রম্যরচনা || হিন্দু ধর্মের সবকিছুই যেন প্রতীকী || সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

  হিন্দু ধর্মের সবকিছুই যেন প্রতীকী




        আমাদের অর্থাৎ মানুষ দের জন্ম থেকেই যা কিছু আচরণ সবটাই কিছু আলাদা আচরণ মানে প্রতীকী হিসেবে ধরা হয়। 

     শিশুর জন্মের পরই মাতৃদুগ্ধ বা বুকের দুধ খাওয়ানোর মধ্যেই প্রতীকী দেখা যায়। মা তার সন্তান কে দুধ পান করানোর সময় যদি মনে খারাপ চিন্তা পোষণ করে ছেলে বা সন্তান ( ঠাকুর) সেই দুধ পান করতে চায়না। আবার যদি মা ঈশ্বর চিন্তা বা ভালো চিন্তা করে তাহলে সন্তান সেই দুধ ঈশ্বরের আশীর্বাদ ভেবে নিঃশেষ করে। অতএব প্রথমেই সৎ চিন্তার প্রতীকী।     

     কৃষ্ণ কে দুধ পান  করাতে পুতনা নামে রাক্ষসী মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে দুধ পান করাতে গিয়েও বিফল  হয়েছে বা পারেনি বরং বিশ্রীভাবে মারা গেছে।  অথচ মা যশোদা যখন কৃষ্ণকে দুধ পান করাতে চেয়েছেন তখন  বালক কৃষ্ণ গোপাল হয়ে তৃপ্তি করে দুধ পান করেছেন। অতএব চাই সৎ চিন্তার এবং সৎভাবে নিজেকে মেলে ধরার প্রতীকী ব্যবহার। সনাতন হিন্দু ধর্মের মধ্যে তাই যা কিছু নিহিত আছে তা সবই প্রতীকী। 

   ঠাকুর জগন্নাথ দেবের যে মূর্তি দেখি সেও তো প্রতীকী। অর্থাৎ ঠাকুর মানে ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান। তাই তাঁর চোখ কান হাত পা না থাকলেও তিনি সর্বভূতে  সর্বত্র  বিরাজমান আছেন বুঝি। নাই বা থাকলো কোনো বাহ্যিক আকার। 

    মৃত্যুর পরে আমাদের লোকাচার দেখলে দেখবো সেখানেও যত আচরণ সবই প্রতীকী।   শ্মশান চিতায় আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে ও সেই আচার বিচার। যখন দেহটি চিতার আগুনে পুড়ে শেষ হবে তার আগে আমরা কেউ না কেউ মাটির কলসি করে (একটা ফুটো রেখে) চিতা প্রদক্ষিণ করি। বোঝাতে চাই ফুটোর মধ্যে দিয়ে যে জল বেরিয়ে যাচ্ছে তা উক্ত ব্যক্তির কর্মফল। সেই ব্যক্তি এখানেই সব কর্মফল শেষ করে যাচ্ছে। আবার, মুখাগ্নি কেন?  উক্ত মৃত ব্যক্তি আর আহার গ্রহণ করবেন না তাই বোঝায়।ঠাকুরের চিন্তা বা সৎ চিন্তার থেকে শুরু করে আমাদের আচরণ সর্বদা মার্জিত হোক্। আবার ব্যবসায় মিথ্যে বলে লোক ঠকিয়ে রোজগার করা পয়সায় নিবেদিত ফলমূল  ঠাকুর গ্রহণ করেন না। যেমন একটা ভিখারি কে যদি এক কলসি মোহরও দেয়া হয় ঘৃণা ভরে তাহলে সেটায় অহমিকা প্রকাশ হয় মাত্র---ভিখারি নিয়ে তৃপ্ত হয়না। কিন্তু তুচ্ছ(!) ৫ টাকা দিয়েও যদি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং সৎ চিন্তার মধ্যে দিয়ে দেয়া হয় তাহলেই ভিখারি সন্তুষ্ট হয়-- সহজেই যেটা অনুধাবন করলেই বোঝা যাবে ব্যাপারটা। 

   অতএব হে মানবূল, আমি তুচ্ছ এক মানুষ হয়ে আমার অনুমিত ভাবনার প্রকাশ করলাম মাত্র। আপনারা বিচার করবেন।

   আমার আচরণ পরম ঠাকুর রামকৃষ্ণ নয় তবে সত্যেন্দ্রনাথ হয়ে বললামঃ। দেখুন জগতের মঙ্গলের জন্য আমরা প্রত্যেকেই কী কী করতে পারি। মনুষ্যত্ব যেন আমাদের আচরণের কারণে দগ্ধ নাহয়: সনাতন হিন্দু ধর্ম যেন ধ্বংস নাহয়। 

 অতএব অতঃপর দেখা যাচ্ছে আমরা হিন্দু ধর্মের এক একজন পরিত্রাতা না হলেও পরিমিতি বোধে অবিচল থাকার চেষ্টা করবো- এই হোক অঙ্গীকার।

Comments

Popular posts from this blog

শারদীয়া সংখ্যা ১৪৩০ || সম্পাদকীয় ও সূচিপত্র || World Sahitya Adda Sarod sonkha 1430

TATA Steel Job Recruitment 2024 || টাটা স্টিল কোম্পানিতে নতুন করে 6000 শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ || TATA company job

মাধ্যমিক পাশেই ভালো মাইনের চাকরি,জলের ট্যাঙ্কি দেখাশোনার স্থায়ী কাজ || Jal Jeevan Mission Registration 2024