যোগাযোগ ।
গোলাপের প্রতিটি শিরায় শিরায় থাকবে
শুধু ভালোবাসা অনেক চিহ্ন।
প্রতিটি চিহ্ন দেবে তোমার আমার ভালোবাসার প্রমাণ
তোমার আমার ভালোবাসার একটি গোলাপ
কোন দিন হবে না গো পুরোন।
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত হবে গো
তোমার আমার ভালোবাসার মতো হবে চির নতুন।
এগিয়ে যেতে হবে
এলোমেলো পথ , আঁকাবাঁকা জ্যামিতি
কখনো চড়াই বা কখনো উতড়াই -
তবু এগিয়ে যেতে হবে
মুঠোয় নিয়ে প্রাণ , বিপদের ঝুঁকি
সামনে আরো সামনের দিকে ক্রমাগত।
আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা
ঝড় আসছে ; উত্তাল নদী , সমুদ্র
মাঝে মাঝে অশনি সংকেত
পদে পদে মৃত্যুভয় , বাড়ছে শঙ্কা
জানি এ পথ বড় কঠিন , দুর্গম!
তবু আমাদের এগিয়ে চলতে হবে
জোরে , আরো জোরে সামনের দিকে।
বন্ধুর এ পথে পিছনে তাকানো যাবে না -
পিছন ফেরা মানেই পরাজয় নিশ্চয়।
রুগ্ন শরীরে , পেটে বুরুণ্ডির ক্ষুধা -
হৃদয়ের ভিসুভিয়াস জ্বলছে দপ দপ করে।
বিপ্লবের আঁচ পড়ছে ছড়িয়ে চোখে মুখে
মুঠোয় ভরে প্রাণ ছুটতে হবে দুর্নিবার গতিতে
তবেই আসবে জয়, ফুটবে শুকনো মুখে হাসি।
আসবে রক্তিম ভোর , উড়বে বিজয় কেতন।
রক্ত দিয়ে বাঁধা রাখী
বাংলা ভাষার গর্বের দিন একুশে ফেব্রুয়ারী।
আর যা কিছু ভুলিনা কেন তাকে কি ভুলতে পারি?
মাতৃভাষার স্বীকৃতিতে সেদিন মানুষজন
ঢাকা শহরটাকে গড়ে তুলল রণাঙ্গন।
অত্যাচারী পাকিস্তানী শাষক-পুলিশ মিলে
তরতাজা পাঁচ ছেলের রক্তে গঙ্গা বইয়ে দিলে।
বরকত,জব্বার,রফিক,সালাম,সফিউর তাদের নাম।
শহীদ হয়েই বোঝাল তারা বাংলার কী সম্মান।
ভাষাযুদ্ধে সামিল হল পদ্মার এ পার,ও পার,
আজিমপুরের গণকবরে সাক্ষ আছে তার।
মাতৃভাষার নামে মানুষের এতখানি দরদ!
তাইতো মনে প্রাণ উৎসর্গের আসে শুভবোধ।
কেউ মরেনি, কেউ মরেনি, সবাই শহীদ হল।
তাদের নামে মাতৃভাষার জয়ধ্বনি তোল।
ইউনেস্কো শ্রদ্ধায় তাই করল মাথা নত।
স্বীকৃতি দিল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ব্রত।
মাতৃভাষার মর্যাদা কেউ দিতে ভুলোনা ।
রক্তের বিনিময়ের রাখী কখনও খুলোনা।
সেই আগের মতো..
ওরে ওই সই
চল না যায় আবার
সেই সবুজ ঘেরা মাঠের পাড়ে
জংলা নদীর ধারে।
সেথায় গিয়ে আবার খেলি
খেলাম পাতি খেলা,
সেই ছোট ছোট পাথর বাটি নিয়ে
আর পায়ে ঘাসের নূপুর পড়ে।
আর আমি সেই আগের মতই
বলবো না হয় তোকে আবার
কাজ থেকে ফেরার ভান করে,
-"কি রে খাবার হলো।"
ওমনি তুই বলবি আমায়
"দাড়াও, একটু আগেই ভাত চড়িয়েছি
হাত পা তো ধও দেবো ,
ছাড়ো না হয় এখন জামা গুলো।"
আর আমিও তাই ব্যস্ত মতো
ভান করে ওই
সারা গায়ে জল ছিটিয়ে
বসবো আসন পেতে।
আর তুই কচুর পাতায়
জল গড়িয়ে
ঘেটু পাতার থালা করে
দিবি আমায় খেতে।
আর আমিও খাবো তাই
দিব্যি মনের সুখে
খাওয়ার মত
ভান টি করে মুখে।
আর তুই পিছুন হতে কলা পাতার বাতাস দিয়ে
বলবি আমায় -" আর দেবো"
আমি বলব -" না না,
এই টুকু তো পেট বলো আর কতো ঢুকে।"
ভালোবাসায় বসন্তের ছোঁয়া
বসন্তের ওই ছোঁয়া লেগে হৃদয় ওঠে দোলে
সবুজ বনে রাঙা দেখে দখিন দুয়ার খোলে,
আম্র কুঞ্জে কুঞ্জে সদা মুকুল ভরে থাকে
মনের সুখে কোকিল সদা কুহুকুহু ডাকে।
ফুলের গন্ধে সকল অলি গুনগুনিয়ে আসে
শিমুল পলাশ উঁকি দিয়ে রাঙা ঠোঁটে হাসে,
শোভা দেখে বায়ু শুধু ঘেঁষে ঘেঁষে বয়ে
ধীরে বয়ে বহু দূরে ফুলের সুবাস লয়ে।
কেমন করে সবুজ বনে লাগছে যেন আগুন
জীর্ণ পাতা শত ঝরে এলো বুঝি ফাগুন,
সবুজ শাখে শাখে যেন ফুটল প্রেমের কলি
ফুলের বাহার কত দেখে মাতাল হলো অলি।
প্রজাপতি ডানা মেলে দেখে ফুলের মেলা
কুসুম বাগে শোভা দেখে কাটায় সারা বেলা,
সবুজ বনে শিমুল পলাশ রাঙে রঙে রঙে
প্রকৃতি বেশ খুশির সুরে সাজে নানা ঢঙে।
হৃদয় ঘরে প্রেমের কলি ফোটে নতুন সুরে
শত বাধা পায়ে দলে খুশির পরশ পুরে,
বসন্তে ওই ছোঁয়ায় প্রকৃতি বেশ ছবি আঁকে
মধুর শোভা সবে দেখে হাসিখুশি থাকে।
কিস ডে স্পেশাল
যেদিন ভালোবেসে একটা ছোট্ট চুম্বন এঁকে দিলে আমার অধরে
সেদিন থেকেই ভালোবাসার অনুভূতি জাগ্রত হলো, শরীরে, মননে, চিন্তনে।
কি অপূর্ব অবশ করা পরশ ছিল সেই পবিত্র চুম্বনে!
বুকের মাঝে চেপে ধরে সেদিন তুমি বলেছিলে---তুমি আমার--আমার--শুধু আমার...
আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত নিজেকে সঁপে দিলাম তোমার বলিষ্ঠ বাহুযুগলের মধ্যে।
নিজেকে মুক্ত করতে পারিনি, হয়তো বা চেষ্টাও করিনি--ইচ্ছে হয়নি সেই মধুর মিলনের স্পর্শ থেকে বেরিয়ে আসতে।
তারপর তুমি বললে, আজ আমি আসি....আমি আবার আসবো, ভালোবাসবো, ঘর বাঁধবো,
ছোট্ট একটা আঙ্গিনা থাকবে, এক কোণে থাকবে হাস্নুহানার ফুল ভর্তি ছোট্ট গাছ, আর এক কোণে মাধবীলতা।
আমরা দুজনে জ্যোৎস্না রাতে সেই আঙ্গিনায় বসে চাঁদ দেখবো, ভালোবাসবো, তুমি গান শোনাবে আর আমি
সেই মিষ্টি মধুর গানে বিভোর হয়ে তোমাকে এরকম অনেক অনেক চুম্বনে ভরিয়ে দেবো তোমার সমস্ত শরীর!
দেখবে আমাদের সেই ভালোবাসা হবে সবার থেকে আলাদা, লোকে দেখে হিংসে করবে, শিরি-ফরহাদ, লায়লা-মজনুকেও হার মানাবো আমরা, তুমি দেখো, দেখো.........
হায়! আজ!
হায়! --সেদিনের চুম্বনের স্নিগ্ধ পরশ আর সেই ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতির কথা সম্বল করে বসে আছি সেই মোহময়ী চাঁদের দিকে তাকিয়ে.......
ওগো চাঁদ, তুমি তো ছিলে সেদিনের সাক্ষী--সে সব কি ছিলো শুধুই ছলনা? প্রবঞ্চনা? নাকি ক্ষণিক ভোগের লিপ্সা?
বলো, চাঁদ! বলো! সেদিনের সেই চুম্বনের ভাষায় কি কোনো সততা ছিলো না?
সে কি ছিলো শুধুই বিষাক্ত.....
শোক আর
শোকের পরমায়ু কতদিন?
হাসির সময়কাল কত?
উত্তর খুঁজছিলাম অলস দুপুরে!
একটা জ্বলন্ত সিগারেটের সময়কাল
সকালের উঁকি মারা দরজায় কড়ানাড়া রোদ!
---- এর চেয়ে সামান্য বেশী
শোক কি সাময়িক নয়?
সময় তাকে হরণ করে নেয়!
হাসি যেন শরতের আকাশে তুলোমেঘ!
শোক নিয়ে বসে থাকে না জীবন
এগিয়ে চলার নাম জীবন
শোক আসে রেড সিগন্যাল হয়ে
সাময়িক থেমে যাওয়া
আবার সবুজ হাসি জনস্রোতে টেনে নিয়ে যায়।
আগাছার স্তুতি
যে পৃথিবীর কালগর্ভে হারিয়ে যায় না নকশালবাড়ি
যে সমাজের আঙুল চুষেও নিমেষে উৎখাত হয় জমিদারী
সেখানেই জন্মেছিল আমাদের মতো বুনো ঘাস
প্রতিপালনের দায়িত্ব না নিলেও যে নিজের গরজে
বাড়তে থাকে, ক্রমশঃ বাড়তেই থাকে
সাধ্যমতো বিস্তার করে নিজের সাম্রাজ্য
তবুও লোকে তাকে আগাছাই বলে।
পায়ে মাড়াতে মাড়াতে তারই ওপর দিয়ে তৈরি হয় পথ
সে পথে সবুজ শহীদ হয়, তবু টিকে থাকে আগাছা
খটখটে শুকনো হয়ে তখন অপেক্ষারত, আর
সেই অন্তিমকালে আমি বারুদ মাখবো আঙুলে।
আগাছা বেঁচে থাকে সূর্যের পথ চেয়ে।
শব্দরা ঘুমোবে এবার
দিনান্তের ম্লান আলো গায়ে নিল নভেম্বর মাস
প্রকৃতিতে এসে গেল হেমন্ত ঋতু
টুপটাপ ঝরে পড়ে শিশিরের জল
দীর্ঘশ্বাস উঠে আসে 'রূপসী বাংলা' থেকে।
ওই দেখো কবি শুয়ে আছেন মৃত ঘাসে
নির্জনতা চাইছেন তিনি, স্থিতিশীলতা চাইছেন
আশ্রয়ের খোঁজে নরম মাটিতে বুক পাতা
উদাসীন মনকেমন তাঁকে আরও গভীরে নিয়ে যায়।
অবসন্ন সন্ধ্যা নামে জরাগ্রস্ত আমাদের পৃথিবীতে
হেমন্তের মিহিস্পর্শে শব্দরা ঘুমোবে এবার
কবির সাথে।