Monday, February 7, 2022

অনুগল্প || দরদাম || সিদ্ধার্থ সিংহ

 দরদাম




বাজারে সবজির দোকানে গিয়ে মেয়েটি জিজ্ঞেস করল, টমেটো কত করে?

ছেলেটি বলল, আশি টাকা।

মেয়েটি বলল, আপনি দেখতে কী হ্যান্ডসাম...

ছেলেটি বলল, আশি টাকা।

--- আপনার চুলের স্টাইলটা কী সুন্দর...

ছেলেটি বলল, আশি টাকা।

--- আপনার বডিটা কিন্তু দারুণ...

ছেলেটি বলল, আশি টাকা।

--- আমি যদি এ রকম ছেলে পেতাম না... সঙ্গে সঙ্গে বিয়ে করে নিতাম...

ছেলেটি এ বার রেগে গিয়ে বলল, আপনি আমাকে যতই পাম্প দিন, টমেটোর দাম কিন্তু এক টাকাও কমবে না।


Composition || LOVE, RELATION, WEAKNESS : A VIEW || Kunal Roy

 LOVE, RELATION, WEAKNESS : A VIEW

  



'Do you like me? '. ' Do you love me?'. Questions like such often become the source of disgust. Is it easy to love some one? Is it easy to steal someone's heart? Is it easy to impress someone? I strongly feel, 'No'. But still misunderstanding and misinterpretation creep into a relationship. A relationship is built on the foundation of mutual trust and belief, but at times these two words lose their significance and the bond crumbles into pieces. If the beloved thanks a man with a smile on her face, her lover changes the echoes of his face and consequently there is a silent war between the two! But why? True love or something else? It is obsession and the fear of losing somebody who is his favourite gets him into the web of insecurity that paves the path for further suspicion and if possible an indulged crime! Little does he know that love demands space and wishes to breathe in the open air. If love is the termination of one's freedom, than it is better not to love, not to hug and not to make promises! If you really desire to be in someone's tender arms, than you should try to rise above the banalities of life to make your tomorrow a better one!!  

Poem || Taking Care Of The Best Gem || Pavel Rahman

 Taking Care Of The Best Gem




The almighty has given us many gems,

Do you know what is best among them?

The best gem is heart,

Who has that, take care

Of that – oh friend, it is my request.

To keep heart tidy

Body must be tidy.

To keep pure heart, keep your body pure.

কবিতা || হটাৎ যখন হলো দেখা || চাতক পাখি

 হটাৎ যখন হলো দেখা

 



চারিদিকে ঘন কুয়াশা ,

বাসের ভিতর রয়েছি বসে 

একমনে গান শুনছি হেডফোনে।


গাড়িও চলছে তার নিজের মতো করে

আর আমিও চারপাশ দেখতে দেখতে 

ডুব দিয়েছি আপন মনে।


চারিদিক আঁধারে গেছে ছেয়ে

যেন প্রভাত কালে সন্ধ্যা নেমে আসে

সূর্যের মুখও যেন রয়েছে মেঘে ঢাকা ।


তাই পড়েছিল মনটা বেশ মুষড়ে

তারপরে কি জানি মনটা উঠলো নেচে

যখন হটাৎ করে হলো কারো দেখা।


না জানি এমনি এমনি 

জানালার কাঁচ হলো স্বচ্ছ ,

যেন কত চেনা 

চারপাশ কত পরিচিত।


যেন হটাৎ বাসের গতিও গেছে স্থির হয়ে

 পলকের দেখায়,

যেন থমকে গেলো চারিদিক

আর আমিও হলাম স্থিত।

কবিতা || রাঢ়-বাংলার ছিলা || চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী

 রাঢ়-বাংলার ছিলা




রুখা মাথার ভূখা পেটের-

আমরা রাঢ় বাংলার ছিলা

বেদম ক্যষে খেলতে পারি 

গুলি ডাংটার খেলা।

আঘন মাসে খেজুর গুড়ট,

দমে মারি চাট্যে

সোনা বউটা পাঁকাল ধানট,

ভালোই কাটে মাঠে।

গরম কালে গামছা বাঁধে,

ফুটাই পাহাড় টিলা

রুখা মাথার ভূখা পেটের 

আমরা রাঢ় বাংলার ছিলা।

চিকন-চিকন পিরীত চোখে,

পড়লে রোদের ছিটা

কুখড়া ডাকা বহুল ফুলটা 

বেবাক লাগে মিঠা।

খেজুর গাছের ভাড়টা ভাঙ্যে,

যুতাই মারি তাড়ি

উদাম ঘরে খড়ের ছাদন,

পাকাই পুয়াইল- দড়ি।

বাঁশের বাঁশি ভালোবাসি 

বাঁজাই মাঠে -ঘাটে

হাজার রকম পাখির গানট,

এমনি যায় গো জুট্যে।

সাদাসিধা কাদার মানুষ,

যেন চিকন কালা

রুখা মাথার ভূখা পেটের 

আমরা রাঢ় বাংলার ছিলা।

কবিতা || হে মা সরস্বতী || মঞ্জুলা বর

 হে মা সরস্বতী 




 সরস্বতী মাগো আমার 

 বিদ‍্যা বুদ্ধি দিয়ো,

 সবার মনে ঘুচাও আঁধার

  হও গো সবার প্রিয়ো।


শুভ্র বস্ত্র গায়ে পরে

 বসো পদ্মাসনে ,

  হস্তে দেখি পুস্তক ধরে

 থাকো সবার মনে।

   

জ্ঞানের আলো ঢেলে দিয়ে 

 আঁখি মেলে দেখো,

 সবার কাছে পূজো নিয়ে 

 সুখে যেন রেখো।


 বীণাপাণি এসে তুমি 

 করো জগৎ আলো,

 ধন‍্য হবে আমার ভূমি 

 হবে সবার ভালো।


 সবার মুখে ফোটাও হাসি 

 এসো মধুর ভবে ,

 শান্তি ঢালো রাশি রাশি

  সুখে থাকবে সবে।

কবিতা || সরস্বতী পূজোর সেকাল ও একাল || নীতা কবি মুখার্জী

 সরস্বতী পূজোর সেকাল ও একাল




সরস্বতী ভারতী বিদ‍্যা দাও মা

জ্ঞান আর বুদ্ধিটা ঠিকঠাক রেখো মা

বাগদেবী নামে তোমায় সকলেই জানে যে

ছেলেবুড়ো, খোকাখুকু সক্বলে মানে যে

সরস্বতী পূজো মানে ছোটদের উদ‍্যোগ

সরস্বতী পূজো মানে চিঁড়ে-গুড় মাখা ভোগ।


ভোরবেলা উঠে পড়ে পূজো দিতে হবে যে

ইস্কুলে যেতে হবে, খিঁচুড়িটা খাবে যে

বাসন্তী শাড়ী পরে ফাংশানে গান গাই

সরস্বতী বন্দনা লিখে রেখো খাতাটায় ।


দিদিমনি শিখিয়েছেন নজরুল-গীতিটা

চলবে না ফ্লিম সং, মনে রেখো কথাটা

মনে পড়ে ছোটবেলা প্রেম-প্রেম খেলাটা

ছোট ছোট প্রেম চিঠি, আড্ডার বেলাটা।


সেইসব দিন ছিলো সরল আর সুন্দর

মাসতুতো-পিসতুতো ভাইবোনের কি কদর

হাসি-মজা গান গাওয়া সুন্দর সাবলীল

খুনসুটি, হুটোপুটি, হেসে ওঠা খিলখিল।


সেই সব দিন গুলো গেছে যেন হারিয়ে

ছন্দের গতিটাও গেছে যেন ঝিমিয়ে

এখন এসেছে এক যন্ত্র, যে বলিহারি

মোবাইলে টিপটপ ,হায়! প্রাণ ছাড়ি ছাড়ি।


নাহয় কানেতে গোঁজা তার-দুটো ঝুলছে

ধ‍্যান নেই কোনোদিকে, শুধু বসে ঢুলছে

এ কি বাবা! এ কেমন সরস্বতী পূজো রে

নির্ভেজাল আড্ডাটা সব গেল ভাঁড়ে রে!

কবিতা || তোমার ইতিহাস || নবকুমার

 তোমার ইতিহাস 

 


তুমি আমার দিকে যত কঠিন অস্ত্রই প্রয়োগ করো-
কম্পিত হবো না, বরং আরও প্রসারিত করবো বুক -

আস্তে আস্তে একদিন খালি হবে
সমস্ত অস্ত্রের ভাণ্ডার 
তখন তুমি নিজেই ধরাশায়ী --

'জল'-'জল' চিত্কার করলেও
স্রোত ঘুরিয়ে নেবে মুখ ।

এখানে অর্জুনও নেই 
পাতাল ফুঁড়ে এনে দেবে জল
আর,তুমি ভীষ্মও নও
এ ভাবেই এক আঁজলা জলের জন্য হাঁস-ফাঁস---

তখন দেখবে কেউ নেই পাশে--
পড়ে আছে মনুষ্যরক্তে লেখা 
তোমার ইতিহাস ।

কবিতা || নিঝুম রাতের কান্না || রথীন পার্থ মণ্ডল

 নিঝুম রাতের কান্না





হঠাৎ যখন ঘুম ভাঙে মাঝরাতে 

আলো জ্বালতেই দেখি হৃদয়ের গভীর থেকে 

পাখা সম্বলিত পিঁপড়েরা আলোর দিকে উড়ে যায়

যেখানে মৃত্যুর সাক্ষাৎ নিশ্চিত জানে, 

জেনে ইচ্ছে গুলো মরে যায়। 


বাথরুমের ট্যাপ থেকে জল ঝরবার শব্দ 

শুনি শুয়ে শুয়ে 

ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে যায় স্বপ্নগুলো !


বেওয়ারিশ কুকুর বিলাপে জানায় যত কষ্ট 

ট্রাকের চাকার নীচে পিষ্ট কবিতার ব্যাকুলতা

কাঁদে অসহায়, তবু জেগে থাকে বিদগ্ধ মন 

মুখ থুবড়ে নর্দমায় পড়ে অনুভূতি। 


মাঝরাতে প্রায়ই আমার ঘুম ভাঙে আজকাল।

কবিতা || শুধু একটা আধুলি || আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস

 শুধু একটা আধুলি



আমি কে জানো

আমি একটা হকার

আমি গ্রাম, বাজার, শহর, পাড়া, ঘুরি

সাইকেলে চড়ে

প‍্যাডেল করে

মাল বেচে বেড়াই

হাঁক দিয়ে অলিগলি


আমার সাইকেলের পিছনে মাল বাঁধা থাকে

যাই তার কাছে যে ডাকে

দেখি না সে নর কি নারী, হিন্দু নাকি মুসলিম বা অন্য কোন জাতি

মাল বেচা বলে কথা আমার

রোজগার করা বলে কথা আমার

ওসব দেখলে যে চলবে না আমার

আমার পেটে যে প্রচুর খিদে, আমার খাবার চাই খালি


রোদে ঘুরে ঘুরে

শরীর যখন ক্লান্ত লাগে

ধপাস করে আমি বসে পড়ি, রাস্তার ধারে গাছতলায়


পথের ধুলো উড়ে এসে আমার গায়ে পড়ে

আমি নাক ধরি না, মুখ ঢাকি না

ওসব ভদ্রলোকদের কাজ, এসি রুমে যাঁদের বাস

আমি তো মানুষই না

আমি শালা একটা হকার

আমার দাম শুধু একটা আধুলি

কবিতা || পিঁড়ি পেতে দিক || রবীন বসু

 পিঁড়ি পেতে দিক





ফেরিঘাট স্তব্ধ আজ, পারাপার নেই


জলের বিস্তার শুধু নিয়মমাফিক


যাত্রীরা কোথায় যাবে? ঘুরপথে ঘুরবে কতক্ষণ?


নদীপাড় সমান্তরাল, তারা তো মেলে না কোথাও


সংযোগসেতু দিয়ে যদি যাওয়া যায়


পথিকের ক্লান্ত পা অবিরাম ঘোরে হয়তো


পুরনো শহর, বুঁজে যাওয়া নদী-খাল গঞ্জগ্রাম


পার হয়ে অন্বিষ্ট আশ্রয় খোঁজে;


রাতের আকাশ আর তারাদের নিচে এই যে


শব্দহীন নিস্তব্ধতা, আকুলিত উদ্দেশ্যহীন যাত্রা


সংযোগসেতু হারিয়ে হাঁসফাঁস করছে সম্পর্ক


তাকে হাত ধরে বসাবে কে? পিঁড়ি পেতে দিক সময়


জলবাতাসায় সাবেকি আপ্যায়নে ভরে উঠুক


গেরস্তের ঘরবাড়ি আর সুবিস্তৃত ফেরিঘাট-পাটাতন


শব্দময় শাশ্বত এক লৌকিক জ্যোৎস্নায় ভিজে যাক।

কবিতা || সরস্বতী পূজোয় || আশীষ কুন্ডু

 সরস্বতী পূজোয়




এবারে শনিবার সরস্বতী পুজো  

পূজোর আয়োজনে ব্যস্ত সবাই

শ্বেতগোলাপ খোঁজে বিদ্যাসুন্দর 

ছোটো মেয়েটার জন্য বাসন্তী শাড়ী

নেতার একমাত্র কন্যা! 


স্কুল খুলবে, শুক্রবার --

দেবী চরাচর ব্যাপ্ত,আকাশ নীলবসনা

মায়ের চোখে সেই ছায়া

আবার কচিকাচার মেলায় শুভ্রাবরণী !


মরমী গাঁয়ের মেঠো পথে এক বালক

নিঃস্ব হয়েছে সে অনলাইনের প্রকোপে

বাবা চলে গেছেন করোনায়

উদ্ভ্রান্ত মেঘে ঢাকা ব্যথাময় চোখ

জল শুকিয়েছে বহুদিন, 

এখন রোজগেরে মনরেগায়

সংসার জোয়াল তার কাঁধে!


বালকের মনের কথা মনেই থাকে 

সরস্বতী পূজোয় অভিমানী ছেলে

 পুষ্পাঞ্জলি দেবে না আর কোনদিন হয়তো 

দেবী বোধহয় জানেন!


ফাঁকা স্কুল ঘরে প্রতিমায় শেষ তুলির টান 

চোখ শুকোয় না মায়ের

ছেলের চোখের জল এখন মায়ের চোখে, 


জীবনের প্রথম বাসন্তী শাড়ী পড়া 

শিশুকন্যার জন্য

মাকে বুকে পাষাণ রেখে

পূজো নিতেই হবে।

কবিতা || হে ফাগুন || সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

 হে ফাগুন



হে ফাগুন, হে বসন্ত ফুলে ফুলে

   রেখেছো ভরে এইক্ষন

তুমি নাকি ক্ষণিকের ধন

   তবু যেন অনির্বচনীয়

    তালে তালে মৃদু সমীরণে

     এই ফাল্গুনে। 

তোমার সাধনায় তৃপ্ত এ ধরা

 এ মাটি এ আকাশ

      দখিনা পবন

ভূবন দুয়ার খোলা আজি তাই

   রঙে রঙে পলাশে শিমুলে

     মাতিয়ে অনুক্ষণ। 


মিলন মাধুর্যে প্রেমিক যুগল

    যেন ক্লান্তি হীন সরোবর

      সদাই গীত নির্ভর

       ছন্দে দোলা

         উচ্ছ্বাসে মর্মর। 

করে আরাধন--

   যেন শেষ নাহয়

     এইক্ষণ

 এই ফাগুন আগুন

   এ দখিনা পবন। 


দূর হতে দাও ভরে

     কুসুমের ডালি

স্বর্গীয় উচ্ছ্বাসে যেন

    যায় দুয়ার খুলি।