Posts

ছোট গল্প - কৃষ্ণগোপাল ও অনুরাধা || লেখক - চন্দন চক্রবর্তী || Short story - Krishnagopal oo Onuradha || Written by Chandan Chakraborty

Image
  কৃষ্ণগোপাল ও অনুরাধা চন্দন চক্রবর্তী হিরন্ময়ের কাছে খবর পেলাম অনুরাধা মারা গেছে । অনুরাধা বেঁচে থেকেও তার মৃত্যু অনেক আগেই হয়েছিল । অমানুষিক পরিশ্রমে তার শরীর ভেঙে গেছে আগেই । শেষে তিলে তিলে একাকিত্বের কষ্টে তার মনের মৃত্যু হয়ে আজ সে চিরতরে মুক্তি পেল,বলা চলে ।  মনে আছে আমার বন্ধু,বিখ্যাত সেতারী হিরন্ময় গাঙ্গুলীর বাড়িতে সেদিন বহু সম্মানে ভূষিত বিখ্যাত বাঁশি বাদক কৃষ্ণগোপালের একক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল । নিমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত ছিলাম সেই আসরে । শিল্পীকে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে,"সংগীত সাধনায় ফল লাভ অনেক জন্মের ফল",হিরন্ময়ের এই কথাটাকে অতিশয়োক্তি মনে হয়েছিল । আমার মনে হয় সাধনার সঙ্গে প্রতিভার মিলন হলে তার নব নব উন্মেষ ঘটে । ফলে নব নব চেতনা জাগে,যাকে আমরা নবজন্ম বলে থাকি । কৃষ্ণগোপালকে দেখে আমার ভাবনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছিলাম । তাকে ধ্যানি ঋষির মত মনে হয়েছিল । পরে তার বাদন শুনেও আমার তাই মনে হয়েছে ।  হিরন্ময় তার কথার যুক্তির সাপেক্ষে শিল্পীর জীবনের শুরুর দিকের ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সময়ের ঘটনাগুলো তুলে ধরছিল । টুকরো টুকরো ঘটনাগুলো জোড়া দিলে বেশ গল্প হয় । তাই ঘরে ফিরে কৃষ্ণ গোপালের

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -18

Image
  নিজের ভুল সংশোধন করবার পর শেষ সম্বল মা মরা মেয়েটাকে বাঁচাবার কসুর করলাম না । অনেক ডাক্তারকে চিকিৎসা করালাম কোন ফল হলো না । আমিও দু'বছর ডাক্তারি পড়েছিলাম , কিন্তু নিজের নৈতিক অধঃপতনকে ডেকে এনে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে ঢেকে দিলাম ব্যাভিচারের ঘন কৃষ্ণ মেঘে।  একদিন বিশিষ্ট অভিজ্ঞ ডাক্তারদের অনুরোধ করলাম যাতে মেয়েটাকে বাঁচানো যায় । সকলেই ভালোভাবে পরীক্ষা ও ব্যাক হিষ্টি শুনে সাজেশন দিলেন বা তারা একযোগে এই মত প্রকাশ করলেন যে , শিশুটি যদি কোন মেয়েকে নিজের মা বলে মেনে নিতে পারে , তাহলে শিশুটি বেঁচে যাবে । কারণ মেয়েটির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বেশী ছিল । আপনাকে এমন এক মহিলার সন্ধান করতে হবে যার সঙ্গে আপনার স্বর্গত পত্নীর চেহারায় অনেকটা সাদৃশ্য আছে।  বিচিত্র আমাদের দেশ । এই দেশে বিভিন্ন চেহারার মানুষ জন্মগ্রহণ করেছেন । এমন কথা নয় যে ময়নার মায়ের মতো এ্যাকজাক্ট দ্বিতীয় কোন মেয়ে জন্মগ্রহণ করেনি । অনেক সময় প্রত্যক্ষ করা গেছে যে একই চেহারায় অনেক নারী এবং পুরুষকে অবশ্য ওরা কেউ কারো সঙ্গে আত্মীয়তা সম্পর্কে আবদ্ধ নয় । সুতরাং দেবীবাবু যদি একটু চেষ্টা করেন , তাহলে তার স্ত্রীর অনুরূপ চেহারার

ছোট গল্প - শৈশব || লেখক - চন্দ্রাণী গুপ্ত ব্যানার্জি || Short story - Saisob || Written by Chandrani Gupta Bannerjee

Image
  শৈশব চন্দ্রাণী গুপ্ত ব্যানার্জি                 (১) আজ সকালে  কাকার ফোনটা এল। বেশ অনেক দিন পর। যোগাযোগটা ক্ষীণ হয়ে গেছিল। মিথ্যে বলব না যোগাযোগটা আমার তরফ থেকেই কমে গিয়েছিল। প্রথম প্রথম কাকা ফোন করত। আজকালকার এসএমএস কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের যুগেও চিঠি লিখত ।ফোনেই কথা বলতাম ।চিঠির উত্তর লিখতে বসাতে আমার ভীষণ আলসেমি। তাই চিঠি লেখা থেকে যোজন খানেক দূরত্ব বজায় রাখতাম। আমার গ্রামের বাড়ির সমস্ত খবরা খবর কাকার চিঠি মারফত জানতে পারতাম ।গ্রামের বাড়িতে কাকা এখনো থাকেন ।প্রায় পঁচাত্তরের এর কাছাকাছি ওনার বয়স ।কাকিমা প্রায় সময়ই অসুখে ভোগেন। একমাত্র মেয়ে বুলির বিয়ে কাছাকাছি দিয়েছেন। বুলিকে দেখিনি আজ কত বছর হয়ে গেল। আমার সেই ছোট্ট বোনটা... নাদুস নুদুস ...গোলগাল ।ওই আমার খেলার পুতুল ছিল। বুলির কথা মনে পড়তেই নিজের অজান্তে হেসে উঠলাম। যখন আমার বিয়ে হয় তখন বুলি কত ছোট ছিল। সৌমেনও বুলিকে খুব ভালোবাসতো। একটা ছবিও বোধহয় আছে সৌমেনের কোলে বসা বুলি। ভাবতেও অবাক লাগে সেই বুলি এখন ঘোর সংসারী। দুই ছেলে-মেয়ের মা। দাপিয়ে সংসার করে বেড়াচ্ছে। কাকা চিঠি লেখে না আজ বহুদিন ।গ্রামের বাড়ির সাথে আমার যোগ

ছোট গল্প - কাকের প্রতিশোধ || লেখক - ইমরান খান রাজ || Short story - kaker protisodh || Written by Imran khan raj

Image
  কাকের প্রতিশোধ  ইমরান খান রাজ  এক দেশে ছিল বিশাল এক বন। বনটি এতই বড় ছিল যে, তার ভিতরে কেউ ঢুকলে আর বের হতে পারতো না। হারিয়ে যেত ! সেই বনে বাস করতো এক ভয়ঙ্কর, বিশালাকৃতির হিংস্র বাঘ৷ সেখানে একমাত্র বাঘেরই রাজত্ব চলতো৷ অন্য কোন পশুপাখি তার উপরে কথা বলতো না। সবাই বাঘকে ভয় পেতো আর বাঘের থেকে সর্বদা দৌড়ে পালাতো। যেই প্রাণীটা বাঘের সামনে পরতো, হিংস্র বাঘটি তাকেই খেয়ে ফেলতো৷ বিশালাকৃতির দেহের ক্ষুধা মেটাতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে খাবার প্রয়োজন হতো তার।  হঠাৎ একদিন বিকেলে সেই বনে শুরু হলো এক প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়। সেই ঝড় এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, বনের প্রায় বেশিরভাগ বড় গাছগুলোই ভেঙে পরে। লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সেই বনটি। ঝড়ে বহু পশুপাখির বাসস্থান নষ্ট হয়ে যায় এবং ছোট-বড় অনেক প্রাণী মারা যায়। তবে বাঘের ঘর ঝড়ে কিছুই হয় না। কারণ সে তো গুহায় থাকে।  পরদিন সকালে বাঘের ঘুম ভাঙলে, সে খাবারের উদ্দ্যশ্যে গুহা থেকে বের হয়। তবে বের হয়ে দেখে, চারিদিকে গাছপালার স্তুপ। সব ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এসব দৃশ্য দেখে সাতপাঁচ না ভেবে বাঘটি বের হয় তার খাবার খোঁজার জন্য। খাবার খুঁজতে খুঁজতে সকাল গড়িয়ে দুপুর আর দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্

উপন্যাস - তান্ত্রিক পিসেমশাই ও আমরা দুজন || সুদীপ ঘোষাল || Tantrik Pisemosay oo Amra by Sudip Ghoshal || Fiction - Tantrik Pisemosay oo Amra Dujon Part -6

Image
  ।১১ পিসেমশাই বলছেন, মনোজের আত্মার মনে পড়ছে  মাষ্টারমশাই দীনেশবাবু সাদাসিধা মনের মানুষ। একটা সাধারণ প্যান্ট জামা পরে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে ট্রেনে তার নিত্য যাওয়া আসা। ট্রেনে যাওয়ার সময় অনেক বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ হয়। তারা হাসি মস্করায় ব্যস্ত থাকে। দীনেশবাবু নিজে জানালার এক কোণে বই নিয়ে বসে পড়েন। তিনি নিজেও অনেক বই লিখেছেন। কলকাতার নামীদামী প্রকাশনা থেকে তাঁর লেখা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু তাতে তার কোনো অহংকার নেই। ছাত্র ছাত্রীদের কি করে ভালভাবে প্রকৃত মানুষের মত মানুষ করা যায়, এই নিয়ে তাঁর চিন্তা। শিক্ষকতা শুধু পেশা নয় তার সঙ্গে মিশে থাকে বাড়তি দায়ীত্ববোধ। তিনি এইকথা ভাবেন মনে মনে। কি করে সর্বোত্তম সেবা প্রদান করা যায়, এই নিয়েই দিনরাত চিন্তাভাবনা করেন।  স্কুলে পৌঁছান। ঘন্টা পড়ে প্রার্থনা সভার। জাতীয় সংগীত শেষ হওয়ার পরে শুরু হয় ক্লাস। ক্লাসে গিয়ে তিনি কোনোদিন চেয়ারে বসেন না। ছাত্রদের কাছে গিয়ে সমস্যার সমাধান করেন। পড়াশোনার কাজে সাহায্য করেন। স্টাফরুমে বসেন। তারপর কুশল বিনিময়ের পরে তিনি চলে যান ক্লাসে। কোন ক্লাস ফাঁকা আছে রুটিন দেখলেই জানতে পারেন। কোনো শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলেই তাঁর ক্লাসে

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -17

Image
  শ্যামলীদির মুখপানে তাকাতে তাকাতে এক সময় ওর দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্যাক্সিতে গিয়ে বসলাম। মনে তবুও ভয়, জানিনা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আমায়। শ্যামলীদিকে বার বার জিজ্ঞেস করেও কোন উত্তর পাইনি শুধু ওর মুখ দিয়ে একথা শুনতে পেয়েছিলাম ওখানে গিয়ে দেখতে পাবো ।  দেবীবাবু নিজে ড্রাইভ করছেন । সোঁ সোঁ শব্দে পাশের বড় বড় মাথা উঁচু করে প্রতিযোগিতায় সামিল হওয়া বাড়ীগুলো পেরিয়ে যাচ্ছে । হাজার হাজার মানুষের মিছিলকে দুফাক করে তীরের মতো চলে যাচ্ছে গাড়ীখানা । বড্ড পাকা হাত দেবীবাবুর । ভয় যে পাচ্ছিলাম না তা নয় । ধীরে ড্রাইভ করতে বললাম । হয়তো আমার কথা তিনি শুনতে পেলেন না ।  দেখতে দেখতে একসময়ে একটা প্রকাণ্ড বাড়ীর সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়ল গাড়ীখানা । দেবীবাবু আমাকে নেমে আসতে বললেন । আমি গাড়ী হতে মাটিতে নেমে প্রকাণ্ড বাড়ীটার পানে তাকিয়ে ভাবতে থাকি এখানে কিসের জন্য এলাম । ওর কথায় ভাবনাকে দূরে সরিয়ে ওকে অনুসরণ করতে করতে হাজির হলাম ঐ প্রকাণ্ড বাড়ীটার তিন তলার উপরে । আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে , কি কারণে , তা জানার জন্য মনে কোন স্পৃহা জাগেনি । ওকে অত্যন্ত অন্তরঙ্গ মনে করে ওকে অনুসরণ করে যাচ্ছি ।  দেখ

ছোট গল্প - উপলব্ধি || লেখক - সিঞ্চিতা বসু || Short story - Upolobdhi || Written by Sinjita basu

Image
  উপলব্ধি সিঞ্চিতা বসু   রান্নাবান্না শেষ করে বারান্দায় এসে দাঁড়াতেই দৃশ্যটা চোখে পড়লো l দুর্গন্ধটা সকাল থেকেই নাকে লেগে আছে,কিন্তু এখন চোখে দেখে গা গুলিয়ে উঠলো পরমারl সমীর কর্মচারীদের তোয়াক্কা না করেই কাজে হাত,লাগিয়েছে l সামনে স্তূপীকৃত শুকনো গোবর,পাতা পচানো সার,ডিমের খোসা l দুজন লেবার ডিমের খোসাগুলোকে গুঁড়ো করছে l এছাড়া একটা বড়ো ড্রামে জমা আছে ফল সব্জির খোসা,মাছের আঁশ ইত্যাদি রান্নাঘরের ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে তৈরি কম্পোস্ট l ড্রামটা ঢেলে ফেলা হয়েছে উঠোনের মাঝখানে l বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকে গেল পরমার- এতো বার বলা সত্ত্বেও সমীর গ্লাভস পড়েনি l দুহাতে গোবর মাখা,গামছা পরা সমীরকে দেখে কেউ বিশ্বাস করবে না যে এই লোকটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা l পাঁশকুড়া তে তাদের এই ফুল ফলের নার্সারী জন্ম সমীরের দাদুর হাতে l দুই পুরুষ ধরে তিল তিল করে বেড়ে ওঠা  'মহামায়া নার্সারি'র খ্যাতি অনেকখানি বৃদ্ধি পেয়েছে সমীরের হাত ধরে l শ্বশুর মশাই অবশ্য এটাই চেয়েছিলেন, আর সেজন্যই বিজ্ঞানসম্মতভাবে শিখে আসার জন্য ছেলেকে প্রায় জোর করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন পড়াশোনার জন্য l নার্সারি