Sunday, July 25, 2021

সুব্রত মিত্রের দুটি কবিতা

 মন্বন্তরে রূপান্তর


এখন শুকনো ঢেউয়ে আমি মায়া খেলা করি

বাঁচিবার তাড়নায় স্বার্থের সাথে ঘর করি,

দিবানিশি পলায়ন ঘটে স্বার্থত্যাগের বাণীর

সমোচিত ভাবনার মুক্ত গগন খানি চূর্ণ দেবতার মত হয়ে ওঠে অভিমানী। 


বাস্তবের নাব্যতা আরো কত গভীর বলে দাও সখা

আমি পিপাসা ভুলে গিয়ে ক্ষুধাটাকে মেনে নেব; যাব ভুলে সৌখিনতা;

প্রমাণ্য প্রায়শ্চিত্তে অবলিলার লুণ্ঠন দাবি করে ন্যায্যতা,

আমি পাপের বিচক্ষণের দায় মাখা হাড়ি সরা

দুঃখের প্রসারতা করে অবগাহন ফিরে আসে মৌনতা। 


ভাতে ছাই পড়ে আছে ঐ

সাহারার হাতখানি এলো কই?

বাস্তবের নদী জীবনে আছাড় খায়

উঁকি দেয় ঘোলাটে মলাটের বেণু ছায়া,

নীল আকাশ কালো হয়ে আসে কেন

উড়ে আসে কেন ভিনদেশী মায়া। 


আমি আস্তরনের মেঘ ফাটা রোদ হতে গিয়েছিলাম

কোন ক্ষন প্রতাপ ইশারায় নিমজ্জিত সুর জীবনকে করছে নিলাম

আমি বেদনায় অপহৃত মায়ার পাথর

গন্তব্যের শীতলতম আবহে মানুষের মন্বন্তর করে তোলে কাতর।

_______________________________________


পরিসর জ্ঞাপন


আজ তোমাকে দেখতে বড় ইচ্ছে হচ্ছে,

ইচ্ছেরা গণ্ডি হারা কোন সমুদ্রে সাঁতরায়

পৃথিবীটা জীবন্ত রাক্ষসের মত দাঁড়িয়ে আছে। 


আমি ঠিকানাহীন এক অযোগ্য পথিক

ক্লান্তি আর নিস্তেজতা আমাকে ঘিরে ধরে সারাক্ষণ

কিভাবে তোমরা সর্বদা হেসে থাকো আমি জানিনা

মৃত্যুরা প্রতিমুহূর্তে কলিং বেল টিপে চলে যায়

আমার সকল সহপাঠীরা আজ সফল যমুনার নাবিক

দুরন্ত গতিতে ছুটে চলে সময়ের ছায়া,

ছায়াতে মায়া নেই; আছে টাকার ছবি আঁকা। 


গোধূলি বিকেল লুকোয় অগ্নি তপ্তসম রৌদ্রের আগ্রাসে

ডুবে যাওয়া আশ্রয় ভেসে ওঠে মৃত কান্নায়,

সময়ের পাশে কেউ সময়ের গান বাঁধে

সময়ের কাছে কেউ সময়ের বন্ধক রাখে,

অহরহ অবিচল কল্পনারা বিশৃংখল যাপন রোধে--

স্বল্প পরিসরে মুক্তির কানায় কানায় পৃথিবীর মায়ায়। 


অগোচর সমাপন তথা হেসেছিল বৃথা

কবি কলহের আত্মগোপনের কৃপায় সেজে ওঠে মনোমালিন্যতা,

সৃষ্টির কাছে দেখি সাজানো বাগানের মাধুর্য

অনিমেষ পাথরের গায়ে আছে ঐ স্মরণীয় কদর্য।


No comments: