রম্যরচনা || মানবিক হিরো গ্রীনল্যান্ডের স্নোম্যান || শ্যামল চক্রবর্ত্তী
মানবিক হিরো গ্রীনল্যান্ডের স্নোম্যান
গ্রীনল্যান্ডের ভৌগোলিক অবস্থান না বললে অবলা থেকে যাবে। মেরু অঞ্চলে হওয়ায় সেখানে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় মাত্র ৩ ঘণ্টা বা তার একটু বেশি কিংবা কম সময়। ফলে সেখানকার শীতকাল বা শৈত্যপ্রবাহকাল খুব দীর্ঘ সময় হয়ে থাকে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও অন্ধকারাচ্ছন্ন এক পরিবেশ যেনো কালো চাদরের মতো ঝুলে থাকে গোটা গ্রিনল্যান্ডে। এই ঠাণ্ডা অন্ধকারাচ্ছন্ন দ্বীপেও লুকিয়ে রয়েছে বিচিত্র সব সৌন্দর্য্য। অপূর্ব দেশের রাজধানী নূক।ইউরোপ মহাদেশের ডেনমার্কের অন্তর্গত স্বাধীন দেশ।
সারা বছর বরফে ঢাকা থাকলেও গ্রীষ্মে দেশটির রূপ পাল্টে যায়। উত্তর মেরু অঞ্চলেই ঘটে তা নয় অংশজুড়ে গ্রীষ্মে একটা নির্দিষ্ট সময় আক্ষরিক অর্থেই সূর্য ডুবতে দেখা যায় না। অদ্ভুত হলেও সত্য যে, তখন ২৪ ঘণ্টা সূর্য আলোরিত হয়। দিন-রাত তখন সমান বরফের রাজ্য গ্রিনল্যান্ডে ।যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধাজনক নয়। অন্য দেশ থেকে গ্রিনল্যান্ডে সরাসরি যাতায়াতের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। গ্রিনল্যান্ডের অভ্যন্তরে রয়েছে ১৬টি বড় শহর। কিন্তু একটি শহর থেকে আরেকটি শহরে যাতায়াতের সু-ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়রা তাদের যাতায়াতে ব্যবহার করে উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার। এক শহর থেকে আরেক শহরে যাতায়াতে তারা নিজেদের তৈরি যানবাহন ব্যবহার করে,তন্মধ্যে হলো- স্লেজ, কায়াক এবং স্নো স্যুথাকে।
ছেলেটি জানে, ( হনস বোল্ড) সে দুনিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত মানুষ। এবং এই খ্যাতির মাসুল হিসেবে, সে, তার স্বল্প জীবনের শান্তিতে কাটাতে পারে নি। স্নোম্যান হওয়ার জন্য তাকে হারাতে হয়েছে অনেক কিছু। অত্যন্ত ঠান্ডা কিছু জায়গা তাপমাত্রা স্বাভাবিক -১০ থেকে - ৫, আরো কিছু জায়গার তাপমাত্রা -৫০ এর উপর) নিকটাত্মীয় পিতা মাতা কে হারাতে হয়েছিল।
স্নোম্যান অত্যন্ত মেধাবী হঠাৎ করে প্রতিকূলতা দূর করার জন্য, গ্রীনল্যান্ড অধিবাসী জন্য"ওয়ে টু ওয়েসিস ইন আইস" অদ্ভুত আবিষ্কার। বিষয়ে আলোচনা করতে হলে, আগের দুটির প্রসঙ্গ টানতে হবেই। ১৯০৫৬ সালে জন্ম নেওয়া স্নোম্যান "স্লেজ পাওয়ার ইন আইস" অদ্ভুত আবিষ্কার’,১৯৯০ সালের গল্প হলেও সত্যি। জীবন জুড়ে বলেছেন কষ্ট লাঘবের আবিষ্কার।
এতোদিনে পৃথিবীতে স্নোম্যান পরিচয় কেউ জানতো না – হানস বোল্ড যে স্নোম্যান– পরিচয় গত দশকে ফাঁস করে দেয় গ্রীনল্যান্ড বাসী ।তারপরেই খুশির বন্যা দেশব্যাপী। সঙ্গত কারণের গ্রীনল্যান্ডের মাটির তলা থেকে অদ্ভুত এক রাসায়নিক তরল সংগ্রহ করেন । বিজ্ঞানমনস্ক হাওয়ায়, হাতে না নিয়ে একা আধারে সংগ্রহ করেনে। এখান থেকে হয়ে ওঠেন "স্নোম্যান"। অদ্ভুত জয়যাত্রা বরফের দেশে কেন গ্লেসিয়ার দৌড়ানো। বাকি গল্পটা উহ্য । তিনি হয়ে ওঠেন সুপার হিরো ।
লড়াই যথেষ্ট আকর্ষণীয় নিজের পরীক্ষাগারেই ,সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বোল্ড বিপ্লব ঘটিয়ে ছিলেন, সহজে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত স্লেজ কুকুরের পরিবর্তে একটি সামান্য যন্ত্রে ওই রাসায়নিক ঢেলে শক্তি উৎপন্ন করে বরফ কে কাজে লাগিয়ে হয়ে উঠেছিলেন স্নোম্যান । জানিয়েছিলেন বোল্ড হেরে যাবে ঠান্ডা শয়তান। কারণ মানুষের প্রতি তার ভালবাসা। মানবিকতা আদতে উচ্চাকাঙ্ক্ষী লোকের ভীতি হাড় হিম করা ঠান্ডা যা কল্পনা করা যায় না। এই তরল রাসায়নিকের সঙ্গে বরফ স্পর্শ করলেই অদ্ভুত শক্তি উৎপন্ন হবে কথাটি কিন্তু জানিয়ে দিয়েছেন স্নোম্যান। ক্ষমতা পাওয়া এবং তা মানবকল্যাণে কাজে লাগানো। এই মানবিক সত্ত্বাই গ্রীনল্যান্ড বাসির স্নোম্যান গড ।কারণ শয়তান ঠান্ডা তার আত্মীয়স্বজন এমনকি নিজের মা-বাবাকে কেড়ে নিয়েছিল। জন্ম নেয় দায়িত্ববোধ। জন্ম নেওয়া সার্থক হবে তবে –। সেই বিপুল দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। এই পরিবেশের মধ্যে বড় হয়েছে স্নোম্যান ব্যতিক্রমী। সে প্রবল পরাক্রমশালী হয়েও শোকে চোখের জল ফেলে – নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে পারিনি ।
প্রেমিকার জন্য উৎকন্ঠিত হয়ে শহরের ভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়ায় –এবং শেষ অব্দি আরও কঠিন প্রতিপক্ষের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হয়। বিশ্ব-কাঁপানো স্নোম্যান এক প্রকৃ্তপক্ষে ‘হিরো’-দেরই হিরো ।প্রধানত পুরুষ সেই সঙ্গে ঠান্ডা গরম বিভাজন এস্কিমোদের জয়। স্নোম্যান, সাদা বরফ, রাসায়নিক তরল শক্তিধর। অন্যদিকে ভিলেন ঠান্ডা -৫৫ ডিগ্রী – অর্থাৎ সাদা চামড়ার মানুষ যাতে আন্টার্টিকা ,সাইবেরিয়া, গ্রিনল্যান্ড ইত্যাদি ঠান্ডা শাসন করতে পারে তাদের ভগবান। তিনি তবে যেটা প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। ‘ব্ল্যাক’ গ্লেসিয়ার " জয়ের আকুতি রেখেছেন। ফলে দুর্দান্ত সম্পদ "ওয়ে টু ওয়েসিস ইন আইস"। সুপারহিরো স্নোম্যান ঠান্ডা ভিলেন প্রতিহত করা ।মানবিক কান্ডকারখানা যেভাবে মানবকল্যাণে এনেছেন, তার তুলনা নেই। শেষে সে গ্রীনল্যান্ডের সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত হলো। সহকর্মী গার্লফ্রেন্ড চুম্বন করে পিতামাতাকে উৎসবে করলেন। আশা করা যায়, আগামি দিনে পর্বতারোহীদের নতুন দিশা স্নোম্যান গড । শৈত্য সরিয়ে স্বীয় উদ্ভাবন পরিচয় গ্রিনল্যান্ড কেন আন্টার্টিকা জাতীয় ভূমিকায় দেবে দেখা।
Comments