কথাসাহিত্যিক সুদীপ ঘোষাল -এর উপন্যাস (অন্তিম পর্ব)

 ইউরেকা ইউরেনাস



(৬)

নাটুবাবু বললেন, আমি বামুনের ছেলে। ভূত আছে বুঝলেন। শুনুন আমি বলি, শিবের অনুচর দেবযোনিবিশেষ (ভূতনাথ)। অশরীরী প্রেত বা পিশাচ জীব, প্রাণী (সর্বভূতে দয়া)। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বস্তুসমূহের মূল উপাদান পঞ্চভূত।পরিণত দ্রবীভূত, বাষ্পীভূত বিদ্যমান, রয়েছে এমন ̃ .কাল বি. অতীত কাল ̃ ভূতপ্রেতের দ্বারা আক্রান্ত বা আবিষ্ট। ̃ .চতুর্দশী. কার্তিক মাসের কৃষ্ণাচতুর্দশী তিথি। ভূত হলো অশরীরি পুরুষ আত্মা, আর পেত্নী অশরীরি মেয়ে আত্মা। অপঘাত, আত্মহত্যা প্রভৃতি কারণে মৃত্যুর পর মানুষের অতৃপ্ত আত্মা ভূত-পেত্নী হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করতে পারে। অন্যান্য জীবজন্তু বা প্রানীও তাদের মৃত্যুর পরে ভূতে পরিণত হতে পারে। বাংলায় ভূতকে মাঝে মাঝে প্রেতাত্মা হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। প্রেতাত্মার নারীবাচক শব্দকে পেত্নী হিসেবে এবং পুরুষবাচক শব্দকে প্রেত বলা হয়ে থাকে। বাংলার সংস্কৃতিতে অনেক ধরনের ভূতের বিশ্বাস রয়েছে; তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো -----

আর হলো নারী ভূত যারা বেঁচে থাকতে কিছু অতৃপ্ত আশা ছিল এবং অবিবাহিতভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। পেত্নী শব্দটি সংস্কৃত প্রেত্নী শব্দ থেকে এসেছে এসব ভূত সাধারনত যে কোন আকৃতি ধারন করতে পারে, এমনকি পুরুষের আকারও ধারণ করতে পারে। এসব ভূত সাধারনত বেঁচে থাকতে কোন অপরাধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে এবং মৃত্যুর পর অভিশিপ্ত হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করে। পেত্নীরা সাধারনত ভীষণ বদমেজাজী হয়ে থাকে এবং কাউকে আক্রমনের পূর্ব পর্যন্ত স্পষ্টতই মানুষের আকৃতিতে থাকে। পেত্নীদের আকৃতিতে একটিই সমস্যা রয়েছে, তা হলো তাদের পাগুলো পিছনের দিকে ঘোরানো। সংস্কৃত শব্দ শাকচুন্নি থেকে এসেছে। এটা হলো অল্পবয়সী, বিবাহিত মহিলাদের ভূত যারা বিশেষভাবে তৈরি বাঙ্গালি শুভ্র পোষাক পরিধান করে এবং হাতে শঙ্খ বা শাঁখা পরিধান করে। শাঁখা হলো বাঙ্গালি বিবাহিত মহিলাদের প্রতীক। শাকচুন্নিরা সাধারনত ধনী বিবাহিত মহিলাদের ভেতর ভর করে বা আক্রমন করে যাতে করে তারা নিজেরা সেই মহিলার মত জীবন যাপন করতে পারে ও বিবাহিত জীবন উপভোগ করতে পারে। লোকগাঁথা অনুসারে জলাভূমির ধারে আম গাছে বাস করে এবং সুন্দর তরুণ দেখলে তাকে আকৃষ্ট করে ফাঁদে ফেলে। কখনো কখনো সে তরুণকে জলাভূমি থেকে মাছ ধরে দিতে বলে। কিন্তু সাবধান, শাকচুন্নিকে মাছ দেয়া মানে নিজের আত্মা তার হাতে সমর্পণ করা!

   কোনো চোর মারা গেলে চোরাচুন্নি হতে পারে। পূর্ণিমা রাতে এরা বের হয় এবং মানুষের বাড়িতে ঢুকে পড়ে অনিষ্ট সাধন করে। বাড়িতে এদের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য গঙ্গাজলের ব্যবস্থা আছে। এ ধরনের ভূতেরা মাছ খেতে পছন্দ করে। মেছো শব্দটি বাংলা মাছ থেকে এসেছে। মেছো ভূত সাধারনত গ্রামের কোন পুকুর পাড়ে বা লেকের ধারে যেখানে বেশি মাছ পাওয়া যায় সেখানে বসবাস করে। মাঝে মাঝে তারা রান্নাঘর বা জেলেদের নৌকা থেকেও মাছ চুরি করে খায়। বাজার থেকে কেউ মাছ কিনে গাঁয়ের রাস্তা দিয়ে ফিরলে এটি তার পিছু নেয় এবং নির্জন বাঁশঝাঁড়ে বা বিলের ধারে ভয় দেখিয়ে আক্রমণ করে মাছ ছিনিয়ে নেয়।এ ধরনের ভূত সচরাচর দেখা যায় না। পেঁচাপেঁচি ভূত ধারনাটি পেঁচা থেকে এসছে এর স্ত্রী বাচক হলো পেঁচি। এরা জোড়া ধরে শিকার করে থাকে। বাংলার বিভিন্ন জঙ্গলে এদের দেখা যায় বলে বিশ্বাস করা হয়। এরা সাধারনত জঙ্গলে দুর্ভাগা ভ্রমণকারীদের পিছু নেয় এবং সম্পূর্ণ একাকী অবস্থায় ভ্রমণকারীকে আক্রমন করে মেরে ফেলে ও এরা শিকারের দেহ ভ্যাম্পায়ার স্টাইলে ছিড়ে ছিড়ে খায়। মনে করে মুসলমান ভূত হল এই মামদো। ব্রাহ্মণের আত্মা, সাদা ধুতি পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। এরা সাধারণত পবিত্র ভূত হিসেবে বিবেচিত। বলা হয়ে থাকে, কোনো ব্রাহ্মণ অপঘাতে মারা গেলে সে ব্রহ্মদৈত্য হয়। এছাড়া পৈতাবিহীন অবস্থায় কোনো ব্রাহ্মণ মারা গেলেও ব্রহ্মদৈত্য হতে পারে। এরা কারো প্রতি খুশি হয়ে আশির্বাদ করলে তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জিত হয়, কিন্তু কারো প্রতি বিরাগ হলে তার সমূহ বিপদ। দেবদারু গাছ , বেল গাছ কিংবা বাড়ির খোলা চত্বরে বাস করে। মাথাবিহীন ভূত। অত্যন্ত ভয়ংকর এই ভূত মানুষের উপস্থিতি টের পেলে তাকে মেরে ফেলে। কোনো দুর্ঘটনায়, যেমন রেলে কারো মাথা কাটা গেলে, সে স্কন্ধকাটা হতে পারে। ভয়ংকর হলেও, মাথা না থাকার কারণে স্কন্ধকাটাকে সহজেই বিভ্রান্ত করা যায়। গ্যাসীয় ভূত। এরা জেলেদেরকে বিভ্রান্ত করে, জাল চুরি করে তাদের ডুবিয়ে মারে। কখনো কখনো অবশ্য এরা জেলেদেরকে সমূহ বিপদের ব্যাপারে সতর্ক করে থাকে।খুব ভয়ংকর ভূত। অন্যান্য ভূত সাধারণত নির্জন এলাকায় মানুষকে একা পেলে আক্রমণ করে, কিন্তু নিশি গভীর রাতে মানুষের নাম ধরে ডাকে। নিশির ডাকে সারা দিয়ে মানুষ সম্মোহিত হয়ে ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে পড়ে, আর কখনো ফিরে না। কিছু কিছু তান্ত্রিক অন্যের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নিশি পুষে থাকে।গভীর নির্জন চরাচরে মানুষকে পেলে তার গন্তব্য ভুলিয়ে দিয়ে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয় এই ভূত। মানুষটি তখন পথ হারিয়ে বার বার একই জায়গায় ফিরে আসে, এবং এক সময় ক্লান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। অনেকটা নিশির মত এই ভূত গ্রামের পাশে জঙ্গলে বসে করুণ সুরে বিলাপ করতে থাকে। কান্নার সুর শুনে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে গেলে তাকে ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প বানিয়ে জঙ্গলের আরো গভীরে নিয়ে মেরে ফেলে। ছোট বাচ্চারা এর কান্নায় বেশি আকৃষ্ট হয়। হলো সেইসব মানুষের আত্মা যারা বাঘের আক্রমনে মৃত্যুবরণ করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়। সাধারনত সুন্দরবন এলাকায় এধরনের ভূতের কথা বেশি প্রচলিত কারণ বাঘের অভাশ্রম হলো সুন্দরবন। এসব ভুতেরা জঙ্গলে মুধ আহোরনে আগত গ্রামবাসীদের ভয় দেখায় এবং বাঘের সন্নিকটে নিয়ে যেতে চেষ্ঠা করে। মাঝে মাঝে এরা গ্রামবাসীদের ভয় দেখানোর জন্য বাঘের স্বরে কেঁদে উঠে।এ শ্রেণীর ভূতেরা পথিকের গন্তব্য ভুলিয়ে দিয়ে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয় এবং অচেনা স্থানে নিয়ে আসে। মাঝে মাঝে মানুষ একই রাস্তায় বারবার ঘোরপাক খেতে থাকে। ভূতরা কোন নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌচ্ছার পর তার শিকারকে মেরে ফেলে। এক্ষেতে শিকার তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এধরনের ভূতদের রাতে গ্রামের মাঠের ধারে পথের মধ্যে দেখা যায়। শিকার সবসময় একাকী থাকে বা দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।ডাইনি মূলত কোন আত্মা নয়, এরা জীবিত নারী। বাংলা লোকসাহিত্যে সাধারনত বৃদ্ধ মহিলা যারা কালো জাদু বা ডাকিনী বিদ্যাতে পারদর্শী তাদেরকেই ডাইনী বলা হয়ে থাকে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ডাইনীরা গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ধরে নিয়ে তাদের হত্যা করে এবং তাদের রক্ত খেয়ে ১০০ বছর বেঁচে থাকে। হাঁড়ি গড়গড়া ---- রাতে নির্জন পথে, হাঁড়িকে পিছু ধাওয়া করতে দেখা যায়। শুঁয়োরা ভুত ---- মাঠে যারা মল ত্যাগ করতে যান তারা দেখতে পান।

-

তোতন বললেন, ভূত কোথায় থাকে? 


নাটুবাবু বললেন, শেওড়া, তাল, দেবদারু, বেল, অশ্বত্থ প্রভৃতি গাছে একটি দুটি ভূতের দেখা পেতে পারেন। কিন্তু বেশি সংখ্যায় ভূত দর্শনের অভিলাষ থাকলে, আপনাকে যেতে হবে বিজন বনে, তেপান্তরে, কিংবা ভূষণ্ডির মাঠে।


সুমন্বাবু দেখলেন দোতলার জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে পালিয়ে গেল একজন।


সুমন্ত বাবু আততুন বাবু কাউকে কিছু না বলে ছুটতে লাগলেন তার পিছন পিছন। না তবু কিছু বুঝতে পারলেন না কথা বলার থাকে ওদের চোখ যে এত তীব্রভাবে তাকে দেখতে পাবে জানতে পারেননি নাটক দেখতে পাননি কিন্তু সুমন্ত উপহার দিতে লাগলেন আর তার পিছনে পিছনে শত্রু তারা প্রায় মাইলখানেক পরে একটা পুকুরের ধারে এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন।


সুমন্ত বুক রকমারি বারবার করে একটা ফাঁকা আওয়াজ করলেন সঙ্গে সঙ্গে সেই ভূতের সরদারের হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে পড়ল তোতনের পায়ের সামনে।

সেই ভূত কাল জোব্বা পরা পায়ে রণপা নিয়ে বলছে আমি দোতালার উপরে সাহায্যে হাত বাড়ায় আর লোককে ভয় দেখায় আমাদের এখানে চোরাকারবারির ব্যবসা আছে সে চোরাকারবারির ব্যবসা মানুষ থাকলে অসুবিধা হয় তাই মানুষকে ভয় পাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখে।


সে আরও বললো যেটা সেটা আরো আশ্চর্য ঘটনা সে বলল বাবু আমরাতো নকল ভূত কিন্তু একটা আসল ভূত কিন্তু আমরা দেখেছি এটা আপনাকে কি বার করতেই হবে আমরা নয় অপরাধী আমাদের জেলা দেবেন ঠিক আছে কিন্তু এই ভূত থাকে না বার করতে পারলে গ্রামের লোক ষষ্ঠীতে বাঁচতে পারবে না।


সেই চোখে থানায় হ্যান্ডওভার করে সুমন্ত আপাতত ফিরে এলেন নাটক আছে নাটকের সুমন্ত বললেন পরকাল নিয়ে আপনার খুব চিন্তা না তাহলে শুনুন পরকাল সম্বন্ধে আমার কাছে কিছু কথা, পরকাল হল একটি জগতের ধারণা, যে ধারণা অনুসারে ব্যক্তির শরীরের মৃত্যু হয়ে গেলেও তার চেতনার অস্তিত্ব থেকে যায়। পরকালের বিভিন্ন ধারণা অনুযায়ী মৃত্যুর পরেও থেকে যাওয়া ব্যক্তির এসেন্স কোন আংশিক উপাদান অথবা পূর্ণাঙ্গ আত্মা হতে পারে। এই এসেন্স কোন ব্যক্তিগত পরিচয় বহন করতেও পারে আবার নাও পারে যেমন ভারতীয় দর্শনের কথা। পরকালের উপর বিশ্বাস দর্শন থেকে আসতে পারে অথবা অতিপ্ররাকৃত বিশ্বাস থেকে আসতে পারে।কিছু লোকায়ত মতবাদ অনুসারে, মৃত্যুর পরও অস্তিত্ববহন করা এই সত্তা কোন অতিপ্রাকৃত জগতে অবস্থান করে, আবার অন্যান্য লোকায়ত মতবাদ অনুসারে এই সত্তার নবজন্ম ঘটে এবং পুনরায় জীবনচক্র শুরু হয়। এক্ষেত্রে পূর্বের জীবন সম্পর্কে কোন স্মৃতি থাকে না। এই মতবাদ অনুসারে সত্তার একটি অন্য জগতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত বারবার জন্ম ও মৃত্যুর প্রক্রিয়া চলতেই থাকে। পরকাল সংক্রান্ত বেশিরভাগ বিশ্বাসেরই উৎপত্তি মন থেকে।কিছু বিশ্বাস ব্যবস্থা বিশেষ করেপ্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুর পর সত্তা জীবিতাবস্থায় পৃথিবীতে তার নিয়ম অনুযায়ী বা কোন নির্ধারিত বিশেষ স্থানে গমন করে। অন্যদিকে পুনর্জন্ম বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুর পর কৃতকার্য অনুসারে সত্তার প্রকৃতি সরাসরি নির্ধারিত হয়ে যায়, এতে ভিন্ন কোন সত্তার সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয় না।

তোতন বললেন, প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তির যা জীবিত ব্যক্তিদের সামনে দৃশ্য, আকার গ্রহণ বা অন্য কোনো উপায়ে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম। গল্প প্রায়শই শোনা যায়। এই সকল বিবরণীতে ভূতকে নানাভাবে বর্ণনা করা হয়েছে: কখন অদৃশ্য বা অস্বচ্ছ বায়বীয় সত্ত্বায়, কখনও বা বাস্তবসম্মত সপ্রাণ মানুষ বা জীবের আকারে। প্রেতাত্মার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে ভবিষ্যদ্বাণী করার বিদ্যাকে কালাজাদু বলা হয়ে থাকে।প্রাক-শিক্ষিত সংস্কৃতিগুলোর মধ্যে ভূতের প্রথম বিবরণ পাওয়া যায়। সেযুগে কিছু নির্দিষ্ট ধর্মীয় প্রথা, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, ভূত-তাড়ানো অনুষ্ঠান ও জাদু অনুষ্ঠান আয়োজিত হত মৃতের আত্মাকে তুষ্ট করার জন্য। প্রচলিত বর্ণনা অনুযায়ী, ভূতেরা একা থাকে, তারা নির্দিষ্ট কিছু ঘুরে বেড়ায়, জীবদ্দশায় যেসকল বস্তু বা ব্যক্তির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিল সেগুলিকে বা তাদের তাড়া করে ফেরে। তবে ভূত বাহিনী, এমনকি ভৌতিক জীবজন্তুর কথাও শোনা যায়।


নাটুবাবু বললেন, মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আত্মা দেহত্যাগ করে। জীবাত্মা অবিনশ্বর। তবে কখনো কখনো জীবিত সামনে আকার ধারন করে। এটি পূরাণভিত্তিক একটি আধিভৌতিক বা অতিলৌকিক জনবিশ্বাস। প্রেতাত্মা বলতে মৃত ব্যক্তির প্রেরিত আত্মাকে বোঝায় ।সাধারণের বিশ্বাস কোনো ব্যক্তির যদি খুন বা অপমৃত্যু(যেমন: সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা ইত্যাদি) হয় তবে মৃত্যুর পরে তার হত্যার প্রতিশোধের জন্য প্রেতাত্মা প্রেরিত হয় । বিভিন্ন ধরনের রয়েছে এ সম্পর্কে ।


সুমন্তবাবু বললেন, বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতিতে ভূতের অস্তিত্ব বিশ্বাস করা হয়। আবার কিছু ধর্মে করা হয় না, যেমন ইসলাম বা ইহুদী ধর্মে। এসব ধর্মাবলম্বীদের মতে মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মা চিরস্থায়ীভাবে পরলোকগমন করে আর ইহলোকে ফিরে আসে না।


কিন্তু আজকের ভূত হল একটা সামান্য চোর। সে ভয় দেখাত সবাইকে। তবে ও আরেকটা ভূতের কথা বলল। তোতন বলল, আমার মনে হয় ওটা এলিয়েন। ওরা পৃথিবী দেখতে আসে আবার চলেও যায়।


নাটুবাবু বললেন, তাহলে বলছেন অন্য গ্রহেও প্রাণ আছে? 


সুমন্ত বাবুই সারাইনোডু বাবুকে চুপ করতে বললেন তারপর তিনজনই বেরিয়ে গেলেন চুপিচুপি জঙ্গলের ভেতর জঙ্গলের ভেতর তারা বসে থাকলেন মশা কামড় খেয়েও তারা প্রায় দু'ঘণ্টা বসে থাকলেন তারপর জঙ্গলে একটা ছায়ামূর্তি দেখলেন দেখলেন সেই ইউরেনাস গ্রহ থেকে আসা এলিয়েন সে জিজ্ঞেস করছে তোমরা জঙ্গলে কি করছো তখন সুমন্ত অবশ করে বললেন আপনাকে দেখার জন্যই আমরা বসে আছি এলিয়েন বললেন আমরা বেশিক্ষণ পৃথিবীতে থাকি না শুধু কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করেই আমাদের মহাকাশযানে চলে যায় আচ্ছা তোমরা ভালো থেকো।


এতক্ষণ নাটুবাবু কোন কথা বলেন নি। চুপ করে ছিলেন। এবার তিনি চিৎকার করলেন, ইউরেকা ইউরেকা। সুমন্তবাবু বললেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে অ্যামেরিকান জোত্যির্বিজ্ঞানী পারিসভাল লোয়েল ভেবেছিলেন যে তিনি মঙ্গলের পৃষ্ঠে একটি খাল বয়ে যেতে দেখেছেন।সেখান থেকেই তিনি ধারণা করেছিলেন যে পৃথিবীর প্রতিবেশী এই গ্রহে শুধু প্রাণের অস্তিত্বই নয়, সেখানে হয়তো অগ্রসর এক সভ্যতাও থাকতে পারে।তখনই মানুষের কল্পনা আরো পাখা মেলতে শুরু করে। এইচ জি ওয়েলস লিখে ফেলেন তার বিখ্যাত উপন্যাস- দ্যা ওয়ার অব দা ওয়ার্ল্ডস।এছাড়াও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে হলিউডের বহু সিনেমা।কিন্তু এই কল্পনায় জল ঢেলে দেয় মঙ্গল গ্রহ অভিমুখে পাঠানো কয়েকটি মহাকাশ যান।৬০ ও ৭০ এর দশকের এসব অভিযান থেকে ধারণা হতে থাকে থাকে যে মঙ্গলে কোনো অস্তিত্ব নেই খালের।তারপর ভাইকিং ল্যান্ডার থেকে ওই গ্রহের প্রথম ছবি পাঠানো হয় পৃথিবীতে। বিজ্ঞানীরা তখন মনে করলেন এটি অত্যন্ত ঠাণ্ডা একটি গ্রহ।ওখান থেকে পাঠানো হয় মাটির নমুনা। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিলো প্রাণেরও নমুনা আছে ওখানে কিন্তু পরে সেটাও বাতিল হয়ে যায়।ফলে গত দুই দশক ধরে মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন- এটি শুকনো, ধূলিময় লাল একটি গ্রহ।তারপর নব্বই এর দশকে এবং একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে ওই আরো বেশ কয়েকটি মিশন পরিচালিত হয়।সেখান থেকে যেসব তথ্য পাঠানো হয় সেখান থেকে বিজ্ঞানীরা এটা ধারণা করতে শুরু করেন যে ওই গ্রহের কোথাও কোথাও উপরিপৃষ্ঠের নিচে হয়তো বরফ থাকতে পারে। তারপর ধারণা করা হলো সেখানে কোনো এক কালে পানির প্রবাহ ছিলো। ছিলো হ্রদ, এমনকি সমুদ্রও ছিলো।কিন্তু মঙ্গলে তখন এমন এক বিপর্যয় ঘটলো, যা বিজ্ঞানীরা আজও বের করতে পারেনি, যে ওই গ্রহটির জল ও পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেলো।কিন্তু গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা তাদের নাটকীয় এক আবিষ্কারের খবর ঘোষণা করলেন মঙ্গলে আছে তরল পানির প্রবাহ।নাসা বলছে, “মঙ্গল গ্রহে তরলের অস্তিত্ব আছে বলে আমরা এই প্রথমবারের মতো প্রমাণ পেয়েছি। ওই গ্রহে আমরা এমন কিছু খুঁজে পেয়েছি যেটা থেকে স্পষ্ট যে আজকের মঙ্গল গ্রহে জল প্রবাহ আছে। বছরের পর বছর ধরে ওই গ্রহে যতো মহাকাশ যান, যতো মিশন পাঠানো হয়েছে, যেসব তথ্য ও ছবি পাওয়া গেছে, সেসব থেকে তরলের ব্যাপারে আন্দাজ করা গিয়েছিলো। তাহলে প্রাণী থাকাও আশ্চর্যকথা নয়। 


তোতন বলল, মানুষ নিজেই নিজের ক্ষতি করছে, আজ পর্যন্ত সেসবের পক্ষে কোনো প্রমাণ ছিলো না।”ব্যবহারের পর যে প্লাস্টিক আমরা ছুড়ে ফেলছি সেটা সমুদ্রে যে খাদ্যচক্র আছে তাকে বিনষ্ট করছে।বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্লাস্টিকের বোতল ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সমুদ্রে আর সেসব প্লাস্টিক সামুদ্রিক প্রাণীর জন্যে বড়ো রকমের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।ইংল্যান্ডের প্লেমাউথ ম্যারিন ল্যাবরেটরি একটি গবেষণা করে দেখিয়েছে, প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা যখন পানির সাথে মিশে যায়, খাদ্যচক্রের একবারে তলদেশে থাকা প্রাণীরা এসব গলাধঃকরণ করে থাকে।ধারণা করা হয়, প্রতি বছর ৮০ লাখ টন প্লাস্টিক দ্রব্য সাগরে ফেলা হয়।এলিয়েন বলেছিল,মানুষ তোমরা সাবধান হও। তা না হলে ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবীর অস্তিত্ব। 

Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024