গোবিন্দ মোদকের দুটি কবিতা
সন্তুষ্টি
কেউ দাঁড় বাইছিল। শরীর জুড়ে দরদর ঘাম।
কেউ ঢেউ গুনছিল। ফুরফুরে মনের বান্দা।
কেউ বা বাঁশি বাজাচ্ছিল। অপার্থিব সুরমূর্চ্ছনা।
দাঁড়, ঢেউ আর বাঁশি ---
এরা তিনটি কৌণিক বিন্দু জুড়ে
বিসদৃশ কোণে অবস্থান করছিল।
অথচ দাঁড় বাওয়ার ছন্দ ছিল,
ঢেউয়ের ওঠাপড়া ছিল,
আর বাঁশির ছিল ভাসিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা।
এরা তিনে মিলে সমান্তরাল রেখা তৈরি করেছিল।
কেন না এরা কেউ দাঁড়ে সন্তুষ্ট ছিল,
কেউ ঢেউয়ে, আবার কেউ বা বাঁশিতে !
___________________________
প্রস্তুতি
বিলের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটা রূপদহ হয়ে
এগিয়ে গেছে মহিষপোতার দিকে,
তার ডান দিকেই আমার খামারবাড়ি।
উঠোনে দু'তিন রকমের শস্য-গাদা।
পিছনে তিনটি গোলায় ভর্তি আঘায়ণী-ধান।
তারপর মাঠ-জুড়ে অনেকটা শূন্যতা।
ফসল-শূন্য মাঠ হারাতে চায় দিগন্তে।
ওকে ভোলাতে এখনও ঝোপেঝাড়ে ফুটে আছে
কিছু শিউলি আর স্থলপদ্ম।
বাতাস হিমেল জামা গায়ে
রোজ দেখভাল করে ওদের।
আমার খামারবাড়ি এখন পূর্ণ।
কিন্তু মাঠের শূন্যতা মনকে পীড়া দেয়।
একটা দলছাড়া বক আকাশের অনেকটা উঁচুতে
উড়ে যেতে থাকে আলো মেখে।
ক'দিন পরেই পরিযায়ী হবে মন,
তারই প্রস্তুতি চলছে খামার জুড়ে।
Comments