Friday, May 3, 2024

সাগরবেলায় - সমর আচার্য্য || Sagorbelai - Samar Acharya || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 সাগরবেলায়

সমর আচার্য্য



সাগরবেলায় ঝিনুক খোঁজার ছলে
ঘুরছি যে মরে তোমায় দেখবো বলে
তোমার ঐ অপরূপ রূপখানি হেরি
মন মাঝে বাজে প্রেমের দুন্দুভি ভেরি।

একের পর এক ঢেউ আসছে ধেয়ে
উত্তাল বারিধি  সবেগে উঠছে গেয়ে
নিয়েছিল যা নিজের বক্ষ মাঝে ধরে
দিচ্ছে ফিরিয়ে সবকিছু শোধিত করে।

ঝিনুকের বুকে যেমন মুকুতা থাকে
মাতা যেমন সন্তানকে আগলে রাখে
তেমনই করে ভালোবাসবো তোমায়
এই সাধটুকু ছিল  মনের কোণায়।

এসো হে প্রিয় এসো আমার বাহুপাশে
বাঁধি সুখ নীড় আছি এই মনো আশে
তোমার ঐ প্রসারিত নীল বক্ষ পরে
থাকতে পারি যেন চির জনম ধরে।

জীবনের এই শেষের বেলায় এসে
দাঁড়িয়েছি তোমার পদপ্রান্তেতে হেসে
পার করে দাও ওগো  প্রভু কৃপাময়
ঠাঁই দিয়ে আমায় তোমার রাঙা পা'য়।

যাযাবরি কথায় আশাবরী সুর - গৌতম ঘোষ-দস্তিদার || Jajabari kothay Asabori surr - Goutam Ghosh dastidar || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 যাযাবরি কথায় আশাবরী সুর

        গৌতম ঘোষ-দস্তিদার


 


নদির বুকে ভিজবো ভেবে গেলাম,


নদিতো আমায় সিক্ত করেনি


পাহাড়ের কাছে মাথা নিচু করেছিলাম,


কই সে-ও তো আমায় রিক্ত করেনি


 


অরণ্য যেদিন ডেকে নিয়ে গ্যালো


মুখ জুড়ে টোল এঁকে দিয়ে গ্যালো


সিক্ত শরীর ঢেকে দিয়ে গ্যালো


চুমুতে দুগাল মেখে দিয়ে গ্যালো…  


 


কথা তো কতো না বলার ছিলো


যাযাবর আমি কইতে পারিনি


ভাঙা ফ্রেম জুড়ে প্রেম পড়েছিলো,



আশাবরী তবু গাইতে পারিনি...


হাইফেন - গোবিন্দ মোদক || Hifen - Gobinda modak || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 হাইফেন!

গোবিন্দ মোদক



প্রেম ও ভালোবাসার মধ্যে কতোটুকু দূরত্ব থাকলে 


সম্পর্কের রসায়নে বালি চিকচিক করে, 


তার কোনও সর্বজনগ্রাহ্য হিসাব হয় না।


তবুও যখন ফুলদানির বাসিফুল পরিবর্তনের অছিলায় 


ঘরে নিয়ে আসা হয় কৃত্রিম ফুলসম্ভার,


তখন কাঁটার আঁচড়ের গায়েও অভিমান জাগে,


আর তাজা ফুল শুকিয়ে যাবার অবকাশে 


তৈরি হয় যোজন-দূরত্ব ....!


তখন নৈঃশব্দের প্রহর শুধু মালা জপে যায় —


এক .... দুই .... তিন .... চার ….


শত .... সহস্র .... অযুত .... নিযুত বার ....;


সম্পর্কের ফাটল ক্রমশ: বলশালী হতে থাকে 


সময়ের সঙ্গে সঙ্গে।


অথচ হে প্রেমের ঈশ্বর!


তুমি রচনা করেছো সমূহ সম্ভাবনা 


যেখানে প্রেম-ভালোবাসার মধ্যে


চিরকাল অবস্থান করে অনিবার্য একটি হাইফেন!

অনন্ত - পূর্বিতা পুরকায়স্থ || Ononta - Purbita Purakaystha || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

   অনন্ত

          পূর্বিতা পুরকায়স্থ


পূর্ণিমার চাঁদ দেখে

জীবনের ঢেউ । আমি দেখি,

ঢেউ মেশে সাগরের জলে ।

এক একটা ঢেউ যেন এক একটা জীবন।

হর্ষ বিষাদ, সুখ দুঃখের নুন ছড়িয়ে

পাড়ি দেয় অনন্তের দিকে।

জল শেখায় কি করে 

ব্যক্তি থেকে নৈর্ব্যক্তিক হতে হয়। কি করে

মাটী থেকে আকাশ।

জীবন চলে মহাজীবনের দিকে।

নববর্ষের সূর্য - তপন মাইতি || Noboborser Surya - Tapan maiti || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 নববর্ষের সূর্য 

      তপন মাইতি


জীর্ণ পাতা ঝরিয়ে উঁকি দেবে কিশলয় 

নিশুতি রাতের পর যেমন আসে কাঙ্খিত ভোর 

হাত পাখায় সামলাচ্ছে না লোডশেডিংএর অস্বস্তি...

দরদর ঘামে ডুবে যাচ্ছে চোখ মুখে গাল চুল শরীর।

কতরকম ব্যঞ্জন রেঁধেছে মা, বাবার ছুটি...

নীম-হলুদ-তেল গায়ে জেল্লা বাড়ায় ভীষণ 

পুদিনা মেহেন্দি সজীব হচ্ছে নতুন ভাবে 

স্বপ্নের বিনুনি বাঁধছে লক্ষ্যবস্তুর আখরে।

রীতিমত ঈশান কোণে আগুন জ্বালালো কে...

লাল সাদা শাড়িতে আলতা পায়ে আঁকছে 

পুজোর স্বস্তিক চিহ্ন হালখাতা আমপাতার দড়ি 

মুছে দিচ্ছে জীবনের দুঃখ হতাশা গ্লানি। 

অরুণালোক মুছিয়ে দেয় রাতের সব ব্যর্থতা

পয়লা বৈশাখ বুঁদ হয় ভালোবাসাযর গীতবিতানে

বাংলার ঘরে ঘরে বেজে ওঠে শঙ্খ উলু 

জগৎ মুখে হাসি ফোটার নববর্ষের সূর্য। 

কবিতার চুপিসার - অমিত কুমার সাহা || Kobitar chupisar - Amit Kumar Saha || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 কবিতার চুপিসার

       অমিত কুমার সাহা


একলা ঘরের কোণ

যে সব কবিতার জন্ম দেয়

তাদের এক একটি শব্দে

মিশে থাকে, সময়ের নোনা জল!


প্রতিটি লাইনের মধ‍্যবর্তী

ব‍্যবধান জুড়ে ভেসে বেড়ায়

চুপপাখিরা,দুডানায় ছুঁয়ে আসে

দুটি লাইনের আপাত সীমারেখা।


কবিতার শেষে যে শব্দটি টিকে থাকে,

তার সাথেই হয়ত গোটা একটা কবিতা

গায়ে মাখতে চায় রোদ্দুর;

বোবা দেওয়াল পেরিয়ে,

কোনো এক অন্ধকার ছাপাখানায়!

কে জানে - নীলমাধব প্রামাণিক || ke jane - Nilmadhab pramanik || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

     কে জানে

   নীলমাধব প্রামাণিক



কথারা নির্দ্বিধায় হেঁটে যায় কানে

কারণ জানিনা

বলতে পারিনা, ঠিক তা কে জানে ।


হয়তো বলতে পারে  

জানলে জানতে পারে কথার মালিক ।


সেই তো ভাসায় কথা

সেই তো সাজায় কথা রাঙিয়ে খানিক ।


তারপর সেই কথা

খুঁজে নেয় কান, কান থেকে কান এ

হাঁটবার কায়দাটা সে দারুণ জানে ।


এরপর সেই কথা কানের মালিক

না পেরে বইতে তাকে ছড়াবেই ঠিক ।


ছড়াতে ছড়াতে কথা ছাড়ালে সীমানা  

গজায় তখনই তার আজগুবি ডানা ।


ডানা মেলে উড়ে যায় এ কানে ও কানে

বলতে পারি

না ভাই কে জানে কে জানে!


এদেশ - মুহা আকমাল হোসেন || Edesh - Muha akmal hossain || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 এদেশ

   মুহা আকমাল হোসেন



এদেশে গরুর গন্ধ আছে 

শুয়োরের গন্ধ আছে


কেবল মানুষের গন্ধ নেই 

মানুষ পুড়ল! মানুষের শহর গ্রাম পুড়ল 

মানুষের পেট থেকে বার করে নেওয়া হল মানুষের ভ্রুন

কেবল মানুষের গন্ধ নেই! 

Thursday, May 2, 2024

শোণিত-শোষণ - অনুপম বিশ্বাস || Sonito soson - Anupam biswas || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 শোণিত-শোষণ

   অনুপম বিশ্বাস 


সাইরেনের তীব্র‌‌ ধ্বনি বেজে উঠতেই 

সাধারনেরা ক্রন্দনে নিজেকে লুকিয়ে রাখে,

বোম-গুলির আঘাতে একজনের পর একজন

অনেক সুখের জীবন হারাতে থাকে।

ধ্বংস লীলায় বাসভূমি

রক্ত মাখা শশানে পরিনত হয়,

‌মানুষের মনে গনগনে চিতার আগুন

তাজা রক্তের গঙ্গা বয়।

হিংসা-ক্ষোভ-লালসার

বশে মানুষ আজ‌ পাথর,

গঙ্গায় হারিয়ে যায় শঙ্খ ধ্বনি

কৃপা লাভের আশায় কাতর।

জল হীন সমুদ্র ভরে ওঠে চোখের জলে

মাথাধরা,আবছা স্মৃতিপটে লেগে থাকা ১৯৯৩ সাল,

যুদ্ধ!যুদ্ধ!যুদ্ধ!ফুটন্ত রক্ত ছিটকে ওঠে,

জীবনের সংকেত আজও লাল।

পথের পাঁচালি - নাসির ওয়াদেন || Pather Panchali - Nasir Oyaden || Pather Panchali || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

    পথের পাঁচালি

     না সি র ও য়া দে ন



আজ যদি হেঁটে যাই দূরে, বহুদূরে

সবকিছু ছেড়ে, সুস্পষ্ট অন্ধকারে

সরলরেখার উপর ধুলো চিহ্নপথ

ধুলিমাখা পূর্বপুরুষের পায়ের ছাপ


ভালবাসা মিশে আছে, ঝড়ের প্রগতি

যাই আসি চিহ্ন রেখে পথেরই বসতি

সত্য থাকে নিত্য বেঁচে মিথ্যে হয়ে শব

বিশ্বাসই মিলায় পথ, বাকি সব রব


যে ছবি ছেয়ে আছে এখানে ওখানে

লম্পটের ছায়ামূর্তি কবরে শশ্মানে

সত্য কেন বজ্রকঠিন, মিথ্যে লঘু বোঝা

ঝেড়ে ফেলে কলঙ্ক দাগ পথ চলা সোজা


যে দায় তোমার নেই, আমার তা আছে

কুকর্মের দুর্গন্ধ ছড়ায় সংসার সমাজে

পরম উল্লাসে নাচো, সম্মতিতে উঠো

রক্তের বিষম স্বাদে হও কঠিন, কঠোর


পথের মেঠো সুরে বাজে না-মরার কাহিনি

বাঁচামরা পথ ধরে কণ্ঠস্বরে উঠে তীব্র ধ্বনি

সেই তিরে বিদ্ধ হও বিস্ফোরিত আঁখি,কলি

কি করে বোঝাই বলো,এ-সব পথের পাঁচালি ।

লক্ষ্যপথ - আনন্দ গোপাল গরাই || Lokhyapoth - Ananda gopal garai || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 লক্ষ্যপথ

আনন্দ গোপাল গরাই


ভাবনাগুলো ভিড় করে এসে মনের আকাশে

খন্ড খন্ড কালো মেঘের মতো

মাঝে মাঝে ঢেকে দেয়

স্বচ্ছ চিন্তার সূর্যটাকে

অন্ধকারে হাতড়ে বেড়াই পথ

কানামাছির ভোঁ ভোঁ খেলার মতো

এদিকে ওদিকে হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চাই লক্ষ্যটাকে

পাইনা নাগাল--- ফিরে আসি ব্যর্থ মনোরথে।


লক্ষ্যহীন জীবনের পথে

কতদিন হেঁটে যাব জানিনা

কখন ছুঁতে পারব লক্ষ্যের বুড়িটাকে

জানা নেই তাও। তবু থামব না পথে

পথ হোক যতোই বন্ধুর

বাঁধার কাঁটাবন পেরিয়ে

রক্তাক্ত পায়ে হেঁটে

একদিন পৌঁছে যাব 

কাঙ্খিতের দেশে।

মন - সুশান্ত সেন || Mon - Susanta sen || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 মন 

সুশান্ত সেন


মনে বিভেদ মনে জ্বালা 

মনে বসে আছে বিচিত্র কথামালা 

দেশ আর নেই নেই সরস্বতী নদীর চলন 

অবাধ্য অশান্ত এক মন।


যারা সম্পদ'শালি

তারা কেবলই

ডাক ধাক বাজনা বাজায়

টিকে থাকা বড় দায়।


বিদেশি অতিথি ও আসে

ঘন ঘন শ্বাস পড়ে ঘাসে

ফেবু দিয়ে গন্ধ 

ভরে যায় আসে পাশে।


বিষ প্রয়োগে জাগে বিশ্বায়ন

রাহেনা হয়ে যায় একান্ত আপন।




বুক বেঁধে থাকি - ইলা সূত্রধর || Book bedhe thaki - Ila sutradhar || Bengali poem || Kobita || বাংলা কবিতা || কবিতা || poetry || Bengali poetry

 বুক বেঁধে থাকি

         ইলা সূত্রধর



কুয়াশায় ঢেকেছে পথ -

পারাপারের সেতু তাই ক্ষীণ হয়ে গেছে।

প্রসস্থ প্রান্তরে জড়ায় ধূসর বলয়,

বাষ্পীয় মেঘ নামে নদী বরাবর;

শিশিরেরা ডুব মারে অতল জলে।


তীক্ষ্ণ শীতের কাঁপন স্পর্শে বিদারক,

বেলা বেড়ে গেলে ঝরে বিবর্ণ পাতা;

নূপুরের মতো ধ্বনি মর্মর বাজে।

যাপনের ভিতর আরেক বাসভূমি খুঁজি !


জোয়ার ভাঁটার মতো এজীবনে সব,

ছন্দপতন হলে মাত্রা ব‍্যহত;

ভেঙ্গে পড়ে বাঁধনের হাল হকিয়ৎ।

জানি কাল হাজির হবে বসন্তবিলাপ !

সেজে ওঠে উপাচারে পালতোলা নাউ,

চেয়ে চেয়ে বসে আছি সময়ের কাছে;

ক্ষতের প্রলেপে শুধু আশা জেগে থাকে !


অযুত স্বপ্নগুলোর যত ছবি আঁকি -

তবু কেন কাতরতায় এমন বিভোর ?

শূন‍্যকে পূর্ণতায় আগলেছি প্রহর

নিদারুণ সকাল এলেও বুক বেঁধে থাকি !!