গোবিন্দ ব্যানার্জীর একটি গল্প

জয়নুলের বৌ


সাইকেল থেকে নেমেই জয়নুল শিষ দিতে দিতে বাড়ির উঠোনে ঢুকে পড়ে। গরম পড়তে শুরু করেছে। চওরা বুকে পিঠে ঘামে ভেজা

জামাটা চেপে বসেছে। মাঝদুপুরের ঝাঁঝাঁলো রোদে টালির চালে নধর লাউগাছের সবুজ নরম পাতাগুলো নেতিয়ে পড়েছে। সেদিকে তাকিয়ে গতকালও সে মুখ দিয়ে 'চুক চুক' ক'রে আওয়াজ করেছিল। 

- আহারে...নরম প্রাণ, একটু রোদেই ঢলে পড়েছে।

সবুজ বরণ কন্যারে...লাজ পেয়েছে মরদ দেখে।

হো হো ক'রে হেসে ওঠে....

               তার হাসির হুল্লোর রসুই ঘর থেকেই টের পেয়েছিল ফতেমা। কান খাড়া করে সে। নিত্য নতুন ছড়া কাটে তার মানুষটা। আজ শিষের বহর শুনে তার বুকের মধ্যে কৌতূহল তালগোল পাকিয়ে ওঠে। ভাত সবে উথলে উঠেছে। আধ ঘটি জল ঢেলে দিতেই ফোঁস ফোঁ ক'রে হাঁড়ির গর্ভে ঢুকে গেল সাদা ফেনা। মুখ উঁচিয়ে একবার হাঁড়ির ভেতরটা দেখে উঠে পড়ে সে। আঁচোলটা কাঁধের ওপর তুলে দাওয়ায় এসে দাঁড়ায়। জয়নুল তখন শিষ দেয়া ছেড়ে হেঁড়ে গলায় গান ধরেছে ...

- আমে এসেছি...এসেছি... বধূ হে...হেঁ হেঁ হেঁ...

অত বড় শরীরটা হাসির তোড়ে ফুলে ফুলে দুলছে।

ফতেমা আঁচোলে মুখ চেপে হাসি সামলায়। তরঙ্গায়িত শরীরটা নিয়ে দ্রুত রসুই ঘরে চলে আসে। ভাতের হাঁড়িটার দু'কানা আঁচোলে ধ'রে উপুড় দেয় সানকিতে...

ফ্যানটুকু ধ'রে রাখতে হবে...

Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩১ || Sarod sonkha 1431 || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র