Sunday, July 30, 2023

ভোটের ছড়া - বাসুদেব কুন্ডু || Voter Chora - Basudev kundu || ছড়া || Rhyme || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 ভোটের ছড়া

       বাসুদেব কুন্ডু


সবাই এখন ব্যস্ত ভোটে,

প্রচারে সোরগোল,,,

আসল কথা বলে না কেউ,

বাজায় ঢাক-ঢোল


আসল কথা কাজের কথা,

উন্নয়নের দিশা,,

যথা অন্য দেশে যেতে লাগে

সেই দেশের ভিসা


সবাই কি আজ ধান্দাবাজ!

হিংসা নিয়েই বাঁচে?

না বুঝলে, আজ চলে এসো,

এই কবি'র কাছে।


আম্রপালির বাজার কেমন - দিলীপ কুমার মধু || Amro palir bazar kemon - Dilip Kumar Madhu || ছড়া || Rhyme || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

    আম্রপালির বাজার কেমন ?

            দিলীপ কুমার মধু


খুব গরমে খুড়ো একদিন ফলের বাজার যায়

আড় চোখেতে তাকায় খুড়ো ডাইনে কিংবা বায়।

ফলের মার্কেট গিয়ে বলে-- কই আম্রপালি ?

একজন বলে --এই দেখো আম, খাওনা এক ফালি।

আরো জনা দশেক বলে-- খুব মিষ্টি আম

চেহারা দেখো, আম বেচাতে আমার আছে নাম।

কেউ বলছে --এত মিষ্টি মিছরি মনে হবে

কেউ বলছে --দুটো ফ্রি, দু কেজি আম নেবে ?

ছাদে -গন্ধে অতুলনীয় --আমার আম নাও

তেইশ বছর এই মার্কেটে চিনতে আমায় পাও?

খুড়ো বলে-- না রে ভাই, আম নেবো না আজ

 আম্রপালির বাজার দেখতে ফেলে এলাম কাজ।


একটি ছোট্ট কবিতা - নবকুমার || Ekti choto kobita - Nabakumar || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

একটি ছোট্ট কবিতা 

     নবকুমার 

 

রাস্তায় যেতে যেতে কোন গাছ কথা বলে ওঠে , হঠাত্-----

সার সার মূক মানুষেরা চলে যায় ----

মানুষের সাথে গাছেদের এটাই তফাত ।



পরিবেশ - অভিজিৎ দত্ত || Poribesh - Avijit dutta || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 পরিবেশ

অভিজিৎ দত্ত 



পরিবেশের সঙ্গেই জীবের জীবন 

ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত 

পরিবেশের ক্ষতি হলে 

জীবের ক্ষতি হবে ততো।


গরমের সময় মাত্রাতিরিক্ত গরম 

ঠান্ডার সময় অতিরিক্ত ঠান্ডা

আবার হঠাৎ,হঠাৎ প্রবল ঝড়ে 

প্রকৃতি চারপাশকে লন্ডভন্ড করে। 

ভেবে দেখেছো কী এই ব্যাপারটা?

কত ক্ষতি হলে পরিবেশের 

ঘটে এই বিপর্যয়টা। 


আবার বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে 

হিমবাহ গলছে দ্রুত 

তাই ঘটা করে পরিবেশ দিবস 

পালন করার সাথে,সাথে 

পরিবেশ বান্ধব হতে হবে সকলকে।

বিদ্যালয়স্তর থেকে এগিয়ে 

আসতে হবে প্রত্যেককে। 

সরকারকে করতে হবে বছরভর 

প্রচার ও সচেতনতা 

এরসাথে দরকার আইনের কঠোরতা।

সূর্য - কাজল মৈত্র || Surja - Kajal maitra || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 সূর্য

কাজল মৈত্র 


সূর্য আজ জোনাকির মতো অনুভূতিহীন

জানি না কবে নেমেছে আঁধার

এই ঘ্রাণহীন রাতে নেই নেই রব

কেমনে বাঁচবে এই হিংসাহীন জীবন

জনতার ভিড়ে চাপা পড়ে যায় সূর্যের রং ।

উচ্ছিষ্টভোগী - আনন্দ গোপাল গরাই || uchistobhogi - Ananda Gopal Garai || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 উচ্ছিষ্টভোগী

আনন্দ গোপাল গরাই



খাবারের সারগুলো চিবিয়ে চুষে নিয়ে

ফেলে দেয় ছোবড়াগুলো

তাই নিয়ে পরম সুখে খাও তোমরা

রাস্তার কুকুরের মতো। 

আহা, কী তৃপ্তি! 

ওরাই লেলিয়ে দেয় তোমাকে

তোমারি ভাই এর সাথে

ওদের আসনটাকে 'সেফ' রাখার জন্যে। 

ওরা তো জানে----

চুপ হয়ে যাবে তোমরা

একটুকরো কষা মাংস পেলে

মালের সাথে মৌজ জমাবার জন্যে। 

বড়জোড় আর একটু বেশি---

কোনো সুন্দরী ললনার

একটুখানি সান্নিধ্য ক্ষণিকের জন্যে। আহা, কী তৃপ্তি! 

রক্তবীজ - গোবিন্দ মোদক || Roktobij - Gobinda modak || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 রক্তবীজ 

গোবিন্দ মোদক 



রক্তবীজ! রক্তে খেলা করে অহর্নিশ।

আক্রোশে প্রবল, দুরন্ত! 

গড়ে তোলে প্রতিশোধের সাম্রাজ্য।

ঔদ্ধত্য আর দুর্বিষহ স্পর্ধা চামর দোলায়। 

পতাকা ওড়ে প্রতিহিংসার। 

রাজ্যপাট জুড়ে রক্ত-রণদামামা বাজে। 

বাজে তূর্য, ভেরী, কাড়া-নাকাড়া!

ফুলের কোমলতাকে 

অঙ্গার বানাবার সমূহ আয়োজন সম্পূর্ণ। 

প্রবল আস্ফালনে হাসতে থাকে রক্তবীজ!

এক .. দুই .. তিন .. শত .. সহস্র .. রক্তবীজ। 

কেউ কি আছো?


কোনও ছিন্নমস্তা অথবা কোনও করালবদনী??

আমাদের সব আছে - তীর্থঙ্কর সুমিত‌ || Amader sob ache - Tirthankar Sumit || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

   আমাদের সব আছে

         তীর্থঙ্কর সুমিত




আমাদের সব আছে

পাঁচ টাকা, দশ টাকা, কুড়ি টাকা

একটাকা - দু টাকার হিসেব রাখিনা

টালির চালে যখন সূর্যের আলো পড়ে 

মনে হয় একশো বিদ্যুতের ঝলকানি

কি বলবো নীলিমা তোমায়!

সে এক দারুণ অনুভূতি

ডোবা কখন নদী হলো

সবুজ কখন কংক্রিট হলো

আলো কখন অন্ধকার হলো

আর তুমি...



আমি এখন ক্যাকটাসের সন্ধি খুঁজি।

নীরব থেকেছো আমার রক্তক্ষরণে - অসীম কুমার সমাদ্দার || Nirob Thekecho amar Rokto khorone - Aasim Kumar Samadar || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 নীরব থেকেছো আমার রক্তক্ষরণে

                          অসীম কুমার সমাদ্দার



সেদিন তুমি কেন নীরব থেকেছো আমার রক্তক্ষরণে !

পাশ দিয়ে মিশে গেলে জনতার স্রোতে ইতিউতি চেয়ে

এ ওকে দেখালো আবার ও অন্যকে উত্তেজিত হয়ে

সেদিন বুঝেছি মানুষের যন্ত্রনাবিদ্ধ মুখচ্ছবির মূল্য কিছুটা হলেও মোনালিসার ছবির থেকে বেশি

 যেভাবে সময়ের জবুথবুতা বারবার গ্রাস করে তোমাদের ঈশ্বরকে এবং সর্বস্বান্ত করে বিনা কারণে , সেভাবে শেষে উদ্দেশ্যহীন হয়ে পিছু হটে কিন্তু গুলিয়ে দেয় 

জীবনের ধারাপাত নিশুতি রাতের এক পার্থিব স্বপ্নে ,

 যদিও দ্রুত এগোলেও মুখ থুবড়ে পরো একদিন ।


এই জীবন গুবরে পোকা - আসরাফ আলী সেখ || Ei jibon gubre poka - Aasraf ali sekh || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 এই জীবন গুবরে পোকা 

            আসরাফ আলী সেখ



চামড়াগুলো 

খসিয়ে দিয়ে উল্লাস দেখলাম

শুধুমাত্র 

   একটা অসহায় আত্মার আর্তনাদে সাড়া দিতে গিয়ে 


   আকাশ 

কানে আঙ্গুল দিয়ে মেঘগুলো জমিয়ে রাখতে 

     ভেসে যাচ্ছে 

পাঞ্জাবি দরজা জানলা 

ভেসে উঠছে 

দাদা-দাদিদের মেলে দেওয়া স্বপ্নগুলো 


অট্টহাস্যে হেলান দিয়ে সময়ের চেয়ার 


চকহাতে 

ব্ল্যাকবোর্ডের আলোর স্বপ্নে ঢেলে দিয়েছে রক্ত

অন্যের হাতে হাত দিয়েছে প্রিয়া এই সময় 

ক্লীবের চেয়েও ক্লীব

মাটিতে 

গগিয়ে শৈশব অলৌকিক



 এই জীবন গুবুরে পোকা

একটি অস্থির চিত্ত যুবক - সুশান্ত সেন || Ekti Aasthir Yuvak - Susanta Sen || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 একটি অস্থির চিত্ত যুবক

              সুশান্ত সেন


পারি না কোনই কারিকুরি

পারি না হাঁটতে সমাজে

চাই ত থাকতে নিজের মনেই

মন নেই কোন কাজে।


তাই ত গেলাম লেহ ও লাদাখ

এবং অমরনাথ

তিরুপতি ও সালেম গেলাম

অনেক ঘাত ও প্রতিঘাত।


অস্থির মন অস্থির কাল

কি হবে ভবিষ্যতে

ভাবনা ভাবনা ভাবনা কেবল

দিন চলা কোন মতে ।




Sunday, July 23, 2023

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -45


 

ওকে ভর্তি করার পর জ্ঞান ফিরেছিল ঘন্টা খানেকের মধ্যে। রমার জ্ঞান ফেরার পর সে বাড়ী ফিরেছিলো একমাত্র তার অসুস্থ পিতার জন্য। এখন রমা কেমন আছে


তার চিন্তাতেও তার মনটা চঞ্চল। নার্সিংহোমের চার্জ বেশী। ওরাতো টাকা ছাড়া কথা বলে না। ওদের কাছে ধনী ও গরীবের বিচার্য্য নয়। জয়ন্তর ভাগ্যে দুঃখ ছাড়া আনন্দ নেই। ওরা টাকা ব্যাতীত কোন কথা শুনবে না। কত টাকা যে বিল হবে ঈশ্বর জানেন।

হঠাৎ কুশল বাবুর কণ্ঠস্বরে সম্বিত ফিরে এলো। তিনি বললেন, এখনো কত দূর

বাবা ?

জয়ন্ত নম্র কণ্ঠে বলল, বেশীদূর নয়।

হ্যাঁরে জয়ন্ত, মেয়েটি চন্দ্রার মতোই দেখতে?

জয়ন্ত পুনরায় বলল, যমজ বোন ছাড়া কেউ ধরতে পারবে না । মেয়েটির খুব চোট লেগেছে নাকি?

লেগেছে তবে

কি হলো চুপ করলি কেন ?

বিপদ জনক নয়।

তোর কাছে ওর চেহারার বিবরণ যেদিন শুনেছিলাম, আমার মনটা বড় ছটপট করছিলো। তাই গত রাত্রের বিপদের কথা শুনে মনকে স্থির রাখতে পারলাম না।

জয়ন্ত বললল, বাবা নার্সিংহোম এসে গেছি। নামতে হবে। গাড়ী হতে নেমে ওরা দোতলার ৫ নং রুমে উপস্থিত হয়ে কুশল বাবুর নজরে পড়ল ৩নং সিটের উপর রমা বসে আছে। তার নয়নাশ্রু দেখে কুশলবাবুর অন্তর কেঁপে উঠল। সেই চোখ, সেই মুখ সেই দেহের গড়ন। কে বলবে আমার মেয়ে চন্দ্রা নয়। জয়ন্তকে লক্ষ্য করতে গোপনে অশ্রু মুছে বলল, রমা -

জয়ন্তদা এবার আমি বিদায় নেব। আমার ইচ্ছে ছিল অতি ভোরে এখান হতে পালিয়ে যাবো। কিন্তু আপনি অনেক দেরী করলেন।

জয়ন্ত বলল, কোন উপায় ছিল না। পথিমাঝে একটা বাচ্চা মেয়ে প্রচন্ডভাবে এ্যাকসিডেন্ট হয়েছে, তাই ওকে কনক নার্সিংহোমে ভর্তি করে তারপর তোমার কাছে এলাম। মনে হচ্ছে বিকাশের বিয়ের দিনে মেয়েটিকে এক ঝলক দেখেছিলাম। মেয়েটির সাথে কোন গার্জেন ছিল না।

ওকথা শুনে রমার বুকটা কেঁপে উঠল। ও ময়না নয়তো। ময়নার প্রতিচ্ছবি তার চোখের সম্মুখে ভেসে উঠল। যদি তার খোঁজে ময়না রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিল এও হতে পারে। রমা আর থাকতে পারলো না। মুখে কাপড় চাপা দিতে কাঁদতে শুরু করলো। জয়ন্ত ও কুশলবাবু বললেন, কাঁদছো কেন রমা।

কান্না অবস্থায় বলল, ও আর কেউ নয় জয়ন্ত দা, ও ময়না আমার মেয়ে।

জয়ন্ত বলল, মানে দেবীর মেয়ে।

হ্যাঁ জয়ন্তদা।

জয়ন্ত বলল, বাবা রমাকে নিচে নিয়ে যাও আমি নার্সিংহোমে নীচে তলার অফিসে চললাম। মোটেই বিলম্ব করা চলবে না।

কনক নার্সিংহোমে পৌঁছতে বেশী সময় লাগলো না। জয়ন্ত, কুশলবাবু ও রমা অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে দুই নাম্বার রুমে প্রবেশ করতেই সুশীলবাবুকে দেখে তার চক্ষু স্থির। রমার অনুমান ভুল নয়। এবার বুঝতে পারল ময়নার এ্যাকসিডেন্ট হয়েছে।

তার নজরে পড়ল ময়নার মাথায় ব্যান্ডেজ, মাঝে মাঝে মা মা বলে ডাকছে। রমার আর ধৈর্য্য ধরলো না। দৌড়ে গিয়ে ময়নাকে বুকে চেপে ধরল। আমি এসে গেছি মা। চোখ খোল মা, চোখ খোল। ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে বড় ভুল করেছিলাম ময়না। কিন্তু পালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিলো না মা।

রমা ডুকরে ডুকরে কাঁদতে থাকল। ময়নাও কাঁদতে থাকল।

একজন নার্স বলল, কাঁদবেন না, পেসেন্ট ভালো আছে। বিপদ কেটে গেছে। বিপদ থাকলে আপনাকে জড়িয়ে ধরতো না। বিশেষ আঘাত লাগেনি ভয়ে সেন্সলেস্ হয়েছিল। আজই আপনার সাথে ও বাড়ীতে যাবে। আপনার ভালোবাসা পেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে। ওকে আদর করুন।

রমার আদরে ময়না মায়ের কোলে ঘুমিয়ে পড়লো। মায়ের আঁচলের ঢাকাতে ময়না যেন গাঢ় নিদ্রায় ডুবে গেল। কখন যে হেমন্তবাবু, সুশীলবাবু ও দেবীদাস ময়নার পাশে এসে দাঁড়িয়ে চোখের জলে ভাসছেন তা লক্ষ্য করেনি রমা।

হেমন্তবাবুর প্রতি নজর পড়তেই ময়নাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে হেমন্তবাবুর কাছে গিয়ে নত জানু হয়ে পা দুটোকে স্পর্শ করে অশ্রুনেত্রে বলল, বাবা আপনি আজকের মতো ময়নার কাছে থাকতে দিন। আমি ময়নাকে সুস্থ করে চলে যাবো। আমি অস্পৃশ্য, অপবিত্র বাবা, শুধু কয়েক ঘন্টা ময়নার কাছে থাকতে দিন বাবা।
হেমন্তবাবু কান্না ভেজা কণ্ঠে বললেন, কে বললো তুই অপবিত্র, অশুচি, বারবনিতা! তুই বা পতিতারা কোন দিনই অশুচিনয় মা। আমরা সবাই জানি মা, পতিতালয়ের মাটি না থাকলে জগৎ জননী, আনন্দময়ী মার কখনো পূজো হয় না। ওর কখনো ঘৃণার পাত্রী নয়। তারা কখনো অপবিত্র নয়।

কোন মা জননীর যদি দুই বার বিয়ে হয় তাহলে সেও তো অপবিত্র! তাহলে সমাজ তাদের ঠাই দেয় কেন? তোর সজল নেত্র, তোর জ্যোতিরময় মুখখানি, সাক্ষাৎ আমি যেন আমার জগৎ জননীকে দেখছি। তবে আমার একটা কথা শোন্ মা,আমি তোর প্রতি গভীর অন্যায় করেছি মা।

ওকথা বলবেন না বাবা। তুমি আমায় ক্ষমা করো। কেন তোকে ক্ষমা করবো, তুই কোন অন্যায় করিস নি মা। বাবা।

হ্যাঁ রে মা, আমায় বলতে দে, আমি আমার ঐশ্বর্য্য, ধন-সম্পত্তি, আভিজাত্যকে বড়াই করে আমি মহীয়ান হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যে পরিবারের লোকের জন্য আমি আমার জীনবনকে ফিরে পেয়ে ছিলাম তার কথা ভুলতে পারিনি মা। এ আমার লজ্জার কথা ঐ মহান মানুষটিকে এই কলকাতা নগরে এক মুঠো অন্নের জন্য পথে পথে ঘুরতে হবে, আমি ভাবতে পারিনি।

ঐ মহানুভব মানুষ এর ছেলে সুমন্ত এই কলকাতা শহরে ডাক্তারী পড়তে এসে, দেবীদাসের হাতে তাকে মৃত্যু বরণ করতে হবে এও আমি ভাবতে পারিনি। ঐ পরিবারের একমাত্র মেয়েকে আমার ছেলের জন্য পতিতাবৃত্তি গ্রহণ করবে এও ভাবতে পারিনি। এই সবের মূল কান্ডারী হলো দেবীদাস। তার ক্ষমা হয় না মা। তাছাড়া দেবীদাসের সুস্থ করে তুলেছে এই আমার জগত্তারিনী মা আমার। তবে দেবীদাস যে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে আমি জানতাম না ।

যখন সুশীল বাবুর কাছে শুনলাম এই সব ঘটনা। চন্ডীপুরের সীতাংশুশেখর সিংহের মেয়ে রমা, আমার হৃদয় কেঁপে উঠল।

আপনি আমার বাবাকে

চিনি, জানি এবং আমার প্রাণদাতা তিনি। ঐদিন আমাকে মৃত্যুর হাত হতে বাঁচিয়ে ছিলেন। সেই দিনের ঘটনা প্রকাশ না করলে তোমাদের কৌতুহল থেকে যাবে। যে যন্ত্রণা আপন বক্ষে ধারণ করে বয়ে বেড়াচ্ছি, তোমাদের কাছে প্রকাশ করলে হয়তো শীতল বারির স্পর্শে একটু শান্ত হতে পারে। শোন সকলে।

ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি, আমি ও আমার বন্ধু ষষ্ঠীচরণ দুইজন মিলে চন্ডীপুরের জংগলে শিকার করতে রওনা হলাম। শিকারের নেশা আমার স্কুল লাইফ থেকেই।
বাবার সাথে ঐ লাইফে অনেকবার শিকারে গিয়েছিলাম। আমরা যথা সময়ে চণ্ডীপুরের গভীর অরণ্যে হাজির হয়ে জংগলের পরিবেশ অনুকূল অবস্থা কিনা পরিদর্শন করে জংগল লাগোয়া ফাঁকা মাঠে তাঁবু তৈরী করে থাকার ব্যবস্থা করলাম

জংগলের প্রাকৃতিক দৃশ্য ও পরিবেশ আমার এতো মনোরম লাগতো তা একমাত্র আমি অনুভব করতাম। কয়েকদিন কেটে যাবার পর একদিন রাত্রের শেষ ভাগে অর্থাৎ ব্রহ্ম মুহুর্তে আমাকে না জানিয়ে ষষ্ঠীচরণ বন্দুক নিয়ে শিকার করতে পাড়ী দিয়েছে আমি জানতে পারিনি। সূর্য উঠার অনেক পূর্বে হঠাৎ আমার নিদ্রা ভঙ্গ হতে ওর বিছানার প্রতি নজর পড়তেই আমি চমকে উঠলাম। তৎক্ষণাৎ বাইরে এসে দেখলাম ষষ্ঠী চরণ নেই। ভয় যে পেলাম না তা নয়। আমাকে না জানিয়ে কোন দিন সে স্থান ত্যাগ করেনি। তাছাড়া সে শিকারী হলেও আমার মত পটু নয়।

বিলম্ব না করে ওর খোঁজে বন্দুক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। প্রায় এক ঘন্টা খোঁজ করে ওর সন্ধান পেলাম না। তাহলে কি করবো ভাবছি, হঠাৎ অতর্কিতে এক বাঘিনী আমার ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ল। আমি ছিটকে পড়লাম, বন্দুকও ছিটকে পড়লো। আমি তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ালাম, বন্দুকটার দিকে নজর হলো, কয়েক হাত দূরেই ছিল। ওটাকে কব্জাগত করার জন্য উদ্যত হতেই সে পুনরায় আমাকে আক্রমণ করল। বুকের মধ্যে একটা থাবা বসিয়ে দিল।


Sunday, July 9, 2023

উপন্যাস - পদ্মাবধূ || বিশ্বনাথ দাস || Padmabadhu by Biswanath Das || Fiction - Padmabadhu Part -44

 



কয়েক সেকেন্ড সকলে নীরব থাকার পর দেখা গেল হেমন্তবাবুর চোখে জল এবং তার মনে এক দারুন প্রতিক্রিয়া দেখা গেল। তিনি সম্পূর্ণ বিপরীত মানুষ হয়ে গেলেন। তিনি রমা রমা বলে চিৎকার করতে করতে রমার রূমে প্রবেশ করে দেখলেন রুমখানি শূন্য। তন্ন তন্ন করে বাড়ীখানা খোঁজ করে কোন হদিশ পেলেন না। নিজের ভুলের জন্য বিবেকের দংশন জ্বালায় ক্ষত-বিক্ষত হতে লাগলেন। তবে কি রমা পালিয়েছে!


হেমন্তবাবু নিজেকে স্থির রাখতে না পেরে অব্যক্ত যন্ত্রণায় ছটপট করতে থাকলেন। তিনি বড় ভুল করলেন তার ভাগ্নের কথা শুনে। ভাগ্নে যে এক নম্বরের বদমায়েস তা বুঝতে পারলেন। কিন্তু গুনধর ভাগ্নে অতি চালাক মানুষ, তার কারণ সে যে পরিবারের মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি করলো অবস্থা ভালো নয় দেখে কখন সে স্থান ত্যাগ করেছে তা কেউ বুঝতে পারলেন না।

এই সংসারে এমন ধরনের কিছু মানুষ থাকে, যারা পরিবারের মধ্যে এনে দেয় বৈশাখী ঝড়, রুদ্র তান্ডব, পারিবারিক বিপর্যয় এনে সাময়িকভাবে আনন্দ পেয়ে থাকে। হেমন্তবাবু তার অন্তরের অব্যক্ত যন্ত্রণাকে সহ্য করতে না পেরে সুশীল বাবুর হাত দুটো ধরে অস্ফুষ্ট গলায় বললেন, আমি বড় অবিচার করে ফেললাম সুশীলবাবু। একজন কুলঙ্গার লম্পটের কথা শুনে আমার গৃহলক্ষীকে ত্যাগ করে ফেললাম। যেমন করে হোক আপনি বিভিন্ন প্রান্তে লোক পাঠিয়ে আমার বৌমাকে ফিরিয়ে আনুন। নইলে আমার হৃদয়কে আমি তৃপ্তি দিতে পারবো না। আমার সেই শিকারী জীবনের কথা আজও ভুলতে পারছি না। রমার বাবা যদি সেই স্থানে না উপস্থিত থাকতেন তাহলে

হিংস্র জন্তুর মারাত্মক আক্রমণে আমার জীবনদ্বীপ নিভে যেত। আমার রক্ষা কর্তা

সীতাংশু বাবু এখন পরলোকে। কিন্তু আমি তাঁর কাছে ঋণ গ্রস্ত হয়ে থাকবো না। বিলম্ব না করে রমাকে খোঁজ করে বের করতেই হবে। যেহেতু রমা তারই মেয়ে। দেবী সেই সময় বলে উঠলো রমা এ বাড়ীতে আর কোন দিনই ফিরে আসবে না। কারণ সে চায় না আমাদের সংসারের মধ্যে অশান্তির দাবানল সৃষ্টি করতে।

হেমন্তবাবু বললেন, একটু ভুলের জন্য এইভাবে সে আমাকে মর্মে মর্মে দগ্ধ হতে হবে কোনদিন কল্পনা করিনি দেবী। ওকে খোঁজ করে বের করবার চেষ্টা করো। ভুল করেই ফেললাম, কিন্তু ভুল সংশোধনের এখনও তো পথ রুদ্ধ হয়ে যায়নি।

দেবী কোন কথা না বলে একটা চিঠি হেমন্ত বাবুর দিকে নিক্ষেপ করে বাড়ী হতে বেরিয়ে পড়লো।

হেমন্তবাবু চিঠিটা কুড়িয়ে বেদনাক্ত হৃদয় নিয়ে পড়তে শুরু করলেন। শ্রীচরণেষু,

তুমি আমায় ক্ষমা করবে। আজ রাত্রে তোমাদের সকলকে ত্যাগ করে যে দিকে দুই চক্ষু যাবে সেই দিকে হাঁটতে শুরু করবো। আমি জানি আমাকে হারিয়ে তুমি অন্তরে অন্তরে দগ্ধ হবে। কি করবো বলো ভাগ্য বিড়ম্বিতাদের চোখের জল কোন মতে শুষ্ক হতে চায় না। তাদের আশা আকাঙ্খা শূন্যে সৌধ নির্মাণের মতো অলীক হয়ে যায়। এই দিনে যদি অপরাধ করে থাকি অবশ্যই ক্ষমা করবে। তোমাদের পিতা-পুত্রের তর্কাতর্কি যখন আমার কানে পৌঁছেছিলো তখন আমি এই পথ বেছে নিয়েছি। সুতরাং আমাকে বিদায় নিতে হলো। কেন আমার জন্য তিনি তার সংসার জীবনে অশান্তির প্লাবন ডেকে আনবেন। আমি চাই না বাবা বৃদ্ধ বয়সে শোকাতুর হয়ে নিজে কষ্ট পান। তোমার ঔরসজাত সন্তান আমার গর্ভ হতে ভূমিষ্ট হলে তাকে তোমার মতো গড়ে তুলবার চেষ্টা করবো।

ভেবেছিলাম, অনেক নির্যাতন, শাস্তি ও দুঃখ পাবার পর তোমার গৃহ নির্মল শুভ্র জ্যোৎস্না ধারায় প্লাবিত করে তুলবো। কিন্তু ভাগ্যে নেই তো তুমি কি করবে? তবে যার জন্য তোমাদের সকলকে ত্যাগ করতে হলো তাকে কোনদিন তোমাদের মাঝে আশ্রয় দিয়ো না। কারণ সে চরিত্রহীন মানুষ।

ময়নার দিকে একটু নজর রেখো। হতভাগীকে ত্যাগ করে কোন মতেই আসতে ইচ্ছে করছিলো না। কিন্তু বাবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা কানে পৌঁছুতেই আর থাকতে পারলাম না। সমস্ত মায়া কাটিয়ে, হৃদয়কে পাষাণ করে তোমাদের ছেড়ে চলে এলাম। জানি না এরপর কোথায় আশ্রয় পাবো। তবে এ কথা জেনে রাখার তোমার রমা আর পদ্মার জীবন বেছে নেবে না। তাতে যতই কষ্ট আসুক জীবনে পরে আমার প্রণাম নিও, ভালো থেকো।

                                           ইতি

                                   'হতভাগিনী

                                        রমা

রমার পত্রটা পড়ে হেমন্তবাবু ক্ষোভে দুঃখে মাথার চুল ছিঁড়তে শুরু করলেন। তিনি যে অপরাধ করলেন তার ক্ষমা নেই। ধীরে ধীরে তিনি আরো মলিন হয়ে গেলেন। আপন হতে তার অশ্রু ধারায় চোখটা দুটো বাষ্পাকুল হয়ে গেল। এখন কি করবেন তিনি।

হঠাৎ তিনি নিজের দুঃখ, যন্ত্রণাকে বক্ষে ধারণ করে স্বাভাবিক হয়ে উঠলেন। তিনি সুশীলবাবুকে মেজাজি গলায় বললেন, সুশীলবাবু আর দেরী নয়, আপনি চারিদিকে লোক পাঠান রমা মা আমার বেশী দূর যেতে পারে নি। তন্ন তন্ন করে খোঁজ করুন। দেবীদাসকে সঙ্গে নিন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে রমাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাকে পাপের প্রায়শ্চিত্ত রতে হবে। থানা, হাসপাতাল, নার্সিংহোম এমন কি শহরের রাস্তাঘাট অলি- গলিতে লোক পাঠান। থানাতে খবর দিন যে হেমন্তবাবুর নির্দেশ যেমন করে হোক বৌমাকে খোঁজ করে বের করতেই হবে। আমি দেবীদাসের কাছে হারতে রাজী নই।

সুশীলবাবু তাই করবেন বলে বেরিয়ে পড়লেন। হেমন্তবাবু দেবীকে কাছে ডেকে বললেন, আমি অত্যন্ত দুঃখিত বাবা। আমার হৃদয় খানখান হয়ে যাচ্ছে, তুমি চিন্তা করো না, আমার রমাকে আমি ফিরিয়ে আনবই। ভুল যখন করেছি তার প্রায়শ্চিত্ত আমি করবো। তুমি দুঃখ করো না।

দেবীদাস উদাস হয়ে জানালার পানে তাকিয়ে থাকে শহরের বৈচিত্র্যময় আলো রশ্মির দিকে। বার বার রমার মুখখানি তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে, ভেসে ওঠে তার বন্ধু সুমস্তর মুখখানি, ভেসে ওঠে রমার বাবার মৃত মুখখানি।

সে কোন মতে থাকতে পারল না। উর্দ্ধশ্বাসে দৌড়ে বেরুতেই হেমন্তবাবু ওর হাতখানি ধরে বললেন, তুমি যেখানে যাবে আমিও তোমার সাথে যাবো বৌমাকে খোঁজ করতে।; উভয়েই গাড়ী বের করে রমার খোঁজে নিশুতি রাত্রে বেরিয়ে পড়লেন।

সুশীলবাবুও কম চেষ্টা করলেন না। থানা, নার্সিংহোম, আশ্রম, মন্দির, মসজিদ

এমনকি ফুটপাতেও খোঁজ করলেন, তথাপি রমার খোঁজ পেলেন না। তিনি মানসিক

ভাবে দগ্ধ হলেন। বিশ্রামের প্রয়োজন মনে করে সূর্য উদয়ের পূর্বে হেমন্তবাবুর বাড়ীতে

এসে উপস্থিত হলেন ও সোফায় বসে তিনি চিন্তার রাজ্যে ডুব দিলেন। ভাবতে থাকলেন দুঃখিনী রমার কথা। ভাবতে থাকলেন তার পিতার কথা ঈশ্বরের কেমন বিচার। একজন জমিদার পুত্র হয়ে অনাহারে, অনিদ্রায় ফুটপাতে জীবনলীলা সাঙ্গ করলেন। তার মেয়ে রমা এক জায়গায় আশ্রয় পেয়েও তাকে হারাতে হলো তার ভালোবাসার পাত্রকে। তবে কি সেই দুঃখিনী মামনিকে সারাজীবন কি দুঃখের সাগরে ভাসতে হবে। রমা মাকে কি ফিরিয়ে আনা যাবে না?

এমন সময় করালী হন্ত দন্ত হয়ে হয়ে ছুটে এসে সুশীল বাবুকে বলল, সর্বনাশ হয়ে গেছে মেজবাবু । সুশীলবাবু ব্যাকুল স্বরে বললেন, কি হয়েছে করালী, এমন উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটে

এলে কেন ?

ময়নাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

সেকি! প্রায় লাফিয়ে উঠলেন। করালী তুমি নিবারণকে বলো গ্যারেজে গাড়ী রাখতে হবে না। আমাদের পুনরায় বেরিয়ে পড়তে হবে। বেরিয়ে পড়তে হবে ময়নার খোঁজে। বিপদের পর বিপদ। দুঃখের পর দুঃখ। দেবী ও হেমন্তবাবু সহ্য করতে পারবেন ? এই অসহনীয় জ্বালা উভয়ের অন্তরকে কুরে কুরে খেতে থাকবে। অসহ্য নিদারুনের কুঞ্ঝটিকায় পরিণত হবে তাদের মন ও অন্তর। ঠাকুর ওদের একটুখানি শান্তির বাতাস দিয়ে অশান্ত মনকে শান্ত কর।

সহসা ড্রাইভার ব্রেক করতেই সুশীল বাবুর চিন্তার জাল ছিন্ন হলো। নিবারনের এক পরিচিত ড্রাইভার এসে বলল, গাড়ী সাইট করো নিবারণ দা। একটা বাচ্চা মেয়ে এ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। তাই পথ যাত্রীরা পথ অবরোধ করেছে। বাচ্চা মেয়ের কথা কানে যেতেই সুশীলবাবু বুকে কে যেন হাতুড়ীর ঘা মারলেন।

তৎক্ষণাৎ গাড়ী হতে নেমে সঠিক সংবাদ নেওয়ার জন্য যান জটের মধ্যে প্রবেশ করলেন। বাচ্চা মেয়েটিকে হাসপাতালে বা কোন নার্সিংহোমে নিয়ে গেছে। তবে মেয়েটি যেভাবে আহত হয়েছে মনে হয় -

সুশীলবাবু আর থাকতে পারলেন না। পাগলের মতো একে ওকে অর্থাৎ নানা জনকে জিজ্ঞস করাতে ও কোন খবর পেলেন না। তিনি কি করবেন এই মুহুর্তে। যদি ঐ মেয়েটি ময়না হয়ে থাকে তাহলে - সমস্ত কলকব্জাগুলো যেন বিকল হয়ে গেল। শরীরটা যেন থরথর করে কাঁপতে শুরু করলো। এমন সময় কানে ভেসে এলো মেয়েটিকে কনক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। সুশীলবাবু বিলম্বনা করে কনক নার্সিংহোমে উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। রওনা ঠিক সময়েই হয়েছিলো জয়ন্ত। কিন্তু পথমাঝে এই রকম বিপদের মাঝে পড়বে ভাবতে পারেনি। জয়ন্ত ও ওর বাবা কুশলবাবু গভীর চিন্তায় মগ্ন। বাচ্চা মেয়েটি কার। প্রভাতেই বেরিয়ে পড়েছিল। ওর সাথে কি গার্জেন ছিল না!

নানা চিন্তার মধ্যে এক সময় চারু নার্সিংহোমে হাজির হলো। রমাকে চারু নার্সিংহোমে ভর্তি করে নিজেকে শান্ত রাখতে পারেনি জয়ন্ত। কারণ গত রাত্রে তার গাড়ীতেই ধাক্কা হয়েছিল। ওকে প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় নার্সিংহোমে ভর্তি করেছিলো। অনেকটা বেলা হলো, মনে হয় রমা অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠবে।