Sunday, July 25, 2021

আবদুস সালামের দুটি কবিতা

 চাঁদ সওদাগর এবং


লোনা সময়, তরী ডুবে যাচ্ছে সমুদ্রে

সীমাহীন ঔধত্য টালমাটাল

অসমর্থিত অস্তিত্ব ভেঙে পড়ছে ক্রমশঃ


অস্তিত্বের স্বরলিপি কেড়ে নিচ্ছে মনসা

প্রেমের প্রশ্রয় পেতে প্রযুক্তিগত প্রকৌশল প্রস্তুত

বাতাসে মিশে যায় লবনাক্ত নিঃশ্বাস

একটু একটু করে লুন্ঠিত হচ্ছে বিনিদ্র অস্তিত্ব


অস্তিত্বের লড়াই চলছে বিনম্র রজনী তে

সন্তান সন্ততি আজ জটিল আবর্তে মূহ্যমান

দৃঢ়চেতা চাঁদ সওদাগরের আকাশে নেমে আসছে অমাবস্যা


জটিল অস্তিত্বের সংবেদনশীল ঘুমের নাম সাদা মেঘ

অনবদ্য আক্রোশে ঢেলে দেয় সংবেদনশীল বিষ

একমুঠো পূজা পেতে অসম লড়াইয়ের মাঠে বুনে দিলাম আক্রোশ

________________________________


দৃশ্য পট


শূন্যতার ধূসর পথ

দীর্ঘ সময় যাপনে পূর্বপুরুষেরা কাব্যিক হয়

আরব্য রজনীর নাবিকেরা বাজায় বিচ্ছেদের সুর

করোনার ঢেউয়ে ভাসছে মূল্যবোধ সংঘাত মেনে হাত ধুয়ে নিয়ে সমুদ্রের ঘাটে


অসহায় মা বাবা আজ প্রবন্ধ যাপনে বাধ্য স্মৃতির প্রত্নপ্রান্তরে লিখে রাখি ধ্রুপদের স্বরলিপি

ভালোবাসার বাগানে শোভা পায় কুয়াশার ফুল


পলিথিনের বিছানায় শুয়ে আছে ছাদহীন শহর

রাত ঘুমিয়ে পড়ে শূন্যতার বালিশে

  শূন্যতা ডুগডুগি বাজায়


সার্কাসের জোকার সেজে মাতিয়ে রাখি আসর

বিদায়ের ঘন্টা বাজে

শহর জুড়ে পড়ে থাকে অসম্পর্কের রোদ বুক পকেটে সাজিয়ে রাখি চৈত্রের দুপুর

মীনা সাহার দুটি কবিতা

 রাত্রির সংলাপ


ঘরে ফেরার বিপন্নতা 

বুকের ভিতর হু হু করে ওঠে...

এক যুদ্ধকালীন রাত্রির ভিতর --

 বিষণ্ন রাত্রির ভাষা ...

     

পৃথিবীর নক্ষত্র শহরগুলো কেমন বিষণ্ন দৃষ্টিতে ছেয়ে

দিনেই নেমেছে রাতের আঁধার...

সন্ত্রস্ত বুকে কেবলই গভীর আর্তনাদ --

ওই বুঝি এলো সে...

তরাসে বুকের ভিতর দপ করে ওঠে --

প্ৰজ্জ্বলিত দ্বীপের নীচে এক কৃষগহ্বর...


যে বন্ধু চলে গেল এই মাত্র...

জাম-জরুলের ঘ্রাণ নেবে না সে আর 

প্রিয় আমলকি গাছটির নীচে দাঁড়িয়ে নদীর চলমান কথা ...

বৃষ্টির শব্দ শোনার বাসনায় যাঁর --

বৃষ্টিতে ভ্রুক্ষেপ নেই আর 

কবিতার শরীর জুড়ে --

শুধু রয়ে যাবে খড়ির দাগ ...

আর্দ্র হল দু চোখের পাতা--

যে বন্ধু চলে গেল এইমাত্র 

কেবলই বিষণ্ন রাত্রির শোক ....


______________________________________


  ক্রন্দসী 


রেখাচিত্রের অবয়বে এঁকে রাখা জন্মান্তর ....

থমকে যাওয়া আত্মার অ্যানাটমি ঘেটে ঘেটে --

এক অলৌকিক দরজায় নতুন অক্ষর সাজাই


রাত্রিগত কিছু শোক ... কিছু ব্যাথা ...

ঘুন পোকা বিষয়ক হিমস্নান সেরে 

এক জাগ্রত নদীকথার মত জ্যোৎস্না প্রেম ...


মুহূর্তের শূণ্যতায় ...

বিষন্ন আঁধার মাখা সান্ধ্য শিবিরের --

এক জীবন থেকে অন্য জীবনে ...


থমকে যাওয়া আত্মার স্বর

স্পর্শবর্ণের আত্মিক সুপ্রভাতে --

ক্রন্দসী হয়ে ওঠে ...

প্লাবিত জলে ভেসে যায় মন ...

স্বপ্না বনিকের একটি কবিতা

 শেষ দিনের প্রতীক্ষায়


মনের গভীরে যে শুয়ে আছে

   তাকে জাগানোর স্পর্ধা নেই

আছে শুধু স্মরণ-মনন

 ঘুমন্ত চেতনায় অকাল জাগরণ

বছর গড়ায়, পাক ধরে চুলে

     টুকরো কথার মিষ্টতা

ছেলেবেলার দুষ্টুমির স্নিগ্ধতা

  কখন হারায় বয়সের কোলে। 

এখন শুধুই দিন যাপন, 

  শৈশবের প্রলাপের মতো, 

বল্গাহীন হরিণের ক্ষিপ্র পায়ে

  শুধুই ছোটাছুটি অশ্রুমোচন। 

তবুও মনে অপার শান্তি

 বাঁধভাঙা প্রাচীর প্লাবন

প্রতীক্ষা শুধু শেষের দিনের

   স্থির-নির্বাক দেহের ভ্রান্তি। 

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়ের দুটি কবিতা

 ঠোঁটে জিহ্বাতে তোমার নাম


আমার ঘামের ছন্দ পড়েছে

তোমার ভাসা পৃথিবীর বুকে

ধুলো আর দূষণ থেকে মুক্ত করি নিজেকে

শরীর নিয়ে তোমার সামনে দাঁড়াবো বলে

তোমায় স্নান দিই ভরা রোদ্দুরে

তৃতীয় বিশ্বের সমস্ত যানজট পেরিয়ে

তোমার কাছে ধরা দিই শিশুর মতন

ঠোঁটে জিহ্বাতে তোমার নাম

শ্বাসনালী, গলায় মুচড়ে ওঠে মরুভূমি

শরীরে ভেজা ঘাম।। 

____________________________


তোমার আমার প্রথম সকাল


এই হতচ্ছাড়া ঘরে লন্ডভন্ড তুমির সাথে

আমার এক সংসার, 

জানলার, টেবিল, বইয়ের তাকে

তুমি নামের ধুলো

উদাসী মনে খিদের অনুভূতি নেই

সকাল থেকে প্রচন্ড রোদ

বোতাম ছেঁড়া জামার ফাঁকে 

উঁকি দিয়ে যাচ্ছো তুমি

তোমার আমার প্রথম সকাল

মুখ লুকোচ্ছে হারানো দিনে

বর্ষা ছাড়া ডাকবো কাকে

আমার ফুটো টিনে।। 

সুস্মেলী দত্তের দুটি কবিতা

 বসন্ত


চকিতে মন ছোটে কী হবে এতো কাজ

ব্যস্ত নিশিভোর দাপুটে মন্তাজ


জীবনে ধক ধক সহ্য সন্তাপে

যে আছ বিনিময়ে আ মরি কার পাপে


দে খুলে হিল্লোল ব্যাপক বালি চোরা

ভাঙছে অর্গল অযুত আনকোরা


যাকিছু শেষ শুরু আজ তা তার্কিক

স্বপ্নে বেনোজলে হিসেবি সার্বিক।

_____________________________


যাপন তত্ত্ব


মুখ মরেছে সুখ বেঁচেছে পাথরসোনা বাটি

ঈশ্বরী কে দু'ঠোঁট জড়ো আদুরী শীতপাটি


আরাম ছুঁয়ে ঝগড়া করে সাতশালিখি ঝাঁক

সর্ষেদানা মটর ছোলা ঘৃণ্য ঝোড়ো কাক


রাজার বাড়ি প্রজার বাড়ি হতোস্মি হা দেশ

আয়রে ভোলা চড়চাপাটি সুদূরে জম্পেশ


রূপকথারা রইল বসে সূয্যি নামা পাটে

চাতকবারি পানসুপারি তেষ্টা বুকে ফাটে


শব্দহারা গোত্রহারা সে কোন বাড়ি ঘর

ঘাসবিছুটি বরাত পেল দুষ্টু বাজিগর।


গোবিন্দ মোদকের দুটি কবিতা

 দুলেপাড়ার দুগ্গারা (১)


জলভরা মেঘ বিদায় নিতেই 

শরতের জানান দিয়ে নদীর ধারে 

                    ইতি-উতি উঁকি দেয় কাশফুল।

শিউলির কাণ্ড-শাখা-প্রশাখা জুড়ে তখন 

                    তুমুল ব্যস্ততা। 

ফুল ফোটাতে হবে যে !

ওদের ব্যস্ততাকে সম্মান জানিয়ে

দুয়ারে এসে দাঁড়ায় শরৎ-বেলা।

রোদ্দুরে লাগে সোনারঙের ছোঁয়া।

চোখের আরাম আনে আশমানি আকাশ। 

পরিযায়ী মেঘের দল ভেলা চড়ে আকাশ ভ্রমণে। 

মা-দুগ্গা আসছেন যে !

ঘরে ঘরে মা-জননীদের তাই কতো প্রস্তুতি ! 


কিন্তু দুলেপাড়ার দুগ্গাদের জীবনে 

                      কোনও শরৎ থাকতে নেই।

ওদের দু'বেলা বাবুর-বাড়ির কাজ থাকে। 

লাঞ্ছনা থাকে। অপবাদ থাকে। 

লোভী কামার্ত চোখের কুৎসিত ইঙ্গিত থাকে। 

ওদের জীর্ণ পোশাকের ধারে-কাছেও 

শরৎ আসতে পারে না। 

তবুও ওদের কানে আসে ঢাকের আওয়াজ, 

পুজোর মন্ত্রোচ্চারণ। 

কিন্তু বাসন-মাজার শব্দের আড়ালে 

ঢাকা পড়ে যায় আবাহনের বাজনা।

___________________________________


দুলেপাড়ার দুগ্গারা (২)


দুলেপাড়ার দুগ্গাটা নাকি মরেছে !

গলার দড়িটা বা ওর পরনের আধময়লা শাড়িটা 

মৃত্যুর কারণ জানাতে পারে না।

তাই বাবুদের বাড়ি গতর খাটানো মেয়েটার 

গতরের ময়নাতদন্ত হয়। 

ইস ! পেটে নাকি বাচ্চা ছিল পাঁচমাসের !

সব্বোনাশ ! বলে কি !

ঢেউ জাগে দুলেপাড়া জুড়ে। 

সে আগুনের আঁচ ছড়ায় বাবুদের পাড়াতেও। 

তারপর সবই নিয়মমাফিক চলে।

বাবুদের বাড়ি থেকে একথলে টাকা 

এসে পড়ে দুগ্গাদের ভাঙা টালির চালে,

দুগ্গার বাবার পুরোনো লুঙ্গিতে, 

আর আবাগীর মায়ের হাতের লোহা-পলায়। 

সব ঢেউ ক্রমে নিস্তরঙ্গ হয়ে যায়।

যেন কোথাও কোনও কিছুই ঘটেনি।

দুলেপাড়ার আর এক দুগ্গা নাকি 

এখন বাবুদের বাড়িতে কাজে যায়।

তাপস কুমার বরের একটি কবিতা

বনলতা সেন


মোরে করেছো

বিরহী বনলতা

শ্যাম বাঁশিতে।


যমুনা তীরে

দেখেছি শুধু তারে

প্রেম নয়নে।


কোথায় গেলে

পাবো রূপসী তোরে

পরীর খোঁজে।


কৃষ্ণের সখা

অভিসারে সেজেই

আজও দূরে।


কখনো তারে

দেখেছো কি নয়নে

তোমার স্বপ্নে।


বাঁশির কন্ঠ 

বোবা হয়ে পড়েছে

রাধিকা স্বপ্নে।


মোরে করেছো

বিরহী পাগলিনী

রূপ সাম্রাজ্যে।

  

শ্যামল রায়ের একটি কবিতা

 কবিতার জন্যে রোদ্দুর


এসো হাত বাড়িয়ে

ছুই না তোমায়!

মন রাঙিয়ে ছুই।

বৃষ্টি আসুক

সৃষ্টি জুড়ে

মাটির কাছাকাছি

নতুন এক পৃথিবী।।

তোমায় আমি ভালোবাসি

তাইতো চেনা পথে হাটি!

সুখে-দুখে প্রলেপ লাগাই

তুমি যে শুধুই জুঁই আর জুঁই ।

ইচ্ছে করে রোজ কাগজে

রং তুলিতে আঁকি তোমার মুখ

এসো হাত বাড়িয়ে বলো

শুধুই একটি কবিতা পাঠালাম 

পাঠালাম কবিতার জন্যে রোদ্দুর।।

জয়তী দেওঘরিয়ার একটি কবিতা

 পরিহাসের পরীক্ষার্থী


তোমরা শুনলে না তো!

যেদিন আমার ভাগ্য নির্ধারণের

পদ্ধতি নির্ণয় করলে তোমরা,

আমি বার বার বলতে চেয়েছিলাম 

ওটা হতে পারে না,ও ভাবে হয় না।

আমি প্রস্তুত রণক্ষেত্রে নামার ।

তোমরা শুনলে না!

তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন 

চুরমার হয়ে গেল মুহূর্তেই। 

জীবনের প্রথম বড় যুদ্ধক্ষেত্র

অজ্ঞাতই রয়ে গেল। 

সেদিনও মানতে পারিনি,

আজও পারছি না।

কিন্তু এটা বুঝেছি আমার মানা

না মানাতে কিছুই যায় আসে না।

আজ আরও এক বড় প্রহসনের মুখোমুখি।

যুদ্ধক্ষেত্রে না গিয়েও জয়ের মুকুট শিরে।

কিন্তু এ কেমন জয়!

যে জয়ে শুধুই বক্রোক্তি ও ব্যঞ্জনার ঝনঝনানি।

হয়তো এ জয় কাঙ্খিতই ছিল 

তবু নেই কোনও উচ্ছ্বাস, আনন্দ 

নেই আত্মীয়-স্বজন-প্রতিবেশির শুভেচ্ছা,

সংবাদ শিরোনামে নেই কোনও কৃতীর কৃতিত্ব। 

যেখানে হয়তো হতে পারতো আমারও ঠাঁই। 

বদলে জুটলো শুধুই পরিহাস!

আর এই পরিহাসই রচনা করবে

আগামীর ইতিহাস।

সৈয়দ শীষমহাম্মাদের একটি কবিতা

 মাঝি 

     

তুমি এতো মিষ্টি কেনো ভাবছি অনেক্ষন 

দিব্য দৃষ্টি বলে দিচ্ছে কারণ বিলক্ষণ,

ভব সিন্ধু পাড়ি দিতে তুমিই সেই মাঝি 

সে কারণে তোমায় এতোই মধুর বুঝি l

মায়া বিদের দুটি কবিতা

লতহুন বছহর


হ্যঁ দ্যাখো গো পুপাইহের ব্যাপ,

অ্যামহাদের নুনুটা শুদহুই বিড়বিড়াচ্ছে ।

উহাঁর মাতহ্যাতে কিসহের এত্তো চ্যাপ,

  ডরহেতে আমহার     গা-হ্যাত-প্যা থরথরাংচ্ছে ।


কাখ ভোইর থ্যাইখেই বুলেহেই চল্যাছেক

সখক্যাল সখক্যাল ভ্যাত খ্যাবোক,

দপহরে একডুন জিরাংয়ে, বল্যাছেক

মাইজ রাতহে ছ্যাঁদডাতে য্যাবোক ।


বলহি" অগো "তুমহি কি কানহে কাল্যা,

ছ্যেল্যাডাকে লিশহিতে প্যাইল্যাই তো।

অ্যামার অমহন আল্যাভোল্যা ছেল্যা,

মাথহাডা এখেবারে বিগড়্যাইয়্যা য্যাইল্যাই তো।


হ্যায়রে অ্যামার সাদহের লয়হন মনহি,

ভজহার সঙেতে কুথহা কয়ছিলক গো।

সাইথ-এ ছিলক ও পাড়হার ননহি,

ভ্যাল্যো কয়রে উদযাপবে বুলছিল্যো গো।


শুহুন ক্যানহে নুনুর ম্যা,

অ্যামরা দুজনহাতে এখেবারে মুরুখু ।

তু-বড় ভাগ্যবতহি পুপাইহের ম্যা,

অ্যামাদের আবহ্যার কিসহের দুকখু।


ইংলাজহি লতহুন বছহর প্যালবেক,

হ্যাসি - খুশহিতে ভুরা উদহের অঙগো।

নাচহা-গানহা কুরবেক, আলহো জ্বালহাবেক,

অ্যায় ক্যানহে, অ্যামরাও উদহেরকে দেয়্য সঙগো । 

___________________________


স্যাড়হে তিন হ্যাত


অ্যামরা হুলাম লীঁচু ম্যানুষ,

     গতহর খাটাঙ খ্যায় ।

ছুটো-বড়হ সপহন চোখি

          আঁকতি ডর প্যায় ।


নেকাপড়হা শিইখ্যা, বুড়হ অফিছার

       ইয়া-ইয়া গাড়হি বাড়হি ।

পুরিচয় দিতেক মানহে লাগবেক,

          বুলবেক চাকর হামারহি ।


আজা-উজহির ন্যাতা - মুন্ত্রী

      যুতো অ্যাছেক চাকহরীজেবহি      

অ্যামাদের পানহে ভেলেই থাকহে,

       ফোসল ফলানুর দাবহি ।


য্যার যতক অ্যাছেক ধুন

       অ্যাকাশখ্যান ছুঁতি চ্যায় ।

 অ্যামার অ্যামার কুরেই মরহে,

       লিজের কুছুই লয় ।


লিতুই আনহি লিতুই খ্যায়

        এইডা আমাগো ধারহা।

কূঁড়হে ঘরহে সুখহে থাকহি

          খ্যাতেই বুনবোক চারহা।


যাবক যখুন মুলহুক ছ্যাড়হি

     সঙেতে ছেঁড়হা কাঁথহা ।

খিলা ঘরহের খিলা ছিলক

    সিডাই সুথ্য কুথহা।


সগই থাকবেক ভুবহে পড়হে

           একডা কুথাই খাটহি।

লিজের বুলতে একডাই জিলিস

        স্যাড়হে তিন হ্যাত মাটহি ।

সব্যসাচী মাহাতোর একটি কবিতা

 বিরাম


জীবনটা লুড়োর ছক্কার মতো পাল্টাচ্ছে ,

কখনো ছক্কা আবার কখনো পুঁট।

আমার বেঁচে থাকার উপন্যাসে বিরাম চিহ্নের অভাব পড়ে গেছে ,

আমি উন্মাদ হয়ে গেছি 'কমা' আর 'প্রশ্ন চিহ্নের' জন্য

তাই আমার আর ফড়িং ফড়িং খেলা দেখা হয় না।

মোঃ নাঈম হাসানের একটি কবিতা

 এই শহর


আজ নতুন করে একটি শহর দেখার প্রতিক্ষায়

বড্ড ভালো লাগে এই শহরে...

ভালো লাগে শহরে প্রতিটি মুহূর্তে চলাচল করতে

নতুন করে নতুন রুপে শিখি সবসময় এই শহরে...

প্রতিটি পদক্ষেপ নতুন নতুন শিক্ষা দেয় আমায়....

কখনো কাঁদায়, কখনো হাসায়, কখনো বা আবেগময় করে তুলে...


এই শহর,বড় নিষ্ঠুর শহর

এখনে কেউ কারো নয়..

সবাই তার নিজ স্বার্থে চলে..

এখানে গরিব না খেয়ে মরে

বিত্তশালী টাকার পাহাড় গড়ে....

রজনী এখানে দিবার মতো

খুন ধর্ষণ, রাহাজানি লন্ঠন প্রতিনিয়ত চলে

এখানে কেউ কারো জন্য না,, 

সবাই তার পরিবার, সংসার নিয়ে নিজে নিজে ব্যস্ত....!!



এই শহরে, টাকা থাকলে বন্ধুর অভাব হয় না

সকাল থেকে রাত্রি কখনো অযত্নে থাকতে হয় না তাকে

এই শহরে সেই অসহায় যার মাথা গুজানোর মতো শেষ সম্বল টুকু নেই.. .

তাকে শিকার হতে হয় নানা লালচনা- বঞ্চনা 


এই শহরে, কেউ সুখী নয়

সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে অসুখী 

সবাই নতুন জীবনের প্রত্যয়ে ছুটে চলে নিজের গতিতে

তাতে কার কি হলো, কে কোথায় কিভাবে থাকল সেটা মুখ্য নয়

নিজেকে সাজিয়ে গুছিয়ে নতুন দিগন্তে পৌঁছানোর দৃঢ় প্রত্যয়ই এই শহরের লক্ষ্য....!!