মতুয়া সম্প্রদায়: আরেকটি আত্মঘাতী হিন্দুদের দল - বরুণ মণ্ডল || প্রবন্ধ || নিবন্ধ || Article writing

 মতুয়া সম্প্রদায়: আরেকটি আত্মঘাতী হিন্দুদের দল

বরুণ মণ্ডল



    হিন্দু তথা সনাতন ধর্মের বিভেদের অন্ত নেই। শাক্ত, বৈষ্ণব তো ছিলই। এসেছে মতুয়া, জগৎবন্ধু, অনুকূল পন্থী, লোকনাথপন্থী, ব্রাহ্মণ্যবাদী, রামকৃষ্ণ মিশন, আউল, বাউল, ফকির, কর্তাভজা বা সহজিয়াপন্থী ইত্যাদি অগুনতি ধর্মমত। কেউ কারো সমালোচনা করতে ছাড়েন না; যুক্তি দেন তারাই ঠিক, বাকিরা ভুল। আর সুবিধাবাদী হিন্দু বিরোধীরা ভদ্রলোকের মুখোশ পরে হিন্দু ধর্মের মধ্যে ডিভাইড এন্ড রুলস পলিসি চালানোর জন্য সাধারণ হিন্দু জনতাকে বোঝায় 'যত মত তত পথ'! ধর্মের এই ভুলভুলাইয়াতে সাধারণ হিন্দুরা আজ নাজেহাল।

    বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ ধর্ম সম্পর্কে অসচেতন। ফলে ধর্মের তত্ত্ব নিয়ে তাদেরকে 'হিপটোনাইজ' করা খুবই সহজ। এই কারণে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। দোষ ধর্মের নয়, এ দোষ অজ্ঞতার। যত মত তত পথের দোহাই দিয়ে সংকীর্ণ ধর্মপথ বা ধর্মের শাখাগুলোকেও মহামূল্যবান মনে করে মুখ্য বা ধর্মের মাতৃস্বরূপ 'সনাতনধর্ম'কে হেলাফেলা করার চেষ্টা করে। একদল ধর্মের যত মত তত পথের ভুলভুলাইয়াতে পড়ে ধর্মকেই অসম্মান বা অমান্যতা করে। যেমন কিছু সাম্প্রদায়িক লোক মনে করে যে সনাতন ধর্ম একটি সাম্প্রদায়িক ধর্ম। কিন্তু এটি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সংকীর্ণতা এবং বিকৃত বুদ্ধিজাত অন্ধকারের প্রকাশ। আমরা যদি আধুনিক বিজ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে সনাতন ধর্মের যথার্থতা বিশ্লেষণ করি তখন দেখব যে এই ধর্ম পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের ধর্ম, শুধু তাই নয় এই ধর্ম সমগ্র বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের প্রতিটি জীবের ধর্ম। হিন্দু ধর্মের মধ্যে এই বিভেদতার কোন স্থান নেই। যত মত তত পথের দিশা নেই। ধর্ম নিয়ে কোন সংশয় নেই। ধার্মিক, অধার্মিক, নাস্তিক সবার প্রশ্নের সব উত্তর যথেষ্ট ভাবে মজুত আছে।

     হিন্দু শাস্ত্রের বিশালতা এবং মানুষের মস্তিষ্কের ক্ষমতার সংকীর্ণতা ধর্মের সংশয় সৃষ্টি করেছে। আপাত অর্থে বৈদিক রীতিনীতি গুলিকে ধর্মীয় কুসংস্কার মনে হলেও গবেষণা করে জানা যাচ্ছে সুগভীর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। যেমন,নিরামিষ ভক্ষণ ক্ষতিকর ঘোষণা করেও আজকের প্রতিটি গবেষণা প্রমাণ করছে নিরামিষ খাদ্যই অতি উত্তম। একাদশী উপবাস পালন ধর্মীয় কুসংস্কার মনে করলেও আজ প্রমাণিত উপবাস কতখানি স্বাস্থ্যসম্মত। গবেষণায় আজ প্রমাণিত যে গায়ত্রী মন্ত্রের ব্রহ্মমুহূর্তের নিয়মিত উচ্চারণ মস্তিষ্কের উর্বরতা ঘটাতে অদ্বিতীয়। ইত্যাদি কত কিছু।

   বর্তমানে কিছু জাত-পাত ভেদাভেদ করা মানুষ বিশেষ করে ব্রাহ্মণদের তীব্র সমালোচনা করতে শুরু করেছে, মতুয়া সম্প্রদায়িত ব্রাহ্মণদের কথা শুনলে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে! ব্রাহ্মণদের জন্যই নাকি তাদের এত অধঃপতন! কিন্তু সঠিক আলোচনার প্রয়োজন এর জন্য আজকের এই আলোচনা।

   পৌরাণিক ইতিহাস জানাচ্ছে, ত্রেতা যুগে ক্ষত্রিয়দের হাতে শাসন ক্ষমতা ছিল, মহাভারতের সময়কালে যাদব ও ক্ষত্রিয়দের হাতে শাসন ক্ষমতা ছিল, এরপর দলিত, মৌর্য্য, বৌদ্ধদের হাতে শাসন ক্ষমতা ছিল, তারপরে ৬০০ বছর আরব লুটেরা মুসলিম বাদশাহদের হাতে ভারতের শাসন ক্ষমতা ছিল। তারপরে ৩০০ বছর ব্রিটিশদের হাতে শাসন ক্ষমতা ছিল, এরপর ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ৭৫ বছর ধরে আম্বেদকরের সংবিধানের হাতে ভারতের শাসন ক্ষমতা রয়েছে। এরপরও বলা হচ্ছে যে সমাজে সবচেয়ে বেশী অত্যাচার নাকি ব্রাহ্মনদের দ্বারা করা হয়েছে।

   বর্তমানে ব্রাহ্মনদের গালি দেওয়া, অপমান করা একটা ট্রাডিশনে পরিনত হয়েছে। কেউ কেউ ব্রাহ্মনদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, তো কেউ আবার ব্রাহ্মনদের মন্দির থেকে বের করার চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে । কিছু তথাকথিত মানুষ বিশেষত মতুয়া সম্প্রদায়ের দলপতিগোসের ব্যক্তিরা আজও অভিযোগ করেন, ব্রাহ্মনদের কারনেই নাকি উনারা পিছিয়ে পড়া জাতিতে পরিনত হয়েছে। কেউ আবার বলেন সমাজে পিছিয়ে পড়ার মূলে ব্রাহ্মনরা দায়ী, দেশে অন্ধবিশ্বাসের মূলেও নাকি ব্রাহ্মনরা দায়ী। এমনকি কিছু উচ্চ শিক্ষিত ব্রাহ্মণের সন্তানও এই দাবিগুলিকে সমর্থন করে! কিন্তু এই দাবি কতটা সত্যি!

   বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতিবিদ কৌটিল্য ব্রাহ্মণ সন্তান ছিলেন, যিনি মগধ রাজ্যকে সংকট থেকে মুক্তি দিয়েছিল এবং জনহিতৈষী সরকার স্থাপনা করেছিলেন, ভারতের সীমানা ইরান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিলেন এবং কালজয়ী 'অর্থশাস্ত্র' রচনা করেছিল যেটা আজ সারা বিশ্ব পড়ছে ।

   আদি শঙ্করাচার্য যিনি সমস্ত হিন্দু সমাজকে এক সূত্রে বাঁধার জন্য চেষ্টা করেছিলেন, যার ফল স্বরুপ চারধাম যাত্রা শুরু করেন, চারটি মঠ নির্মান করেন সেই আদি শংকরাচার্যও কিন্ত ব্রাহ্মন ছিলেন ।

   আজ কর্নাটকের যে লিঙ্গায়েতদের কংগ্রেস হিন্দুদের থেকে আলাদা করার চেষ্টা করছে সেই লিঙ্গায়েতদের গুরু এবং লিঙ্গায়েতদের সংস্থাপক বাসব একজন ব্রাহ্মণ ।

    ভারতের সামাজিক ও বিচারগত উত্থান, ভিন্ন জাতির সমানতা, ছুত-অচ্ছুত ভেদভাবের বিরুদ্ধে সমাজকে এক করার জন্য ভক্তি আন্দোলন করার মূল পথপ্রদর্শক সন্ত রামানন্দ একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন । আজ দিল্লীর অক্ষরধাম মন্দিরে সব জাতির প্রবেশ অবাধ সেই মন্দির স্থাপনাকারী স্বামী নারায়ণ সম্প্রদায়ের ছিলেন, যার জনক ঘনশ্যাম পান্ডেও একজন ব্রাহ্মণ ছিল ।

আর্য সমাজ ও ব্রহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ সরস্বতীও ব্রাহ্মণ সন্তান ছিলেন ।

    সতীদাহ প্রথা থেকে সমাজকে মুক্তি দেওয়ার মূল কারিগর রাজা রামমোহন রায় একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন ।বিধবা বিবাহ আইন চালু করার মূল কারিগর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরও ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

   ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের মহিমা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলেন 'রামচরিত মানস' এর রচয়িতা তুলসীদাসও একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

 বন্দেমাতরমের মত গান লিখে দেশপ্রেম জাগানো বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

   নেহেরু সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে পদত্যাগ করা এবং কাশ্মীরকে রক্ষা করার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন সেই জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

   হিন্দু সমাজের একতা এবং হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে তৈরী সংগঠন "রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের" প্রতিষ্ঠাতা ডঃ কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

সঙ্ঘের দ্বিতীয় সর-সঙ্ঘচালক ডঃ গোলওয়ালকরও একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

  একাত্ম মানবতাবাদের জন্মদাতা পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ও একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

   ১৯৪৬ সালে "দ্যা গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং" থেকে হিন্দুদের রক্ষাকর্তা গোপাল মুখোপাধ্যায়ও একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন ।

  এরপরও যদি কেউ মনে করেন ব্রাহ্মণরা শুধু মন্দিরে ঘন্টা বাজাতে এবং চাল ডাল কলা আয়ের জন্য শুধু পৌরহিত্বের কাজে লাগে তারা জেনে নিন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘোড়সওয়ার বীর যোদ্ধা যিনি ২০ বছরে কোনো যুদ্ধে হারেননি, যিনি মুসলিম শাসকদের আতঙ্কিত করে রেখেছিলেন সেই বাজীরাও বল্লাল একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন যাকে "বাজীরাও মস্তানী" ফিল্মে দেখে আপনারা হাততালি দিয়েছিলেন ।

   ব্রাহ্মণরা সমাজকে একসূত্রে বাঁধার চেষ্টা করে গেছেন, ব্রাহ্মনরাই জাত পাতের বিরুদ্ধে প্রথম রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, ব্রাহ্মনরাই সমাজের কুসংস্কারকে দূরে সরানোর জন্য প্রতিবাদ করে গেছেন তাই হিন্দুদের মধ্যে বিভেদের রাজনীতি ঢোকানোর জন্য ব্রাহ্মনদের গালি দেওয়া, অপমান করা বন্ধ করা আশু প্রয়োজন। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র জাতিভেদ প্রথা নয়। সমাজকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করবার এক অবিসংবাদি কৌশল। চার ধরনের সৈন্য দ্বারা হিন্দু সমাজকে দূর্ভেদ্য চক্রব্যূহ রচনা করা হয়েছিল স্বয়ং বৈদিক ঋষিদের কর্তৃক। এই কর্মভেদ বা ক্ষমতা অনুসারে পদের বিভাগ প্রতিটি সফল কর্ম ক্ষেত্রে আজো দেখা যায়। যারা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট পড়ছেন তারা বেশ ভালো রকম জানেন। সনাতন ধর্ম কৃষ্টি কালচার বিরোধী অপশক্তির অপপ্রচারে সেই প্রতিরক্ষার চক্রব্যূহের প্রধান ব্যূহ 'ব্রাহ্মণ' অংশকে চিহ্ন ভিন্ন করা হয়েছে। 

 মতুয়া সম্প্রদায় হিন্দু ধর্মের প্রতিরক্ষার চক্রব্যূহের প্রধান অঙ্গ ব্রাহ্মণের উপর আঘাত হেনে ে নিজেদের প্রতিপত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু গীতা অনুসারে ব্রাহ্মণ কোন জাত নয়। গুণের আধারে চতুরবর্ণ ভগবান স্বয়ং সৃষ্টি করেছেন। গীতার চতুর্থ অধ্যায় তেরো নম্বর শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং বলেছেন, "চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ।/ তস্য কর্তারমপি মাং বৃদ্ধ্যকর্তারমপি মাং বৃদ্ধ্যকর্তারমপিব্যয়ম্।।" অর্থাৎ প্রকৃতির তিনটি গুন ও কর্ম অনুসারে আমি মানব সমাজে চারিতি বর্ণ বিভাগ সৃষ্টি করেছি। আমি এই প্রথার স্রষ্টা হলেও আমাকে অকর্তা এবং অব্যয় বলে জানবে। 

   ব্রাম্ভন-ক্ষত্রিয়-বৈশ্য এবং শূদ্র এই বিভাজন নিয়ে আমাদের কত দুশ্চিন্তা। কত আন্দোলন চলছে। এই বর্ণভেদ সৃষ্টিকারী গীতা এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণকেও সমালোচনা করতে ছাড়ছিনা। অথচ শ্রীমদ্ভাগবতগীতার অষ্টাদশ অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে, কৃষ্ণভক্ত বা বৈষ্ণব ব্রাহ্মণের থেকেও উত্তম। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, তিনি যেমন সমাজের চার বর্ণের অতীত, তার ভক্তও তেমন এই বর্ণ বিভাগের অতীত; এমনকি তিনি জাতি কুলাদি বিচারেরও অতীত। তাহলে যারা বলছেন হিন্দু সমাজের বর্ণভেদ প্রথার জন্য হিন্দু সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে নতুন সম্প্রদায় তৈরি করার প্রয়োজন। (যে কারণে মতুয়া সম্প্রদায় আন্দোলন করছে) আসলে কি তারা হিন্দু ধর্মটাকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বুঝেছেন? নাকি বিধর্মীদের চালাকিতে পড়ে আত্মহননের পথ অবলম্বন করেছেন!

   এ তো গেল শাস্ত্রীয় যুক্তি তক্কের কথা। স্বাধীনতার প্রাক্কালে যোগীন্দ্রনাথ মন্ডলের কাহিনী নিশ্চয়ই সবার জানা। স্বজাতির প্রতি তীব্র ঘৃণা এবং বিজাতির প্রতি মোহের ফলে কিভাবে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল। সে কাহিনীর পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনাতে আলোচনা আর দীর্ঘ করছি না। বর্তমান রাজনীতিতেও মতুয়া সম্প্রদায় সেই যোগীন্দ্রনাথেরই পথ অবলম্বন করছেন। ইতিহাস থেকে তারা শিক্ষা নিচ্ছেন না। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে মতুয়াদের মাখামাখি শুধু আজকের নয়। তারা বামপন্থীদের সঙ্গেও ছিল, তৃণমূলের সঙ্গেও আছে আবার বিজেপির সঙ্গে আছে। পাওনা গন্ডার রাজনীতি দূরদৃষ্টিতার পরিচয় নয়। অবশেষে অতি সংক্ষেপে বলি,যে রাজনীতি ধর্ম-কৃষ্টি-সংস্কৃতি সর্বোপরি অস্তিত্বকে রক্ষার রসদ যোগায়, সেই রাজনীতিকে আদর্শ করে এগিয়ে যাওয়াই দূরদৃষ্টিতা।



Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024