Wednesday, May 31, 2023

দহন - সুদীপ্ত বিশ্বাস || Dohon - Sudipta Biswas || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 দহন 

সুদীপ্ত বিশ্বাস


 


ধুলোর ঝড় উঠেছে মরুরাত্রিতে


চাপচাপ অন্ধকার


বিষাদ নদীর শীতল স্রোতের আবর্ত


ঘুটঘুটে মধ্যযুগীয় অন্ধকারে


পেঁচারা ওড়াউড়ি করছে


আমার দু'হাতে শুধু সূর্য পোড়া ছাই


তুমি নেই


তোমার আমার মধ্যে অনন্ত গ্যালাক্সির ব্যবধান।


আরও দূরে সরে যাচ্ছি আমরা


আমার চারিদিকে দাবানল


আমার বুকের ভিতরে জ্বলন্ত ভিসুভিয়াস


আমার চারিদিকে পাথর ভাঙার শব্দ


আমার হৃদয়ের স্ফটিকটা ভেঙে


কাচের টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে মেঝের ধুলোয়


কান্নারা বোবা হয়ে গেছে


অশ্রুরা স্তম্ভিত



ভাঙা মাস্তুল হাতে নিয়ে আমি একলা দাঁড়িয়ে আছি।

তবে যাও তবে যাও - তন্ময় দাস || Tobe jaou Tobe jaou - Tanmoy Das || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 তবে যাও তবে যাও

তন্ময় দাস 


রক্তে মাখা অতিথকে যদি দেখতে চাও তবে যাও তবে যাও।


সপ্ন টাকে ভালো করে যদি দেখতে চাও তবে যাও তবে যাও।


ওই নদীর প্রান্ত শেষে যদি নিজেকে দেখতে চাও তবে যাও তবে যাও।


আমার অপেক্ষায় দারিয়ে না থেকে নিজের লক্ষে এগিয়ে যাও এখনি যাও এখনি যাও ।


অন্যের দিকে না তাকিয়ে নিজের লক্ষে এগিয়ে যাও তবে যাও তবে যাও।


যদি নিজের লরাইয়ে তুমি যদি হেরে যাও তবে লরাই ছরে দাও কেনো ।


ওই ধানে খেতের মধ্যে যদি সপ্নকে খুজে পাও তাহলে যাও দৌড়ে যাও।


ওই সপ্নকে হাতে পেতে যদি আমায় ভুলে যাও তবে যাও তবে যাও ।


ওই করা রোদ্দুরের মাঝে যদি সফলতা দেখতে পাও তবে আমায় ভুলে গিয়ে তুমি যাও তুমি যাও

বৃষ্টি - সায়ন তরফদার || Brishti - Sayan Tarafdar || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 বৃষ্টি

সায়ন তরফদার


বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিল আমায়

আজ তবে দেখা না হওয়াই থাক

বৃষ্টিতে তোর আজও অনেক ভয়

মুহূর্তগুলো বদলে গেলে, যাক...


প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকুক যেমন ছিল 

আদর্শগত অমিলও কিছুটা থাক

মুখে মুখে বলা মানুষের কবিতায়

সব প্রেম শুধু অধিকার খুঁজে পাক


মানুষের অধিকারে কী লাভ?

যদি না তারা বাঁচার শিক্ষা পায়

ভালোবাসাটা অপূর্ণই থেকে গেলে

রাজনীতিটাও বেরঙীন হয়ে যায়


বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিক আবার

যেভাবে ঠিক ভিজিয়ে দিত আগে

এক জীবনে কাউকে না পেলে

বৃষ্টির মতো আরেকটা জীবন লাগে

শেষ দৃশ্যে - পীযূষ কান্তি সরকার || Ses Drishe - Pijus kanti Sarkar || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 শেষ দৃশ্যে

       পীযূষ কান্তি সরকার


জঠরের জ্বালা, হৃদয়ের জ্বালা --

সকল জ্বালার শেষ করে 

দেহটা চিতার আগুনে জ্বলে যায়।

হাজার হাজার মুক্তো যেন

মাটিতে ঝরে পড়ে

পলকে হারিয়ে যায়।

শোকস্তব্ধ শ্মশান ঘাটে রয়ে যায়

শুধু ফুল, ফুলের মালা আর নীরবতা

আর 

ধূপ-চন্দন-কস্তুরির সৌরভ।


সেই শেষদৃশ্যে চলে তখন

হিসেবনিকেশ --

শিল্পী আর তাঁর শিল্পের

বিজ্ঞানী আর তাঁর আবিষ্কারের

কবি আর তাঁর কবিতার

... ... ... ...

স্রষ্টা আর তাঁর সৃষ্টির।

ফুঁক্যে দিব্য বাঁশি - চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী || Fukhhe dibba banshi - Chiranjit bhandari || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 ফুঁক্যে দিব্য বাঁশি

   চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী 


তাড়ির লেশায় মাত্যে ফাগুন মাসের রাত্যে

ফুঁক্যে দিব্য বাঁশের বাঁশি তুর নামটা ধরে

জল আইনবার লছনাতে মাটির কলসি লিয়ে হাতে

আসবি ছুটে রাধার মতো ঐ লীল শাড়িটা পরে।

মাতাল করা সুরে তুই থাকত্যে লারবি ঘরে

পরত্যে যাইঞে কাজল ভুল্যে পরে ফেলবি ঠোঁটে

তুর আসার পথ ভাল্যে মহুল ফুল রাখব্য তুল্যে

সারা রাতটা কাটায় দিব পড়্যে পেম সুহাগের মাঠে।

জল আয়নায় দ্যাখবি মুখ বুকের ভিতর পরম সুখ

সারারাতটা থাকব্য ডুবে পেমের মালা গাঁথ্যে

কমরে দিব্য ঝিঙা ফুল বাঁধ্যে দিব মাথার চুল

বুকের উপর মহুল মালা রইবেক লেশায় মাত্যে।

তুর ঐ নাভি পদ্মে পড়বেক শিশির ছিটকে 

পায়ে দিব্য পরায়েঁ কলমি লতার লুপুর 

হাতে দিব্য ফুলের তড়া দ্যাখত্যে লাগবি লজর কাড়া

যেন আষাঢ় মাসের জল কুমুদের পুকুর।

চড়চড়াঞ্যে বাড়বেক রাত রাখব্য হাতে হাত

ডাগর খোঁপায় জোনাক ধরে দিব্য আনে গুঁজে

সুহাগ ভরে আসব্য কাছে যেমন ময়ূর লাচে

বুকের উপর মাথা রাখ্যে মরবি বেদম লাজে।

তুর আমার পিরিত কথা হিয়ার মাঝে কাব্যগাঁথা 

দ্যাখবেক বনলতা পাকপাখুড়ি দুচোখটা ভরে 

তাড়ির লেশায় মাত্যে ফাগুন মাসের রাত্যে

ফুঁক্যে দিব্য বাঁশের বাঁশি তুর নামটা ধরে ওগো তুর নামটা ধরে।

কোথাও ডাকে না কেউ ,পাখি ডাকে - সোহরাব পাশা || Kothaou Dake na keu, pakhi Dake - Shorab pasa || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা||

 কোথাও ডাকে না কেউ ,পাখি ডাকে

সোহরাব পাশা


মেঘের পাতায় ঢাকা স্মৃতির ভ্রমণ

আকাঙ্ক্ষার কারুকাজ

উন্মাদ দুপুরে বিশ্বাসের ছায়া বৃক্ষে ভাঁজ করা

নৈঃশব্দ্যের বিরহ যাপন ,


দীর্ঘ উপেক্ষার অন্ধ নদী

জল নেই ধূলিক্ষেতে হাওয়ার সিম্ফনি;


বিভ্রান্ত মানুষ শুধু ছোটে দূরের স্টেশনে যায়

ফিরে আসে স্বপ্নঘড়ির নিশ্চুপ শব্দে

কোথাও ডাকে না কেউ অমিয় সন্ধ্যায়

মুখোমুখি একা

নিবিড় ভাষায় রাত্রির আড়ালে যেতে;


তোমাকে আবৃত্তি করে বিঁধেছে বেভুল অন্ধ চোখে

তীব্র বিষাদের -নিঃস্বতার নীল কাঁটা

কোথাও ডাকে না কেউ ,দূরে পাখি ডাকে ;

তবুও যেতে হয়

যদি তুমি ফিরে যাও বিষণ্ণ একাকী ।

পারি - সুশান্ত সেন || Pari - Susanta Sen || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 পারি

সুশান্ত সেন



শুধু কবিতার জন্য সব পারি

এত বড় সাহস ত ছিল না।

তাই গা বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে ,

দাবি গুলো মেটাতে মেটাতে 

যত টুকু পারা যায় , ততটুকুই ---

এখন সাঁঝ বেলাতে 

তাই

যত টুকু পারা যায় , ততটুকুই ---

ততটুকুই ---

এর বেশি কিছু পারিনা , সে জানে

তাই কবিতা কে রেখে দিই সামনের 

                     ফুলভরা বাগানে ।





প্রেমে আছি, যুদ্ধেও আছি - নাসির ওয়াদেন || Preme achi, Juddheu achi - Nasir Oaden || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 প্রেমে আছি, যুদ্ধেও আছি

           নাসির ওয়াদেন


কতটা রাত কাটলে তবে একটা ভোর আসে

ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি

ঘুম নয় মৃত্যুই আচ্ছন্ন করে রাখে

এসবই মনের কল্পনা বা আলো-আঁধারী


জীবনকে জয় করতে গিয়ে পুঁথি খুঁজছি

কোনো সরলসূত্র থাকলে জানাবেন বৈকি

প্রেম শুধু ভালবাসা নয় আবর্জনা নিষ্কাশন

আবর্জনা আর স্তূপ মেখে জড়িয়ে থাকা


খাবারের স্বাদ পেতে লড়াই চলছে সমানে

লড়াইয়ে হারজিত থাকবে কি থাকবে না

সেই বিচারের দায় যাদে‌র তারা জেগে ঘুমায়

আমার কাজ ক'জন সৈন্য মারা গেল দেখা


মৃত্যুর আগে প্রেম সলিলে ঝাঁপ দেয় রাধা

আমার পড়শি খোনার বউ বড্ড খুনসুটে

শাশুড়ির সাথে নিত্য যুদ্ধ জানালায় আঁটা

সাদা-চোখে দেখি কেউ কম নয়,ঝগড়ুটে

        

অনুভব‌‌ - রমা খাঁ || Onuvab - Rama Khan || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 অনুভব 

রমা খাঁ 


নিজেকে লুকাবে কি করে 

আমার অতল নির্জনতায় ভেজা তোমার আড়াল 

তোমার না বলা কথা আমার ঠোঁটে, 

আমার পলকে তোমার চোখের ইশারা 

তোমার প্রতিটি অনুভূতি আমার অনুভবে, 

তোমার সৃষ্টির আমি বুদবুদ, দাবার দানের বোরে

তোমার আনন্দের ঝরনা আমার বুকে  

তোমার ভ্রূর ভাঁজে ধরে রাখা - ফেলে আসা

 বিকেল আমার গোধূলিতে 

তোমার আশায় আমার স্বপন, 

তোমার উন্মুক্ত চলাচল আমার সম্মুখে 

তোমার নৈঃশব্দে আমার ধূসর রিক্ততা, 

তোমার জীবন - সলিলে আমি তরঙ্গ। 


                            

অনুকম্পা - অসীম কুমার সমাদ্দার || Onukompa - Ashim Kumar Samadar || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 অনুকম্পা 

অসীম কুমার সমাদ্দার


উড়ে যাব একদিন প্রমিথিউসের নাম করে 

কোন চৈতালি রাতে , তোমার জানালার কাছে ।

তুমি থেকো জোনাকি হয়ে আলো ধরে ,

ইঙ্গিতে ভুলিয়ে দিতে দুঃখের গল্পগুলো হাসিমুখে ,

ঝরে পড়বে তখন তারাদের অনুকম্পা 

চারদিকে তোমার অশ্রু-ডানা ভর করে ।

ভালবাসার টীকা - কাজল মৈত্র || Valobasar Tika - Kajal maitra || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

ভালবাসার টীকা

      কাজল মৈত্র 


কে পরিয়েছে তোমার কপালে

ভালবাসার অমোঘ টীকা ,

কিসের টানে তুমি নেমেছ

পৃথিবীর ছায়াময় পথে ,

তোমার চোখের শুকনো জলে

একটা ভিসুভিয়াসের জন্ম নেয় ,

তোমার ওষ্ঠে নামুক বৃষ্টি

বৃষ্টি হল প্রেম

আর প্রেম মানে নতুন জীবন।

গুণধরের বিয়ে - চন্দন চক্রবর্তী || Gunodhorer Biye - Chandan Chakraborty || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 গুণধরের বিয়ে

চন্দন চক্রবর্তী


কি হে ভায়া,কেমন আছো ? হঠাৎ করলে বিয়ে !

তাকেই করলে,ওই যার সাথে ছিল ইয়ে টিয়ে ?

না না দাদা,কি আর বলি,সেই মেয়েটার কথা,

ভাবলে বুকে ব্যাথা জাগে,ঘুরতে থাকে মাথা ।


কেন,কেন ? কি হয়েছে ? ব্যাপারটা কি শুনি,

মেয়ে তো বেশ ফর্সা,লম্বা,তাছাড়া সে গুণী,

গড়ন তাও ভারি মিষ্টি,মায়াবী চোখ দুটো,

চলন,বলন সবই ভালো,কিছু ছিল ঝুটো ?


সে কথা নয়,সে কথা নয়,শুনুন তবে বলি,

শ্বশুর মশাই কিপটে হলে কেমন করে চলি ?

দুলাখ আগাম দিলেই দাদা চাকরি আমার পাকা,

টাকা চাইতেই,গেলেন চটে,মানুষ এমন বাঁকা !


সেতো হবেই,শিক্ষক তিনি,বিদ্বান মানুষ বটে,

ঘুষের চাকরি শুনেছেন যে,তাই গিয়েছেন চটে,

তাছাড়া ভাই তোমার চাকরি,তুমি খাবে দাবে,

তিনি কেন টাকা দেবেন ? কেন চাইতে যাবে ?


শুনুন দাদা,আমি হলাম মাধ্যমিক ফেল ছেলে,

তাতে করে কি এসে যায় নইতো এলেবেলে !

ছেলে মানে সোনার আংটি,সেতো সবাই জানে,

হোক না বাঁকা তবু তাকে সবাই সোনা'ই মানে ।


বেশ ভায়া,তারপর বল,ঘটেছিল কি পরে,

টাকা দিতে শ্বশুর রাজি ? বউ আনলে যে ঘরে ?

চাকরি তোমার হয়ে গেছে ? মুখটা হাসি হাসি !

মনিকাঞ্চন যোগ হয়েছে,মনে খুশির রাশি !


কি যে বলেন,শুনুন তবে ঘটলো গিয়ে শেষে,

ঘটক ঠাকুর খবর পেয়ে চুপি চুপি এসে,

সরেস মেয়ের খবর দিতেই নিলাম বিয়ে করে,

গায়ের রংটা বেজায় কালো,কে আর সেটা ধরে ।


পাঁচ লাখ নিলাম এক তো যাবে,সাবান কিনবো দাদা,

ভালো রকম ধোলাই দিলেই বউ তো তখন সাদা,

দু লাখ দিলে চাকরি হবে,বাকি দুলাখ হাতে,

ব্যাংকে রাখলে সুদও আসবে,থাকবো দুধে ভাতে ।


বেশ ভায়া,ভালো ভালো,গুণধর তুমি বটে,

হিসেব তোমার খুবই পাকা বুদ্ধি আছে ঘটে,

বলার ধরন কেমন কেমন ভাবতাম হাবা গোবা,

ভুল ভেঙ্গেছে,তোমায় চিনে,আমি এখন বোবা ।

একগুচ্ছ - প্রিয়াংকা নিয়োগী || Eekgucho - Priyanka Niogi || Bengali Poem || Poetry || বাংলা কবিতা

 একগুচ্ছ

প্রিয়াংকা নিয়োগী



অম্র পল্লব প্রয়োজনে ব‍্যাবহার হয়,

একসাথে সব পাতাই ঠিক হতে হয়।

কল্পনা গুচ্ছগুলো মুখরিত হয়,

যখন বাস্তব ছুয়েও ছোয়া যায়না।


একগুচ্ছ গোলাপ শোভা পায়,

যখন মর্যাদা পায়!

গোলাপের কদর থাকেনা,

যদি প্রত‍্যাখান করা যায়।


একগুচ্ছ "আশা" আকাঙ্খায় পরিণত হয়,

আশা যখন বাস্তব রুপ নেয়।


গল্পগুচ্ছ পরিণত হয়,

যখন গল্প সাজানো হয় গুচ্ছাকারে।


প্রতিটি ফুটে ওঠা ফুল পূর্ণতা পায়,

পূর্ণাকারে ব‍্যবহার করা হয়,


 বিন্দু বিন্দু দুঃখ হতে হতে,

বাসা হয় কষ্টের,

ছোটো ছোটো খুশি থেকে,

বড়ো হয় সুখ।