Sunday, October 3, 2021

কবি নবকুমার -এর একটি কবিতা

 লাটাই এর ঘুড়ি 



মাইথনের ছবি দেখে আঁতকে উঠেছ ।

জলজ শিল্পের কারুকলায়

ভো-কাট্টা ঘুড়ির মতো 

ভেসে গেছ অলীক তুফানে-


অথচ একদিন গভীর অন্ধকার রাতে

তোমাকে ডেকেছিল মাইথন

হৃদয়ের কবাট খুলে

দেখাতে চেয়েছিল ভালোবাসার স্বরলিপি 

তখন বাঁধা তুমি লাটাই এর ঘুরন্ত বেড়ায় 


একদিন থাকবেনা ঘুড়িটি

লাটাই ও থাকবেনা - সূতো-

 

কিন্তু মাইথন থেকে যাবে 

জলীয় বুকে বিমূর্ত শিল্পের মতো। 

কবি রাজা দেবরায় -এর একটি কবিতা

 আদর্শের আরেক নাম বিদ্যাসাগর

 


বিদেশি অনুকরণের প্রতিবাদ হিসেবে বিদ্যাসাগরের ছিলো ধূতি-চাদর এবং চটি। কোনো অবস্থাতেই তা পরিত্যাগে রাজি ছিলেন না তিনি।


চটি বা দেশীয় জুতো পরে এশিয়াটিক সোশ্যাইটিতেও ঢোকা বারণ বলে দারোয়ান তাঁকে আটকে দেবার পর সোশ্যাইটির সহকারী সম্পাদক খবর পেয়ে বিদ্যাসাগরকে ভেতরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তিনি যাননি। তাঁকে জাতিগত মর্যাদার অপমান অনুভবে সোশ্যাইটির কাছে কৈফিয়ত চেয়েছিলেন। কোনোদিন আর এশিয়াটিক সোশ্যাইটিতে যাননি।

কবি বদরুদ্দোজা শেখু -এর একটি কবিতা

 চোখ দু'টো 




যত্তো দোষ এই চোখ দু'টোরই , চোখে নাই সংযম

তাই তো দেশে হচ্ছে এতো খুনধর্ষণ হর্দম ।


চোখের মধ্যে লোভ লালসা 

বাড়ছে ঘনঘোর তমসা

খোশ মেজাজে পুরুষ-পশু হচ্ছে দস্যু বেদর্দি বেরহম।


ঘরে ঘরে নেট -দুনিয়ায়

পর্ণো এবং পরকীয়া

বে-আব্রু বেলেল্লাপনায় লোমহর্ষক খুল্লম খুল্লম ।


কারে দণ্ড দিবে তুমি ?

দুষ্ট হচ্ছে মনোভূমি

নারী পুরুষ উভয় লিঙ্গ ডিজিট্যালি সবাই বেশরম ।


চোখের যাদু অসীম অপার

অনুধাবন করো একবার, 

 বন্ধু, চোখ মুদলে জগৎ আঁধার, চোখ খুললেই মনোরম ।


পর্দা টানো চোখে চোখে

ক্ষমতা- মদমত্ত রোখে ,

দুর্বলকে প্রবলের থেকে রক্ষা করো ঈভের আদম ।

কবি আশীষ কুন্ডু -এর একটি কবিতা

 আমি আছি




আমি টুকরোয় আছি

তবু সুতোর টানে মন

জীর্ণপাতার মতো ঝরে যাবার আগে !


বৃষ্টির ফোঁটা এক বুক

আমি অসম্পৃক্ত রসায়ন

কিছু ছন্দে, কিছুটা বিচ্ছিন্ন-- নানা ভাগে! 


আমি সুখে দুঃখে ভরা 

মেঘ আসে যায় রঙমেলান্তি খেলা

ঝড় আসে তুচ্ছতায়, আমার পালক খসে। 


আমি আছি ব্যস্ততায়

ব্যথাময় কথা শুনি গাছের পাতায় 

পথ চলে নীরবে, নীরবতা কথা বলে। 


আমি আছি পূর্ণতায়

মগ্ন আকাশ ,সোনা রোদ শিউলিতলায়

মাটির গন্ধ ভাসছে,শিশির ভেজা মাঠের। 


আমি অনাদি শাশ্বত

নিরাকার অপ্রত্যক্ষ থেকে সাকার বাহুল্যে

কাল থেকে ব্যপ্তি উদ্ভাসিত তমসায়।

কবি আবদুস সালাম -এর একটি কবিতা

 বিকল্প আমি 



আমার প্রজন্ম আমার অস্তিত্ব ছিঁড়ে ফেলবে দেখে নিও

প্রতিদিন টুকরো টুকরো বেঁচে থাকা গুলো রক্তাক্ত হয়

নিহত জানলা দিয়ে ঢুকে পড়ে চাঁদের রোদ


সুখের রজনীতে ঘষাঘষি দুঃখগুলো বিস্ময় চিহ্ন আঁকে

কালের প্রবাহে সেঁকে নিই ভরসা

অন্তত না মরার তীব্র শোক এখন আর গ্রাস করেনা


বারান্দায় নেমে আসে নীরব ভাষার সংকেত

এভাবেই নীরব আকুতি গুলো বৃদ্ধাশ্রম এর বারান্দায় রঙিন হলে পরবর্তী প্রজন্মের অমিকে খুঁজে পাই

কবি মহীতোষ গায়েন -এর একটি কবিতা

 মুখোশহীন মানুষ



মায়াবী পূর্ণিমা রাতে অমলিন জোৎস্নার

আলোয় স্নান করে আমরা ফিরে আসছি;

আর ভয় পাওয়া নয়,মাতাল ভৈরবী সুর

আর ঠেলে দেবে না যুগন্ধর অন্ধকারে।


ভোরের কুয়াশা সরে যাচ্ছে,সরে যাচ্ছে,

হৃদয়ের স্বপ্নজাল,হলুদ পোড়ার মত দুপুরে

ছেলেটা,মেয়েটা চলে গেল রাঙামাটির পথ ধরে

খোয়াই নদীর ধারে পড়ে থাকে রোমান্সের মমার্ত।


ঝরাপাতার গান শাল মহুয়ার ডালে-ডালে,

শাখায়-শাখায়;সবাই আমরা চলে যাচ্ছি চেনা পথ

থেকে অনেক দূরে,পলাশ গাছে ইষ্টিকুটুম ডেকেই

চলেছে,মাদলের সুর বেজে চলছে অনাবিল।


গোধূলির বুক চিরে চলে জীবনের রেলগাড়ি

শালপাতায় সিঙ্গাড়া আর গরম চা-এর কাপে

পড়ে দীর্ঘনিশ্বাসের হাওয়া;এখনও রক্তের মধ্যে

বেঁচে আছে কৃষ্টি,অকৃত্রিম প্রেমের নন্দন মাধুর্য।


ঘুমের রাজত্বে অবলীলায় বিচরণ করে স্বপ্নের

ফেরিওয়ালা;হৃদয়ের আঙিনায় অপেক্ষারত সুখ,

যাবতীয় শান্তি,আলো-আঁধারি রহস্যের হাতছানি,

অম্লান আলোয় পথচলার সুতীব্র অঙ্গীকার স্পষ্ট।


কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ার আগে সচেতন হয়ে

ওঠে আমাদের বিবেক;জীবন তো একটাই,আমরা

মহাশূন্যে বিচরণ করি,তবুও পাখিরা গেয়ে ওঠে

গান,ফুল ফোটানোর আনন্দে মুখরিত চরাচর।


নীলিমায় নীল ঢেকে যাচ্ছে,আবর্ত ছিঁড়ে বেরিয়ে

আসছে মুখোশ মানুষ,শুদ্ধি-মন্ত্র উচ্চারিত হলো...

মন্দিরে,গীর্জায়,মসজিদে বেজে ওঠে মাঙ্গলিক সুর

এই প্রথম আমরা মানুষ হলাম, মুখোশহীন মানুষ।

কবি চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী -এর একটি কবিতা

 নারীকে যেন দিতে পারি সম্মান



দমে ফুত্তি লাগছে এ বছরটায় ধান হয়েছে কুদ্যে

লাচছে ফুলমণির মতো আমন ধান বহাল কিবা বাইদ্যে।

দেখে পদে খেতের গতর হুদকে উঠছে আবট পরাণ

মাতায় দিয়েছে উঠান গুলান শিউলি ফুলের সুঘ্রাণ।

বছর বাদে দুগ্গা পূজা কেবা না পাউস মাছের মতন মাতে

ফুলমণি দিয়েছেক বলে রঙিন চুড়ি পরবেক দুহাতে।

এইতো কমাস আগে এখন যায় নাই লতুন বিয়ার গন্ধ

দমে খেয়াল রাখে বউটা যেমন ফুল ভমরার দ্বন্দ্ব।

দেখতে দেখতে আলেক দুগ্গা পুজা সুখ ধরছেক লাই বুকে

আলপনা আঁকে তুলসি তলায় ফুলমণি দিলেক শাকটা ফুঁক্যে।

লাল শাড়িরর বেশ মানায়ছে হাটছেক নাই নজর

গুড়ের মিঠাই করতে করতে আনন্দে করছে বদর বদর।

দুগ্গা থানে দেখাতে যাবেক প্রদীপ যাত্যে হবেক সাথে

সারা রাতটা ঘুরতে হবেক রাখ্যে হাতটি হাতে।

আমি কিসের কমতি যাব ঘুরব টেকের টাকা ভাঙ্যে

পুরাই দিব মন বাঞ্ছা তার পেম সুহাগে রাঙ্যে।

তাইতো বলি পেম সুহাগে

থাকি যেন সারাটা জীবন ধইরে

হৃদয়েতে হৃদয় দিয়ে সুখে যেন যায় মা উঠান ভরে।

হে মা দুগ্গা রাখিস লজর যেন নারীকে দিতে পারি সম্মান

সুখটা আনে ভরাই দিব ফুলমণি আমার পরাণের পরাণ।

কবি উদয়ন চক্রবর্তী -এর একটি কবিতা

 ধারাবাহিক সুখের তাড়নায় 

 


বিষণ্ন ঘরে ফেরা পাখির 

শরীর থেকে খসে পড়া পালোকের

যাত্রা পথ ঠিকানা হীন 

উত্তাপ হারানো বিষাদ বয়ে নিয়ে যায় নিরুদ্দেশে বন্ধনহীন বাধ্যতায়

ক্ষুধার্ত প্রাণও রাস্তা খুঁজে মরে সংগ্রহের

অছিলায় গন্তব্য নরকের হলেও।

এখন আর শুধু মুখ নয় সারা শরীর 

স্বচ্ছ খোলসের আস্তরনে ঢাকা

যতটা স্বচ্ছ ততটাই গভীরতা অন্তরালের 

প্রশ্নহীন প্রাজ্ঞ শামুকের নীরবতা এগিয়ে যায়

কচি পাতার হৃৎপিণ্ড নিংড়ে আগামীর কাছে

নিরবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিক সুখের তাড়নায়।

কবি সুব্রত মিত্র -এর একটি কবিতা

 বৈষম্যের ব্যভিচার



সান্ধ্য রজনীর কোলাহল অর্থের আলো জ্বেলেছিলো---

সভ্যতার বিদগ্ধ জ্বালাতন উশৃঙ্খল জীবন গড়ে

মেহনতি প্রাণ ছোটে আর্তনাদ বেঁধে পেটে

ভালোবাসা পথ হারিয়ে চলে গেছে। 


এই ধনী সম্প্রদায়ের মানুষগুলো কোনদিনই সমাধান খোঁজেনি তার।


কেনইবা খুঁজবে? 


ওরা জাত বেঁচে ভাত খায়;

ওরা চাকরি আর সরকারি সুযোগ-সুবিধা---

পাওয়ার জন্য নিচু জাতে নাম লেখায়;

আবার চাকরি পেয়ে গেলেই---

অর্থবান হয়ে বড়লোক সেজে ঘুরে বেড়ায়

তাদের এই নেশাগ্রস্তের তাড়নায় তারা পুনরায় জাত পাল্টায়,

চূড়ান্ত নিকৃষ্টতম নিম্ন মনোবৃত্তির উদাহরণ---

গায়ে মেখে রেশনের লাইনে দাঁড়ায়। 


সমাধান কবে;কখন;কোথায় আসবে কে জানে?

জাতি;উপজাতি;মহাজাতির সার্বিক নির্ণয়---

কিভাবে হবে না জানিলে তাহার মানে?


আমি প্রশ্নবোধক চিহ্নের মতো খাড়া দেওয়াল হয়ে রয়ে গেলাম।

নেতা;সরকার;আর এই ---------------

সমাজের উচ্চবর্ণের মানুষদের কীর্তন শুনলাম,


উঁচু আর নিচু কোনো জাত হয় নাকি?

বৈষম্য যদি করতেই হয় তবে একটাই হোক ----,

তা হলো হতদরিদ্র, ধনী ও গরিব।

মানব সমাজে এর বাইরে নেই কোনো জাত বাকি।

কবি সত্যেন্দ্রনাথ পাইন -এর একটি কবিতা

 শ্রাবণের বৃষ্টি




শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে

          পড়ুক ঝরে

আমাদের ফুল ফোটে না ফল ফলে না

            অকাতরে। 


জল জমা মাটির মাঝে আকুল করা 

            দুটি নয়ন

শিউলি তলায় আনাগোনা ফুল কুমারীর

            ব্যাকুল চরণ। 


কে যেন গো ডাকছে শুনি ব্যাকুল স্বরে

             নদীর চরে

কে যেন গো হাঁকছে শুধু মায়ের কাছে

              হৃদয়ভরে। 


এসো এসো সামনে এসে ভরাও আমায়

             আপন ঘরে

আজি শিউলি ফুলে মাতাবো সবায় এসময়ে

              যতন করে।

কবি তৈমুর খান -এর একটি কবিতা

 ভালো কবিতা 


                   


একটা ভালো কবিতা উলঙ্গ হয়ে ঘুরছে 

ওর আকাঙ্ক্ষাগুলি নিমাই সন্ন্যাসী 

ওর যৌনতা সকালবেলার রোদ 

এসো , অক্ষর আর শব্দের ফাঁকে ফাঁকে 

ওর জীবনদর্শন খুঁজে দেখি 


আমরা এখন বিভ্রান্ত —

      চাবুক খেতে খেতে 

             চাবুক খেতে খেতে 

                    শরীরে কালশিটে দাগ 


চলো, এখন অক্ষরবৃত্তে ঢুকি 

ছন্দের স্পন্দনে পৃথিবী হেসে উঠুক দেখি !

১২তম সংখ্যার সম্পাদকীয়

 


                       অঙ্কন শিল্পী- তন্ময় পাল



সম্পাদকীয়:

আধুনিকতার যুগে নিজের ধর্ম, জাতি, বর্ণ সব ভুলে গেলেও নিজের মাতৃভাষা ভুলে গেলে হবে না। অন্য ভাষার বড়াই করার থেকে নিজের ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো লড়াই এ আমাদের পাশে থেকে এগিয়ে যেতে শিখুন। মনে রাখবেন আমাদের মায়ের ভাষা, মা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করছে। এর থেকে গর্বের বিষয় কি হতে পারে। তাই নিজের মাতৃভাষার গুনগান করতে শিখুন। লিখুন, পড়ুন, চলুক আমাদের ওয়েবসাইট ম্যাগাজিন World Sahitya Adda এর সাথে সাহিত্য চর্চার অদম্য প্রয়াস। ভালো থাকবেন সবসময়। আর পড়তে থাকুন, লিখতে থাকুন আমাদের পত্রিকা।




                               ধন্যবাদান্তে
              World sahitya adda সম্পাদকীয় বিভাগ

_______________________________________________

**Advertisement (বিজ্ঞাপন):



##সাঁঝের বেলা' মাসিক অনলাইন ম্যাগাজিনে যে কেউ কবিতা/গল্প পাঠান|
##'সাঁঝের বেলা' সাহিত্য সম্মান' (কবিরত্ন/সাহিত্যরত্ন/সাহিত্যজ্যোতি) পেতে যে কেউ নিজের লেখা সেরা কবিতা/গল্প/প্রবন্ধ/আঁকা ছবি/ভ্রমণ কাহিনী/রম্য রচনা/উপন্যাস/নাটক পাঠান|
##'সাঁঝের বেলা জীবনজ্যোতি সম্মান' পেতে নিজের জীবনী পাঠাতে পারেন|
লেখা পাঠাতে যোগাযোগ করুন- 9999998705

                     -সম্পাদক সাঁঝের বেলা
_______________________________________________________________

বি.দ্র-- বিজ্ঞাপনের সব দায়িত্ব বিজ্ঞাপন দাতার

Saturday, October 2, 2021

১২তম সংখ্যার সূচিপত্র (৩২জন)

 সম্পূর্ণ সূচিপত্র



বাংলা কবিতা ও ছড়া---


তৈমুর খান, সত্যেন্দ্রনাথ পাইন, সুব্রত মিত্র, উদয়ন চক্রবর্তী, চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী, মহীতোষ গায়েন, আবদুস সালাম, আশীষ কুন্ডু, বদরুদ্দোজা শেখু, রাজা দেবরায়, নবকুমার, নীতা কবি মুখার্জী, অভিজিৎ দত্ত, পুষ্পিতা চট্টোপাধ্যায়, সেখ নজরুল, কমল মন্ডল, জয়িতা চট্টোপাধ্যায়, রোকেয়া ইসলাম , মায়া বিদ, তুলসীদাস বিদ, তাপস মাইতি , ইমরান শাহ্।


বাংলা গল্প---

সামসুজ জামান, 


প্রবন্ধ---

অমিত পাল,



বাংলা গদ্য তথা রম্য রচনা---

তীর্থঙ্কর সুমিত, সুজিত চট্টোপাধ্যায়।



ইংরেজি কবিতা--


Soumendra Dutta Bhowmick, Sunanda Mandal, Pradip Kumar lahiri. 



Photography----


Moushumi chandra, Tanmoy pal