চৈতালী ভট্টাচার্য্য - উমার বিদায় || Chaitali Bhattacharya - Umar Biday || গল্প || ছোট গল্প || Story || Short Story || Prose || বড় গল্প

 চৈতালী ভট্টাচার্য্য

       উমার বিদায়



    " শোনো নীল, আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। আমি আমার ছোটবেলার বন্ধুকে কথা দিয়ে দিয়েছি। যতই তুমি বিদেশের মাটিতে অর্থাৎ আমেরিকায় গিয়ে পড়াশোনা করে উচ্চশিক্ষিত হয়ে চাকরি করো , কিন্তু ভারতের মাটিতেই রয়েছে তোমার শেকড়ের টান। ভুলে যেওনা এই দেশের মাটিতে এখনও তোমার বাবা মা দুজনেই জীবিত আছেন। এবং মুখার্জি পরিবারের তুমি আমাদের একমাত্র বংশধর। আর আমি আমার বন্ধু সুশোভন চ্যাটার্জীর একমাত্র কন্যা পিয়ালীকে আমার পুত্রবধু রূপে নির্বাচন করেছি। পিয়ালী রূপসী ,শিক্ষিতা, রুচিশীলা এবং বংশমর্যাদায় একেবারে আমাদের পাল্টি ঘর। তাছাড়া ছোটবেলা থেকে তুমি তাকে বহুবার দেখেছো এবং তোমার সঙ্গে তার পরিচয় ছিল। তাই এই বিবাহে তোমার অমত হবে বলে আমার মনে হয় না। আশা করি তুমি শীঘ্রই এদেশে এসে আমার এই কথার সফলতা প্রদান করবে। ভালো থেকো"।

 

   অকস্মাৎ বাবার এই এমারজেন্সি চিঠি পেয়ে ব্রজাঘাতের মতো বসে পড়লো নীল ওরফে জোরেনীলাঞ্জন। ছোটবেলা থেকেই বাবাকে চেনে সে। অসম্ভব রাসভারী একজন মানুষ। কলেজের অধ্যাপক উচ্চশিক্ষিত তার বাবা নীলোৎপল মুখার্জীর সঙ্গে কোনোদিন পিতাপুত্রের স্বাভাবিক সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। বাবাকে চিরকাল অন্য গ্রহের বাসিন্দা মনে করে ভয়,ভক্তিতে আচ্ছন্ন থাকতো সে। বাবার মুখের ওপর কোনো কথা বলার সাহস বা দুঃসাহস কোনোটাই তার ছিল না। আজও নেই। বাবার অসম্ভব গাম্ভীর্য , সম্পর্কের শীতলতায় কেমন একটা দমবন্ধ হয়ে আসতো তার। বন্ধুদের বাবাদের স্নেহমিশ্রিত একটা সহজাত সম্পর্ক তার মনকে খুব নাড়া দিতো। বাবা বেশীরভাগ সময় লাইব্রেরীতে কাটাতেন। যা কিছু আবদার সব ছিলো তার মায়ের কাছে। গৃহবধূ উচ্চশিক্ষিতা মাও বাবাকে খুব ভয় পেতেন। বিয়ের পর বাবার ইচ্ছানুযায়ী তাঁর প্রাইভেট ইস্কুলে পড়ানোর চাকরিটা ছেড়ে দিতে হয়েছিল । বাবা খুব রক্ষণশীল এবং পারিবারিক পুজাপার্বণ ও বংশ মর্যাদাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন। চাকরি সূত্রে তাঁকে গ্রামের বাসস্থান ছেড়ে কলকাতা শহরে বাড়ি নিতে হলেও তিনি নিজের গ্রামের সঙ্গে একবারে একাত্ম ছিলেন। তাঁরই বদান্যতায় এতোদিন পরেও আজও বর্ধিষ্ণু মুখার্জী পরিবারের পূজামণ্ডপে প্রতিবছর পারিবারিক দূর্গা পূজা হয়ে আসছে। সময়ের কালস্রোতে মুখার্জী পরিবার ভেঙে গিয়ে দেশে বিদেশে সব আত্মীয় স্বজন ছড়িয়ে পড়লেও নীলোৎপল মুখার্জী এই দূর্গাপূজার সিংহভাগ ব্যয় বহন করে আজও এই পারিবারিক পুজোটিকে টিকিয়ে রেখেছেন। দূর দূরান্ত থেকে বহু আত্মীয়স্বজন এই পূজায় উপস্থিত থাকে। তিনি নিজে কলকাতা থেকে এখানে উপস্থিত হয়ে প্রাসাদসম অট্টালিকার রক্ষণাবেক্ষণ করে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের উত্তরসূরি হয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিবছর দুর্গা পূজা সুষ্ঠুভাবে সমাপন করছেন।

 

     কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে যখন গ্রাজুয়েশনে দূর্ধর্ষ রেজাল্ট করে নীলাঞ্জন পাশ করলো তখন সে সিদ্ধান্ত নিলো এই অসহ্য 

পরিবেশে আর সে থাকবে না। কারণ এখানে আর বেশিদিন থাকলে সে পাগল হয়ে যাবে। তাই যাতে বিদেশে উচ্চশিক্ষা লাভ করে পড়াশোনা করতে পারে তার জন্য সে প্রস্তুত হয়ে 

টোয়েফল,জিআরই সবেতেই পাশ করে বিদেশের ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্য আপ্লাই করলো এবং সিলেক্ট হলো। তখন মায়ের পায়ে পড়ে বাবাকে রাজি করাতে বললো। মা প্রথমে অরাজী থাকলেও ছেলের কান্নাকাটিতে গলে গিয়ে বাবাকে রাজী করাতে গেলেন। স্বামী যে এতো সহজে রাজী হয়ে ছেলেকে বিদেশে পড়ার অনুমতি দিয়ে দেবেন সেটা নীলের মায়েরও ধারণা ছিল না। যাইহোক বাবার অনুমতিতে সে শেষপর্যন্ত আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য সে যাত্রা করেছিল।

 

   এখানে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে গিয়ে আলাপ হয়েছিল স্টেলার সঙ্গে। স্টেলা শুধু তার সতীর্থই ছিল না সে ছিল একজন রক শিল্পী। এখানে এসে নীলাঞ্জনের রক সঙ্গীতের ওপর একটা ভালোবাসা জন্মায়। স্টেলা তার জীবনে আসার পর এই ভালোবাসা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় । স্টেলা কালো চামড়ার এবং একজন খ্রীষ্টান ‌। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ক্রমে গাঢ় ভালোবাসায় রূপান্তরিত হয়। স্টেলা আর নীল দুজনে লিভ টুগেদার করে। ভবিষ্যতে নীল এখানের নাগরিকত্ব পেলে দুজনের স়ংসারী হবার ইচ্ছে আছে। মায়ের সঙ্গে নীলের স্টেলার বিষয়ে সামান্য কিছু কথা হয়েছে। তার মা তাকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন তিনি বাধ্য হয়ে মেনে নিলেও কিন্তু তার রক্ষণশীল বাবা কোনোদিনই স্টেলাকে মেনে নিতে পারবেন না। গোঁড়া ব্রাক্ষণ তার বাবা অন্য ধর্মাবলম্বী এবং কালো চামড়ার কাউকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নেবেন না। এই সম্পর্ককে অস্বীকার করতে প্রয়োজনে আত্মহত্যা করবেন কিন্তু মুখার্জী পরিবারের সুনামকে কখনো হারাতে দেবেন না। তাই এই সম্পর্ক থেকে নীল যেন খুব তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসে বাবার মতামতকে বিশেষ প্রাধান্য দেয়। তাছাড়া পিয়ালী মেয়েটি খুব ভালো। ছোটবেলা থেকে তিনি মেয়েটিকে ও তাদের পরিবারকে দেখে আসছেন। প্রতিবছর দুর্গা পুজোয় সে এখানে তার বাবা মার সঙ্গে আসে‌। পুজোর কটা দিন এই পরিবারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পুজোর যাবতীয় কাজকর্ম করে। এই পরিবারের সকলেই জানে যে পিয়ালী নীলের বাগদত্তা। নীল যেমন দুই তিন বছর কাজের চাপে এদেশে পুজোর সময় আসতে পারিসনি পিয়ালীও দিল্লিতে গ্রাজুয়েশন করার জন্য এই পুজোতে অ়ংশ নিতে পারে নি। এবার ওর গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হয়ে গেছে। তাই সে এবার এই পরিবারের দুর্গা পুজোয় অ়ংশ গ্রহণ করবে বলে তার বাবা মা জানিয়েছে। তাই মাস্টার ডিগ্রী করার আগে তোর বাবা চাইছেন তোদের বিয়েটা দিয়ে তোদের দুজনকে একসঙ্গে আমেরিকা পাঠাতে। ওর পাসপোর্ট রেডি, ভিসাটাও হয়ে যাবে। তুই এমারজেন্সি ছুটি নিয়ে এবারের দুর্গাপুজোয় এখানে চলে আয়। আশা করি বাবার চিঠি তুই পেয়েছিস। সুতরাং দেরি না করে ছুটির অ্যাপ্লাই করে দে। পুজোর মধ্যে সব আত্মীয় স্বজনের সামনে তোদের রেজিস্ট্রিটা করে রাখা হবে। তারপরে একটা ভালো দিন দেখে সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিবাহ সম্পন্ন হবে। এবার কার্ত্তিকের একদম প্রথমে পুজো আর অগ্রহায়ণ মাসের দুতারিখে বিয়ের একটা ভালো দিন আছে। তোর তো বারবার অতোদূর থেকে আসা সম্ভব নয়। তাই একমাসের ছুটি কোনোভাবে ম্যানেজ করে চলে আয় । ঐদিন তোর বাবার ইচ্ছা তোদের চার হাত এক করার।"


নীলাঞ্জন কাজ করতে করতে বার বার অন্যমনস্ক হয়ে যেতে লাগলো। মাঝে কয়েকটা বছর না দেখা হলেও পিয়ালীকে ছোটবেলা থেকে সে অনেকবার দেখেছে। সামান্য কথাও দু একবার হয়েছে। পিয়ালী অপূর্ব সুন্দরী। কিন্তু পিয়ালী নিয়ে কোনো বিশেষ ভাবনা চিন্তা তার মধ্যে কোনোদিন কাজ করেনি। পিয়ালীরও কি তাকে নিয়ে কোনোরূপ চিন্তা ভাবনা ছিল কিনা তাও তার জানা নেই। আসলে তার সেই মহুর্তে দমবন্ধ এই বাড়ির পরিবেশ থেকে কিভাবে মুক্তি পাবে তখন সেটাই তার একমাত্র ধ্যানজ্ঞান ছিল। পড়াশোনার মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে যেনতেন প্রকারে একটা কলারশিপ জোগাড় করে বিদেশের মাটিতে পাড়ি দেওয়ায় ছিল একমাত্র উদ্দেশ্য ।

   

" একি ব্রাদার তোমার যে আজকে কাজের মন নেই দেখছি। স্টেলার সঙ্গে কি মান অভিমান?" 


আকাশের প্রশ্নে নীলাঞ্জন একটু ঘাঢ় নাড়ালো।


"তাহলে আজ আমার বন্ধু এতো অন্যমনস্ক কেন। কাজের ব্যাপারে যে প্রচন্ড ডিসিপ্লিনড এ্যান্ড প্যা়ংচুয়াল। তার তাহলে কি হলো আজকে?


" নীলাঞ্জন বলে উঠলো

"আকাশ এদেশে তোমার মতো একজন বাঙালি এবং ভালো বন্ধু পেয়েছি তুমি আমার সবকিছুই জানো। কিন্তু এখন এমন একটা সমস্যায় জড়িয়ে গেছি এর থেকে বেরোবো কি করে ভেবে উঠতে পারছিনা। আমি তোমাকে সব শেয়ার করবো। তুমি বলো আমি এখন কি করবো।?"


"কি হয়েছে আমাকে খুলে বলো নীলাঞ্জন।"


"তুমি তো আমার আর স্টেলার বিষয়ে সবকিছু জানো। আমরা দুজন দুজনকেই ভালোবাসি।

স্টেলা অরফ্যান ছিল। অনেক স্ট্রাগেল করে আজ মিউজিক,স্টাডি, সবেতেই একনম্বর। ভবিষ্যতে আমি ওকে বিয়ে করবো এমন কথাও দিয়েছি। ও আমাকে খুব বিশ্বাস করে। কিন্তু দেশে বাবা মা আমাকে একটি মেয়েকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি যদি এই বিয়ে না করি বাবা হয়তো আত্মহত্যা করে বসতে পারেন। আমি আমার বাবাকে চিনি এবং তোমাকেও সব আগেই বলেছি। উনি ভীষন জেদী, একগুঁয়ে এবং নিজের বংশমর্যাদা সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন। স্টেলাকে কোনোমতেই মেনে নেবেন না। আমি এখন কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা।"


"তুমি যখন জানো নীলাঞ্জন তোমাদের পরিবার তোমাদের এই সম্পর্ককে কখনো মেনে নেবে না তখন তাহলে জেনে শুনে স্টেলার সঙ্গে একটা সম্পর্কে জড়ালে কেন। আমি বলি আমরা দুজনেই ছুটির অ্যাপ্লাই করি। আমারও দেশে যেতে বড্ড মন চাইছে। দেখি তোমার পরিবারকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে তোমার বাবামায়ের মতের কোনো পরিবর্তন করে উঠতে পারি কিনা।"


"আমি তোমাকে গ্যারিন্টি দিলাম আকাশ। সূর্য পশ্চিম দিকে উঠবে কিন্তু আমার বাবার কথার নড়চড় হবেনা। তুমি দেখে নিও।"


"ঢাকের বাদ্যি বেজে উঠেছে। নীল আকাশের বুকে পেঁজা তুলোর সমারোহ। উঠোনের প্রাঙ্গনে শিউলির চাদরের সুমধুর উপস্থিতি। মাঠে মাঠে কাশফুলের দোদুল নাচন। মা আসছেন। এবার গ্রামের মুখার্জী পরিবারের বাড়িতে আনন্দের বান ডেকেছে। কেননা বহুদিন পরে বিদেশ থেকে ছেলে এসেছে দুর্গা পুজোতে। শুধু তাই নয় এই পুজোতেই দেবীর বোধনের শুভ দিনে হবে তার পাকা দেখার লিখিত পাঠিপত্র। দুর্গা মন্ডপ, ফুল আর আলোতে মুড়ে দেওয়া হয়েছে। দেবীর বোধন পর্ব সমাপ্ত হলেই শুরু হবে রেজিষ্ট্রি এবং পাঠিপত্র অনুষ্ঠান। দুই বাড়ির লোকজন এবং আত্মীয় স্বজন উপস্থিত।

সালঙ্কারা অপূর্ব রূপবতী পিয়ালীকে দেখে মুহুর্তের মধ্যে একবারে মুগ্ধ ও প্রায় পাগল হয়ে গেল আকাশ। মনের চাড়া দিয়ে উঠলো নিষিদ্ধ ইচ্ছা। এই মেয়েকে না পেলে সত্যি তার জীবন বৃথা হয়ে যাবে। যেমন করেই হোক নীলাঞ্জনের সাথে এই বিয়েটা তাকে আটকাতেই হবে । মেয়েটাকে জানিয়ে দিতে হবে নীলাঞ্জনের সঙ্গে স্টেলার সম্পর্কের কথা। তবেই সে পিয়ালীকে পেতে পারবে। কিন্তু কি করে সেটা সম্ভব। আজকেই তো রেজিষ্ট্রি হয়ে যাবে। নীলাঞ্জনেরও মনেও বেশ ঘোর লেগেছে অপূর্ব সুন্দরী যুবতী পিয়ালীকে দেখে, সেটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে। স্টেলা মনে হচ্ছে নীলাঞ্জনের মন থেকে বিসর্জন হয়ে গেল।


 স্টেলার প্রসঙ্গ নিয়ে অনেক বুঝিয়েও নীলাঞ্জনকে রেজিষ্ট্রি করা থেকে বিরত করতে পারলোনা আকাশ। সবকিছু নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলো। পিয়ালী এবং নীলাঞ্জনকে হাসিমুখে ঘনিষ্ঠভাবে গল্প করতে দেখা গেল। আকাশের বুকের ভেতরটা জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। মনে মনে ভাবলো "বাহ, নীলাঞ্জন তুমি যে এতো বড় অভিনেতা জানা ছিল না। স্টেলা আমারও বন্ধু তার সঙ্গে তুমি এতো বড় বিশ্বাসঘাতকতা করলে। এতো যে বড় বড় কথা বলেছিলে পিয়ালীকে দেখে সব ভেসে গেল। তোমার আর স্টেলার কিছু ঘনিষ্ঠ মুহুর্তের ছবি আমার ফোনে আজও আছে সেটা ভুলে গিয়েছিলাম। তোমাকে আমি কিছুতেই সুখী হতে দেবোনা ‌পিয়ালীকে আমার চাই। আর আমি স্টেলাকেও সব জানিয়ে আজকেই ইমেইল করে দেবো।

 

  আজ বিজয়া দশমী, মাকে চোখের জলে বিদায় জানানোর দিন। সকলেই গভীর ম্রিয়মান। আবার একটি বছর বাদে উমা মায়ের পদধূলি মর্তে পড়বে। সকাল থেকেই তাই দশমী পূজার বিশেষ প্রস্তুতি চলছে । ভোগ রন্ধন ও দধিকর্মা প্রস্তুতিতে সকলেই খুব ব্যস্ত। কে একজন বলে উঠলো পিয়ালীকে দেখা যাচ্ছে না। সে এই বাড়ির বউ হয়েও মায়ের বিদায় লগ্নের এতো প্রভূত কাজ থেকে কেন নিজেকে বিরত রেখেছে।


 ঢাক বেজে উঠেছে। মায়ের বিদায়ের কাল উপস্থিত। সিঁদুর সিঁদুরে রক্ত বর্ণ হয়ে উঠেছে দেবী মায়ের মুখ আর মানবী মায়ের মুখ‌ ‌। এমন সময় কে যেন চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো 

পিয়ালী মা ,রে এমন করে তোর মাকে ফেলে কাঁদিয়ে চলে গেলি কেনরে? কি অপরাধ করেছিল তোর বাবা মা। রক্ত আর গ্যাজলায় ভরে আছে আর এক উমার মুখ। পাশে গড়াগড়ি খাচ্ছে একটা বিষের শিশি। মা চলে যাবেন কৈলাসে। আর এক মায়ের কোল খালি হয়ে তার গৌরী হয়তো চলে যাবে কৈলাসে কে বলতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024