Saturday, October 28, 2023

মহা নিষ্ক্রমণ - পরাগ চৌধুরী || Moha Niskraman - Parag Choudhary || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 মহা নিষ্ক্রমণ

    পরাগ চৌধুরী

       


লোকটা আলিবাবার মতো রওনা দিয়েছিলো

স্বাধীনতার বন্ধ গুহার সামনে

চিচিং ফাঁক হাঁকতে

কিন্তু ঠিক কাশিমের মতো দেশের শরীরটা

দু'টুকরো হয়ে গেলো...


লোকটা রাতপরীর মতো বেরিয়ে প'ড়েছিলো

দেশটাকে সোনা করার

ছু মন্তরি জাদুকাঠি আনতে

কিন্তু ফুস মন্তরের অভাব না থাকায়

খাদ মিশে গেলো চাওয়া-পাওয়ায়...


                               

মল্লার রঙের বশ্যতা - আবদুস সালাম || Mollar Ronger Bossata || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 মল্লার রঙের বশ্যতা

     আবদুস সালাম



ঘনিষ্ঠ জীবনের সজীবতা লিখি মল্লার রঙে 

অপ্রস্তুত শরীরে সোহাগের নদী টলোমলো 

 নিষিদ্ধ চুম্বনে সুর তোলে প্রতীক্ষার বাঁশি    

  অযাচিত সম্ভাবনার আলিঙ্গনে লেখা হয় প্রণয় আখ্যান


প্রাচীন ইঁদারায় কিংকর্তব্যহীন আফশোষ দেখি কাল্পনিক বলয়ে তার বিবর্ণ উচ্ছ্বাস

ভালোবাসা ভর্তি নির্বিকার স্থাপত্য কেঁপে ওঠে

  বিমূর্ত মিনারের শরীরে আঁকা হয় পাল ভাঙ্গা উচ্ছ্বাস


অন্তঃসারশূন্য কাঙাল বন্দরে ফোটে বাসনার ফুল

গান শোনায় অলৌকিক ভ্রমর    

যাপনশৈলীর সারমর্ম খুঁজি রোমিং এরিয়াই

সুরের মোহনায় রং পাল্টায় নির্লজ্জ মিথ্যাচার


ক্ষুধার্ত ,হ্যাংলা গ্রাসে গিলে নিই বাঁধাধরা প্ররোচনা

তারপর আক্ষেপ আর অপেক্ষা স্পর্ধা দেখায়

অন্দর মহল ঘিরে বশ্যতার চক্রব্যূহ


মুক্তির নিঃশ্বাসে খসে পড়ে আস্ফালনের পোশাক

বিষন্ন ফুলে দোল খায় অবাধ্য প্রজাপতি

নীরব শহর - সোমা রায় || Nirab Sahar - Soma Ray || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 নীরব শহর 

            সোমা রায় 



এই শ্রাবণের সন্ধ্যায়

তোমার শহরের মাদকতা গ্রাস করে আমায়

কত স্বপ্ন হারায় চিরন্তন নীরবতায়

আধারের ঘনঘটায় খুঁজে ফিরি তোমায় 

এই শহর তুমি চিনিয়ে ছিলে আমায় 

আজ এই শহরই ছিনিয়ে নিল তোমায়

 অবশেষে কিছু মধুর স্মৃতি রইল পড়ে 

স্মৃতির মাঝেই খুঁজিবো তোমায় বারে বারে ।

গন্তব্য আর কতদূর - সতু মালাকার || Gontobbo arr koto dure - Satu malakar || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

  গন্তব্য আর কতদূর

     সতু মালাকার

           


দিগ দিগন্তের অলিগলি ঘুরে ঘুরে 

ক্লান্তির সুস্পষ্ট ছাপ শরীরে,

অবহেলার হাতছানিতে

বিষাদে অন্তর পুড়ে।


পিছুটান ধরে 

মনের আবেগঘন অন্ধকারে,

পিছু হতে;

আওয়াজ ভেসে আসে কানেতে।


সুস্পষ্ট শুনতে পাই -

কে যেন বলে ওরে অভাগা; 

ও অভাগা খানিকটা দাঁড়াও,

দাঁড়িয়ে দুদণ্ড বিশ্রাম নাও..!


মলিনতার ঘাম বেয়ে 

চেতনা জাগ্রত হয় শরীরে,

আর মনে মনে ভাবতে থাকি

আর কত দূর! 

কতপথ যেতে হবে ক্লান্তি পাড়ি দিয়ে।


পলকে পলকে থেমে যায় হৃৎস্পন্দন,

তপ্ত মরুর মধ‍্যদেশে দাঁড়িয়ে 

বোধোদয় হয় এই বুঝি হবে মরণ।

গন্তব্যে পৌঁছতে লাগবে আর কতক্ষণ.!

তিস্তা তোমাকে - জয়ন্ত সাহা || Tista tomake - Jayanta Saha || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 তিস্তা তোমাকে

         জয়ন্ত সাহা


ফেনা ফেনা জলরাশির চিৎকারে

বোহেমিয়ান জীবনের আস্বাদ,

আঘাতে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত চেতনা

দীর্ঘ পথচলা যে এখনো বাকী।

ক্ষয়াটে চাঁদের দেশে মরুভূমি

মিশরের নীলনদের আঘ্রাণ--

পূর্ব পশ্চিম এক ক'রে দিয়ে

চাপা কান্নার মতো গোঙানি,

বেরঙা জীবনে রামধনুর ছোঁয়া

হয়তো বুজরুকি বা ভুল অনেকটাই।

পেছনে ফেরা নাই বা হ'লো জীবনে

সমুদ্রের লোনা স্বাদ চাই বারংবার,

একমুঠো রোদ্দুরকে সাক্ষী রেখে

আজ তোমাকে কথা দিলাম তিস্তা।

অন্ধকার ভাঙাচোরা পথে এলোমেলো পা

হোঁচট খেলেও মনে থাকে না হয়তো--

শরীরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা নিয়েও

তোমার মতই বয়ে চলবো

সমুদ্রের লোনা জলে একা দাঁড়িয়ে

তোমাকে সেই কথাই দিলাম তিস্তা।

বিষ্ঠার মাঝে অন্নের খোঁজ কারী - পাভেল রহমান || Bisthar majhe Onner kojh Kari - Pavel Rahaman || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 বিষ্ঠার মাঝে অন্নের খোঁজ কারী

                পাভেল রহমান 



বিষ্ঠার মাঝে নিষ্ঠার সাথে যাহারা খোঁজে অন্ন,

আমাদের এই সমাজ মাঝারে তাহারা হয়ত ঘৃণ্য।

আমি কিন্তু তাঁদের মাঝেই দেখিয়াছি বিধাতা,

যাহারা বিষ্ঠার মাঝে অন্নের খোঁজ কর্তা।

তারাই শেখায় কিভাবে হওয়া যায় জীবন যোদ্ধা।

বিষ্ঠার মাঝে নিষ্ঠার সাথে যারা অন্নের খোঁজ কারী,

শেষ নিঃশ্বাস তক যেন গাই জয়গান তাহাদেরই।



আমার বেদনা - রূপায়ন হালদার || Amar bedona - Rupayan Haldar || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 আমার বেদনা 

       রূপায়ন হালদার 


আমার বেদনা নিরপরাধ,
আমার বেদনা প্রতারকের কাছে উল্লাসের হাসি,
কিংবা মুখের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অমানুষিক মনের প্রতিচ্ছবি।

চোখের জল মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টির মতো সমুদ্র নয়,
মনের অব্যক্ত যন্ত্রণা;
শিকড় উপরে যাওয়া গাছের সংকেত হীন যন্ত্রনার মতো নীরব।

আমার ব্যর্থতা----
আমি আমার বেদনা নিয়ে গুমোট বেঁধে থাকি;
আকাশের কালো ধূসর মেঘের মতো রূপ নিয়ে।
আর চেপে রাখতে না পারলে চোখে জল আসে,
তখন আধমরা শালিকের মতো ছটফট করি।
কাউকে মন খুলে বলতেও পারিনা।
আমার বেদনা নীরবে ক্রন্দনরতা মা'র মতো নিশ্চুপ।

তবে এ বাস্তব সত্য কে মানতে হবে;
সে যত' লোহার মতো কঠিন হোক না কেনো।

চিরদিন বসে থাকি;
অপ্রাণ পাথরের মতো ভারী হয়ে।
আর কেবল আত্মবিশ্লেষন করি---
প্রেমার্ত মনে বেদনার ছাপ কেন প্রস্ফুটিত হল;
উৎসবের বদলে দুঃখের মতো মূর্তি নিয়ে।

Friday, October 27, 2023

নও সার্বজনীন - সিক্তা পাল || Nou Sarbojanin - Sickta pal || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 নও সার্বজনীন 

      সিক্তা পাল 


ঢাকের কাঠি বোল তুলেছে

     ঢ্যাঙ কুরাকুর কুর,

আয়রে তোরা সবাই ছুটে

     মায়ের পুজার সুর।


মা আমাদের জগৎ জননী

     দশ হাতে ধরেন অস্ত্র,

অসুর যতো করেন নিকাশি 

     করি পুজা গলদ-বস্ত্র।


চারটি দিনে মায়ের পুজায় 

     সবাই মাতে আনন্দে,

বাঁধ ডাঙা জনরাশির বন্যায়

     ভাসছে নগরী স্বানন্দে।


শহর গ্রামে রকমারি প্যান্ডেলে 

     চোখ হচ্ছে ছানা বড়া,

জন- প্লাবন ঠেলতে ঠেলতে 

     হচ্ছি শুধু দিশে হারা।


আলোর রোশনাই তে মুখরিত 

     পথ ভূমি মাঠ প্রান্তর,

আঁধার বুঝি আজ শিহরিত 

     মুখ লুকাতে গুহান্তর!


মলিন মুখের শুষ্ক দৃষ্টি-ধারা

     ইতি উতি কেবল চায়,

তাদের আপন নয় শালঙ্কারা 

     দিনান্তে 'মা কষ্ট সাজায়।


জীবন নদী অঙ্গারের পথে বায়

     শারদীয়ায় শুকছে টাকা,

'তারই স্রোত যত্রতত্র ভেসে যায়

     স্বপ্ন যে তার শূণ্যে ঢাকা।


চারটি দিনে বইছে কতো সম্ভার 

     পেসাদের অধীর অপেক্ষা,

আধা খাওয়া পরিত্যক্ত খাবার

     কুড়ায় তড়া, করি 'উপেক্ষা।


দিনান্তে ঝুপরিতে সারে আহার 

     পরম তৃপ্তির ঢেকুর ওঠে,

সারমেয়র সাথে উচ্ছিষ্ট খাবার 

     ভাগে খায় হাসি ঠোঁটে।


উদরের জ্বালায় নেই তো অমিল

     দুপেয়ে আর চারপেয়ে তে,

সার্বজনীন মা মানতে কষ্টে 'নীল

     তাই আঁধার মন দুঃখেতে।

বৃষ্টি-বালিকা - বদরুদ্দোজা শেখু || Bristi Balika - Badrujja Sekhu || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 বৃষ্টি-বালিকা 

বদরুদ্দোজা শেখু



মাঝ রাতে আজ বৃষ্টি নামলো,নামলো অঝোরে

একটু থামলো, আবার নামলো , নামলো সজোরে

গর্জন নাই বর্ষণ শুধু ঘনঘোর বরষাত

আজ শুধু ধারাপাত-- ধারাপাত সারারাত ।


বৃষ্টি-বালিকা আসে চঞ্চল মঞ্জীর চরণে

ষোড়শী যেন সে নাচে শ্যামল কোমল বরণে

কাজল সজলাকাশে চলছে চপল তার কীর্তি হাসছে নিশীথকালে তাপিত তৃষিত পৃথ্বী,

নন্দিত করি তারে বন্দিত বন্ধু সে ললনা

ওরে আজ প্রাণ খোল্ দোলা তোর আনন্দ-দোলনা

বাদলের তালে তালে সুন্দর অন্তর-বিতানে

যেন সে পরীয়া থাকে বিনিদ্র রজনী শিথানে,

শঙ্কারা শ্লথ আজ-- বিমগ্ন নিমগ্ন চেতনা

দুলে উঠে মায়াতরুর মৃদুল পৃথুল দ্যোতনা

ছলনার ছায়াতরু সেজেছে সৃষ্টির তরুতে

আজ শুধু ধারাস্নান নীরব বিবশ মরুতে

পরতে পরতে শুধু অম্লান অযুত ঝরনা

আসান ভাসান হবে আসন্ন প্রসন্ন-বরণা

বর্ষার কল্যাণে , কাঙ্ক্ষিত নিশীথ জাগো হে

মধুর মেদুর সুখ এই খুশ -নসীবের আবহে ,

 বৃষ্টির মধু-ধারা সমস্ত সৃষ্টির পালিকা

হাসছে নাচছে দ্যাখো শ্যামল কাজল বালিকা ।

চিকণ আলো - মিলি দাস || Chikan Alo - Mili das || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 চিকণ আলো

      মিলি দাস


স্লেট পেন্সিলে যদি ঘুণধরা বর্ণহীন

আগুনের গায়ে

আদর লিখে দিই ,

তোমার রাষ্ট্রের কোন 

শিরা উপশিরাতে  

কি পদ্ম ফুল জন্ম নেবে?

কৃষিকাজের পর আল্পনা আঁকি গোয়াল ঘরে,

শিকারীর রতিসুখের বিদ্রোহের পর

চিকণ আলো এসে পড়লে

তুমি হাতের তালু প্রসারিত করে বলো এই তো আমার আকাশ অঙ্গ,

বিষণ্ণতায় আলোর অভীপ্সা

বাঁচার মত অরণ্য মন,

তুমি শাপলা ফোটাও অন্ধকারে।

মহাপ্রস্থানের পথে - আনন্দ গোপাল গরাই || Mahaprasthaner Pathe - Ananda Gopal garai || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

    মহাপ্রস্থানের পথে

      আনন্দ গোপাল গরাই



স্মৃতির গ্যালারি থেকে একে একে মুছে যাচ্ছে

একটা একটা করে ছবি

পোকায় কেটে দিচ্ছে বহুযত্নে সংরক্ষিত

মনের অ্যলবাম -- ধূসর বিবর্ণ সব!

দিন দিন শেষ হয়ে আসছে মগজের ব্যালান্স

কিছুদিন পরে হয়ে যাবে নিল

ফেল হবে রিচার্জও

অকেজো হয়ে যাবে ব্যাটারি

চেঞ্জ করলেও সেট হবে না পুরোনো সেটে।

ডিভাইস থেকে ডিলিট হয়ে যাবে সবকিছু

তারপর ব্রেনডেথ

আই সি ইউ-তে থেকে

আবছা আলো আঁধারে চিনে নেওয়া 

মহাপ্রস্থানের পথ!

শিক্ষাগুরু - অভিজিৎ দত্ত || Sikhha guru - Avijit Dutta || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

  শিক্ষাগুরু

  অভিজিৎ দত্ত



শিক্ষাগুরু,তুমিই আমার ভিত

তুমিই আমার জীবনের প্রেরণা

তোমার আর্শীবাদ ছাড়া কিছুতেই

প্রকৃত মানুষ হতে পারতাম না।


শিক্ষাগুরু,তোমার কাছেই পেয়েছিলাম 

দেশপ্রেম ও মূল্যবোধের শিক্ষা

যেগুলি ছাড়া কখনোই প্রকৃত

মানুষ হওয়া যায় না।


শিক্ষাগুরু,তুমিই প্রথম বুঝিয়েছো

এই পৃথিবীতে মানুষ সবাই সমান

কৃত্রিম ভেদাভেদ, ধর্মান্ধতা

লোভ, হিংসা ও স্বার্থপরতা

মানুষকে করেছে পশুর সমান।


শিক্ষাগুরু,তোমার কাছে শিক্ষা

মানবতার পাঠ

যেটা ছাড়া দুনিয়াই 

বেঁচে থেকে কী লাভ?


সবশেষে শিক্ষাগুরু শিখিয়েছিলে

জীবনে ভালো মানুষ হতে

যেটা ছাড়া জীবনের কোন মূল্য আছে?


তবু ইতিহাস - লালন চাঁদ || Tabu itihas - Lalan Chand || Kabita || কবিতা || Bengali Poems || Bengali poetry

 তবু ইতিহাস

       লালন চাঁদ 


শূন্য প্রান্তর থেকে ফিরে আসি

শূন্য জীবন অনাদর

তবু আছড়ে পড়ে মায়া। 

জরা ব্যাধি ক্ষণজন্মা ।

                      

তবু কথা গড়ি

হেলায় ভালোবাসা পুঁতে রাখি উঠোনের আলপনায় ।


বিছানো নদী হয়ে ভাসে জীবন

খোলা আকাশ

হাওয়া শনশন

শিশির টুপটাপ। হাল্কা রোদ মিছিল।

বিলম্বিত অকাল বোধন ।


তবু শুনি জীবনের গান 

পোয়াতি ফসলের সুবাস 

জীবনের মাঝে মৃত্যু।

বিসর্জনে তার মহতী পরিনাম ।