পরিণত
হালা রে হালা .... শালা আজব ভেলকি মাইরি ,এট্টু যে পেরেম কইরব তার যো পর্যন্ত নাই ।আজ বউ এর শরীর খারাপ ,পেশার বাইড়ছে ।তো কাল গাড়ি খারাপ গ্যারাযে দাও সারানর লাইগ্যে ।আর হালা ই দুটো খারাপ হইল্যে ই খাটন প্যাটের নাই ।বউ এর শরীর খারাপ হইল্যে রাঁধনা বন্দ গাড়ির শরীর খারাপ হইল্যে রাঁধনার আনাজ আনা বন্ধ ।লে উপাস দিয়া মর কেইনে। হালা আমার যে ক্যানে শরীর খারাপ হয় নাই কে জানে ? দিব্যি দুই তিনদিন ব্যশ আইরাম কইরা তাকিয়ায় ঠ্যাস দিইয়া চোক বন্দ কইরা শুইয়া শুইয়া স্বপন দেকতাইম । গলাপীরে একটু আইদর কইরতাম। চুকু চুকু.. ঈশ চুপ চুপ ..
কি গো পরান খুড়ো... ? বিড়বিড় করে কি বকছো নিজের মনেই ?
আ্যাঁ কে কে ? আমি গো আমি তোমার সিধু ।
অ... তা তুই এইকেনে ক্যানে রে ?
আইজ বুজি লেখক বাবু ফোন করছেন তরে ?
কিচু লতুন ল্যাকা দিবি নাকি ?
না গ খুড়া , আগের লেখা গুলো সাজিয়ে সজ্জিত করে পাঠিয়ে দেবো তিনি বললেই ।কিন্তু হঠাৎ লেখার কথা বললে কেন ???
না মানে তুই একেনে এই অবেলায় তাই জিগালুম আর কি হেঁহেঁ । পেকিতির মনরম দিশ্শ তে তর ত লেকা ভালো হয় ,মনটা ব্যশ ফুরফুইরে হইয়ে যায় ।লতুন লতুন উপমা যোগ কইরতে পারা যায় ..হেঁ হেঁ ..
অবাক বিস্ময়ে গালে হাত রেখে সিধু বললো বাব্বা খুড়ো সব জানো দেখছি , অনেক কিছু নতুন কথা শুনলাম তোমার মুখে কি ব্যাপার ? বলো দেকনি জলদি করে খুড়ি কি আজ কোনো ভালো রান্না করেছে নাকি ? তাই খুশিতে ডগমগ হয়ে কাব্য কথা বলতে পারলে ।
আরে না না না .. তর খুড়ির বেজায় শরীর খারাপ ছিল কাইল , আইজ আবার টো টো খান জবাব দিয়াচে সকালেই , এই ত তারে ও ডাকতার খানায় পুরে দিয়া আসচি ,গুচ্চেক টাকা খইসলো গ্যাঁইট থ্যাইকে আর খাবার ও জুটে নাই কালকের থ্যাইকে ।
হা হা হা হা হা হা , ও এবার বুঝলাম যে বর্তমান পরিস্থিতি তে তুমি এখন এইসব ভেবে মাথাটা খারাপ করে ফেলেছো তাই একাই নিজের মনে বিড়বিড় করছিলে । যাক গে চলি গো খুড়ো আমাকে একবার ডি আই অফিস যেতে হবে ।
হালা রে হালা .. গলাপীর নাইমটা শোনে নাই ত ছোকরা ? হালা কান ত লয় য্যান কুলা ।
যাই একবার গলাপীর বাড়ি থেকে ঘুইরে আসি যদি কিছু খেইতে পাওয়া যায় ,প্যাটে ছুঁচা ডন মারতাচে ।
অ এ অজগর আসছে তেড়ে , আ এ আমটি আমি খাবো পেড়ে .... দিদিমনির গলার স্বরে স্বরে শিশুরা ও সুর করে দুলে দুলে বলে যাচ্ছে । জনা পঞ্চাশ জন খুদে শিশু এখন তার সাথী । সকাল এগারোটা থেকে স্কুল চালান মিস বিশ্বাস । দুধে আলতা মেশানো গায়ের রং যেন গোলাপী আভা ঠিকরে বেরুচ্ছে , ছোটো বেলায় ঠাকুমা আদর করে তাই গোলাপী নাম রেখেছিলো । বাংলায় এম এ করার পর কোনো চাকরি পায় নি, ' স্কুল সার্ভিস কমিশন 'পরীক্ষায় একবার বসবার উপায় হয়েছিলো কিন্তু তার রেজাল্ট বার হয় নি আর পরের বার থেকে তো পরীক্ষাই বাতিল ।
পড়াশোনার সাথে সাথে গান ,নাচ ,ছবি আঁকা ,সেতার বাজানো সবেতেই সিদ্ধহস্ত ।
এই প্রাইমারী স্কুলে এখন তার বিশেষ পসার । একডাকে একটাই নাম সব শিক্ষক ও সব ক্লাসের ছাত্রছাত্রী দের মুখে মুখে ঘোরে তার বিনয়ী নম্র, ভদ্র ও সাংস্কৃতিক পরিষেবা মন্ডিত বলে ।
কয়েকটা পাখি মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেলো, সূর্যদেব যেন চারধারে আগুন ঢেলে দিচ্ছে , উফ! কি গরম রে বাবা ,দুপুর বেলা যেন মাছ ভাজা করে দিচ্ছে সারা শরীর ।ঘড়িতে দেখলো দুটো বাজে ।আড়াই টা তে স্কুল ছুটি হবে গোলাপীর, দেখা তো হবে না গিয়ে কি হবে ?ভেবে রাস্তা বদল করলো পরাণ পাল ।
ঘরে ফিরে দাওয়াতেই ধপাস করে বসে পড়লো কই গ গিন্নি ? কোতায় গ্যালে ?
খেইতে দাও দিকি কিচু ,খুউব খিইদে প্যায়েচে ,নইলে ক্যঁইন্দে ফেইলব ইবার । হাতপাখা টা দাও ,উফ! বড্ড গরম পইড়েছে ,মাথার চাঁদি যেন ফাইট্যে যাইচ্চে ।
' কুয়ার পাইড়ে বালতি তে জল রাকা আছে তুমি এক্কেরে সিনান কইরা আইস ,আমি ভাত দিচ্চি ' বলে হেমাঙ্গিনী গামছা টা এনে সামনে নামিয়ে দিলো ।
মুখোমুখি দুইজনে খেতে বসে হেম বললো ' জানো আজ না মিত্তির বাড়িতে পুন্নিমা পুজা হবে , আমাকে যেইতে বইলেচে , আমি সন্দ্যা বেলা যাব ' , তুমার গাড়িখান কই ?
আর বইলো না গিন্নি সে ব্যটাও বিইগড়েচে , তাকেও দিইলেম নার্সিংহইমে ভরতি করায়ে ।এখন সিলাইন চইলচে ।হাঁইটে হাঁইটে পা গুলান ব্যতা কইরচে গ ।
মুখ টিপে হেম হাসি লুকাবার চেষ্টা করলো , মুখে বললো ' তা কবে ছুটি দিইবেক তারে ' ?
আমাদের সংসারে এই তিনজন বইত কেউ নাই ,সে না থাইকলে বুকটা হাপর হাপর করে ।
পরাণ হেসে বললো চিইন্তা কইরা না গিন্নি তেইমন গুইরোতর কিচু হয় নাই বুজলে, কাইল ঠিক হইয়ে যাইবা আইশা আচে ।
মিত্তির বাড়ি থেইক্যে ফিরতে দেরি হইব বইলেচে হেমা তাইলে এই ফাঁইক্যে একবার গলাপীদের বাড়ি পানে ঢুঁ মাইরা আসি ,একটা বই হাতে বেরিয়ে গেলো সোজা রাস্তায় । গলাপী বই খুউব ভালোবাসে , একটা ত কিচু ছুঁতো চাই দেখা করার ।
' কই গ বিশবাস বাবু ' ? 'ঘরে আচেন নাকি ' ?
কে ? বলে সদর দরজায় এসে দেখেন ধুপধুরস্ত ধপধপে সাদা ধুতি ও গিলে করা পাঞ্জাবি গায়ে, পায়ে রংওটা পাম্পশু পরে দাঁড়িয়ে পরাণ খুড়ো ।
আরে পরাণ বাবু যে .... আসুন আসুন
তো কি মনে করে ? এতো সাজগোজ করে কোথাও যাবেন নাকি ? বিয়েবাড়ি আছে বোধহয় ?
হেঁ হেঁ .. না না .. বিয়েবাড়ি নেই ,আসলে ভাইলো ড্রেরেস ত পইরা হয় না তেমন ,তাই আর কি ..........
ও আচ্ছা বেশ বেশ , আসুন ভেতরে আসুন ।
গোলাপী... তোর মা কে চা দিতে বল ।
নীল শাড়ি তে গোলাপীর রূপ যেন হঠাৎ করে চমকে দিলো পরাণের বুক ।উছলে উঠলো কামনার তেজ ।
বহুকষ্টে নিজেকে সংযত করে 'হেঁ হেঁ আপনার মাইয়া কে একখান মাইনুষের মত মাইনুষ করেচেন বটে বিশবাস মশায় ' । 'হেন গুন নাই যে নাই '।
আপনাদের সবার আশীর্বাদ পরাণদা , আমি কি করেছি বলুন ,সবই ঈশ্বরের দান ।
ভালো পাত্রের সন্ধান পেলে বলবেন , না মানে আপনি তো বহু জায়গা ঘোরেন ,অনেক লোকের সাথে যোগাযোগ আছে , তারপর তো শুনছি নাকি রাজনীতি তে সুর চড়িয়েছেন ।তাই বললাম আর কি ।
মহুর্তের মধ্যে মুখটা পাংশু হয়ে গেলো পরাণের । হৃদস্পন্দন বেড়ে যতো জোরে জোরে ধাক্কা মারছিলো হৃদয়ে হঠাৎ যেন স্তব্ধ হয়ে গেলো , তার কি তবে হার্টআটাক না কি বলে সেটা হলো ? নিজের হাতটা একবার মুখে গায়ে বুলিয়ে নিলো ,হাতের কব্জিটা টিপে ধরে নাড়িটা দেখলো টিকটিক করে চলছে কিনা ।
তারপর বললো হেঁ হেঁ ... এতো তাড়া কিসের বিশবাস বাবু ? আপনার মাইয়ার বয়স পেরিয়ে যাই নাই ত । এমন লক্কিমন্ত মাইয়া যতদিন আচে আপনার সইংসারে ততদিনই লাব বুজলেন কিনা । বলেই আড়চোখে একবার গোলাপী র চলে যাওয়াটা দেখে নিল ।আহা অপূর্ব রূপ ! যেন সগ্গের অইপসরা আইসেচে মাইটিতে নাইম্যা ।
বলি অ গলাপী তুমার লাইগ্যা একখান বই আইনেচিলাম যে 'কপলকুন্ডুলা ' খুউব ভালো বই পড়লে ভালো লাগবে লইয়া যাও দেকি ,
বলে হাঁক পাড়লেন পরাণ খুড়ো ।
গোলাপী আবার এলো যেন প্রজাপতি এসে বসলো তার হাতে , একদৃষ্টে তাকায় রইলো গোলাপীর মুখের পানে ।কখন যে গোলাপী চলে গেছে বই নিয়ে তার হুঁশ নেই ।ওমা ঠাকুরপো .. আপনার চা যে ঠান্ডা জল হয়ে গেলো খান ..আঁচলে হাত মুছতে মুছতে এসে বিথীকা বললো ।
হ বৌঠান এই যে ......
সারা রাস্তা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগলো গলাপীর বাপের কথাগুলো । হালা রে হালা.. গোলাপীর বিয়ে দিয়ে দিলে তার কি হবে ? বইল্যে দিব গলাপীর বাপ রে যে ' 'আমি তারে বিয়া করুম, আমার ঘরের রানী করে রাইখব '
না বাবা চারিদিকে ঢি ঢি পইড়ে যাবে ,হেমা আমার বউ টা দিনরাইত খাটে আমার জন্য , আঠার বইছর বিয়া হইচে কোল উহার খালি আজও । মনমরা হয়ে যায় দিনরাইত । এখন আবার যদি ঘরে সতীন আনি তো বেচারা মইরেই যাবে । সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে ঘরে ফিরেই দেখলো হেমা রান্না করছে , কোনো কথা না বলে বিছানায় চুপচাপ শুয়ে দিলো ।
রাতে খাওয়ার অনিচ্ছা সত্বেও বসে খাবারগুলো নাড়াচাড়া করতে দেখে হেমা বললো কি হইয়েচে তুমার ? কোখন থেইক্যে দেকচি কেমন গুইম হইয়ে আচো ,বলো কি হইয়েচে ?শরীর খান ঠিইক আইচে তো ? দেকি ..কপালে হাত বাড়িয়ে দেখে বললো 'না জ্বইর তো আইসে নাই তাইলে কি ? আমাকে বল ' ।
ব্যবসার কতা ভাবছিলম আর কিচু না বলেই পরাণ উঠে গেলো ।
রোজ একবার করে গোলাপী কে না দেখলে পরাণ থাকতে পারে না , মনটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে ওঠে , সব শূন্য লাগে ,সারা পৃথিবী জনমানবহীন , অনর্থক কাজের চাপ দিশাহারা করে দেয় , অথচ যাকে ঘিরে এই রকম হয় সে হয়ত জানেই না । দুর থেকে হলেও একবার অন্তত দেখবেই ।
পড়ন্ত বিকেলে দুটো কোকিল পালা করে ডেকে চলেছে দেখে তার ও মুখ কু উ উ ডেকে উঠলো ,না না 'কু' বইলবো না সু উ উ বইলব , আজ গলাপীরে দেইখ্যে কেমনতর মউনমরা লাগল ক্যান? কিচু কি হইয়েচে ?
জিগানোর ত উপাই নাই অনেকদুর থেইক্যে দেইখলাম ত , ঠিইক আচে কাইল সরাসরি উয়াদের বাইড়ি যাইব , আইজকের রোজগার বেইশ ভালো হইয়েচে তাই প্রফুল্ল মনে সিটি বাজাতে বাজাতে ঘরে ঢুকেতেই হেমা বললো " কুথায় থাইক্য বইলত "?
ক্যান কি হইয়েচে ?
আরে গইটা পাড়া জুইড়ে সবাই দেকতে গেল আমি ই গেইলাম না , কখন তুমি ফিরবা হেই ভাব্ব্যা।
আরে হইচে টা কি সেইটা ত কউ ?
ওই যে পস্টঅপিসের পাশে বিইশাস বাবু থাইকে তার হাটঅাটাক হইয়েচে পরশু , আজ খুব বাড়াবাড়ি মনে হয় বাইচবেন না ।
গাড়ির টায়ার কানের উপর ফেটে গেলে যেমন বিকট শব্দ হয় তারপর কানে শুধু ভোঁ ভোঁ করতে থাকে আর কিছু শোনা যায় না, তেমনি অবস্হায় পরাণ নিশ্চল দাঁড়িয়ে রইল ভাষাহীন ।
হেমা বলেই চললো ' আইজ একবছর হইল কি একটা বুকের ব্যামো হইয়েচে , একবার নাকি ভেলর না কুথায় চিকিৎসা ও করিয়েছে ।
সত্যিই ত শুদু গলাপীরে একবার চোকের দেখা দেইখ্যে ই আমার শান্তি তার আর কুনো খবর ত রাইখ্যি নাই .. মনে মনে অনুতপ্তের আগুন জ্বলে উঠলো পরানের ।
"আইজ যেইমন কইরেই হোক হসপিটালে বিশবাস বাবু কে দেকতে যাইব " বলেই জোরসে টোটোতে স্টার্ট দিলো, হসপিটালে যখন পৌঁছালো তখন সব শেষ ।
দাহ কার্য সম্পন্ন করে ওদের বাড়িতে এখন শুধু গোলাপী, ওর মা ,পরাণ আর হেমা । মেঝেতে একটা পিন পড়লেও শব্দ কানে লাগবে এমন নিস্তব্ধ নিঝুম ।
গোলাপী আভা মলিন হয়ে গেছে যেন এই কয়দিনেই , ওর মা ফ্যাকাশে মুখে শূন্য দৃষ্টিতে কোন দিকে যে তাকিয়ে আছে বোঝা যায় না ।
তবু সাহসে ভর করে বললো হেমা ' চিইনতা করেন না দিদি , যা ক্ষতি হইয়েচে সে পুরনের খেমতা কারুর নাই তবু আমারা আছি ত ,আপনাদের যখন যা দরকার বলবেন আমরা সবাই কমবেশী পাশে থাইকব ।
গলাপীর বাপ যে সম্বন্ধ টার কথা পেরাই পাকা কইরে গেচে সেটার দায় আমার বর নিবে গ ,তুমি ভাইব্যো না ' ।
কথাটা শুনেই আরো একটা ঝটকা লাগলো পরাণের বুকে , কয় কি ? গলাপীর বিয়ার সম্বন্ধ পাকা ?
কুথায় ? কাইর সইঙ্গে ? কবে হইল ?
এসব ভাইব্যার সময় একন লয় মনে পড়ত্ই চল রে হেমা, ইবার আমরা যাই ।বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে হেমাও অনুসরণ করলো ।
শ্রাদ্ধ শান্তি সব কিছু ভালো ভাবে মিটে গেছে , গোলাপী ও তার স্কুলে আসছে আজ দুদিন তাই হেমা আর ও বাড়িতে গেলো না ,পরাণের হাতে একটা রঙীন বাক্স দিয়ে বললো আইজ তুমি একলাই যাও গলাপীদের ঘর, ইটাতে একটা ভালো শাড়ি আচে কাল যখন পাত্তের ঘর থেইক্যে আশীব্বাদ কইরতে আসবে তখন যেন এই শাড়িখান পরে ..গলাপীর মারে কইয়ে দিও ।
'কাইল আশীব্বাদে পইরবে আমাদের উপহার ' কথাটা মন থেকে মেনে নিতে না পারলেও মুখে কিছু না বলে পরাণ প্যাকেট টা নিয়ে বেরিয়ে গেলো ।
যথা সময়ে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে গোলাপীর সিঁথি সিন্দূরে রাঙালো বিবেক । মা বাবার একমাত্র ছেলে ইন্দাস ব্লকের প্রধান আধিকারিক , দেখতে খুব সুন্দর । লাল বেনারসী ,লাল সিন্দূর পরে যখন গোলাপী পরাণের সামনে এলো প্রণাম করতে বুকটা ফেটে চৌচির হয়ে গেলো , তবু নিজেকে সংযত রেখে হাত বাড়িয়ে গোলাপী কে প্রণাম করতে আটকে দিলো --"তুমি আমার অতি প্রিয় , খুব কাইছের জন ,আমার জাত নীচু তুমি আমারে পেন্নাম কইরলে পাতক হইব যে " ।
এতোদিন পর গোলাপী পরাণের চোখে চোখ রেখে একটা প্রশ্ন করলো " আপনি মনে মনে আমাকে ভালোবাসতেন , তাহলে আমার বিয়ের সমস্ত আয়োজন নিজের হাতে ,নিজের টাকায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কেন করলেন "?
এখন পরানের চোখ ঝাপসা হয়ে গেলো, আর গোলাপীরে দেকতে পাচ্চি না , মুখে যেন হাজার চাবি তালা ঝুইলে গেল কুনো কতা বাইর হচ্ছে না, মাইয়্যারা সইব বুজতে পারে ?
শুধু একটুক্ষণ ইতস্ততঃ করে দুরে সরে গেলো পরাণ।
কনকাঞ্জলি দিয়ে গাড়িতে যখন বসলো নববধূ সাজে স্বামীর পাশে তখন গাড়ির সামনে হাজির হলো পরাণ ।গোলাপীর হাতে একটা রঙীন খাম দিয়ে বললো এতে জীবনের বাস্তবায়ন খুইজে পাইবে তুমি ।মন দিয়ে সংসার করো । গোলাপী রাস্তায় যেতে যেতেই খাম খুলতেই একটি চিঠি বের হলো । হাতে নিয়ে খুলে দেখলো লেখা আছে ---- , ভালোবাইসার অনেক রূপ ভালোবাইসার ফসল খুব মিষ্টি , স্বার্থান্বেষী মানুষরা বুইজবে না ,বাকীরা বুজে ...........ভাইলো থাইক্য।।