লেখিকা মৌসুমী চন্দ্র -এর একটি গদ্য
খোলা জানালা
"এসেছে শরত হিমের পরশ লেগেছে হাওয়ার পরে"
শরত আসার সাথে সাথেই কি এক অনাবিল আনন্দে নেচে ওঠে মন। আনন্দধারা বহিছে ভুবনে, মা দূর্গার
আগমনে। বর্ষার কালো মেঘ যেদিন অভ্যর্থনা জানায় সুনীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলাকে, নবীন ধান, কাশেরগুচ্ছ, শিউলি, পদ্ম, সকালের শিশির বরণ করে নেয় তাকে। মন গেয়ে ওঠে ঘরে ফেরার গান। আকাশে বাতাসে আহা কি আনন্দ! পুজো পুজো গন্ধ, ছুটির আমেজে মন ভরা থাকে। ইচ্ছে করে মনকে খোলা জানালা দিয়ে উড়িয়ে দিতে ওই নীল দীগন্তে,যেখানে নেই কোনো ভেদাভেদ, শুধুই মিলন আর মিলনে মায়ের আগমনের প্রকৃত অর্থ চরিতার্থ হয়। মা যে জগতের জননী, সকল সন্তানের
মিলন ঘটিয়ে মনের বন্ধন দৃঢ় করে মা যে এক অনন্ত প্রেমের ছোঁয়া দিতে চান।
কিন্তু মাগো ঝলমলে আলোকের আড়ালে, চকমকে দুনিয়াটা আজ বড় বিচ্ছিন্ন, নেই মিলনের গন্ধ,নেই আন্তরিকতা, নেই একাত্মতা। আছে শুধু লোকদেখানো বহিরাঙ্গ সাজানোর বহর। এখানে দুখী মা একলা কাঁদে বৃদ্ধাশ্রমে, দুখী মেয়ে ঘর পায় না, বর পায় না কালো বলে, মেয়েদের পথেঘাটে নিরাপত্তা বিহীনভাবে ঘুরতে হয়।
মা গো এরা তো তোমারই অংশ মা গো, আজ তোমার বিদায়ের ক্ষ্ণণে তোমার আশিসে যেন এই বিচ্ছিন্নতা কেটে যায়, সকল মানুষ এক হয়ে যায় মিলনের মন্ত্রে, তাই তো বলি মাগো
বিদায়কালে বলি মাগো
মিলনমন্ত্র উঠুক বেজে।
যত কালো যাক মুছে যাক
জগত আনন্দে উঠুক সেজে।
মা গো আমরা তোমার আশিসে আমাদের মনের জানালা যেন প্রকৃত মুক্তির সন্ধান পায়,আনন্দে ভরা
থাকে আমাদের জীবন। প্রণাম মা গো।
সকলকে জানাই শুভ বিজয়া, আগামী সুন্দর হোক মায়ের আশিসে।
Comments