Posts

Showing posts from October, 2021

লেখক শ্রাবণী মুখার্জী -এর একটি গল্প

  বিপরীতে   সুবিকাশ ও সরমা পাশাপাশি বসে আছে গাড়ির মধ্যে কিন্তু দুজনার মুখই দুইদিকে ঘোরানো , দুজনেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছে যেন খুব মন দিয়ে , চোখে চোখ রেখে কথা বলছে না আর, । সুবিকাশ ভালো করেই জানে তীর লক্ষ্যভেদ করেছে , সঠিক প্রয়োগ হয়েছে ,এবার জ্বলুক সরমা । সরমা ও বুঝলো এতোদিন যাকে ঘিরে এই লড়াই চালিয়ে এসেছে , হয়ত সবাই সমান নয় এই ভাবনায় একটু করে উঠে দাঁড়াবার সাহস করছিলো, সেও একই।  বাইরের লোকের একটা কথাতে বিশ্বাস করে ভুল ধারণা করে তাকে ঘুরিয়ে নাক দেখানো হয়েছে।  সম্পর্কে চিড় ধরে যদি বিশ্বাস ও ভরসা না থাকে । সুবিকাশের সাথে সরমার বিয়ে হয়েছে মাত্র একবছর হলো , কিন্তু তারা পূর্ব পরিচিত , অনেকদিন থেকেই বিভিন্ন মহলে দেখেছে ,সেভাবে কথা না হলেও তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একে অপরের অজানা নয় । সুবিকাশের ব্যাকিং কাজ থেকে শুরু করে অফিসিয়ালী সব কাজেই সরমা একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকে । একসময় সুবিকাশ খুব উপকার করেছিলো সরমার তাই সরমা ও পাশে দাঁড়াবার সাহস করেছে ।যখন সরমার নুন আনতে পান্তা ফুরাতো , নিজের ঘরের অভাব ঢাকা রেখে সে সুবিকাশের সাহায্য করতো যখন যা প্রয়োজন তাই মিটি

লেখক হর্ষময় মণ্ডল -এর একটি গল্প

  কর্তব্য যে ঘটনা নিজের জীবনটাকে ছারখার করে দিয়েছে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন মেয়ের জীবনে না ঘটে । এই চিন্তাটাই সব সময় মনটাকে কুরে কুরে খায়, আর সেই ঘটনাই আজ ঘটে গেল।এতো সাবধান, উপদেশ, অনুরোধ করা সত্তেও ঈশি মা ঈশিতার কোন কথাই শুনলো না।      পই পই করে ঈশিতা বুঝিয়েছিলো মেয়েকে,  দেখ তুই খুব বুদ্ধিমতি মেয়ে, সায়েন্স নিয়ে পড়ছিস। এবছর টুয়েলভ ভালো করে পড়ে ভালো রেজাল্ট করতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। তোর গার্জেন তুই নিজেই। আমার চাকরি আছে,  সংসারের কাজ আছে, তাই তোকে স্কুলে, টিউশনে পৌঁছে দিয়ে আসবো আবার সাথে করে নিয়ে আসবো সে সময় নেই। দিনকাল যা পড়েছে তাতে সব সময় চোখ কান খোলা রেখে চলবি নইলে বিপদ অবসম্ভাবি। সেই বিপদেই ঘটিয়ে ফেলল ঈশি মায়ের শত বারন সত্ত্বেও।      একদিন মেয়েকে চেপে ধরলো ঈশিতা, বললো- কি ব্যাপার রে তোর? কয়েক দিন ধরে লক্ষ্য করছি তোর কেমন যেন একটা উদাসিনতা, উড়ু উড়ু ভাব। পাঁচ বার ডাকলে তবে একটা উত্তর পাওয়া যাচ্ছে! বল কি হয়েছে? অনেক চাপাচাপির পর ঈশি বললো - সে একটি ছেলেকে ভালোবেসে ফেলেছে। এর বেশি আর কিছু বললো না। ঈশিতার মনে হলো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। ঘরকুনো গরু যেমন সিঁ

লেখক অমিত পাল -এর একটি গল্প

  স্বপ্নের সাইকেল                          ঐ তো সুনীলের সাইকেলটির মতোই দেখতে সাইকেলটা৷ 'এটা কি আমার জন্য বাবা?' 'হ্যাঁ বাবা এটি তোমার সাইকেল'৷ আজই কিনে আনলাম৷ যাও বাবা সাইকেল নিয়ে একটু ঘুরে এসো৷ থ্যাঙ্কইউ বাবা৷ আমি এখনই ঘুরতে যাচ্ছি৷ টা-টা বাবা, টা-টা মা৷ ছুটছে জোড়ে, আরও জোড়ে৷ হ্যাঁ পৌঁছে গেছি বন্ধুদের কাছে৷ 'নীলাভ, এই নীলাভ'-- কয়েকবার লাবণ্যের ডাকাডাকিতেই ঘুম ভেঙে যাই নীলাভোর৷ সে ক্লাসে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল৷ আসলে অনেকটা পথ তাকে পা'এ হেঁটেই আসতে হয়৷ তাই সে ক্লান্ত হয়ে ক্লাসে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল৷

লেখক রঞ্জিত মল্লিক -এর একটি গল্প

  দাগ কলেজ থেকে বেরিয়ে একটা ফলের দোকানে এল রিনি । কিছু ফল কিনবে ঠাকুরের জন্য ।পছন্দমতাে কিছু ফল,কিনে স্কুটির পাশে আসতেই একটা বাচ্চা মেয়ে এসে তার পাশে দাঁড়াল। গায়ের রঙ কালাে, রুগ্ন চেহারা, মাথায় রুক্ষ চুল, পরণে ময়লা ছেড়া কাপড় রিনিকে বলল, " পাঁচটা টাকা দাও না গাে দিদি ! কাল থেকে কিছু খাইনি।" ....           রিনি ব্যাগ থেকে পাঁচটা টাকা বের করে মেয়েটির হাতে দিতেই মেয়েটি হাত বাড়িয়ে নিল। আর সেই সময় রিনি লক্ষ্য করল মেয়েটির রুগণ হাতে ঝলমল করছে উল্কিতে লেখা নাম "রাani" মানে "রাণী"। রিনির "R", অনিকেতের "ani"। বাংলা, ইংলিশ দুই অক্ষর মিলে মিশে তৈরী হয়েছিল।             নামটা দেখেই রিনির বুকটা ধরাস করে উঠল। মেয়েটিকে আর দেখা যায়নি। টাকা নিয়েই চলে গেছে। মেয়েটি ওর বিশেষ পরিচিত বলেই মনে হল। হাতের উল্কি সেটাই প্রমাণ করে। চোখ দুটো যেন কত কালের চেনা।             বাড়িতে এসেই অনিকেতকে ফোনে ধরল। ও অফিসের কাজে ব্যস্ত। ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। মিটিং চলছে। সপ্তাহ শেষ হতে এখনও দু তিন দিন বাকি। অনিকেত উইক এণ্ডে একবার করে আসে। তবে কাজের গতি বুঝে।অনেক সময় সনি

লেখক সিদ্ধার্থ সিংহ এর একটি গল্প

প্যান্টি কার্তিক দেখল আজ আর দুটো নয়, মেয়েটির দু'হাতে দু'টি করে চারটে পেয়ারা। মেয়েটি স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় তাদের বাড়ির উঠোনের উপর দিয়েই যায়। গত তিন-চার দিন ধরে কার্তিক দেখছে সে যখন যায়, তখন তার হাতে দুটো করে পেয়ারা থাকে। তাই গতকাল থাকতে না পেরে ও জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি প্রতিদিন কোথা থেকে পেয়ারা পাও গো? মেয়েটি বলেছিল, আমাকে বিষ্ণুদারা দেয়। --- রোজ রোজ? ---- হ্যাঁ, আমি ওদের গাছে উঠে এত্ত এত্ত পেয়ারা পেড়ে দিই তো... তাই আমাকে রোজ দুটো করে পেয়ার দেয়। বিষ্ণুদের দলটাকে কার্তিক খুব ভাল করে চেনে। বুঝতে পারল, ছেলেগুলোর আসল উদ্দেশ্য কী। তাই বলল, তুমি ওদেরকে আর পেয়ারা পেড়ে দিও না, বুঝেছ? মেয়েটি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, কেন গো? ও বলল, তুমি তো বাচ্চা তাই বোঝো না। আসলে তুমি গাছে উঠলে নিচ থেকে ওরা তোমার প্যান্ট দেখে... গতকালই বারণ করেছিল। অথচ আজ সেই মেয়েটিই দুটো নয়, চার-চারটে পেয়ারা নিয়ে আসছে! মেয়েটি কাছে আসতেই ও বলল, তোমাকে কাল বলেছিলাম না... গাছে উঠো না... নীচ থেকে ওরা তোমার প্যান্ট দেখে... মেয়েটি বলল, দেখবে কী করে? আমি অত বোকা না। আমি তো আজ প্যান্টই পরে আসেনি।

লেখক দীপক কুমার মাইতি -এর একটি গল্প

  দলছুট অশোক কোয়ার্টারের বারান্দায় বসে। একমনে বনের দিকে তাকিয়ে আছে। কয়েকদিন একটা বন্য হাতির পাল খুব উৎপাত শুরু করেছিল। ওদের সামনে পড়ে একজন মারাও যায়। অনেক চেষ্টা করে হাতির পালকে বনরক্ষী বাহিনী এই জঙ্গল থেকে তাড়াতে পেরেছে। হাতির পালের কথাই ভাবছিল অশোক। বনরক্ষী তমাল এসে দাঁড়ায়। অশোক বলে, “হাতির পালের কোন খবর পেলে?”      “স্যার, দলটা দলমার দিকে ফিরে যাচ্ছে। এখন ধারে কাছে কোন হাতির পাল নেই।”      নিশ্চিন্ত হয়ে অশোক বলে, “যাক! এখন কয়েকদিন শান্তি। কী বল?”      “স্যার একটা খবর আছে। দলছুট হাতিটা ফিরে এসেছে।”      “ সে কী ! হাতিটা এখন কোথায়?”      তমাল বলে, “ কুনকিটার গা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে ওর সাথে ডালপালা খাচ্ছে। অথচ দেখুন কদিন আগেও কুনকিটাকে কাছে যেতে দিত না। শিকল ছেঁড়ার চেষ্টা করত। আপনার হুকুমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। বনে ফিরেও গিয়েছিল। কিন্তু আজ সকালে-------”      “ ফিরে এসে কুনকির আদর উপভোগ করছে। তাই তো?”      “ হ্যাঁ স্যার। এই অবাক কাণ্ড হল কেন?”      হেসে অশোক বলে, “ আহত হাতিটাকে তোমরা অনেক যত্নে সুস্থ করে তুলেছিলে। ওর গায়ে মানুষের গন্ধ লেগে গেছে। হাতি-সমাজে তাই ওর ঠাঁই নেই। এবার আমাদের কুনকিটা ঠিক

লেখক তুলসী দাস বিদ -এর একটি গল্প

অনুভব এতদিন যা গোপনে - আড়ালে আবডালে চুপিসারে হতো এখন আর তার দরকার হয় না। হবেই বা কেন? উন্নত প্রযুক্তি, উন্নত মস্তিষ্ক - উন্নত সভ্যতা - তার কি কোনো মূল্য নেই।কে বলল নেই? আলবাৎ আছে। অতি আধুনিক যুগের ছেলেমেয়েরা তাদের হাতের মুঠোয় সারা পৃথিবী। আমাদের মত প্রাচীনপন্থী কেন হবে? কথায় কথায় ওরা একগাল হেসে বলে "ও তোমরা বুঝবে না, সেকেলে ব্যাকডেটেড মানুষ। সত্যি তো এত ভারি বয়সে ওসব বোঝারই বা কী দরকার? এরকম রঙ্গলীলার চিত্রনাট্য বুঝব - এমন সাধ্য আমার বাপেরও নেই। তর্জনীতে বোতাম টিপে টিপে টিক - টিক - টিক - এ ভাষা বইতে আর চর পুষতে হয় না। নিমেষে সব হাসিল হয়ে যায়।  যায় হোক বাজার থেকে বাড়ি ফিরছি, জনবহুল রাজ্য সড়কের উপর প্রকাশে দুজন... রোদ ঝলমল করছে। চোখের পর্দায় ভেসে উঠলো সুলভ দৃশ্য।ছেলেটা না চেনার ভান করে ঘুরে দাঁড়ালো। আমিও দশ পা এসে অছিলায় নয় নির্লজ্জ কৌতুহলী হয়ে আবার ফিরে চাইলাম - সে এক কুচ্ছিত-বেল্লালাপনা। ছেলেটা খুব পরিচিত, হতদরিদ্র, সুপুরুষ, পুরোনো মেধাবী ছাত্র। বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে কলেজে পড়তে এসেছে। বাবার কায়িক পরিশ্রমের রোজগারের যথার্থ ব্যবহার করছে ছেলে। অনুমান করলাম - আমার প্রিয় ছাত

কবি অর্চনা দাস -এর একটি কবিতা

  বার্তা আকাশে মেঘেরা কানে কানে দিয়ে যায় বার্তা নৃত্যের তালে জেগে উঠে আনমনা বাতাস চকিত চাহনির অনন্ত আহ্বানে কে বা রয় ঘরে বসে,   ম্মিত হাসি ছড়ানো রবিকর- প্রাণের পরশে করে স্নাত।  বিস্তৃত ভুবন রঙিন পুষ্পরাজি নবসাজে ধ‍রা দেয় প্রেমের আলিঙ্গনে সমগ্র চরাচ‍র মৃদু গুঞ্জনে মুখরিত।  মা আসছে- তাই প্রাণের আবেগে প্রকৃতির এই  মোহিনী রূপসজ্জা,  আর নয় অশ্রুপাত মনের গ্লানি মুছে সাজাও আঙিনা আল্পনায় ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দাও পথে প্রান্তরে।  পদচিহ্ন পড়বে মায়ের প্রতিটি আঙনে,  দুঃখ হতাশা ভুলে জাগো-জাগো সবে আশিস মায়ের নাও মাথায় তুলে।

কবি জয়তী দেওঘরিয়া -এর একটি কবিতা

  পারলে না           জানো ,আমার না খুব ইচ্ছে স্মার্ট হওয়ার , কতবার চেষ্টাও করেছি। বারবার বদলে ফেলেছি নিজেকে, সাজিয়েছি নতুন সাজে। নতুন পোশাক, নতুন চুলের ছাট আয়নায় দেখেছি নিজেকে। রঙ-তুলির আঁচড় দিয়েছি  চোখে-মুখে ও গালে। তবু মন পাইনি তোমার! আমি আজও নিজেকে সাজাই স্মার্ট করে তুলি । কিন্তু কে যেন ফিসফিস করে বলে যায়--- 'তুমি ব্যর্থ!' সেই ব্যর্থতার গ্লানি মেখে আবার গিয়ে দাঁড়াই তোমার কাছে তুমি ফিরেও দেখ না। আবারও সেই ধ্বনি  অস্ফুট স্বরে ধ্বনিত হয় 'তুমি ব্যর্থ, তুমি পারলে না।'

কবি ঋদেনদিক মিত্রো -এর একটি কবিতা

  শীত   শীত এসেছে, ঝরবে পাতা,    ঝরবে কত ফুল,   ঝরবে না তো কোনো শীতেই     আমাদেরই ভুল!  আসুক শীত, আসুক গ্রীস্ম,     কী বয়ে যায় তাতে,   তেমন ঋতু নেই কোথাও      এসে হাতেনাতে ---  ঝরিয়ে দেবে আমাদেরই      বদঅভ্যেস যত,   তারপরে ঠিক ভরিয়ে দেবে    বসন্তের-ই মত ---     ফুলে ফলে ভরবে মনের        বাগানগুলি সব,   মানব জাতি খুঁজে পাবে ---     হারানো গৌরব! 

কবি সুমিত্রা পাল -এর একটি কবিতা

  ভোটের দামামা যখন বাজে ভোটের দামামা, থাকে একরাশ প্রতিশ্রুতি আর হাঙ্গামা , দল বদলের খেলা চলে , একে অন্যকে কুকথা বলে ।  মুখোশ গুলো পড়ে আসে, ভোট পেতে কোমর বাঁধে কষে । নেতা-নেত্রীদের ভাঙে ঘুম, চলে মানুষকে কাছে টানার ধুম। হাসিমুখে সব কথা শোনে,  মনে মনে সপ্নজাল বোনে। একবার পেয়ে গেলে আসনটাকে , ঠিক দেখে নেবে সব বেটাকে। বুঝবার নেই কোন উপায়, বোকা জনগণ ভোলে এদের কথায়। এলে ভোটের সময় কাল , নেতারা হয় তখন ভিজে বেড়াল। নেতাদের লোভের লালসায় , সাধারণ মানুষের প্রাণ চলে যায়। এল গেল কত রকমের দল,  মানুষ পেয়েছে শুধুই ছল। নেই ঠিকমতো অন্নবস্ত্রের সংস্থান,  আজো তাদের ঘরে বেকার সন্তান। আজও বসে আছে আশায় , হয়তো আলো জ্বলবে বাসায়। হয়তো খুশির জোয়ার লাগবে , হয়তো একদিন মানবতাজাগবে।

কবি চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী -এর একটি কবিতা

  অকৃতজ্ঞ ভণ্ডরা কখন যে কোন রূপ ধরে প্রেমকে দেয় ফাঁকি জানে না প্রেম পুজারির উঠোন। দরজা খোলা রাখে অভুক্ত ফিরে গেলে সে যে বড়ই বেদনার তাই বেড়ে দেয় ভাত এক সময় গতর বাড়ে বলও আসে শরীরের এ-কানায় ও-কানায়। অহিংসার ভূমিতে প্রেমের ছায়া তলে দাঁড়িয়ে যারা সান দেয় আসুরিক প্রবৃত্তি ছিঁড়তে থাকে শান্তির নরম পালক। এক সময় যে পাতে খায় সে ভাতে ছেদ করে লেজ নাড়তে নাড়তে ছুটে যায় ভাগাড়ের দিকে এক সুরে বাজায় গান মাংস ছেড়ার উল্লাসে

কবি প্রতীক হালদার -এর একটি কবিতা

  দিদার কান্ড  ছুটল গোপাল আমটা পেড়ে  করল দিদা তাড়া , হয়েছিস কেমন বাপের ব্যাটা  একবার তুই দাঁড়া । জোরসে ছুটে বেড়ার ওপার  পড়ল গোপাল জোরে , হোঁচট খেয়ে পড়ল দিদা  ছিল ঘুমের ঘোরে । চেঁচায় জোরে আয় রে ছুটে  ভাঙল বুঝি ঠ্যাং , গোপাল ছোঁড়া বড্ড জোরে  মারল আমার ল্যাঙ । ঘেঁচি জোরে দৌড়ে এল  একি তোমার দশা ? এই বয়েসে পা'টা গেলে  চরম সর্বনাশা । কি কান্ডটা কর না তুমি  বয়সটা কি কম ? এই বয়েসে কোথায় তুমি  পাও যে এত দম ?

কবি মঞ্জুলা বর -এর একটি কবিতা

  কোথায় চেতন   সুন্দর পৃথিবীতে মানুষ কবে আর  মানুষ হবে ? এতো শিক্ষা ব‍্যবস্থা   এতো আইন কানুন তবুও শত সহস্র  নারীর গণধর্ষণ গর্ভকালীন !  কেমন শিক্ষা?---ভাবতে অবাক লাগে  এতো পুলিশের সমারোহ পথে পথে--  হাজার হাজার জন মানব তবে কী  করে মোড়ে মোড়ে নারীর কেন   এত ধর্ষণ ও মৃত্যু ! আসলে সব থেকে ও কিছু নেই অভাগা  দেশে! জ্ঞানের আলোকে মানুষ কবে   আর মানুষ হবে?সবাই আমরা মুখে  কত জ্ঞানের বাণী শোনাই কিন্তু সত‍্যি কী  কেউ সঠিক পথে চলি! সবটা যেন   অজানা! ------ বিবেক চেতন যদি জাগতো তবে দিনের  পর এতো অন‍্যায় অরাজকতা হতো না! মিথ‍্যার কবলে সত‍্য হতো না জর্জরিত । লোভের মোহে দিকে দিকে ধান্দা  আর মারামারি । স্বার্থের তরে হিংসা,ঈর্ষা , ক্ষুণ,খারাপি চলছে অহরহ।    কোথায় মনুষ্যত্ব ?কোথায় চেতন? কোথায় বা মানবিকতা? নীরবে আজও  কাঁদে অসহায় ধরণী ।

কবি শ্রাবণী মুখার্জী -এর একটি কবিতা

  প্রয়াস   দেখিলে কন্যা রাজকন্যা বন্দিনী র বেশে , তোমার মনের গহন বনে রূপকথার দেশে । রূপ তোমায় পারে নি করিতে মোহিত স্নিগ্ধ হেসে  বন্ধু হয়ে দাঁড়ালে না তবু কোনোদিন পাশে এসে । মুক্ত করিতে করিলে না তুমি কণামাত্র প্রয়াস । ব্যাকরণ বুঝায়ে জানিয়ে গেল মুক্ত ধূসর আকাশ । ঝরলো বৃষ্টি কপোল বাহিয়া শ্রাবণের বারিধারা , চাহিলে পারিত মুছাতে দুঃখ প্রেমিক পাগলপারা । ভাসে নি রূপেতে মিত্র আমার অতি সাবধানে পা,  সময় কাটানোর যন্ত্র করেছে উপায়ান্তর না । সাজায়েছো কতো স্বপনে মননে সুন্দরী কুমুদিনী, লুটায়ে কেশ জড়ায়ে বাহু প্রেমিকা বিরহীনি । বাজিলো না ভেরি মধুরিমা ওই ছোট্ট আশায় জুড়ে , সুনীল আকাশ বুক ভরানো কি হবে হৃদয় খুঁড়ে ?  মন্দ্রতালে লয় তাল মেলায় খানিক ছন্দপতন , কাঙালিনী বধূ কুসুম চয়নে রেখেছে জীবন পণ । প্রাচীর ছিদ্র বেয়ে কোনোদিন আসিবে কি সোনারবি ? বন্দিনী হয়ে দাঁড়ালে সেথায় কবিতা লিখবে ? কবি । হৃদয় দুয়ারে এখনো রইবে শুভ সকাল শুভ রাত , বৃষ্টিস্নাত প্রভাতী বেলায় দিও সারা জীবন সাথ ।

কবি তহিদুল ইসলাম -এর একটি কবিতা

  নানা জনের নানান মত একটা স্তম্ভের উপর একটা শিশুমূর্তি  একটা অবোধ্য শব্দ করে চিৎকার করছে। তার অমন আওয়াজ শুনে মানুষ এসে জড়ো হয়। তাদের মধ্যে কয়েকটি মতে অবস্থান নিলো। একদল বলল,' ছেলেটা কেমন কান্না করছে। আরেকদল বলল,' না না, ও কাঁদছে না, ও হাসছে দেখুন; ও না,অমন করেই হাসে।' পাশের ফ্লাট থেকে একটা তীক্ষ্ণ কণ্ঠ ভেসে এলো, ' এইযে শুনুন, ও না অমন করেই লোক জড়ো করে।' চিদানন্দ সন্ন্যাসীর দল,দরবেশ ফকিরের মতে, ' মানুষ আনন্দ পেলে হাসে, দুঃখ পেলে কাঁদে। ব্যথার নীল পাহাড়ে দাঁড়িয়ে সে গান করে। সে এখন অমন সুরে গান ধরেছে।' আকাশে একটুকরো মেঘ কোথায় উড়ে এলো বাতাস উঠলো, মূর্তির গা'য়ের ধূলো উড়িয়ে দিলো তারপর বৃষ্টি নামলো,ভিজিয়ে দিলো তার শরীর ধুয়ে দিল ব্যথা ,যন্ত্রণা যত জমেছিল বুকে তার। যেমন করে মা'য়ে দেয়,তার সন্তানের।

কবি অভিজীৎ ঘোষ -এর দুটি কবিতা

  আজব জেরা এইতো সেদিন পুলিশ মামা  গ্রামের ভিতর এসে,  দাসুর বাড়ি ডুকলো সবাই ধরলো তারে কষে।  নিয়ে গেল জীপে তুলে থানার রাস্তা ধরে,  ভগবানকে ডাকছে দাসু ভয় ভরা অন্তরে।  পুলিশ সুপার করছে জেরা অস্ত্র কোথায় আছে?  ক্ষীণ স্বরে বললেন দাসু 'নেই তো আমার কাছে।' ধমক দিয়ে বলল পুলিশ বলবি কিনা বল?  তোরা সবাই একই গ্যাঙের সবটা তোদের ছল।  দাসু তখন বললো কেঁদে  শুনুন স্যার তবে ,  গ্রামের মুখে তিনখানি গাছ তার দুখানি বাদ যাবে।  তারই পরে তিনখানা পথ প্রথম দুটি বাদে,  গেলেই পরে দেখতে পাবেন মোর পরিবার কাঁদে।  সেই বাড়িতে তিনখানি ঘর ঢুকেই দেখতে পাবেন,  প্রথম এবং দ্বিতীয় বাদে তৃতীয় ঘরে যাবেন।  সেই ঘরেতে আছে রাখা তিনখানা আলমারি,  প্রথম দুটি বাদ দিয়ে স্যার তৃতীয়টা দরকারী।  তারই ভিতর তিনটি লকার প্রথম দুটি ছেড়ে,  তৃতীয়টা খুলবেন স্যার হাতল খানি ধরে।  দেখতে পাবেন তিনটি ছবি তৃতীয় ছবিতে মা,  ঐ ছবির কশম খেয়ে বলছি ধরে পা!  জানিনে মুই কোনো কিছু অস্ত্র কিম্বা বোমা; তাইতো বলি সবার মাঝে,  করুন আমায় ক্ষমা।  পুলিশ মামা বললো হেসে ছাড়রে পাগল পা,  তোকে আমি দিলুম ছেড়ে বাপি বাড়ি যা। _______________________   চাও

কবি কাজী রিয়াজউদ্দিন আহমেদ -এর একটি কবিতা

  মুক্তি   বন্ধু এবার পাপ পথ ছেড়ে            এসো সৎপথে ফিরে, পৃথিবীটা দেখ ধ্বংসের পথে             চলিয়াছে ধীরে ধীরে! মানব জীবন অশরীরি আজ            পরিশ্রান্ত সবে, ভোরের আকাশে রক্ত-কুয়াশা               ঝরে পড়ে এই ভবে। তাই বলি সখা আর না অসৎ,               সৎপথে এসো হাঁটি - ভেঙে দেব মোরা রাহাজানি-খুন                 সন্ত্রাস যত ঘাঁটি। পরের বিপদে ঝাঁপাইয়া পড়ি'                  আসান করিব তারে, শান্তি নামুক চরাচর ব‍্যপি                    সকলের দ্বারে দ্বারে! মুছে দেব সবে ধরণী হইতে                   লাল রক্তের দাগ, খুন-ধর্ষণ ঠগ-দুর্নীতি                   ভাগরে এবার ভাগ।

কবি মিলি দাস -এর একটি কবিতা

  অর্ধসমাপ্ত শক্তি পুরোনো জীর্ণ সংসার ফেলে হারিয়ে গেলে গৌরী পাজামার দেশে, ক্ষতি হয়ে গেল একটা জীবন, তবুও বলেছিলাম দাও, কিছু দিয়ে যাও। বাঁচিয়ে রাখার জন্যই তো কিছু দিয়ে যেতে চেয়েছিলে। প্রস্ফুটিত রজনী গন্ধার আবেশে কেটেছে কত দিনরাত, কিশোর বেলার ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি, বিজয়া দশমীর বিসর্জনের বিষাদের সুর একাত্ব হয়ে মিশে গেছে ঘরের আনাচে কানাচে। এ বয়সে কোন উৎসবেই যেন কিছু নেই এর ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মধ্যরাতে শক্ত পাথর ভাঙা ছেলেটি তাঁর সর্বস্ব বিকিয়ে দিয়ে সমাধিতে শুতে এসেছে আজ। এইটুকু জীবনে অর্ধসমমাপ্ত গভীর সুখ আর কত পোড়াবে! বৃষ্টি এলে ক্ষুরের ঝড়ের মত দাগ লেগে থাকে নিজস্ব ফুলের জঞ্জালে। জুঁই মাধবীর দিকে তাকিয়ে বলি প্রেম দাও প্রেম দাও,একাকিত্বের জনতার ভীড় থেকে একটু প্রেম এনে দাও। আমি দেখতে পাই - ফিরে যাওয়ার উৎস দেখে মানুষ ভয় পেয়েছে। চিঠি লিখে জানতে চেয়েছিলাম গভীর দুঃখের মাঝে কোন সুখ লুকিয়ে আছে? নির্ভয়ে চেয়ে থেকে বলেছিলাম , আজ তবে থাক,আবার আসছো কবে? কিসের এত কাজ ,কেন এত দূরে দূরে থাকা? বলেছিলে ধান কোটা শেষ হলে, নেমে আসা অন্ধকারের মাঝে একটি কবিতা টাঙাতে হবে। তখনই সকলকে বলবো আমায় এবার নিয়ে চলো। আমি চি

কবি রাজা দেবরায় -এর একটি কবিতা

  চলুন ভাবতে শিখি ভোগবাদের দুনিয়ায় কেউ ভাবতে পারছে না, ভাবতে শিখছেও না। ভাবাটা কেমন যেন ব্রাত্য! মস্তিষ্ক বলে যে কিছু আছে ভুলেই যাচ্ছি আমরা। একগাদা তথ্য ও পণ্য, এটাকেই শুধু করছি গণ্য। কিভাবে ভাবতে হয়, কেনো ভাবতে হয়, কী ভাবতে হয়, সেটাই তো শিখিনি মোরা। কিন্তু ভাবতে যে হবে! টিকে থাকতে হলে, দাপিয়ে বেড়াতে হলে, সম্মান পেতে হলে, ভাবতে যে হবেই। চলুন ভাবতে শিখি!

কবি অরবিন্দ সরকার -এর একটি কবিতা

  নাথুলা পাশ            সিকিম চীন সীমান্ত অনেক উচ্চতা, অক্সিজেন অপ্রতুল শ্বাসকষ্ট হবে, অতীতের সিল্ক রোড তিব্বতের মাথা, দখলে চীনাবাহিনী দেশ বন্দি ভবে। অতন্দ্র প্রহরী সেনা তুষারে আবৃতা, দেশমাতৃকার সেবা চালান নীরবে, হিমালয়ের চূড়ায় শান্তির বারতা, অখণ্ডতা রক্ষাকারী জাতির গৌরবে। আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় একতা, তিব্বতের জনপথ হারিয়েছে যবে, বৌদ্ধ লামা ভিক্ষুগন অহিংসার ত্রাতা, দেশটাই লোপ হলো যুদ্ধ জারি রবে। নাথুলাপাশ বিশ্বাস সৌভাতৃত্ব জ্ঞানে, ভারত ও সমকক্ষ পৃথিবী তা জানে।

কবি সোনালী মীর -এর একটি কবিতা

  তুমি কি কোন কবি নাকি চাষি ওই হাতে ক্ষুরধার লাঙল নিয়েছ তুলে, সাদা মাটিতে অক্ষর করেছ বপন রোদে জলে: কতবার চষে গেছ আমাদের মন গভীর থেকে গভীরে চিন্তার খনন কতদিন ঊষর মাঠের বুকে দু হাত আকাশে ছড়িয়ে দাঁড়িয়েছ সুখে- তুমি কি কোন কবি নাকি চাষি ঠোঁটে লেগে আছে শষ্য রাশি রাশি বুকের ভেতর থেকে উৎসারিত কলমের কালি বয়ে গেছে শিরায় শিরায়।শরীরের ধুলোবালি  হীরের দ‍্যুতিতে শব্দ হয়ে পড়ছে ঝরে মাটির 'পরে ঘাসের 'পরে। একলা মেঠো গাছের নীচে ভাবাক্রান্ত উদাসী

কবি সৌমেন কর্মকার -এর একটি কবিতা

  শোক চুপ হও, দেখছোনা স্তব্ধ এখানে প্রাণ— একলহমার জন্য হারিয়ে গেছে হাসি নীহারিকার গহীনে, কান্নার গর্জন শ্রুতি— ধরণীর কুঞ্জবন হতে ওই গগন চুম্বী পর্যন্ত, বাঁধভাঙা অশ্রুর ধারা সবার চোখে। ধূপের গন্ধ বয় তবুও, বিষাদের সুর। চেয়ারের ওপর রাখা একখানা ছবি, ফুলের মালা জড়ানো— ঘুমোচ্ছে সে, আজ তার নির্বাক শ্রোতা হওয়ার দিন। সাদা চাদরে ঢাকা দেহ'টার— ওপর কত কারোর মায়া ছিল,ভালোবাসা ছিল। চমকপ্রদ এক অট্টালিকা-রাশি রাশি ধন-সম্পত্তি ভরা, স্ত্রী-আর দুই সন্তান— দেখে মনে হয়েছিলো কি পরিমান সে সুখময়— আসলে সুখ ছিলোই না তার কপালে, একুল—অকূল খুঁজে খুঁজে আজ তার এই পরিণাম, কাঠের বিছানা তৈরি— শেষবারের মত একটিবার নাম ধরে ডাকা, ক্লান্ত হয়ে শোবে সেই মৃত পুরুষটি— প্রকৃতির মুখ দেখো চেয়ে করুন নীরবের ভূমিকায়, মুক্তির দণ্ড ছোঁয়ালো, অগ্নিষ্পর্শ তার চোখে মুখে, সেই মুহূর্তেই; দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা। মৌনাবৃত চিৎকার— জ্ঞানশূন্য! বোঝে না কেউ, বুক জুড়ে পৃথিবীর চূড়ান্ত শান্তির তারল্য— বিনিময়ে হবে একমুঠো নিষ্কলঙ্কিত ছাইয়ের গুড়ো, ইতি হলো সেই ছোট্ট জীবন টার, না! ভুল বললাম; ছিনিয়ে নেওয়া-লুণ্ঠিত-অনতিক্রমনীয়— সাক্ষী রইলো ঠাঁ

কবি মিঠুন রায় -এর একটি কবিতা

  সত্বা তোমার হতশ্রী রূপ আমাকে আর আকর্ষণ করে না মৃত্তিকার লোহিত স্তরের নীচে জমে গেছে সাদা দুধেল স্তর। মন মাতানো সুগন্ধি এখন আর ভালো লাগে না, কাক-বকেরা কেড়ে নিয়েছে তোমার ভেতরের সত্বাকে, পুতুল নাচের ইতিহাসের সাক্ষী তুমি। শুধু হৃদয়ে স্মৃতিপটে লেখা আছে তোমার কদর্যরূপ।

কবি কমল মন্ডল -এর একটি কবিতা

  আবেগি শব্দরা         তোমার চোখের দিকে তাকালে বুকের আঁচল নামতে থাকে পুরনো স্মৃতিতে আমি হেরে যায় নীরবে  তোমার চোখের দিকে তাকালে। শরৎ তোমায় আমার মুখোমুখি আনায় অঞ্জলি  দুটো হলুদ রঙের পাখি আসে ফিরে যায় নীরবে  মরা পুকুরে উঠতে থাকে ঢেউ  তোমার চোখের দিকে তাকালে। প্রেম সে কি জানি না,বুঝলেনা তুমিও সাত রং তোমায় সাজাক --- আলো দিক ভোরে তোমার স্বপ্নের ধানসিঁড়ি---- আমার আবেগ, সে তো কবিতার পঙক্তি জুড়ে!

কবি সুমন্ত রবিদাস -এর একটি কবিতা

  স্রষ্টা স্রষ্টার প্রধান সঙ্গী কল্পনা কল্পনার সাহায্যে স্রষ্টা দেন সার্বজনীন রূপ সৃষ্টি হয়ে ওঠে সার্থক হয়ে ওঠে চিরন্তন। তবে তার মধ্যে থাকে কিছু বাস্তবতা বাস্তব থেকে অবাস্তবে যাওয়াই সৃষ্টি অ্যারিস্টটল বলেছেন যাকে বস্তুসত্য আর কাব্যসত্য। স্রষ্টা মনেই থাকবে কল্পনা, আর থাকবে মনের ভাবনা শক্তি মনের ভাবগুলো উঠবে সৃষ্টিতে ফুটিয়ে যা আসবে বাস্তব জগৎ থেকে মনে মনের ভাবগুলো ভাষায় ব্যক্ত হবে সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। কল্পনার আশ্রয়েই স্রষ্টা গড়ে তার সৃষ্টির কাঠামো, বাস্তব থেকে অবাস্তবে যাওয়াই সৃষ্টি সৃষ্টিতেই হয় স্রষ্টার প্রকাশ।

কবি সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক -এর একটি কবিতা

  রমণীয় ইচ্ছের ওপর ভরসাহীন নড়বড়ে মগজগুলো সার সার হাঁটে আর হাঁটে কার্ণিস ঘেঁষে, তাদের মুখে ও চোখে ইন্দ্রিয়ের পাঁচ-পাঁচটি খোপে তুমুল বিষম বিষমতর সোরগোল- দ্বিধাহীন চলনবলন স্থির তসবির হয়ে নিয়ত দোলে সমাজের পথে পথে পরিক্রমণে। নিভাঁজ নিস্পন্দ দোটানায় একা একা পাখী আমার খুঁটে খুঁটে খায় শক্ত চরম বায়ু, কখনো ধুলোয় কখনো আকাশে কখনো সলিলে স্থিরতা খুঁজি তীব্র তীব্রতম রমণে।

কবি রানা জামান -এর একটি কবিতা

  রণ পা   একটা রণ পা থাকলে চাঁদে যাওয়া যেতো এবং মোক্ষম এন্টিবায়োটিকে রোগমুক্তি ডিমে তা থাকলেও সবসময় ফুটে না জাতক রসের হাড়িতে ডুবে পান করে কুচক্রিরা পরিস্রুত জল ঘুষের টাকায় সেলাই করে টিকটিকির ঠোঁট ঢোলের তাণ্ডবে গর্ভপাত হলেও আনাড়ি চিকিৎসক সভাপতি পদে আসীন পদোন্নতির ঢামাঢোলে ড্রয়িংরুমে তাসের খেলায় বেখেয়ালি সর্বস্ব হারিয়ে পথের ফকির দিন যায় কারো হেলাফেলায় কারো বা সাধনায় সিদ্ধি লাভের আশায়।

কবি আবদুস সালাম -এর একটি কবিতা

  অন‍্য চিত্র   প্রতিটি সকাল যেন অন্য সকাল ভারতের প্রতিটি কোষে জেগে উঠছে হাহাকার শুনছি নিঃসঙ্গ চেতনার ক্রন্দন ধ্বনি কান পাতলেই শুনি বিবিবাচ্চাদের সম্মিলিত জিজ্ঞাসা বাজারে লেগেছে আগুন অদ্ভুত রহস্যময়তা ছড়িয়ে পড়ছে দিকে দিকে লাল, হলুদ, সবুজের কচকচানি ঝরে পড়ছে অভিভাবকহীন সময়ের বিষন্নতা বিপ্লবের আঙিনা ধুয়ে দিচ্ছে কীটনাশকে মুখ থুবড়ে পড়ছে সকালের অস্তিত্ব জীবাণু মুক্ত করার অঙ্গীকার অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে নিহত চাঁদ নিবেদন গুলো ঢেউ তুলছে সভ‍্যতাল নদীতে পাড়ায় পাড়ায় পাল‌ তুলছে দুর্বিষহ বিষাদ স্বপ্নের খনি থেকে তুলে আনছি সাদা ভাত সাদা কাফন মৃত্যু সুবাসে ভরে উঠছে ভারতের মানচিত্র

কবি নবকুমার -এর একটি কবিতা

  নীতিহীন আবেগ    মানসিক কিছু কষ্ট ভোগায় আমাকে  শূন্য থেকে কে যেন বলে--এ তোমার পূর্বজন্মের কর্মফল । পূর্বজন্ম !সে আবার কি !সে কি হয় ! তবে ,আমিই বা জানিনা কেন ! কেন এত দুঃখ-ভোগ্য সময় ! আমি তো কাউকে দু:খ চাইনি দিতে বিনিময়ে আমিও চাই না দু:খ নিতে তবুও নীলের ডোবানো স্বচ্ছাকাশে  কেন ভীড় করে এতো চাপ-চাপ কালো মেঘ ! পূর্বজন্ম আমি বিশ্বাস করি না-- এই জন্মে পেয়েছি শুধু শূন্য পাত্র আর নীতিহীন আবেগ ।

কবি পৌষালী সেনগুপ্ত -এর একটি কবিতা

  জয়   যে কোনো ধর্মযুদ্ধ করবো জয়! এটাই নিশ্চয়! যে কোনো শত্রুকে পরাস্ত করতে দৃঢ় নিশ্চ্য়! যে কোনো রাস্তা নিতে জীবনে নিজের সিদ্ধান্ত! যে কোনো বিপদে মধ্যে ঘুরে দাঁড়াবার জেদ! জীবনের চড়াই উৎরাই সহজেই করব জয়! আছে বুকের মধ্যে জেদ আর অদম্য লড়াই! জীবনের লড়াই জিতবোই এটাই দৃঢ় নিশ্চয়!

কবি বিধান সাহা -এর একটি কবিতা

  অসহায়তা   কেমন যেন হতাশা ক্রমশঃ এসে ঘিরে ধরছে আমায় আবেগ ঘন স্বপ্নের মোহনা দিচ্ছে না উঁকি আরও নতুন চেহারায় আসছে না এগিয়ে জীবন যাপনের মধু মুহূর্ত গুলো মেলে ধরছে না ভবিষ্যতের আলোছায়া কেঁদে উঠছি ক্ষণে ক্ষণে অসহায়তার বেড়াজালে জড়িয়ে...

কবি সেখ নজরুল -এর একটি কবিতা

  নীল পদ্ম হাজারো স্বপ্ন দেখেছি ওই পদ্ম পাড়ে, অনেক আশা নিয়ে হাজির তোমার মনের দুয়ারে। সময়ের সন্ধিক্ষণে তোমার সাথে হল দেখা, মনের মধ্যে তোমার রঙিন ছবি আঁকা। জীবনের শেষ লগ্নে দিয়েছি হাত বাড়িয়ে, দিওনা অঙ্কুরে তার বিনাশ ঘটিয়ে। চিরদিন থাকবে তোমার দিকে আমার টান, ভালোবেসে যাবো যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ। পাগল হয়েছি তোমার কাজল কালো চোখে, তোমায় পাশে নিয়ে থাকবো সারা জীবন সুখে। হারিয়ে যাবো দুজনে স্বপ্ন সাগরে, তোমার আমার দেখা হবে ঘুম ভাঙা ভোরে। হৃদয় কাঁপিয়ে তোলে তোমার ওই গোলাপি ঠোঁটের হাসি, তোমার ঐ মিষ্টি চোখের চাওনি বড়ই ভালোবাসি। হঠাৎ দেখা হবে ওই নীল পদ্ম পাড়ে, মনের উষ্ণতা নিও সিক্ত করে। কানে কানে বলবো মনের না বলা কথা, সোহাগের জোয়ারে ভাসবো তোমার কোলে রেখে মাথা।

কবি অভিজিৎ দত্ত -এর একটি কবিতা

  একটি বর্ষণমুখর দিনের কথা বর্ষণ মুখর দিনে বসে ভাবি আনমনে অতীতের কত স্মৃতি, কত কথা কিছু দেয় আনন্দ, কিছু দেয় ব‍্যাথা। বর্ষার জলের ধারার মতো মনে পড়ে যায় কত কথা ছোটবেলায় বর্ষার সময়  কতবার খেয়েছি আর আনন্দ করেছি খিচুড়ি সঙ্গে ইলিশ ভাজা। বর্ষার জলে সিক্ত ধরিত্রী  মনে করায় পুরোনো প্রেমিকার কথা সেও তো একসময় ছিল  বর্ষার মতো উচ্ছল,তরতাজা। বর্ষার দিনে কত কিছু জাগে মনে হারমোনিয়াম নিয়ে শুরু করি গান প্রাণে দেয় এক অদ্ভুত আরাম। বর্ষার দিনে কারো,কারো হয় খুব কষ্ট যাদের নেই ঠিকমতো অন্ন ও বস্ত্র যাদের নেই ঠিকমতো রোজগার তারা হয়ে পড়ে বেকার। বর্ষার দিনে ভালো-মন্দ মিলে দিন যায় চলে  একটি বর্ষণ মুখর দিনে কারো কাটে কষ্টে, কারো আনন্দে।

কবি আশীষ কুন্ডু -এর একটি কবিতা

  বেলাশেষের কবিতা   বেলা শেষে আকাশ কালো  তুমি এলে আড়াল থেকে মনভোলা  বৃষ্টি ভেজা বাতাসে সমুদ্রের গন্ধ বদ্বীপে মাতলা নদীর সুর বাজে  সফেন তান্ডবে বিদ্ধ বিদ্যাধরী  বোধহয় দেখছিলে তুমি গাছেদের দীর্ঘশ্বাস  কিংবা লুপ্তপ্রায় কোনো সভ্যতার লজ্জাটুকু বিকেলের ছায়া ঘন হয়ে আসে এমন সময়হীন সময়ে তোমার অবলোকন  একটি বর্ণালী রচিত আবহে বেলা শেষের কবিতা মনে পড়ে গেলো।

কবি নীতা কবি মুখার্জী -এর একটি কবিতা

  মানুষের জন‍্যই ধর্ম                    ধর্মের নামে কাটাছেঁড়া করিস, করিস রে হানাহানি সবার উপরে মানুষ সত‍্য এই কথাটাই মানি মান, হুঁশ নিয়ে জন্ম নিলাম মাটির ধরনী মাঝে ভাইয়ের রক্তে বিজয়ী হওয়ার উন্মাদনা কি সাজে? জগৎ জুড়ে একটাই জাতি, শ্রেষ্ঠ মানুষ জাতি মনুষ্যত্ব বিসর্জন দিয়ে হিংসার খেলায় মাতি হিন্দু, মুসলিম, শিখ, ইশাহী, ব্রাহ্মণ, বৌদ্ধ সব যে তোরা ভাই ভাই, ওরে, কেউ নয় বধ‍্য। "ঈশ্বর একম্ এব অদ্বিতীয়ম" এই কথাটাই সার তবে কেন সব ধর্মকে নিয়ে করে শুধু মার মার? রামকৃষ্ণ মন্ত্র দিলেন সব এক জাত মানি যত মত তত পথ আছে, তাই কোরোনাকো হানাহানি। মানবিকতার এই সনাতন ধর্ম প্রাচীন, মহান, মহৎ বিবেকানন্দ দেখালেন ,তাই দেখলো বিশ্বজগৎ হজরৎ বলো, নানক বলো, বুদ্ধ-তথাগত অহিংসার পথ দেখালেন তাঁরা, একই ধর্মমত। একই রূপের দুই নাম হলো আল্লাহ্ ও ঈশ্বর মানুষের চেয়ে বড়ো কিছু নাই, মানুষই সর্বেশ্বর মহান সম্রাট আকবর দিলেন নতুন ধর্মমত দীন-ইলাহীকে কুর্ণিশ করি, পাই জীবনের পথ। সব ধর্মের এক সার শোনো,শোনো রে মানুষ ভাই ধর্মকে ধরে রাখতে হলে আগে তো মানুষ চায়।

কবি মহীতোষ গায়েন -এর একটি কবিতা

  আত্মরক্ষার অনুশীলন কিছু রক্তপাত অথবা শূন্য আস্ফালন বিক্রি হয়েছে নিজস্ব কণ্ঠ ও স্পন্দন, বারন্দার রোদ্দুরে বাড়ছে ফুল ও পাতা সৌরভ বাতাসে ছড়ায় কাঁদে প্রিয়জন। এবার ভালো ফসল ফলবে বলে আশা ঝণের বোঝা কমাতে তৎপর হয়ে থাকা, কণ্ঠে বারুদ জমেছে বিস্ফোরণ হবে না আগুন হয়ে ছড়াবে বঞ্চিত উপত্যকায়। ক্ষতস্থান শুকিয়ে মসৃন,সব অচেনা পথ সামনে আসছে,সামনে আসছে প্রহসন ও আত্মরক্ষার সূত্র,জীবনের সব অঙ্ক মেলাতে অস্থি মজ্জায় তীব্র অনুশীলন। পাখিরা আকাশে গাইছে সম্প্রীতির গান মাটিতে বাড়ছে ভালোবাসার গাছ,ফুলের বনে উঁকি দিচ্ছে প্রত‍্যাশার সূর্য,সমস্ত সুখ, আশা,অধিকার পেতে মানুষ প্রস্তুত হচ্ছে।

কবি তৈমুর খান -এর একটি কবিতা

  সক্রেটিসের শেষ রাত্রি  বিষের পেয়ালা আজ অমৃত বলে পান করি  প্রেমিকের রোগা হাতে ছুঁই না তোমাকে  কে দেবে শুশ্রূষা বলো—  আমাদের সম্পর্কের সব লাবণ্য ঝরে গেলে?  চারিদিকে ভেজাগন্ধ পোশাকে-আশাকে  রোদ্দুরে মাছির মতো উড়ে উড়ে আসি  কী উৎসবে বেজে ওঠে দিন?  রাতগুলি স্বপ্নহীন—কে ভাবে কাকে!  দূরে কোন্ আলেয়ার আলো  জ্বলে উঠে নিভে যায়—  শেয়ালের মতো চোখ জ্বলে  আগুনের হাতে-হাতে উড়ে আসে ছাই।

১৫ তম সংখ্যার সম্পাদকীয়

Image
                                  অঙ্কন শিল্পী-মৌসুমী চন্দ্র _________________________________________________ সম্পাদকীয়: নিভৃতে বসে আছি, দেখি কবিতারা ডানা মেলে। মুক্ত হস্তে দ্বার উন্মোচন করে দি। দু-একটি জোনাকি পোকা উঁকি দেয়। ডুকরে ডুকরে কাঁদতে শেখায় মারণ ভ্রমর। আসলে সবগুলো ই কবিতা ও গল্প লেখার উপাদান। ভাবতে বসি আমি কেন আপনারাও এই উপাদান কে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজনে পাঠ করতে পারেন আমার আপনার সকলের প্রিয় পত্রিকা world Sahitya Adda blog magazine. যেখানে একদিকে প্রতিবাদীর সুর কবির কলমে ফুটে উঠেছে ঠিক অন্যদিকে প্রেমিক কবির কলম গহণ অরণ্য খোঁজে অধীর। আবার একদিকে সমাজ বাস্তবতা যেমন প্রাবন্ধিকের কলমে ফুটে উঠেছে। ঠিক অন্যদিকে গল্প কারের রসময় গল্প পাঠকের হৃদয়ে অতল গভীর কে নাড়িয়ে দিয়েছে। তাই বলি আপনাদের যদি উপাদান প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের পত্রিকা পড়ুন। পর্যালোচনা করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর থাকুন সাহিত্যে মসগুল।                          ধন্যবাদান্তে        World sahitya adda সম্পাদকীয় বিভাগ _____________________________________________________________________

১৫ তম সংখ্যার সূচিপত্র (৫০ জন)

  সম্পূর্ণ সূচিপত্র: বাংলা কবিতা ও ছড়া--- তৈমুর খান, মহীতোষ গায়েন, আশীষ কুন্ডু, নীতা কবি মুখার্জী, অভিজিৎ দত্ত, সেখ নজরুল, বিধান সাহা, পৌষালী সেনগুপ্ত, নবকুমার,  আবদুস সালাম,  রানা জামান, সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক,  সুমন্ত রবিদাস, কমল মন্ডল, মিঠুন রায়, সৌমেন কর্মকার, সোনালী মীর, অরবিন্দ সরকার,  আশীষ কুন্ডু, রাজা দেবরায়, মিলি দাস,  কাজী রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, অভিজীৎ ঘোষ, তহিদুল ইসলাম, শ্রাবণী মুখার্জী , মঞ্জুলা বর, প্রতীক হালদার, চিরঞ্জিত ভাণ্ডারী, সুমিত্রা পাল, ঋদেনদিক মিত্রো, জয়তী দেওঘরিয়া, অর্চনা দাস। বাংলা গল্প--- তুলসীদাস বিদ, দীপক কুমার মাইতি, সিদ্ধার্থ সিংহ, রঞ্জিত মল্লিক, অমিত পাল, হর্ষময় মণ্ডল, শ্রাবণী মুখার্জী। ছোট নাটক-- মায়া বিদ। প্রবন্ধ--- ভানু শঙ্কর।  বাংলা গদ্য তথা রম্য রচনা--- রোকেয়া ইসলাম,  মৌসুমী চন্দ্র, শ্যামল চক্রবর্ত্তী,  সত্যেন্দ্রনাথ পাইন,  তীর্থঙ্কর সুমিত, সুজিত চট্টোপাধ্যায়। Photography--- Moushumi chandra, Sohini Shabnam, Riyanka Roy.

Photography by Sohini Shabnam

Image
 

Photography by Moushumi chandra

Image
 

লেখিকা শ্রাবণী মুখার্জী -এর একটি গল্প

  ব্রহ্মময়ী   বিছানায় শুয়ে শুধু এপাশ ওপাশ করতে লাগলো নীপা । দুচোখের ঘুম কোথায় যেন নিরুদ্দেশ ।ধীরে ধীরে ছটফটানি বাড়তে লাগলো , ভীষণ রকম অস্বস্তিকর হতে হতে ঘেমে রাত্রিবাস ভিজে একসা । আস্তে আস্তে উঠে পড়লো , না.... ঘুম আসবে না আর আজ । দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলো ,রাতের আকাশে দ্বাদশীর একফালি চাঁদ এর দিকে নজর দিতেই কয়েকটি নিশাচর পাখা ঝাপটাতে ঝাপটাতে উড়ে গেলো । নীপা যেন আর নিজের অসুস্থতা চেপে রাখতে পারছে না ,শিমুল গাছটার নীচে এসে দাঁড়ালো কিছুক্ষণ । বামুনপাড়ার দুর্গামন্দিরের পাশের রাস্তায় কয়েকটি ঘর পেরিয়ে তিলজলা পুকুর টার কথা মাথায় এলো । ছোটো বেলা থেকে শুনে আসছে ওই পুকুরে নাকি কুমির থাকে ,তাই কেউ ভয়ে ওই পুকুরের ধার মাড়ায় না ।  নীপা ক্লান্ত পায়ে গুটি গুটি সেই পুকুরের পাড়েই এসে পৌঁছালো । শ্যাওলা ধরা আধখাওয়া সিড়িটার উপর বসে পড়লো মন্ত্র মুগ্ধের মতো ।কচুরিপানায় ভর্তি পুকুরে বোঝার উপায় নেই কুমির আছে কি নেই । বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে ঘড়ি দেখেছিলো ভোর চারটা বাজে । বাবা বলেছিলেন এই সময় টা নাকি বহ্ম্র সময়, এই সময় একান্ত মনে সাধনা করলে ফ

লেখক তীর্থঙ্কর সুমিত -এর একটি রম্যরচনা

  নদী কথায় ভেসে যায় ...                (১৩) জমানো অনেক কথা বলার থেকে, না বলাটাই বাকি থাকে ।বহুল প্রচলিত কথা কখনো কখনো নতুন হয়ে ওঠে ।আর দূরের হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলো বড় কাছের হয়ে ওঠে।এভাবেই দিন - মাস - বছর পেড়িয়ে যায় ।ফিরে আসে কথার জোয়ার।আর অপেক্ষা সৃষ্টি করে বেঁচে থাকার রসদ।এখানেই হয় কলমের সূচনা। না হয় কথাগুলো ই বাঁচিয়ে রাখুক পাওয়া না পাওয়ার অন্তিম মুহুর্ত ।                (১৪) জীবনের মুহূর্তগুলো ক্রমশ ভেসে যেতে থাকে।এপাড় থেকে ওপাড়।ওপাড় থেকে এপাড়।মাঝে যে বিস্তর ব্যাবধান থাকে সেখানে এক একটা ঘর তৈরী হয় ।যে ঘরে অনায়াসে মানুষ বসবাস করতে পারে।ভালোবাসার ঘর।সেই ভালোবাসার ঘরে কত কথা ভেসে যায়।যে কথায় এক একটা নদীর জন্ম।একেকটা সমুদ্রর জন্ম। আর জন্ম নেয় প্রতিনিয়ত কত কবিতার।যে কবিতা সৃষ্টি করে এক একটা পাহাড়,এক একটা পর্বত।সেই পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসে ঝরণা।যে ঝরণার জল গায়ে মেখে প্রতিদিন হেঁটে চলি।আর কবিতার কথা মনে করি। কেউ যদি প্রশ্ন করে নদী তোমার জন্ম কোথায়? আমি বলি এক একটা কবিতাই এক একটা নদী।

লেখক সুজিত চট্টোপাধ্যায় -এর একটি গদ্য

  ফ্যালো কড়ি মাখো তেল   মেঘে মেঘে বেলা হলো । হবেই তো। এটাই কালের নিয়ম। ব্যাটারি কমজোরি হলে , ঘড়ি স্লো চলবে। উল্টোপাল্টা সময় দেবে। একদিন নিঃশব্দে থেমে যাবে। খেল খতম।  কত বাসনা অপূর্ণ রয়ে গেল। থাকবেই। আক্ষেপ, মানুষের জন্মগত অধিকার। তবে মুশকিল হচ্ছে , কী জানেন তো!   আকাশকুসুম বাসনা পূর্ণ হয়না। কত-কী পাবার ইচ্ছে । কাকের হঠাৎ ময়ূর পেখম মেলে নাচন ইচ্ছে হতেই পারে।  কাক যদি গান ধরে , তাহলে চড়াই পাখি হি হি করে হাসে আর কোকিল মূর্ছা যায় ।  ইচ্ছের নাকি ডানা আছে। মেলে ধরলেই হলো। মর্ত্যলোক থেকে বৈকুন্ঠ লোক , উড়ে যাও পতপত করে। কেউ কাছা ধরে টানবে না।  স্বপ্ন উড়ান ঘুড়ি আপনা আপনিই সুতো কাটা হয়ে লাট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে কার্নিশে কাতরাবে। কোলে মার্কেটের কুলি। পাহাড় প্রমাণ মোট মাথায় নিয়ে হেঁই হেঁই করে চলছে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত। যেন কত সহজ কাজ। ওদিকে বলাই বাবুকে দেখুন । সামান্য লাউ কুমড়ো পটোলের আড়াই কিলোর ব্যাগ বইতে হিমসিম। সকলের পক্ষে সব কিছু সহজসাধ্য নয়।   কপাল ময় হাহাকারের আঁকিবুঁকি। দুর্ভাগ্যের জীবন ম্যাপ।  নোবেল , অস্কার, ভারতরত্ন তো দূর, একটা লাগদাই সরকারি চাকরিও জুটলো না। টু পাইস ইধার উধার কামাতে না

লেখক সত্যেন্দ্রনাথ পাইন -এর একটি গদ্য

  একবিংশ শতাব্দীর আরও এক লজ্জা         আমাদের পাশের স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ঘটে গেল এক লজ্জা জনক বীভৎস নারকীয় ধ্বংস। যে বা যারা ঘটালো সে বা তারা কোন সম্প্রদায়ের সেটা বড় নয়। বড় হলো ঘটানো হয়েছে। কিন্ত্ত কেন?      সারা বিশ্বে আমরা বাঙালিরা নিজেদের ধর্ম ও সংহতি এবং সংস্কৃতি নিয়ে বুক ফুলিয়ে চলি। কারণ, আমাদের ভাবনা-- ধর্ম যে যার ভগবান বা ঈশ্বর সবার!     সেখানে হিন্দু মন্দিরের ওপর ভাঙচুর বা ধ্বংস লীলা বাঞ্ছিত নয় নিশ্চয়ই। এখানে হিন্দু বা মুস্লিম বা শিখ খ্রীষ্টান নয় অত্যাচার হলে প্রতিবাদ ঘণীভূত হবেই। হয়েওছে। সারা বিশ্বে ইসকনের বিভিন্ন সংগঠন থেকে ঝড় উঠেছে। উঠুক। আরও বেশি বেশি ঝড় উঠুক। যারা এরকম ন্যক্কারজনক কাজ করলো তারা কী চায়! বাঙালির উঁচু মাথাটা টেনে নিচে নামাতে? নাঃ। তা হতে দেয়া যাবে না। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা কড়া হাতে দমন করতে চেয়েছেন বলে খবর। উত্তম।       যদিও লেখিকা তসলিমা নাসরিন একে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করে সরকারের ওপর দোষারোপ করেছেন। কিন্ত্ত নিরপেক্ষ ভাবে বলা যায় বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা এক্ষেত্রে সন্তোষজনক। আমরা পশ্চিম বঙ্গের বাঙালি হিন্দুরা

প্রাবন্ধিক ইমরান শাহ্-এর একটি প্রবন্ধ

  দশমীর দশকথা নবমী পূজার মাধ্যমে মানবকুলে সম্পদলাভ হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে রোববার দশভুজা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নীল অপরাজিতা ফুল নবমী পূজার বিশেষ অনুষঙ্গ। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেয়া হয়। ১০৮টি বেলপাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে এ যজ্ঞ করা হয়। পূজা শেষে যথারীতি অঞ্জলি। 'দশমী' কথাটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বাঙালির আবেগ ও মনখারাপ মিশ্রিত একটি অনুভূতি। দশমী এলেই বাঙালির মনে আসে মায়ের ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা। অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও একটা বছর। সাধারনত দুর্গাপুজোর অন্ত হয় দশমীর মাধ্যমেই। এই দিনেই মা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে এই দিনটিকে বিজয়া দশমী বলার সঠিক অর্থ আজও জানেন না অনেকেই।  'দশমী' কথাটির সাধারন অর্থ খুবই সহজবোধ্য। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে পিতৃগৃহ ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে পাড়ি দেন দেবী। সেই কারণেই এই তিথিকে 'বিজয়া দশমী' বলা হয়। তবে দশমীকে 'বিজয়া' বলার কারণ খুঁজলে অনেক পৌরাণিক কাহিনী পাওয়া যাবে। পুরাণের মহিষাসুর বধ কাহিনীতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে  ৯ দিন ৯ রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে

লেখক রঞ্জিত মল্লিক -এর একটি গল্প

              তিলের নাড়ু                আশ্বিন মাস পড়ে গেছে। শরৎ প্রকৃতি নব সাজে সেজে উঠেছে। চারিদিকে কাশের চাদর, বাউল মাঝির গানের মেঠো সুর, টলটলে দীঘিতে শাপলার আদর,ঢাকের বোহেমিয়ান মাতাল করা বন্দিশ জানিয়ে দিচ্ছে মা উমা আসছেন।                     সামান্য বহুদিন পরে পুজোতে ঘুরতে যাচ্ছে। বন্ধুর দেশের বাড়ি। মালদার রতুয়াতে। সেখানে গোবরাহাটে বাড়ির পুজোতে বেশ ধুম।                  আরও একটা কারণ আছে ওখানে যাবার। পুরানো ব্যথা, আবেগটা মাঝে মাঝেই নাড়া দেয়। ছাব্বিশ বছর পরে সেটা আবার নতুন করে টের পাচ্ছে।                      "কাল রওনা দিবি ?" মা বলল।              "হ্যাঁ। রাতের ট্রেনেই যাব।" সামান্য ব্যাগ গোছাতে গোছাতে বলল।      "সমু, শিউলির সাথে দেখা করবি না ? একবার খোঁজ নিস।"               "তুমি আবার শুরু করলে।"                          সামান্য এড়ানোর চেষ্টা করলেও মা প্রায়ই প্রসঙ্গটা তোলে। যাতে ছেলের সুমতি ফেরে। সংসারী হয়।                  মালদাতে সকালেই নেমেছে। স্টেশন থেকে নেমে মোরামের রাস্তা ধরে বিবর্তনের বাড়ি অনেকটা পথ। পুরোটা হেঁটেই গেল। গ্রামের জ

লেখক অমিত পাল -এর একটি গল্প

  গরীবের ভূত   একদা একটা গ্রামের ঘটনার কথা আজ বলব৷ ঘটনাটি শুনেছিলাম অবশ্য ঐ গ্রামের কিছু বয়স্কদের কাছ থেকে৷ গ্রামটির নাম লাভপুর৷ বীরভূম জেলার অন্তর্গত এই গ্রামটি খুব একটা বড়োও নয়, আবার খুব একটা ছোটও নয়৷ মোটামুটি একটা বটে৷ এই গ্রামে কিছু ধনী পরিবার, কিছু মাঝারি পরিবার এবং কিছু দরিদ্র পরিবারও ছিল৷ প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী গ্রামের ধনী ব্যক্তিরা সর্বদায় পদতলে অবদমন করে রাখত, অত্যাচার করত গরীবদের উপর৷ এমনকি তখন জমিদারী প্রথাও প্রচলন ছিল৷ ফলে ধনীরা আরও ধনী ও গরীবরা আরও গরীব হতে লাগল৷       এই গ্রামেই বাস করত এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ৷ তার নাম কানু চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি ছিলেন খুবই দরিদ্র এক ব্রাহ্মণ৷ তার কোনো বউ, ছেলে-মেয়ে ছিল না৷ ফলে সে একা অতি দারিদ্রতার সঙ্গে জীবন যাপন করত৷ ঐ গ্রামে একটা বড় এবং পুরাতন কালী মন্দির ছিল৷ সেখানেই সে নিত্য কালীপূজায় রত থাকত৷ আর সঙ্গে কিছু যজমানগিরি করে নিজের জীবিকা নির্বাহ করত৷    ব্রাহ্মণটি অবশ্য সবার সাথেই ভালো ব্যবহার করত৷ সবার সাথে সৎ আচরণও করত৷ অবশ্য অন্যান্য সবাই ব্রাহ্মণটির সাথে ভালো আচরণ করত, ব্রাহ্মণটিকে শ্রদ্ধাও করত৷ এমনকি ব্রাহ্মণের অধিকাংশ কথা গ্রামের মানুষ জন ম

কবি নবকুমার -এর একটি কবিতা

  শ্যামল আত্মীয়তার সুর সান্ধ্যকালীন আজানের সুর ভেসে আসে  ছড়িয়ে যায় বাতাসে বাতাসে--- চারদিকে এক শীতল নিস্তব্ধতা--- একটু আগে পাখিরা ফিরেছে নীড়ে উদ্বিগ্ন শাবকেরা মা'কে পেয়েছে ফিরে  বাসায় খেলা করে শান্ত নীরবতা । শান্ত দিঘিজলে ছোট ছোট ঢেউগুলি ভেঙে পড়ে শান বাঁধা ঘাটের চত্বরে অতীব সত্বরে । নতমুখ গাছেদের পাতাগুলি বসন্তের শিমুল-পলাশ চারদিকে নির্জন আভাস । ওপারে বেজে ওঠে মন্দিরের কাঁসর ঘন্টার সাথে যেন দোলায় চামর । মানুষেরা ব্যস্ত কাজে  চলে যায় নিপুণ পা ফেলে রাস্তাতেই কবি এই শ্যামল আত্মীয়তার সুর লিখে রাখে কবিতার খাতাতেই ।

কবি উত্তম ধীবর -এর একটি কবিতা

  পক্ষ কোন বড়শিতে টোপ গিলেছ বন্ধু, কোন বড়শিতে টোপ? মোবাইলে স্ট্যাটাস কোথায়? বোধ বুদ্ধি সকলি কি পেয়েছে লোপ্? তোমার কাব্যে চাঁদের কিরণ ঝরে প্রত্যহ, এসেছে সময় ,দাও তার প্রমান, বয়ে যায় রক্ত নদীর স্রোত---_ তুমিও কি তাতে করতে চাও স্নান? উত্তাল দেশ ! আতঙ্কে রাতের প্রহর গোনে সংখ্যালঘু হও তুমি হিন্দু কিংবা মুসলমান, তোমার কাব্যে তো শুনেছি আর্তের বিলাপ এসেছে সময় আজ দাও তার প্রমান। বিবেক-বুদ্ধি সত্বা যদি রাখো বন্ধক মৌলবাদের কাছে, এই বধ্য ভূমে তুমিও তবে এক জল্লাদ তোমারও চোখে রক্তের নেশা অহরহ নাচে।

কবি পৌষালী সেনগুপ্ত -এর একটি কবিতা

  শিক্ষা জীবন যেন জীর্ণ পাতায় জড়ানো সেই মোড়কখানি, যার ভিতরে লুকিয়ে রয়েছে অনেক স্মৃতি; যার মধ্যে কিছু ভালো, কিছু খারাপ! কিছু কথা মন ছুঁয়ে যায়, তো কিছু কথা মনের ভিতরে রয়ে যায়! কখনো কখনো একটা মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতা ভিতরটা নাড়া দিয়ে যায়! কখনো আনন্দের অশ্রু তো কখনো দুঃখে চোখের জল! দুটোই নিজের রয়ে যায়! বয়ে যায় শুধু সময়! জীবনটা দেখতে দেখতে ফুরিয়ে যায়! কিন্তু শিক্ষা কোনো দিনও ফুরায় না, এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্ম , জীবনের যে কোনো খাতে বইবার সময় শিক্ষা মানুষ পায়, সেই শিক্ষা জীবনের শেষ দিন অব্দি সঙ্গে রয়ে যায়!

কবি পম্পা ভট্টাচার্য -এর একটি কবিতা

  তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ দূর হতে হতে চলে যাব একদিন দূর বহু দূরে                   ছায়াটুকুও পড়বে না যা ছিল তোমার স্মৃতির পাতা জুড়ে। নীরব কান্নায় পড়বে না ,আমার একফোঁটা চোখের জল হৃদয় হবে বিদীর্ণ ,শুধু গহন মনে জ্বলবে দাবানল। প্রকাশ হবে না কোনকিছুই ,আমার নিঃশব্দ অভিমান হয়তো তুমি ভাসবে সুখের সাগরে, আমার জীবনে পড়ে রবে জোয়ার ভাটার টান। সময়ের ব্যবধানে ভাঙে যে অন্ধবিশ্বাস বেদনাময় জীবনে সান্ত্বনা দেয় শুধুই দীর্ঘশ্বাস। মরণ হয়তো পারবে কেড়ে নিতে ,হতাশা করবে গ্রাস কারণ আমি যে তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ।

কবি সুমিত্রা পাল -এর একটি কবিতা

  ব্যর্থ হলো কবির বাণী ওরে মৌলবাদীর দল, দেখিয়ে দিলি আসল রূপ । দেখিয়ে দিলি আজও  মন তোদের অন্ধকূপ।  মানবতা ভুলে গিয়ে  ভাঙলি মায়ের মুখ । রক্তে রাঙালি তোরা  বাংলা মায়ের বুক । কেমন শিক্ষা তোদের  মানুষ করলি খুন ! বিশ্ব মাঝে নিজেদের  মুখ করলি চুন। যে যার ধর্ম পালন করবে  এটাই মানব অধিকার । কোন সাহসে কেরে নিস সেই অধিকার সবার । একই বৃন্তে দুটি কুসুম  হিন্দু-মুসলমান , বলে গেছেন বিদ্রোহী কবি  কাজী নজরুল ইসলাম।  ধর্মের নামে অধর্ম করে, কবির বুক করলি খান খান। কবির বাণী ব্যর্থ হলো,  থাকলো না কবির মান । .আমরা সাধারণ মানুষ, মনুষ্যত্ব বুঝি চাই না দাঙ্গা বিবাদ, পাশাপাশি বাস করবো হিন্দু মুসলমান, মিলাব কাঁধে কাঁধ। এসো সকল দেশের মৌলবাদের  বিরুদ্ধে গর্জে উঠি, সকলে মিলে একসাথে ওদের টিপে ধরি টুটি। সে মৌলবাদ হোক হিন্দু অথবা মুসলমান, মানুষকে ভালবেসে আমরা সবাই দিতে পারি প্রাণ। দেশে দেশে ফিরে আসুক শান্তি হোক মানবতার জয়, সবার জীবন হতে, কেটে যাক, সকল প্রকার ভয়।

কবি মায়া বিদ -এর একটি কবিতা

  পরিপূরক ভাঙাগড়ার খেলা রে ভাই    ভাঙা গড়ার খেলা। একূল ভেঙে ওকূল গড়ো         কাটাও সারা বেলা । সৃষ্টি সুখের উল্লাসে তোমার            মাতন যখন ধরে । রঙিন রঙিন স্বপ্ন দিয়ে          সাজাও তুমি তারে। সৃষ্টি - ধ্বংসের পথখানি "দ্যাখো"                সমান্তরাল রেখায় চলে। একে অন্যের পরিপূরক হয়ে          বিপরীত ধর্মী খেলা খেলে। প্রবল বেগে খরস্রোতা নদী     সামনে এগিয়ে চলে। নতুন পথ চলার নেশায়         পুরানোকে যায় ভুলে। বিধাতা পুরুষের এই দরবারে         সৃষ্টি - ধ্বংস চক্রাকারে। চরৈবতি, চরৈবতি, নেইকো বিরাম             চলছে মেপে সময়টারে।

কবি তুলসীদাস বিদ -এর একটি কবিতা

  শেষ শেষ ব 'লে কিছু নেই     লেখা অভিধানে। ভ'রে রাখো দেহ মন      নিজ গানে গানে। আঁধার ঘনিয়ে আসে             বেলা অবসানে। ধ'রে রাখো ভ'রে রাখো              বিণা অভিমানে। শত ঘৃণা - অপমান            শেষ কথা বলে? ধূ ধূ বালি মরা গাঙ          ঢেউ নাহি তুলে? আপ্ত - আমিত্ব বোধ      মিথ্যা সংলাপ। শেষ করো শেষ করো          ভেক অপলাপ। শেষ করো শেষ করো             হিংসা ব্যাভিচার। দুঃস্বভাব ভন্ডভাব      আত্ম অহংকার । সৃষ্টি না করিও শেষ          ধ্বংস অপচয়। ঝড় - ঝঞঝা শত ক্লেশ           নিজে করো জয়। শেষ হলে শুরু হোক        পথের সন্ধান। কেটে যাবে ঘুর পাক       অসৎ বন্ধন। শেষ বলে কিছু নাই          যাঁদের জীবন। ত্যাগ - নিষ্ঠা সততায়            বাঁচে কীর্তিমান।