Friday, October 27, 2023

তুমি মেয়ে , মা আর প্রেমিকা - অসীম কুমার সমাদ্দার || Tumi meiye, maa aar premika - Asim Kumar Samadar || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

তুমি মেয়ে , মা আর প্রেমিকা

                অসীম কুমার সমাদ্দার



তুমি নারী , পর্দানসিনা , কোন অধিকার নেই প্রয়োগে 

খড়ির গন্ডি মেনে নাও , মাতবে না কোন হুজুগে 

শৈশবে খেলা ছিল রান্নাবাটি আর পুতুল-বিয়ের সাজ

যুবতী আর জননী হয়ে নিয়েছো সারা দুনিয়ার কাজ

সমাজপতির বিধান তোমায় বারবার করে আহত

সুস্থ জীবন ধ্বংস করে ছন্দ হয়েছে ব্যাহত

যারা ঠেলে দিল পিছনে সন্ধ্যারতির আগে 

বজ্রকঠিন রূপ দেখে শয়তানেরা ভাগে

পৃথিবীর সব সৃষ্টিতে ছিলে সকলের অগ্রভাগে 

ভিঞ্চির মোনালিসায় বা অসুর নিধনে তোমার স্পর্শ লাগে ,

সংস্কার আর বিধিনিষেধের বেড়াজাল ভেঙে ফেলে

এগিয়ে গিয়েছো বহুদূর তুমি প্রসারিত ডানা মেলে

অনাহারে অনিদ্রায় কাটিয়েছো বহু রাত

সব লড়াইয়েই জিতে করেছো বাজিমাত

তুমি মেয়ে ,মা আর প্রেমিকা হয়ে থাকো সবার পাশে 

অশুভর বিসর্জনে রয়েছো শুভর কাছে ।



Thursday, October 26, 2023

শরত - প্রদীপ ভট্টাচার্য || Sarat - Pradeep Bhattacharya || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

শরত

 প্রদীপ ভট্টাচার্য


শরতের পিঠে চড়ে

আকাশে চাঁদ উঠেছে।

বেলা শেষে প্রথম প্রেমে

হাঁসছে ষোলকলায় -------


আজ থাকবে সারারাত

ভোরের গ্রীবায়, শিশিরের শব্দে

বৃষ্টির গান বাজবে ,টুপ্ টাপ্।


শিউলি তলায় পড়ন্ত ফুলগুলো

মৃত্তিকাকে বরণ করবে মালায়।

তারপর বসন্তক্ষণ আসবে, সন্ধিক্ষণে

শান্ত সমীরণে ;পাশে দাঁড়াবে সকাল।

প্রেমিক জন্মে - তুষার ভট্টাচাৰ্য || Premik Jonme - Tusar Bhattacharya || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 প্রেমিক জন্মে

          তুষার ভট্টাচাৰ্য



দেখেছি এই ধুলোমাটি মাখা প্রেমিক জন্মে

ভালবাসার কোনও জয় নেই

পরাজয় নেই ;

ভালবেসে পেয়েছি শুধুই বৈষ্ণবীর

দু'চোখভরা অশ্রুর অভিমান

উপহার ;

তবু হৃদয়ের বাতিঘরে বাঁধিয়ে রেখেছি

 গালে টোল পড়া শ্যামল বৈষ্ণবীর

টলটলে মুখের ছবি জীবন ।

পারি - সুশান্ত সেন || Pari - Susanta sen || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 পারি

সুশান্ত সেন



মূল্যবান সময়ের অপচয়ে

রয়ে সয়ে

চিতাবাঘ উঠে পড়ল খাটে

আদ্য শ্রাদ্ধ শুরু হল ঘাটে ঘাটে।


কে আবার ভাসিয়ে দেবে তরী

কে ভালো রাধে চচ্চড়ি 

খুঁজে খুঁজে চলে যাবে বেলা

তুই কি পড়ে থাকবি ঘাটে , একেলা ?


কর গোছগাছ

জাল ফেলে ধর মাছ

দেখা যাক কে করে 

         পরের ধনে পোদ্দারী

তোমার সাথে কি টক্কর দিতে পারি।

নদীর সাথে আশ-নাই - অঞ্জন বল || Nodir Shathe aash nai - Anjan Bal || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 নদীর সাথে আশ-নাই             

         অঞ্জন বল



নদীর সাথে আশ-নাই সেই তখন থেকেই --- ডুবে যাওয়া শেষ বেলায় নদী যখন ঘরে ফেরে নক্ষত্রের ঘুলঘুলি দিয়ে আকাশ দেখে ,চাঁদের জ্যোৎস্নায় ঝিকিমিকি নদীর বুকে কানাকানি শুনতে পাবে কুলুকুলু ... শব্দ , ভালোবাসার কত কথা -- সে এক আদি অন্ত কথা। 



অরণ্য তপোবন ছিলনা যখন বনানীর সৃষ্ট ফাঁদে লতা গুল্ম হিজল করচ ছায়াবৃক্ষ চাঁদোয়ার বনে নদী যখন আড়াল খুঁজে উলঙ্গ হয় ,

অন্ধকার জড়িয়ে নেয় তাকে,

নদীর সাথে আশ-নাই তখন থেকেই

--- সে এক আদি অন্ত কথা ।


যদি কোনো এক সাঁঝে দেখা হয় কোপাইয়ের সাথে ,

জীর্ণ শীর্ণকায় নদী শাল সেগুনের ধূসর ছায়ায় মাটি ধুয়ে নেমে গেছে খোয়া ভরা পথে , দিনান্তে কবি রেখে গেছে সাধ একতারা সুরে নদীর সাথে আশ-নাই তখন থেকেই -- সে এক আদি অন্ত কথা । 



কোনো একদিন নিভু নিভু আবছা আলোতে পালক ভেজেনা এমন একটি নদীর শীতল ওম নিয়ে ফিরে গেছে রক্তিম বিকেল পলাশের ওড়নায় মুখ ঢেকে , স্তিমিত নিশ্চল নদী পাল তুলে বয়ে গেছে যামিনীর অভিসারে করতোয়া বুকে , নদীর সাথে আশ-নাই সেই তখন থেকেই  


-- সে এক আদি অন্ত কথা ।

দূরত্ব - ভুবনেশ্বর মন্ডল || Durotta - Bhubaneswar mondal || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

        দূরত্ব

          ভুবনেশ্বর মন্ডল



       কাছে যাবো বললেই যাওয়া যায় না

       মনে হয় ছুঁয়ে ফেলেছি দূরের পাহাড়

               কিন্তু দূরত্ব তো কম নয়

পাহাড়ের নীলে আবেশ আছে আছে মায়া হাতছানি

                সুন্দর ও দাঁড়ায় নীলিমা জুড়ে

           মুগ্ধতার সিঁড়ি ভেঙে নেমে যাই অতলে

কিন্তু দেখি সেখানে শুধু মানুষের কঙ্কাল

মেদ মাংস লাবণ্য-নদী মিথ্যা মরীচিকা

দেখি মানুষ দাঁড়িয়ে আছে মানুষ জন্ম ছুঁয়ে

                এর বেশি কিছু নয়

সম্পর্কের বাকল খসে পড়ে টুপটাপ বৃত্তময় রাতে

তাই কাছে যাবো বললেই যাওয়া যায় না

                 দূরত্ব তো কম নয়

হয়তো কখনো পাশাপাশি কিন্তু সমান্তরাল

                কোথাও জংশন নেই

জংশন না থাকাই হয়তো আমাদের নিয়তি !

সৌম্য-শান্তির জিয়াফত - বেদুইন পথিক || Soumya Santi Jiyafat - Beduin Pothik || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 সৌম্য-শান্তির জিয়াফত

           বেদুইন পথিক



অভ্রংলিহ চির বিদ্রোহিনীর বিজয় কেতন উড়ে পতপত

বাজে বৈজয়ন্তীর করতাল, সন্ধ্যের আকাশ সাজে আবিরে

মা এলেন বুঝি? দশভুজা মা! নিয়ে সৌম্য-শান্তির জিয়াফত

রণরঙ্গিণী মূরতি তার- আঁকা যতো দুষ্ট মতির মানস তসবিরে

শিষ্টের প্রেমে প্রেমদুর্মদ মা, আকুল তিয়াসে তার পিয়াসী মন

গাহেন মানব প্রীতির স্তোত্র তিনি, পরাস্ত করি সকল অনাচার

পরার্থেই তাহার শুভ্র শরতে এমন ঘন অভ্র-আবির বেশ-বসন

শাসন-ত্রাসন সংহার- এ যে সবি তার অসুরবিনাসী যজ্ঞাচার।

আকাশ ছুঁয়ে - পলাশ পোড়েল || Akash Chuye - Palash Porel || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 আকাশ ছুঁয়ে

পলাশ পোড়েল 



বৃষ্টি নামে থইথই আকাশে 

মন খারাপ করলে 

আষাঢ়ের কাছ থেকে কিছু স্মৃতি 

ধার নেওয়া যায় ;

নেবো , আবার ফিরিয়ে দেবো ,

গোপনে গোপনে শিরায় শিরায় 

জ্বালাবো , আবার নিভিয়ে দেবো ; 

সহমত হচ্ছিলো মেঘ ....

এতটুকু বুকের জমি , 

তাতে কতো বড়ো স্বপ্ন 

মরি হায় ... 

ছড়িয়ে গেল টাপুর টুপুর ! 

উৎসবের রাত জেগে ওঠে 

লোহার বাসরে 

রাস্তা ভাসছে সর্বনাশে , 

সর্বনাশ বেহুলার 

তবু বুকের বিস্তারে কতো

নষ্ট দিন , শোকতর্পণ । 

আবোলতাবোল : শতবর্ষ - পরাগ চৌধুরী || Aboltabol : Satabarsya - Parag Chowdhury || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 আবোলতাবোল : শতবর্ষ

                পরাগ চৌধুরী


তোমার জন‍্য দীর্ঘশ্বাস পদ্মপাতায় জলের ফোঁটা

তোমারই জন‍্য হাসি হয়ে ওঠে শরতের রোদ

তোমার জন‍্য আরও কতো কী হতে পারতো'র আক্ষেপ

এক টোপ চন্দন হয়ে উঠলে

তোমারই জন‍্য হাসিও হয়ে ওঠে

আমাদের রবীন্দ্রোত্তর চওড়া কপাল

সোজা কথায়,শতখানেক বছরটছরের হিসেব

কাক্কেশ্বর কুচকুচে যখন সময়ের নিয়মে ফেলে

উধো শেখায় কখন বয়স কমে না গেলে

শেষটায় বুড়ো হয়ে মরতে হয়...

তাই তোমায় মনে পড়লেই

সব চে' সহজে সব চে' কঠিন শাস্তিটা দিয়ে রেখেছো---

কখনও রামগরুড়ের উত্তরাধিকারী হওয়া যাবে না।

রাস্তার ছেলে - সব্যসাচী মন্ডল || Rastar Chele - Sabyasachi Mandal || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 রাস্তার ছেলে 

       সব্যসাচী মন্ডল


দ্যাখো ওরা হাসে , 

ওরা কাঁদে না, 

এ পৃথিবী করেছে অনেক চেষ্টা, 

তবুও ওরা হাসে

সমস্ত দুঃখ ভুলে। 


ওরা রাস্তায় থাকে, 

ছুঁড়ে ফেলা খাবার খোঁজে, 

ডাস্টবিনের পাশে। 

তবুও ওরা হাসে

সমাজের নিষ্ঠুরতাতে। 


ওদের জন্ম হয়েছে

মৃত্যুকে বিদায় জানিয়ে। 

ওদের বেঁচে থাকতে হবে, 

প্রতিদিনের লড়াইকে স্বাগত জানিয়ে। 

এটাই ওদের জীবন, 

হাসতে হাসতে চলে

দুঃখকে বিদায় জানিয়ে। 


মাতৃগর্ভের প্রবল নিরাপত্তা ছাড়িয়ে, 

অনিশ্চয়তার গাঢ় অন্ধকারে, 

ধুলো মাখা জীবনে, 

বেঁচে আছে ওরা। 

ওরা রাস্তার ছেলে, 

সামাজিকতা , বিলাসিতা ফেলে

মাটির সোঁদা গন্ধে

মিশেছে জীবন ওদের। 


ওরা বোঝেনা অর্থনীতি, 

বোঝেনা ওরা ক্ষমতা। 

ওরা বোঝে শুধুই

 বেঁচে থাকার সংগ্রাম, 

ক্ষুধার জ্বালায় পাকস্থলীর আর্তনাদ। 


ওরা সহজেই বয়ে যায়

সমাজের কালো অন্ধকারে। 

কারণ ওদের নেই কোন অভিভাবক, 

নেই কোন আলোর দিশা, 

ওরা শুধুই হাসে, 

কান্না ওদের কাছে বিলাসিতা। 


 

গ্রাম - অন্তরা মন্ডল || Gram - Antara mondal || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 গ্রাম

অন্তরা মন্ডল


কংক্রিট বেষ্টিত বিপর্যস্ত চিত্ত হাত বাড়ায় মুক্ত প্রাঙ্গণে

যেথা অংশুমালির রাজত্ব চলে প্রাতঃকালে,

মুগ্ধকর সুমিষ্ট আবর্তিত অনিলে আকর্ষিত হয় অন্তর-

আলপনার টানে সুসজ্জিত কুটির বড্ড মনোহর।

কর্ষণোপযোগী মৃত্তিকায় সোনার শস্যের হাতছানি

স্তব্ধ বুকের মাঝে বাউল গানের উন্মাতাল ধ্বনি,

মেঠো পথে আনাগোনা রংতুলির চিত্রের ন্যায় মর্মস্পর্শী

পথপার্শ্বস্থ বটগাছ আজ বহু সুখ-দুঃখের সাক্ষী।

লাল-নীল-হলুদ বনফুলের মধ্যে ভ্রমেরের গুঞ্জন

দূর্বা ঘাসের ডগায় ভোরের শিশিরের অপূর্ব সুঘ্রাণ,

প্রবাহিনীর স্বচ্ছ সলিলে ফুটে ওঠে নিজের প্রতিচ্ছবি

বহু আক্ষেপ পিছনে ফেলে এখানেই আসল শান্তি।

দিগন্তরেখা বেয়ে অস্তগামী সূর্যের রঙের খেলা,

ফিরতি রাখালের বাঁশির মধ্যে ফুটে ওঠে ব্যাকুলতা,

ক্ষীণালোকে লালপেড়ে প্রত্ন গরদ পরনে প্রদীপ্ত বর্তিকা

শহুরে কোলাহল পিছনে ফেলে আহ্বান করে নীরবতা।।

ভোলার মহালয়া শোনা - নিখিল মিত্র ঠাকুর || Volar Mahalaya Sona - Nikhil Mitra Thakur || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 ভোলার মহালয়া শোনা

       নিখিল মিত্র ঠাকুর


শিউলি ঝরা ভোরের বেলা,
শুনবে মহালয়া,
রেডিও খুঁজে বেড়ায় ভোলা,
ঘরময় চরকি দিয়া।

গিন্নি   ঘুমায়  নাক  ডাকিয়া,
টেনে তোলে ভোলা,
বলেন   গিন্নি   দাঁত  খিঁচিয়া,
মাচায় আছে তোলা।

নামায়  ভোলা  ধূলা  ঝেড়ে 

সারা বছর পরে,

রেডিও  শুধুই  বলে কে রে?
আমায় হাতে ধরে!

আগুন হও এবার - অঞ্জনা ভট্টাচার্য্য || Agun hou ebar - Anjana Bhattacharya || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 আগুন হও এবার

    অঞ্জনা ভট্টাচার্য্য



নরম হাত অবুঝ মন পূর্ণিমার চাঁদ

লোলুপ দৃষ্টির মারপ্যাচ বুঝে কি!


অমাবস্যার রাত জাগা পাখি দুটো

ডানা ঝাপটায় । শিকার হাতছাড়া


চিল শকুনের রাজ ।

চোখে এক পক্ষকালের হিংস্রতা


হংসবলাকার দলে মিলে যাও ।

ও গো মেয়ে যদি বাঁচতে চাও ।


শেষ হওয়ার আগে দপ করে জ্বলে ওঠা

প্রদীপের শিখা হয়ে ওঠো এবার


মেয়ে এবার আগুন হও , জ্বলে ওঠো

জ্বালিয়ে দাও শয়তানের আস্তানা।